নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব ।(ঈমান ও আমল - ৩)

২১ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৬


ছবি-tazakhobor24.com

সালাতুল লাইল বা তাহাজ্জুদ এশার নামাজ আদায়ের পর থেকে সুবেহ সাদিকের আগ পর্যন্ত পড়া যায়। তবে অর্ধ রাতের পর থেকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ভালো। শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা সর্বোত্তম।শেষ রাতের এ নামাজ অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। যাকে তাহাজ্জুদের নামাজ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এ নামাজ সুন্নত।শেষ রাতে মানুষ যখন গভীর ঘুমে মগ্ন থাকে, তখন তাহাজ্জুদ আদায়কারীরা মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার ভালোবাসায় নিদ্রা ত্যাগ করে জেগে ওঠে।

সব প্রশংসা আল্লাহতায়ালার জন্য, যিনি রাব্বুল আলআমিন। দরুদ ও সালাম প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর, যিনি মুমিনের ঈমান। তাঁর পরিবারবর্গ ও বংশধর, সাহাবায়ে কিরাম (রা.), আল্লাহর নেককার বান্দাদের ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষণ হোক অঝোর ধারায়। নিশ্চয়ই শুভ পরিণতি কেবল মুত্তাকিদের জন্যই নির্ধারিত।

রাতের তাহাজ্জুদ নামাজ হলো সুন্নাত, আল্লাহতায়ালার মাহবুব বান্দাদের অভ্যাস আর আল্লাহর সঙ্গে বান্দাদের গভীর সম্পর্ক স্থাপন তথা নৈকট্য ও সন্তোষ অর্জনের অন্যতম পন্থা। তাহাজ্জুদের ফজিলত প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, "রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ নামাজ কায়েম করুন, এটা আপনার জন্য এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায়,শিগগিরই আল্লাহ আপনাকে উভয় জগতে বাঞ্ছিত মর্যাদায় ভূষিত করবেন " (সূরা বনি ইসরাইল ,আয়াত - ৭৯)।

আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে আরো বলেন, "তারা শয্যা ত্যাগ করে আকাঙ্ক্ষা ও আশঙ্কার সঙ্গে তাদের প্রতিপালককে ডাকে এবং আমি তাদের যে রুজি প্রদান করেছি, তা থেকে তারা দান করে।"(সূরা সিজদা : ১৬)।



ছবি-tazakhobor24.com

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে নিয়মিত এ নামাজ পড়তেন। এমনকি সাহাবায়ে কিরামকেও এ নামাজ নিয়মিত পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন। আল কোরআনে তাহাজ্জুদ নামাজের কথা বিশেষভাবে বলা হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে তাহাজ্জুদ নামাজ মন ও চরিত্রকে নির্মল ও পবিত্র করে। সত্যপথে অবিচল থাকতে পথ দেখায়। আল্লাহর নৈকট্যলাভে সহযোগিতা করে। তা ছাড়া যারা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে, আল্লাহ তাদের তাঁর প্রিয় বান্দা বলেছেন। পাশাপাশি তাদের নেকি ও ঈমানদারির সাক্ষ্যও দিয়েছেন।

আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, "আল্লাহর প্রিয় বান্দা তারা যারা তাদের প্রতিপালকের দরবারে সিজদা করে এবং দাঁড়িয়ে থেকেই রাত কাটিয়ে দেয়।"( সুরা ফুরকান, আয়াত ৬৪)। পবিত্র কোরআনে আরো বলা হয়েছে, "নিশ্চয়ই রাতে ঘুম থেকে ওঠা মনকে দমিত করার জন্য খুব বেশি কার্যকর এবং সে সময়ের কোরআন পাঠ বা জিকির খুবই যথার্থ" (সূরা মুজাম্মিল, আয়াত - ৬)।

তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে হাদিসে এসেছে," ফরজ নামাজের পর অন্যান্য সুন্নত ও নফল সব নামাজের মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সবচেয়ে বেশি।" মিশকাত।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "আমাদের প্রভু প্রতি রাতে দুনিয়ার আসমানে (যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়) নেমে আসেন; যখন রাতের এক তৃতীয়াংশ বাকি থাকে। এরপর তিনি বলতে থাকেন, তোমাদের কে আমাকে ডাকবে! আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আমার কাছে কিছু চাইবে আমি তাকে তা দেব, কে আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করবে আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।" মুসলিম, মিশকাত।



বৈবাহিক জীবনেও এ নামাজের অনেক গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে, যে ফজিলত আল্লাহ স্বামী ও স্ত্রীকে দান করবে, যদি তারা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ে একজন অন্যজনকে সহযোগিতা করে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়তেন।প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই দুই রাকাত করে এ নামাজ আদায় করতেন। যেকোনো সূরা দিয়েই এ নামাজ পড়া যায়। তবে তিনি লম্বা কেরাতে নামাজ আদায় করতেন। তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা উত্তম।তাই প্রতি বার ২ রাকাত ২ রাকাত করে ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়াই ভালো।সম্ভব হলে ১২ রাকাআত তাহাজ্জুদ নামাজও আদায় করা যায়। তবে ৮ রাকাআত আদায় করা উত্তম। তাও সম্ভব না হলে নূন্যতম ৪ রাকাত আদায় করলেও হয়।তবে তাহাজ্জুদ নামাজের কোনো কাজা নেই এবং তা আদায় না করলে কোন গুনাহ নেই তবে পড়া উত্তম।মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে রাতের শেষ প্রহরে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন।

আসুন, আমরা তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করি, মনকে পবিত্র করি, আল্লাহর প্রিয় বান্দা হই। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে নিয়মিত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করার তওফিক দান করুন। আমিন।

চলবে -

============================================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -

ঈমান ও আমল - ২ Click This Link
("শুক্রবার - পবিত্র জুমা"- মুসলমানদের জন্য এক মর্যাদা ও ফজিলত পূর্ণ দিন এবং জুমার দিনের কতিপয় আমল)।
ঈমান ও আমল - ১ Click This Link
(যেসব আমলে মানুষের অভাব দূর হয় ও জীবন সুখের হয়)।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: আমল এবং ফজিলত নিয়ে আমার কোনো চিন্তা ভাবনা নেই।
তবে আমার জীবন এবং সংসার নিয়ে আমার চিন্তা ভাবনার শেষ নেই।

২২ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ২:০৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজিব নুর ভাই, আপনার মন্তব্য এর জন্য। মুসলমান হিসাবে আপনার - আমার আমল নিয়ে কিছু ভাবার অবকাশ আছে। আর জীবন ও সংসার নিয়ে আমাদের চিন্তা থাকবেই। আর এই জীবন কে সুন্দর করার জন্যই আমল তথা ভাল কাজ জরুরী।

২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১৭

রামিসা রোজা বলেছেন:

মাশাআল্লাহ ,খুব ভালো একটি পোস্ট দিয়েছেন ।
তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত অনেক । সব সময় হয়তো
সঠিক ভাবে আমল করতে পারিনা কিন্তু নামাজের মাধ্যমে
নিশ্চয়ই আমরা নিরাশ হই না ।

২২ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:২৬

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ বোন রামিসা রোজা, আপনার মন্তব্য এর জন্য।৷৷দুনিয়ার জীবনের জটিলতায় এবং জীবিকার প্র‍য়োজনে আমরা পরকালের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক কাজই করতে পারিনা এটা একদম সঠিক। তারপর ও যখনই কোন একটু সময় মিলে আল্লাহ যেন আমাদেরকে একটু ভাল কাজ,একটু আমল করার তাওফিক দেন এটাই চাওয়া। আর আল্লাহ চাইলে সবই সম্ভব। আল্লাহ আমাদেরকে তার রহমত ও কল্যাণ নসিব করুন।

৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৬

মাহিরাহি বলেছেন: রাতের পর থেকে ---

রাত কয়টা থেকে?

২২ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:১৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ মাহিরাহি, আপনার মন্তব্য এর জন্যে।৷৷ আপনার প্রশ্নটা ক্লিয়ার নয়। আপনি কি রাতের কখন থেকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যায় তাই বুঝাতে চেয়েছেন? যদি তাই হয় - তবে রাত ১২ টার পর থেকে পড়া যায় তবে শেষ রাতের দিকে পড়া উত্তম।

৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৫১

করুণাধারা বলেছেন: তাহাজ্জুদের নামায শুনেছি রাতের শেষ প্রহরে পড়া ভাল, আপনিও বলেছেন। আজকে ফজরের ওয়াক্ত শুরু হলো ৫-২৪ এ, ফজরের ওয়াক্ত শুরু হবার কতক্ষণ আগে পর্যন্ত পড়া যাবে এটা কি বলতে পারবেন? অনেকেই ফজরের কিছু আগে ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদের নামায পড়ে দশ পনের মিনিট অপেক্ষা করে ফজরের নামাজ পড়েন। এটা ঠিক আছে?

সচেতনতা মূলক পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ করুণাধারা , আপনার মন্তব্য এবং জানার চেষ্টার জন্য।

হজরত আলী (রা.) বলেন: যাঁরাই আল্লাহর নৈকট্য লাভে ঊর্ধ্বারোহণ করেছেন; তাঁরাই সাহার বা শেষ রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়েছেন। (দিওয়ানে আলী (রা), নাহজুল বালাগা)। তাহাজ্জুদ নামাজের আগে-পরে কোরআন শরিফ তিলাওয়াত করা খুবই উপকারী।
মধ্যরাতে যখন লোকেরা গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন, তখন থেকে সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা যায় তবে রাতের শেষাংশে পড়লে সওয়াব বেশি পাওয়া যায়।তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কালে পবিত্র কোরআনের আয়াত খুব বেশি তিলাওয়াত করা উত্তম। যদি দীর্ঘ সূরা মুখস্থ থাকে, তাহলে তাহাজ্জুদ নামাজে দীর্ঘ সূরা তিলাওয়াত করা উত্তম। ১২ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজের প্রথম রাকাতে সূরা আল-ইখলাস ১২ বার, দ্বিতীয় রাকাতে ১১ বার, তৃতীয় রাকাতে ১০ বার, চতুর্থ রাকাতে ৯ বার অনুসারে দ্বাদশ রাকাতে একবার পড়তে হয়। আবার প্রত্যেক রাকাতে সূরা আল-ইখলাস ৩ বার অথবা ১ বার হিসেবেও পড়া যায়। আবার সূরা আল-মুয্যাম্মিল, আয়াতুল কুরসি এবং সূরা আল-ইনশিরাহও পড়া যায়।

সে হিসাবে ফজর আযান যদি ৫:০০-৫:২৪ হয় তাহলে ০৩:৩০-০৪:০০ টায় উঠে কিছু সময় কোরআন শরীফ তেলওয়াত করার পর তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে মোনাজাত করার পর জায়নামাজে বসে কিছু দোয়া-দুরুদ পাঠ করে সময় অতিবাহিত করে ফজরের আযান হলে একবারে ফজর নামাজ পড়ে ঘুমানো উত্তম।

তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে যদি কেউ আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, আল্লাহ তার পাপরাশি মার্জনা করে দেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার প্রভু প্রত্যেক রাতের শেষাংশে নিকটতম আসমানে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন, যে কেউ আমার কাছে প্রার্থনা করবে, আমি তা কবুল করব, যে কেউ কিছু প্রার্থনা করবে, আমি তা প্রদান করব, যে কেউ আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তাকে ক্ষমা করব।’ (বুখারি ও মুসলিম)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.