নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য ও সুন্দরের পক্ষে।

আশরাফুল ইসলাম মাসুম

বেকার সমস্যা মুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চাই।

আশরাফুল ইসলাম মাসুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুধু জাতীয়তাবাদ আমাদের কতদূর নিয়ে যেতে সক্ষম?

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪০

জার্মান জাতি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি! জার্মানরা জন্মই নিয়েছে পৃথিবী শাসন করার জন্য।জাতীয়তাবাদী বিশ্বাসের এর চেয়ে চূড়ান্ত রূপ আর কি হতে পারে?জার্মানদের এমন জাতীয়তাবাদী চিন্তাই ডেকে এনেছিলো দু দুটি বিশ্বযুদ্ধ!ফলাফল হলো ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ!জার্মানরা না পারলো পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হতে,না পারলো পৃথিবী শাসন করতে!বর্তমান বিশ্বের সুপারপাওয়ার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র!এর পরেই হয়তো আসবে ব্রিটেন,চীন,রাশিয়ার নাম!মার্কিনীরা কি নিজেদের মার্কিনীত্বের গুনগান গেয়ে আজ এ পর্যায়ে?মার্কিন জাতীয়তাবাদী চেতনার ঢাকঢোল পিটাতে শুনিনি কখনো বরং তারা জাতীয়তাবাদী চিন্তার উর্ধ্বে উঠে গণতন্ত্রের কথা বলেই বিশ্বজুড়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে!নিজেদের মার্কিনী পরিচয়ের চেয়ে গণতন্ত্রের রক্ষক এমন একটা পরিচয়ই যেন বিশ্বজুড়ে তুলে ধরতে চায় তারা এবং শত্রু মিত্ররা আড়ালে যে যতই সমালোচনা করুক না কেন শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্য,সহযোগিতা,আশ্বাস,সিদ্ধান্তের দিকেই চেয়ে থাকতে বাধ্য হয়!
একসময় বলা হতো বৃটিশ সাম্রাজ্যে কখনো সূর্য অস্ত যায়না!যদিও বৃটিশ আভিজাত্য,ঐতিহ্য প্রকাশে তাদের তৎপর দেখা যায় তারপরও তাদের গণতান্ত্রিক চেতনা এর উর্ধ্বে!তবে বৃটিশদের আরেকটি বড় পরিচিতি ব্যাবসায়ী হিসেবে!এমনকি তাদের দোকানদারের জাতও বলা হতো!তাদের সাম্রাজ্যবাদী চেতনার বিকাশ মূলত ব্যাবসায়ী মনোভাব থেকেই!ব্যাবসায়ী,পুঁজিবাদী চিন্তার বিকাশ ঘটে শিল্প বিপ্লবের মধ্য দিয়ে!আর তারা যোগাযোগের জন্য বেছে নেয় নৌপথ যা ছিলো সেসময়ের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী!এমনকি তাদের উন্নত নৌবাহিনীর কারণে নেপোলিয়নও মার খেয়ে যান!ব্রিটিশদের টপকিয়ে ফরাসী জাতি প্রতিযোগিতায় টিকতে পারেনি!তবে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা,ব্যাবসায়িক সাফল্যে মার্কিনীরা সবার চেয়ে এগিয়ে থাকায় ব্রিটেন, ফ্রান্স আমেরিকার নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে!
১৯১৭সালের বলশেভিক বিপ্লবের পূর্বে রাশিয়ার কতটুকু গুরুত্ব ছিলো ইতিহাসে?রাশিয়ান বা বলশেভিক হিসেবে তাদের পরিচিতি কতটুকু?রাশিয়াকে আমরা চিনি কম্যুনিজমের ধারক বাহক হিসেবেই!
চীনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য!চীন বলতে আমরা কম্যুনিষ্ট চীনকেই বুঝি!শুধু কম্যুনিষ্ট চীনই নয় বরং মাও সে তুং পন্থী কম্যুনিস্ট চীন যা রাশিয়া থেকে স্বতন্ত্র!যদি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী চীন থাকতো তাহলে দেখতাম এক কুসংস্কারে আচ্ছন্ন চীন!যদি গনতান্ত্রিক চীন হতো তাহলে দেখতাম ইঙ্গো মার্কিন আনুগত এক চীন!মাও সে তুংয়ের কম্যুনিষ্ট চীন আজ এক শক্তিশালী,সমৃদ্ধ,স্বতন্ত্র চীন!
হযরত মুহাম্মদ সাঃ জন্মেছিলেন আরবে!একটি বিশৃঙ্খল,বর্বর,দুর্বল,কুসংস্কারাচ্ছন্ন জাতিকে তিনি একতাবদ্ধ করলেন!তার আদর্শে বলীয়ান হয়ে সেই জাতি প্রায় হাজার বছর ধরে পৃথিবীর তিনটি মহাদেশব্যাপী শাসন করলেন, নেতৃত্ব দিলেন!কিভাবে এই অসম্ভব সম্ভব হলো?তিনি তো আরব জাতীয়তাবাদের পতাকাতলে তার জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারতেন!তিনি কি তার গোত্রকে আরব জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জীবীত করেছিলেন?মোটেই তা নয়!বরং তিনি বলেছিলেন অনারবদের উপর আরবদের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই আবার আরবদের উপরেও অনারবদের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই!আল্লাহ মানুষকে আদম ও হাওয়া আঃ থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং বিভিন্ন বর্ণ ও গোত্রে বিভক্ত করেছেন শুধুমাত্র পারস্পরিক পরিচিতির জন্য!একে অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দেখানোর জন্য নয়!তিনি নির্দেশ দিলেন অত্যাচারীর হাত থেকে উৎপীড়িতকে উদ্ধার করার!তার আরব পরিচয় মুছে যায়নি কিন্তুু আরব জাতীয়তাবাদেরও উর্ধ্বে তার আদর্শ ছিলো ইসলাম এবং এটাই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলো!
আমরা বাংলাদেশী এবং বাঙ্গালী কিন্তু আমাদের কতটুকু জাতীয়তাবোধ অবশিষ্ট আছে?বাঙ্গালী হিসেবে আমরা মোটামুটি একটি বড় জাতি হলেও ভারত বাংলাদেশ বর্ডার আমাদের এমনভাবে দ্বিখন্ডিত করে দিয়েছে যে এটা আর ফেভিকল দিয়েও জোড়া লাগবেনা!আবার যদিও আমরা অফিসিয়াল কাজে সবসময়ই বাংলাদেশী পরিচয় ব্যবহার করে থাকি কিন্তুু বাংলাদেশী হিসেবেও কি আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি?রাজনৈতিক বিভাজন কি পারস্পরিক ঘৃণায় পরিণত হয়নি?এমনকি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ,বিপক্ষের শক্তি চিহ্নিত করতে যেয়ে আমরা কি বিভিক্ত নই?ধর্মীয় রাজনীতি আর সেকুলার রাজনীতি কি মুখোমুখি নয়?এই বিভাজনগুলোর সবগুলোই কি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী নয়?সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র বাঙ্গালী বা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ কি আমাদের প্রকৃত প্রগতি,উন্নতি,শ্রেষ্ঠত্বের পথে নিয়ে যেতে সক্ষম? বাঙ্গালী বা বাংলাদেশী পরিচয় আমাদের অস্তিত্বে মিশে আছে!কিন্তুু একটি আদর্শিক,কর্মময়,সৃজনশীল,নেতৃস্থানীয়,সমৃদ্ধ,আত্মমর্যাদাশীল,মহান জাতি হতে চাইলে আমাদের অবশ্যই জাতীয়তাবাদী মনোভাবের আরো উর্ধ্বে উঠে একটি মহান আদর্শকে গ্রহন,অনুসরণ এবং প্রতিষ্ঠা করতেই হবে জাতীয়ভাবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.