নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রাণঘাতী করোনা (কোভিড) র প্রার্দুভাবে শিক্ষা ব্যবস্থার নাজেহাল অবস্থা। শিশুরা কীভাবে সংক্রমণের আশংকা এড়িয়ে স্কুলে যাবে?করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীরা গভীর অনিশ্চয়তায় পড়েছে।প্রায় এক বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। কবে খুলবে, তা কেউ জানে না। কারণ, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। লক্ষণও আশাব্যঞ্জক নয়।২০২০ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও সমমানের এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সব বন্ধ । সব মিলিয়ে পড়াশোনা ও পরীক্ষা ছাড়াই এক শিক্ষাবর্ষ শেষ হওয়া হয়েছে।
আর এত সব সমস্যা ও ঘটনার মাঝে ,করোনা মহামারি সহ বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের বাধা দূর করতে মহান সংসদে উত্থাপিত তিনটি বিল পাস হয়েছে।গত রবিবার(২৪/০১/২০২১) সংসদ অধিবেশনে বিল তিনটি পাশ হয়। ফলে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের বাধা দূর হলো। দ্রুত গেজেট প্রকাশের পরপরই এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিল তিনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংসদে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করে।শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি মঙ্গলবার "ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১", "বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১", "বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১", সংসদে উত্থাপন করেন। পরে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন বিলটি একদিনের মধ্যে এবং বাকি দুটি দুদিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
এখানে উল্লেখ্য যে ইতিপূর্বে সকল শ্রেণীর সকল শিক্ষার্থীকে অটোপাস দিয়ে সকলকে পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে সংসদে পাস হওয়া তিনটি সংশোধিত আইনের গেজেট জারি করা হয়েছে। বিল তিনটিতে রাষ্ট্রপতির সম্মতির পর সেগুলো আইনে পরিণত হয়।
গতকাল সোমবার (২৫/০১/২০২১) রাতে ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) আইন-২০২১’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড (সংশোধন) আইন-২০২১’ ও ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (সংশোধন) আইন-২০২১’- এর গেজেট প্রকাশ করা হয়।আগের আইন অনুযায়ী পরীক্ষা নেয়ার পর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু সংশোধিত আইনে পরীক্ষা ছাড়াই বিশেষ পরিস্থিতিতে ফলাফল প্রকাশের বিধান রাখা হয়েছে।
ছবি-youtube.com
** পরীক্ষা ছাড়াই বিশেষ পরিস্থিতিতে ফলাফল প্রকাশের আইন পাশ করার পর ,গতকাল শনিবার (৩০/০১/২০০২১ )সকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়।২০২০ সালের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার সময় এইচএসসির ফল নিয়ে সমালোচনা না করার আহ্বান জানিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,"ফলাফল সম্পর্কিত নেতিবাচক মন্তব্যগুলো শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করবে, যারা এ ধরনের মন্তব্য করছেন আমি তাদের এর থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করছি"।প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, "অনেকে অনেক কথা বলছেন। তবে আমি মনে করি, অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য বা তিক্ততার কথা না বলাই ভালো।‘এমনিতেই তারা (শিক্ষার্থীরা) স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছে, যা তাদের জীবনে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতিতে তাদের ফলাফল এবং এর পদ্ধতি নিয়ে অনেকে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন যা শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করবে"।এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না নেয়ার বিষয়ে সমর্থন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, "শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অন্যান্য কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্যই সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল"।
পরীক্ষা না নিয়ে ফল প্রকাশে আইন সংশোধনের পর শনিবার একযোগে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়, যাতে পৌনে ১৪ লাখ শিক্ষার্থীর অপেক্ষার অবসান ঘটে।এবার পাস করে শতভাগ শিক্ষার্থী। এইচএসসি ও সমমানে গত বার অর্থাৎ ২০১৯ সালে পাসের হার ছিল ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তার আগের বছর ছিল ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ।এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন শিক্ষার্থী। গত বার এই সংখ্যা ছিল ৪৭ হাজার ২৮৬। তার আগের বছর ছিল ২৯ হাজার ২৬২।
এই অটোপাসের (এসএসসি থেকে ৭৫ শতাংশ এবং জেএসসি-জেডিসি থেকে ২৫ শতাংশ সমন্বয়ের মাধ্যমে) সিদ্ধান্ত সরকার এবং প্রশাসন অনেক কিছু বিচার বিবেচনা করে এবং অনেকগুলি বিকল্প পদ্ধতি থেকে একটা বেছে নিয়েছে যেটা ভাল মনে হয়েছে বর্তমানের এই করোনাকালীন পরিস্থিতিতে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহববানের প্রতি সম্মান রেখে এর সমালোচনা না করলেও এ ফলাফল শিক্ষার্থী, শিক্ষক তথা দেশের মানুষেকে কাছে এক নতুন পরিস্থিতির মুখোমোখি দাড় করিয়েছে বা ভবিষ্যেতেও দাড় করাবে।এর ফলে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যেতে অপ্রত্যাশিত কিছু বিষয়ের মুখোমুখি হবে এবং কিছু প্রত্যাশিত জিনিষ থেকে বণ্চিত হয়েছে।
ছবি-bd-info.com
যে সব জিনিষ থেকে শিক্ষার্থীরা বণ্চিত হয়েছে বা নতুন কিছু অভিজ্ঞতা লাভ করেছে -
১। সব শিক্ষা বোর্ড বণ্চিত হয়েছে সেরা শিক্ষার্থীদের তালিকা থেকে,কোন শিক্ষা বোর্ড বণ্চিত সবগুলি বোর্ডের মাঝে সেরা হতে বা সবচয়ে বেশী ভাল ফলকারী বোর্ড হতে ।অন্যদিকে সবার যেহেতু একই রকম ফলাফল(১০০ ভাগ পাশ) হয়েছে কাজেই কোন কোন বোর্ড বেঁচে গিয়েছে সবচেয়ে কম পাশের অপবাদ থেকে।
২।যেসব শিক্ষার্থীরা বোর্ডের সেরা ১০ এর তালিকায় থাকার মত তারা বণ্চিত হয়েছে তাদের মেধার মূল্যায়ন থেকে এবং শিক্ষাবৃত্তি , বিদেশে পড়ার সুযোগ এবং আরো অনেক কিছু থেকে।আবার মোটামুটি মানের শিক্ষার্থীরা বেঁচে গিয়েছে ফেল করার মত লজ্জার হাত থেকে।
৩।সকল শিক্ষার্থীরা বণ্চিত হয়েছে ফলাফল উদযাপন থেকে ।কারন এখন যে ফলাফল ঘোষনা করা হয়েছে তা তাদের মেধার যথাযথ মূল্যায়ন করে নয় বরং "পরীক্ষা ছাড়াই সবাই পাশ কোন ফেল নয় (পূর্ববর্তী পরীক্ষার ফলাফলের উপর )" এ নীতিতে হয়েছে ।এতে করে এভারেজ মেধার শিক্ষার্থীরা খুশী হলেও প্রকৃত মেধাবীদের মূল্যায়নের সুযোগ না থাকায় তারা তা উদযাপন করতে পারবেনা।আবার কম মেধার শিক্ষার্থীরা ফেল করার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছে।
৪।অটো পাশের ফলে শিক্ষার্থী সারা জীবন শিক্ষার্থীরা হীনমন্যতায় ভোগবে এবং দেশে-বিদেশে লেখাপড়া-চাকুরী যা কিছুর জন্যই যাক এটা তাদের জন্য একটা দূর্বলতা হিসাবে বিবেচিত হতে পারে এবং যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ার সম্ভাবনায় তারা সবসময়ই ভূগবে।
৫। বাবা-মা সন্তানের পরীক্ষার ফলাফল উদযাপন করতে পারেনি না বা কারো সাথে গর্বকরে বলতে পারবেনা যা যুগ যুগ ধরে আমরা সমাজে দেখে আসছি।কারন সন্তানের পরীক্ষার সাফল্যে বাবা-মাই সবচেয়ে বেশী খুশী হয় । আর অটোপাশে যেখানে তার ছেলে-মেয়ের মেধার কোন ভূমিকাই থাকলনা তা তারা কিভাবে মানুষের সাথে শেয়ার করবে। আবার কিছু বাবা-মা বাবা-মা সন্তানের পরীক্ষার ফেল করার হাত থেকে বেঁচে গিয়ে হাফ ছেড়ে বেচেছেন।
৬।পরীক্ষার ফলাফলের পর সারা দেশে টনে টন মিষ্টি বিতরন হত এবং তা অনেকটা সামজিক উৎসবের মত আমাদের দেশে। পরীক্ষার ফলের দিন মিষ্টির দোকানদাররা অনেক মিষ্টি বানাতেন এবং তার ফলে ব্যাপক অর্থনৈতিক কাজ-কর্ম তথা অর্থের হাত বদল হয়।কিন্তু এবার অটোপাশের ফলে কেউ আত্মীয়দের মাঝে মিষ্টি বিতরন করেননি ফলে এর ফলে দেশে পরীক্ষার ফলাফলের ফলে সমাজিকতা এবং এর সাথে সম্পর্কিত সকল অর্থনৈতিক কাজ-কর্ম মুখ থুবড়ে পড়েছে।তার ফলে মিষ্টির দোকানদাররা বণ্চিত হয়েছেন অতিরিক্ত বেচা-কিনি থেকে অপরদিকে ময়রা (মিষ্টির কারিগর)রা বেঁচে গেছেন অতিরিক্ত পরিশ্রম থেকে।
৭।কিছু শিক্ষায়তন বণ্চিত হয়েছে শতভাগ পাশের সাফল্য উদযাপন থেকে অপরদিকে কিছু শিক্ষায়তন মুক্তি পেয়েছে শতভাগ ফেলের অপমান থেকে (কারন এবার শতভাগ পাস )।
বিপর্যস্থ শিক্ষা ব্যবস্থা - করোনার সময়ে গত বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বড় শহরের কিছুসংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইন ক্লাস নিলেও সেগুলোর বেশির ভাগে পাঠদান শেষ পর্যন্ত মানসম্মত হয়নি।কারণ, এর আগে কারোরই এরকম বিষয়ের প্রস্তুতি ছিল না।সবশেষে বিদ্যালয় কবে খুলবে তা এখনো ঠিক হয়নি।এর চেয়েও ভয়ের বিষয় হলো, শিক্ষার্থীদের একাংশ পড়াশোনা থেকে ঝরে পড়তে পারে। বাল্যবিবাহের হারও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাড়তে পারে শিশুশ্রমও।
এদিকে মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে স্কুলের কার্যক্রম আরও এক বছর ব্যাহত হলে সে ক্ষতির ভার শিশুরা বইতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর।গত মঙ্গলবার(১২/০১/২০২১) এক বিবৃতিতে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
হেনরিয়েটা ফোর বলেন, "আমরা যেহেতু কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় বছরে প্রবেশ করেছি এবং বিশ্বজুড়ে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, তাই স্কুলগুলো খোলা রাখতে বা পুনরায় খোলার পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার দিতে কোনো প্রচেষ্টাই বাদ দেওয়া উচিত হবে না"।ইউনিসেফ প্রধান জানান, "শিশুদের ওপর স্কুল বন্ধের বিরূপ প্রভাবের বিষয়ে অভূতপূর্ব প্রমাণ এবং স্কুলগুলো মহামারির চালিকা শক্তি নয় বলে জোরালো নজির থাকা সত্ত্বেও অনেক দেশই স্কুলগুলো বন্ধ রেখেছে তাও প্রায় এক বছর ধরে"।হেনরিয়েটা ফোর আরো উল্লেখ করেন যে - "শিশুদের পড়া, লেখা ও প্রাথমিক গাণিতিক সমস্যা সমাধানের দক্ষতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং একবিংশ শতাব্দীর অর্থনীতিতে সাফল্য অর্জনে যে দক্ষতার প্রয়োজন তা হ্রাস পেয়েছে। তাদের স্বাস্থ্য, বিকাশ, নিরাপত্তা এবং সার্বিক কল্যাণের বিষয়টি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের ওপর ক্ষতির পরিমাণ হবে সর্বাধিক"।
যদি আরও এক বছর শিশুদের স্কুল বন্ধ থাকার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় তবে প্রজন্মান্তরে তার ফল ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করে দেন হেনরিয়েটা ফোর।
এমনিতেই আমাদের দেশের শিক্ষা পরিস্থিতি বা অবস্থা বাকী বিশ্বের সাথে তুলনায় অনেক পিছিয়ে।বিশ্বায়নের যুগেও আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার দূর্বলতা অনেক এবং এমনিতেই আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হিমশিম খায়। কারন আমাদের গতানুগতিক শিক্ষাব্যবস্থা এবং ভাষাগত (ইংরেজী) দূর্বলতার কারনে বাকী বিশ্ব থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি।তার সাথে এই অটোপাসের ফলে বাকী বিশ্ব থেকে আমাদের আরো বিছিন্ন হবার আশংকা তৈরী হচছে।যারা দেশের বাইরে বিভিন্ন কাজ-পড়াশোনা-চাকুরী উপলক্ষে গিয়েছেন তার এ ব্যাপারে সম্যক অবগত যে বিশ্বে আমাদের অবস্থান কোথায়।আমরা বরাবর ইংরেজীতে দূর্বল আর তার সাথে এখন পরীক্ষা বিহীন পাশ বা অটোপাস আমাদের কে কোথায় নিয়ে যাবে বা তাকি আমাদেরকে বিশ্বায়নের প্রতিযোগীতা থেকে ছিটকে ফেলে বাইরে ছুড়ে দেবেনা? এ প্রশ্নে শংকিত অনেক অভিভাবক-শিক্ষার্থী। কি হবে ছেলে-মেয়েদের যারা এ অটোপাস সংস্কৃতিতে শিক্ষাজীবন শেষ করবে? এমনিতেই চাকুরীর বাজারে চরম প্রতিযোগীতা ।আর সেই প্রতিযোগীতায় এসব প্রতিযোগী যখন অংশগ্রহন করবে তখন নিয়োগ দাতা কি তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করবে? দেশে-বিদেশে কি তারা প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করতে পারবে বা সক্ষম হবে? পারিবারিক-সামাজিক ভাবে কি তাদের হেনসতা হতে হবেনা। তখন তার যোগ্যতাকে খাটো করে বলবেনা যে,"আরে তুমিত অটোপাশ"।এ মানষিক টানাপোড়ন তাদের বইতে হবে জীবনভর।কোথাও তাদের যথাযথ মূল্যায়ন না হবার সম্ভাব্নাই বেশী।আর এর ফলে একটা বিরাট অংশের মানষিক স্বাস্থ্য - সামজিক সমস্যা তথা বুদ্ধিহীনতা-শূন্যতা তৈরী হবার সম্ভাব্না তৈরী হচছে।
মানষিক স্বাস্থ্য কি - বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মতে, মানষিক স্বাস্থ্য হল ব্যক্তির শারীরিক , মানসিক এবং সামাজিক এই তিন অবস্থার একটি সুস্থ সমন্বয়। সুতরাং আমরা বলতে পারি ,একজন মানুষের মানষিক স্বাস্থ্য হল রোগবালাই মুক্ত সুস্থ শরীর ও সেই সঙ্গে ভয় ,হতাশা ,বিষন্নতা ,মানসিক চাপ থেকে মুক্ত মন এবং সমাজের নানাবিধ চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করতে সক্ষম মন।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী / মানসিক প্রতিবন্ধকতা বা সমস্যা কি - মানসিক প্রতিবন্ধীদের সংজ্ঞা বিভিন্ন শিক্ষাবিদ ও মনোবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ভাবে তুলে ধরেছেন। তার মধ্যে আমেরিকান এসোসিয়েশন অফ মেন্টাল রিটার্ডেশন (AAMR) যে সংজ্ঞাটি উপস্থাপন করেছে তা হল , "বর্তমান অবস্থায় কাজকর্মে যথেষ্ট অক্ষম এবং সেই সঙ্গে স্বাভাবিকের তুলনায় বুদ্ধিবৃত্তি অতি অল্প। তা ছাড়া অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন ,নিজের পরিচর্যা নিজে করা ,পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করা ,সামাজিক তৎপরতা ,নিজেকে সঠিকভাবে পরিচালনা ,স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, পড়াশুনা, অবসর বিনোদন ইত্যাদি আনুষঙ্গিক আচরণেও সীমাবদ্ধতা বা প্রতিবন্ধকতা লক্ষ করা যায় তারাই হল মানসিক প্রতিবন্ধী ,এই অবস্থার নাম মানসিক প্রতিবন্ধকতা"।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী / মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের বৈশিষ্ট্য :-
ক। দৈহিক বৈশিষ্ট্য :- স্বাভাবিক শিশুদের তুলনায় মানসিক শিশুদের দৈহিক বিকাশ অত্যন্ত মন্থর গতিতে হয়। পেশি সমন্বয় ত্রূটিপূর্ণ এবং শ্লথ গতি দেখা যায়। অনেকের মধ্যে চোখ , নাক ,কান এবং বাচন ক্ষমতার ত্রূটি লক্ষ করা যায়।
খ। মানসিক বৈশিষ্ট্য :- এই শিশুদের মধ্যে বুদ্ধিমত্তার অভাবই প্রধান বিষয়। চিন্তন ক্ষমতা বা অভিজ্ঞতা প্রয়োগ করার ক্ষমতা নেই বললেই চলে। কৌতূহল , যুক্তিক্ষমতা ,যথাযথ ভাষা প্রয়োগ , মনোযোগের অভাব , ধীর স্থির হয়ে বসার অভাব লক্ষ করা যায়।
গ। সামাজিক ও নৈতিক বৈশিষ্ট্য :- সামাজিক পরিস্থিতি উপলব্ধি করার ক্ষমতা না থাকায় এই শিশুদের সামাজিক বিকাশ তাদের বয়সের তুলনায় অনেক কম হয়। আর কোনটা নৈতিক ,কোনটা অনৈতিক, এই বিচার করার শক্তি তাদের থাকে না। বন্ধু নির্বাচনের বিচার করার শক্তি না থাকায় তারা মিশুক হতে পারে না ।
আর এসব কিছু অভ্যাস- বৈশিষ্ট্যই আমদের সমাজের শিশুদের মাঝে গড়ে উঠছে প্রকট ভাবে।লেখাপড়া না করা তথা স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকার দরুন তাদের এবং সামাজিক মেলামেশা না থাকায় শিশুদের মানষিক বিকাশ বা বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ যথাযথ হচছেনা ।এর ফলে তারা অনেকটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হিসাবে গড়ে উঠছে বা হবার পথে।এর সাথে সাথে আরেক সমস্যা তৈরী হচছে,তা হলো দৃষ্টিশক্তির সমস্যা।
দৃষ্টিশক্তির সমস্যা - করোনা পৃথিবীর প্রায় সমস্ত মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে। লকডাউন, বাড়ি থেকে পড়াশোনা, ওয়ার্ক ফ্রম হোম। এই সবকিছুর জন্যই মানুষ স্ক্রিনের উপর আরো বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। সারাক্ষণ সকলে তাকিয়ে আছেন ট্যাবলেট, ল্যাপটপ, মোবাইল স্ক্রিনের দিকে। বাড়ির বাইরে মানুষ বেরোচ্ছেন না। ফলে প্রায় গোটা সময়টাই সকলে তাকিয়ে থাকছেন স্ক্রিনের দিকে। এর ফলে চোখ দূরের দিকে তাকাচ্ছে না। সারাক্ষণ হয় স্ক্রিন নয় বাড়ির ভিতরের বিভিন্ন জিনিসের দিকে দৃষ্টি যাচ্ছে। যাকে বলে কাছের দৃষ্টি। কিন্তু চোখ ভালো রাখার জন্য কাছের এবং দূরের দৃষ্টি দুইটিই জরুরি।
এই সময়ে চোখের ব্যায়ামখুব জরুরি। বিশেষ করে ছোটদের চোখে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। নেদারল্যান্ডস এবং চীনের সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, কোভিড সময়ে মায়োপিয়ার মতো সমস্যা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে ছোটদের চোখে এই সমস্যা সব চেয়ে প্রকট। চিকিৎসকরা এর নাম দিয়েছেন ‘কোয়ারান্টিন মায়োপিয়া’।
*** চীনে এক লাখ ২০ হাজার শিশুকে পরীক্ষা করা হয়েছে৷ স্কুল পড়ুয়া এই শিশুদের চোখ পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ছয় থেকে আট বছরের শিশুদের মধ্যে মায়োপিয়া হওয়ার প্রবণতা সব চেয়ে বেশি। ২০১৯ এর তুলনায় ২০২০ সালে এই বয়সের শিশুদের চোখে মায়োপিয়া বৃদ্ধি পেয়েছে তিন গুণ।
চিকিৎসকরা বলছেন, গত প্রায় এক বছরে শিশুরা বাড়িতে বসে থেকেছে। সারাক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থেকেছে। দূরের জিনিস দেখেনি৷ ফলে তাদের দূরের দৃষ্টিশক্তি ঠিকমতো তৈরিই হচ্ছে না। দৃষ্টিশক্তি এক দিনে তৈরি হয় না। আট বছর পর্যন্ত শিশুদের চোখের গঠনগত পরিবর্তন হতে থাকে। ফলে এই বয়সের শিশুরা দূরের জিনিস না দেখতে দেখতে, দূরের দৃষ্টিশক্তিই হারিয়ে ফেলছে। বড় হওয়ার পরেও তাদের এই সমস্যা কাটবে না।
ছয় থেকে আট বছরের মধ্যে আইবল যদি খুব বড় হয়ে যায়, তাহলে দূরের দৃষ্টির ক্ষমতা একেবারে কমে যায়। কাছের জিনিস দেখলে, খুব ফোকাস করে কোনো কিছু দেখলে আইবল বড় হয়। করোনাকালে ঠিক সেটাই ঘটেছে শিশুদের চোখে। এর থেকে রেটিনার সমস্যা হতে পারে। এমনকী, বেশি বয়সে অন্ধত্বও হতে পারে।
ব্রিয়ান হোলডেন ভিশন ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, একুশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে পৌঁছে, বিশ্বের পাঁচ বিলিয়ন মানুষ অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক মানুষ কেবলমাত্র কাছের জিনিস দেখতে পাওয়ার সমস্যায় ভুগবে। গত এক দশকে উন্নত দেশে এই সমস্যায় ভোগা রোগীর সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে।
মজার বিষয় হলো, সমীক্ষায় আরো বলছে, পড়াশোনার সঙ্গে মায়োপিয়ার সরাসরি যোগ আছে। যারা বেশি পড়াশোনা করেছেন, তাদের মায়োপিয়ার প্রবণতাও বেশি৷এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো খুব ছোট বয়স থেকে কম্পিউটার কিংবা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা৷ মানুষের বাইরে যাওয়া এমনিই কমে গিয়েছে৷ রাস্তায় গিয়ে, মাঠে গিয়ে সুদূরের দিকে তাকিয়ে থাকার অভ্যাস মানুষের কমে গিয়েছে৷ মুনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অপথালমোলজির ডিরেক্টর নিকোল এটার এমনই জানিয়েছেন।
মায়োপিয়ার হাত থেকে বাঁচার উপায় হলো, যে কোনো কাজ করার সময় মাঝে মাঝেই একটু দূরের দিকে তাকানো। এটা অভ্যাস করে ফেলতে হবে। খুব মন দিয়ে মোবাইল বা ট্যাবলেটে কাজ করার সময়ও মাঝে মাঝেই দূরের দিকে তাকাতে হবে।সূর্যের আলোও খুব জরুরি। দিনের কিছুটা বাইরে কাটাতেই হবে। সূর্যের আলো আইবলের গ্রোথ ভালো করে। স্ক্যানডেনেভিয়ার একটি সমীক্ষা বলছে, অন্ধকার মরসুমে মায়োপিয়া বাড়ে। আলো থাকলে মায়োপিয়ার সমস্যা অনেক কমে যায়।
স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে শুধুমাত্র মায়োপিয়ার সমস্যাই হয় না। এর ফলে শিশুদের চোখের জল শুকিয়ে যেতে থাকে। পরিভাষায় যাকে ড্রাই আই বলা হয়। চোখকে ক্লান্ত করে দেয় স্ক্রিন। স্মার্টফোনের নীল আলোর দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
ইদানীং অবশ্য বহু স্মার্টফোনই ব্লু লাইট রিডাকশনের ব্যবস্থা থাকে। নাইট মোড থাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঘুমের অন্তত দুই ঘণ্টা আগে ফোন বন্ধ করে দেওয়া উচিত। কোনো স্ক্রিনের দিকে না তাকানোই ভালো।
শিশুদের হাতে ইলেকট্রনিক ডিভাইস দেওয়া বন্ধ করা উচিত। চিকিৎসকদের বক্তব্য হলো, তিন বছর বয়স পর্যন্ত যে কোনো স্ক্রিন শিশুদের চোখের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর। চার থেকে ছয় বছরের শিশুদের দিনে তিরিশ মিনিটের বেশি স্ক্রিনের দিকে তাকানো ঠিক নয়। কিন্তু বিশেষ করে করোনাকালে সেই হিসেব সম্পূর্ণ বদলে গেছে। অনলাইনে ক্লাস করতে গিয়ে শিশুদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। এর থেকে নিস্তার পাওয়ার একটাই সুযোগ। সুযোগ পেলেই বাইরে যাওয়া। খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে দূরের দিকে তাকানো।
সবশেষে,করোনা আমাদের শেষ পর্যন্ত কোথায় নিয়ে দাড় করায় এই এক বড় প্রশ্ন ।কারন একদিকে স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকার দরুন ছেলে-মেয়েদের সামজিক মেলামেশার সুযোগ কমে গেছে বা নেই বললেই চলে।অপরদিকে স্কুল, কলেজ খোলা থাকলে অন্তত:পক্ষে পড়ার পাশাপাশি লেখার কিছুটা চর্চা থাকে। আর কিছু লিখতে হলে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা তথা চিন্তা-ভাবনা করার প্রয়োজন হয়।ছেলেমেয়রা আগে যাও একটু খেলাধুলা করার জন্য বাইরে যেত করোনার কারনে তাও বন্ধ ।যদিও খেলার মাঠ বা খোলামেলা জায়গার বড়ই অভাব এখন আমাদের দেশে।আর তাই ছেলে-মেয়েরা এখন দিনের বেশীরভাগ সময় মোবাইল বা কম্পিউটারে সময় কাটাচছে।আর তার সাথে চলছে এখন অনলাইন ক্লাস। অনলাইন ক্লাস নামক যে ক্লাস চলছে তাতে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার কোন সুযোগ নেই এবং সারাদিন মোবাইল,কম্পিউটার ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে শিশুদের মাঝে তৈরী হচছে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা।
সবশেষে, আমরা একসময় পরিচিত ছিলাম অন্য পরিচয়ে যেখানে কিছু হলেও পড়াশোনা করতে হত । আর তার থেকে এবার আমরা প্রবেশ করেছি অটোপাশ প্রজন্মে । যেখানে শুধু ভর্তি হতে পারলে পাস নিশ্চিত।আর এর ফলে এবং শিশুদের দিনরাত মোবাইল-ট্যাব-
কম্পিউটার- ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে আশংকা হচছে , অচিরেই আমরা হয়ত একটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও দৃষ্টিশক্তি হীন জাতিতে বা প্রজন্মে পরিণত হতে যাচছি - হচছি বা পেতে যাচছি।
**সূত্র: দৈনিক নয়াদিগন্ত (৩০/০১/২০২১)
*** ডয়চে ভেলে।
পূর্ববর্তী পোস্ট - Click This Link
(আমজনতার সমসাময়িক ভাবনা - ১)
জবাবদিহীতা - এ পোস্ট শুধু আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ বা অভিমত।রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসাবে এবং একজন মানুষ হিসাবে এ আমার ভাবনা । এর সাথে রাজনীতির কোন সম্পর্ক বা সরকারের কোন নীতির সমালোচনার সংযোগ খুজবেনা না দয়া করে। তার পরেও যদি কেউ আমার মতামতের সাথে একমত না হন তাহলে আপনি সঠিক আপনার অবস্থান থেকে।আর কাউকে ছোট করতে বা কাউকে আঘাত করতেও এ পোস্ট লেখার উদ্দেশ্য নয় । এ শুধু ভবিষ্যতের চিন্তায় চিন্তিত একজন আমজনতার ভাবনা। যাদের দ্বারা কিছু হওয়ার-করার সম্ভাবনা নেই শুধু ভাবনা ব্যতীত।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২২
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজিব নুর ভাই, আপনার প্রথম মন্তব্যের জন্য।
আসলে লেখাপড়ার যে অবস্থা তাতে আমরা যে কোথায় যাচছি ,পড়াশোনার মান কোথায় নামছে তা এক বিশাল প্রশ্ন ?
আর প্রাইভেট ভার্সিটি এবং বিদেশের পড়ালেখা বড়লোকদের জন্য। সমস্যা সাধারন মানুষের জন্য।তারা কোথায় যাবে এবং ভবিষ্যত কি এটাই চিন্তার বিষয়।
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনার গরুর রচনাকে আরেকটু বড় করি, এইচএসসি পরীক্ষা নে্যা যেতো কিনা?
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
- এইচএসসি পরীক্ষা নে্যা যেতো কিনা?
** এই প্রশ্নের এখন আর কোন মূল্য আছে বলে মনে হয়না। কারন, পরীক্ষা অবশ্যই নেয়া যেত।সংক্ষিপ্ত সিলেবাস বা সিলেবাস কমিয়ে / অংক ইংরেজী ছাড়া বাকী বিষয়গুলি সমন্বয় করে / পরীক্ষা কেন্দ্র সংখ্যা বাড়িয়ে অবশ্যই নেয়া যেত।তাতে কিছুটা ঝুঁকিগ্রহণ করা হত তবে দিনশেষে সবার জন্য তাই ভাল হত বলে মনে হয়।
আর আপনাকে আবারো ধন্যবাদ গরুর রচনা পড়ার জন্য।
৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: প্রজন্মের কোন দোষ নাই। এরা এদের যোগ্যতা প্রমান করেছে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য আন্দোলন করে। আমরা এরকম পারতাম না। আমি এদের নিয়ে অনেক আশাবাদী। তবে পরীক্ষা না হওয়াতে নকল করা আর প্রশ্ন ফাসের আনন্দ থেকে কচি কচি ছেলেমেয়েরা বঞ্চিত হোল। খাতা দেখে শিক্ষকরা টাকা পেতেন। এবার তারা পেলেন না।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৪
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
প্রজন্মের কোন দোষ নাই এটা সত্যি তবে যারা তাদের পরিচালনা করে দোষ তাদের। তবে সমস্যা একটাই, এটা অটোপাস তাদের ক্যারিয়ার,ব্যক্তিগত,পারিবারিক ও সামাজিক জীবন এবং মনে বিরাট একটা বিরুপ প্রভাব ফেলবে এবং ভবিষ্যতে তারা অনেক অনভিপ্রেত সমস্যার মুখোমুখী হবে ।
সরকার যা করেছে তা আপাতদৃষ্টিতে যা ভাল মনে হয়েছে তাই করেছে ।তবে দীর্ঘমেয়াদে তার বিরুপ প্রভাবও অস্বীকার করার উপায় নেই।কারন ,এইচ এস সি পরীক্ষার ফলাফলের উপরই একজন শিক্ষার্থীর জীবনের গতিপথ নির্ধারিত হয়।
৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:২৪
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: এমনিতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্হা যেই অবস্হায় আছে- তাতে খুব একটা ১৯ -২০ হবে না রে ভাই।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ বোন কবিতা ক্থ্য, আপনার মন্তব্যের জন্য।
কি বলব বলেন? নিজে দেশের বাহিরে এসে টের পাচছি বাকী পৃথিবীর মানুষের সাথে আমাদের ব্যক্তিগত, শিক্ষার ভিন্নতা তথা প্রার্থক্য । শুধু ভাষাগত দূবলতা এবং কর্মমুখী শিক্ষার অভাবে আমরা প্রতিযোগীতায় বিশ্ব থেকে যোজন যোজন দূরে পিছিয়ে ।যদিও অনেক বলেন," আমরা বাংগালীরা খুব পরিশ্রমী " ।তবে শুধু পরিশ্রম দিয়ে প্রতিযোগীতায় টিকে থেকে যায়না।
এ প্রসংগে আমার এক ফ্রান্সের বসের উদ্ধৃতি ," শুধু যদি পরিশ্রম সাফল্যের মাপকাটি হত তাহলে বনের রাজা গাধা ,বাঘ নয়"। ।
ঠিক সেটাই কি আর হবে। আমাদের দেশে এত জনসংখ্যা ।তাতে এই ১৪ লাখ শিক্ষার্থীর একজন ও যদি জীবনে না দাড়াতে পারে তাহলেও আমাদের মাঝে এর কোন প্রতিক্রিয়া হবেনা।যা ২০ তাই ১৯ হবে ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: দুই হাজার সালের পর থেকে আমাদের দেশের লেখা পড়ার মান কমতে শুরু করেছে।
প্রাইভেট ভার্সিটি গুলো লেখাপড়ার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।