নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মধ্যযুগীয় ইসলামি বিশ্বে জ্যোতির্বিদ্যার ইতিহাস ২য় পর্ব

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:১০


মধ্যযুগীয় ইসলামি বিশ্বে জ্যোতির্বিদ্যার ইতিহাস ১ম পর্ব
মধ্যযুগের উল্লেখযোগ্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে ছিলেন মু’আয়াদ আল-দিন আল-‘উরদি, নাসির আল-দিন আল-তুসি , কুতুব আল-দিন আল শিরাজি , সাদর আল-শারিয়া আল-বুখারি, ইবনে আল-শাতির , এবং আলি আল-কুশজি ।পঞ্চদশ শতাব্দীতে, তিমুরিয় শাসক সমারকন্দের উলাঘ বেগ তার দরবারকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকতার এক কেন্দ্রে পরিণত করেন। তিনি নিজে তার যৌবনে তা নিয়ে অধয়ন করেছিলেন, এবং ১৪২০ সালে একটি মানমন্দির প্রতিষ্ঠার আদেশ দেন, যা এক প্রস্থ নতুন জ্যোতির্বিজ্ঞানসংক্রান্ত সারণী তৈরি করে, সাথে সাথে অন্যান্য বৈজ্ঞানিক এবং গাণিতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। বেইজিং প্রাচীন মানমন্দিরের একটা অংশ।
চৈনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে ইসলামি প্রভাব সর্বপ্রথম লিপিবদ্ধ হয় সং রাজবংশের সময়ে যখন মা ইজ নামের একজন হুই মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী এক সপ্তাহে সাতদিনের ধারণা প্রবর্তন করেন এবং অন্যান্য অবদান রাখেন।মঙ্গোল সাম্রাজ্য এবং পরবর্তী ইউয়ান রাজবংশের সময় চীনে ইসলামি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের নিয়ে আসা হয়েছিল বর্ষপঞ্জিকা তৈরিতে এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করতে। ১২১০ সালে চৈনিক পণ্ডিত ইয়েহ-লু চু’সাই চেঙ্গিস খানের সঙ্গী হন পারস্য গমনে এবং মঙ্গোল সাম্রাজ্যে ব্যবহারের জন্যে তাদের দিনপঞ্জিকা নিয়ে অধ্যয়ন করেন। কুবলা খান বেইজিংয়ে ইরানিদের নিয়ে আসেন একটি মানমন্দির এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান-সংক্রান্ত বিদ্যার্জনের জন্য একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্যে।

মারাগেহ মানমন্দিরে বেশ কয়েকজন চৈনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী কাজ করেছিলেন, ১২৫৯ সালে পারস্যের হুলাগু খানের পৃষ্ঠপোষকতায় নাসির আল-দিন আল-তুসি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। এসব চৈনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একজন ছিলেন ফু মেংচি, অথবা ফু মেজহাই।১২৬৭সালে ফার্সি জ্যোতির্বিজ্ঞানী জামাল আদ-দিন, যিনি আগে মারাগা মানন্দিরে কাজ করতেন, কুবলাই খানকে সাতটি ফার্সি জ্যোতির্বিজ্ঞান-সংক্রান্ত যন্ত্রসমূহ উপহার দেন, যেগুলোর অন্তর্ভুক্ত ছিল একটি ভূগোলক এবং একটি আরমিলেয়ারি গোলক, সেই সাথে একটি জ্যোতির্বিজ্ঞান-সংক্রান্ত পঞ্জিকা, যা পরবর্তীতে চীনে ওয়ানিয়ান লি নামে পরিচিত হয় (“দশ হাজার বছরের বর্ষপঞ্জি” অথবা “চিরকালের বর্ষপঞ্জি)। চায়নায় তিনি “ঝামালুদিং” নামে পরিচিত ছিলেন, যেখানে, ১২৭১ সালে, তিনি খান দ্বারা বেইজিং-এ ইসলামিক মানমন্দিরের প্রথম পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান,ইসলামিক জ্যোতির্বিজ্ঞান-সংক্রান্ত বিভাগ নামে পরিচিত, যা চার শতাব্দী ধরে চৈনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান-সংক্রান্ত বিভাগের পাশাপাশি কাজ করেছিল। ইসলামিক জ্যোতির্বিজ্ঞান চীনে ভাল সুখ্যাতি অর্জন করে তার গ্রহসংক্রান্ত অক্ষাংশের তত্ত্বের কারনে, সেই সময়ে চৈনিক জ্যোতির্বিদ্যায় যার অস্তিত্ব ছিল না, এবং গ্রহণ সম্পর্কে তার নির্ভুল গণনার কারনে।তার কিছুদিন পরেই বিখ্যাত চৈনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী গুয়ো শাউজিং কর্তৃক গঠিত কিছু জ্যোতির্বিজ্ঞান-সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি মারাগেহ’তে তৈরি যন্ত্রপাতির ধরণের অনুরূপ।বিশেষত, “সহজতর যন্ত্র” (জিয়ানি) এবং গাওচেং জ্যোতির্বিজ্ঞান মানমন্দিরের বিশাল গ্নমন ইসলামিক প্রভাবের সাক্ষ্য বহন করে।১৮২১ সালে শাউশি বর্ষপঞ্জি তৈরি করার সময়, গোলকাকার ত্রিকোণমিতি নিয়ে রচনায় সম্ভবত কিছুটা প্রভাবিত হয়েছিল ইসলামিক গণিত দ্বারা, যা কুবলার দরবারে সমাদরে গৃহীত হয়েছিল।এইসব সম্ভাব্য প্রভাব অন্তর্ভুক্ত করে নিরক্ষসংক্রান্ত এবং গ্রহণের স্থানাঙ্ক রুপান্তরের একটি ছদ্ম-জ্যামিতিক ব্যাবস্থা, মূলগত স্থিতিমাপে দশমিকের প্রণালীবদ্ধ ব্যবহার, এবং গ্রহসমূহের চলনের অনিয়মিত হিসেবে ঘনের ক্ষেপকের প্রয়োগ।

মিং রাজবংশের ১৩২৮ সাল থেকে ১৩৯৮ সাল নাগাদ সম্রাট হংয়ু (রাজত্ব ১৩৬৮ সাল থেকে ১৩৯৮সাল নাগাদ,তার শাসনের প্রথম বছরে ১৩৬৮ সালে সাবেক মঙ্গোলীয় ইয়ুয়ানদের বেইজিং-এর জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানসমূহের হান এবং ও-হান জ্যোতির্বিদ্যা বিশেষজ্ঞদের বাধ্যতামূলকভাবে নিয়োগ করেন নানজিং সদ্য প্রতিষ্ঠিত জাতীয় মানমন্দিরের কর্মকর্তা হতে।
সেই বছরে মিং সরকার প্রথমবারের মত জ্যোতির্বিজ্ঞান কর্মকর্তাদের ঊর্ধ্ব রাজধানী ইয়ুয়ান থেকে দক্ষিণে আসার নির্দেশ জারি করে। তাদের সংখ্যা ছিল চৌদ্দ। পর্যবেক্ষণ এবং হিসেব পদ্ধতিতে নির্ভুলতা নিশ্চিত করতে, হংয়ু সম্রাট সমান্তরাল বর্ষপঞ্জি ব্যাবস্থা, হান এবং হুই অবলম্বন জোরদার করলেন। পরবর্তী বছরগুলোতে, মিং দরবার সাম্রাজ্যিক মানমন্দিরে বেশ কয়েকজন হুই জ্যোতির্বিদদের উঁচু পদে নিয়োগ দিলেন। তারা ইসলামিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের উপর প্রচুর বই লিখলেন এবং ইসলামি ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে জ্যোতির্বিজ্ঞানের যন্ত্রপাতিও প্রস্তুত করলেন।দুটো গুরুত্মপূর্ণ রচনা চাইনিজ ভাষায় অনুবাদের কাজ সম্পন্ন হয় ১৩৮৩ সালে জিজ ১৩৬৬ সালে,এবং আল-মাদখাল ফি সিন’আত আহকাম আল-নুজুম, জ্যোতিষবিদ্যার পরিচিতি ১০০৪সালে।

১৩৮৪ সালে, বহু উদ্দেশ্যপূর্ণ ইসলামি যন্ত্র প্রস্তুতির নির্দেশাবলীর উপর ভিত্তি করে একটি চাইনিজ এস্টোলোব প্রস্তুত করা হল নক্ষত্র পর্যবেক্ষণের জন্য । ১৩৮৫ সালে উত্তরদিকের নানজিং-এ এক পাহাড়ে যন্ত্রটি স্থাপন করা হয়।১৩৮৪ সালের দিকে, মিং রাজবংশের সময়, সম্রাট হংয়ু আদেশ করলেন চাইনিজ অনুবাদ এবং ইসলামি জ্যোতির্বিজ্ঞান-সংক্রান্ত সারণীসমূহের সংকলন করার, একটি কাজ যা পণ্ডিতগণ মাশায়িহেই, একজন মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী, এবং য়ু বোজং, একজন চাইনিজ বিদ্বান-কর্মকর্তা দ্বারা সম্পন্ন হয়েছিল। এইসব সারণী হুইহুই লিফা নামে পরিচিতি লাভ করল, যা চীনে ১৮শ শতক পর্যন্ত বেশ কয়েকবার প্রকাশিত হয়, যদিও কিং রাজবংশ ১৬৫৯ সালে চৈনিক-মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথা আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যাগ করে।মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইয়্যাং গুয়াংজিয়ান খ্রিস্টান ধর্মসঙ্ঘের সদস্যদের জ্যোতির্বিজ্ঞান-সংক্রান্ত বিজ্ঞানের প্রতি তার আক্রমণের জন্য পরিচিত ছিলেন।

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:২৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ধন্যবাদ,স্যার।আপনার পোস্টটি পড়ে সমৃদ্ধ হলাম।শুভেচ্ছা রইল।

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৩৫

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:২৭

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: ভাই মুসলিদের গৌরবমাখা ইতিহাস পড়লে ভালো লাগে কিন্ত বর্তমানে মুসলিমরা ভোগে ব্যস্ত। কেমনে ক্ষমতা ধরে রাখা যাবে, কেমনে ৮/১০টি বিয়ে করা যাবে এগুলো নিয়েই মুসলিমরা ব্যস্ত। আফসোস :(

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৩৭

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ঠিকি বলেছেন ভাই তাদের জন্য বড়ই আফসোস হয়।

৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৩১

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: আলবাৎ প্রিয়তে...........

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৩৫

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: প্রিয় ভ্রাতা আন্তরিক কৃতঃ এবং শুভকামনা রইল।

৪| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৬

কানিজ রিনা বলেছেন: অনন্য দায়ীত্বশীল হা হা হা ভালই বলেছেন।
মুসলিম পুরুষরা ছোটলোক থেকে বড়লোক
পয়সা ওয়ালা হলে দুইচারটা নারী নিয়ে আনন্দ
করে গা ভাসিয়ে চলে। তাই বলে সবাই না।
অথচ মুসলিমদের গৌরবমাখা ইতিহাস পড়লে
অহংকার জাগে। এখন নামের মুসলিমরা দল
বেদলে হিংসায় লিপ্ত। ইতিহাস পড়লে জানা
যায় মুসলিমরা জ্ঞান বিজ্ঞানে কতটা পারদর্শী
ছিল। অথচ মুসলিম আমরা এখন কতটা
পিছিয়ে গেছি। ধন্যবাদ আপনার লেখনিতে
সুন্দর কিছু তুলে ধরেছেন।

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ কানিজ রিনা আপু।

৫| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৩০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ফিরে আসুক সেই জ্ঞানচর্চার চেতনা। জেগে উঠুক আত্মপরিচয়ের মূলমন্ত্রে জ্হানে বিজ্ঞানে, ধ্যানে

++++

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:২১

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ ভ্রাতা।

৬| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:৩২

চাঁদগাঝী বলেছেন: এইসব বাদ দিয়ে অন্যকিছু লিখেন কাজ দিবে। ;)

০৬ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:১৩

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ঠিক আছে চেষ্টা করে দেখব আরো জোরালো ভাবে লেখার জন্য।

৭| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৯

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: বস লাইক সহ প্রিয়তে।

০৬ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:১৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ।

৮| ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:২৪

মলাসইলমুইনা বলেছেন: সুন্দর | মুসলিমদের জ্যোতির্বিদ্যার ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ ইতিহাস | তাড়াহুড়ো না করে বিস্তারিত ভাবে কয়েক পর্বে লিখবেন আশাকরি |

০৬ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৫৭

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ নাইমুল ইসলাম ভাই। এ পযন্ত তিন পর্ব লিখেছি ।আশা আছে আরো দুই তিন পর্বে লেখার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.