![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"পাইছি মোয়াক্কেল," মনে মনে ভাবে সামশুল রিক্সা চালাতে চালাতে। পিছনে বসে থাকা যাত্রীটা মোবাইলে কথা বলছে। কথা শুনেই বোঝা যাচ্ছে বেটা শহরে নতুন। এমনিতেই বেশি ভাড়া চাওয়াতে লোকটা রাজী হয়ে গিয়েছিল। এখন মনে হয় দশ টাকা আরও বাড়তি মারা যাবে। লোকটার কথামত ঘুরিয়ে পেচিয়ে দুই জায়গায় আশেপাশের মানুষজনকে জিজ্ঞেস করে যাত্রীটার গন্তব্যস্থানে পৌঁছিয়ে দিয়ে গলার ঘামছা দিয়ে মুখের ঘাম মুছতে শুরু করল সামশুল। খুব বেশি বয়স হবেনা লোকটার। বড়জোর ত্রিশ। রিক্সা থেকে নামতে নামতে মানিব্যাগ থেকে একটা পঞ্চাশ টাকার নোট বের করে লোকটা।
'আর দশটা টাকা দেন ,মামা,' দাবির সুরে চাইল সামশুল। লোকটা এমনভাবে তাকাল যে তার মুখ দেখে মনে হল এইমাত্র সে তার বাবার মৃত্যুর সংবাদ পেল। শুকনো গলায় বলল,'কেন মামা, আপনি না পঞ্চাশ চাইলেন।'চাইছিলাম তো, কিন্তু আফনে তো মেলা ঘুরাইয়া আনাইলেন। দেন মামা, পারবেন দিতে। নাহলে কি আর এমনে চাই, কন আপনি?'
কি যেন ভাবে লোকটা। তারপর মানিব্যাগ থেকে আরও দশ টাকা বের করে দেয় সামশুলকে। টাকাটা এমনভাবে সামশুল নেয় যেন এটা তার প্রাপ্যই ছিল। খুশি হওয়ার কোন কারণ নেই। লোকটা চলে যেতেই মনে মনে একটা হাসি দেয় সামশুল। তারপর রিক্সা নিয়ে এগিয়ে যেতে শুরু করে। একটা মোড়ের কাছে এসে থামে সামশুল। আরও কিছু রিক্সায়ালা ছিল সেখানে। পকেট থেকে টাকা বের করে গুনতে শুরু করে সামশুল।
হঠাৎ হই হই আওয়াজে চোখ তুলে তাকায় সামশুল। এক সেকেন্ডের মধ্যে বিশাল একটা ঘটনা ঘটে যায়। রাস্তার মাঝখানে হঠাৎ একটা বাচ্চা মেয়ে কোথা থেকে দৌড়িয়ে আসে। একটা গাড়ি আসতে দেখে ভয়ে দাঁড়িয়ে থেকে যায় গাড়ির সামনে। ঠিক তখনই অপর পাশ থেকে একটা ছেলে লাফ মেরে এসে বাচ্চাটাকে তুলে নিয়ে সরে যাওয়ার চেষ্টা করে। গাড়িটাও মুহূর্তের মধ্যে স্লো করে ফেললেও অল্পের জন্য একটা বড় ধাক্কা খায় ছেলেটা। ছিটকে পড়ার সাথে সাথে ডান পায়ের উপর একটা চাকা পড়ে যায়। গাড়িটা স্লো করার কারনে হয়ত সে সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্বের হাত থেকে বেচে যাবে কিন্তু তারপরেও পায়ের গিড়ার উপর অংশটা ভাঙার হাত থেকে বাচাতে পারল না।
ছেলেটা উঠতেই গাড়ির ড্রাইভার হন্তদন্ত হয়ে দরজা খুলল। সেটা আবার ছেলেটার নাকে লাগতেই আবার ধাপ করে শুয়ে পড়ে। 'ভাই, সরি।' আর কিছু ভেবে পায়না গাড়ির ড্রাইভার বলার মত। আবার আস্তে আস্তে উঠে বসে ছেলেটা। বাচ্চা মেয়েটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। 'না,ভাই ঠিক আছে। বাচ্চা মানুষ তো তাই। বুঝতে পারেনি।'
চারপাশের লোকজন জড় হয়ে গেছে কিন্তু কেউই ছেলেটার অদ্ভুত কথাবার্তা শুনে এগিয়ে যাচ্ছে না। অদ্ভুত কায়দায় এক পায়ের উপর ভড় করেই বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে গাড়ি ধরে দাঁড়ায় সে। সামশুল রিক্সা নিয়ে এগিয়ে যায় ছেলেটার দিকে। নিজ থেকেই ছেলেটা বলছে,'আমার ছোট বোন। এখানে যে কিভাবে এল।'
সামশুলকে দেখতেই সে বলল, 'মামা, যাবেন?' '
'আপনি উঠেন।'
'ঐ সামনের গলিতে নামব।'
সামশুল আবারও বলে, 'উঠেন।'
'দশ টাকা দিব কিন্তু।'
'আপনি উঠেন তো।' এইবার ধমকের সুরে বলে সামশুল। ছেলেটা আবারও অদ্ভুত কায়দায় রিক্সায় বসতেই সামশুল তাড়াতাড়ি রিক্সা চালাতে শুরু করে।
সামনের গলির কাছে যেতেই একটা প্রকাণ্ড বাড়ি দেখা যায়। আর বাড়ির সামনে দুইজন মহিলা দাঁড়িয়ে। বোঝাই গেল বাচ্চা মেয়েটাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে এখন ভয়ে অস্থির হয়ে পাথরের মত দাঁড়িয়েছিল।
সামশুল রিক্সা থামাতেই দুইজন মহিলার একজন ছোঁ মেরে মেয়েটাকে কোলে নিল। তারপর তারা দুইজন চোখ মুছতে মুছতে বাড়ির দিকে এগোতে শুরু করল। রিক্সা থেকে নেমে ছেলেটা এক পায়ের উপর দাঁড়িয়ে পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করতে গেলে সামশুল বলল,'মামা, আপনেরে এইবার না একটা কইষা একটা থাপ্পর মারুম।' ছেলেটা শুধু হাসল কিন্তু কিছু বলল না। সামশুল অবাক হয়ে গেল। মহিলা দুজন কি পাষাণ! 'এই যে আপনারা শুনুন।' সামশুল এইবার বলে উঠল। 'আপনেরা তো একবার ইনার পায়ের দিকে তাকাইবেন। হে তো নিজের পা ভাইঙ্গা মাইয়াটারে বাচাইল।'
মহিলা দুইজনের এবার হুঁশ এল। ছেলেটাকে ঘরে নিয়ে যেতে এগিয়ে এল। 'মামা, চা খেয়ে যান তাহলে।' 'আইছে, চাআলা। আপনারেই ঢুকতে দেয় না' এই বলে সামশুল রিক্সা নিয়ে আগাতে শুরু করল।
রিক্সা নিয়ে চোখের আড়াল হতেই সামশুলের মনটা খারাপ হয়ে গেল। ছেলেটার সাথে ওভাবে কথা বলা উচিত হয়নি। সাধাসিধে বলে সে থাপ্পড়ের কথা পর্যন্ত বলে বসল। অথচ ওর বয়সের কত ছেলের কাছে চড় থাপ্পড় খেয়ে মাথা নত করে রেখেছে। সেই মহিলা দুজন সাধাসিধে পেয়ে যেরকম ব্যবহার করেছে সামশুলও তাই করল। ব্যাপারটা ভাবতেই সামশুলের চোখে পানি চলে আসল।
#
ঘটনাটা ঘটেছে মেলাদিন হয়ে গেল কিন্তু সামশুল এখনও ব্যাপারটা মাথা থেকে ঝাড়তে পারেনি।সামশুল ঐ মোড়ে যখন দুর্ঘটনাটা ঘটেছিল ওই সময়ে প্রতিদিন যেয়ে বসে থাকত।
প্রায় ২০-২৫ দিন পর সামশুল ছেলেটাকে দেখতে পেল। সামশুল জোড়ে মামা বলে ডাক দিতেই ছেলেটা ল্যাংচিয়ে ল্যাংচিয়ে তার দিকে এগিয়ে এল।'চলেন মামা, চা খাইয়া আসি। রিক্সায় উঠেন।' 'আজকের জার্নিও কি ফ্রি?'হাসি মুখে জিজ্ঞেস করে ছেলেটা। 'হ, ফিরি। আপনে উঠেন।'
ছেলেটা রিক্সায় উঠতেই সামশুল রিক্সা চালানো শুরু করল। সেদিন ঘটনার অস্থিরতায় ছেলেটাকে ঠিকমত খেয়াল করা হয়নি। আজকে একবার দেখতেই ছেলেটার ছবি মনের ভিতর গেঁথে গেল সামশুলের। হালকা-পাতলা গড়নের, উজ্জ্বল শ্যামবর্ণের ছেলেটার চোখ হালকা ধুসর রঙের। আর চুলগুলো হালকা নীলচে। এরকম চুল সামশুল আগে কখনও দেখেনি। পড়ে আছে একটি টি শার্ট আর জিন্স। দেখলেই বোঝা যায় ভালো ঘরের ছেলে।
'মামা, বিরি চলব?' জিজ্ঞেস করে সামশুল। মাথা নেড়ে সম্মতি জানায় ছেলেটা। ছেলেটার জন্য একটা বেনসন কিনলেও নিজের জন্য একটা দুই টাকার সিগারেট নেয় সে। তারপর দুই কাপ চায়ের কথা বলে ছেলেটার পাশে বসে পড়ে।
'মামা কি আমার উপর রাগ করছেন?' সামশুলের কথা শুনে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, 'কেন মামা, রাগ করব কেন?' ' না, আপনার লগে যে ওইরকম ব্যবহার করলাম। ছেলেটা মনে হয় সব সময়ই হাসে। আবারও হেসে বলল, 'না মামা, রাগ করিনি। আপনিতো আমাকে চিনতেনই না। তারপরও আমার সাথে নিজের মামার মত দাবি নিয়েই ব্যবহার করেছেন। এটা কয়জন করে?'
ছেলেটার কথা শুনে মনটা আনন্দে ভরে গেল সামশুলের। এই যুগের ছেলেমেয়েরা কত খারাপভাবেই না গরিবদের সাথে কথা বলে। আর এই ছেলেটা কি সুন্দর করে হেসে হেসে কথা বলে। 'ওই মেয়েটা কি আপনের আপন বোন ছিল?' প্রশ্ন করে সামশুল। 'না, ওইটা আমার চাচাত বোন ছিল।' 'ওই জন্যই ঐ দুইজন মহিলার আপনেরে নিয়া কোন মাথাব্যথা ছিল না। ছিল কে ঐ দুইজন?' 'একজন আমার চাচি আরেকজন চাচির বোন।' সামশুল তখন বলে,'মামা, আপনের চাচিরে কিন্তু ভাল মানুষ বলবার পারুম না।' ছেলেটা বুঝিয়ে বলে সামশুলকে,'মহিলাদের কাছে সবসময় সন্তান আগে। তারা তখন তাদের সন্তান ফিরে পেয়ে বেহুঁশ ছিল। বেহুঁশ মানুষ কোন কিছু খেয়াল করে না।'
ছেলেটার কথা শুনে কেমন যেন লাগে সামশুলের। এই যুগের ছেলেমেয়েরা কেউ এভাবে চিন্তা ভাবনা করে না। আগ্রহ করে তাই জিজ্ঞেস করে,'আপনি কোথায় পড়াশুনা করেন?' 'আমি পড়ালেখা করি না।' 'পড়ালেখা শ্যাষ!' অবাক হয় সামশুল। 'না, পড়ালেখা শেষ করতে পারিনি।'
এরকম একটা ছেলে পড়ালেখা শেষ করেনি ভেবে সামশুলের কেমন খটকা লাগে। তাই জিজ্ঞেস করে বসে,'আপনি কি একা?' 'হ্যা মামা, আমি একা।' হাসতে হাসতে মাথা নিচু করে বলে ছেলেটা। ছেলেটার জন্য খারাপ লাগে সামশুলের। এতক্ষণে যে নামই জিজ্ঞেস করা হয় নি তা এইবার খেয়াল হয়।'আপনের নাম কি,মামা?' 'আমার নাম হিমু।'
'হিমু!' অবাক হয় সামশুল। 'পুরা নাম কি?' হাসতে হাসতে ছেলেটা উত্তর দেয়,'হিমালয়।' 'আমার লগে মজা নিতেছেন তাই না,মামা।' ছেলেটা খুব মজা পায় সামশুলের প্রতিক্রিয়া দেখে,'বাহ,মামা দেখি হিমুর নামও জানেন।'
'জানুম না ক্যান? প্রতিবছর কত হিমুরে নিয়া যাই, কি জানি অনুষ্টান হয় একটা, ওইডাতে। লগে তাদের রুপা থাকে। তা আপনের রুপা নাই? আর হলুদ পাঞ্জাবি পড়েন নাই কেন?'
'হিমু হতে হলে হলুদ পাঞ্জাবি লাগবেই নাকি? ওরাতো হিমু সাজে আর আমি তো নিজেই হিমু।' 'মামা,আপনে না মানুষ না।' হাসতে হাসতে এইবার বলে সামশুল।
এতক্ষণে ছেলেটার মুখের হাসি ম্লান হতে দেখল সামশুল। মাথা নিচু করে বলে, 'ঠিক বলছেন,মামা। আমি মানুষ না, একটা জানোয়ার। সেজন্য মানুষ আমাকে ঘৃণা করে। কিন্তু একটা কথা ভাবি আমি। যাদের জন্য আমি জানোয়ারে পরিণত হয়েছি তারা তো যোগ্য সম্মান নিয়েই সমাজে আছে।'
'ছি!ছি! মামা। আমি কি হেই কথা কইছি। আপনে হলেন ফেরেশতা। কিন্তু আপনে এই কথা কন ক্যান?' আকাশ থেকে পড়ে সামশুল। এই ছেলে কি বলছে এইসব! চোখের দিকে তাকাতেই সামশুল দেখতে পায় পানি ছলছল করছে। বুঝতে পারে ছেলেটার মনে অনেক দুঃখ। 'আপনের কি অনেক কষ্ট ,মামা?' 'এক সময় অনেক ছিল। কষ্টগুলো এখন সয়ে গেছে। এখন আর কোন কষ্টেই কিছু হয় না।' সামশুল বোকার মত বলে ফেলে,' সেইদিনকার অ্যাকসিডেন্টে কি এইজন্যই কি আপনের কিছু হয় নাই? এত তাড়াতাড়ি তো পা ঠিক হওনের কথা না।'
ছেলেটার মুখে আবারও হাসি দেখতে পায় সামশুল। 'একদম ঠিক ধরেছেন মামা। শারীরিক যন্ত্রণাগুলোও আর আমাকে কাবু করতে পারে না।'
'আপনারা কি চা খাবেন?' হঠাৎ চায়ের দোকানদারের কথায় মনে পড়ল সামশুলের চায়ের কথা। কখন যে চা বানিয়ে তাদের পাশে রেখে দিয়েছে কথা বলতে বলতে খেয়ালই করেনি ওরা দুজন। কাপদুটো হাতে নিয়ে দেখল একদম ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। 'ঠাণ্ডা চাই খাইয়া দেহেন মামা। আলাদা মজা আছে। আর কিছু ভেবে পায় না বলার মত সামশুল। ঠাণ্ডা চায়েই দুজন হেসে চুমুক দেয়।
'মামা আপনের আব্বা-আম্মার কি হইছে?' চায়ে চুমুক দিতে দিতেই ছেলেটা বলে একটু দীর্ঘশ্বাস ফেলে, 'আছে তারা তাদের বাড়িতে, তাদের মত।' 'আপনে না কইলেন আপনে একা!' 'আরে মামা, বয়স হইছে কিন্তু অভিজ্ঞতা হয়নি এখনও দেখি। আশেপাশে মানুষ থাকলেই কি শুধু হয়, কাছে থাকতে হয়।' আবারও হাসে ছেলেটা।
সামশুল ছেলেটার কথাবার্তা ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। একটু ইতস্তত করে জিজ্ঞেস করে জিজ্ঞেস করে, 'আপনের সবাই কি আপনেরে ছাইড়া দিছে?' 'না, তা ছাড়বে কেন? কিন্তু পাশেও নাই।' সামশুল এবার বুঝতে পারে যে ছেলেটাকে তার পরিবারের সবাই ত্যাগ করেছে। একটা কথা মাথায় আসে। কিন্তু জিজ্ঞেস করা ঠিক হবে কিনা ভাবে সামশুল।
ছেলেটাও চট করে মনের কথাটা ধরে ফেলে, 'যা প্রশ্ন মাথায় এসেছে জিজ্ঞেস করে ফেলেন, সমস্যা নাই।' 'আপনে কি নেশা-টেশা করেন?' 'আসলে মামা, সব ধরনের অভিজ্ঞতা থাকাটাও কিন্তু মন্দ না। তবে নেশার জন্য আমাকে কেও ছাড়েনি।আমি আরও অনেক কিছু করেছি। সেগুলো ভুলে থাকার জন্য একসময় নেশা করতাম।'
এতটুকু ছেলে খারাপ পথে যেয়ে নেশা ছাড়া আর কি করতে পারে মাথায় আসে না সামশুলের। তারপরও জিজ্ঞেস করে করে, 'আমাকে বলবেন আপনে কি করছেন?' 'না মামা, তা বলা যাবে না। যত বেশি মানুষ আমার কীর্তিকলাপ জানবে তত বেশি মানুষের সামনে যেতে আমার লজ্জা লাগবে। ব্যাপারগুলো বেশি মনে পড়বে। থাক না হয় ওগুলো।'
ছেলেটার জন্য সামশুলের মনে সত্যিই এবার মায়া জন্মে। সান্ত্বনা দেয়ার জন্য শুধু বলে, 'মামা, যা হইছে তা হইয়া গেছে। ভুইলা যান ওগুলা। এইবার সামনে আগান।' 'তা সবসময় সম্ভব হয় না। একটা না একটা সময় এসে আবারও সব মনে পড়ে যায়। শরীরের কোন জায়গা কেটে গেলে তা সেরে গেলেও একটা দাগ থেকে যায়। দাগটা কখনও মুছে না। চোখে পড়ে প্রায়ই।'
এবার সামশুল দীর্ঘশ্বাস ফেলে, 'নাহ, আপনের লগে পারন যাইব না। সন্ধ্যা তো প্রায় হইয়া গেছে। আমি একটা নিরবিলি জায়গা চিনি। চলেন ওইহানে চাঁদ দেখতে যাই।' 'আজকে পূর্ণিমা নাকি?'
হাসতে শুরু করে সামশুল, 'হিমু হিছেন অথচ চাঁদের হিসাব জানেন না। এইডা কেমন কথা।' ছেলেটাও হাসতে হাসতে বলে, 'হিমুও তো ভুল করতে পারে। হয়ত এখনও আমার মাঝে কিছু মানুষের অংশ থেকে গেছে।' 'হইছে, অনেক কথা। এইবার রিক্সায় চড়েন।' 'আপনি বসেন, আমি চালাই।' 'নাহ, আপনে আকসিডেন্ট কইরা ফালাইবেন।'
ছেলেটা রিক্সায় চড়ে বসলে সামশুল চালাতে শুরু করে। দূর থেকে তাদের অস্পষ্ট কথাবার্তা আর হাসাহাসি চায়ের দোকানদার শুনতে পায়।।.........আপনি কিভাবে জানলেন আমি আজকে আসব।....... আমি প্রতিদিনই এইহানে আসি.......তাই.........নাকি.....
২| ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:৩৮
আলী অয়ন বলেছেন: সময় করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:১১
প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ