![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কতদিন কার্নিশবিহীন খোলা ছাদে বসে আকাশ দেখিনা...করা হয়না স্মৃতি রোমন্থন...কতদিন দেখিনা স্বপ্ন আমার নষ্ট অতীতকে...কতদিন হয়ে গেল পাপবোধে জর্জরিত হইনা...আহ...কতদিন !!!!!
ছোটবেলায় দেখতাম দাদাবাড়িতে বিশাল একটা গোয়াল ঘর। গরু মহিষ ছাগল সব পালা হতো। দেখভাল করার জন্য রাখা হতো দু-তিনজন রাখাল। মাঝে মাঝে পশুগুলোকে দাদাও মাঠে নিয়ে যেতেন শখ করে। একটা গরুর যখন ষাঁড় বাছুর জন্ম নিতো তখন আর সবার আনন্দ ধরে কে। রাজার মতো আদর যত্নে পালা হতো সেটাকে। মায়া জন্মে যেতো ষাঁড়টার প্রতি। তীব্র মায়া।এই মায়ার তীব্রতা কতখানি যারা গরু পালে শুধুমাত্র তারাই বুঝে।পরের বছর সেই ষাঁড়টাকেই নেয়া হতো কোরবানীর জন্য কিংবা আর দু এক বছর পর। যত বেশিদিন পালা হতো, মায়া যেতো বেড়ে।
নিজের সন্তানের মতো মনে হতো সবার কাছে সেই ষাঁড়টাকে।
ঈদুল আযহার আনন্দটা আমরা ঠিক উপভোগ করতে পারতাম না। কোরবানী দিতে যখন গরুটাকে নেয়া হতো বুক চিরে কেমন যেন কান্না আসতো। পরিবারের অনেকের চোখে পানি দেখেছি আমি।ত্যাগ ব্যাপারটা বুঝি এমনই।
সন্তানের মতো অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যে গরুটা ছিলো কয়েক বছর ধরে, যাকে পালা হয়েছে রাজার হালে, যাকে দিয়ে এমনকি কখনো হালচাষও করা হয়নি শুধুমাত্র তার মাংশ খেয়ে মজা করার জন্য কোরবানী দেয়া কেউ দেয়নি, দিতে পারেনা। এই ত্যাগের আনন্দটাও অন্যরকম।সেই বুক চিরে আসা দীর্ঘশ্বাস কিংবা কষ্টের মাঝেই ঈদুল আযহার আনন্দ লুকিয়ে আছে।কাছের কিছু কে বা কাউকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে স্যাক্রিফাইস করা।
এখন কোরবানী মানে বড় বাজেটের একটা বিশাল গরু বা উট কেনা। পারসোনা থেকে সেজে গুজে গরুটার পাশে দাঁড়িয়ে পোজ দিয়ে ছবি তোলা। ফেসবুকে আপলোড করা। আর বাচ্চা ছেলেদের কষ্ট, "আম্মা ওদের গরু আমাদের চেয়ে বড়"।
আহারে। কষ্টের ধরনটাও বদলে গেছে। আমার এখনো মনে আছে প্রথম যখন আমরা গরু কিনে এনে কোরবানী দেই আমি সেটাকে ৩ দিন কাছ থেকে দেখছিলাম। দু একদিন নিজ হাতে ঘাস খেতে দিয়েছি। তাতেই কি যে মায়া পড়ে গেছিলো। মনে হচ্ছিল কোরবানী না দিলে কি হয়? আমার প্রিয় গরুটাকে কোরবানী দেয়ার সময় আমি কাঁদছিলাম অঝোরে। বাচ্চাদের আবেগের ধরনটাও বদলে গেছে কতটা, টের পাই।
এই ফেসবুকীয় কিংবা বড়লোকীয় কোরবানী দাতাদের জন্যই আজ নাস্তিক কিংবা সেক্যুলার কিংবা কিছু বিশেষ ধর্মীয় লোকজন (যাদের কাছে মুসলিমদের খোচানোটাই পেশা) পশু হত্যা নামে একটা শব্দ ব্যবহার করার সুযোগ পায়। তাদের বলি, যখন রেস্টুরেন্টে বিফ আর মাটন ছাড়া কিছুই জোটে না মুখে তখন কোথায় থাকে এই শব্দ? যখন চিকেন ফ্রাই চিকেন ফ্রাই বলে গলা ফাটান তখন কি মনে হয় চিকেন সবজি থেকে আসছে? যে পরিমাণ গরু বাংলাদেশের সবগুলো হোটেলে প্রতিদিন জবাই হয় তার সম্পর্কে ধারণা আছে? শহুরে ধনিক শ্রেনীর জন্যই আজ বদলে গেছে কোরবানীর সংগা।
তারপরও একটাই কামনা, আল্লাহ পাক আমাদের কোরবানী কবুল করে নিন। আমীন।
১৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:২৭
বাউন্ডুলে রুবেল বলেছেন: আপনার নামের সাথে আমার ভালো নামের অনেকখানি মিল আছে। হয়তো তাই চিন্তাধারাতেও মিল।
ভালো থাকবেন ভাই। ঈদ ভালো কাটুক।
২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:০০
মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: ছেলেবেলার কথা মনে করিয়ে দিলেন, মোটামুটি গ্রাম শহর জাতীয় একটা জায়গায় বড় হয়েছি। উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ার সময় কোরবানীর সময় হলে আমিতো পুরাই রাখাল হয়ে যেতাম। গরু নিয়ে অনেক দূরের মাঠে চলে যেতাম। গরুকে খাওয়াতাম। গরুর গায়ে হেলান দিয়ে শুয়ে থাকতাম, মানে গরু এতটাই আপন হয়ে যেত একটা সময়।
কোরবানীর দিন আসলে সত্যিই অনেক কষ্ট হত গরুটার জন্য...
৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:১৯
কালোপরী বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:২৩
দুর্বার ফখরুল বলেছেন: খুব ভাল লাগল এই কারণে যে আপানি একেবারে আমার মনের কথাটা বলেছেন। আসলে আমরা আমাদের ধর্ম থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছি।