নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার ভাই মরলো কেন?
'ধর্মের কল বাতাসে নড়ে'—এ প্রবাদ যেন হুবহু প্রমাণিত হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনটা আদতে একটা স্ক্যাম ছিল।
একে একে বেরিয়ে আসছে সমন্বয়কদের আসল চেহারা। বের হচ্ছে তাদের নিজেদের কৃতকর্মের মাধ্যমে, তাদের পার্টনারদের পেপার ট্রেইল থেকে এবং আন্দোলনের সময় সংগৃহীত নানা রাকম তথ্য-প্রমাণ থেকে।
স্বীকারোক্তি
ডিবিসি টেলিভিশনের ‘প্রযত্নে বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি টকশোতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম স্বীকার করছেন যে, “যদি মেট্রোরেলে আগুন না দেওয়া হতো, যদি পুলিশদের না মারা হতো তাহলে এই বিপ্লবটা এত সহজে অর্জিত হতো না। ফ্যাসিবাদের পতন নিশ্চিত করা যেত না।” [১] এই স্বীকারোক্তি দেশে আইন-শৃঙ্খলার জন্য একটি স্পর্শকাতর ইস্যু এবং ফৌজদারি অপরাধ আইন অনুযায়ী বিচার যোগ্য অপরাধ।
সশস্ত্র সংগ্রামের ভিডিও বার্তা দিয়ে রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। [২] অর্থ কী দাঁড়ায়? অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষিত ম্যানপাওয়ার মাঠে ছিল! ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে-টিকটকে দেখা যাচ্ছে, আন্দোলনের সময় কাদের হাতে অস্ত্র ছিল। সন্ত্রাস করতে অর্গানাইড গ্যাং-কিলারদের সহায়তা নেয়া, এরপর শর্ত অনুযায়ী তাদের জেল থেকে ছেড়ে দেয়াও আমরা দেখলাম। এখন কি সেই সন্ত্রাসীরা আপনার বাসায়- অফিসে-দোকানে হানা দিচ্ছে? হিসাব করে দেখুন তো, নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে, না কমেছে?
নিষিদ্ধ জ’ঙ্গিগোষ্টির সহায়তা নেয়া ছাড়া কোন কৃতজ্ঞতায় তাদের আটক নেতাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে?
মুক্তপ্রাপ্ত জঙ্গিনেতা এখন সংবাদ মাধ্যমকে হুমকি দেয় – আর্মি গিয়ে পাহারা দেয়। [৩]
একটু ভাবুন
একটু পেছনে তাকান, আন্দোলনকালে আবু সাইদের মাথায় আঘাত এবং দীর্ঘ সময় হাসপাতালে না নেয়া, মুগ্ধর মিছিলের মাঝে থেকে মাথায় শুট, আরো অনেক গুলো এরকম ঘটনা চিন্তাশীলদের মাথায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিলো। কিন্তু তখন জনমানস উত্তপ্ত থাকার ওগুলো মনোযোগ পায়নি। কিন্তু আন্দোলনের পরবর্তীতে যেসব তথ্য-উপাত্ত ও ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে দিয়ে জনগন গিয়েছে, তাতে আর সন্দেহের অবকাশ থাকে না।
এই আন্দোলন নিয়ে মার্কিন নিউজ পোর্টালে দ্যা গ্রেজোন ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট (আইআরআই)-এর গোপনীয় দলিল প্রকাশ করেছে। [৫] সেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে সরকার হটানোর জন্য এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য আমেরিকান প্রতিষ্ঠান আইআরআই নানা শ্রেণী-পেশার লোকজনের সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। মার্কিন সরকারের অর্থপুষ্ট এই সংস্থা তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশেই ক্ষমতা পরিবর্তনের সাথে জড়িত বলে নথিপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এদেরকেই হাইতি, হন্ডুরাস, কিউবা, ইউক্রেন, ভেনিজুয়েলা, হংকং এবং মধ্যপ্রাচ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং অস্থিতিশীল কারার পেছনে দায়ী করা হয়। [৬]
মেটিকুলাস ষড়যন্ত্রের কথা তারা গর্ব করে আগেই জানিয়েছে। নিউইয়র্কে ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজ’-এ ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম (মাহফুজ আবদুল্লাহ) কে বক্তব্য দেওয়ার শেষ দিকে তিনি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ কে ‘মাস্টারমাইন্ড’ এবং আন্দোলন প্ল্যান “ম্যাটিকুলাস ডিজাইন” বলে জানিয়েছেন। [৭]
প্ল্যান ম্যাটিকুলাস ডিজাইন
আজ পরিষ্কার হয়েছে - অন্য জায়গায় কালার রেভুলুশনে থার্ড পার্টি দিয়ে মার্ডার করে লাশের সংখ্যা বাড়িয়ে পাবলিক এজিটেট করার মডেল এখানেও একই ভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ভেরি আনফরচুনেট, বাট ট্রু।
কলকারখানায় আগুন দেয়া হয়েছে, আমদানি নির্ভরতা আরো বাড়ানোর জন্য। শিল্প ধ্বংস করে শ্রমিকদের পথে বসানো হল। যেখানে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ বিনির্মাণ হচ্ছিল, সেখানে দেশ আবার যাচ্ছে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হতে – গরীব বাড়লেও তো এনজিও ব্যবসা রমরমা হবে - ‘গরীবের মাসিহা’ হলে বিদেশ থেকে ফান্ড মিলবে, মেডেল মিলবে!
শিক্ষার্থীদের অটোপাশের মাধ্যমে তাদের শিক্ষার মান কমানো হয়েছে এবং তাদের অস্থির করে ছোটখাটো কাজে নামানো হচ্ছে। যেখানে তাদের পড়াশোনার করে নিজকে গড়ার সময় - সেখানে তারা রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সহকারীর কাজ করছে। আন্দোলনের সময় বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়ি থেকে সব মিলিয়ে পুলিশের ৫ হাজার ৮২৯টি অস্ত্র ও ৬ লাখ ৬ হাজার ৭৪২ রাউন্ড গুলি লুট হয়েছে। [৪] যারা পড়াশোনা না করে ছোটখাটো কাজ করবে তাদের হাতে কী কী অপশন থাকবে? কমনসেন্স খাটিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন?
জনগণ অন্যায় করেনি, প্রতারিত হয়েছে:
আজ আপনারা সাধারণ জনগণ আন্দোলনে সমর্থন দেবার কারণে অনেকেই এই সরকারের কৃতকর্মের বিরোধিতা করতে লজ্জা পাচ্ছেন। কারণ অনেকেই আপনাদের নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করার সুযোগ নিচ্ছে। এই ঠাট্টা মশকরার কাজটা আমরা বিরোধিতা করি। আমরা মনে করি সাধারণ জনগণকে দায়ী করা উচিৎ নয়।
সেই সাথে একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে জনমনে ক্ষোভ ছিল। আওয়ামীলীগের কিছু নেতার কর্মকাণ্ডে পুরো আওয়ামীলীগ এর উপরে একটি বড় অংশের সমর্থক বিমুখ হয়েছিল। শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনের সময় যথাযথ পরিবর্তন ব্যবস্থাপনার উদ্যোগের ব্যর্থতা কটি বড় ক্ষোভের জন্ম দিয়েছিল। সরকারি কর্মকর্তাদের নানা রকম লুটপাট-স্বেচ্ছাচারিতা জনমনে বিক্ষুব্ধ হয়েছিল। এরকম আরও নানা কারণে জনমতের পুঞ্জিভূত ক্ষোভই আপনাদেরকে আন্দোলন সমর্থনের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আমরাও মনে করি এসব ক্ষোভ যৌক্তিক, এগুলোর প্রকাশও যৌক্তিক। এই ক্ষোভের বিপক্ষে আশাজাগানিয়া কোন ডাক আসলে সেই ডাকে সাড়া দেয়াও অপরাধ নয়। তাই আপনারা যা করেছেন, সেটা অন্যায় কিছু না। কিন্তু আপনারা লোক চিনতে ভুল করেছেন, যে জন্য প্রতারিত হয়েছে। এক্ষেত্রে সাধারণ জনগণ হিসেবে আপনারা মজলুম। আপনারা জালিম এর প্রতারণার শিকার।
আমরা এও জানি, আপনারা আন্দোলনে সমর্থন দিলেও এনজিও সরকার ও তাদের সমন্বয়কদের সকল অপকর্মকে শর্তহীন ভাবে সমর্থন দেবার মুচলেকা দেননি।। তাদের কৃতকর্মে বিরক্ত হতে হতে, জবাব এর বদলে নির্যাতিত হতে হতে, আপনারাই খুব দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন।
আমরা শুধু অনুরোধ করবো, যাদের ডাকে আপনারা সমর্থন দিয়েছিলেন, তাদের কাছ থেকে জবাব গুলো বুঝে নিন। আপনাদের কেন মিথ্যা বলা হল, প্রতারণা করা হলো, তার জবাব নিন।
জবাব নিন
দেশকে যেভাবে উল্টোপথে নিয়ে যাচ্ছে, জাতীকে যেভাবে মিসগাইড করা হচ্ছে। জেগে উঠুন। না হলে অনেক দেরি হয়ে যাবে। ফেরানোর পথ থাকবে না।
আমার ভাই মরলো কেনো? এই প্রশ্ন যখন সমন্বয়করা আমাদের দিকে ছুড়ে দিয়েছিলো। তখন আমাদের জবাব আপনারা শোনেন নি, বিশ্বাস করেন নি, গালি দিয়েছিল।
আজ যখন সব কিছু দিবালোকের মত পরিষ্কার, তখন আমি ওই সব খুনি সমন্বয়কদের প্রশ্ন করতে চাই -
আমার ভাই মরলো কেন?
সমন্বয়ক জবাব দে।
আমার ভাই মরলো কেন?
খুনি ইউনূস জবাব দে।
এই প্রশ্নগুলো আপনারা সমন্বয়কদের করুন, উত্তরটা নিজে বুঝে নিন।
সকল সূত্র মন্তব্যের ঘরে..
©somewhere in net ltd.