নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ" - যার শুরুটা কালেমা বা ঈমানে। যা শুধু মুখে বলা নয়, অন্তরে বিশ্বাস ও কর্মে পরিণত করার বিষয়।(ঈমান ও আমল - ৪)।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:২৯


ছবি-viewer.com

আল্লাহ তাআলার নিকট মনোনীত একমাত্র ধর্ম ইসলাম। ইসলাম যে রুকন বা স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত সে সম্পর্কে মুসলিম উম্মাহর সুস্পষ্ট ও স্বচ্ছ ধারণা থাকা একান্ত আবশ্যক। ইসলামের রুকন বা স্তম্ভগুলোর সঠিক ও সুস্পষ্ট ধারণা না থাকলে সব মুসলমানই হবে ক্ষতিগ্রস্ত।হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ইসলামের রুকন বা ভিত্তি বা স্তম্ভ পাঁচটি। এ সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসুল। নামাজ প্রতিষ্ঠা করা। জাকাত আদায় করা। হজ করা। রমজান মাসে রোজা পালন করা। (বুখারি)

আলোচ্য হাদিসের আলোকে বুঝা যায় যে, একজন মুসলমানের জন্য ইসলামের প্রথম রুকনটিই তাঁর মূল ফাউন্ডেশন। যে ব্যক্তি ঈমানের ফাউন্ডেশনের ওপর মনে প্রাণে বিশ্বাস স্থাপন করবে। ওই ব্যক্তির জন্যই পরবর্তীতে বাকী ৪টি কাজ ইসলামের রুকন হিসেবে পরিগণিত হবে। ইসলাম হলো ,মনে প্রাণে আল্লাহর একত্ববাদের স্বীকৃতি দেয়া। মুখে মুখে নয় বরং ইবাদতের মাধ্যমে তাঁর আনুগত্য করা। আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা থেকে বিরত থাকা এবং ধর্মের সকল বিধি-বিধান মেনে চলা।

ইসলাম ধর্মের মূল স্তম্ভ পাঁচটি । এই পাঁচটি বিষয়ের উপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ।একই সাথে প্রথম তিনটির উপর আমল করা সকল মুসলমানের জন্য ফরজ এবং শেষ দু'টি সামর্থ্য অনুযায়ী আদায় করা ফরজ বা অবশ্য পালনীয় কাজ।৫টির একটিকেও যদি কেউ অস্বীকার করে তাহলে সে মুসলিম থাকবে না।এই পাঁচটি স্তম্ভ হল - কালেমা-নামাজ-রোজা- হাজ্জ-যাকাত।

কালেমা কি বা কালেমা কাকে বলে -

ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের প্রথমটি হল কালেমা।কালেমা হলো মুখে বলা ও অন্তরে বিশ্বাস করা এবং এই বিশ্বাসকে বলা হয় "'ঈমান"‘৷ ইসলামে কালেমার গুরুত্ব ও মর্যাদা অনেক। কালিমার মূল অবকাঠামো হচ্ছে বিশ্বাস। রাসূল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি এমতাবস্থায় মারা যায় যে সে জানে আল্লাহ ছাড়া কোনো সঠিক উপাস্য নেই সে জান্নাতে যাবে।”


ছবি-facebook.com

ইমানের প্রধান ও অপরিহার্য শর্ত হলো তাওহিদ। মুমিন হতে হলে নিরঙ্কুশভাবে আল্লাহর একাত্মবাদে বিশ্বাস করতে হবে। সর্বশক্তিমান আল্লাহকে তাঁর নামে, গুণে, বৈশিষ্ট্যে ও কাজে এককভাবে বিশ্বাস করা এবং সব ইবাদত একমাত্র তাঁরই জন্য করার নামই তাওহিদ। এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় হলে বান্দার কোনো ইবাদতই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, "(হে রাসুল! আপনি) বলুন, তিনিই আল্লাহ ,এক ও অদ্বিতীয়"। (সূরা ইখলাস,আয়াত - ১)।

অর্থাৎ মহান আল্লাহ এক বা একক সত্তার অধিকারী। সাধারণ অর্থে তাওহিদ হচ্ছে এক করা, এক বানানো, একত্রিত করা, একাত্মের ঘোষণা দেওয়া বা একাত্মে বিশ্বাস করা। আল্লাহকে এক ও অদ্বিতীয় সত্তা হিসেবে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করাই তাওহিদ বা একাত্মবাদের মূল কথা। আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় এবং তিনিই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিজিকদাতা। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আল্লাহর কোনো শরিক নেই। তিনি ছাড়া আর কেউ ইবাদত বা উপাসনার যোগ্য নয়। আল্লাহই একমাত্র সত্তা, যার কাছে মনের আকুতি পেশ করা হয়, প্রয়োজন মেটানোর জন্য সাহায্য প্রার্থনা করা হয়। তিনি ছাড়া কেউই নেই সাহায্য করার। আল্লাহর প্রতি এরূপ বিশ্বাসই হলো তাওহিদ। বিশ্বাস করতে হবে তিনি রাজত্ব, সৃষ্টি, ধনসম্পদ ও কর্তৃত্বের অধিপতি। এ ক্ষেত্রে তাঁর কোনো অংশীদার নেই। এককভাবে তিনিই প্রভু। ইবাদত, আনুগত্য, আশা-ভরসা, সাহায্য ও ফরিয়াদের ক্ষেত্রে অন্য কাউকে তাঁর সঙ্গে অংশীদার করা যাবে না। তিনি মহান গুণাবলির অধিকারী, তাঁর সাদৃশ্য কোনো কিছুই নয়। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। আল কোরআনে এ বিষয়টি বার বার স্পষ্ট করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, "তোমাদের প্রকৃত ইলাহ অবশ্যই এক ও একক"। (সূরা আস-সাফফাত, আয়াত - ৪ )।

পবিত্র কোরআন আল্লাহ আরো বলেন,"আর তোমাদের উপাস্য হচ্ছেন এক আল্লাহ, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোনো উপাস্য নেই, তিনি পরম করুণাময়, অতিদয়ালু"। (সূরা বাকারা, আয়াত - ১৬৩)।

পবিত্র কোরআন আল্লাহ আরো বলেন,"তুমি বল, আমি তো কেবল একজন সতর্ককারীমাত্র,সার্বভৌম অপ্রতিরোধ্য এক ও একক আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো ইলাহ নেই"।( সূরা সোয়াদ, আয়াত - ৬৫)। "বল, আল্লাহই সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, তিনি এক ও একক, মহাপ্রতাপশালী" (সূরা রাদ, আয়াত - ১৬)। "(হে রাসুল! আপনি) বলুন, তিনি আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। আল্লাহ কোনো কিছুর মুখাপেক্ষী নন, সবই তাঁর মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেন না, আর তাঁকেও জন্ম দেওয়া হয়নি। তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই"। (সূরা ইখলাস, আয়াত - ১-৪)। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওহিদে অটুট থাকার তাওফিক দান করুন।


ছবি-youtube.com

সকল কালেমা -

এক. কালিমা তাইয়্যেবা: প্রথম কালেমা হচ্ছে কালেমায়ে তাইয়্যেবা এর অর্থ হল পবিত্র বাক্য।

বাংলা উচ্চারণ: - লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সঃ)।

বাংলা অর্থ:- আল্লাহ এক আর কোনো মাবুদ নেই। হযরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল।

"লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর অর্থ হলো - আল্লাহ ব্যতীত ইবাদতের উপযুক্ত সত্যিকারের আর কোনো মা’বুদ বা উপাস্য নেই এবং "মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ"-এর অর্থ হলো - শুধুমাত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেই সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল ও একমাত্র অনুকরণীয় আদর্শ নেতা হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করা। তাছাড়া মুসলমানদের জন্য বিশ্বনবি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্য কোনো নেতার এমন কোনো আদর্শ নেই যা অনুসরণ ও অনুকরণযোগ্য।

দুই. কালিমা শাহাদত : - দ্বিতীয় কালেমা হচ্ছে কালেমায়ে শাহাদাত, যার অর্থ হল সাক্ষ্য বাক্য।

বাংলা উচ্চারনঃ- আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু ।

বাংলা অর্থ : - আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি এক, তার কোন অংশীদার নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর শ্রেষ্ঠ বান্দা এবং তার প্রেরিত রাসূল।


তিন. কালিমা তাওহীদ: তৃতীয় কালেমা হচ্ছে কালেমায়ে তাওহিদ, যার অর্থ হল "একত্ববাদী বাক্য"।

বাংলা উচ্চারণ:- লা-ইলাহা ইল্লা আন্তা ওয়াহিদাল্‌-লা-ছানিয়া-লাকা মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহি ইমামুল মুত্তাক্বিনা রাসুলু রব্বিল আলামিন।

বাংলা অর্থ: - হে আল্লাহ্‌! তুমি ছাড়া কোন ইলাহ্‌ নেই, তুমি এক, তোমার কোন দ্বিতীয় স্বত্ত্বা নেই, মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল। ধর্মভীরুদের ইমাম, তিনি জগতের প্রতিপালক প্রভূর মহান দূত।


চার. কালিমা তামজীদ:- চতুর্থ কালেমা হচ্ছে কালেমায়ে তামজিদ, যার অর্থ হল "শ্রেষ্ঠত্ববাদী বাক্য"।

বাংলা উচ্চারণ: - লা-ইলাহা ইল্লা আন্তা নূরাই ইয়াহ্‌দি আল্লাহু লিনূরিহি মাই-ইয়াশাউ-মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহি ইমামুল মুরছালিনা খাতামুন্‌ নাবিয়্যিন।

বাংলা অর্থ: - হে আল্লাহ্‌! তুমি ছাড়া নেই কোন ইলাহ্‌, তুমি জ্যোতির্ময় আল্লাহ্‌! তোমার নূর দ্বারা যাকে ইচ্ছা তাকেই সৎপথ প্রদর্শন করেছ। মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর বার্তাবাহক, সমস্ত রাসূলগণের ইমাম বা নেতা, সর্বশেষ নবী।


পাঁচ :- ঈমানে মুজমাল :-সংক্ষিপ্ত ঈমান

বাংলা উচ্চারণ: - আমানতু বিল্লাহি কামা হুয়া বি আসমায়িহী ওয়া ছিফাতিহী ওয়াক্বাবিলতু জামিয়া আহ্‌কামিহী ও আরকানিহী।

বাংলা অর্থ: - সর্বমহান সুন্দর নাম ও গুণ বিশিষ্ট আল্লাহ্ তা'আলার উপর ঈমান আনলাম এবং তাঁর আদেশাবলী ও নিষেধসমূহ মেনে নিলাম।

ছয়. ঈমানে মুফাসসাল :- বিস্তারিত ঈমান

বাংলা উচ্চারণ: - আমানতু বিল্লাহি ওয়ামালাইকাতিহী ও কুতুবিহী ওয়াল ইয়াওমিল আখিরী ওয়াল ক্বাদরী খাইরিহী ওয়া শাররিহী মিনাল্লাহি তা'আলা ওয়াল বা'ছি বা'দাল মাউত।

বাংলা অর্থ: - আমি ঈমান আনলাম আল্লাহ তা'আলার উপর,তাঁর ফেরেশতারগণের উপর, তাঁর কিতাব সমূহের উপর,
তাঁর রাসূলগণের উপর,আখিরাতের উপর,তাক্বদীরের উপর এবং ঈমান আনলাম মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হওয়ার উপর।

আরও কালেমা সমুহ -

**সপ্তম কালেমা - "কালেমা-ই-আস্তাগফের" ইহা অনুশোচনামূলক বাক্য হিসেবেও পরিচিত ।

বাংলা উচ্চারণ: - আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি জামবি আয নাবতুহু আমাদান আওখাতাআন সিররান আওয়ালা নিয়াতান ওয়াতুবু ইলাইহি মিনাযযামবিল্লাজি ওয়ামিনাযযামবিল্লাজি লা আলামু ইন্নাকা আনতা আল্লামুল গুয়ুবী ওয়া সাত্তারুল উইয়ুবী ওয়া গাফফারুজজুনুবি ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিউল আযীম।

বাংলা অর্থ: - আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই সকল পাপ থেকে, যা আমি সংঘটিত করেছি আমার জ্ঞাতসারে অথবা অজ্ঞাতসারে, গোপনে বা প্রকাশ্যে এবং আমি আমার পালনকর্তার আশ্রয় চাই সেই পাপ থেকে, যে পাপ আমি জানি এবং যে পাপ আমি জানিনা। অবশ্যই আপনি লুকানো এবং গোপন (ভুল) পাপ সম্পর্কে জানেন এবং ক্ষমাশীল। আল্লাহ ছাড়া কোন শক্তি নেই, কোন ক্ষমতা নেই, তিনি সম্মানিত, তিনি মহান।


অষ্টম কালেমা - "কালেমা-ই-রুদ-ই-কুফর" ইহা ইসলামে অবিশ্বাসীদের প্রত্যাখ্যানমূলক বাক্য হিসেবেও পরিচিত।

বাংলা উচ্চারণ: -আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন উশরিকা বিকা শাইআও ওয়ানা আলামু বিহি ওয়াস্তাগফিরুকা লিমালা আলামু বিহি তুবতু আনহু ওয়া তাবাররাতু মিনাল-কুফরি ওয়াশ-শিরকী ওয়াল-কিজবি ওয়ালা-গিবাতি ওয়াল-বিদাতি ওয়ান্না-মিমাতি ওয়াল-ফাওয়া হিমি ওয়াল-রুহতানী ওয়াল-মাআসি কুল্লিহা ওয়াসলামতু ওয়াকুলু লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।

বাংলা অর্থ: - হে আল্লাহ নিশ্চয়, ক্ষমা চাই শিরক করা থেকে (আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা), আমি ক্ষমা চাই সকল পাপ থেকে যা সম্পর্কে আমি সচেতন নই বা জানি না, আমি পুনরায় ঘোষণা করছি, আমি সকল প্রকার কুফর থেকে, শিরক থেকে, মিথ্যা (কথা বলা), গিবত (কারও অনুপস্থিতিতে পরনিন্দা), বিদাত, পরনিন্দা, অশ্লীলতা এবং অন্যান্য সকল পাপ থেকে মুক্ত। আমি ইসলাম স্বীকার এবং বিশ্বাস করি এবং ঘোষণা দিচ্ছি যে, আল্লাহ‌ ছাড়া কোন প্রভু নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর প্রেরিত রাসুল।


ছবি-facebook.com

হাদিসের শিক্ষা-

১. ইসলামের রুকন বা স্তম্ভ পাঁচটি। যা ব্যতীত ইসলাম পরিপূর্ণ হয় না।
২. ইসলামে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার মূল কালিমা হলো এ সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকারের কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই আল্লাহ তাআলার রাসুল।

কালেমা তাইয়েবার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা অর্থাৎ এ কালেমা সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে জানা সকল মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব।
কালেমা তাইয়েবায় বলা হয়েছে,"কোন হক মা’বুদ নেই,আল্লাহ ছাড়া (অর্থাৎ তিনিই শুধু মা’বুদ)"।অর্থাৎ সর্ব-প্রকার সন্দেহ ও সংশয়মুক্ত পরিপূর্ণ বিশ্বাস থাকা।কালেমার উপর এমন একাগ্রতা ও নিষ্ঠা রাখা, যা সর্বপ্রকার শিরকের পরিপন্থী। কালেমাকে মনে প্রাণে সত্য বলে জানা, যাতে কোন প্রকার মিথ্যা বা কপটতা না থাকে।এ কালেমার প্রতি ভালবাসা পোষণ এবং কালেমার অর্থকে মনে প্রাণে মেনে নেয়া ও তাতে খুশী হওয়া। এই কালেমার অর্পিত দায়িত্ব সমূহ মেনে নেয়া অর্থাৎ এই কালেমা কর্তৃক আরোপিত ওয়াজিব কাজসমূহ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য এবং তাঁরই সন্তুষ্টির নিমিত্তে সমাধা করা। মনে-প্রাণে এই কালেমাকে গ্রহণ করা যাতে কখনো বিরোধিতা করা না হয় এবং "মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সঃ)"-এর অর্থ হলো - শুধুমাত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেই সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল ও একমাত্র অনুকরণীয় আদর্শ নেতা হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করা। তাছাড়া মুসলমানদের জন্য বিশ্বনবি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্য কোনো নেতার এমন কোনো আদর্শ নেই যা অনুসরণ ও অনুকরণযোগ্য।


ইসলামের প্রথম রুকন থেকেই বুঝা যায় যে, ইসলাম মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহ তাআলার আনুগত্য ও স্বীকৃতি দেয়ার নির্দেশ দেয় এবং অবাধ্যতা ও শিরক থেকে নিষেধ করে।

পরিশেষে…আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইসলামের প্রতিটি রুকন বা স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে শিরক ও কুফরমুক্ত ঈমান লাভের তাওফিক দান করুন। পরকালে নাজাতের উত্তম ফয়সালা দান করুন। আমিন।

চলবে -


** তথ্যসূত্র - উইকিপিডিয়া ।
===========================================================

পূর্ববর্তী পোস্ট -

ঈমান ও আমল - ৩ Click This Link
(তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব )।
ঈমান ও আমল - ২ Click This Link
("শুক্রবার - পবিত্র জুমা "- মুসলমানদের জন্য এক মর্যাদা ও ফজিলত পূর্ণ দিন এবং জুমার দিনের কতিপয় আমল)।
ঈমান ও আমল - ১ Click This Link
(যেসব আমলে মানুষের অভাব দূর হয় ও জীবন সুখের হয়)।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৩৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ মনে প্রাণে বিশ্বাস করে মানতে চেষ্টা করি। এবং মরণ পর্যন্ত করবো। ওমরা করেছি কয়েকবার হজ্জ করেনি, করবো আশা রাখি।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নেওয়াজ আলী ভাই, আপনার মন্তব্য এর জন্য।৷৷ ইসলামের পাঁচস্তম্ভে বিশ্বাস করা সকল মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব। আল্লাহ আমাদের সকল কে এ দায়িত্ব পালন করার তাওফিক দান করুন এবং আল্লাহ আপনাকে মকবুল হজ্জেরও তওফিক দান করুন।

২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৯

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আল্লাহ তাওরাত ও ইঞ্জীল কিতাব কেও বাতিল করেন নাই।৫:৬৮ আয়াতে স্পষ্ট বলা আছে,তাওরাত ও ইঞ্জীল যা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তোমাদের প্রতি অবতীর্ন করা হয়েছে তা তোমরা প্রতিষ্ঠিত না করা পর্যন্ত তোমাদের কোন ভিত্তি নেই।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৫১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নুরুলইসলা০৬০৪ ভাই, আপনার মন্তব্য এর জন্য।

মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের সুরা মায়িদায় বলেন, -

"আর যদি আহলে-কিতাবরা বিশ্বাস স্থাপন করত এবং খোদাভীতি অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের মন্দ বিষয়সমূহ ক্ষমা করে দিতাম এবং তাদেরকে নেয়ামতের উদ্যানসমূহে প্রবিষ্ট করতাম"।(সুরা মায়িদা - আয়াত - ৬৫)।

"যদি তারা তওরাত, ইঞ্জিল এবং যা প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, পুরোপুরি পালন করত, তবে তারা উপর থেকে এবং পায়ের নীচ থেকে ভক্ষণ করত। তাদের কিছুসংখ্যক লোক সৎপথের অনুগামী এবং অনেকেই মন্দ কাজ করে যাচ্ছে"।(সুরা মায়িদা - আয়াত - ৬৬)।

"হে রসূল, পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তাঁর পয়গাম কিছুই পৌছালেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষের কাছ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না"।(সুরা মায়িদা - আয়াত - ৬৭)

"বলে দিনঃ হে আহলে কিতাবগণ, তোমরা কোন পথেই নও, যে পর্যন্ত না তোমরা তওরাত, ইঞ্জিল এবং যে গ্রন্থ তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তাও পুরোপুরি পালন না কর। আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে আপনার প্রতি যা অবর্তীণ হয়েছে, তার কারণে তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফর বৃদ্ধি পাবে। অতএব, এ কাফের সম্প্রদায়ের জন্যে দুঃখ করবেন না"।(সুরা মায়িদা - আয়াত - ৬৮)।

"নিশ্চয় যারা মুসলমান, যারা ইহুদী, ছাবেয়ী বা খ্রীষ্টান, তাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে আল্লাহর প্রতি, কিয়ামতের প্রতি এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না"।(সুরা মায়িদা - আয়াত - ৬৯)।

৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৪৫

ওমেরা বলেছেন: ভালো লিখেছেন । ধন্যবাদ আপনাকে।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৫২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ ওমেরা, আপনার মন্তব্য এর জন্য।

আবারো আপনাকে ধন্যবাদ, পড়ার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য।

৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: আগে বলেন, ধর্ম বড় না কর্ম বড়?

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৫৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার মন্তব্য এর জন্য।

আপনার প্রশ্ন ছোট কিন্তু এর জবাব দিতে হবে বা এর জন্য দরকার বিশাল পরিসর।তার পরেও আপনার প্রশ্নের জবাব -

মানবসমাজে মানুষ তার কর্ম অনুযায়ী ফল লাভ করে। আল্লাহ তাআলা নিয়ত বা ইচ্ছা অনুযায়ী ফল বা প্রতিদান দিয়ে থাকেন।কখনো কখনো দেখা যায় মানুষ তার নিজ যোগ্যতা বা ক্ষমতা অনুযায়ী কাজ করতে পারে না বা করে না, তখন তাকে বলা হয় আল্লাহ তাআলার ফয়সালা।

আল্লাহ তাআলা মানুষের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সবকিছু জানেন, একে বলা হয় ইলমে ইলাহি বা আল্লাহ তাআলার জ্ঞান। এই ইলমে ইলাহি বা আল্লাহ তাআলার জ্ঞান সব সময় তকদির বা পূর্বনির্ধারিত ভাগ্য নয়। এটা কখনো কখনো আমল বা কর্ম দ্বারা পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ মানুষের জীবনে যা কিছু সংঘটিত হয় তা দুই ভাগে বিভক্ত: আমল বা কর্ম ভাগ্য এবং তকদির বা পূর্বনির্ধারিত ভাগ্য।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, "কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকট রয়েছে, তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তিনি জানেন যা মাতৃজঠরে রয়েছে। কেহ জানে না আগামীকাল সে কী অর্জন করবে এবং কেহ জানে না কোন স্থানে তার মৃত্যু ঘটবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ব বিষয়ে অবহিত"। (সুরা লুকমান, আয়াত- ৩৪)।

তকদির বা ভাগ্য মানুষের অজানা অজ্ঞেয় ও অজেয়।আমরা জানি না তা স্থির নাকি পরিবর্তনীয়। সুতরাং আমাদের উচিত হলো আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা, আল্লাহর রহমত চাওয়া ও এমন নেক আমল করা, যার মাধ্যমে আল্লাহ তুষ্ট হয়ে আমাদের তকদিরকে সৌভাগ্যে পরিণত করবেন। কর্মই ভাগ্য পরিবর্তনে সহায়ক, তাই সৎকর্ম বা নেক আমলের প্রতি মনোযোগী হওয়া বাঞ্ছনীয়।

সবশেষে ,ধর্ম হলো আল্লাহকে/ভগবানকে/ঈশ্বর কে ভালবাসা।আর কর্ম বলতে বোঝায় কোন কিছু করা যা মানুষের জীবনধারনের জন্য প্রয়োজন।

এখন প্রশ্ন হলো জীবনধারনের প্রয়োজনে মানুষ কি সব ধরনের কর্ম করতে পারে কিনা?

জবাব হলো - সকল কর্ম করা উচিৎ নয়।একমাত্র ধর্ম অনুমোদিত কর্মই করনীয়।ধর্ম ছাড়া কর্ম কুকর্ম,কর্ম ছাড়া ধর্ম সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ধর্ম একমাত্র মানুষের জন্যই রচিত পশুপাখিদের জন্য নয়। তাই মানুষকে নিষ্ঠার সঙ্গে ধর্ম এবং ধর্ম অনুমোদিত কর্মও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে হয়।কি কর্ম করতে হবে কি কর্ম পরিত্যাগ করতে হবে তা প্রতিটি ধর্মে নির্দিষ্ঠ করে বলা আছে।

যে কর্ম মানুষকে আল্লাহ / ভগবান / ঈশ্বরের পথে পরিচালিত করে না তা পাপকর্ম।আর যে বিদ্যা স্রষ্টাকে বুঝতে সাহায্য করে না তা ভূল। তা যদি হয় তাহলে বুঝতে হবে যে, সেই কর্ম ও সেই বিদ্যা সম্পূর্ণরূপে নিরর্থক।

৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৪৬

অজ্ঞ বালক বলেছেন: সুন্দর পুস্ট।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৩৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ অজ্ঞ বালক ভাই, আপনার মন্তব্য এর জন্য।

আমরা যে যেই ধর্মের অনুসারীই হই না কেন সকলকে স্রষ্টা ধর্মের মৌলিক বিধি-বিধান মেনে চলার তওফিক দান করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.