![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভবঘুরে
নিজেকে খুব অপরাধী মনে হয়, জীবনের এত গুলো বছর পার করে দিলেও বাংলা ভাষা টাই ঠিকমত আয়ত্তে আনতে পারলাম না । আবার নিজেকে শিক্ষিত দাবি করি । দুই লাইন লেখার মধ্যেও দুইটা বানান ভুল হয়, পাবলিক প্লেস (এর ভাল বাংলা মনে পড়ছে না, গণ স্থান নাকি?) এ আজকাল কথা বলার সময় দুই চার মিনিট আংরেজি না বলতে পারাটা যেন দৃষ্টিকটু ! স্নাতক পর্যায়ে কেউ যদি বাংলাতে পড়তে চাই তাহলে তো ইহ জনমেই তাকে নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় অন্তত বাবা মা আত্মীয় স্বজন এর কথা শুনে সেরকমই মনে হবে । এর পর তো চাকরি পাবার উজ্জল সম্ভাবনার কথা বাদ ই দিলাম ।
স্কুলে পড়ার সময় বাবু স্যার একবার গল্প শুনিয়ে ছিল "একবার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কোন এক পণ্ডিত এর সাথে বাজি ধরে ছিল,বা এর উল্টোটা হবে হয়ত ,কার বাংলাভাষায় দক্ষতা ভাল, দুজনেই নদীর পাড়ে হাটছিলেন এমতবস্থায় দূরে একটি নৈাকা দেখে ঈশ্বরচন্দ্র প্রস্তাব দিলেন দুজনের মধ্যে কে ডাক দিয়ে নৈাকাটা কে তীরে নিয়ে আসতে পারবে ?
পণ্ডিত তো প্রশ্ন শুনে হেসে কুটি কুটি এটা তার কাছে কিছুই না !
সে যথারীতি শুরু করল
"ওহে মাঝী তোমার তরী লইয়া ঘাঁটে আস"
"ওহে মাঝী তোমার তরী লইয়া ঘাঁটে আস"
কিন্তু চিল্লাইতে চিল্লাইতে যখন গলা শুকাই গেল তখন আমাদের পণ্ডিত মশাইটি মাঝীকে "ব্যাটা বধির" বলিয়া আখ্যায়িত করে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখিবার চেষ্টা করিল ।
পতিমধ্যে ঈশ্বরচন্দ্র উদ্গিরিত হাসি কোন মতন দমন করিয়া হাক ছারিল
"ওই সালা মাঝি , এইদিকে আয় "
এবং হাক ছারিবা মাত্রই মাঝী তার তরী লইয়া হাজির ।বাংলা ভাষার এমন ব্যাবহার দেখে পণ্ডিত মশাই এর কি হাল হয়েছিল সেটা বর্ণনা করার মত পাণ্ডিত্য আমার এখনও হয়ে নি, অদূর ভবিষ্যতে হওয়ার সম্ভাবনাও দেখছিনা ।
এই গল্প থেকে শিক্ষণীয় হচ্ছে সঠিক জাইগায় সঠিক শব্দের ব্যাবহার , বই পড়ে পাণ্ডিত্য অর্জন যেমন জরুরী তেমনি দৈনন্দিন জীবনে সেটার সঠিক প্রয়োগ টাও জরুরী । নয়লে হয়ত একসময় শুধু মাঝী কেন দেশের সরকারও আর আমাদের কথা শুনবে না । আজকাল ঠিক তেমন টাই হচ্ছে , আর সে জন্যই হয়ত এত কিছুর পড়ও হয়ত রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প হবে, সুন্দরবনের আশে পাঁশে মোবাইল ফোনের টাওয়ার হবে ......।
কারন "ভাত দে না হলে মানচিত্র খাব" এভাবে বলার মত আসলে কেউ নেয় আর ।
( চলবে )
©somewhere in net ltd.