![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর পর একজনের সাথে আমার চরমরকম ভাবে বন্ধুত্ব হয় ওর নাম সহিনী যদিও ও আমার দু' বছরের জুনিয়র । তবে ও আমার পূর্বপরিচিত ছিল কিন্তু কোনদিন কথা হয়নি । আমি যে শহরতলীতে বাবার সাথে থাকতমা , ও সেই শহরতলীতে থাকতো ওর বাবার সাথে । ওকে খুব ভালোলাগতো তখন কিন্তু মিশতে পারিনি , বাবাই ছিল আমার শ্রেষ্টবন্ধু । কেন জানি হয়ে উঠেনি স্কুলের বন্ধুদের সাথে চরম রকম ভাবে আর্ড্ডা দেয়া , বাবার উপস্থিতেই এত বেশিছিল সেটার শূন্যতা মনে হয়নি । তবে এখন ভাবছি যদিও দু' একজন বন্ধুর প্রয়োজন ছিল খুব । আবার আসি সহিনীর কথায় ও শুধুই আমার বন্ধু , ভালোলাগা সত্যও কেন আমার বন্ধু সেটা পড়ে আসবো । আমারা একই ডিপাটমেন্টে ছিলাম আমাদের ডিপাটমেন্টের নাম সাংবাদিকতা ও গনযোগাযোগ , ওকে যখন দু'বছর পর দেখলাম কৌতুহল নিয়েই গেলাম এক রোমাঞ্চভাব নিয়ে , প্রেমের কামনা যেন টানছিল না তা কিন্তু নয় । ও আমার সাথে কথা বলছিল তারপর ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো , এরপর ওর সাথে অনেক আর্ড্ডা গল্প,ছন্দ, শেয়ার করতাম । যখনি একটু প্রেমের দিকে টেনে নিয়ে যেতাম ও নিশ্চুপ হয়ে থাকতো কি যেন খুজঁতো আমার ভেতর । কখনো কি যেন বিরবির করে আওড়াতো । যাইহোক অনেক গল্প, শ্রম শিক্ষা শেষে আমি এমটিভিতে স্টার্ফ রিপোটার হিসেবে যোগদান করলাম , আমার সুবাধে ও করলো এক বছরপর ভার্সিটি থাকাকালীই ওর পোষ্টের নাম নিউজরুম এডিটর এবং প্রোগ্যাম সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করতো । আফিসের ফাকে আমাদের চরম আড্ডা হতো । গল্প হতো , ওকে আমার বাসায় ইনভাইট করেছিলাম একবার ওর প্রতি আমার দুর্বলতা দেখে ও সড়িয়ে নিল নিজেকে । কেন কি কিছুই জানতাম না । যাইহোক এর মধ্য আমাদের দু'বছর চাকুরে জীবন চলে গেল । এর মধ্য আমাদের টিভি নির্মানা আহমেদ কে নিয়ে একটা টকশোর আয়েজন করতে চাচ্ছে , নির্মানা আহমেদ এ দেশের প্রখ্যাত অভিনয়শীল্পী যাকে চিনে না এমন মানুষ নেই, উদূ,হিন্দি,বাংলা মিলিয়ে প্রায় 200 শত সিনেমাতে সে অভিনয় করেছে । তার অভিনয় বাচন ভঙ্গি এখনো তরুণীদের কাছে আইডল এবং সে নিজেই এক মাইলফলক কিন্তু শেষ পনের বছর সে কোন সিনেমাতে অভিনয় করেননি একদম লোক চক্ষুর অন্তরালে সে চলে গেল । সহিনী ও আমাকে এই বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হলো আমি যেন তার লাইভ ইন্টারভিউ নিই এবং সহিনী সঞ্চালকের দায়িত্বপালন করেন । তবে সহিনী আগে অনেকবার বলেছিল আমাকে নির্মানা আহমেদকে নিয়ে সে একটা কিছু করতে চায়, বাংলা সিনেমা তার পছন্দের জায়গা তবে আমার তেমন আগ্রহবোধ ছিল না । তবে পেশার প্রয়োজনে এখন তাকে জানতে হচ্ছে সহিনী বাছাইঁকৃত কিছু সিনেমা আমাকে দিল, আমি দেখলাম সত্যই অসাধারণ তার অভিনয় । তার কান্না যেন সত্যিকারে , যেন সত্যিই সে সত্যিকারের আইডল । আরো খোজঁ নিয়ে জানলাম তার ব্যক্তিত্ববোধ, জানার পরিমান, দক্ষতা এতটাই নিখূত যে মনে ধরার মত । সার্বাদিক সহ শিল্পী হিসেবে অভিনয় করা বাপ্পারাজের সাথে কথা বলে জানা গেল , সে অনেক বিনয়ী ও কোমল স্বভাবের ছিল, সে যেমন ভালোমানুষ তেমন ভালোগুনও তার , চলচিত্রের যখন খারাপ অবস্থা তখন সে সড়ে পড়লো তবে চেস্টাও করেছিল সমাধানের তা হয়ে উঠেনি । এবং আরো খোজঁ নিয়ে জানা গেল তার সিনেমা দেখার জন্য শুক্রবারে এখনো রাস্তাখালি হয়ে যায় । বিকেলে চা খেতে খেতে সহিনীকে বললামও সত্যিই মানুষের আর্দশ মানুষকে কতদুর নিয়ে যায় । সহিনী হেসে বললো, হাহহা ! তুই য়ো একদিন একদিন এমন আদর্শ মানুষ হবি । আমাদের কলিক ইন্টারন্যাশন্যাল নিউজের মির্জাভাই আমাদের সাথে যোগ দিল, সে সিনিয়র পারসন সেও নির্মানা আহমেদের সিনেমার কথা শেয়ার করলো , এবং আমাদের কাজকে উৎসাহ করলো আর বললো, দেখো সে ক্যামরার সামনে আসে কিনা অনেকদিন তো নিজের চেহারা দেখায় না । আমি হেসে বললাম, ঐতো ভাই অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে মিথ একটু থাকে পর চা খেয়ে যে যার কাছে উঠে গেলাম । কাজের ফাকেঁ যতটুকু সময় পাই নির্মানা আহমেদকে নিয়ে স্টার্ডি করি । চ্যানালের হেডঅফদ্যা নিউজের শাকিল ভাই বললো, এটা যদি করতে পারিস আমাদের চ্যানালের রিড অনেক বেড়ে যাবে তুই য়ো একলাফে পরিচিত মুখ হয়ে যাবে । আজকাল সাংবাদিকদের তো কেউ চিনেনা এত এত টিভি চ্যানাল ।
আমিও চাই এটা ইন্টারভিউটা ভালোভাবে করতে । তাকে অনেকবার মেইল ,ম্যাসেজ ফোন দেয়ার পরও কোন পাত্তা পাওয়া গেল না , নির্মানা আহদেম বলে কথা ! যাকে নিয়ে একনো মিডিয়া পাড়ায় হইচই , যিনি সিনেমায় এলে দর্শকদের অবিভ্যাক্তি পরিবর্তন হয়ে যায় , যিনি কান্না করলে বাচ্ছাদেরও চোখের জল টলমল করে । যিনি হাসলে নাকি পুরো সিনিমা হল হেসে উঠতো । তার জন্মদিনে কত কত গ্রিফ্ট পায় এখনো । কাজের চাপে বাবার সাথে যোগাযোগ করা তেমন করা হয়নি । ফোনে বাবার সাথে কথা বলে নিলাম , সবই ঠিক আছে । শুধু মনে হয়েছিল আমি বাংলা সিনেমা আগে দিখিনি কেন? কেন চিনিনি তাকে আগে সহিনীকে বললাম এ কথা । সহিনী বললো ,তোর পরিবার চাইনি তাই হয়নি । পরিবার মানুষকে যেমন করে গড়ে তোলে মানুষ তেমন হয় । সত্যিই নির্মানা আহমেদের যৌবর্ণ বয়সের সিনেমাগুলো দেখে প্রেমে পড়ে গেছি যেন, দেখা হলেই যেন তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিব । খোজঁ নিয়ে জানা গেল , সে কখনো দেশে বা কখনো দেশের বাইরে ছোট মেয়ের কাছে থাকেন । তাকে নিয়ে স্টার্ডি করে প্রায় পাচঁমাস চলে গেল, কোন রকম ভাবেই রিপলে পাচ্ছিলাম না । তার বাসার ঠিকানায় গেলে , বলেদেয় সে এখন কানাডাতে ছোটমেয়ের কাছে , তার নাম্বারে কলদিলে পরিচয় দিতেই কেটে দেয় । পর তার মেয়ের পূর্ন নামটা নিয়ে ফেসবুকে রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছি , অনেকদিন পর ঝুলিয়ে রেখে গ্রহন করলো । আমার ইচ্ছের কথা বললাম তাকে, সে বললো মাকে বলে সে জানাবে । আমার সমস্ত ঠিকানা মোবাইল নাম্বার তাকে দিলাম । এর মধ্য হয়তো সে যেনে গেছে একজন রিপোটার তাকে ছয়মাস ধরে খোজঁছে যাস্ট একটা ইন্টারভিউ নেবে বলে , যে ইন্টারভিউ পেলে তার সেলারি বাড়তে পারে , পরিচিত হতে পারে । দু'মাস পর আমাকে মেসেজ দিল, নির্মানা আহমেদ এখন ঢাকায় পরদিন বিকেল চারটায় তার সাথে পুরনঢাকার বাড়িতে দেখা করা যাবে , সময় মাত্র কুড়ি মিনিট । যাইহোক অনেক সেজেগুজে একগুচ্ছো ফুলের তোরা আর সহিনী আরো কিছু দিল প্যাক করে সেই সব নিয়ে গেলাম । তার বাসায় গিয়ে এক ঘন্টা বসে ছিলাম, আর প্রস্তুত হচ্ছিলাম যেভাবে হোক তাকে রাজি করাতে হবে একটা টকশো ইন্টারভিউ এর জন্য । সে আসলো , বিরক্তি চাহনি নিয়ে তাকালো আমরার দিকে , আমি তাকে ফুলদিলাম সে ফুল গ্রহন করে রেখেদিল যেন উচ্ছার্স নেই, তার শব্দ চয়ন, চেহারা এখনো তিক্ষতার ছাপ কয়েকবার আমাকে ভালো করে পর্যবেক্ষন করলো । তার শরীর এখনো ভাঙ্গেনি যেন । আমি বলে উঠলাম অবশেষে আপনার দেখা মেললো ম্যাম খুব খুব করে আপনাকে স্টার্ডি করছিলাম, আমার আগ্রহ, ইচ্ছে, প্রকাশ যতদ্রুত সম্ভব সবই বললাম , সে বললো আমি আর মিডিয়ার সামনে যাবনা ভেবেছি , রিকুয়েস্ট করে লাভ নেই । যাব না যাবনাই এত কেন বিরক্ত করছো নানাজনকে ফোন করে , আমিতো পুরন হয়ে গেছি একটু নুতনদের নিয়ে সময় দাও না তাতে সিনেমাও বাচঁবে নুতন শিল্পীরাও উঠে আসবে । প্রবল ভাবে রিকুয়েস্ট করার পর সে বললো, আচ্ছা জানাবো তুমি এখন আসতে পারো । বের হয়ে বিরক্তই হচ্ছিলাম এত রুক্ষ ব্যবহার ! সত্যিই মানুষের মন কত কঠিন -চলচিত্রের কোমলতার সাথে এই নির্মান আহমেদের কোন মিল নেই । সত্যিই অধরা আমাদের চেস্টা , এতদিনকার স্টার্ডি বিফলেই যাবে তাহলে ? সহিনীকে বললাম, সহীনি বললো- এইতো পরিবর্তন হয়ে গেলি । মানুষ আর পর্দাতে পরিবর্তন সবসময় । মানুষ সে ব্যক্তি মানুষ , আর শিল্প সেতো মানুষের তৈরীর কিছু মুহুর্ত মাত্র ।
বাসায় যেয়ে এক বিষাদে ঘুম দিলাম । দু'দিন পর সে নির্মানা আহমেদের বাসা থেকে জানানো হলো সে ইন্টারভিউ দিতে ইচ্ছুক । আমি আনন্দে লাফিয়ে উঠলাম । সহিনী ও হেড অবদ্যা ডিপাটমেন্টকে জানালাম । ইন্টারভিউ ঠিক হলো এক হপ্তাপর , এরই মধ্য এড দেয়া শুরু হলো আগামী শত্রুবার রাত আটটায় নির্মানা আহমেদ আসছে এমটিভির ইন্টারভিউতে ! মিডিয়া পাড়ার ও মানুষজনের ভেতর গুঞ্জন শুরু হয়ে গেল । এড ট্রায়ালের একপাশে আমি আরেকপাশে নির্মানা আহমেদ । ইন্টারভিউ এর আগেই হঠাৎ যেন পিচকে রিপোটার থেকে গুনিজনের কাতারে চলে এলাম । হেড অবদ্যা ডিপাটমেন্ট থেকে জানানো হলো , যতক্ষন পারো ইন্টারভিউ চালিয়ে যাবে , ধরাবাধা কোন সময় নেই যতক্ষন তাকে ক্যামারার সামনে রাখতে পারো ততই আমাদের কাজের কাজ হবে ! তারা শুধু ভাবছিলো ব্যবসায়িক লাভ । আমি আর সহিনী মিলে প্রশ্ন ঠিক করলাম কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো । আমার প্রশ্ন আমি রেডি করে ফেললাম , সহিনী বললো পড় দেবে ।
শক্রুবার হয়ে এলো দুপুরের পর থেকেই একনজর তাকে দেখার জন্য চ্যানালের পাশে হাজরো মানুষ জমায়েত হলো । সাতটার দিকে সে এলো । চ্যানালের সবাই তাকে স্বাগত জানাতে চলে এলো । খুব সুন্দর করে সাজানো হলো স্টুডিও । সেই পুরনো দিনের ছাপ যেন স্টুডিও তে, সব সহিনী ওর গ্রুপের সাথে করেছে । কি ধরনের প্রশ্ন করবো নির্মানা আহমেদ জানতে চেয়েছিল , তাকে বললাম সাধারণ কিছুই আপনার বেড়ে উঠার গল্প, ছেলেবেলা, বন্ধু, প্রথম প্রেম, ভালোলাগা, এত এত জনপ্রিয়তা,সাংসার-আপনজন, আর এখন কি করে সময় কাটান । সে বললো, এগুলোতো সবাই জানে কতবার যে বলেছি । তখন হয়তো প্রিন্টমিডিয়ার সময় ছিল, আপনার মুখ থেকে শুনলে দর্শকের ভালো লাগবে । সে হাসলো । লাইভে যাওয়ার দশমিনিট আগে সহিনী ওর প্রশ্ন আমাকে দিল আমি আর দেখলাম না আমার প্রশ্ন আগে রাখলাম এত এতদিনকার স্টার্ডি ভালোলাগা তাই লোভ সামলাতে পারলাম না ।
এয়ারফোনে বাজচ্ছিলো ফ্রি, টু, ওয়ান, জিরো দেন লাইভ শুরু ।
আমিঃ দর্শন আমাদের সামনে আছেন প্রখ্যাত অভিনয়শিল্পী নির্মানা আহমেদ ।যাকে এদেশীয় সিনেমার মাইলস্টোন বলা যায় , যার কর্ম ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এদেশ এবং পৃথিবীতে । যার অভিনয় দেখে ছেলে-মেয়েরা ভালোবাসা শিখে, যার হাসিতে সোনা ঝরে, যার সহানুভূতি, প্রেম আমাদের মানবিকতা শেখায় । সারাদিন পরিশ্রম করা দিনমুজুররা যার অভিনয় দেখে একটু স্বস্থি নিয়ে ঘুমাতে যান । যার সিনেমা শেষে তাকে নিয়ে নানা সুন্দর বির্তক আজ কথা বলছি সেই নির্মানা আহমেদের সাখে । হ্যালো মেম কেমন আছেন , এতদিন পর ক্যামারার সামনে কমেন লাগছে ।
নির্মানা আহমে: সত্যিই অনেক মজার ,ভাবিনি কখনো আবার আসবো । কিন্তু আসতে হলো দর্শকদের জন্য । দর্শকরাই আমাকে বাচিঁয়ে রেখেছে ।
আমি: এই যে এত এত জনপ্রিয়তা কখনো ফিরে আসতে মন চায়নি আপনার ? এই মানুষের কাছে ?
নির্মানা আহমে: প্রথম কষ্ট হতো খুব মনে হতো ছুটে যাই মানুষের ভিড়ে , আবার চুটিয়ে সিনেমা করি যতদিন পারি কারন আমরা তো শিল্পী , এতদিন করে আসা চর্চা এত এত মানুষের সাথে মিশে ভালোবাসা পাওয়া , ঘরে বসে চুকিয়ে দেয়া যায়না নিশ্চয় কিন্ত হয়ে গেল । এখন হজ্ব করেছি, অবসময় সময়ে নামাজ পড়ি, সন্তানদের সময় দিই, স্বামীকে সময় দিই এইতো ।
আমি: নির্মানা আহমেদ আপনার "র" গল্প শুনতে চাচ্ছি, গল্প নয় আপনার বেড়ে উঠা , আপনজন , শেখা ,অনুপ্রেরণা , যদি বলেন ?
নির্মানা: আমার অনুপ্রেরনা আমার বাবা ,কখনো মনেই করতেন না আমি মেয়ে । স্কুলে বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতা ,বরাবরই প্রথম হতাম । আমার মা ছিল বিদূষী আমাকে ঘুম পাড়াতে সুকুমার রায় পড়ে , আমাদের বাসার পাশে বিশাল এক পুকুর ছিল রোজ সকালে কত কত মানুষ স্নান করতে আসতো , গ্রামীন পরিবেশে বেড়ে উঠা ছিল কিন্তু সব কিছুতে আধুনিক ছুয়া পেতাম , আমার বাবা তিনি জানতেন এ সমাজে মেয়েকে বড় হতে হলে আত্মনির্ভরশীলতা প্রয়োজন তাই শিক্ষার কোন শেষ নেই । বাবা পাড়ার নাট্যদলের পরিচালক ছিল চিলেকোঠার সেপাই থেকে আমরা নাটক করেছিলাম বাবা ডিরেকশন দিয়েছিলাম আমি ছিলাম প্রধান চরিত্রে । তখন দেখেছি বাবা কতটা প্রফেশনাল, বাবা বলে অনুনয় করে ছাড় পাইনি ! কয়েকবার ভুল করার পর আমাকে এতজোরে দমক দিল আমি কেদেঁ উঠেছিলাম হুহু করে । এরপর সহশিল্পীরা আমাকে শান্তনা দিল , সেদিন বাবাকে কঠিন হতে দেখিছি । আর বাসায় তো বাবার কাদেঁ চড়ে বেড়াতাম তাই ছোট থেকে শিল্পের প্রতি ভক্তিছিল । একে সন্মান করেছি সব সময় , যার কারনে আজও মানুষের কাছ থেকে সন্মানটা পাচ্ছি । এক সময়তো কথা হতো , টাকা আর্থ নিয়ে, এই সিনেমা থেকে এত পেলাম ,বা কেউ কাজ করেও টাকা দিল না আজকিন্তু ওসব নেই কর্মটাই বেচেঁ আছে শুধু । আমার স্কুলে রেখা নামের এক বান্ধবীছিল ও আমাকে সব সময় সাপোর্ট দিত , কখনো রাগ অভিমান কান্না পেলে ওর কাছে ছুটে যেতাম । ব্যস্তজীবনে ঢুকার পর আর ওর সাথে যোগাযোগ হয়ে উঠা হয়নি । আমরা কিন্তু চঞ্চল ছিলাম, বিকেলে ঘুড়ি, ক্রিকেট খেলেছি তখন ক্রিকেট সবে মাত্র ঢুকেছিল এদেশে ।
আমিঃ স্কুলে কখনো কারো প্রমে পড়েননি ?
নির্মানাঃ প্রেম জীবনে একজনেরই পড়েছি যিনি এখন আমার স্বামী, রায়হান চৌধুরী । ও ব্যবস্যায়ী তবুও এর মাঝে আমাদের প্রচুর সময় দেয় । স্কুলে এক শিক্ষকের প্রেমে পড়েছিলাম , চট্রগ্রাম ঝিলঝুরি হাইস্কুলে থাকতে । সে ইংরেজির শিক্ষক ছিল , আসলে সে ক্লাসের বাইরে শ্রেক্সপিয়ারের ড্রামা, নানা গল্প নিয়ে আলোচনা করতো তো অন্যদের কে দেখিছি যেমন অংক টিচার ক্লাসে অংক কষে দিয়ে চলে যেতেন । তাই সে প্রিয় ছিল, তার চোখে তিক্ষতার ভাবছিল , মনে মনে পছন্দ করতাম তাকে ।
আমি: বলা হয়নি পছন্দের কথা ?
নির্মানা: সেটাতো বলার বয়স ছিল না । এমন খন্ড খন্ড অনেককেই ভালো লাগতো আসলে সেটা সাময়িক ছিল । আসলে স্কুলে থাকতে প্রেম থেকে মোহটাই কাজ করতো আসলে ওগুলোর তো বাস্তব রুপ নেই ।
আমি: কলেজ লাইফ?
নির্মানা: আমি ক্যান্টমেন্ট কলেজে পড়েছি । ক্লাসের অত সময় পেতাম না তখন এক ড্রামাটিমে যোগ দিয়েছিলাম মাত্র প্রচুর কাজ হাতে আসলো তবে পরীক্ষাগুলোতে যোগ দিয়েছি । ভার্সিটিতে উঠে ভেবেছিলাম ড্রামাতে পড়বো তখন সিনেমা সিলেবাসে ছিলনা থাকলে ওটাই পড়তাম । আসলে ড্রামা থেকে ওটে আসা মানুষ আমি ।
আমি: চলচিত্রে কিভাবে এলেন ?
নির্মান: আমার প্রথম চলচিত্র শতাব্দী যা ছিল সুপারহিট এক সিনামা । টানা চৌদ্দ সপ্তাহ এক সিনেমা হলে চলেছিল তবুও হাউজফুল । আমার প্রথম সিনেমাতে আসা রায়হানের চাচা এর মাধ্যমে সে পরিচালক গাজী জহিরুল , প্রথম আমাকে চলচিত্রে সুযোগ করে দেন তখন রায়হান শুধুই আমার বন্ধু ছিল , বন্ধু বলতে বেস্ট ফ্রেন্ড ।
আমি: বেস্টফ্রেন্ড কে বিয়ে ? কেমন লাগলো ।
নির্মানা: সত্যি বলতে কি ওকে তো চিনিই তাই বিয়ের অনুভূতিটা কমছিল কিন্তু যখন বিয়ে হল ওর ভেতর সত্যিকারের এক পৃথিবী দেখলাম যা আমাকে অনুপ্রেরনা দিয়েছে সব সময় । আমরা যেমন জেনেছি লোভ, হিংসা কিভাবে দুর করতে হয় । আসলে কাউকে কষ্ট দিয়ে বেচেঁ থাকা যায় না ।
আমি: আপনিতো খুব জনপ্রিয় একজন মানুষ, সেই সময় নিয়ে আপনাকে নিয়ে তো নানা জায়গায় নানা মিথ ছিল ।
নির্মানা: হাহহাহ । আর বলোনা , আমার যে কতবার বিয়ে হয়েছে । হাহহাহাহ
আমি: কতবার বিয়ে হয়েছে ? আপনার ?
নির্মানা: কিহ !
আমি: না , বললেন যে, গুঞ্জনছিল । গুঞ্জন কিন্তু কোন কোন সময় সত্য হয় ।
নির্মানা: এই জগৎ গুঞ্জনের জগৎ এখন সহশিল্পীতো বন্ধুর মত তার বাসায় যদি একবার দাওয়াতে যেতাম সাথে যে আমার স্বামী ছিল তাতো কেউ জানতো না লিখে দিত অমুকের বাসা থেকে ওমুক বের হয়েছে ।
আমি: জনপ্রিয়তা ছুবলে পড়েননি কখনো, বলছি যে কোন দর্শন আপনার জন্য পাগল হয়ে যায়নি তো ?
নির্মানা: হয়েছে না আবার । একবার মনিহার সিনেমা হলে আমার পায়ের জুতা খুলে নিল কয়েক দর্শক বললো এটা সে তার কাছে স্মৃর্তি হিসেবে রেখে দিবে । হাহহাহাহা ! বলো কেমন উন্মাদ ছিল ।
আমি: সত্যিই আপনি অমায়িক । আপনাকে ভালোবাসলেই যেন পৃথিবী জয়করার সমান , যাইহোক আপনার বিয়ে কি প্রেমের বিয়ে ছিল ?
নির্মানা: হুম । এক এক বার্থডেতে রায়হান আমাকে প্রপোজ করে । সেই থেকেই প্রেম , এবং টানা ৫ বছর প্রেম করার পর বিয়ে ।
আমি: তারপর সন্তান ?
নির্মানা: আমার প্রথম সন্তান রৌদ্দুর চৌধুরী এর পর দুটো মেয়ে । ভালোই আছি আমি সাংসার নিয়ে । ছোটমেয়েটা কানাডা পড়াশুনা করছে , ছেলেটা পারিবারিক ব্যবসায় । বড় মেয়েটার বিয়ে হয়েছে ও আত্মনির্ভরশীল ।
আমি: বেশ বেশ । বিয়ের পর কাজ কমিয়ে দিয়েছিলেন?
নির্মানা: হুম ।অনেক কমিয়ে দিয়েছিলাম । কারন বাংলা হিন্দি, কয়েকটা উদূ ফিল্ম করেছিলাম তাই পরিশ্রমটা আর হয়ে উঠেনি । সাংসারই আসল ধর্ম , একসময় তো কাজ ফুরিয়ে যাবে কিন্তু ইচ্ছে সাংসার এগুলোর তো সময় লাগে । তবুওতো কম করিনি শেষদিকে হয়তো অতিথী চরিত্রগুলো বেশি করেছি ।
লাইভে সহিনী বার বার বললো ওর প্রশ্নতে যেতে । আমি কাগজ মেলো মেলো করে ওর প্রশ্নতে গেলাম লাইভের মধ্যই । ওর প্রশ্ন থেকে বলা শুরু করলাম ।
আমি: আপনিতো দারুন রবীন্দ্র সঙ্গীত গান ?
নির্মানা: গাইতাম এখন গাইনা অনেকদিন হয় ।
আমি : আপনি কিন্তু আগে কখনো বলেননি রবীন্দ্র সঙ্গীত জানেন ? মানে কোন প্রিন্ডমিডিয়াতে । স্টার্ডি করার সময় দেখেছিলাম ।
নির্মানা: হুম, কতকিছু ঢাকা পড়ে যায় একজীবনে ।
সহিনীর প্রশ্নগুলো একনজর দেখে চমকে উঠলাম ! হায় হায় । এ প্রশ্ন করলে তো আমাকে টিভি দেখে বের করেও দিতে পারে ! সহিনী মাইক্রোফনে বলছিল , এটাই সত্য মানুষ তুই বলে যা । লাইভে সব প্রকাশ করে দে । আর ও জানালা এখন পযন্ত এই টকশো দেখছে প্রায় ৬০কোটি ভিউয়ার, অনলাইন, লাইভ এবং অডিও তে । আমি শুধু নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে আমার তৈরী করলাম । এতদ্রুত করলাম কেউ টের পাবার কথা নয় ।
আমিঃ কত কিছু ?
নির্মানা: আমার বাবা, মা , কত আত্মীয়স্বজন ! যে যার মত চলে গেছে । আমিও প্রহর ঘুনছি চলে যেতে তো হবে , তাই এখন ধর্মনিয়েই পড়ে আছি । কয়েকবার হর্জ্ব করেছি আবার পরিবারের সবাই যাবো ।
আমি : সব আত্মীয়স্বজনকে মনে পড়ে ?
নির্মানা কিছুটা ভুড়ো কুচকে বললো: মানে কি , পড়বে না কেন ?
আমিঃ মনে পড়েকি ছোট্ট সুহাকে ?
নির্মানা হঠাৎ থেমে গেল ।
আমি ভাবলাম তাহলে কি সত্য । সুহিনীর বাকি প্রশ্ন গুলো দেখছিলাম ।
আমিঃনির্মানা মেম থেমে আছেন যে ।
নির্মানা: একটু মাথা ধরেছে ।
আমি: একটা ব্রেক নিব মেম । পর শুরু করি ।
নির্মানা: আচ্ছা ।
একটা ব্রেকে আসলাম । নির্মানা আহমেদ কফি নিল একা কি যেন ভাবছিল । সুহিনী আমাকে আরো কিছু বললো যা, টকশোতেই তাকে জিজ্ঞাসা করবো ।
লা্ইভ শুরু হল ।
নির্মানা আহমেদ বলে উঠলো, কি যেন বলছিলে ?
আমি: সুহা কে ছিল ? আপনার আত্মীয় ?
নির্মানা: আমার মেয়র মত ।
আমি: মেয়ে নয় ?
নির্মানা কয়েকবার একটু উদাস ভাব , ঠোটে ঠোট কামড়িয়ে ,চোখ কিছুক্ষন ভাষাহারিয়ে ফেলে বললো, হুম ও আমার প্রথম মেয়ে ।
আমি: প্রথম মেয়ে ?
নির্মানা : তুমি যদি বিষয়টা জানো বলে দাও মানুষ , আমি প্রস্তুত হতে পারছি না কি করে বলবো । সবাইকে ব্যক্তিগত বিষয় জানানোর জন্যই তো তোমরা এই আয়োজন করেছো করো , আজ বলবো বলো কি জানতে চাও আর।
নির্মানা আহমেদ এই বলে কয়েকবার চোখ মুছলো ।
আমি: আপনার প্রথম বিয়ে হয়েছিল কবে ?
নির্মানা: সুহার বাবার সাথে সময় মনে নেই , ভুলে থাকতে চেয়েছি তাই ।
আমি: ভুলতে পেরেছেন কখনো ? সব সময় তো দেখিছি এক ছেলে, দুই মেয়ের গল্প সব সময় । আরেকজনকে মনেও করেননি ? কতটা স্বার্থপর আপনি ?
নির্মানা: ওকেই বেশি মনে পড়ে ! একটা পর্যার চলে আসছিলামতো , ছেলে মেয়েরা বড় হয়েছে জানাতে চাইনি । আমার ভেতর জানে সব ।
আমি : আর শিবা কে ছিল ?
নির্মানা এবার হু হু করে কেদেঁ উঠলো । হেড অবদ্যা ডিপাটমেন্ট থেকে বললো এগুলো কি শুরু করলো । আমি পাত্তা না দিয়ে চালিয়ে গেলাম । সহিনী হেড অবদ্যা ডিপাটমেন্ট দেখতে গেল , বললো চালিয়ে যা ।
আমিঃ আপনার ছেলে ছিল ?
নির্মানা তবুও প্রস্তুত নয় , কিছুক্ষনপর নিজেকে সামলিয়ে বললোঃ সরি ! হুম এতদিন মিথ্যা বলেছি । রক্তের সম্পর্দকেও বঞ্চিত করেছি , আজ জাগালে আমাকে যে সত্য সব সময়ই সুন্দর । মিথ্যা আর সত্যর অদৃশ্য পিছনে ছুটাও বোকামী । আগে স্বীকার করতে হবে নিজ অস্তিত্বকে ।
আমিঃ তবুও আপনি লুকাবেন অনেক কিছু ! অনেক কিছুই বলবেন না , সত্য হলে সুহাকে ছিল এটা বলার সময়ই বলতে পারতেন , সুহা নয় শিবা নামে আমার এক ছেলে ছিল । সত্যটা এটা সুহার বাবা আপনার প্রথম স্বামী নয় , সুহার বাবার প্রাক্তন বন্ধু শাকিল রহমান আপনার প্রথম স্বামী । শাকিল রহমানকে আপনি বিয়ে করেছিলেন স্কুল থাকা অবস্থায় , আপনি এসএসি পাশও করেননি ! আপনার বাবার সাথে আপনার মিশ্রনটা কমছিল , কারন আপনি এর আগে দু'বার প্রেম করতে যেয়ে নানা জায়গায় সমস্যা তৈরী করেন, বাধ্য হয়ে আপনার বাবা , আপনার চাচাতো ভাইয়ের সাথে আপনাকে বিয়ে দেয় । শাকিল রহমান শিক্ষিত ছিল, ওর বন্ধুরা মিলে আপনারা অনেক জায়গায় ঘুরতে যান । আপনি শাকিলের বন্ধু শোয়েবের সাথে সর্ম্পক তৈরী করেন এর আগেই আপনি গর্ভবতী হন ! সন্তান প্রসব করেই তিনমাস পর আমি শোয়েরব সাথে চলে যান । শোয়েব একয়েকটা নাট্যদলে চেনা জানা ছিল, শোয়েব আপনাকে বিয়ে করে সেই ঘরে সুহা হয় । নাট্যদল থেকে টিভি নাটকে ফারুক নামক এক পরিচলাকের সাথে আপনার সম্পর্ক হয় , আপনি চলচিত্র নামবেন এই নেশায় আবার স্বামী পরিবর্তন করেন ! যতদুর জানা যায় ফারুক আপনাকে বিয়ে করেননি , আপনি তার সাথে লিভ টুগেদার করেন । আপনি যথেষ্ট সুন্দরী আর দারুন শব্দচয়নের কারনে আপনি দ্রুত টিভি নাটক থেকে সিনেমাতে চলে আসেন, এরপর একের পর এক সিনেমা মুক্তি আর আপনার জনপ্রিয়তা মুখরিত হয়ে উঠে এরই মধ্য আপনি আপনার পার্সনালিটি শক্ত করেন ! তৈরী করেন নানা সাহার্য্য সংস্থা । এবং প্রচুর টাকা আয় করেন পর ব্যবসায়ী বায়হান চৌধুরীর নজরে আসেন আপনি , বিয়ে করেন তাকে । যদিও রায়হান চৌধুরীর সাথে যে বিয়েটা হয় বৈধ ভাবে এটা আপনার তিন নাম্বার বিয়ে এবং এই সাংসারে জন্মদেন তিনটি সন্তান । এরপর আপনাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি , আপনি আর খোজঁও নেননি আপনার ফেলা আসা মানুষগুলো কেমন আছে । আপনি ফিল্মে এত এত সহাভূতি,সহনশীলতার কথা বলেন যা দেখে দর্শক মুগ্ধ হয় ! কিন্তু আপনাকে কেউ চেনেনা । সত্যিকারের শিল্পী আপনি নন, আপনি যা বলেন সুন্দর চেহরার কোমলতায় মানুষ ভুলে যায় ।
নির্মানা আহমেদ শুধু থ হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো । পর তাকে জিজ্ঞাসা করলাম যদি ভুল থাকে বলতে পারেন ।
নির্মানা: না সত্য কথা বলেছো । আমি পারবো না এভাবে বলতে । আরো সত্য কথাটাই বলি সুহা আর শিবাকে নিয়ে আমার কতটা ভালোবাসা নেই ! হতে পারে আমার রক্তে থেকে তৈরী ওদের সাথে বেশি মিশিনিতো তাই হয়তো । ওরা ভালো থাকুক , দোয়া করি যদি পারে আমাকে যেন ক্ষমতা করে দেয় । আমি ওদের মা হতে পারিনি যেহেতু আর হতেও যাবো না । মিডিয়ার পার্সনদের সত্য এরকমই হয় , আমারটা শেষ বয়সে এসে হলো ।
আমি: আমি শিবা , সুহার সাথে দেখা করতে চান ?
নির্মানা: না ! আমি চাই না ! আমি চাইনা ওদেরকে সারাজীবন কষ্ট দিয়ে আসা মনে আবার ব্যর্থ আলোফুটানোর চেস্টা করতে । পাশে সহিনী , এবং আমার দিকে এক নজর তাকিয়ে নির্মানা বললো- আমি ওদেরকে চিনে গেছি ।
আমিঃ কিভাবে চিনলেন ?
নির্মানাঃ ওরা আমার রক্ত থেকে জন্মতো , চোখ কি যেন বলে দেয় ।
আমি: অনেক কথা হলো আপনার সাথে সবাইকে নিয়ে ভালো থাকবেন । আপনি এই দেশীয় সিনেমার আইকন । আপনি না বাচঁলে এই শিল্প বাচঁতো না । কিছু হারানো -কিছু পাওয়া মিলেই মানুষের জীবন ।
নির্মানা: মানুষ আপনিও ভালো থাকবেন । আজ অনেকদিন পর মানসিকস্বস্থি পাচ্ছি । শরীরটা হালকা লাগছে । জানি টকশো থেকে বের হওয়ার পর আমাকে অনেক প্রশ্ন, অনেক জটিলতার ভেতর দিয়ে যেতে হবে , শেষ সময়ে এসে সমালোচিত হয়া কতটা কষ্টের টের পাবো ! কলিকদের যেমন দেখতাম সাফল্য ও ব্যর্ততা । আজকের পর থেকে অনেক মানুষ যারা আমার সিনেমা দেখতে অনেকেই সিনেমা হয়তো দেখবে না , যারা সতী বলতো সতি হয়তো বলবে না কিন্তু আমি চাই আমার আদর থেকে বঞ্চিত সুহা ও শিবা যেন আমাকে কোনদিন মাগী না বলে । যদি প্রকাশ্য শুনি মাগী বলছে হয়তো সইতে পারবো না , মরে যাবো ।
আমিঃ ধন্যবাদ । দর্শক এতক্ষন দেখলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রীর exchusive interview , চোখ রাখুন এমটিভির পর্দায় আরো মজার মজার অনুষ্টান নিয়ে আমরা আপনাদের সামনে হাজির হবো ।
টকশো শেষ হলো । নির্মানা আহমেদ চোখে কালো গ্লাস লাগিয়ে আমার সাথে ও সহিনীর সাথে হ্যানসেক করে বললো, তোমার রান্না করা সেমাই ,হলুয়া খেলাম ঠিক যেন আমার মায়ের মত । আমার দিকে তাকিয়ে নিমার্না আহমেদ বললো- সরি মানুষ অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে , ইন্টারভিউ সময় নিয়ে । তোমরা দু'জন একদিন আসো না আমাদের বাসায় চুটিয়ে আর্ড্ডা দিব । কথা শেষ করেই নির্মানা আহমেদ নেমে গেল সিড়ি বেয়েই । যেন তার তারাহুরু অত নেই ।
©somewhere in net ltd.