নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিকৃতবুদ্ধির অধিকারী

বর্ষন মোহাম্মদ

অস্থিতিশীলতা, নষ্টামি, আর যাবতীয় প্রতারণা-প্রবণতার বিরুদ্ধে খেলা চলবে

বর্ষন মোহাম্মদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চল মামা নতুন দুনিয়া দেখাই

০৩ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:২২



জীবনের এক অন্তিম পর্যায় এসে ছেলেটির মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে গেল ও চিরস্থায়ী ঠিকানা হলো পাবনা মানসিক হাসপাতাল । শেষ থেকে এবার শুরু করছি । সাংবাদিকতা পেশায় আজ প্রায় তিন বছর চার মাস অনেক কিছু দেখেছি , দেখেছি জীবনের অনেক নগ্ন বাস্তবতা । তারই প্রেক্ষিতে আজ অনেক দিন পর সময় হলো একটি বাস্তবতাকে আপনাদের চোখের সামনে তুলে ধরার । প্রান্ত গ্রাম থেকে রাজধানীতে এসেছে মাকে নিয়ে মা মানুষিক বিকার গ্রস্থ ,পারিবারিক অবস্থা নিন্ম মধ্যবিত্ত । প্রান্ত ও তার বন্ধু(আমি) মিলে তার মাকে ঢাকার একটি সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করালাম । অনেক কষ্টে একটি সিট পেলাম ।প্রান্তকে ৬ বছরে রেখে তার বাবা দেহ ত্যাগ করেন । বড় বোনের বিয়ে হয়েছে স্বামী সংসার সামলিয়ে মার ঠিক ঠাক খবর নিতে পারেনা । বাবার ব্যংকে জমানো টাকা দিয়ে সংসার টেনে হেচরে চলে ।মাকে দেখার কেউ নেই ,আর্থিক সমস্যা থাকার সমস্যা এত বোঝা কাধে নিয়ে ছোট খাট একট পার্ট টাইম চাকুরী খুজছে ছেলেটা । অবশেষে একটা কম্পিটারের দোকানে টাইপরাইটারের চাকুরী হলো , প্রান্ত আগারগাও বিএনপি বাজারে একটা ছোট ঘর ভাড়া নিল । একজন বন্ধুর জোগার হয়ে গেলো নাম সফিক , প্রান্ত প্রথমে জানতনা যে ছেলেটি মাদকাশক্ত । একদিন দুপুরে প্রান্ত মায়ের পাশে বসা হঠাত একজন ভদ্র মহিলা কে জোড় করে ওই কেবিন রুমে ঢুকানো হচ্ছিলো সাথে একটি সুন্দর মেয়ে । সাথে সাথে ডাক্তার সেই ভদ্র মহিলাকে কয়েকটা ইঞ্জেকশন দিল সাথে সাথে সে ঘুমিয়ে পড়ল । মেয়েটির কাদো কাদো মুখে মায়ায় পড়ে গেল প্রান্ত জিজ্ঞাসা করলো আন্টির কি হয়েছে , মেয়েটি বিস্তারিত বললো । তৃপ্তানঞ্জলীর বাবা নেই মা সরকারী চাকরী করতো । হঠাত করে তার মায়ের মস্তিষ্কে সমস্যা তাই ডাক্তার ভর্তি হতে বলেছে । প্রান্ত কি বলবে প্রথম দেখাতেই যে প্রান্ত মেয়েটির প্রেমে পড়ে গিয়েছে । এর মধ্যে সকলের সাথে পরিচয় হলো আন্তরিকতা হলো । প্রান্তর সাথে তৃপ্তানঞ্জলীর একটা ঘনিষ্টতা তৈরি হলো কিন্তু প্রান্ত বুঝে উঠতে পারছিলোনা যে এটা প্রমনা বন্ধুত্ত্ব। এক দিন তৃপ্তানঞ্জলীর সাথে তার মার ঝগড়া হচ্ছিলো রাগ করে তৃপ্তানঞ্জলী রাগ করে চলে যাচ্ছিলো বুঝাতে বুঝাতে প্রান্ত তার পিছু হাটছিলো । হঠাত তৃপ্তানঞ্জলী একটি বেঞ্চে বসে পড়লো প্রান্ত তাকে বুঝিয়ে রাগ ভাঙ্গালো দুজোনে সম্পর্কটা একটু গভীরে রুপ নিতেই হাসপাতাল থেকে খবর এল ঔষধের ওভার ডোজে অপুর্বর মার মৃত্যু হয়েছে । প্রান্ত সম্পুর্ন একা হয়ে গেলো ।
কেটে গেলো কয়েকটা দিন তৃপ্তানঞ্জলীর সাথে প্রান্তর ঘনিষ্ঠতা প্রেম থেকে প্রনয়ের দিকে চলে গেলো । সবঠিক ঠাকই চলছিলো । হঠাতই তৃপ্তানঞ্জলী তাকে কল করে বললো প্রান্ত টিএসসিতে আসো কথা আছে । অপুর্ব আসলো তারা কথা বলতে বলতে সরোয়ারর্দি .উদ্যানের একটি বেঞ্চে বসলো ।কথার ফাকে তৃপ্তানঞ্জলী বললে উঠল প্রান্ত আমি বিবাহিত ,স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তার সাথে আমার কোর্ট মেরিজ হয় ,তোমার আম্মা মারা যাওয়ার কারনে আমি তোমার দুঃখ কমাতে প্রেমের অভিনয় করেছি । আমাকে মাফ করে দিও । আমরা সারা জীবন বন্ধু হয়ে থাকবো । প্রান্তর মানসিক চাপে কথা বলতে পাড়লো না কোন কথা না বলে বাসায় চলে আসলো ,তার বন্ধুর সফিকের সাথে সবকিছু শেয়ার করলো । সফিক বললো চল মামা নতুন দুনিয়া দেখাই প্রান্ত বুঝলনা ,নিয়ে গেলো আগারগাও বিএনপি বাজারের গাজা আর সিগারেট কিনলো ।এক টান দুই টান তিন টান মাথা ঘুরে পড়ে গেলো ,ঘুম থেকে উঠে দেখে সে তার বাসায় বড্ড খিদে পেয়েছে ,টেবিলে কলা আর রুটি ,ফোনে ৩৫টা কল তৃপ্তানঞ্জলীর কল একটি রিসিভ করেনি কল বেক ও করলোনা ।
প্রান্তর নতুন জীবন শুরু হলো কম্পিউটার টাইপের পাশা পাশি দিলো মোবাইল লোডের দোকান । দিনে দোকান আর রাতে আসরে গাজার পাশা পাশি মদ বিয়ার চলতে লাগলো । নতুন নতুন সদস্য হলো । একরাতে সফিক প্রান্তকে বললো মামা ৫০০ টাকাতে চরম বিনোদন ,উড়বা মামা আকাশে উড়বা। জাবি শাহবাগ না থাক তুই বস আমি আনতা ছি। কিছুক্ষন পর সফিক ৪টা বোতল ঔষধ নিয়া আসলো আর একটা সিরিঞ্জ । দুই জনে শরীরে ঢুকালো । প্রান্ত ভুলে যেতে থাকলো তার অতীত সকলের সাথে যোগাযোগ বন্ধ ।টানা দুই বছর তার খোজ কেউ পায়নি । প্যাথ নিতে নিতে মস্তিষ্ক নষ্টের পথে কাজ কর্ম নেই । মোবাইল, কম্পিউটার বিক্রি করে সর্বহারা হয়ে রাস্তায় পাগলের বেশে ঘুরে বেড়ায় ভিক্ষা করে , সেই সরোয়ার্দি উদ্যানেই প্রান্তর বাসস্থান । পাগল প্রায় প্রান্ত ধীরে ধীরে মস্তিষ্ক বিকৃতির পথে । দাড়ি ,মোছো গজিয়ে প্রান্তকে আর চেনার উপায় নেই । একদিন বইমেলা ঘুরতে এসে হঠাই দাড়ি মোছ নোংড়া কাপরের ভিতরে লুকিয়ে থাকা প্রান্তকে দেখতে পায় তৃপ্তানঞ্জলী । আমাকে ফোন করে আমি রামপুরা থেকে বই মেলায় এসে প্রান্তকে দেখে অবাক হই এই সেই প্রান্ত । কিন্তু প্রান্ত দুঃক্ষের বিষয় প্রান্ত কাউকে চিনতে পারছিলো না ……তৃপ্তানঞ্জলী কাদতে কাদতে বললো প্রান্ত আমি তোমার তৃপ্তানঞ্জলী ,আমি ফিরে এসিছি আমাদের বিয়ে হয়নি আমি তোমাকে অনেক খুযেছি কোথায় ছিলে …আমি তোমাকে ভালোবাসি প্রান্ত একবার আমার সাথে কথা বলো …।।প্লিজ প্রান্ত প্লিজ ।প্রান্ত নিশ্চু্প ,মুখে কথা নেই, কাউকে চিনতে পারছিলোনা। দুইজনে মিলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে গেলাম ডাক্তার তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিলো । তৃপ্তানঞ্জলী আর আমি মিলে প্রান্তকে হাসপাতালে ভর্তি করলা । আজ প্রায় ৩ বছর হয়ে গেলো প্রান্ত কে আমরা প্রায়ই দেখতে যাই তবে তার অবস্থার কোন উন্নতি নেই । তবে কি প্রান্তর চিরস্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেলো পাবনা মানসিক হাসপাতাল……

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


বেশীরভাগ বাংগালী ছেলেমেয়ে হালকা মানসিকতা নিয়ে বড় হচ্ছে, সামন্য বাতাসে উড়ে যা্চ্ছে খড়কুটার মতো।

২| ০৩ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৫৬

প্রামানিক বলেছেন: কঠিন বাস্তবতা।

৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৭ রাত ৩:০৯

ওমেরা বলেছেন: সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.