![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা ছোট ছেলে ছিল। সে নিজের মত করে চলত। অল্পতেই খুশি থাকত সে।বেশি চাওয়া-পাওয়া তার ছিল না। ঘরের মধ্যেই সে এদিকে ওদিকে হেঁটে বেড়াত। জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখত। ভাবত, দুনিয়াটা অনেক সুন্দর। কিন্তু একদিন তার মা তাকে আগুনের মধ্যে ছুড়ে ফেলে দিলে তার খুব খারাপ লাগে। নিজের চেষ্টাতেই সে আগুন থেকে উঠে আসে। তার মা তার সাথে কেন এমন করল সে বুঝতে পারে না। তারপরেও সে তার মাকে আপন করে নেয়। মাঝে মধ্যে তার আগুনে পোড়া অংশগুলো জ্বালা করত। কখনও কখনও তার মা তাকে আদর করত। আবার কখনও খারাপ ব্যবহার করত।
জীবনে চলার পথে আরও অনেকের সাথে তার পরিচয় হয়। সবাইকে সে আপন করে নেয়। একদিন তার জন্মদিনে একজন বয়স্ক লোক তাকে একটি সুন্দর নকশা করা ছুরি উপহার দেয়। বলে, ছুরিটা নাকি একদিন ছেলেটার প্রয়োজন হবে। ছেলেটি কিছুই বুঝতে পারে না। সে নিজের মত চলতে থাকে।
একটা সময় ছেলেটা বুঝতে পারে আশেপাশের সবাই তাকে ব্যবহার করছে। ছেলেটার তখন বুঝে যে তার মা জীবন যুদ্ধে তৈরি হওয়ার জন্য তাকে আগুনে ফেলেছিল। এরপর থেকে কারও কাছে থেকে কষ্ট পেলেই ছেলেটা তার ছুরি দিয়ে নিজের হাতের কোন অংশে কেটে দাগ দিত। কারন, ছোটবেলায় আগুনে পরে যেয়েও সে শক্ত হতে পারেনি।
যত দিন যায় তার দুই হাতে কাটা দাগের সংখ্যা বাড়তে থাকে। একটা সময় সে ভেঙ্গে পড়ে। সব সময় সে কাঁদতে শুরু করে। কিন্তু সে জানে সমাজে এইভাবে সে চলতে পারবে না। তাই সে একটি কাগজের মুখোশ বানায়। মুখোশটির মুখে ছিল হাসি আঁকান। ছেলেটা মুখোশ পরে সব জায়গায় হেঁটে বেড়াত। আর ভাবত সব মানুষই একই রকম। কিন্তু সে কেন আলাদা। তাহলে কি সে মানুষ না। নাকি তুচ্ছ অন্য কোন প্রানী।
একদিন বৃষ্টিতে তার মুখোশটা নষ্ট হয়ে যায়। পুকুরের পানিতে তাকিয়ে দেখে সে আর আগের মত নেই। তার বয়স অনেক বেড়ে গিয়েছে। সবাই আগের মত থাকলেও তাকে দেখাচ্ছে আশি-নব্বই বছরের বুড়ার মত। ছেলেটা তখন দৌড়ে ঘরে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দেয়। কারও সাথে আর দেখাও করে না আর কথাও বলে না।
একদিন সূর্য উঠলে সে ভাবে নতুন দিন হয়ত এসেছে। কিন্তু ঘর থেকে বের হওয়ার সময় সে দেখে সে হাটা ভুলে গিয়েছে। অনেক চেষ্টার পর সে এক সময় দৌড়াতে শুরু করে। কিন্তু পথে প্রায় সময়ই তার হাতের কাটা দাগগুলো জ্বালা করে উঠে।
©somewhere in net ltd.