![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একদিন ফিরে এসে যদি দেখিস কোথাও জল জমে আছে তাহলে বুঝে নিস কেউ এসে চোখের জল ফেলে গেছে।
সম্প্রতি "ক্ষ" নামক ব্যান্ডের গাওয়া নতুনধর্মী ," আমার সোনার বাংলা", গানটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এই গানটিকে নিজের মতন করে গান গাওয়ার কারনে সবাই অগ্নিশর্মা হয়ে উঠেছেন। এই ব্যান্ডটি একটা বিষয় ভুলে গেছে সেটি হচ্ছে, সব গান নিজের মতন করে গাওয়া যায় কিন্তু নিজের জাতীয় সঙ্গীত কখনো পরিবর্তন আনা যায় না। এজন্যে দেশদ্রোহতার ব্যাপারও উঠে এসেছে ।
আমারা সোনার বাংলা যেহেতু আমাদের জাতীয় সঙ্গীত তাই স্বাভাবিকভাবে এর বিকৃতকরন দেশদ্রোহের ভিতর পড়ে যায়। যেহেতু, যারা সঙ্গীত চর্চা করেন তাদেরকে কোন প্রকার নীতিমালা সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কিনা আমার জানা নেই যদি দেওয়া হয়ে থাকে আর যদি সেটা মানা না হয় তাহলে সেটা "ক্ষ" ব্যান্ডের জন্যে এককভাবে অপরাধযোগ্য আইনের আওয়াতায় পড়ে যায় কিন্তু যদি তারা না জেনে কাজটি করে থাকেন তাহলে মন্ত্রনালয়ের অপরাধও ধরা উচিত।
আমাদের দেশের নীতি নির্ধারকগনের মূর্খতার কারনে আমার মাথা একটা প্রশ্ন ঘুরে দেশদ্রোহ শব্দটির ব্যপ্তি অথবা মমার্থটা কি? যদি জাতীয় সঙ্গীত ব্যতিত অন্যান্য যে কোন একটা বাংলা গানের সুর বা কথা পরিবর্তন অপরাধযোগ্য হয় তাহলে সেটা হওয়ার দেশের শিল্পীর সুনাম কতটুকু ক্ষতি হয়েছে আমারা জানা নেই। আবার ক্ষতির অর্থে যদি বাংলা ভাষার বিকৃত কথাটা চলে আসে। আমাদের দেশে যদি বাংলার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা হয় তাহলে সেগুলো বিকৃত বাংলা ভাষা চলে আসে। তাহলে শুদ্ধ ভাষাভাষির বাইরের মানুষগুলো সবাই দেশদ্রোহী এবং তাদের দেশপ্রেম নেই। সব কিছু মিলিয়ে আমাদের অবস্থা খুব শোচনীয় লেজগোবরে।
আমার মনে হয় আমাদের দেশে বদ্ধমূল ধারনা নিয়ে পড়ে থাকা একটা সঙ্গীতবুদ্ধিজীবীরা, কখনো ভাবে নি নতুন কিছু নতুন ঢংয়ে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শুধু রবীন্দ্র সঙ্গীতকে নয় সকল বাংলা সঙ্গীতকে নতুন প্রজম্মের কাছে জনপ্রিয় করে দেওয়া। তারা এই সহজ কথাটা বুঝতে পারছে না কেন আমি সেটা বুঝতে পারছি না। তারা ভারত থেকে নামীদামী গায়ক গায়িকাদের তোষামোদ করতে পারেন কিন্তু তারা খেয়াল করেন নি আমাদের দেশের গায়ক-গায়িকারা তাদের থেকে কোন অংশে কম নয়। রবীন্দ্র সঙ্গীত গানের সুরের পরিবর্তনে তাদের যদি এত সমস্যা তারা কি ভারতে গিয়ে দেখেন নি, শুনেন নি এর আর রহমানের নতুন রূপ "বন্দে মাতরম"। যা ভারতের নতুন প্রজম্মকে দারুন প্রভাবিত করেছে।
আমরা চাই আমাদের বাংলা ভাষার শক্তিশালী অবস্থান । তাই আজই নতুনভাবে ভাষাকে ঢেলে সাজাই। সামনে আসছে ভাষা আন্দোলনের মাস। আমাদের শ্লোগান হোক, আমার ভাষা হোক শক্তিশালী। ভবিষ্যতে যাতে আমাদের শুনতে না হয়, "হেই ম্যান ওয়াজ আপ" ।
২৮ই জানুয়ারী , ২০১৩
--------------------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজেক্ট ২৩১/৩৬৫
(বিলম্বে আপলোডের জন্যে দুঃখিত।)
২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩২
অয়ন আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার দারুন বিশ্লেষনমূলক উক্তির জন্যে আমি যেটা বলেছি সেটি একটা উদাহরনস্বরূপ। আমার কথা মূল বিষয়বস্তু নিয়মের ভিতরে থেকে পরিবর্তন।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:০১
অচিন্ত্য বলেছেন: বিষয়টি লেখার জন্য ধন্যবাদ। ‘ক্ষ’র এই কাজটিকে ঘিরে ইতি এবং নেতি দুই ধরণের অনুভূতিই আমার হয়েছে। (এটা নিয়ে আমি একটি পোস্টও দিয়েছি।) তবে গানটিকে ‘বিকৃত’ করা হয়েছে এই কথাটি মনে হয় ঠিক না। স্বরবিতানে উল্লিখিত স্বরলিপি ওরা কিঞ্চিৎ এড়িয়ে গেছে এটা সত্যি। কিন্তু এই গানটি আমরা ছোটবেলা থেকে যেভাবে শুনে এসেছি, তা কখনোই স্বরলিপি শতভাগ অনুসরণ করে নি। আপত্তির একটি কারণ হতে পারে গানটি শুরু করা হয়েছে মাঝ খান থেকে। আর যন্ত্রানুষঙ্গে নতুন একটি প্রচেষ্টা খেয়াল করা যাচ্ছে। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর সময়ে অত্যন্ত আধুনিক ছিলেন। তিনি তাঁর নিজের গানে ওয়েস্টার্ন ইন্সট্রুমেন্ট এত ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছেন যা ঐ সময়ে অনেকেই করেন নি। আমার কেন যেন মনে হয়, তিনি এখনকার সময়ের মানুষ হলে তাঁর গানের সাথে ইদানিং যে ধরণের যন্ত্র বাজানো হয়, তিনি নিজেই তা উৎসাহিত করতেন।
হ্যাঁ, এটি আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। কিন্তু এটিই এই গানের একমাত্র পরিচয় নয়। ‘ক্ষ’ গানটি পরিবেশনের সময় নিশ্চয়ই জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে পরিবেশন করে নি। আর দশটা গানের মত গান হিসেবে পরিবেশন করেছে। সবচেয়ে বড় কথা ভালবেসে করেছে।
আরেকটি বিষয়ে একটু দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। আপনি আঞ্চলিক ভাষাকে ‘বিকৃতি’ বলেছেন। বিষয়টি তেমন নয়। একটি ভাষার প্রমিত কাঠামো থেকে বিচ্যুত হলে তাকে আমরা বিকৃতি বলি। কারণ ভাষার প্রমিত কাঠামোটি নির্দিষ্ট। ঠিক তেমনিভাবে আঞ্চলিক ভাষার কাঠামোও কিন্তু সুনির্দিষ্ট। কেউ আয়ত্ত্ব না করে কোন বিশেষ অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে সমর্থ হবেন না। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক ভাষা বলার সময় যদি আঞ্চলিক কাঠামো থেকে সরে যাওয়া হয়, সেটি হবে বিকৃতি। আঞ্চলিক ভাষার গুরুত্ব কিন্তু সব ভাষায়, সব সাহিত্যে দেওয়া হয়ছে। আমাদের বাংলা ভাষাতে প্রচুর সাহিত্যকর্মে আঞ্চলিক ভাষায় পাত্র-পাত্রীর সংলাপ রচিত হয়েছে। ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলাদেশে আঞ্চলিক ভাষার একটি অভিধানও রচনা করেছিলেন।
শেষের দিকে এ.আর.রহমানের উদাহরণের কথা পড়ে ‘ক্ষ’র গানটির প্রতি আপনার মনোভাব নিয়ে একটু কনফিউজড হয়েছি।
ধন্যবাদ