![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসসালামু আলাইকুম: Md. Azizur Rahman who always ready To Die For Islam For ALLAH For Noor Ea Mujassam Profeth Muhammad Mustafa Sallauhu Alaihiwsallam.
আমি মাহিম। আমি ছোট বেলা থেকে ঘুরাঘুরি করতে বেশি ভালবাসি। এই ঘুরাঘুরি বেশি করতাম বলে বাবার কাছে কত যে বকা খেয়েছি তার কোন হিসাব নাই। এখন আমি রাজশাহী ইউনিভার্সিটি পড়ি। রাজশাহীতে মেসে থাকি। সিমান & অনু আমার রুমমেট । কিছু দিন পর সিমান আমাকে বলল, তোমার এলাকাই দেখার মত কোন জায়গা আসে????
- হুম আছে। আমি সিমানকে প্রশ্ন করলাম, তুমি কি ভ্রমন করতে ভালোবাসো?
-সিমান : হুম
-(যাই হোক আমি একজন ভ্রমন সঙ্গি পেলাম)চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাবু ডাং ও সোনা মসজিদ ইত্যাদি।
-®অকে, রেডি থাকিও।
,
এভাবে অনেক দিন পার হয়ে গেল।
হঠাৎ একদিন রাতে আমি টিউশনি করিয়ে মেসে আসি, ঠিক তখনিই সিমান এবং অনু আমাকে বললএখন বাবু ডাং যেতে হবে আমরা রেডি। ঘড়িতে তখন ৮ টা বাজে। ( আমি অবশ্যই ব্যস্ত ছিলাম কিন্তু আমি না গেলেও উনারা চলে যাবে (এমন অবস্থা)। আমার এলাকা যাবে আমি না গেলে হয়। তখন বললাম আচ্ছা ঠিক আছে রেডি হয়ে আসছি। আমি চিন্তা করলাম বাসে না গিয়ে ট্রেন যাই কারন আমি ট্রেন ভ্রমন করতে ভালোবাসি।
.
আমরা মেস থেকে বেরিয়ে একটা রিক্সা নিয়ে রেলওয়ে ষ্টেশন আসলাম। ট্রেন ছাড়ার সঠিক সময় রাত ৮.৪৫মি: কিন্তু ট্রেন এলো ১১.৩০মি:। ট্রেনে যাত্রা শুরু করলাম ।আমনুরা পৌছালাম রাত ২টাই। আমাদের প্ল্যান ছিল রাতে ট্রেনে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌছাবো এবং সকালে বাবু ডাং চলে যাব কিন্তু আশাই গুড়েবালি, আমানুরা এসে জানতে পারলাম ট্রেন চাঁপাই যাবে না, সরাসরি রহনপুর চলে যাবে। আমরা তখন সিধান্ত নিলাম আমনুরা থেকে বাবু ডাং হেটে চলে যাব। যেই কথা সে কাজ ট্রেন থেকে নেমে পরলাম। প্লাটফরমে নেমে ১টা পানির বোতল ও কিছু খাবার কিনলাম। হঠাৎ একটা মানুষ এসে বলল পানি খাব। বোতল দিলাম কিন্তু পানি না খেয়ে বোতলের মুখে নিজের হাতের ময়লা উঠাচ্ছে( দেখতে ভাল কিন্তু পাগল) এই কান্ড দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে পানির বোতলটা বাইরে ফেলে দিলাম।
.
আমরা রেললাইন ধরে হাটা শুরু করলাম। রাতে আমাদের কাছে নিজের ঘাড়ব্যাগ এবং মোবাইল ছাড়া আর কিছুই নাই। তিন জন মিলে গল্প করতেছি আর হাটতেছি। রেললাইনের আশে পাশে কোন বাড়ি ঘর নাই, কিছু সময় দেখি ফাকা মাঠ আবার কিছু সময় অন্ধকার কিছুই দেখা যাই না। মাঝে মধ্যে বড় বড় গাছ, আর এসব গাছ থেকে কত ভয়ংকর ভয়ংকর শব্দ আসতেছে। সবার ভিতর ভয় ভয় কাজ করছে। হঠাৎ দেখি রেললাইনের পাশে সাদা কাপড় পড়ে কে যেন শুয়ে আছে। যেখানে শুয়ে আছে তার পাশে ভুট্টার চাষ। আমরা কিছু না দেখার ভান করে পাড় হয়ে গেলাম। তারপর আমরা বলতে লাগলাম কে ছিল ওখানে , ট্রেনে কি কাটা পরেছে, / শুয়ে আছে,না অন্য কিছু হবে? সিমান বলল চল দেখে আসি,কোন খারাপ কিছু হলে কেটে পরব।
- অনু: ওকে ,ঘুরে দেখি সেখানে কিছুই নাই, আমরাতো পুরায় অবাক, কোথায় গেল মানুষটা?
আমরা আসে পাশে খুজলাম কিন্তু কোন কিছুই পেলাম না। তখন আমাদের মাঝে ভয় কাজ করতে লাগল। মনে হচ্ছে আমাদের সাথে খারাপ কোন কিছু হতে চলেছে। আমরা সবাই আল্লাহর নাম নিয়ে হাটতে শুরু করলাম।
.
রেললাইন ছেড়ে রাস্তাই হাটতেছি। ফজরের আযান দিবে এমন সময় একটা মানুষ সাইকেলে আসতেছিল। তিনি আমাদের দেখে ১৫ /২০ হাত দুরেই দাড়িয়ে গেলেন। তিনি আমাদের সাথে ভিত কাপা কাপা কন্ঠে প্রশ্ন করলো : আপনারা কথা থেকে এলেন, কোথায় যাবেন??
-অনু বলল;আমার রাজশাহী থেকে এসেছি, বাবু ডাং যাব, আপনি কোথায় যাবেন?
-আমাদের গ্রামে ডাকাত পড়েছে।
-সিমান: কি বলেন ডাকাত!
-ডাকাতরা একজনকে ছুড়ি মেড়ে টাকা পয়সা, মোবাইল নিয়ে গেছে, আমি ডাক্তার আনতে যাইতেছি।
-সিমান:ওমা আমাদের আর রক্ষা নাই গ্রামের জনগন দেখলে মার একটাও মাটিতে পরবেনা। আমাদের ডাকাত মনে করে পিটাবে। (কারন আমাদের যদি প্রশ্ন করে, তোমরা এতো রাতে কথা থেকে এলে & কথায় যাবে? আমরা যদি বলি এভাবে, এই জন্য এসেছি, তা জনগণ বিশ্বাস করবেনা)।
মনে হয় আজ রাতটাই শেষ রাত। (চাঁপাইনবাবগঞ্জ কয়েক মাস আগে ডাকাত সন্দেহ ২ জনকে পিটায়ে মাড়িয়া ফ্যালাইছে জনগন)
কি জন্য যে এই ভ্রমনে এলাম আল্লাহ তুমি আমাদের রক্ষা কর। আমাদের সবার ভিতর ভয় কাজ করছে। কি যে আছে কপালে আল্লাহ জানে। আমি বললাম চল আমরা সকাল পর্যন্ত কোথাও লুকিয়ে থাকি। সবাই একমত হয়ে পাশের ক্ষেতে আশ্রয় নিলাম। সকালে বের হয়ে, মসজিদে নামায পড়লাম। আবার হাটাশুরু করলাম। রাতে যে ভাইয়ের সাথে দেখা হয়েছিল উনার সাথে দেখা হল, কথা বললাম। হাটতে হাটতে বাবু ডাং পৌছালাম। মনের ভিতরে ভয় নিয়ে কমবেশি সব জায়গা ঘুরে দেখলাম, কিছু ছবিও তুললাম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ এসে ট্রেন ধরলাম এবং রাতে রাজশাহী পৌছলাম। এভাবে সখের ভ্রমন শেষ করলাম।
®এই ভ্রমন জীবনে কোনদিন ভুলবো না®
©somewhere in net ltd.