![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মা, তোমার শাড়ির সুরভী গন্ধ থেকে ফ্রেশ অক্সিজেনটা আমি এখনো খুঁজি! মা!
সৌভাগ্যক্রমে আমি একটা ভাল চাকুরী করি মরুভূমিতে, বিশেষ সুবিধাগত কারনে ৩-৪ মাস পরপর প্রিয় মাতৃভূমিতে আসা যাওয়া করি, বিগত বছর গুলোতে সব সময় বিকাশ নামে একজন ড্রাইভার আমাকে এয়ারপোর্টে আনা নেয়ার কাজ করতো, প্রতি ট্রিপে ৪ হাজার টাকা ভাড়া +৫০০ টাকা বকশিস, পথে চা–সিগারেট খানাপিনা দেদারছে খরচ করি তাঁর জন্য, শুধু মাত্র আনন্দময় নিরাপদ ভ্রমনের জন্য!
পরাধীন হয়ে ভিন দেশের লাক্সারি কলোনিতে বাস করে ২৪ঘণ্টা রোডরাইজ, ডজি, বেনটলে, জাগুয়ার গাড়ি দাবড়ানো সাদা চামড়ার জনতা দেখে দেখে এয়ারপোর্টে নামলেই স্বজনদের জন্য অপেক্ষমাণ লোকজন দেখলে আমার খুব মন জ্বলে! বেশীর ভাগই গেরামের ছেলে মেয়ে, রোদে পোড়া চামড়া, শ্যাম্পুবিহীন রুক্ষ চুল, মনে হয় কত দিনের তৃষ্ণার্ত মুখ! তেমনি বিকাশের কংকালসার দেহ দেখলে মায়া লাগতো, চমৎকার ড্রাইভিং করে বিকাশ! গাড়িতে বসিয়েই বলবে, আপনি ঘুমান দাদা! আমি আস্তে আস্তে যাই! আহ্লাদে গর্বে নিরাপদ একজন চালকের পশ্চাতে বেশীর ভাগ সময় আমি ঘুমিয়ে যাই! এমনও হয়েছে বাসার গ্যারেজে আমার প্রিয় মেয়েটা গাড়ীর দরজা খুলে আমার কানে কানে বলছে বাবা এসে গেছ!! আহা, ২ঘণ্টা ঘুমের জার্নি!
যাই হোক বিকাশ আক্ষেপ করে বলে ‘দাদা যদি দিনারের দেশে যেতে পারতাম! আপনি কত ঘনঘন দেশে আসেন যান, টাকা পয়সা এটা সেটা নানানতান কথা জিগায়! যদিও কয়েক ঘণ্টার জন্যই সে আমার ড্রাইভার, কিন্তু আমার আচরণ সব সময় বন্ধুর মত, এটা আমার ব্যাক্তিগত অভ্যাস! কাউকে এখনো আলাদা করতে পারি না! এমনকি বাসার দারোয়ান অন্য সবাইকে স্যার ডাকলেও আমারে কয় দাদা! আমি মাঝে মাঝে দারোয়ানের টুলে বসে ভাগাভাগি করে বিড়ি খাই! এই জন্য বাসায় ঠাঠানিও কম খাইনি!
বিকাশের বিদেশ আসার আগ্রহ দেখে আমি তাঁকে জিগাইতাম কত টিকে বর্তমানে? সে কয় মাসে ১২-১৫ হাজার বেশী কষ্ট করলে! বললাম ভালই তো? মরুভূমিতে যেয়ে ড্রাইভারি করলে এমনই পাবে, দেশে আছো পরিবার পরিজন নিয়ে ভালই আছ! বিদেশে ড্রাইভারি করা কষ্ট! দেশেই থাক!
মরুভূমিতে বাসাবাড়িতে কাজের বুয়া, ড্রাইভার, গার্ডেনার, সব ফিলিফিন্স, ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক! ইদানিং কিছু আফ্রিকান নান দেখা যায়! মাঝে মাঝে অনেকের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময় হয়, এই সব পেশা যা বুঝি আগের দিনের “দাস” প্রথা! মরুর এক বাসায় যদি ১০ জন পরিবারের সদস্য থাকে ১০ জনই পরিবারের মালিক/কর্তা বনে যায়, তাঁদের অত্যাচারে বাসায় কর্মরত কামের বুয়া, ড্রাইভার, গার্ডেনার অনেকেই কেঁদে কেটে চোখের পানি ফেলে রাত দিন! মেয়েদের অবস্থা করুন...! পিলিপাইনি-ইন্দনেশিয়ার মেয়েদের বাগে পাইলে বাপ-বেটা এক বিছানায় মিলেমিশে বন্ধু হয়ে যায় মরুর আঁধারে!
আবার অনেকের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময়ে ভাল কথাও শুনি, অনেক মালিক আছেন প্রচুর ভালবাসে ঘরের চাকর-বাকরদের! সকাল ৬টায় উঠে রাত ১২টার পরেও বাসা বাড়ির কামের লোক বিছানায় পিঠ লাগাতে পারে না! খাওয়া দাওয়ার কষ্টতো আছেই, কারন আপন দেশের আপন স্বাদের রান্না মরুভূমির ঘরে ঘরে হয় না! এখানে ‘দুম্বা বিরিয়ানি’ চিকেন মসবুস, কিব্বা, কোপ্তা টমেটো পেস্ট দিয়া, খোবুজ ( আটা রুটি) জনপ্রিয়! মাছে ভাতে বাঙালীর অবস্থা বুঝেন একবার!
কেউ কেউ ভাল আছে! প্রাইভেট আর পাবলিক সেক্টরের কাজ আর সুযোগ সুবিধার ভিন্নতাও আছে। যাই হোক, আমি মরুভূমির বাসা বাড়িতে চাকুরীর কষ্টের কথা বিকাশকে বুঝিয়ে বলি!
গত মাস খানেক আগে একটি ফোন পাই, হ্যালো বলতে ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে, নাম বলতেই আমি চিনে যাই! ভাবলাম এই লোক এখানকার নাম্বার কই পেল? জিজ্ঞেস করতেই কেঁদে কেটে অস্থির, কিভাবে এলো সব খুলে বলল, বিকাশের অবস্থা এখন বাসায় বন্দি জীবনের মত! কেন আইলাম...? মনে হচ্ছে আমার সবকিছু শেষ!
যেহেতু আমার কাছে আগেই শুনেছে এই সব পরিস্থিতি সেজন্য কিছু কষ্ট চাপিয়ে গেল, আমি সান্ত্বনা দিলাম, কইলাম জেলখানায় মানুষ কিভাবে থাকে! মনে করো তুমি কয়েদী! ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করেছো!
উতপ্ত বালিতে বেদুইনের বাস
বালি ঝড়ে ঊত্তাল মরু
১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:০৪
মাঝিবাড়ি বলেছেন: না, দাদা! ঠিক বলেছেন!
২| ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:১৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এরই নাম সোনার হরিণ!!!!
আশায় আশায় যায় জীবন!!!!
১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৪৪
মাঝিবাড়ি বলেছেন: সমহত, ঠিক বলেছেন, না জেনে অনেকেই আসছে
৩| ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৪১
প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: এদেশে বাস করে রাগ করা যায়, প্রকাশ করা যাবেনা।
১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৪৬
মাঝিবাড়ি বলেছেন: ঠিক বলেছেন, বিষও কখনো কখনো হজম করতে হয় যে!
৪| ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৫৬
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস........
১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৪৭
মাঝিবাড়ি বলেছেন: যথার্থ বলেছেন, ব্লগে অভিনন্দন দাদা ভাই
৫| ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:১৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: মাঝিবাড়ি ,
তোরা যে যা বলিস ভাই,
আমার সোনার হরিন চাই ................
১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:২০
মাঝিবাড়ি বলেছেন: দাদা, ৭-৮ লক্ষ টাকা খরচ করে মানুষ সাড়া জনম সমুদ্রে সাঁতার কাটে, অভাব আর যায় না! ধন্যবাদ আপনাকে
৬| ১৬ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:১২
ওমেরা বলেছেন: প্রবাসে আসার আগে কেউ ই বুঝে না প্রবাসে জীবন কতটা কষ্টকর ।ধন্যবাদ
১৬ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:৩১
মাঝিবাড়ি বলেছেন: হ দাদা, ঠিকই কইছেন, এখানে আইসা পস্তায়! ধন্যবাদ আপনাকে
৭| ১৬ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:৫৫
আল ইফরান বলেছেন: আর আমার দেশের সরকারের লোকজন খাদ্দামা-ডিপ্লোমেসি করার জন্য সৌদদের সাথে বিশেষ বৈঠকে বসে
১৬ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:১৫
মাঝিবাড়ি বলেছেন: খাদ্দামার অবস্থা খুবই করুন দাদা! এরা না পারে রাতে ঘুমাতে না পারে পেট ভরে খেতে, না পায় বেতন ভাতা ঠিক মত, উপরন্ত ধর্ষণের/ শ্লীলতাহানির শিকার হয়!
৮| ১৯ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:১৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: শিরোনামটা যথার্থ হয়েছে!
১৯ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৮
মাঝিবাড়ি বলেছেন: যা অবস্থা দাদা! সঠিক তথ্য জেনে কেউ আসছে না এখানে, ফলে নির্যাতিত হচ্ছে মানবতা!
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাংলার সরকারের লোকদের পায়খানা-ভরতি মাথায় এগুলো ঢুকে না।