নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

" আল কোরআন " মানব জাতির মুক্তির আলোকবর্তিকা । (আল কোরআনের উপদেশাবলী - পর্ব - ২)।

৩০ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:৫৮


ছবি - shadow.com.bd

"পড়ো! তোমার সৃষ্টিকর্তা প্রভুর নামে। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পড়ো ! আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। আর শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না"।( সূরা আলাক,আয়াত - ১-৫) এই আয়াত দিয়েই কোরআন নাজিলের সূচনা

শুরুতেই কোরআন মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে পড়তে ও জানতে। কোরআন অজ্ঞতাকে অভিহিত করেছে মহাপাপ রূপে। মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে জ্ঞানের পথে, মুক্তবুদ্ধির পথে। এমনকি বিশ্বাসের স্তরে পৌঁছার জন্যেও মানুষের সহজাত বিচারবুদ্ধির প্রয়োগকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে কোরআন। বৈষয়িক ও আত্মিক জীবনকেও একই সূত্রে গেঁথেছে কোরআন। সুস্পষ্টভাবেই বলেছে, আল্লাহর বিধান অনুসরণ করো। দুনিয়া ও আখেরাতে তুমি সম্মানিত হবে।

আল কোরআন স্বয়ং আল্লাহ প্রদত্ত এক কিতাব, যেখানে মানবজাতীর জন্য রয়েছে সংবিধান ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এ বানী মানবজাতীর হেদায়েত স্বরুপ এবং জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের জীবনে যা কিছু প্রয়োজন তার সব কিছুর দিকনির্দেশনা আল কোরআনে রয়েছে।মানুষের এক জীবনে যা দরকার, তার সবই সাজানো রয়েছে কোরআনের পরতে পরতে। সুস্থ সুন্দর সুখী পরিতৃপ্ত জীবনের জন্যে যা প্রয়োজন, আল কোরআনের পাতায় পাতায় রয়েছে তারই দিক-নির্দেশনা।


ছবি - sangbadchorcha.com

পবিত্র কোরআনে মানব জীবনের সব দিকনির্দেশনার বর্ণনার পাশাপাশি মানবজাতীর প্রতি উপদেশ স্বরুপ বেশ কিছু আয়াত আছে।আসুন আমরা সেগুলো সম্পর্কে জানি -

১।তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিওনা ।

"তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বে সত্যকে তোমরা গোপন করো না"। (সুরা বাকারা - আয়াত - ৪২)।

২।সৎকার্য নিজে সম্পাদন করার পর অন্যদের করতে বলো ।

"তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও এবং নিজেরা নিজেদেরকে ভুলে যাও,অথচ তোমরা কিতাব পাঠ কর? তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না?"।(সুরা বাকারা - আয়াত - ৪৪) ।

৩।পৃথিবীতে বিবাদ বিশৃংখলা সৃষ্টি করোনা ।

"যারা আল্লাহর সঙ্গে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখতে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে অভিশাপ।তাদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট আবাস"।(সুরা রাদ, আয়াত - ২৫)।

"আর স্মরণ কর, যখন মূসা তার জাতির জন্য পানি চাইলেন। আমরা বললাম, ‘আপনার লাঠি দ্বারা পাথরে আঘাত করুন’। ফলে তা হতে বারোটি প্রস্রবণ প্রবাহিত হলো। প্রত্যেক গোত্র নিজ নিজ পানি গ্রহণের স্থান জেনে নিলো। (বললাম), ‘আল্লাহ্‌র দেয়া জীবিকা হতে তোমরা খাও, পান কর এবং যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়িয়ো না"।(সুরা বাকারা - আয়াত - ৬০)।

৪।কারো মসজিদে যাওয়ার পথে বাঁধা সৃষ্টি করোনা।

"আর তার চেয়ে অধিক যালিম আর কে হতে পারে, যে আল্লাহ্‌র মসজিদগুলোতে তাঁর নাম স্মরণ করতে বাঁধা দেয় এবং এগুলো বিরাণ করার চেষ্টা করে? অথচ ভীত-সন্ত্রস্ত না হয়ে তাদের জন্য সেগুলোতে প্রবেশ করা সঙ্গত ছিল না। দুনিয়াতে তাদের জন্য লাঞ্ছনা ও আখেরাতে রয়েছে মহাশাস্তি "।(সুরা বাকারা - আয়াত - ১১৪) ।

৫।কারো অন্ধ অনুসরন করোনা।

"আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা তোমরা অনুসরণ কর’, তারা বলে, ‘না, বরং আমরা অনুসরণ করবো তার, যার উপর আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে পেয়েছি’। যদিও তাদের পিতৃপুরুষরা কিছু বুঝতো না এবং তারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না, তবুও কি"।(সুরা বাকারা - আয়াত - ১৭০) ।


ছবি - samakal.com

আমরা কেন মেনে চলব ,বিশ্বাস করব কোরআন আল্লাহর কালাম ? কেন বিশ্বাস করব কোরআন মানুষের রচনা নয় ? কেন বিশ্বাস করব যে, কোরআন অনুসরণ করলে আমি ভালো থাকব ? কেন বিশ্বাস করব যে, কোরআন আমাকে পার্থিব জীবনেও সুখী ও প্রাচুর্যবান করতে পারে ?

আল কোরআনকে আমরা বিশ্বাস করবো,কারন - কোরআন সব সন্দেহের ঊর্ধ্বে।আর তাইতো আল্লাহ পাক আল কোরআনে ইরশাদ করেন, "এই কিতাব বিশ্ব পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই "।(সুরা সাজদা, আয়াত - ২)।

অবশ্যই বিশ্বাস করার আগে প্রশ্ন করতে হবে। সবদিক থেকে খতিয়ে দেখতে হবে। জানতে হবে। বিশ্লেষণ করতে হবে। ভাবতে হবে। বিষয়ের গভীরে ডুবে যেতে হবে। বিচার করতে হবে মুক্তমন নিয়ে, বস্তুনিষ্ঠভাবে। তাহলেই আপনি-আমি সত্যে উপনীত হতে পারবো।


আল্লাহ পাক আমাদেরকে সত্যে উপনীত হবার,সত্য বুঝার এবং আল কুরআনের আলোকে জীবন গড়ার তওফিক দান করুন ।

চলবে -

===============================================================

পূর্ববর্তী পোস্ট -

আল কোরআনের উপদেশাবলী - পর্ব - ১ Click This Link

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: পবিত্র আল কোরআন এবং হাদীস থেকে আমি শক্তি পাই। ভরসা পাই। তাই এখনও বেঁচে আছি।

৩০ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:২৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য।

জীবনে চলার পথে আল কোরআন ও হাদীস অনুসরন করে চলতে পারলে ইহকালের শান্তি ও সমৃদ্ধির সাথে পরকালের ও নাজাতের পথ তৈরী হয়।

আল্লাহপাক আমাদের সকলকে আল কোরআন ও হাদীস যথাযথ অনুসরনের মাধ্যমে জীবন অতিবাহিত করার তওফিক দান করুন।

২| ৩০ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:৪৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



তোরাহ (ওল্ড টেষ্টামেন্ট) লিখেছিলেন নবী মুসা (আ: ), যবুর লিখেছিলেন রাজা ডেভিড, বাইবেল (নিউ টেষ্টামেন্ট ) লিখেছিলেন নবী ঈশার (আ: ) কয়েকজন সাগরেদ, খলীফা ওসমানের (রা: )'এর সময় কোরান সংকলিত ও সম্পাদিত হয়, সেই কাজটি কয়জন মানুষ করেছিলেন, তাদের নাম কি কি?

৩০ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই ,আপনার চমতকার এবং বিষয়ের সাথে প্রাসংগিক মন্তব্যের জন্য।

ভাই, এ মন্তব্যের জবাব অল্প কথায় দেয়া মুশকিল ।আল কোরআন সংকলনে হজরত ওসমান (আঃ) ভুমিকা নিয়ে একটি পোস্ট তৈরী করতে ছিলাম ।তাই আপনার জবাবে তাই দিয়ে দিলাম।কারন এই প্রথম আপনি বিষয়ের সাথে প্রাসংগিক একটি মন্তব্য করেছেন এবং আমি বিশ্বাস করি আপনি সেটা জানার উদ্দেশ্যেই করেছেন।

নবী করিম (সঃ)‌ ওফাতের পর হজরত আবু বকর (রা.) আল কোরআন সংকলনের ব্যবস্থা করেন ।তার সংকলিত কোরআনের বৈশিষ্ট্য হলো- সে সংকলনের উদ্দেশ্য ছিল লিখিতভাবে কোরআন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা। আর সে সংকলনের প্রেক্ষাপট ছিল তৎকালীন হাফেজে কোরআনদের একের পর এক মৃত্যুবরণ করার কারণে কোরআনের কিছু অংশ হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা। রাসুল (সা.)-এর যুগ থেকে বিভিন্ন সাহাবির কাছে কোরআনের সম্পূর্ণ অথবা অসম্পূর্ণ যেসব কপি বা পাণ্ডুলিপি নিজ নিজ সংগ্রহে ছিল, সেসব কপির মধ্যে সমন্বয় সাধন কিংবা চূড়ান্ত বিচার-মীমাংসা করে অভিন্ন পঠন পদ্ধতি প্রণয়ন সে সংকলনের উদ্দেশ্য ছিল না।এমনকি সেখানে সর্বসাধারণের সুবিধার্থে সাত কেরাত বা সাতভাবে কোরআন পাঠের অবকাশ রাখা হয়েছে। ফলে "মাসহাফে আবি বকর" এর পাশাপাশি আরো বহু 'মাসহাফ' তৈরি হতে থাকল এবং একেক শহরে একেক 'কারি'কে অনুসরণ করে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে মানুষ কোরআন পড়তে লাগল। সিরিয়ার অধিবাসীরা হজরত উবাই ইবনে কাব (রাঃ)-এর কেরাত অনুসারে, ইরাকের অধিবাসীরা হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ)-এর কেরাত অনুসারে, অন্যরা হজরত আবু মুসা আশআরি (রাঃ)-এর কেরাত অনুসারে তেলাওয়াত করতে লাগল। এতে পবিত্র কোরআনের শাব্দিক উচ্চারণ ও পঠনরীতি নিয়ে কিছুটা বিরোধ দেখা দিল। (সূত্র - জমউল কোরআনি হিফজান ওয়া কিতাবাতান, ড. আলী বিন সুলায়মান, পৃ. ৫৩-৫৪)।

হজরত ওসমান (আঃ)-এর যুগে ইসলাম বিজয়ী বেশে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর যুগে আরবের সীমানা পেরিয়ে ইসলাম খুব দ্রুত বিস্তৃতি লাভ করে। আরব-অনারব নির্বিশেষে অগণিত লোক ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করতে থাকে। ফলে সেসব এলাকার নব মুসলিমরা খেলাফতের পক্ষ থেকে প্রেরিত বিভিন্ন 'মুয়াল্লিম' থেকে এবং কোথাও কোথাও মুজাহিদিনে ইসলাম থেকে কিংবা আরবের মুসলিম ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোরআন শিখতে শুরু করে। এতে বিপত্তিও বাড়তে থাকে। হজরত হুজাইফা বিন ইয়ামান (রা.) আরমেনিয়া, আজারবাইজান সীমান্তে জিহাদে মশগুল থাকা অবস্থায় দেখলেন, সেখানে মানুষের মধ্যে কোরআনের পঠনরীতি নিয়ে মতবিরোধ চলছে। এমনকি এক দল আরেক দলকে কাফের পর্যন্ত বলছে। তিনি জিহাদ থেকে ফিরে ওসমান (রা.)-কে এক রীতিতে কোরআন পড়ার প্রথা চালু করতে পরামর্শ দেন। ওসমান (রা.) অবিলম্বে এ নিয়ে নেতৃস্থানীয় সাহাবিদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। সাহাবায়ে কেরামের ইজমার ভিত্তিতে সে পরামর্শে তিনটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এক. 'মাসহাফে আবি বকর'-এর পরিবর্তে অভিন্ন পঠনরীতিতে কোরআন সংকলন করা হবে। দুই. প্রতিটি শহরে এর একেকটি কপি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তিন. বিভ্রান্তি নিরসনকল্পে অবশিষ্ট কোরআনের কপি বাজেয়াপ্ত করা হবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হজরত ওসমান (রা.) ২৫ হিজরির শুরুর দিকে চারজন বিশিষ্ট সাহাবির সমন্বয়ে একটি কোরআন সংকলন বোর্ড গঠন করেন। এ চারজন সাহাবি হলেন - ১। হজরত জায়েদ ইবনে সাবেত ২। আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের ৩। সাইদ ইবনুল আস ৪। আবদুর রহমান ইবনে হারিস ইবনে হিশাম (রা.)। তাঁদের মধ্যে হজরত জায়েদ (রা.) ছিলেন আনসারি সাহাবি আর বাকি তিনজনই ছিলেন কুরাইশি। প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত এ চারজনের বাইরে হজরত উবাই ইবনে কাব, কাসির ইবনে আফলাহ, মালেক ইবনে আবি আমের, আনাস ইবনে মালেক ও আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) প্রমুখসহ মোট ১২ জন এ কাজে নিয়োজিত ছিলেন। (ফতহুল বারি, খ. ৯, পৃ. ১৩-১৫; কিতাবুল মাসাহিফ, ইবনে আবি দাউদ, পৃ. ২৫)

এখানে উল্লেখ্য, কেউ কেউ হজরত ওসমান (রা.)-এর আমলে কোরআন সংকলনের প্রধান তিনটি কারণ উল্লেখ করেছেন।
১। কোরআনের পঠনরীতি নিয়ে সদ্য বিজিত দেশগুলোতে মতবিরোধ।
২।বিভিন্ন কেরাত নিয়ে কোরআনের মুয়াল্লিমদের বিরোধ।
৩।এ বিষয়ে সাহাবায়ে কেরামের বিরোধ। (সূত্র : রসমুল মাসহাফি ওয়া জবতুহু.., ড. শা'বান মুহাম্মদ ইসমাইল, খ. ১, পৃ. ১৬-১৭।

কোরআন সংকলন কমিটির কর্মপন্থা -

হজরত ওসমান (রা.)-এর আমলে কোরআন সংকলন কমিটি সংকলনের ক্ষেত্রে প্রথমে কর্মপন্থা ও নীতিমালা নির্ধারণ করে। সেসব কর্মপন্থার অন্যতম নীতি ছিল এই যে -

১।হজরত আবু বকর (রা.) সংকলিত কোরআনকে মূল ভিত্তি হিসেবে ধরে নতুন সংকলনে অগ্রসর হওয়া। তাই হজরত ওসমান (রা.) হজরত হাফসা (রা.)-এর কাছে এ মর্মে বার্তা পাঠালেন যে 'হজরত আবু বকর (রা.) সংকলিত কোরআনের কপি আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হোক, আমরা তার থেকে আরো কপি করে আপনাকে তা ফেরত দিয়ে দেব।'
২।হজরত ওসমান (রা.)-এর সার্বক্ষণিক পৃষ্ঠপোষকতা ও তত্ত্বাবধানে সে সংকলনটি প্রস্তুত করা হয়। (কিতাবুল মাসাহিফ, ইবনে আবি দাউদ, পৃ. ২৫)
৩।কোরআনের প্রমিত উচ্চারণসহ সার্বিক বিষয়ে তাঁরা নেতৃস্থানীয় সাহাবায়ে কেরামের পরামর্শ নিতেন।
৪। বৈধ থাকা সত্ত্বেও একই শব্দের একাধিক লিখন পদ্ধতির পরিবর্তে প্রমিত ও অভিন্ন রীতি প্রচলন।
৫।শব্দের লিখনরীতি নিয়ে মতবিরোধ হলে কোরাইশ ভাষার প্রাধান্য। হজরত ওসমান (রা.) বলেছেন যে 'তোমরা ও জায়েদ কোনো বিষয়ে একমত না হলে কোরাইশ ভাষায় তা লিখে দেবে। কেননা কোরআন কোরাইশ ভাষায় নাজিল হয়েছে।' (বুখারি ৬/৯৯) (সূত্র : জম্উল কোরআনি হিফজান ওয়া কিতাবাতান, ড. আলী বিন সুলায়মান, পৃ. ৫৯-৬১)।

৬। উল্লিখিত কাজগুলো করার পাশাপাশি তাঁরা এবারও সে পন্থা অবলম্বন করেছেন, যে পন্থা হজরত আবু বকর (রা.)-এর সময় অবলম্বন করা হয়েছিল। তাই অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য রাসুল (সা.)-এর যুগে প্রস্তুতকৃত সাহাবায়ে কেরামের কাছে সংরক্ষিত কোরআনের বিভিন্ন কপি ও পাণ্ডুলিপি আবার তলব করা হয়। এরই সঙ্গে নতুনভাবে নিরীক্ষণের মাধ্যমে নতুন কপি প্রস্তুত করা হয়। এবার সুরা আহজাবের ২৩ নম্বর আয়াত কেবল হজরত খুজাইমা (রা.)-এর কাছেই পাওয়া গেছে। এর অর্থ এই নয় যে সে আয়াত আর অন্য কারো স্মরণে ছিল না। কেননা হজরত জায়েদ (রা) নিজেই বলেছেন, 'মাসহাফ লেখার সময় সুরা আহজাবের একটি আয়াত (লিখিতরূপে) পাওয়া যাচ্ছিল না, অথচ আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সেটি পাঠ করতে শুনেছি। আমরা অনুসন্ধান করেছি, অতঃপর তা পেয়েছি খুজাইমা বিন সাবেত আনসারি (রা.)-এর কাছে।' (ফতহুল বারি, খ. ৯, পৃ. ১৭) ।

হজরত ওসমান (রা.) সংকলিত কোরআনের বৈশিষ্ট্য

১। হজরত আবু বকর (রা.)-এর আমলে কোরআন সংকলনের উদ্দেশ্য ছিল লিখিতভাবে কোরআন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা। আর সে সংকলনের প্রেক্ষাপট ছিল তৎকালীন হাফেজে কোরআনদের একের পর এক মৃত্যুবরণ করার কারণে কোরআনের কিছু অংশ হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা। হজরত ওসমান (রা)-এর আমলে কোরআন সংকলনের উদ্দেশ্য ছিল রাসুল (সা.)-এর যুগ থেকে বিভিন্ন সাহাবির কাছে কোরআনের সম্পূর্ণ অথবা অসম্পূর্ণ যেসব কপি বা পাণ্ডুলিপি নিজ নিজ সংগ্রহে ছিল, সেসব কপির মধ্যে সমন্বয় সাধন কিংবা চূড়ান্ত বিচার-মীমাংসা করে প্রমিত ও অভিন্ন পঠন পদ্ধতি প্রণয়ন করা।

২। হজরত আবু বকর (রা.) কোরআনের যে কপি প্রস্তুত করেছেন, সেখানে সুরাগুলো বিন্যস্ত ছিল না। বরং প্রতিটি সুরা আলাদা আলাদা লেখা হয়েছিল। এ সংকলনে সব সুরাকে বিন্যস্ত করে একই মাসহাফে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

৩। এ সংকলনে কোরআনের আয়াতগুলো 'নুকতা' ও 'হরকত' ব্যতীত এভাবে লেখা হয়েছে যে একই আয়াতের সব কয়টি 'মুতাওয়াতির' কেরাতের অবকাশ রাখা হয়েছে।

৪।হজরত আবু বকর (রা.)-এর আমলে কোরআনের কেবল একটি কপি প্রস্তুত করা হয়েছিল। আর এ সংকলনে কোরআনের একাধিক কপি প্রস্তুত করা হয়েছে। আল্লামা সুয়ুতির গবেষণা ও প্রসিদ্ধ অভিমত অনুসারে হজরত ওসমান (রা.) কোরআনের পাঁচটি কপি প্রস্তুত করেছেন। (আল ইতকান, খ. ১, পৃ. ২১১)

ইবনে আবি দাউদ (রহ.) বলেন, আমি আবু হাতেম আস সিজস্থানি (রহ.)-কে বলতে শুনেছি যে সে সময় মোট সাতটি কপি তৈরি করা হয়েছে। সেগুলো একটি করে মক্কা, শাম, কুফা, বসরা, ইয়ামান ও বাহরাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং একটি মদিনায় সংরক্ষণ করা হয়েছে। (কিতাবুল মাসাহেফ : (১/২৪২)

৫। সাত কেরাতের পরিবর্তে অভিন্ন রীতিতে কোরআন প্রচলন।

৬। বিভিন্ন সাহাবির ব্যক্তিগত সংগ্রহে কোরআনের যেসব পাণ্ডুলিপি ছিল, তাদের কারো কারো কপিতে কোরআনের শাব্দিক ব্যাখ্যাও লেখা ছিল, এ সংকলনে সেগুলো পৃথক করা হয়েছে। (সূত্র : জম্উল কোরআনিল কারিম ফি আহদিল খুলাফাইর্ রাশিদিন, আবদুল কাইউম আস্ সানাদি, খ. ১, পৃ. ৪২)

সংকলনের কাজ সমাপ্তির পর.....

হজরত ওসমান (রা.)-এর তত্ত্বাবধানে কোরআন সংকলনের কাজ সমাপ্তির পর তিনি আগের ঘোষণা অনুযায়ী 'মাসহাফে আবি বকর' হজরত হাফসা (রা.)-এর কাছে পাঠিয়ে দেন। হুকুমতের বিভিন্ন প্রদেশে এর একেকটি কপি পাঠিয়ে দেন। এরই সঙ্গে সাহাবায়ে কেরামের ঐক্যবদ্ধ সম্মতিক্রমে কোরআন নিয়ে মতবিরোধ ও বিভ্রান্তি চিরতরে নির্মূলের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় ফরমান জারি করে কোরআনের অবশিষ্ট পাণ্ডুলিপি ও কপি তিনি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) ব্যতীত আর কোনো সাহাবির দ্বিমত ছিল না। আর প্রথমে দ্বিমত পোষণ করলেও পরবর্তী সময় তিনিও সম্মত হন।

৩| ৩০ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: কোরআন এবং হাদিসের শিক্ষা ইহকাল পরকাল দুই জাহানের জন্য।
তাই সবাইকে কোরআন হাদিসের শিক্ষা দিতে হবে। প্রয়োজনে বাধ্য করতে হবে।

৩০ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই,আপনার প্রতিমন্তব্যের জন্য।

ইহকাল ও পরকাল দুই কালের জন্যই কোরআন হাদিস শিক্ষা জরুরী। আর ইসলামে ধর্মের ব্যাপারে কাউকে জোর করা সর্মথন করেনা ।
এ ব্যাপারে আল কুরআন ঘোষণা করা হয়েছে, "ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই। অবশ্যই হেদায়েত গোমরাহি থেকে পৃথক হয়ে গেছে"।(সূরা বাকারাহ ,আয়াত ৩৪)।

এ হলো এমন মর্যাদাপূর্ণ হাকিকত যার শিক্ষা মানুষ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) দ্বারা লাভ করেছে।

আল কোরআনে অপর এক স্থানে বলা হয়েছে, "বলে দাও, সত্য তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতেই আগমন করেছে। সুতরাং যে ইচ্ছা করে সে বিশ্বাস স্থাপন করুক, আর যে ইচ্ছা করে সে অস্বীকার করুক " (সূরা কাহাফ, আয়াত - ৪)।

ঈমান এবং কুফর ও দু’য়ের মাঝে কোনো একটিকে গ্রহন করার ওপর কোনোরকম জবরদস্তি নেই। জ্ঞান ও দূরদৃষ্টির অধিকারী ব্যক্তিরা স্বাভাবিকভাবেই ঈমান গ্রহণ করবে এবং বুদ্ধিহীন লোকেরা তা হতে বঞ্চিত থাকবে। এ জন্য বারবার এ কথাটি সুস্পষ্ট বলে দেয়া হয়েছে যে, রাসূলের (সাঃ) কাজ হলো আল্লাহর পয়গাম মানুষের নিকট পৌঁছে দেয়া। জবরদস্তি প্রদর্শন করা নয়।

৪| ৩০ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বিষয়টা বিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত।

যে অবিশ্বাসী তার কাছে পুরোটাই ভিন্ন অর্থবহন করে। আর যে বিশ্বাসী তার কাছে এইটাই মুক্তির পথ।
আর আছে নামধারী বিশ্বাসী কিন্তু অন্ধ। তারা পাঠ করে নেকি গুনে গুনে, অর্ত অনুভব করে না, ফলে বাস্তবিক জীবনে তার প্রভাবও পড়ে না।

অথচ মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই বুঝতে হবে। অনুভব করতে হবে। বাস্তবিক জীবনে তা প্রয়োগিক ভাবে কার্যকর করতে হবে।

৩০ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ বিদ্রোহী ভৃগু ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য।

ইসলামে ঈমান এবং কুফর ও দু’য়ের মাঝে কোনো একটিকে গ্রহন করার জন্য কারো উপর কোনোরকম জবরদস্তি নেই এবং সর্মথন ও করেনা। জ্ঞান ও দূরদৃষ্টির অধিকারী ব্যক্তিরা স্বাভাবিকভাবেই ঈমান গ্রহণ করবে এবং বুদ্ধিহীন লোকেরা তা হতে বঞ্চিত থাকবে। এ জন্য বারবার এ কথাটি সুস্পষ্ট বলে দেয়া হয়েছে যে, রাসূলের (সাঃ) কাজ হলো আল্লাহর পয়গাম মানুষের নিকট পৌঁছে দেয়া। জবরদস্তি প্রদর্শন করা নয়।

এ ব্যাপারে আল কুরআন ঘোষণা করা হয়েছে, "ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই। অবশ্যই হেদায়েত গোমরাহি থেকে পৃথক হয়ে গেছে"।(সূরা বাকারাহ ,আয়াত ৩৪)। এ ব্যাপারে আল কুরআনে আরো ইরশাদ হচ্ছে, "আমাদের রাসূলের ওপর দায়িত্ব হলো পয়গামকে সুস্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া"। (সূরা মায়িদা ,আয়াত - ১২)।

ইসলাম হলো চিরন্তন, সুন্দর ও কল্যাণকর জীবন ব্যবস্থা। যারাই ইসলামকে সুদৃঢ়ভাবে গ্রহণ করে, তাঁরাই দুনিয়া ও পরকালের ধ্বংস ও প্রবঞ্চনা থেকে মুক্ত হয়ে যায় এবং কল্যাণের মাঝে প্রবেশ করে।


৫| ৩০ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনার কাজ হলো গরুর রচনা লেখা, ২ নং মন্তব্যের বিপরিতে আপনি গরুর রচনা লিখেছেন। আমাদের নবী যখন জীবিত ছিলেন, উনার সাহাবীদের মাঝে কতজন লিখতে পড়তে পারতেন? মানুষ পড়তে না জানলে বড় কোন কিছু মুখস্হ রাখতে পারেন না; যারা পড়তে পারতেন না, তারা কোন সুরার কোন আয়াত এগুলো সাজিয়ে রাখতে পারার কথা নয়।

নবী মুসা(আ: ) বই লিখলেন নিজে, রাজা ডেভিড বই লিখলেন নিজে, ঈশা (আ: ) কথাগুলোকে লিপিবদ্ধ করলেন উনার সাগরেদরা; ইসলামের বেলায়, উহা কেন আকাশ থেকে এলো?

৩১ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১২:৪১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: চাদগাজী ভাই,যদিও আপনাকে ধন্যবাদ দেয়া যায়না এধরনের মন্তব্য এর জন্য তবুও ধন্যবাদ।৷ দেশে প্রচলিত একটা প্রবাদ আছে " উলুবনে মুক্তা ছড়ানো ".। এটা অনেকটাই মিলে যায় আপনার মন্তব্যের সাথে। কেউ যদি বুঝতে না চায় বা নিজেকে বিশেষ কিছু একটা ভাবে তাহলে তাকে বুঝানোর চেস্টাই বৃথা।৷৷৷ ঈমান এবং কুফর তথা মোনাফেকী যে কোন একটা বেছে নেয়ার অধিকার সবার ই আছে। আর হেদায়েত সবার নসিবে থাকেনা। আল্লাহ যার জন্য হেদায়েত নসিব করেন সেই হেদায়েত প্রাপ্ত হয়।আল্লাহ আপনাকে-আমাকে বুজার তওফিক দান করুন এবং হেদায়েত নসিব করুন।

৬| ৩০ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৪৩

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: বর্তমানে কয় রকম কোরান প্রচলিত আছে?

৩১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:২৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নুরুলইসলা০৬০৪ ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য।


হযরত উসমান (রাঃ) সংকলনের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সারা পৃথিবীতে একই রকম (একই ফরম্যাট এবং সুরা,কেরাত,আয়াত সংখ্যা এবং পারা ) কোরান প্রচলিত আছে তবে অনারবদের সুবিধার জন্য তথা সহিহ ভাবে কোরান তেলওয়াতের জন্য নুকতা,হরকত তথা যের, যবর ও পেশের সংযোজন করা হয়।আর তাই সারা দুনিয়ায় নুকতা সহ এবং নুকতা ছাড়া এই দুই ভাবে আল কোরান দেখা যায়।

হজরত উসমান গণী (রাযিআল্লাহু আনহু) পবিত্র কোরআন সংকলন করেন। তখন পবিত্র কোরআনুল কারীমে নুকতা, যের, যবর ও পেশ ছিলো না। তাই অনারবদের পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করতে কষ্ট হতো। তারপর ইসলাম আরো বিস্তৃত হয়। তখন প্রয়োজন দেখা দেয় পবিত্র কোরআনুল কারীমে নুকতা, যের, যবর, পেশ লাগানোর। যেন আরব, অনারব, সাধারণ, বিশিষ্ট্য সকলে বিশুদ্ধভাবে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করতে পারে। এ লক্ষ্যে কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। নিম্নে এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো।

নুকতা,হরকত তথা যের, যবর ও পেশের সংযোজন - আরবদের তেলাওয়াতকারীরা এত বেশি অভ্যস্ত ছিলেন যে, নুকতা ছাড়া তেলাওয়াত করতে কোনো অসুবিধা হতো না। বাক্যের পূর্বাপর অবস্থা দেখে, সাদৃশ্যপূর্ণ হরফগুলোকে খুব সহজেই পৃথক করতে পারতেন। বিশেষ করে, পবিত্র কোরআনুল কারীমে বিভিন্ন জায়গায় সংশয় এজন্য তৈরি হতো না যে, এর সংরক্ষণ লেখার ওপর ছিলো না বরং ছিলো হিফজ বা মুখস্থের ওপর। তাই কোথাও সংশয় তৈরি হলে সরাসরি হাফেজদের দ্বারস্থ হয়ে সংশয় নিরসন করে নিতেন।হজরত উসমান রাযিআল্লাহু আনহু পবিত্র কোরআনের কপিগুলো বিভিন্ন এলাকায় পাঠানোর সময়, প্রতিটির সঙ্গে একজন করে কারীও পাঠিয়ে ছিলেন; যারা ঐ এলাকার লোকদেরকে সহীহ শুদ্ধভাবে তেলাওয়াত শিখাবে।

পবিত্র কোরআনে নুকতা সর্বপ্রথম কে লাগিয়েছেন, এ বিষয়ে ঐতিহাসিকদের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। কনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় এ কাজ সর্বপ্রথম আবুল আসওয়াদ দুয়াইলি (রাহ.) করেছেন। কোনো কোনো ঐতিহাসিক মত দিয়েছেন, এ কাজ তিনি হজরত আলী রাযিআল্লাহু আনহু এর নির্দেশে করেছিলেন। কেউ কেউ মত দিয়েছেন, কুফার গভর্নর যিয়াদ ইবনে আবু সুফিয়ান আসওয়াদ দুয়াইলি দ্বারা এ কাজ করিয়েছিলেন।আর এক বর্ণনায় পাওয়া যায়, এ মহৎ কাজ ইরাকের এক সময়ের গভর্নর হাজ্জাজ বিন ইউসূফ, হজরত হাসান বসরী (রাহ.) ইয়াহইয়া ইবনে ইয়ামার ও নসর ইবনে আসেম লায়সি দ্বারা আঞ্জাম দিয়েছিলেন।
নুকতার ন্যায় শুরুতে পবিত্র কোরআনুল কারীমে হরকতও (যের, যবর ও পেশ) ছিলো না। এ বিষয়েও অনেক মতপার্থক্য যে, সর্বপ্রথম কে হরকত লাগিয়েছিলেন? কেউ কেউ বলেছেন, একাজ আবুল আসওয়াদ দুওয়াইলি (রাহ.) আঞ্জাম দিয়েছেন। আর কারো কারো মত, হাজ্জাজ বিন ইউসুফ পূর্বক্তো তিন ব্যক্তি দ্বারা এ কাজ করিয়েছিলেন।
এ সংক্তান্ত সকল বর্ণনাগুলো সামনে রাখলে বুঝা যায়, হরকত সর্বপ্রথম আবুল আসওয়াদ দুয়াইলিই (রাহ.) আবিস্কার করেন। কিন্তু তার আবিস্কৃত হরকত, বর্তমান হরকতের ন্যায় ছিলো না। তখন যবরের জন্য হরফের ওপর একটি নুকতা, যেরের জন্য হরফের নিচে একটি নুকতা ও পেশের জন্য হরফের সামনে এক নুকতা দেওয়া হতো। দুই যবর হলে ওপরে দুই নুকতা, দুই যের হলে নিচে দুই নুকতা আর পেশের জন্য সামনে দুই নুকতা দেওয়া হতো।

পবিত্র আল কোরআনের ত্রিশ পারা:

বর্তমানে পবিত্র কোরআনুল কারীমকে ত্রিশটি অংশে ভাগ করা হয়েছে, যাকে ত্রিশ পারা বলা হয়। পারার এই ভাগ অর্থ হিসেবে নয়, বরং বাচ্চাদের পড়ানোর সুবিধার্থে। তাই অনেক সময় এমন হয় একটি বিষয়ের মাঝে পারা শেষ হয়ে যায়। নিশ্চিতভাবে বলা মুশকিল, কে এই ত্রিশ পারার ভাগটি করেছেন।
কোনো কোনো ঐতিহাসিকের মত হলো, হজরত ওসমান (রা.) পবিত্র কোরআন জমা করার সময় এ ভাগটি করেছিলেন। কিন্তু পূর্ববর্তীদের কিতাবাদিতে তার কোনো প্রমাণ পাওয় যায় না। বদরুদ্দীন জারকাশি (রাহ.) লিখেন, ‘কোরআনের ত্রিশ পারার ভাগ চলে আসছে এবং মাদরাসার পবিত্র কোরআনের কপিগুলোতে এই ভাগটি রয়েছে।’ বাহ্যিকভাবে মনে হয়, এই ভাগ সাহাবায়ে কেরামের যুগের পর পবিত্র কোরআনের শিক্ষা দেওয়ার সুবিধার্থে করা হয়েছিলো।

৭| ৩০ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৫৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আল কোরান একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা । কোরানকে আটকে ধরলে পথভ্রষ্ট কেউ হবে না। কিন্তু দুঃখজনক হলো আরবী বিশারদ পণ্ডিতগণ নিজেরমত করে আরবীর অর্থ ও ব্যাখ্যা করে

৩১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৪৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নেওয়াজ আলি ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য।

ঠিক তাই ।আল কোরান একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা যাকে আকড়ে ধরলে বা তার কথামত চললে কারো পথভ্রষ্ট হবার কোন সম্ভাবনা নেই।

আর ভাই, আরবীয়দের মাতৃভাষা আরবী এবং তার এর অর্থ ও ব্যাখ্যা অনারবদের থেকে ভাল বুঝেন। তবে যে যেভাবেই ব্যাখ্যা করুক না কেন কোরআনের তথা ধর্মের মৌলিক বিষয়গুলি নিয়ে কারো মাঝে কোন দ্বিমত নেই। কিছু কিছু মতভিন্নতা আছে বিশদ ব্যাখ্যায়।আর যখন কোন বিষয় ব্যাখ্যা করা হয় মুল বিষয় ঠিক রেখে একেক জনের ব্যাখ্যা একেক রকম হতে পারে তাতে মুল বিষয়ে কোন প্রভাব পড়েনা।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে পবিত্র কোরআনের আলোয় আলোকিত হওয়ার তাওফিক দান করুন।

৮| ৩০ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:২৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কোরআন একটি স্থায়ী মোজেজা।

৩১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৫৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই,আপনার মন্তব্যের জন্য।

আল কুরআন ইসলামের প্রধানতম ধর্মগ্রন্থ এবং পুরোপুরী নির্ভুল একটি কিতাব। এটি মহান স্রষ্টা আল্লাহর পক্ষ থেকে ইসলামের শেষ নবী মুহাম্মদ এর উপর অবতীর্ণ হয়। ইসলামের সকল আইনের মূল উৎস এবং প্রামাণ্য দলিল হিসেবে কুরআনের অবস্থান সর্বাগ্রে। ইসলামের অনুসারীরা বিশ্বাস করেন, কুরআন সকল প্রকার বিতর্ক, সন্দেহ, সংশয় ও ত্রুটির উর্ধ্বে (যদিও এর সমালোচনাকারীরা নানা রকম সন্দেহ করে বা নানা কথা বলে)।এটি স্থায়ী, সর্বজনীন এবং মানব (মুসলিম) জীবনের পথের দিশা স্বরুপ।

৯| ৩০ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ আমার মন্তব্যে বিরক্ত না হয়ে উত্তর দেওয়ার জন্য।

৩১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৫৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আপনাকেও আবারো ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই,আপনার প্রতিমন্তব্যের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.