![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি চন্দ্র দেখেও এত আপ্লুত হই না আমি সুর্য দেখেও এত আপ্লুত হই না পৃথিবীকে দেখে যত না আপ্লুত হই
আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি সব ব্লগারদের কাছ থেকে, তারা যেন আমার লেখাটি পড়ে মনক্ষুন্ন না হন বা আমাকে কারো প্রতিপক্ষ মনে না করেন বা কারো পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যকারী মনে না করেন। কারণ লেখাটিতে এমন অনেক কিছু থাকতে পারে যাতে আমাকে অনেকেই ভুল বুঝতে পারেন। তাই লেখাটির ভুমিকাতেই সে সম্পর্কে একটু বলে রাখলাম।
বহু আগে থেকেই চিন্তা করতাম হিংস্রতা বিষয়টা নিয়ে। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় হিংস্র জন্তু কাকে বলে তার সম্বন্ধে প্রথম জানার সুযোগ হয় আমার। আমার একটি প্রশ্নে শিক্ষকের কাছে মার থেকে হযেছিল আর সহপাঠীদের হাসাহাসি তো ছিলই। চিচার বলেছিলেন কয়েকটি হিংস্র জন্তুর নাম বলতে। সবাই উত্তর দিচ্ছিল “বাঘ, সিংহ, শৃগাল, ভল্লুক কুমির ইত্যাদি বলে। আমরা বেলায় আমি সবগুলো জন্তুর নাম বলার পর -মানুষ আরো ইত্যাদি; বলায় টিচার রেগে গিয়ে আমাকে বেত মারলেন। কিন্তু কি কারণে ানুষকে যোগ করেছিলাম তা বলার বা ব্যাখ্রঅ করার কোন সুযোগ ্মাকে দেন নি। যদি দিতেন তাহলে সেদিন নির্দিধায় বলতাম; না বুঝেই আপনি আমাকেবেত মারলেন তাই আপনিও একজন হিংস্র মানুষ। আরে বেত খাবার ভয়কে পরোয়া করতাম না।
আগের দিন সদর হাসপাতালে গিয়েছিলাম রোগী দেখতে। গিয়ে প্রথমেই দেখলাম হাসপাতালে বারান্দায় কয়েকটা লাশ পড়ে আছে, অনেক আহত মানরুষ যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন। তাদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালের সবাই হিমশিম খাচ্ছেন। বাবা ডিউটি রত পুলিশ হতে খবর নিয়ে জানলেন দুদল গ্রামবাসীর মধ্যে মারামারি হয়েছিল তাই এই অবস্থা। আহতদের একজনের পেটের ভেতরে টেটার ফলা ঢুকে আছে কিন্তু বের কার সম্ভব হচ্ছে না। ওকে ঢাকা নিতে হবে এখানে অপারেশন সম্ভব নয়। আহত লোকটি ভয় পেয়ে জোরে জোরে দোয়অ দুরুদ পড়ছেন, টেঁটার লম্বা বাঁশের অংশটুকু লম্বা করাত দিয়ে কাটা হচ্ছে তাহলে তাকে ঢাকা নিতে সুবিধা হবে। আমার মানসিক অবস্থার কথা চিন্তা করে বাবা আমাকে তারাতারি সরে পড়লেন। টিচার আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করতেন তাহলে আমি শুধু ওটুকু ঘটনা বলবো বলে “মানুষ” শব্দটি যোগ করেছিলাম তখন।
পশুর হিংস্রতাটা শুধু পুস্তক পড়েই জেনেছিলাম। কিন্তু মানুষের এমন মারামারি এবং হত্যাকান্ড কি পশুর মতো হিংস্রতার পর্যায়ে পড়ে না? সৃষ্টি কর্তা বাঘ সিংহ ভল্লুক তাদের স্বভাব হিংস্রতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, সেটি তাদের গুণ। হিংস্র স্বভাবটি না থাকলে তারা না খেতে পেয়ে সবাই মারা যাবে। কারণ প্রাণীর মাংস ছাড়া তারা আর কিছুই খেতে পারে না।
গুণ, সহজ ভাবে বোঝার জন্যে ইহা একটি জটিল শব্দ। চিনি গুড় বা মধুর গুণ হলো ইহা মিষ্টি। লবণ লবণাক্ত, বিষ বিষাক্ত, ইহার সংস্পর্ষে প্রাণীর মৃত্যু অনিবার্য। এগুলো পদার্থের গুণ। বিষ খেয়ে যদি প্রাণীর মৃত্যু না হয় তাহলে বুঝতে হবে যে বিষটির গুণ নষ্ট হয়ে গেছে। বিষাক্ত সাপ তার বিষদাতের থলেতে বিষ সঞ্চয় করে রাখবে এবং সুযোগ মতো ছোবল মারবে ইহা তার গুণ। সৃষ্টির সবকিছুতেই তার নিজস্ব গুণ থাকে। জীব বা নির্জীব সব কিছুতেই। যার প্রাণ আছে তাহাই জীব। ইহার মধ্যে গাছপালা ও প্রাণীর মধ্যেই পড়ে। সব কিছুই তার নিজ নিজ বৈশিষ্ট নিয়ে আলাদা গুণ প্রকাশ করবে। কিন্তু নিজগুণের বিপরীত কিছু প্রকাশ হলেই বলা যয় ইহার গুণ নষ্ট হয়ে গেছে। আগুন যদি নিভে যায় বলা যাবেনা যে তার গুণ নষ্ট হয়ে গেছে। আবার চুন ও দই দেখতে একরকম হলেও তাদের গুণাগুণ আলাদা। দই খেয়ে মুখ পুড়ে গেছে একথা বলবে না কেউ। শুধূ চুন খেলেই মুখ পুড়ে।
প্রাণী জগতের মধ্যে মানুষই হলো সর্বশ্রেষ্ঠ। আরবীতে আশরাফুল মুখলুকাত। কিন্তু মানুষকে মানুষ তখনই বলা যাবে। যদি তার মধ্যে মানবিক গুণ থাকে, তা না হলে সে জন্তুদের কাতারে পড়বে। এককালে মানুষ পশুর মতো জীবন যাপন করতো বই পুস্তক পড়ে আমরা তা জানতে পারি। নৃতত্ব বিজ্ঞানে স্পষ্ট করে সব কিছুই বলা আছে। কিছু দিন আগেও ব্রাজিলের গভীর জঙ্গলে মানুষের একটি বিচ্ছিন্ন গোত্রের সন্ধান পাওয়অ গেছে যারা এখনও বন্য জন্তুর পর্যায়েই আছে। খবরের কাগজ পড়ে যা আমরা জানতে পেরেছি। তারাও মানুষ জাতি কিন্তু মানবিক গুণ না থাকায় তাদেরকে সভ্য মানুষ বলা যাবে না। বলতে হবে বন্য মানুষ। মানুষ সহ পৃথিবীতে এরা কিছু প্রাণী আছে যারা লক্ষ লক্ষ বছরের পরিক্রমায় তাদের পুরাতন গুণের উন্নতি সাধন করে এই পর্যায়ৈ পৌঁছেছে। বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন শত বৎসর পুর্বেই তার “দ্যা ওরিজিন অব স্পিসিস” বইতে তা প্রমান করেছেন।
নাবিক কলম্বাসের নেতৃত্বে স্পেনীয়রা যখন আমেরিকা আবিষ্কার করেন তখন তিনিও তার দল সেদেশের কয়েকটি ক্ষয়িষ্ণু জাতীর সভ্যতা দেখতে পেয়েছিলেন। তার মধ্যে একটি ছিল মায়া সভ্যতা।তা তখন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।তারা ধ্বংস হয়েছিল তদের নিষ্ঠুরতার কারণৈ একদলা আরেক দলকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলতো বা নরবলী দিতো তাদের দেবতাকে তুষ্ট করার জন্যে। আর ইহাই ছিল মায়া সভ্যতার ধর্ম।
কোন জাতির নিষ্ঠুরতা তাদের নিজেদের জাতিকে তো বটেই অন্য জাতিকেও বিলুপ্ত করে দিতে পারে। পৃথিবীতে তার বহু বহু প্রমান আছে। এমনকি বিভিন্ন জাতীর ধর্মগ্রন্থেও তা স্পষ্ট ভাবে লিখিত আছে। ইহা শুধু অতীতেরর জন্যে নয় বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্যে ও তা প্রযোজ্য হবে সেটাও উল্লেখ করা আছে। মানুষের জস্রে নিষ্ঠুরতা নয় ইহা পরিহার করতে হবে। নইলে তারা অবশ্যই ধ্বংস হবে। ইহাই হলো মনুষত্বের মূল মন্ত্র। পশুপাখি গাছপাল টিকে থাকবে কিন্তু বিভিন্ন মানব গোষ্ঠী ধ্বংস হবে তাদের মনুষত্বের গুণ বিসর্জনের কারণে। এমন চরম সভ্যতার যুগেও মানুষ ধ্বংস হয়ে যাবে আমরা কিভবে তা বিশ্বাস করতে পারি? বিভিন্ন মানব সভ্যতার ধ্বংসের অতীত ইতিহাস ঘাটলে যা পাওয়া যায় তার পেছনের মুল কারণ হচ্ছে নিষ্ঠুরতা। নিক অতীতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা আমর প্রায় ভুলেই গেছি। তখন জাতীতে জাতীতে অভিশ্বাসের কারনে মানুষের মানবিক গুণ কলুষিত হয়ে গিয়েছিল বলেই বিশ্বযুদ্ধের মতো ঘটনা ঘটেছিল। এখনও আমরা ঠিক একই কারণে বিভিন্ন জাতীকে ক্রমশ ধ্বংসের পথে দেখচি।
১৯৭১ সালে বাঙ্গালী জাতীর মুক্তিযুদ্ধের পেছনে জাতীগত বিভক্তিই ছিল মূল কারণ। নইলে চার লক্ষ মা জাতীর সম্ভ্রম নষ্ট হওয়া ও তিরিশ লক্ষ বাঙ্গালীর মৃত্যু হতো না, আর বর্তমানে এ জঘন্যতার জন্যে দায়ী মানুষদের কলুষতার দিকটাও ক্রমেই গৌণ হয়ে যেতে দেখছি। এখন আরবের দিকে তাকালে দেখা যায় তিউনিশিও, লিবিও, মিশরিও ও সিরিও রা এমন কলুষিত হয়ে পড়েছে যে তারা ক্রমশ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা বাঙ্গালী জাতীও কি অতীত মুক্তিযুদ্ধের গৌরবের ইতিহাস ভুলে গিয়ে একই ভাবে আবার জাতিগত বিভক্তি সৃষ্টি করে সেই দিকে এগুচ্ছি না?
ওদিকে সারা বিশ্বে জাতীতে জাতীতে, বর্ণে বর্ণে, গোত্রে গোত্রে, ধর্মে ধর্মে, ফেরকায় ফেরকায় বিরোধ এমন প্রকট আকার ধারণ করেছে যে সারা বিশ্বের মনুষ্যজাতী যেন বিষাক্ত পানির মতোই মানবিক ভাবে কলুষিত হয়ে গেছে। তাথে আর পরিত্রাণ পাবার যেন আর উপায় নেই। পারমানবিক বোমাগুলোও যেন দমধরে আছে। তারা আর না ফেটে পারছে না। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘটে যাওয়র পর হয়তো হাজার হাজার বছর পর কোন এক সভ্যতার বিজ্ঞানীরা ও ইতিহাস বিদার প্রমাণ করবেন যে এই যুগের সভ্য মানুষ গুলো কতই না হিংস্র প্রকৃতির ছিল।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৩৫
বোকামন বলেছেন: আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দান করুন ।