নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঢেউ টলোমল পদ্ম পুকুর

বাবুল অাবদুল গফুর

লেখক, চিত্রশিল্পী ও সরকারি চাকুরিজীবী

বাবুল অাবদুল গফুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিতা

১৭ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ২:৩৬

২০১৩ সালে বিভিন্ন গ্রুপে প্রকাশিত আমার কিছু কবিতা

১.
বড় অবেলায় কাউকে
ভালোবেসেছি,
বড় অবেলায়!
গ্রামের মেঠো গলির মতো
লজ্জায় ভদ্র-
আঠারোর যুবক
কি করে বলি, ভালোবাসি!

হৃদয়কে ঘৃণা করি প্রচণ্ড!
আমি তো তার সাক্ষী-
প্রতিটি অন্ধকারে তার
আরণ্যিক ব্যবহারে।

একদিন মিশে যাবো-
নরম হাওয়ার ভেতর।
অশ্বত্থের তলে।
হয়তো নরম ঘাস জমে যাবে দেহে!
গুল্ম বা কীট পতঙ্গের
সাথে তাই আর পার্থক্য খুঁজি না অযথা।

আঘ্রাণের কোন সকালই
আমার প্রিয় নই।
তাই অপূর্ণ উপমায় বলিনি, আর চাঁদটা অন্য কারও।

প্রকাশের আভিজাত্য
আমি এভাবে এখনও এড়িয়ে চলি।

বন্ধুরা বলত,
'দৃশ্যের সমস্তটা
শেষাশেষি অন্যের।
অত মহত্‍ হয়ো না বন্ধু,
অত মহত্‍ হয়ো না।'
ওদের চোখে আমি
বিস্তারিত
কোথাও আর নিজেকে খুঁজিনি স্বতন্ত্রে।

আর বুঝতেই পারিনি আজও ভুলেরও সৌন্দর্য আছে।
পৃথিবীটা তাই আমার চোখে-
সংকীর্ণে বেড়ে উঠা গলি।

ফুল, একগুচ্ছ ফুল-
কি নিস্পৃহে মাটির নিকটবর্তী!
এই ক্ষুদ্র ঘটনাও আজ
আমার প্রকোষ্ঠে বেওয়ারিশ।
কি করে বলি,
জোছনার আলো আমার অসহ্য!

ভালোবেসে দেবার স্বল্প অর্থে আমি গৃহহীন।
এমনকি নদীর শঙ্খ শব্দেও
আমার জঘন্য অপ্রীতি।

তাই বড় অবেলায় ভালোবেসেছি কাউকে
বড় অবেলায় ভালোবেসেছি।

২.
ভালোবাসার শর্তে কেউ যদি একই ভুলে দূরারোগ্য!
সে আমি।
সমাজে সমাজে নির্মম- সবর্তমান,
তবু চোখ বুজে আসার মতো স্বচ্ছ প্রশান্তি, শরীরময়!
সব মিলিয়ে পৃথিবী আজ সুদর্শন হেমন্ত!

প্রতিকূল ছেড়ে পাড়ভাঙা জোয়ারের উচ্ছ্বাস-
বিনম্র শর্তে ডিঙাতেও পারি সারি সারি পাহাড়।
কেউ বুঝুক
আর নাই বুঝুক,
আলোর মেরুদণ্ডে দাঁড়িয়ে আমার সূর্যস্নান।
বৈরীর ভিতর নিশ্চিন্ত আটপৌরে।
নষ্টের দু'হাতে আমাকে দিয়েছি বিকে,
চোখের চারপাশ আজ
সব-সম্ভবের প্রতিশ্রুতি!

প্রকৃতি জানে সমস্ত উপাদান জুড়ে আমার
সন্ন্যাসী উদয়াস্ত!
গোধূলির সবিশেষ আমার চোখে সু-তরঙ্গ প্রেমিক।
বিনাক্লাশে কাটাতে প্রস্তুত
বিস্তৃত শতাব্দী!

ভালোবেসে আমি হতে চাই অর্থহীন নিঃস্ব-
দুয়ারে দুয়ারে!

৩.
আরও একটি সকাল দেখলাম
--বাবুল আবদুল গফুর
---------------------
আরও একটি সকাল দেখলাম
পরিপূর্ণ সকাল-
সূর্য বাঁক নিতে নিতে হয়ে গেলো,
সোনালী থালা।
পাখির গানে ছিল প্রকৃতির অনুরোধ-
ঘাসে ফুটেছিল কয়েক’শ কোটি-
শিশিরের তরলদেহ!
(সৃষ্টিকর্তা তোমাকে ধন্যবাদ)

বাতাসের দেহ ছিল ঠাণ্ডা প্রলেপ-
প্রস্থনোদ্যত আকাশের গুটিকয়েক তারা,-
যেতে যেতে ফের দেখেছিল-
নীলিমার গৃহস্থালী!
কী অপূর্ব!
রুপালী সতেজ সকাল!
তারপর ধীরে ধীরে পূরণ হলো
পৃথিবীর শূন্যস্থান।
জীবনে স্রোত আসল-বহুগুণ বেগে--!
(সৃষ্টিকর্তা তোমাকে ধন্যবাদ)
তারপর-
মাটি আর গ্রহের দূরত্বে ছড়ালো-
কাজ আর কাজ----

৪.
ক্ষুদ্রের মাঝে আমার দূরত্ব কতই বা! অথবা অন্তরালে কান্নার শব্দ
--বাবুল আবদুল গফুর
==================
তোমাদের মতো আমি কাঁদতে পারি না!
ভেবছো, হৃদয় অর্থে আমি নিরেট স্বার্থপর?
শিলাস্তরে ভাঁজ করা পার্থক্যের মতো,
কোণঠাসা আমার নৈমিত্তিক!
মানুষ অর্থে অযৌক্তিক আমি!
না, এ হতে পারে না।
শ্রাবণে মুষ্টিমেয় মেঘ গলে যায়নি প্রকাশ্য আঘাতে,
ভেব না, জলশূণ্য তার স্থূলদেহ!
প্রয়োজন অনন্যোপায় বলে,
আমি সম সংকুচিত
দীর্ঘ আবর্তে.....

যে পাতাটি একসময় ঝরে যায় নিজের আবিজাত্য হাওয়ায় মেলে, পড়ে থাকে অনির্দিষ্ট অবস্থানে-
সেও জানে, আমার ভেতর কান্না জমতে জমতে- বরফের মতো হয়ে উঠছে সুকঠিন!
চলতি সান্ত্বনায় তাই
নিজেই অগ্রাহ্য অন্যের সময়ে!

যে মানুষটি নিষ্ঠুর,
গুলির তর্কে কেড়ে নেয় আশ্রিত জীবন-
নূন্যতম কারণে-
তারও রয়েছে দুঃখ, অর্ধতরল ব্যথা-
কোটের নিচে গুঁজে রাখা অখন্ড হৃদয়!
গুটি কয়েক উপেক্ষনীয় কষ্টে কখনও কখনও
সেও কাঁদে অঝোর!

কোনকিছুই এখানে নিরর্থক নয়! একটা বিন্দুতে এসে
মানুষ মর্মে মর্মে ভালো।
শুধু ত্রুটিবহুল প্রণালী তাকে উচ্ছিষ্ট করে তোলেছে বারংবার।

সে অর্থে শ্রাবণের নিচ্ছিদ্র বৃষ্টি আমারই কান্নার আশ্রয়।

৫.
ভালোবেসে উত্‍ভ্রান্ত পুরুষ,
এক চোখে দেখেছে-
পুরো একটি আকাশের রসায়ন।
এক চুকে করেছে পান
সূর্যের দূরত্বের বিসৃত আলোর অনুযোগ ।

বাপের নিয়মে বেড়ে উঠা অস্পষ্ট বালিকা
কি নিষ্ঠুর মায়ায়-
মেঘল চুল ছাড়িয় আজ
তার পরিপূর্ণ রসদ!

সাধারণভাবে বালিকা ঘুরে এলো
তার অস্তিত্বের সবকটা গলি।
কখনও লজ্জার আরক্তি
মেখে তার কাছে হয়ে উঠছে
রহস্যের দুর্বোধ্য পাঠ!

জগতের বাইরে দাঁড়িয়ে দেখছে প্রেমিক,
তার ভিতরে কি অগ্রাহ্যভাবে
সে এক বালিকার চলাফেরা।

যেন শান্তি, চোখ বুজে আসার মতো জমাট শীতল!
কাউকে অধিকার সঁপে দিয়ে নিশ্চন্ত জীবনের কেন্দ্রীকরণ ।

চাঁদের মুখোমুখি আর
রাজকন্যার পথে সে
অক্নান্ত প্রেমিক।

স্বপ্ন আর বাস্তবতা কি যেন সরে যাচ্ছে দূরে,
সুদর্শন সেতারা সে পথে অবিরত গতিশীল।
শুধু দিগন্তে ডানা মেলে অবিরাম ছুটে চলছে
পথের ক্লান্তি ভুলে
স্বাপ্নিক পুরুষ!

সে!
চোখ বুজে জড়িয়ে আছে
জগতের জড়াজড়ি সবটুকু সুখ-
বালিকার দেহ!

৬.
আলো!
প্রভাতের আলো!
সোনালী পবিত্র আলো!
তোমারও কি কথা হয়
আঁধার অন্তরীক্ষে?
কষ্টের,
সুখের,
বিচ্ছিন্ন বিষয়ের নানাবিধ!
আমার যে সমঝোতাহীন
পরাম্পর!
নিয়মের ভেতর দিগন্ত দেখা-
টুকরো টুকরো!
তাই পালা করে কাঁদি,
অনিচ্ছুক রাতভর!

মেঘ, আকাশ, পাখি-
তোমরা যে যার মতো সুখী।
ভালোবাসার কঠিন স্বার্থে গৃহত্যাগী জোছনা।
আমার শুধু নিজেকে
পুড়ানোর দু'দণ্ড উল্লাস।
দু'পায়ে জড়ানো বিসূক্ষ্ম
অঙ্গার বিস্তারে...

স্মৃতিও নেই বেঁচে থাকার মতো অথচ সে আমি, বেঁচে আছি উদ্বিগ্নহীনতায়-
হাস্যকর দুনিয়াবি তর্কে।

তবুও ভালোবেসে দিতো যদি কেউ একটি শপথ!
বাড়ি ফেরার একটি
প্রাহত্যিক তালিকা,
অশ্রুর অর্থে জড়াজড়ি
মিহি আবদার গোচরে...
ইস! পৃথিবীর উপমা হতো
সবটুকু সুখ!

শেষ পর্যন্ত কেটে যতো আমার বাষট্টি বছর!-
সুখে আর সুখে...

৭.
এখানে এখনো পর্যন্ত কিছু
থেমে নেই-
অপেক্ষায় কারও।
একদিন আমিও ভুলে
যাবো সবকিছু,
এক এক....
তোমার দেহে-
আমার পরজীবীতা!
ভুলে যাবো-
কে কেমন ছিল,
প্রায় কোন রঙের ড্রেসে
নিজের নিবেদিতা ঢেকে রাখতে,
কপালে লাল টিপ আদৌ
পড়ত কি-না!
মুখের কোথাও যেন একটি
বিবস্ত্র আঁচড়-
নীল না কালো ইত্যাদি।
ভুলো যাবো অন্তিম
রাত জেগে-
তোমায় চর্বণ।
নিজের অগোচরে
কাউকে ডেকেছি,
কাজে, অবকাশে, প্রার্থনায়...
কি প্রচণ্ড ঝেঁকে বসেছিল
আমার আটপৌরে!

তুমিও অন্যকে জড়িয়ে
ঠিকঠাক ভালো আছো, থাকবে-
নিজের ভেতর কাউকে মেলে দিবে আবার।
পারবে, পারবে,
তোমরা আসলেই পারো!
স্রষ্টার মতো বিচিত্র মানুষই কেবল।

ভালো থাকবো জানি,
জানি না, কি অর্থে কেমন!
লাল মদে নিজেকে লুকাতে চাইবো?
না, চুরটের টানে হয়ে
উঠবো নিরর্থক পাথর!
একই পাড়ায় থেকেও
আমরা আজ ভুলে যাচ্ছি চূড়ান্ত স্বার্থে!

তোমার খোঁজ নেবার সময়
কোথায়, বল?
স্রোতের কোন এক কড়ি
কাঠ ধরে,
নদীর থামলেই ক্ষতি যে!

ভুলে যাবার প্রশ্নে বিব্রত
হওয়ার চেয়ে মনে না রাখাই ভালো!
তবু ভুলে যাওয়াই আজ
প্রত্যয়।
ভুললে কি এমন ক্ষতি?
জোড়াতালির অসংখ্য ঘটনা কতবার-
ভুলে গেছি, যাচ্ছি নিয়ত ।
ভুলে যাবে তুমি এবং আমিও।

আসলেই কি ভুলে থাকা হবে?
না, অন্যের বুকে ঘুমন্ত
তোমায় দেখে-
বিষের পেয়ালায় আমি
দেবো একজোড়া চুমুক।

৮.
জিহাদ!

আবার যদি জিহাদের ডাক আসে-
জুলুমে জালিমের আকণ্ঠ পুড়ার....(!)
খুনে লাল করে দিতে চলমান সমুদ্রের-
আমি চলে যাবো নিশ্চিন্তে-
যে জীবন আমার নই,
তাকে নিয়ে ভেবে লাভ কি!
এ বিশ্বাস আমার ঠলেনি আজও-
'মৃত্যুর ফয়সালা আসমানেই হয়।'

আমি প্রেমিকের সামনে
সব ক'টা সন্তুষ্টি নিয়ে যেতে চাই-
সত্যের তর্কে নিজেকে করতে চাই পরিশুদ্ধ!
(শহীদি তৃষ্ণায় অন্তিম তৃপ্তি!)
তাই ঘুমের ঘোরেও-
জিহাদ জিহাদ বলে ডাকি!

৯.
যদি আমাকে হত্যা করা হয়!
ও দূর আকাশ
লুটে নিতে,
এক মাঠ সবুজ পুড়ে পুড়ে
মাটির স্থানীয়দের ধ্বংস
করতে চরিতার্থের কেউ।
পাহাড়ের আড়ালে যে নদী
গম্ভীর হয়ে চলে-
অথবা একগুচ্ছ ফুলকে
কেড়ে নিতে,
বহুবার ফুটতে গিয়েও
পারনি যে ফুল, নিজেক জানাতে!

তোমাদের ক্ষমা যেন তার কাছে মহত্‍ না হয়।
যেন বলো না, কতই বা আর ক্ষতিবৃদ্ধি!

সকালে উঠে যেন শুনি, তোমাদের মুখে-
'কি অপূর্ব সোনালী সকাল!'
যার জন্য আমি মাইলকে মাইল হাঁটছি--
যুদ্ধের ভেতর কাটাচ্ছি
বিদ্রুপ ত্রাসের আহ্নিক।
পেশীর ব্যথাকে মেনেছি
শান্তি ও সুরে!
তবু চলছি....

কাদার শরীরে পায়ের ছাপ
বর্ষা এলে, মুছে যাবেও জানি-
তবু দুঃখ নেই, এ তল্লাটের অনেকে জানে-
আমি কেন কাঁদি!

১০.
সন্ধ্যা নামলে আমি চলে যাবো-
মিশে যাবো নক্ষত্রের তলে,
সোনার স্বপ্নের মতো-
পড়ে রবে ঝিঙে ফুল,
মেঘের সওয়ার কার জন্য কবে আর থামে!
রাতের খোপায় যে চাঁদ গুজে দেখেছি দূরে-
নিভৃতে নদীর কথা শুনেছি আড়ি পেতে!
কেন সে সোনার দিন ফুরাবে আজ চলে যাবো বলে?

রাতের নিশ্চুপ একই নিয়মে সকলকে এড়ায়।
স্বপ্নের কাছাকাছি
আরও ঠাণ্ডা হয়ে এলে- কেবলই অথৈ বিষাদ!

প্রিয়ার আবদারে উষ্ণতা খুঁজি তবু...
যদি কোনদিন বেঁচে থাকা হয় আবার!
এইসব একদিন ইতিহাস হয়ে রবে-
যখন দোয়েলের শিষ শুনতে জাগবে না ভোর!

১১.
তাড়া
বাবুল আবদুল গফুর
--------------------
তারপরও একটা ভয়-থেকেই যায়,
সে ভয়-খুব করে আমাকে
তাড়া করছে—
মাঠ-ঘাট, লোক-লোকান্তর-মাড়িয়ে
শূণ্য উঠানে এসে দাঁড়াই-
নিজের মুখোমুখি নিজে!
নিজের বিবৎস শরীর দেখে-
নিজেই আৎকে উঠি!
আদিকীট যার-
কুটকুট করে কেটে দিচ্ছে-
দেহের প্রণালী,
শিরা-উপশিরা, ধমনী-
ইন্দ্রিয়গুলো-
যেগুলো অনেক পুরনো থেকে-
একান্তই আমার।
আবার আৎকে উঠি, সে ভয়সহ-
নিজের দেহকে আঁধার চাপা দিয়ে
আবার দৌঁড়াই প্রাণপণ-
ক্লান্ত হই, ভেঙে পড়ি মুহুর্মুহু!
দু’হাতে পাহাড়, সাগর-
মেঘ সরিয়ে-
তবু অবিরাম দৌঁড়াতেই থাকি-
এত ক্ষুদ্র পৃথিবী তবু-
যার শেষ হয়তো কেউ দেখেনি।
কোথাও থেমে যেতে দেখি-
আমি দৌঁড়াচ্ছি!
আবার ভেঙে পড়ি- পেছনে দেখি-
না কিছুই নেই।
সে ভয়টা তবু আমাকে তাড়া করছে-
ওষ্ঠাগত প্রাণে আবার দৌঁড়াই-
আবার পড়ে যাই-
আবার পেছনে দেখি-
কিছু নেই!--------

১২.
রাস্তায় দাঁড়িয়ে আকাশটা
আবার দেখে নিলাম।
চাঁদ নেই,
আকাশকে সম্ভবত এত বিশ্রী
আর কোন সময় দেখিনি।
তোমাকে ফোন দিলাম,
বললাম, জানালাটা খোলে-
যতদূর দেখা যায় আকাশের গায়ে
একবার হাত বুলিয়ে দাও।
হয়তো দিলে।
তারপর বললে, কেন?
আমি হাসলাম. চিরদিন যেভাবে হাসি- মৃদু।
না বাতাসে, না শব্দে আঘাত।
ঠোঁটে জন্ম নিতেই যা মিলিয়ে যায় ফের,
তুমি বলো, উদ্বায়ী হাসি।
আমি আবার বললাম, যে কোন একটা তারাকে হিসেব করো,
আমি ওর ঠিক নিচটায় দাঁড়িয়ে আছি-
অপেক্ষায় নয়, প্রতীক্ষায়!
তুমি বললে, তুমি-ই হয়তো আমার জীবনে নক্ষত্র ভরা আকাশ।
কোন আকাশই তাই আমার মাথার উপরে টাঙানো নেই।
আমি আর কিছুই বলিনি, টুক করে
লাইনটা কেটে দিলাম।
ছোট খাটো, ছড়ানো-ছিটানো-
মেঘের বৃষ্টি এক করে-
ঝর ঝর করে কেঁদে ফেললাম,
এতো সুখ আমার সইবে কেন?

১৩.
সেবার মরতে গিয়ে জেনেছি-
কী অদ্ভূত মায়ায় এক
উদ্বাস্তু ভালোবাস :
পরিচয়হীন আদরে আসক্ত
বালিকার প্রতি-
বৃত্ত থেকে সরে যাওয়া
কেন্দ্রের সুতীব্র টান!

সাধারণ অভিব্যক্তে
আমার কাছে হয়ে উঠা
রূপকথার রাজকন্যা,
যার উপমা রাজ্যের কোথাও নেই,
নিঃশর্তে ভালোবেসে
যে স্পন্দন হারিয়েছে- বাতাসে, তারা অব্যয়ে ফিরে আসছে
এক এক!

মনের চড়ুই ভাতি গৃহে
কষ্টে অথবা সহজ কিস্তে
পাওয়া ভালোবাসায়
অভিসিক্ত হৃদয়!
দেখেনি কোনদিন-
মেঘকৃষ্ণা অপ্রকাশিত যুবতী...(!) যার-
অফুরন্ত ভালোবাসায় আকণ্ঠ
চিরচেনা এই আমি!

গ্রীষ্মের দুপুরগুলো কি অস্থিরতায় জড়ানো
বা বর্ষার টুইটম্বুর দিঘীর
পাড় থেকে পাড়!
হয়তো দেখিনি-
খুব আড়ালে বেড়ে উঠা
একটি সাধারণ সুখের কাহিনী।

তাই, বেঁচে থাকায় ইচ্ছায়
সম্ভবপর সকলে সুখী।
এই যেমন আমি,
একই পরিধিতে
আবর্তিত পরিবর্তনশীল।

১৪.
প্রার্থনায় জোড়া হাত
------
এটা সত্য যে,
তোমার দরবার দু'হাত তুলে কান্নার মতো অত পরিচ্ছন্ন অন্তর আমার নেই।

কঠিন বেলে পাথুরে গড়া আমার হৃদয় ও ইন্দ্রীয়।
তোমার অবিদিত নেই,
ঘাসফড়িং আর নিম্ন শ্রেণির প্রাণির মতো কোন আদেশকে করিনি শিরোধার্য!
দুনিয়াবী ত্যাগে উম্মুখ আমি।

তবু তোমার দরবারে আমার দু'হাত, আমি যে আর কাউকে খোদা মানিনি-
পারিনি।

একই সময়ে যেখানে অন্যরা তোমার প্রতি বিমুখ। তাদের থেকে আমার পার্থক্য যত্‍সামান্য।
তবু, তোমার ক্ষমার আশায়
সাচ্চা মুসলিম আমি।

প্রভূ, ক্ষমায় পরিশুদ্ধ কর আমার আত্মা ও অন্তর!
তোমার গোলামীর কঠিন আর্দ্রে উপযোগী কর
আমার বাহ্যিক ও অভ্যন্তর।

তোমার সন্তোষের ভেতর যারা দুনিয়া থেকে দূরে
তাঁদের কাতারে আমাকে এক করে নাও।
মহিমান্বিত শ্বাশতে-
আমাকে পূত পবিত্র কর
তোমার সন্তুষ্টি পর্যন্ত!

১৫.
যে কথা আমাকে বলতেই হবে,
কাল পর্যন্ত আমি নাও থাকতে পারি।
কারণ, সময়ের প্রতি আমার বিশ্বাস বড়জোর নূন্যতম।
শুধু আমি নই, অনেকে দেখেছে-
নক্ষত্রের শরীরে আজ
মেঘের উপদ্রব।
সন্তপে আকাশ দেখেই যায় না, দূর থেকে।
কি মত্ততায়-
ক্ষমাহীন অভ্যাসে
বনকে বন উজাড়।

কোন আলোই আর পৃথিবীমুখী নয়।

যুদ্ধের স্নায়ুবিক ক্রোধ
পরাজিত চোখে মৃত্যুর নেশা-
লাশে লাশে দুনিয়ায় উর্বর।
এবং বাতাসে দূষিত বীর্যের উত্‍কট গন্ধ!
নর্দমার সিউয়েজে রক্তের বুদবুদ,
মৃতের চোখে- যুবতী দুনিয়ার শরীর।
অপরিণত মৃত্যুর সংখ্যায়
দুনিয়া আসলেই স্বাভাবিক (!)

অনেকে সুকঠিন চৈতন্যে
সহ্য করছে ৩য় শ্রেণির প্রীতি ও প্রেমে।
আমাকে বলতেই হচ্ছে,
শুধু নিজেকে ঘিরে সম্ভবনার প্রতিযোগিতা।

কান্নার মতো পরিশুদ্ধ প্রণালী মিয়ম্রাণ শোকে
ক্ষয়িষ্ণু...।
এক এক করে চলে যাচ্ছে
অন্তরের নমনীয় সবিশেষ।
এ কথা আমাকে বলতেই হবে-
হয়তো কালকে আমার লাশ পড়ে থাকবে কারও
ক্ষুধার্ত চোখে ও নেশায়!

স্রোতমুখী জীবনের আশ্রয়ে
তবু কেউ কেউ নিশ্চিত সুখী।
আমিও জানি না, যে মাঠ
পড়ে থাকে শূণ্য তার ব্যথার উত্‍স কোথায় (?)
হয়তো আমিও মিশে যাচ্ছি নষ্টদের একমুখী উত্‍সবে।-
পৃথিবী আজ পতিতার নিরাপধ আশ্রয়।
তরঙ্গবহুল ঢেউ নিয়ে অন্ধকার দুনিয়ার কাতারে।
তাই আমাকে বলতে হচ্ছে এসব-!
সবকিছু, হ্যাঁ হ্যাঁ সবকিছু, ছোট হয়ে আসছে,
যেন কেন্দ্রের আন্তরিক
মিলনে অস্থির পূর্বাপর!

তাই আমাকে বলতেই হবে,
যে সুন্দর সূচনা নষ্টের,
অভিশাপের-
যন্ত্রণা আমি যেমন জানি
কারো অবিদিত নেই।
তবু অপরাধ প্রবণ অনুভূতি অধিকারে উচ্ছৃংখল।
পৃথিবী দ্রুত নিঃশেষ করে দিচ্ছে নিজেকে।

১৬.
তুই কাঁদিসনে তপু
সব ব্যথার একটা নূন্যতম গুরুত্ব আছে!'
তপুর মতো উদভ্রান্ত বালক
কেন পরস্পর অসহায়।
তবু অগণিত স্পর্ধায়
পৃথিবীর আবদার হয়ে উঠে আরও একটি খুন।
এখন অনেকে বুঝতে শিখে গেছে, ধ্রুব সত্য বলে কিছু নেই।
তাই কারো কারো জন্ম
মিছেমিছি পদার্পণ।
(এই তপুকেই ধরো না)
তপু থাকবে না, সেটা আমিও জানি-
তবু তার ক্ষমা নেই।
বেঁচে থাকার অর্থে-
তপু আজ পৃথিবীর নৃসংশ বালক।
জানতেও পারিনি, এই বালকটিও ভালোবাসতে গিয়ে নির্ঘুমে হয়েছিল কবি।......
একদিন গল্প করতে গিয়ে আমরা এসব বলাবলি করি।
(সে দিন অসম্ভব কেঁদেছিল
তপুর ঘৃণ্য নয়ন!)

১৭.
তোমরা না চাইলে আমি চলে যেতে পারি,
এই মিছিল, মিটিং, সভা
সব ছেড়ে।-
আমি আকাশ দেখিনা অনেক দিন।

তোমরা যা জাননা, তা আমি জানি-
ঘাসফড়িং এর মূল্যে আমার অঞ্চলায়ন।
এত রেষারেষি স্বস্তি
দেয় না বড়জোর।-
মাটিতে দেহ জুড়ে হয়ে যাক দীর্ঘ ঘুমের আয়োজন।
কতদিন আর এখানে পড়ে থাকা, প্রতিবাদ? মিছিল?
স্লোগান মুখর উত্‍সব?--?
যদি না, সে অর্থে মানুষ
এখনও হাস্যকর!
অথচ শান্তির ফেরে জনতা নির্ঘুম।
নির্লজ্জ পলায়ন পর।

১৮.
চুপ। একেবারে চুপ....
পাগলের মতো চিত্‍কার করে উঠলেন মৃন্ময়।
কেউ নেই সামনে,
নিজের ছায়াটুকু যা- অন্ধকারে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অথচ ভোরের সূর্যের মতো
নিরুত্তাপ দু'টো বিস্ফোরিত আঁখি-
বিস্তীর্ণে প্রসারিত নিরুদ্দেশে---
তবু এ চিত্‍কারে থেমে গেলে হাওয়ার সারি।
মৃন্মৃয় ভাবে-
গোত্রহীন ব্যথায়
বুকের একটা জমিন
ভীষণ বিষমে খালি।
যেখান ঘাসের অভ্যাস নেই, চৈত্রের অধিকারে ফেটে চৌচির।
হয়তো ভিনদেশী, পরিচয়হীন পলাতক কষ্ট।
কিন্তু প্রতিদিন এর একটা অর্থ সে খুঁজে পায়-
বিমর্ষ সন্তর্পণে।
এক ঢোক মদ গিলে মৃন্ময় তাই দু'দণ্ড শান্তির পথচারী।
নিঃশ্বাসে উদ্বায়ীটান,
দুঃসহে টেনে নিচ্ছে তবু
ভোরের হাওয়া-
অন্ধকারে সম্পূর্ণ টলছে
একটা শরীর এলোমেলো-
আমি দূর থেকে দেখি আর ভাবি, মৃন্ময় আজ মানুষ অর্থে হেঁটে যাওয়া গলিত লাশের মিছিল!

১৯.
এই মফস্বল থেকে দূরে-
এবং আরো দূরে-
তাঁরা ঘুমাতেছে নিবিড় শীতল।

যাঁরা একসময় মৃত্যুকে
বিশ্বাস করেনি।
ক্ষয়ে যাওয়া মানুষের ভিড়ে-
মেনে নিতে পারিনি, নিজের মিথো সংহার।
যাঁরা অবশ্যই বিশ্বাস করত-
প্রস্থান অর্থে সমার্থক নয় অপাচ্য বিদায়।
মৃত্যু সেই অবিসংবাদিত প্রস্থান।
কিন্তু কি নির্মম সত্যে-
সেই মৃত্যুকে জড়িয়ে,
এই মফস্বল থেক দূরে-
এবং আরো দূরে-
তাঁরা ঘুমাতেছে নিবিড় শীতল!

(তাঁদের হারিয়ে
উন্মাদে আজ দুনিয়া উজাড়!)

২০.
'কালকে আবার এসো
আবার বসব মুখোমুখি-
আদ্যোপান্ত আড়াল করে।
কি নিশ্চিত মিনতি!'
শুনে, বুকের শেষ পর্যন্ত জমে বরফ শীতল!
আমি থাকবো বা থাকবো না-
কি বা এসে গেলো (!)
অথচ কী সহজভাবে বলা হলো-
'কালকে আবার এসো!'

ধরো, আসলাম না (..?)
যে পথে চলে গেছে অনেকে।
চলতে চলতে থমকে
গিয়ে দেখে-
অথৈ শূণ্যতা চোখের পাশে!
যেভাবে প্রত্যেক কিছুর সমাপ্তি অবশ্যই আছে!
কি হবে! কতটুকু আর বৃষ্টি হবে সেখানে-
যে সব হৃদয় অন্যের যত্নে-
সযত্নে গচ্ছিত।
ঘটনায় হয়ে উঠে প্রাগৈতিহাসিক!
অসম্ভবকে ছুঁয়ে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে।....

"তবু আমাকে আসতে হবে।"

২১.
-আমার ইন্দ্রিয়ের ভেতর নারী তুমি কল্পনা
-বাবুল আবদুল গফুর
================
একটা নারী প্রয়োজন।
নদীর নিঃস্রাবে মনোযোগী করতে আমার প্রিয় ইন্দ্রিয়গুলো।
কাঁঠালের ছায় শব্দপতন বিধ্বসে উদ্যোগী করতে
বিশৃংখলার সৌন্দর্য।
একটা নারী প্রয়োজন।
গ্রামের পথে হাঁটতে গিয়ে কতবার লাজুক কাঁটায় রেখেছি পায়ের ব্যথা,
ঘাস ফড়িং এর গায়ে হাত রাখতে গিয়ে কোন রমণী বলুক, তুমি সত্যি পাগল!
ঠোঁটে জড়াক অশব্দিত আক্ষেপ।
আমি আমার উত্তাপ পেতে চাই,
পেতে চাই শীতে কোনঠাসা শরীর।
একজন নারী প্রয়োজন।
বনের পথ ধরে হেঁটে গেছে যে পথ কোথাও,
বৃষ্টিবানে ভেসে একটি গাছের পাতা,
খেয়া পারাপার,
শ্যাওলা ও অন্যান্য...।
শুধু একটা নারীর প্রয়োজন।
তারপর পৃথবী লুঠে হবো আকাশের তারা!

২২.
ভ্যানিটি ব্যাগে কাঁধে
পরিচিতা গৃহিণী-
এ অনাড়ম্বর পাড়াগাঁর-
(আমার বেড়ে উঠা বয়স তার)
যে শৌখিন বিশ্বাসে সে
কেটে দিলে সোনালী
দিনের রূপকথা!
অতটুকু মায়াও আমার
আর অবশিষ্ট নেই।

সাক্ষী হীন রাতে
ব্যথা পেলে-
তবু ঝর ঝর কেঁদে ফেলি।
কিছু ব্যথা দুর্মূল্য,
একান্ত আমার সংরক্ষে-
কাউকে বলতে গিয়ে
পারিনি সংক্রান্তির লজ্জায়!
প্রত্যেকে দেখেছে শুধু-
ঠোঁটে গুঁজে রাখা,
প্রকম্প হাসি...!!

২৩.
শঙ্খচিল রৌদ্দুরে

এখানে এসে থেমে যেতে হলো।
বাড়াবাড়ি ধরণের রৌদ্দুর!
দুপুর পুড়ে পুড়ে কঙ্কাল- আকাশের ছাতি।
দিকভ্রান্তে পুড়ে দিলো
মাঠের গৃহস্থালী-
একে একে!
পুড়ে দিলো ক্ষুধার্তের শরীর-
থিতানো রাগে।
চোখের দূরত্বের পুড়ে দিলে
বৈকল্য ঘ্রাণ ও অন্যান্য!
সবকিছু পুড়ে গেলে দেখি,
পড়ে থাকে-
আমার দেহ পুড়া উল্লাস!

২৪.
আজকে বলো দিবো-
বৃষ্টির সাথে আমার সম্পর্কের কথা।
সে বলেছিল, সাগরের রক্ত জমে কিভাবে মেঘের আশ্রয়ে কেন্দ্রভিমুখী।
কিভাবে ঝলসে নিচ্ছে বাষ্পের ভেতর!

একসময় সে মেঘকে
প্রচুর ভালোবাসতো,
আত্মার ভেতর কিভাবে
সে মেঘকে জড়িয়ে
ছিলো আড়স্থ!..
(বিশদে আর নাই বা শোনলে!)
আকাশের সাথেও সম্পর্ক গড়িয়েছে বহুদূর।
ছিন্নমূল মেঘও আজ জানে সে সব কথা।
তোমরা জান না? ছি!
কি অর্থে বৃষ্টির সন্ধ্যায়
বসো, বালিকার পাশে?

পরিত্যক্তের মতো শেষ পর্যন্ত কেউ তাকে
মনে রাখেনি।
যেভাবে মনে রাখে না,
কতিপয় বিচ্ছেদ।
শৃংখল দেয়নি মীমাংসিত জানা-শোনায়।
একদিন শ্রাবণে কেঁদে কেঁদে সে আমাকে বলেছিল এইসব।

তোমাদের মতো আমিও অনন্ত সহজপ্রাণ।
ভঙ্গুর কষ্টে!
সে থেকে বৃষ্টি দেখলে আমি দুর্বল হয়ে পড়ি।
(পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ প্রেমগুলো
চিরদিন নিভৃতে কাঁদে)

তাই বৃষ্টি এলে অবিরাম চেয়ে থাকি।
গন্ধ শুঁকে নিই শরীরের।
আর প্রেমিকের মতো চাটি দেহের সৌন্দর্য!
অন্তত আমাকে বলুক,
তৃতীয়বার প্রেমে-
ঠকেনি সে বিশ্বাসে।
(গাড়িতে/বৃষ্টি দেখে দেখ)

২৫.
অসহ্যের কোন এক অক্টোবর।
পূর্বরাত।
আল্লাহর দুনিয়া অস্থির।
কোথাও ধ্বংসের উত্‍সব
চলছে নিপুণ...
তবু অজানা একটা ঘুম আমাকে পেয়ে বসল।
ঘুমাচ্ছি...।

সামনে লাশ।
লাশ আর লাশ।
আকাশের রাজ্যে শকুনের
নির্ঘুম পায়চারী...
একটা ছেলে কাঁদছে-
অন্তিম মমতায়!
যেন এই কান্নাটি তার শেষ সম্বল।
বললাম, কাঁদছ কেন ভাই?
ছেলেটি আমার দিকে তাকাল।
শান্ত নিথর চোখ।
ওর চোখে দুর্বোধ্য প্রশ্ন।
বেদনাহত!
বলল, আল্লাহ আমাকে প্রথম প্রত্যয়ে কেন শহীদ করল না! আমি...
ছেলেটি আবার ডুকরে উঠলেন।

ভাবলাম, এই ছেলেদের
ধ্বংস করা সাধ্য?
না না না।
নিজের সাথে কি অপূর্ব সমন্বয়।

তাই সাবধান।
যারা এখনও নিজের বুনিয়াদি স্বপ্ন দ্যাখো।
ভাবো, দুনিয়া তোমার
প্রথায় গড়ে উঠা পল্লী।
সাবধান!
উচ্চভিলাষী স্বপ্ন থেকে
সাবধান।
সাবধান...!
সব লাশের পাশে
ছেলেটি এখনও জীবিত!

২৬.
বড় অবেলায় কাউকে
ভালোবেসেছি,
বড় অবেলায়!
গ্রামের মেঠো গলির মতো
লজ্জায় ভদ্র-
আঠারোর যুবক
কি করে বলি, ভালোবাসি!

হৃদয়কে ঘৃণা করি প্রচণ্ড!
আমি তো তার সাক্ষী-
প্রতিটি অন্ধকারে তার
আরণ্যিক ব্যবহারে।

একদিন মিশে যাবো-
নরম হাওয়ার ভেতর।
অশ্বত্থের তলে।
হয়তো নরম ঘাস জমে যাবে দেহে!
গুল্ম বা কীট পতঙ্গের
সাথে তাই আর পার্থক্য খুঁজি না অযথা।

আঘ্রাণের কোন সকালই
আমার প্রিয় নই।
তাই অপূর্ণ উপমায় বলিনি, আর চাঁদটা অন্য কারও।

প্রকাশের আভিজাত্য
আমি এভাবে এখনও এড়িয়ে চলি।

বন্ধুরা বলত,
'দৃশ্যের সমস্তটা
শেষাশেষি অন্যের।
অত মহত্‍ হয়ো না বন্ধু,
অত মহত্‍ হয়ো না।'
ওদের চোখে আমি
বিস্তারিত
কোথাও আর নিজেকে খুঁজিনি স্বতন্ত্রে।

আর বুঝতেই পারিনি আজও ভুলেরও সৌন্দর্য আছে।
পৃথিবীটা তাই আমার চোখে-
সংকীর্ণে বেড়ে উঠা গলি।

ফুল, একগুচ্ছ ফুল-
কি নিস্পৃহে মাটির নিকটবর্তী!
এই ক্ষুদ্র ঘটনাও আজ
আমার প্রকোষ্ঠে বেওয়ারিশ।
কি করে বলি,
জোছনার আলো আমার অসহ্য!

ভালোবেসে দেবার স্বল্প অর্থে আমি গৃহহীন।
এমনকি নদীর শঙ্খ শব্দেও
আমার জঘন্য অপ্রীতি।

তাই বড় অবেলায় ভালোবেসেছি কাউকে
বড় অবেলায় ভালোবেসেছি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.