| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অয়ন আহমেদ
একদিন ফিরে এসে যদি দেখিস কোথাও জল জমে আছে তাহলে বুঝে নিস কেউ এসে চোখের জল ফেলে গেছে।
প্রচন্ড রৌদ্র তপ্ত রাস্তা ।সবে দুই কিলো হাঁটা হয়েছে।এখনো শ’য়ে শ’য়ে রাস্তা বাকি। একদল মানুষ হাঁটছে সাগর তীর ফেলে।
“বাবা আমি পানি খাব “, ছোট মেয়েটা হাঁপাচ্ছে।কিছু পথ বাবার কোলে, কিছু পথ মা’র কোলে আর বাকিটা রাস্তা বাবা মা ক্লান্ত হয়ে ছোট মেয়েটিকে গরম পিচের রাস্তাটা নামিয়ে দিয়ে হাঁটছে।সারি সারি মানুষ পিপিলিকার মত হাঁটছে।পাশ ধারে থাকা সব দোকান পাটের সব পানি শেষ হয়ে গেছে।পানি পিপাসার্ত ক্লান্ত সবাই।অথচ তারা ক’দিন বিশাল সাগরের জলে ঝাঁপিয়েছে।এখন রাস্তায় রাস্তায় কান্নাকাটি, পানির জন্যে আকুতি।কিছু দূর হাঁটতে হাঁটতে ছোট মেয়েটি আবার বললো, “বাবা আমরা সবাই কি পানি না খেয়ে মরে যাবো?”।বাবা তাকে কোলে নিয়ে জড়িয়ে ধরলো অশ্রুসিক্ত নয়নে।
গত ক’দিনের খুব গন্ডোগোলে কক্সবাজার ও পাশ্ববর্তী কোথাও কোন পরিবহন চলছে না।তাই বাধ্য হয়ে সবাই হেঁটে ফিরছে ঢাকাতে কিন্তু কখন ফিরবে কেউ জানে না।হয়ত কেউ ফিরবে কেউ ফিরবে না।আবার কেউ হয়ত ফিরবে সেই না ফেরার দেশে।
আমি বিমর্ষ, আজ যখন শুনলাম ছোট চাচা পথিমধ্যে ফোন দিয়ে বাবাকে এই কথাগুলো বলছিলেন।ছোট চাচা ফিরছেন সূদুঢ় চুনতি থেকে।ভোরবেলাতে রওনা দিয়েছেন ঢাকা উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে, যেমনতি যুদ্ধের সময় কুমিল্লার গ্রামগুলোতে প্রায়ই যুদ্ধ করতে যেতেন।আজ একপ্রকার যুদ্ধ করতে করতে ঢাকায় রওনা দিয়েছেন।
আমার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে সেই সব মানুষগুলোর উপর যারা আমার প্রিয়মানুষগুলোকে আজ রাস্তায় হাঁটাচ্ছে।তারা পানির জন্যে হাহাকার করছে।কারবালার গল্প আমার চোখে মুখে ভাসছে।ভাবতেই চোখের জল চলে আসছে।আমি উপরের দিকে তাকিয়ে আছি, উপরওয়ালার এই অবিচারের করবেন।আমি আল্লাহ এর কাছে মনে প্রানে দোয়া করছি যেন সেই ছোট মেয়েটা পানি না পেয়ে মরে না যায়।
১লা মার্চ, ২০১৩
--------------------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজেক্ট ২৬৩/৩৬৫
(বিলম্বে আপলোডের জন্যে দুঃখিত)
©somewhere in net ltd.