![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দীর্ঘ ২৮ বছর মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পেতে ভিক্ষা করেছেন মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মকরউদ্দিন। কিন্তু ভিক্ষার হাত যে বড় লজ্জার, বড় কষ্টের তা বুঝতে পেরে ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে বাঁশের ঝুড়ি বানিয়ে রোজগার করছেন তিনি। এখন তিনি বাঁশের ঝুড়ি বানানোর কারিগর এবং একজন কর্মঠ মানুষ হিসেবে এলাকায় পরিচিতি পেয়েছেন।
মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের বৃদ্ধ মকরউদ্দিনের বয়স যখন দেড় বছর তখন হামে আক্রান্ত হন। হামের কারণে দু চোখের দৃষ্টি হারান তিনি। অন্ধত্ববরণ করায় তিনি সংসারের বোঝা হয়ে দাঁড়ান। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর তিনি ভিক্ষার ঝুলি তুলে নেন কাঁধে। ১৯৭২ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৮ বছর ভিক্ষা করেন। সংসার জীবনে দু ছেলে আর তিন মেয়ের জনক তিনি। পিতার রেখে যাওয়া এক/দু বিঘা জমি আর ভিক্ষার আয় থেকে পাঁচ সন্তানকে বড় করে তোলেন। কিন্তু ভিক্ষার হাত বড় লজ্জার, বড় কষ্টের তা বুঝতে পারেন তিনি। ২০০০ সালের পর ভিক্ষা বৃত্তি ছেড়ে হাতে তুলে নেন ধারালো অস্ত্র। নিজ হাতে বাঁশ কাটেন। এরপর চটা তুলে সুন্দর করে চেঁচে-ছিলে ঝুড়ি বোনেন। যা দেখে মনে হবে একজন নিপুণ কারিগরের কাজ। একদিন বাঁশ কেটে সাইজ করেন, একদিন চটা তোলেন, একদিন জুড়ি বোনেন, একদিন সেগুলো সুন্দর করে বাঁধায় করেন। এরপর তৈরি ঝুড়িগুলো একটি বাঁকে ঝুলিয়ে লাঠি হাতে করে বেরিয়ে পড়েন বিক্রি করতে। নিজ গ্রাম রাজাপুর, গোভীপুর, যাদবপুর ও মেহেরপুর শহরে ফেরি করে বিক্রি করে বাড়ি ফেরেন। যা দেখে অনেকেই বিস্ময় বোধ করে।
মকরউদ্দিনের বড় ছেলে জোয়াদ আলী জানান, তারা যখন ছোট ছিলো তখন তার পিতা ভিক্ষা করে অতি কষ্টে তাদের মানুষ করেছেন। এখন তিনি ভিক্ষা ছেড়ে নিজেই কাজ করেন। যা দিয়ে তাদের সংসারের বাজার খরচ হয়। তাদের আয় আর পিতার আয় দিয়ে সংসার ভালোই চলছে। বড় পুত্রবধূ অঞ্জনা খাতুন বলেন, তার শ্বশুর অন্ধ হলেও একজন দৃষ্টি সম্পন্ন মানুষের মতো বাঁশ কাটা, চটা তোলা, চাঁচা-ছিলা এবং ঝুড়ি বোনানো দেখে অনেকেই অবাক হয়। তার কাজ করা দেখে মনে হবে না তিনি অন্ধ। ঝুড়ি বোনানোর পর একটি সাইকেলের কাটা চেন আছে, তা দিয়ে মেপে দেখেন ঠিক সাইজ মতো বোনা হলো কি-না। মকর উদ্দিন তার বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ঝুড়ি বোনানোর কাজটি শিখেছিলেন বলে তিনি জানান। তার অভিমত আমাদের দেশে যতো লোক ভিক্ষা করে তাদের বেশির ভাগ কাজ করে খেতে পারে। তার মতো ভিক্ষাকে ঘৃণা করে কাজ করলে পরিবার, সমাজ তথা দেশের উন্নয়ন হবে। কমবে বেকারত্বের সংখ্যা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:১২
মুহাম্মদ তৌহিদ বলেছেন: ভিক্ষাবৃত্তি হল জগতের সবচাইতে ঘৃন্য পেশা। তবে অবাক করা ব্যাপার হল, বিভিন্ন নামিদামী শহরের ভিক্ষুকেরা প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তার চাইতে বেশী কামাই করে। আর পবিত্র রমজান মাস তো হল ভিক্ষুকদের সুবর্ণ সময়। বিভিন্ন জেলার অনেক শ্রমজিবী ভিক্ষা মৌসুমে তাদের পেশা ছেড়ে দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে যোগ দেয়। ভিক্ষাবৃত্তির মত ঘৃন্য পেশা ছেড়ে দেয়ায় তিনি একজন মডেলে পরিনত হয়েছেন।