নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"দেনমোহর - স্ত্রীর হক" - মাফ চাওয়া বা করার বিষয় নয়, আদায় করা বাধ্যতামূলক । ( মানব জীবন - ৬)।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৩৯


ছবি - shaadimatchmaking.com

দেনমোহর বিবাহিত মুসলিম নারীর একটি বিশেষ অধিকার। এই অধিকার মুসলিম আইনের প্রধান উৎস পবিত্র কোরআন দ্বারা স্বীকৃত। দেনমোহর স্ত্রীর অধিকার সংরক্ষণের জন্য এবং স্ত্রীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য দেয়া হয়। এটি স্বামীর উপর ইসলামী আইন কর্তৃক আরোপিত একটি দায়। বিবাহের অন্যতম শর্ত দেন-মোহর। এই শর্তটি পূরণ ব্যতীত কোন বিবাহ বৈধ হতে পারে না এবং বিয়ে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামুলক। মুসলিম পারিবারিক আইনে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন একটি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে কাজ করে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বিয়ে প্রমাণ করা কঠিন। রেজিস্ট্রেশন করা না থাকলে মেয়েরা প্রতারিত হতে পারে।তাই সকল বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা আবশ্যক। দেনমোহর, ভরণপোষণ, উত্তরাধিকার নির্ণয়, সন্তানের পিতৃত্ব ইত্যাদি ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রিকৃত কাবিননামা একটি আইনগত দলিল। বিয়ে রেজিস্ট্রেশন না করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।


ছবি - proptiger.com

বিয়ে হল একটি সামাজিক বন্ধন যাতে দুটি মানুষ পরস্পর পরস্পরের প্রতি দায়বদ্ধ থাকে। ইসলাম ধর্মে বিবাহের মাধ্যমে নারী ও পুরুষের মধ্যকার যৌন সম্পর্কের অনুমতি রয়েছে। ইসলামী বিবাহরীতিতে পাত্র পাত্রী উভয়ের সম্মতি এবং বিবাহের সময় উভয়পক্ষের বৈধ অভিভাবকের উপস্থিতি ও সম্মতির প্রয়োজন। ইসলামী বিবাহে যৌতুকের কোন স্থান নেই। বিয়ের পূর্বেই পাত্রের পক্ষ হতে পাত্রীকে পাত্রীর দাবি অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা বা অর্থসম্পদ বাধ্যতামূলক ও আবশ্যকভাবে দিতে হয়, একে দেনমোহর বলা হয়।


ছবি - shaadimatchmaking.com

দেন মোহর কি - দেন মোহর বা মোহরানা হলো কিছু টাকা বা অন্য কিছু সম্পত্তি যা বিবাহের প্রতিদান স্বরুপ স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে পাবার অধিকারী। মোহরানা স্ত্রীর সম্মানের প্রতীক। স্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শণ স্বরুপ স্বামীর উপর যে দায় আরোপিত হয়েছে সেটাই দেনমোহর। সুতরাং বিয়ের আসরে বা অনুষ্ঠানে স্বামী তার স্ত্রীকে মর্যাদাস্বরুপ যে অর্থ বা সম্পদ দেয় বা দেবার অঙ্গীকার করে তাকে দেনমোহর বলে। দেনমোহর স্ত্রীর একচ্ছত্র অধিকার এবং এটা স্বামীর কাছে স্ত্রীর প্রাপ্য। বিয়েতে যদি দেনমোহর নির্ধারণ করা না হয়, তবে স্ত্রী তার মর্যাদা ও যোগ্যতার বিচারে দেনমোহর পাওয়ার অধিকারী। এমন কোনো প্রতিষ্ঠিত নীতি বা যুক্তি কিংবা আইন নেই, স্ত্রী তার স্বামীর নিকট নিজেকে সমর্পণ করলে বা মৌখিকভাবে স্বামী কর্তৃক মাফ চাওয়ার পর মাফ শব্দটি উচ্চারণ করলে আশু দেনমোহরের দাবি নিঃশেষ হয়ে যায়না।



দেনমোহর নির্ধারণ পদ্ধতি - ইসলামে মোহরানার পরিমান সুনির্দিষ্টভাবে বেঁধে দেয়া হয়নি। তাই তা আপেক্ষিক। অর্থাৎ বর ও কনের উভয়ের দিক বিবেচনান্তে তা নির্ধারিত হয়। দেনমোহর কত হবে তা নির্ণয়কালে স্ত্রীর পিতার পরিবারের অন্যান্য মহিলা সদস্যদের ক্ষেত্রে যেমন স্ত্রীর বোন, খালা, ফুফুদের ক্ষেত্রে দেনমোহরের পরিমাণ কত ছিল তা বিবেচনা করা হয়। তাছাড়া স্ত্রীর পিতার আর্থ-সামাজিক অবস্থান, ব্যক্তিগত যোগ্যতা, বংশ মর্যাদা, পারিবারিক অবস্থা ইত্যাদির ভিত্তিতে দেনমোহরের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। অপর দিকে বরের আর্থিক ক্ষমতার দিকটাও বিবেচনায় রাখা হয়। এসব দিক বিচার বিবেচনা করেই মূলতঃ দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়। উল্লেখ্য, দেনমোহর একবার নির্ধারণ করার পর এর পরিমাণ কমানো যায় না, তবে স্বামী ইচ্ছা করলে তা বাড়াতে পারেন।

দেনমোহরের পরিমাণ কী হওয়া উচিত ইসলামী শারীআতে এ সম্পর্কে বিশেষভাবে কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি বা কোন সুস্পষ্ট পরিমাণ ঠিক করে দেয়া হয়নি। তবে এ কথা স্পষ্ট যে, প্রত্যেক স্বামীরই কর্তব্য হচ্ছে তার আর্থিক সামর্থ্য ও স্ত্রীর মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রেখে উভয় পক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোন পরিমাণ নির্দিষ্ট করে বেঁধে দেয়া আর মেয়ে পক্ষেরও তাতে রাজী হওয়া।

বিয়ের সময় দেনমোহর নির্ধারণ না হলে - ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ১০ ধারা মোতাবেক দেনমোহর প্রদানের পদ্ধতি সম্পর্কে কাবিনে বিস্তারিত উল্লেখ না থাকলেও স্ত্রী চাহিবামাত্র সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করতে হবে। বিয়ের সময় যদি দেনমোহর নির্ধারণ করা না হয় এমনকি স্ত্রী পরবর্তীতে কোন দেনমোহর দাবী করবে না এ শর্তে বিয়ে হয় তাহলেও স্ত্রীকে উপযুক্ত দেনমোহর দিতে হবে। দেনমোহর বিয়ের পূর্বে, বিয়ের সময় এমনকি বিয়ের পরে নির্ধারণ করা যেতে পারে।

দেনমোহরের প্রকারভেদ :- দেনমোহরের মূলতঃ দুই প্রকারের, যথা-

১) নির্ধারিত দেনমোহর - যেক্ষেত্রে বিবাহের চুক্তিতে বা বিবাহের পূর্বে কিংবা পরে দেনমোহরের পরিমাণ নির্ধারিত হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে সেটা নির্ধারিত দেনমোহর। এইরূপ দেনমোহরের জন্য কোন সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ নির্ধারিত নাই। দেনমোহর হিসাবে যে কোন পরিমাণ অর্থ নির্ধারিত হতে পারে,কিন্তু কোন অবস্থায়ই আইনে নির্ধারিত পরিমাণের কম হতে পারবে না। নির্ধারিত দেনমোহরের পরিমান কোন ক্রমেই দশ দিরহামের কম হবে না।এ প্রসঙ্গে হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, "১০ দিরহামের কম কোনো মোহর নেই "(বায়হাকি শরীফ, ৭/২৪০)। কিন্তু এর উপরে যে কোনো পরিমাণেই দেনমোহর নির্ধারণ করা যাবে।তবে স্বামী যেহেতু দেনমোহর পরিশোধ করতে বাধ্য- তাই তার পরিশোধের সামর্থ্য বিবেচনা করে তা নির্ধারণ করা উচিৎ। এমন কোনো সিদ্ধান্ত তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া আদৌ উচিৎ হবে না- যাতে সে তা পরিশোধ না করতে পেরে গুনাহগার হয়।

দেনমোহর একজন নারীর হক, যদি কোনো ব্যক্তি দেনমোহর অনাদায়ের ইচ্ছা নিয়ে বিয়ে করে তাহলে সে ব্যাভিচারী হবে। এ বিষয়ে রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো মেয়েকে দেনমোহর দেওয়ার ওয়াদায় বিয়ে করেছে, কিন্তু দেনমোহর দেওয়ার ইচ্ছে নেই, সে কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট ব্যাভিচারী হিসেবে দাঁড়াতে বাধ্য হবে।”- মুসনাদে আহমাদ।

২) উপযুক্ত দেনমোহর - যেক্ষেত্রে বিবাহের চুক্তিতে বা বিবাহের পূর্বে দেনমোহরের পরিমাণ নির্ধারিত হয় না সেক্ষেত্রে স্ত্রীকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ হিসাবে দেনমোহর পরিশোধ করার জন্য আইন দ্বারা নির্ধারণ করা হয়, তাকে উপযুক্ত দেনমোহর বলে। যখন এইরূপ কোন প্রকাশ্য শর্তে বিবাহের চুক্তি সম্পাদিত হয় যে, কোন মোহরানা পরিশোধ করা হবে না অথবা যখন কোন মোহরানার পরিমাণ ধার্য করা না হয় তখন সে বিবাহের ক্ষেত্রে স্ত্রী ন্যায্য বা উপযুক্ত পরিমাণ মোহরানা পাওয়ার অধিকারী হন।

বরকতপূর্ণ বিবাহের বর্ণনা দিতে গিয়ে উম্মাহাতুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, "সবচেয়ে বরকতময় বিয়ে হচ্ছে সুন্নতি বিয়ে, অর্থাৎ যে বিয়েতে খরচ কম হয় এবং কোনো জাঁকজমক থাকে না"।-মিশকাত শরিফ ।
রাসূল (সাঃ) আরো বলেন –"সে নারী বরকতের মাঝে আছে যাকে প্রস্তাব দেয়া সহজ ও যার দেনমোহর অল্প"।দেনমোহরের বিষয়টি হালকাভাবে নিয়ে লোক দেখানো "অধিক দেনমোহর" ধার্য করাতে কোনো বরকত নেই। বরং তা অহংকারেরপরিচায়ক।

স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে কিংবা তালাক হলে - স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে প্রথম স্ত্রীর সম্পূর্ণ দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করতে হবে। তালাক বা স্বামীর মৃত্যুর আগেই স্ত্রী দেনমোহর দাবি করতে পারে এবং স্বামী তখন নির্ধারিত দেনমোহর পরিশোধ করতে বাধ্য। দেনমোহর স্ত্রীর কাছে স্বামীর ঋণ তাই যে কোনো সময় স্ত্রী তা দাবি করতে পারে।

স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর দেনমোহর আদায় - স্বামীর মৃত্যুর পর দেনমোহর স্ত্রীর কাছে স্বামীর ঋণ হিসেবে ধরা হবে। অন্যান্য ঋণের মতোই এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। দাফন-কাফনের খরচ করার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি থেকে দেনমোহর ও অন্যান্য ঋণ পরিশোধ করতে হবে, এমন কি এই ঋণ পরিশোধ না করলে স্ত্রী স্বামীর উত্তরাধিকারীদের বিরুদ্ধে দেনমোহরের জন্য মামলাও করতে পারে। স্বামীর আগে স্ত্রীর মুত্যু হলেও দেনমোহর দিতে হবে। এক্ষেত্রে স্ত্রীর উত্তরাধিকারীরা এই দেনমোহর পাবার অধিকারী। তারা দেনমোহর পাবার জন্য মামলাও করতে পারে। এছাড়া স্ত্রীর দেনমোহর পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত তার স্বামীর অন্যান্য ওয়ারেশদের এবং তার স্বামীর পাওনাদারদের বিরুদ্ধ জনিত দখল বজায় রাখতে পারবে।


ছবি - m.somewhereinblog.net

মোহরানা নারীর অর্থনৈতিক অধিকার। একশ্রেণির মানুষের বদ্ধমূল ধারণা, মোহরানা কেবলই আনুষ্ঠানিক ঘোষণামাত্র। অনেকে মনে করেন, মোহরানা হলো বিবাহের নিশ্চয়তা, যা কেবল তালাক দিলেই পরিশোধযোগ্য! অথচ ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী মোহরানার সম্পর্ক বিবাহের সঙ্গে, তালাকের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই।

অন্যদিকে মোটা অঙ্কের মোহরানা ধার্য করা এখন আমাদের সমাজে সামাজিক "ঐতিহ্যে" পরিণত হয়েছে। অতি ভালোবাসার ছলে কিংবা বাসরঘরের আনুষ্ঠানিকতার ছদ্মাবরণে "মোহর মাফ" করে দেওয়ার সংস্কৃতি চালু হয়েছে। এ ব্যাপারে হজরত আশরাফ আলী থানভি (রহ.) লিখেছেন, "মোহরের অর্থ স্ত্রীর হাতে দেওয়ার পর স্ত্রী যদি তা ইচ্ছামতো খরচ করার সুযোগ লাভ করা সত্ত্বেও স্বামীকে দিয়ে দেন, কেবল সে ক্ষেত্রেই তা মাফ বলে গণ্য হবে, অন্যথায় অর্থ নারীর হস্তগত না করে মাফ নিলে এ মাফ গ্রহণযোগ্য নয়"। কেননা দেখা যায়, বাসরঘরে এ প্রক্রিয়ায় ‘মাফ’ করে দেওয়ার পর যদি কোনো কারণে সংসার ভেঙে যায়, ওই নারী মোহরানা দাবি করতে দ্বিধা করেন না, এমনকি নিজের অধিকার আদায়ে মামলাও করে থাকেন। এতে বোঝা যায়, আগে যে তিনি "মাফ" করে দেওয়ার কথা বলেছেন, সেটি ছিল কথার কথা কিংবা সামাজিক প্রথা। এ প্রক্রিয়ায় মূলত মোহরানা মাফ হয় না।

অনেক বড় অঙ্কের মোহর ধার্য করা যেমন কাম্য নয়, তেমনি তা একেবারে তুচ্ছ ও সামান্য হওয়াও উচিত নয়। মোহরের পরিমাণ এমন হওয়া চাই, যা সাধারণত আগ্রহের বিষয় হয় এবং নারীর জন্য অর্থনৈতিক শক্তি ও সম্মানের বিষয় হয়। নবী করিম (সা.)-এর সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের সাধারণ রীতি এ ক্ষেত্রে উত্তম আদর্শ। আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান বলেন, আমি উম্মুল মুমিমিন আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, নবী করিম (সা.) কী পরিমাণ মোহর দিয়েছেন? তিনি বলেন, "নবী করিম (সা.) তাঁর স্ত্রীদের সাড়ে বারো উকিয়া অর্থাৎ পাঁচ শ দিরহাম মোহর দিয়েছেন" (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৪২৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২১০৫)।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, "যদি তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী পরিবর্তন করতে ইচ্ছা কর এবং তাদের একজনকে প্রচুর ধন-সম্পদ প্রদান করে থাক, তবে তা থেকে কিছুই ফেরত গ্রহণ করো না। তোমরা কি তা অন্যায়ভাবে ও প্রকাশ্য গোনাহর মাধ্যমে গ্রহণ করবে? "(সুরা নিসা ,আয়াত - ২০)।এ আয়াত থেকে বুঝা যায়, কেউ চাইলে স্ত্রীকে মোটা অঙ্কের মোহরানা দিতে পারবেন।

যে সব কারণে নারীকে মোহরানা দিতে হয় : - কয়েকটি কারণে ইসলামী শরিয়ত নারীকে মোহরানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

১. মোহরানা স্ত্রীর প্রতি সম্মান ও অনুরাগ প্রকাশের একটি মাধ্যম। স্ত্রী তাঁর মা-বাবা, ভাই-বোন ও আত্মীয়-স্বজন ত্যাগ করে স্বামীর ঘরে আসেন। এই কঠিনতম ত্যাগ স্বীকার করে তিনি আসেন অতিথির বেশে। তাই ইসলামী শরিয়ত মোহরানা ও বিভিন্ন উপঢৌকন দিয়ে এই অতিথিকে বরণ করার নির্দেশ দিয়েছে। এই মোহরানা যে এক ধরনের উপঢৌকন এবং সেটা সন্তুষ্টচিত্তে দিতে হয়। এ ব্যাপারে আল কোরআনে বলা হয়েছে,"আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর"। (সুরা নিসা - আয়াত ৪)।

২. মোহরানা নারীর সৌন্দর্য, মর্যাদা ও প্রভাব প্রতিষ্ঠা করে। কেননা অর্থকড়ি পার্থিব জীবনের শোভা ও সৌন্দর্যের পরিচায়ক। আল কোরআনে বলা হয়েছে,"সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য। ‘স্থায়ী সৎকর্ম’ তোমার রবের কাছে পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং আশান্বিত হওয়ার জন্যও সর্বোৎকৃষ্ট। (সুরা কাহফ, আয়াত -৪৬)।

৩. ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে বিবাহ একটি চুক্তি। ইসলাম এই চুক্তির শর্ত হিসেবে অর্থ দেওয়ার কথা বলেছে। কেননা অর্থবিনিময় চুক্তিকে সুদৃঢ় করে। কিন্তু ইসলামে স্ত্রীর কাছ থেকে উপকৃত হওয়ার বিষয়টিকে এই চুক্তির ভিত্তি হিসেবে স্থির করা হয়নি। তাই বিবাহ হয়ে যাওয়ার পর স্ত্রীর কাছ থেকে দৈহিকভাবে উপকৃত না হয়েও যদি কেউ স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেন, তবু মোহরানার অধিকার বলবৎ থাকে। কেননা পুরুষ সেই চুক্তি ভঙ্গ করেছেন। তবে পুরুষ যেন সবদিক থেকে বঞ্চিত না হন, সে কথা বিবেচনা করে ইসলাম চুক্তিকৃত মোহরানার অর্ধেক পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে। এ ব্যাপারে আল কোরআনে বলা হয়েছে,"তোমরা যদি তাদেরকে স্পর্শ করার আগেই তালাক দাও, অথচ মোহরানা ধার্য করে থাকো, তবে যা তোমরা ধার্য করেছ তার অর্ধেক তাদেরকে দিতে পার। যদি না স্ত্রী অথবা যার হাতে বিবাহ-বন্ধন রয়েছে সে মাফ করে দেয় এবং মাফ করে দেয়াই আত্মসংযমের নিকটতর। তোমরা পরষ্পরের মধ্যে উদারতার কথা ভুলে যেওনা। তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন।" (সুরা বাকারা - আয়াত - ২৩৭)

৪. ইসলাম পরিবার ও পারিবারিক জীবনকে একটি প্রতিষ্ঠান কল্পনা করে। দুটি কারণে ইসলাম সেই প্রতিষ্ঠানের মূল দায়িত্ব পুরুষের ওপর অর্পণ করেছে। এক. পুরুষ নারীর অর্থ ব্যয় করে থাকেন, যদিও নারী বিত্তবান হন। দুই. বুদ্ধিমত্তা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে দৃঢ়তা ও দৈহিক শক্তিমত্তা। এই দুটি বিষয় বিবেচনা করে ইসলাম পরিবার নামক প্রতিষ্ঠানের মূল দায়িত্ব স্বামী তথা পুরুষের ওপর অর্পণ করেছে। এ বিষয়ে কোরআনে বলা হয়েছে , "পুরুষেরা নারীদের অভিভাবক। কারণ, আল্লাহ তাদের একের ওপর অপরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং পুরুষেরা নিজের ধন-সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সতী-সাধ্বী স্ত্রীরা অনুগত এবং বিনম্র। স্বামীর অনুপস্থিতিতে তারা তাঁর অধিকার ও গোপন বিষয় রক্ষা করে। আল্লাহই গোপনীয় বিষয় গোপন রাখেন।যদি স্ত্রীদের অবাধ্যতার আশংকা কর তবে প্রথমে তাদের সৎ উপদেশ দাও। এরপর তাদের শয্যা থেকে পৃথক কর এবং তারপরও অনুগত না হলে তাদেরকে শাসন কর৷ এরপর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়, তবে তাদের সাথে কর্কশ আচরণ করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমু্ন্নত-মহীয়ান।" (সুরা নিসা, আয়াত - ৩৪)।
কিন্তু ইসলাম একদিকে অর্থ ব্যয়ের বিষয়টিকে সামনে এনে পুরুষের ওপর পরিবারের মূল দায়িত্ব অর্পণ করেছে, অন্যদিকে পরিবার নামক প্রতিষ্ঠানে মর্যাদায় ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে নারীর জন্য একটি বিশাল অ্যামাউন্ট বরাদ্দ করে নারীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখেছে। ইসলামের ভাষায় এটাকেই মোহরানা বলা হয়।

৫. ইসলামী শরিয়তে মানুষের প্রতিটি অঙ্গের একটি আর্থিক মূল্য আছে, যদিও মানব অঙ্গ-প্রতঙ্গ অমূল্য সম্পদ। তথাপি জাগতিক নিয়মে কেউ কারো অঙ্গহানি করলে এর বিনিময় প্রদান জরুরি। আর বিবাহের মাধ্যমে যেহেতু পুরুষের মাধ্যমে নারীর এক ধরনের অঙ্গহানি হয়, তাই ইসলামী শরিয়ত এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে মোহরানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।এ বিষয়ে কোরআনে বলা হয়েছে , "তোমাদের মধ্যে যারা স্বাধীন ও ঈমানদার নারী বিয়ে করার মত আর্থিক সঙ্গতি রাখে না, তারা নিজেদের অধিকারভুক্ত ঈমানদার ক্রীতদাসীদের বিয়ে করবে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে বেশী জানেন। তোমরা একে অপরের সমান। সুতরাং তাদেরকে বিয়ে করবে তাদের মালিকের অনুমতি নিয়ে। তারা ব্যভিচারী অথবা উপপতি গ্রহণকারিণী না হয়ে সতী-সাধ্বী হয়ে থাকলে তাদের মোহরানা ন্যায় সঙ্গতভাবে দেবে। বিয়ের পর তারা যদি ব্যভিচার করে, তবে তাদের শাস্তি স্বাধীন নারীর অর্ধেক। এ ধরনের বিয়ে তাদের জন্যেই, যারা স্ত্রী না থাকার কারণে পাপে লিপ্ত হতে পারে বলে ভয় করে। কিন্তু ধৈর্য ধরা ও স্বাধীন নারীদের বিয়ে করাই তোমাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং দয়ালু।" (সুরা নিসা , আয়াত - ২৫)
এ আয়াতের থেকে বোঝা যায়, মোহরানা নারীর প্রাপ্য ও অধিকার। এর একটি বিনিময় মূল্য রয়েছে। এটি নারীর অধিকার। ছলে-বলে-কৌশলে কিছুতেই নারীকে সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

মোহরানা তলব করার অধিকার মোহরানা নগদ আদায় না করলেও বিবাহ শুদ্ধ হবে ঠিক, তবে পরে আদায়ের মেয়াদ নির্ধারিত করে নিতে হবে। কিন্তু কেউ যদি তাও না করেন, তাহলে ইসলামী শরিয়ত স্ত্রীকে এ অধিকার দিয়েছে যে মোহর আদায় না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী নিজেকে স্বামীর হাতে অর্পণ করা থেকে বিরত থাকতে পারবেন এবং ওই অবস্থাতেও স্বামীকে স্ত্রীর ব্যয়ভার নিয়মিত বহন করতে হবে। কারণ স্ত্রীর ভরণ-পোষণ এবং মোহরানা সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। যে মোহরের মেয়াদ নির্ধারিত হয়নি, তা তলব করা স্ত্রীর বৈধ অধিকার। একে অবাধ্যতা বিবেচনা করে স্ত্রীর নিয়মিত ব্যয়ভার বন্ধ করার অধিকার স্বামীর নেই। ইসলামী আইনবিদরা স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, স্বামী মোহর আদায় করে স্ত্রীকে নিজের বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন। যদি মোহরানা আদায় না করে নিয়ে যেতে চান, আর স্ত্রী মোহরানা দাবি করে নিজ ঘরে অনড় থাকেন, তাহলেও স্ত্রী মোহর তো পাবেনই, উপরন্তু নিয়মিত ভরণ-পোষণ পাওয়ার অধিকার থাকবে। কারণ তিনি তাঁর ন্যায়সংগত দাবি আদায়ের স্বার্থেই বাড়ি যাচ্ছেন না। এমনকি মোহরানা উসুল না হওয়া পর্যন্ত স্বামীকে শয্যাযাপন, ভ্রমণ ইত্যাদি থেকে বাধা দেওয়ার অধিকারও স্ত্রীর রয়েছে। (দুররে মুখতার : ৪/২৯০) ।


ছবি - somewhereinblog.net

দেনমোহর থেকে স্বামীকে মুক্ত করে দেওয়ার বিধান স্ত্রী চাইলে কি তার স্বামীকে দেনমোহর থেকে মুক্ত করে দিতে পারে?

- স্ত্রী যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে মোহরের কিছু অংশ ছেড়ে দেয় কিংবা গ্রহণ করার পর স্বামীকে উপহার দিয়ে দেয়—তাহলে স্বামী তা সানন্দে ভোগ করতে পারবে। পূর্ণ মোহর ছেড়ে দেওয়ার বা পূর্ণ মোহর স্বামীকে উপহার দেওয়ারও অধিকার স্ত্রীর রয়েছে, তবে সাধারণ অবস্থায় পূর্ণ মোহর না দিয়ে কিছু অংশ দেওয়াই ভালো।

মহান আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে বলেন, "অতএব তাদের নিকট থেকে তোমরা যে আনন্দ উপভোগ করেছ (সে কারণে) তাদের ধার্যকৃত মোহর তাদের প্রদান করবে। আর মোহর নির্ধারিত থাকার পরও কোনো বিষয়ে পরস্পর সম্মত হলে তাতে তোমাদের কোনো অপরাধ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়"। (সুরা নিসা, আয়াত - ২৪)

মহান আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে বলেন অন্যত্র বলেন, "এবং তোমরা নারীদেরকে দাও তাদের মোহর খুশিমনে। এরপর তারা যদি স্বেচ্ছায় স্বাগ্রহে ছেড়ে দেয় কিছু অংশ তোমাদের জন্য তাহলে তা স্বচ্ছন্দে ভোগ কর" (সুরা নিসা, আয়াত -০৪)


ছবি - facebook.com

তবে এখানে কিছু কথা জেনে নেওয়া আবশ্যক -

এক. মোহর মূলত একটি সম্মানী - যা স্বামী তার স্ত্রীকে দিয়ে থাকে।যার মূল উদ্দেশ্যই হলো নারীকে সম্মান ও মর্যাদা দেওয়া। এটা শুধু কথার কথা নয়। যা শুধু ধার্য করা হয়, পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা থাকবেনা ,বরং শরিয়তের উদ্দেশ্য হলো যখন কোনো পুরুষ স্ত্রীকে ঘরে আনবে তখন তাকে মর্যাদার সঙ্গে আনবে এবং এমন কিছু উপহার দেবে, যা তাকে সম্মানিত করে।শরিয়তের দৃষ্টিতে এটা এতটাই অপরিহার্য যে, মোহর ছাড়া বিয়ে হয় না। আকদের সময় উল্লেখ না করলেও কিংবা না দেওয়ার শর্ত করলেও মোহর বাতিল হয় না।

দুই. উপরোক্ত আয়াতদ্বয় থেকে কিছু বিষয় প্রমাণিত হয়।

• মোহর আদায় করা ফরয। কেননা স্বয়ং আল্লাহ তাআলা মোহর আদায়ের আদেশ করেছেন। সুতরাং স্বামীর কর্তব্য যথাযথভাবে মোহর পরিশোধ করা।

• মোহর যদিও একটি মধুর লেনদেন এবং ওইভাবেই তা আদায় করা উচিত, তবে তা নিছক উপহার নয় যে, ইচ্ছা হলে দেওয়া যায়, আবার ইচ্ছে হলে বিরত থাকা যায়। বরং তা হলো স্ত্রীর প্রাপ্য অধিকার। স্ত্রী যেমন প্রীতি ও ভালবাসার সঙ্গে নিজেকে অর্পণ করেছে, স্বামীরও কর্তব্য সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে তার মোহর আদায় করা। অতএব, মোহরের উপর নারীর অধিকার সাব্যস্ত হওয়ার পর তা পরিশোধ না করা, কিংবা অন্যায়ভাবে ফেরত নেওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ ও হারাম।

• স্ত্রী যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে মোহরের কিছু অংশ ছেড়ে দেয় কিংবা নেওয়ার পর স্বামীকে উপহার দিয়ে দেয় তাহলে স্বামী তা স্বচ্ছন্দে ভোগ করতে পারবে। পূর্ণ মোহর ছেড়ে দেওয়ার বা পূর্ণ মোহর স্বামীকে উপহার দেওয়ারও অধিকার স্ত্রীর রয়েছে, তবে সাধারণ অবস্থায় পূর্ণ মোহর না দিয়ে কিছু অংশ দেওয়াই ভালো।

• স্ত্রীর মোহর ফাঁকি দেওয়া অতি হীন কাজ। কারণ এর অর্থ দাঁড়ায়, ভোগ করতে রাজি, কিন্তু বিনিময় দিতে রাজি নয়। যে স্বামীর মনে স্ত্রীর মোহর আদায়ের ইচ্ছাটুকুও নেই হাদিস শরিফে (মাজমাউজ জাওয়াইদ: ৪/৫২২-৫২৩) তাকে বলা হয়েছে ‘ব্যাভিচারী’।

• স্বামী যদি চাপ দিয়ে বা কৌশলে পূর্ণ মোহর বা কিছু অংশ মাফ করিয়ে নেয়, তাহলে আল্লাহর বিচারে তা মাফ হবে না। (আহকামুল কোরআন, জাসসাস: ২/৫৭-৫৮; তাফসিরে ইবনে কাছির: ১/৪৪২; বয়ানুল কোরআন: ২/৯৩; তাফসিরে উসমানি, পৃষ্ঠা: ১০০)।

তিন. কারো মনে হতে পারে, জীবনে তো কতো কিছুই স্ত্রীকে দিয়েছি। সবকিছু তো আমার উপর অপরিহার্যও ছিল না। সুতরাং বিয়ের সময় সামান্য যে কিছু টাকা ধার্য করা হয়েছিল তা নিয়ে এত চুলচেরা হিসাব-নিকাশের কী প্রয়োজন?

এই ধারণা কোনোভাবেই ঠিক নয়। কেননা মোহর আদায়ের নিয়ত ছাড়া নিছক উপহার হিসেবে যা কিছু দেওয়া হয় তার দ্বারা মোহর আদায় হয় না। আর পাওনাদারের পাওনা পরিশোধের ক্ষেত্রে চুলচেরা হিসাব করা দোষের বিষয় নয়; বরং হক আদায়ে সতর্কতার কারণে তা প্রশংসনীয়ও বটে। তেমনি পাওনাদারও যদি চুলচেরা হিসাব করে পাওনা বুঝে নিতে চায় তাহলেও তার নিন্দা করার অবকাশ নেই। কারণ এটা তার অধিকার। তবে কোরআন-হাদিসে উভয় পক্ষকেই সহজ ও উদার হওয়ার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।

মোহরানা পরিশোধ ছাড়া স্ত্রীর সাথে রাত্রিযাপনের হুকুম কী?

দেনমোহর বিয়ের আকদের পর প্রদান করাতে কোন সমস্যা নেই। তবে সহবাসের পূর্বে প্রদান করাই উত্তম। তবে যদি স্ত্রী দেনমোহর প্রদান করা ছাড়াই সহবাসের অনুমতি প্রদান করে তাহলে কোন সমস্যা নেই। বাকি স্ত্রী দেনমোহর প্রদান করা ছাড়া প্রথম সহবাসের পূর্বে বাঁধা প্রদান করতে পারবে। কিন্তু একবার সহবাস হয়ে গেলে আর বাঁধা দিতে পারবে না। কিন্তু স্বামীর জিম্মায় দেনমোহর আদায় না করলে তা ঋণ হিসেবে বাকি থেকে যাবে।

স্ত্রী যদি উক্ত দেনমোহর মাফ না করে, আর স্বামীও তা পরিশোধ না করে, তাহলে কিয়ামতের ময়দানে স্বামীর অপরাধী সাব্যস্ত হবে। তাই দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করে দেয়া জরুরী।

আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর। [সূরা নিসা,আয়াত - ৪]

তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর। (সূরা মায়িদা, আয়াত - ৫)

অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা গ্রহণ করবে,তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ। (সূরা নিসা,আয়াত - ২৪)

তোমরা, এই নারীদেরকে প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের অপরাধ হবে না। (সূরা মুমতাহিনা, আয়াত - ১০)


ছবি - pinterest.com

দেনমোহর কি কখনো মাফ হয় -

স্ত্রী দেনমোহর মাফ করতে পারে। যদিও স্বামী চাইল আর স্ত্রী সাথে সাথে তা মাফ করে দিলো, বিষয়টা এত সহজ নয়। সহজে দেনমোহর মাফ হয় না। দেনমোহর মাফ করার সময় স্ত্রীর পূর্ণ সম্মতি থাকতে হবে। একইসাথে তাকে স্বেচ্ছায়, কোন রকম প্ররোচণা ছাড়া মুক্তমনে দেনমোহর মাফ করতে হবে।একজন উদার ও ন্যায়পরায়ন স্ত্রী স্বামীর আর্থিক ও বাস্তব প্রতিকূলতা বুঝে ইচ্ছে করলে তার মোহরের দাবি ত্যাগও করতে পারেন। কিন্তু একবার যদি মোহর নির্ধারিত হয়ে যায় বিশেষত লিখিত আকারে, তবে সে মোহর স্বামীকে অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। কোন স্ত্রীকে তার স্বামী বা অন্য কেউ মোহরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কোন প্রভাব খাটাতে বা চাপ প্রয়োগ করতে পারবে না।

সবশেষে,স্বামী-স্ত্রী মিলেই একটি সংসারের শুভসূচনা হয় এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা-সম্মান-মর্যাদা ও ভালবাসার মাধ্যমেই একটি দাম্পত্য জীবন সফল হয় এবং পরিবার সুখের হয়। আর এটার শুরু হয় বিয়ের দিন থেকে এবং উভয়ের প্রতি উভয়ের কাজ-কর্মের মাধ্যমেই তা প্রতিষ্ঠিত হয়।যার শুরুটা হতে পারে দেনমোহর পরিশোধের মাধ্যমে।আর দেনমোহর স্ত্রীর হক এবং এর সাথে তার সম্মান-মর্যাদা জড়িত। আর স্ত্রীকে সম্মান-মর্যাদা দিলে তা পরোক্ষভাবে স্বামীর সম্মান-মর্যাদাই বৃদ্ধি করে। তাই সকল স্বামীকে তার স্ত্রীর দেনমোহর স্ত্রীকে ভালবেসে এবং তার সম্মান-মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রেখে পরিশোধ করা উচিত যা তাকে স্ত্রীর নিকট করে তুলবে সম্মানিত এবং সংসার হয়ে উঠবে সুখের ও আনন্দময়।

চলবে -
===========================================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -

মানব জীবন - ৫ "বিবাহ" - Click This Link
মানব জীবন - ৪ " মাতৃত্ব " - Click This Link
মানব জীবন - ৩ Click This Link
"নারী স্বাধীনতা বনাম নারী(জরায়ু)'র পবিত্রতা "
মানব জীবন - ২ " মাতৃগর্ভ (জরায়ু)"- Click This Link
মানব জীবন - ১ "মানুষের জন্ম প্রক্রিয়ার ইতিকথা"- Click This Link


উৎসর্গ - এ পর্বটি সকল স্বামী-স্ত্রীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত যাতে আমরা সকলেই এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান বুঝতে পারি এবং এ ব্যাপারে নিজ নিজ অবস্থান থেকে করণীয় কাজ করতে পারি। মহান আল্লাহপাক আমাদের জীবনে সকল ধর্মীয় বিধিবিধান মেনে চলার তওফিক দান করুন।

মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৪৭

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম।
অনেক ভুল ধারনা নিয়া ছহিলাম এতোদিন। ধন্যবাদ।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৫৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ বোন কবিতা ক্থ্য , আপনার প্রথম মন্তব্যের জন্য।

আসলে আমরা সবাই অনেক কিছুই হয়ত জানি তবে যখন এ বিষয়ে বিশদ জানার চেষ্টা করা হয় তখন আমরা বুঝতে পারি আমরা কতটা কম জানি। আর আমারও জানার প্রচেষ্টাতেই এ চেষ্টা।

আবারো আপনাকে ধন্যবাদ ,এত দীর্ঘ পোস্ট পড়ার জন্য ।

২| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:০৮

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: আমি আসলে বোন না।
আমি আপনার ভাই।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:২৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ভাইরে আমি আবারো লিংগ :P হরনের দোষে দোষী। মাপ করে দেন ভাই।কান মলে দিলুম।আর হবেনা ইরকম।

দেখেন ,প্রথমে ঢুকিচেপা,পরে পদ্ম পুকুর এখন আবার আপনি! কি কমু কন? নামগুলি এমনভাবে নেয়া নাম দেখলেই মনে সুন্দরী বোনদের ছবি মনে চলে আসে আর তাই বোন বলা।

এখন দেখা যাচছে ,কাউকে ভাই বা বোন বলার আগে আরো ভালভাবে জেনে বলতে হবে বা ভাই-বোন বলা উহ্যই রাখতে হবে ভবিষ্যতে।

৩| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: ইসলামে যে কত অদ্ভুত নিয়ম আছে!!

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৩৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

ইসলাম মানব জাতির জন্য পরিপূর্ণ জীবন বিধান। এতে মানব জীবনের জন্ম থেক মৃত্যুর সময় পর্যন্ত যা যা দরকারী তার সবই বলা আছে । আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হল সেগুলো যথাযথ ভাবে জানার চেষ্টা করা ।আর এ সব নিয়ম কানুন অদ্ভুত নয় তা আমাদের সবার জন্য প্রয়োজনীয়ও বটে।

৪| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:২৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: তাসীনের বাপের কাছে আমার দেনমোহর পাওয়া আছে মনে হয়। চাইতে হইবে... ফান্দে ফালামো বদ বেটা বেড়াইতে নিয়া যায় না :) হাহাহাহা । সুন্দর পোস্টের জন্য জাজাকাল্লাহ খাইরান।

আমি জেনারেল ছিলাম। কাল একটা পোস্ট দিছিলাম । প্রথম পেইজে আসে নাই। তাই কেউ পড়ে নাই , মনে দুঃখ জমা হইছে। অবশ্য এখন সেফ হয়েছি। আফসোস আমারে মাইনসে দুঃখ দেয় :(

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৫১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ বোন কাজী ফাতেমা ছবি , আপনার চমতকার :P মন্তব্যের জন্য।

তাসীনের বাপ "পতিদেবতা" র কাছে পাওনা থাকলে আজি বসে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনায় মীমাংসা করে নিবেন।আসলে নারীরা এ ব্যাপারে বলেনা পতিদেবতা ব্যাপারটা কিভাবে নিবে তা ভেবে আর পতি দেবতা ভাবে "কইছি ত কইছি,বিয়ার সময় কইছি।মানুষ কত কতাই কয় জীবনে, তাই বলে কি টেহা দিতে অইব নাকি?" -ইডা যেন না হয়।

কথা বলে নিজেদের মাঝে মীমাংসা করে নেয়া ভাল।কারন কতদিন হায়াত আছে তা আমরা জানিনা এবং মউত যে কোন সময় আসতে পারে। আর এ দায় বিষম দায়। তাই একে অপরের উপর রহম করে সম্পূর্ণ দায়মুক্তি নেয়া-দেয়া উচিত।

আর বদ বেডা (ভাইকে বলব, সময় করে ঘুষ দিয়ে :-B বেড়াইতে নিয়ে যেতে যা দায়মুক্তি পেতে তাকে সহায়তা করবে)।

আপনি কেন জেনারেল হলেন বোন, কোন পাপের (পোস্ট, মন্তব্য)র কারনে? যাক ,শেষপর্যন্ত সেইফ হয়েছেন তার জন্য শুকরিয়া।

৫| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের রাগ না করে উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৫৬

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই , আপনার প্রতিমন্তব্যের জন্য এবং আবারো আসার জন্য।

আমি এতদিনে এটা জানি যে, আপনার যে পোস্ট ভাল লাগে সেখানে আপনি মন্তব্য করার পরও আবার আসেন এটা ভাল দিক।এতে করে যা হয় ,এ বিষয়ে অপরের/পারস্পরিক ভাবনাগুলি জানা ও বুঝা যায়।

আর রাগ ! না ভাই । রাগ নয় বরং মন্তব্যের জবাব খুশি মনেই এবং প্রাসংগিক ভাবে দিতে চেষ্টা করি। কারন এটা লেখকের দায় এবং পাঠকের অধিকার।

৬| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:১১

করুণাধারা বলেছেন: মোহরানা মুসলিম মেয়েদের জন্য আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত অধিকার। আজকাল সমাজে দুটো জিনিস দেখা যায়, ১) কেবলমাত্র বিবাহবিচ্ছেদ হলেই স্বামী স্ত্রীকে মোহরানা প্রদান করেন এবং ২) অতি উচ্চ হারে মোহরানা নির্ধারিত করা হয় যা দেয়া স্বামীর পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়ে। আপনার হয়তো মনে আছে, চট্টগ্রামে একজন ডাক্তার পঁয়ত্রিশ লাখ টাকা মোহরানার টাকা দিতে অসমর্থ হয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক কিছু জানা হল।

আমার বিয়ের মোহরানা এমন ভাবে নির্ধারিত হয়েছিল যে তা আমার স্বামী শোধ করতে পারেন, তিনি শোধ করেছিলেন। কোন অস্বাভাবিক বেশি মোহরানা চাওয়া হয় নি।

খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন। অনেক ধন্যবাদ জানবেন।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:১৬

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ বোন করুণাধারা , আপনার চমতকারমন্তব্যের জন্য।

মোহরানা ব্যাপারটা এমন কখনো ফ্যাশনেবল হওয়া উচিত নয় বরং তা সহনীয় এবং পরিশোধযোগ্য মাত্রায় হওয়া উচিত। অবশ্য এখন আমাদের সমাজের একটা প্রবণতা চালু হয়েছে উচ্চ হারের দেনমোহর ।এর ফলে অনেক এটাকে পরোশোধের নয় সামাজিক মর্যাদার বিষয়ে পরিণত করে ফেলছেন।অথচ তা এমন হওয়া উচিত নয়।এ অনেকটা "কোরবানীর সবচেয়ে দামী গরু"র মত হয়ে যাচ্চে। অথচ কোরান-হাদিসে আসছে "সেই নারী উত্তম ও শ্রেষ্ঠ যাকে প্রস্তাব দেয়া সহজ ও যার দেনমোহর অল্প "।

আমাদের সমাজে বর্তমানে উচ্চ হারের দেনমোহর এক সামাজিক সমস্যা হিসাবে আর্বিভুত হয়েছে।আর এর ফলে অনেক পরিবারেই ভাংগন তথা নানা অশান্তির কারন হচচে।এ ব্যাপারে নর-নারী উভয়ের এবং তাদের পরিবারেরও অনেক কিছু করার অবকাশ আছে।আর উচ্চ হারের দেনমোহর বিবাহিত জীবনের সুখের ওয়ারেন্টি নয় বরং তা সমস্যার কারন।বিবাহিত জীবনের সুখ ও টেকসই হওয়ার উভয়ের সহযোগীতা ও ভালবাসা জরুরী।

ভাই যেহেতু আপনার দেনমোহর শোধ করেছেন তার জন্য শুকরিয়া এবং নিজেদের বংশধরদের সময়েও স্বাভাবিক মোহরানাই ধার্য করতে চেষ্টা করবেন যাতে পরিশোধের সামর্থ্যের অভাবে ব্যাভিচারী না হতে হয়।

বোন আবারও আপনাকে ধন্যবাদ সময় নিয়ে পোস্ট পড়ার জন্য।

৭| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:২১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: বর্তমানে মেয়ের পক্ষ উচ্চ হারে মোহরানা নির্ধারণ করার জন্য চাপ দেয় । এতে অনেকে মেনে নেয়। আমি অনেকে মোহরানা টাকা বাবত স্ত্রীর নামে জীবন বীমা করে করে টাকা জমা করে তা কি সঠিক হবে ভাই

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:২৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নেওয়াজ আলি ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

এখন আমাদের সমাজের এরকম একটা প্রবণতা চালু হয়েছে উচ্চ হারের দেনমোহর ।এর ফলে অনেকই এটাকে পরিশোধের নয় সামাজিক মর্যাদার বিষয়ে পরিণত করে ফেলছেন।অথচ তা এমন হওয়া উচিত নয়।এ অনেকটা "কোরবানীর সবচেয়ে দামী গরু"র মত হয়ে যাচ্চে। অথচ কোরান-হাদিসে আসছে "সেই নারী উত্তম ও শ্রেষ্ঠ যাকে প্রস্তাব দেয়া সহজ ও যার দেনমোহর অল্প "।

আর আপনার স্ত্রীর দেন মোহর বাবদ যা স্থির হয়েছে তা যদি তা আপনি তাকে এভাবে বলে দেন যে ,এ জীবন বীমার টাকাটা আমি তোমার দেনমোহর বাবদ "দিলাম এবং আপনার স্ত্রী যদি মেনে নেন এবং আপনাকে মাফ করে দেন তাহলে আপনি এ দেনমোহরের দায় থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন। এখানে একটা বিষয় , তা যেন শুধু বলার জন্য বলা না হয় ।তাকে এ বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে যে, বীমার টাকাটা সম্পূর্ণভাবে তারই এবং সে চাইলে এ টাকাটার ব্যাপারে যে কোন কিছু করতে বা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

যদিও দিনশেষে টাকাটা আপনার সংসারেই খরছ করবে,তবুও এটা তার মানষিক প্রশান্তির জন্য জরুরী।

৮| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৫

ঢাকার লোক বলেছেন: ৭ নম্বরে নেওয়াজ আলীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে একটা কথা, আলেমগন জীবন বীমাকেই একজন ঈমানদার মুসলমানের জন্য জায়েজ মনে করেন না।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৫৬

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ ঢাকার লোক ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

জীবন বীমাকে কোন কোন আলেম নাজায়েজ বলেছেন আবার কেউ কেউ জায়েজ বলেছেন। আমরা কেউ জানিনা কখন কোথায় আমাদের জীবনের ইতি ঘটবে। স্বাভাবিক বা আকষ্মিক মৃত্যুর কারণে অনেক সময় পরিবার ঝুঁকিতে পরে। তাই মৃত্যু পরবর্তি সময়ে পরিবার যেন একটি অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা পায়, সে আশায় অনেকে জীবন বীমা করে থাকে। জীবন বীমার নিয়ম অনুযায়ী জীবিত থাকা অবস্থায় কিস্তিতে নির্দিষ্ট হারে প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে হয়।

তবে এক্ষেত্রে যদি এভাবে দেখা যায় তবে -

** বীমা একটি ব্যবসা, আর ইসলামী বীমা হলো শরীয়াহ্ ভিত্তিক জায়েজ ব্যবসা । আল-কুরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন- “আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করে দিয়েছেন এবং সুদকে করে করেছেন হারাম”( সুরা বাকারা ,আয়াত - ২৭৫)। অতএব এ হালাল পেশায় নিয়োজিত থেকে হালাল রুজি অর্জন করা মুসলমান হিসাবে আমাদের একান্ত কর্তব্য্ (ফরজ)।

** ইসলাম গবেষণা ভিত্তিক ধর্ম, এজতেহাদের মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান ইসলাম দিয়েছে। এ এজতেহাদের মাধ্যমে বীমা ও ইসলাম সম্মত হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। ইসলাম সঞ্চয় করতে, খাওয়া পরায় হিসাবী ও মিতব্যয়ী হওয়া জন্য উপদেশ দিয়েছে। আল্লাহর সৃষ্ট জীব পিঁপড়ারও জীবনে সঞ্চয়ের অভ্যাস লক্ষ্য করা যায়। ফলে মানুষের জন্য জীবন বীমা, সঞ্চয় অভ্যাস গড়ে তোলার একটি চমৎকার পন্থা। জনৈক ইসলাম বিশেষজ্ঞ কোরআন ও হাদীসের বাণী বিশ্লেষণ করে মন্তব্য করেন যে সঞ্চয় হল পরিজনের জন্য ব্যয়, উত্তরাকারীর জন্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, আপৎকালের জন্য সংস্থানের ব্যবস্থা এবং এব্যবস্থায় “জীবন বীমা হচ্ছে ইসলামের নির্দেশ ও উপদেশ সঙ্গে সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ”।

** কাজেই জীবন বীমা ইসলাম বিরোধী নয় বরং তা পৃথিবীর এবং সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের মধ্যে যারা এতিম, বিধবা, বৃদ্ধ এবং জ্বরাগ্রস্থ তাদেরকে অর্থনৈতিক পরিচর্যা করার একটি মহৎ প্রতিষ্ঠান। এ মহৎ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষের সেবা করার জন্য মুসলিম ও অমুসলিম বিশ্বে বেশ কয়েকটি বীমা কোম্পানী জীবন বীমা ব্যবসা করছে।
======================================================
আবার ,জীবন বীমাতে সুস্পষ্ট সুদ পাওয়া যায়। যেহেতু এতে যে পরিমাণ অর্থ জমা দেয় হয় বিনিময়ে তার চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণ করা হয়। আর শরীয়তের পরিভায়ায় সরাসরি আর্থিক লেনদেনে কমবেশি মুনাফা চুক্তিকেই তো সুদ বলা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ারা পরিষ্কার ভায়ায় সুদ হারাম ঘোষণা করেছেন।

তবে বর্তমানে শতভাগ শরীয়া ভিত্তিক কোন প্রতিষ্ঠান চলেনা এবং ব্যবসা সহ রাষ্ট্রীয় সব কিছুই সুদভিত্তিক লেনদেনে চলে ।তাই তাকে শতভাগ হারাম বলা মুশকিল। তবে কেউ চাইলে তার বিনিয়োগের চেয়ে বেশী যে টাকা পাবে তা দান করে দিতে পারে।এতে সে হারাম থেকে রক্ষা পাবে।

৯| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৪৫

রানার ব্লগ বলেছেন: দেন মোহর ব্যাপারটা আমার কাছে মনে হয় পন এর মত। বিয়ে একটি সুন্দর সামাজিক উৎসব। দুইটা আত্মার মিলনের সামাজিক স্বিকৃতি এখানে অর্থ দিয়ে আমি আমার জীবন সাথি কিনে নিলাম এমন মনে হয়।

দেনমোহর কে অনেকেই বলতে চান নারীর নিরাপত্তা, আমার কাছে একজন মানুষ যদি অনিরাপদ থাকে সে কি সামান্য অর্থের বিনিময়ে নিরাপত্তা কিনলেন কি ভাবে?

সম্পর্কে অর্থের ঝংকার এলে সেটা আর সম্পর্ক থাকে না তা হয়ে যায় চুক্তি। আমি কিছু অর্থের বিনিময়ে একজন পরিপূর্ণ নারী কিনে নিলাম, সরাসরি দাসী বললেই ভালো হয়।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:১৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রানার ব্লগ ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

মোহরানা স্ত্রীর প্রতি সম্মান ও অনুরাগ প্রকাশের একটি মাধ্যম। স্ত্রী তাঁর মা-বাবা, ভাই-বোন ও আত্মীয়-স্বজন ত্যাগ করে স্বামীর ঘরে আসেন। এই কঠিনতম ত্যাগ স্বীকার করে তিনি আসেন অতিথির বেশে। তাই ইসলামী শরিয়ত মোহরানা ও বিভিন্ন উপঢৌকন দিয়ে এই অতিথিকে বরণ করার নির্দেশ দিয়েছে।এখানে কিনার বিষয় নয়,নারীর মর্যাদার বিষয় এবং তা নারীর সৌন্দর্য, মর্যাদা ও প্রভাব প্রতিষ্ঠা করে।

ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে বিবাহ একটি চুক্তি। ইসলাম এই চুক্তির শর্ত হিসেবে অর্থ দেওয়ার কথা বলেছে। কেননা অর্থবিনিময় চুক্তিকে সুদৃঢ় করে।অর্থকড়ি পার্থিব জীবনের শোভা ও সৌন্দর্যের পরিচায়ক। আল কোরআনে বলা হয়েছে,"সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য। ‘স্থায়ী সৎকর্ম’ তোমার রবের কাছে পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং আশান্বিত হওয়ার জন্যও সর্বোৎকৃষ্ট। (সুরা কাহফ, আয়াত -৪৬)।

এখন আপনি দেনমোহর দিয়ে দাসী কিনে আনবেন না দেনমোহর দিয়ে বউকে সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে বরন করবেন তা সম্পূর্ণভাবে আপনার ব্যাপার।

১০| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:১৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: দেন মোহর সময় মত না দিলে কোন জরিমানার বিধান কি আছে?

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:১৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

দেন মোহর সময় মত না দিলে কোন জরিমানার বিধান কি আছে?

** দেনমোহর পরিশোধের সময়সীমা নির্ধারিত নেই তবে ,দেনমোহর বিয়ের আকদের পর প্রদান করাতে কোন সমস্যা নেই। তবে সহবাসের পূর্বে প্রদান করাই উত্তম। তবে যদি স্ত্রী দেনমোহর প্রদান করা ছাড়াই সহবাসের অনুমতি প্রদান করে তাহলে কোন সমস্যা নেই। বাকি স্ত্রী দেনমোহর প্রদান করা ছাড়া প্রথম সহবাসের পূর্বে বাঁধা প্রদান করতে পারবে। কিন্তু একবার সহবাস হয়ে গেলে আর বাঁধা দিতে পারবে না।

কিন্তু স্বামীর জিম্মায় দেনমোহর আদায় না করলে তা ঋণ হিসেবে বাকি থেকে যাবে। পরে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনায় যে কোন সময় পরিশোধ করা যাবে।

১১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:২২

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: দেনমোহর নারীর লজ্জা স্থান ভোগের মূল্য।কোরান হাদিসে তাই বলা আছে।এটা নারীর জন্য অপমান কর ।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:২৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নুরুলইসলা০৬০৪ ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

দেনমোহর নারীর লজ্জা স্থান ভোগের মূল্য।কোরান হাদিসে তাই বলা আছে।এটা নারীর জন্য অপমান কর ।

** দেনমোহর মূলত একটি সম্মানী - যা স্বামী তার স্ত্রীকে দিয়ে থাকে।যার মূল উদ্দেশ্যই হলো নারীকে সম্মান ও মর্যাদা দেওয়া। এটা শুধু কথার কথা নয়। যা শুধু ধার্য করা হয়, পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা থাকবেনা ,বরং শরিয়তের উদ্দেশ্য হলো যখন কোনো পুরুষ স্ত্রীকে ঘরে আনবে তখন তাকে মর্যাদার সঙ্গে আনবে এবং এমন কিছু উপহার দেবে, যা তাকে সম্মানিত করে।শরিয়তের দৃষ্টিতে এটা এতটাই অপরিহার্য যে, মোহর ছাড়া বিয়ে হয় না।

স্ত্রীর মোহর ফাঁকি দেওয়া অতি হীন কাজ। কারণ এর অর্থ দাঁড়ায়, ভোগ করতে রাজি, কিন্তু বিনিময় দিতে রাজি নয়। যে স্বামীর মনে স্ত্রীর মোহর আদায়ের ইচ্ছাটুকুও নেই হাদিস শরিফে (মাজমাউজ জাওয়াইদ: ৪/৫২২-৫২৩) তাকে বলা হয়েছে ‘ব্যাভিচারী’।
ইসলামী শরিয়তে মানুষের প্রতিটি অঙ্গের একটি আর্থিক মূল্য আছে, যদিও মানব অঙ্গ-প্রতঙ্গ অমূল্য সম্পদ। তথাপি জাগতিক নিয়মে কেউ কারো অঙ্গহানি করলে এর বিনিময় প্রদান জরুরি। আর বিবাহের মাধ্যমে যেহেতু পুরুষের মাধ্যমে নারীর এক ধরনের অঙ্গহানি হয়, তাই ইসলামী শরিয়ত এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে মোহরানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

আর দেনমোহর নারীর জন্য অপমান কর নয় বরং তা নারীর জন্য সম্মান ও মর্যাদার।

১২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:০৪

রামিসা রোজা বলেছেন:

গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য ধন্যবাদ।
দেনমোহরের ধার্য ইসলামিক নিয়মনীতি কেউ মানছেন আবার
কেউ অযথা জোরপূর্বক চাপিয়ে দিচ্ছেন এটা খুবই দুঃখজনক।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৩১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ বোন রামিসা রোজা , আপনার মন্তব্যের জন্য।

কষ্টকরে পড়ার জন্য আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।

ইসলামের সকল নিয়ম-নীতি মানবজাতির সার্বিক কল্যাণ ও মংগলের জন্য।তবে কেউ কেউ বা আমরা বেশীরভাগ মানুষই যা নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করে তা মানি বা যা নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করেনা তা মানিনা বা অংশবিশেষ মানি । এটাই সকল সমস্যার কারন।
অথচ ,আমাদের সকলেরই ধর্মের সকল প্রকার নিয়ম-নীতি মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে

১৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৩৭

রানার ব্লগ বলেছেন: দেনমহর এই জন্যই নির্ধারণ হয়েছে কিছু বিকৃতমনা বুড়া হাবরা প্রচুর অর্থ দিয়ে কিশোরী বিয়ে করতে পারে। আরব দেশের বুইরা গুলো অর্থের বিনিময়ে অল্প বয়সী মেয়েদের ভোগ করার জন্য বিয়ে করে।


স্ত্রী কে সন্মান জানাত্র তাকে অর্থ দিতে হবে এটা কোন ধরনের কথা। সন্মান শ্রধ্যা আর্থে আসে???


আমার দেনমোহর দিতে সমস্যা নাই, আমি দেনমোহর দিয়ে একজন নারী কিনে তার সাথে যথাচ্ছা ব্যাবহার করবো। she ia my paid dog!!

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রানার ব্লগ ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

- দেনমহর এই জন্যই নির্ধারণ হয়েছে কিছু বিকৃতমনা বুড়া হাবরা প্রচুর অর্থ দিয়ে কিশোরী বিয়ে করতে পারে। আরব দেশের বুইরা গুলো অর্থের বিনিময়ে অল্প বয়সী মেয়েদের ভোগ করার জন্য বিয়ে করে।

** আপনার দর্শন ঠিক কি বেঠিক এ ব্যাপারে আমার মন্তব্য নেই।আপনি যেভাবে ইচছা ব্যাখ্যা করতে পারেন এটা আপনার ইচ্ছা।

১৪| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৭:৫৩

রানার ব্লগ বলেছেন: স্ত্রীর মোহর ফাঁকি দেওয়া অতি হীন কাজ। কারণ এর অর্থ দাঁড়ায়, ভোগ করতে রাজি, কিন্তু বিনিময় দিতে রাজি নয়। যে স্বামীর মনে স্ত্রীর মোহর আদায়ের ইচ্ছাটুকুও নেই হাদিস শরিফে (মাজমাউজ জাওয়াইদ: ৪/৫২২-৫২৩) তাকে বলা হয়েছে ‘ব্যাভিচারী’।

আপনার করা উক্তির এই লাইন খানা সকল বিবাহিত নারী পুরুষের জন্য যথেষ্ট আপত্তি কর ও অপমান জনক। স্বামী স্ত্রীর বন্ধন ভালোবাসার বন্ধন। তাদের মধ্যে ইন্টিমিসি যাই ঘটুক তা দুই জনার প্রতি ভালো লাগা ভালোবাসা প্রেম থেকে হয়ে থাকে। আমি আমার স্ত্রীর কাছে যাবো বিনিময়ের মাধ্যমে??!!!! স্ত্রীকে বলবো এই নাও ৫ লক্ষ টাকা এই বার আসো তোমারে হজম করি। বাহ কি যুক্তি। যদি অর্থ দিয়ে স্ত্রী হালাল করতে হয় পতিতারা কি দোষ করলো?? এদের তাহলে মানুষ বাজে বলে কেনো? তারা অর্থের বিনিময়েই তাদের যৌনতা দান করেন।

মাত্র একবারে টাকা দিয়ে সারাজীবনের জন্য আপনার ভাষায় ভোগ করবো এটা কেমনে হয়, এক কাজ করলে হয় না দেন মোহর টাকা ৩০ বছরের সাথে ভাগ দিয়ে যত আসে প্রতিবার আমি আমার স্ত্রীর কাছে গেলাম আর তার হাতে টাকা গুজে দিয়ে বললাম আসো আমি আমার স্বামীর দ্বায়িত্ব পালন করলাম তোমাকে টাকা দিলাম এই বার স্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালন কর। স্বামীর কাজ ভোগ করা স্ত্রীর কাজ ভোগে সহায়তা করা। অদ্ভুত !!!

স্ত্রীর সাথে যৌন সম্পর্ক কে আপনি ভোগ বা লালোসার সাথে গুলিয়ে ফেলেছেন। আমি বা আমরা আমাদের স্ত্রীর কাছে যাই ভালোবাসার টানে, লালসা বা ভোগের জন্য না।

এই সব ঘোড়ার ডিমের কথা বার্তার জন্যেই নারী নির্যাতন বারছে। স্ত্রী মানে ভোগের বস্তু, এই চিন্তা থেকে বাহিরে আসুন। স্ত্রী টা মানুষ, আপনার শরীরে যা আছে তার শরীরে ঠিকা তাই আছে অতিরিক্ত হলো বাচ্চা ধারন থলি।

দেনমহোর দিন কোন সমস্যা নাই কিন্তু তা যে ভোগের জন্য দিবেন এটা সঠিক না। স্ত্রীর হাতে অর্থ তুলে দিন যাতে সে আপনার সাথে থেকে নিজেকে অসহায় না মনে করে, সে যেন নিজের জন্য কিছু করতে পারে তা যাই হোক। দেনমোহর স্ত্রীর আর্থিক নিরাপত্তা। আমার অবর্তমানে যেন তিনি অসহায় না হয়ে পরেন।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ রানার ব্লগ ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

** আপনার দর্শন ঠিক কি বেঠিক এ ব্যাপারে আমার মন্তব্য নেই।আপনি যেভাবে ইচছা ব্যাখ্যা করতে পারেন এটা আপনার ইচ্ছা।আপনার জীবন,আপনার কর্ম এবং ফল ভোগ করবেন আপনি।আপনি,আমি তাই পাবো যা আপনি-আমি করব ।আপনার ধারনা ভাল কি খারাপ বা এর বিচারের দায়িত্ব ও কর্তব্য স্রষ্টার ,আমাদের নয়।

১৫| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০১

এভো বলেছেন: গ্রন্থের নামঃ সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
হাদিস নম্বরঃ [3284]
অধ্যায়ঃ ২৬/ নিকাহ (বিবাহ)
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ ৪২. বিবাহের শর্ত
৩২৮৪. ঈসা ইবন হাম্মদ (রহঃ) … উকবা ইবন আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সৰ্বাধিক প্রয়োজনীয় শর্ত হলো তোমরা যা দ্বারা মহিলার লজ্জাস্থান হালাল করবে, তা আদায় করা অর্থাৎ মোহর আদায় করা।
It was narrated from ‘Utbah bin ‘Amir that the Messenger of Allah said: “The conditions that are most deserving of fulfillment, are those by means of which the private parts become allowed to you.”
তাহক্বীকঃ সহীহ। ইবন মাজাহ ১৯৫৪, মুখতাসার মুসলিম ৮০৪, সহীহ জামে’ আস-সগীর ১৫৪৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

গ্রন্থের নামঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
হাদিস নম্বরঃ [4929]
অধ্যায়ঃ ৫৫/ তালাক
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ ২০৭২. লি‘আনকারীদ্বয়কে ইমামের একথা বলা যে, নিশ্চয় তোমাদের কোন একজন মিথ্যাবাদী, তাই তোমদের কেউ তাওলা করতে প্রস্তুত আছ কি ?
৪৯২৯। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি লিআনকারীদ্বয় সম্পর্কে ইবনু উমরকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লিআনকায়ীদ্বয়কে লক্ষ্য করে বলেছিলেনঃ তোমাদের হিসাব গ্রহনের দায়িত্ব আল্লাহরই। তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। তার (স্ত্রীর) উপর তোমার কোন অধিকার নেই। লোকটি বললঃ তবে আমার মাল (মোহর হিসেবে প্রদত্ত)? তিনি বললেনঃ তুমি কোন মাল পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও তাহলে এর বিনিময়ে তুমি তার লজ্জাস্থানকে হালাল করে নিয়েছিলে। আর যদি তার উপর মিথ্যারোপ করে থাক তবে তো মাল চাওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।
সুফিয়ান বলেনঃ আমি এ হাদীস আমর (রাঃ) এর কাছ থেকে মুখস্থ করেছি। আইয়্যুব বলেনঃ আমি সাঈদ ইবনু জুবায়র-এর কাছে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি ইবনু উমর (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ এক ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে লিআন করল (এখন তাদের বিধান কি?) তিনি তার দু’আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ সুফিয়ান তার তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল ফাঁক করলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ আজলানের এক দম্পত্তির বৈবাহিক সম্পর্ক এভাবে ছিন্ন করে দেন এবং বলেনঃ আল্লাহ তাআলা অবহিত আছেন যে, তোমাদের একজন অবশাই মিথ্যাবাদী। সুতরাং কেউ তাওবা করতে সম্মত আছ কি? এভাবে তিনি তিনবার বললেন। সুফিয়ান বলেনঃ আমি তোমাকে যেভাবে হাদীসটি শোনাচ্ছি এভাবেই আমি আমর ও আইয়্যুব (রাঃ) থেকে মুখস্থ করেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৬

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ এভো ভাই , আপনার মন্তব্যের এবং রেফারেন্সের জন্য।

মানার হলে মানতে চাইলে মানা সম্ভব আর মানতে না চাইলে যত রেফারেন্স দেন কোন কাজ হবেনা।এ নির্ভর করে মানষিকতার উপর।
আল্লাহ আমাদের সকলকে ধর্মের সকল নিয়ম-নীতি মেনে চলার তওফিক দান করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.