নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

" নেতানিয়াহু " - এক নজরে নেতানিয়াহুর ১২ বছরের শাসনকাল ও ইসরাইলের দীর্ঘসময়ের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বিদায় এবং নাফতালি বেনেটের প্রধানমন্ত্রী পদে বিজয় - ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানের সম্ভাবনা কতটুকু ?

২৮ শে জুন, ২০২১ দুপুর ১:১২


ছবি - biography.com

" বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু " যার জন্ম ২১ অক্টোবর ১৯৪৯ এবং তিনি হলেন ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও বর্তমানে নেসেটের সদস্য হিসেবে এবং লিকুদ পার্টির সভাপতি হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।তেল আবিবের ধর্মনিরপেক্ষ ইহুদি পরিবারে জন্ম নেওয়া নেতানিয়াহু ইসরাইলি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর প্রথম ইসরায়েলি ও ইসরায়েলের ইতিহাসের সবথেকে দীর্ঘকালীন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।নেতানিয়াহু এমন একজন মানুষ, যাকে এবং যার শাসনকাল নানা-ঘটনা-দূর্ঘটনার জন্য সমগ্র বিশ্ব, বিশ্বের ইহুদি - মুসলিম জাতি নির্বিশেষে স্মরণে রাখবে দীর্ঘকাল এবং ঘটনাক্রমে ক্ষমতা হারা হলেও যার আবার ক্ষমতার দৃশ্যপটে ফিরে আসার সম্ভাবনা প্রবল।

কে এই নেতানিয়াহু -


ছবি - netanyahu.org.il

পোল্যান্ড থেকে অভিবাসী হয়ে আসা আশকেনজাই (ইউরোপীয় ইহুদি) পরিবারের বাবা বেনজিওন নেতানিয়াহু ও ফিলিস্তিনে জন্ম নেয়া সেপার্ডিক (স্পেনীয় ইহুদি) পরিবারের মা জিলা সেগালের দ্বিতীয় সন্তান বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ১৯৪৯ সালে তেলআবিবে জন্ম গ্রহণ করেন।বেনজিওন নেতানিয়াহু ছিলেন খ্যাতনামা ইসরাইলি ঐতিহাসিক। তিনি শোধনবাদী জায়নবাদে বিশ্বাস করতেন, যার মূলমন্ত্র হলো জর্দান নদীর দুই পাড়েই ইসরাইলের অবস্থান প্রসার করা এবং প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর সাথে যে কোনো প্রকার আপস প্রত্যাখ্যান করা।বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ১৯৬৩ সালে পরিবারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রে যান। ১৯৬৭ সালে ১৮ বছর বয়সে ইসরাইলে ফিরে এসে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। সামরিক বাহিনীতে তিনি "বিশেষ কমান্ডো দল সায়েরেত মাতকালে" দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধে তিনি কমান্ডো দলের ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


ছবি - thetimes.co.uk

সামরিক বাহিনীর দায়িত্ব শেষে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান। সেখানে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে স্থাপত্য বিষয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন তিনি।১৯৮২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইলি দূতাবাসে উপ-প্রধান হিসেবে যোগ দেন তিনি। ১৯৮৪ সালে জাতিসঙ্ঘে ইসরাইলের দূত হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ১৯৮৮ সালে ইসরাইলে ফিরে আসেন এবং রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। তিনি রক্ষণশীল লিকুদ পার্টিতে যোগ দেন এবং আইজ্যাক শামিরের মন্ত্রিসভায় উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।১৯৯৩ সালে তিনি প্রথমবারের মতো লিকুদ পার্টির প্রধান নির্বাচিত হন। ওই সময় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত ও তৎকালীন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক রবিনের মধ্যে পারস্পারিক স্বীকৃতি ও স্বাধীন ফিলিস্তিন গঠনের বিষয়ে স্বাক্ষরিত অসলো শান্তি চুক্তির সমালোচনা করেন তিনি।অসলো শান্তি চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ইসরাইলজুড়ে বিতর্কের মুখে ১৯৯৫ সালে এক উগ্রপন্থীর গুলিতে প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক রবিন নিহত হন। প্রধানমন্ত্রী নিহত হওয়ায় নতুন সরকার গঠনের প্রশ্নে ১৯৯৬ সালে ইসরাইলে নির্বাচন হয়। নির্বাচনে জয় লাভের পর বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পর প্রথম প্রজন্মের সন্তান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।কিন্তু বিয়ে নিয়ে কেলেংকারি ও দুর্নীতির অভিযোগে বিরোধিতায় ১৯৯৯ সালে আগাম নির্বাচন দেন নেতানিয়াহু এবং নির্বাচনে লেবার দলের কাছে পরাজিত হলে একইসাথে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের পদ হারান তিনি।

দুই বছর পর ২০০১ সালে অ্যারিয়েল শ্যারনের নেতৃত্বে লিকুদ পার্টি আবার ক্ষমতায় এলে প্রথমে পররাষ্ট্র ও পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন তিনি। কিন্তু ২০০৫ সালে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলি অবস্থান সরিয়ে আনার প্রতিবাদে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল শ্যারনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দলের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়। ফলে লিকুদ পার্টি থেকে বের হয়ে নতুন কাদিমা দল গঠন করেন শ্যারন।লিকুদ পার্টি থেকে শ্যারনের বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগে নেতানিয়াহুর জন্য দলের নেতৃত্বের পথ খুলে যায়।বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০০৯ সালে ইসরাইলের ক্ষমতায় ফেরে লিকুদ পার্টি।

২০০৯ সালে মিসরের কায়রোতে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ঐতিহাসিক ভাষণে " দুই রাষ্ট্রভিত্তিক " সমাধানের আওতায় ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কথা বলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তিনি সম্মতি দেবেন যদি, দেশটিতে কোনো সামরিক বাহিনী না থাকে, ফিলিস্তিনিরা তাদের প্রত্যাবাসনের দাবি ছেড়ে দেয় এবং অবিভক্ত জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে মেনে নেয়।

এক নজরে নেতানিয়াহুর শাসনকাল -

ভক্তদের কাছে পরম সমাদৃত ও বিরোধীদের কাছে চরম সমালোচিত ইসরাইলের রাজনীতির প্রভাবশালী চরিত্র বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ‘বিবি’ নামে পরিচিতি রক্ষণশীল লিকুদ পার্টির প্রধান এই রাজনীতিবিদ ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর পদে টানা ১২ বছরসহ মোট ১৫ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। রোববার (১৩/৬/২০২১) রাতে ইসরাইলি আইন পরিষদ নেসেটের অধিবেশনে অনুষ্ঠিত আস্থা ভোটে নেতানিয়াহুর বিরোধী জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে তার দীর্ঘ শাসনের অবসান হয়।


ছবি - afp.com

ইসরাইলের রাজনীতিতে প্রভাবশালী এই নেতা এর আগে ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে ১৯৯৯ সালে এক আগাম নির্বাচনে পরাজয়ের পর ক্ষমতা ছাড়তে হয় তাকে।এর ১০ বছর পর আবার নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তখন থেকে চার বছরের মেয়াদে মোট চার দফায় সরকার গঠন করেন তিনি। তার শাসন আমলের উল্লেখযোগ্য বিষয়ের মাঝে -

নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সমাধি রচনা করেন -

দীর্ঘদিনের শাসন ক্ষমতায় থাকাকালে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়াকে অচল করার সব প্রচেষ্টাই নিয়েছেন তিনি। তার শাসনকালেই জর্দান সংলগ্ন জেরুসালেমসহ অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীরে অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনের কার্যক্রম প্রসারিত হয়েছে। অপরদিকে মিসর সংলগ্ন গাজা উপত্যকায় সর্বাত্মক অবরোধ জোরদার করেছেন তিনি। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের নিয়ন্ত্রিত এই ভূখণ্ডে তার শাসনামলে চার বার আগ্রাসন চালিয়েছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী।

গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ -

ফিলিস্তিনে ২০০৬ সালে সাধারণ নির্বাচনে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জয় লাভ করলেও তাদের ক্ষমতায় যেতে দেয়া হয়নি। ঘটনার ধারাবাহিকতায় তারা মিসর সংলগ্ন গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিলে ইসরাইল মিসরের সহায়তায় ২০০৭ থেকে ওই ভূখণ্ডের ওপর সর্বাত্মক
অবরোধ আরোপ করে।


ছবি - aljajira.com

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার এই অবরোধ আরো জোরালো করে। গাজার বাইরে থেকে সব ধরণের মানবিক সাহায্য প্রবেশের পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। এমনকি গাজার সমুদ্রসীমায় জেলেদের মাছ ধরার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।অবরোধ ভাঙতে ২০১০ সালে তুরস্কের উদ্যোগে ‘মাভি মারমারা’ নামে এক ত্রাণবাহী জাহাজ গাজা বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় ওই জাহাজে হামলা চালিয়ে ইসরাইলি সৈন্যরা ১০ ত্রাণ কর্মীকে হত্যা করে এবং জাহাজটি আটক করে নিয়ে যায়।

সর্বাত্মক অবরোধের সাথে সাথে গাজায় নেতানিয়াহুর শাসনামলে চার দফা আগ্রাসন চালায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সর্বশেষ চলতি বছরের ১০ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত টানা ১১ দিন গাজায় আগ্রাসন চালায় ইসরাইলি বাহিনী। গাজায় এই আগ্রাসনে মোট ২৫৪ ফিলিস্তিনি নিহত ও এক হাজার নয় শ' ৪৮ জন আহত হয়েছেন।


ছবি - bbc.com

মাভি মারমার দূর্ঘটনা -

ইসরাইল ২০০৮-২০০৯ সালের দিকে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি নগরিকদের ওপর ব্যাপক হামলা চালায়। সেই আক্রমণকে " রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস " হিসেবে অভিহিত করেছিলেন ধীরে ধীরে নিজেকে ইমলামপন্থী নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে থাকা তুর্কি নেতা এরদোয়ান।এরপর ২০১০ সালে ইসরায়েলের দেয়া গাজা অবরোধ ভাঙতে খাদ্য-ওষুধ সহায়তা নিয়ে গাজামুখী যায় তুর্কি জাহাজ 'মাভি মারমারা'। সেটিতেও হামলা চালায় ইসরায়েল। এ হামলায় ৯ তুর্কি নাগরিক ও এক মার্কিন-তুর্কি সহায়তাকর্মী নিহত হন। এর পরই দেশ দুটির মধ্যকার দীর্ঘ কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।

তুর্কি-ইসরাইল উভয় দেশ একসময় ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল, তবে ৩১ মে ২০১০-তে গাজার অবরোধ ভঙ্গ করার জন্য একটি সহায়তাকারী ক্ষুদ্র জাহাজের বহরে অংশকারী একটি জাহাজে ইসরায়েল কমান্ডোদের হামলার ফলে ১০ তুর্কি নাবিককে হত্যা করার পরে সম্পর্ক ভেঙে যায়।জাহাজের বহরের ছয়টি জাহাজ ইসরায়েলি উপকূল থেকে ১৩০ কিলোমিটার (৮০ মাইল) দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় চড়েছিল।ইসরাইলী কমান্ডোরা হেলিকপ্টার থেকে দড়িতে নেমে তুরস্কের মালিকানাধীন " মাভি মারমারা " বৃহত্তম জাহাজে উঠেছিলেন। সংঘর্ষের সাথে সাথেই ইসরাইলি কমান্ডোরা গুলি চালায়। এটি বিতর্কিত। জাহাজের লোকেরা-নাবিকেরা বলছেন যে কমান্ডোরা ডেকে নেমেই সাথে সাথে গুলি শুরু করেছিল। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন যে তাদের কাছ থেকে নেওয়া ক্লাব, ছুরি এবং একটি বন্দুক নিয়ে আক্রমণ করার পরে কমান্ডোরা গুলি চালিয়েছিল। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর দ্বারা প্রকাশিত ভিডিওগুলি শুটিং শুরুর ঠিক আগে থামে। জাতিসংঘের একটি তদন্তে স্পষ্টতই নির্ধারণ করতে অক্ষম ছিল যে কমান্ডোরা সরাসরি গুলি ব্যবহার করেছিল।নিহত সকলেই তুর্কি ছিলেন, যদিও কারও দ্বৈত তুর্কি-মার্কিন জাতীয়তা ছিল। সবাই মাভি মারমারা ভ্রমণ করছিল।

বলা বাহুল্য, এই ঘটনায় কূটনৈতিক স্তরে ইসরায়েল এমন এক কঠিন চাপের মুখে পড়েছিল, যা এক কথায় অভূতপূর্ব৷ তখন ন্যাটোর এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ প্রায় সব সদস্যই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করছিলেন৷ গাজার উপর থেকে ইসরায়েলের ৩ বছরের অবরোধ তুলে নেওয়ার ডাক দিয়েছিল জার্মানি সহ অনেক দেশ৷ তবে শেষ পর্যন্ত কোনো প্রস্তাবের খসড়া সম্পর্কেই চূড়ান্ত ঐক্যমত অর্জন করা সম্ভব হয় নি।ইসরাইল যে কাজ করেছে,সহজ ভাষায় একে ডাকাতি ও জলদস্যুতা বলা যেতে পারে৷ রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে হত্যা করা হয়েছে৷ এর পক্ষে কোনো অজুহাত, কোনো যুক্তি থাকতে পারে না৷’’আর এর ফলে ইসরাইলের ভাবমূর্তি যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মারাত্মক ভাবে ক্ষতি হয়েছেিল।

ফ্লোটিলার উদ্দেশ্য কী ছিল?

গাজায় আরোপিত ইসরাইলের অবরোধ অবৈধ এবং এই ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আর্কষন করা এবং অবরোধে জর্জরিত গাজায় সহায়তা প্রদান ও এই অঞ্চলে ইসরায়েলি - মিশরীয় অবরোধ ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করেছিল। জাহাজের বহরে স্কুল সরবরাহ, বিল্ডিং উপকরণ এবং দুটি বৃহত বিদ্যুত জেনারেটর সহ ১০,০০০ টন পণ্য বহন করা হয়েছিল। নেতাকর্মীরা আরও বলেছিলেন যে তারা এই অবরোধের বিষয়ে জনমত তৈরি করতে চেয়েছিলেন যে, গাজা অবরোধ আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে অবৈধ ছিল।

কে বা কারা এটি আয়োজন করে

" গাজা মুভমেন্ট " অসংখ্য দেশের কর্মীদের জন্য একটি দাতব্য সংস্থা এবং একটি তুর্কি গোষ্ঠী হল ফাউন্ডেশন ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ফ্রিডমস অ্যান্ড হিউম্যানিস্টিভ এইড (আইএইচএইচ)।ইসরায়েলি সরকার বলেছে যে ,আইএইচএইচ ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থী আন্দোলন হামাসের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।এটিকে তারা একটি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী হিসাবে বিবেচনা করে এবং আত্মঘাতী বোমা হামলার সমর্থক ইউনিয়ন অফ দ্য গুড নামে আরেকটি সংগঠনের সদস্য। তবে, তুর্কি সরকার আইএইচএইচকে একটি বৈধ দাতব্য হিসাবে বিবেচনা করে এবং তুর্কি সরকার ইসরাইলকে ফ্লোটিলাটি গাজায় প্রবেশ করতে দেবার জন্য অনুরোধ করেছিল। আর ইসরায়েল
এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকারী হামাসকে চাপ দেওয়ার জন্য গাজায় প্রচুর পরিমাণে পণ্য পৌঁছাতে বাধা দেয়।অতীতে ইসরায়েল কয়েকটি জাহাজকে গাজায় পৌঁছানোর অনুমতি দিয়েছিল আবার অনেকটিকে অন্যদের ফেরতও পাঠানো হয়েছে।

ইরানের বিরুদ্ধে জোরালো বিরোধীতা -

ইরানের বিরুদ্ধেও শাসনের পুরো সময় জোরালো বিরোধিতা করে এসেছেন নেতানিয়াহু। মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাস ছড়ানো ও পরমাণু অস্ত্র অর্জনের বিষয়ে ইরানের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবেই অভিযোগ করে আসছিলেন তিনি। দেশটির ওপর সর্বাত্মক অবরোধের জন্য তিনি আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন।২০১৫ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনকালীন সময়ে ইরানের সাথে ছয় দেশের সম্পাদিত পরমাণু চুক্তির প্রবল বিরোধিতা করেন নেতানিয়াহু। পরে ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলে তাতে স্বাগত জানান তিনি।


ছবি - timesofisrael.com

আরব ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সাথে কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রয়াস -


ছবি - foreignpolicy.com

নেতানিয়াহুর সময়েই আরব ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সাথে কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রয়াস নেয়া হয়। বিশেষ করে উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে ফিলিস্তিন ইস্যু গৌণ করার চেষ্ট করেন।এর অংশ হিসেবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে কথিত ‘ইবরাহীমি চুক্তির’ বা "ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি" আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সাথে কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ইসরাইল। পরে সুদান ও মরক্কো এই চুক্তিতে যুক্ত হয়।


ছবি - foreignpolicy.com

দুর্নীতির অভিযোগ -


ছবি - haaretz.com

দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকাকালে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগে ২০১৯ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, সম্পদশালী বন্ধুদের কাছ থেকে উপহার ও মিডিয়া টাইকুনদের কাছে প্রশংসামূলক কভারেজের বিনিময়ে তিনি তাদের অনৈতিক সুবিধা দিয়েছেন।নেতানিয়াহু তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগকে অস্বীকার করে আসছেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ইসরাইলি আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের জেরে জনমত গড়ে উঠে। নেতানিয়াহুর বিরোধীরা তার পদত্যাগের দাবিতে ইসরাইলজুড়ে আন্দোলন শুরু করে। অপরদিকে নেতানিয়াহুর ভক্তরাও তার সমর্থনে সমাবেশ শুরু করে।

ইস্রায়েলের ২ বছরের মধ্যে ৪টি জাতীয় নির্বাচন করেছে - কারন কি


ছবি - nytimes.com

২০১৯ সালের এপ্রিলে ইসরাইলে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।নির্বাচনে কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হয়।দেশটিতে সরকার গঠনের জন্য ১২০ আসনবিশিষ্ট আইন পরিষদ নেসেটের ৬১ সদস্যের সমর্থনের প্রয়োজন হয়।গত ২৩ মার্চ ২০২১ ইসরাইলে গত দুই বছরের মধ্যে চতুর্থ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এতেও কোনো পক্ষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি।দেশটিতে সরকার গঠনের প্রশ্নে ইসরাইলি নেসেটের সদস্যদের সাথে আলোচনা শুরু করেন ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট রিওভেন রিভলিন।

প্রথম দফা আলোচনার পর নেসেটের ৫২ সদস্য প্রধানমন্ত্রী পদে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সুপারিশ করায় এপ্রিলের শুরুতে তাকে সরকার গঠনের জন্য প্রথম মনোনয়ন দেন ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট রিওভেন রিভলিন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জিত না হলেও ওই সময় এটিই ছিল সর্বোচ্চ মনোনয়ন।কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে নেতানিয়াহুকে সমর্থন করা জিউনিস্ট পার্টি কোনো আরব দলের সাথে সরকার গঠনের অস্বীকৃতি জানানোয় তিনি সরকার গঠনে ব্যর্থ হন।


ছবি - bbc.com

নেতানিয়াহুর ব্যর্থতার পর ৫ মে,২০২১ নতুন করে নেসেট সদস্যদের সাথে আলোচনা করেন প্রেসিডেন্ট রিভলিন। নতুন আলোচনায় রক্ষণশীল ইয়ামিনা পার্টির প্রধান নাফতালি বেনেতের সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগির এক প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে মোট ৫৬ সদস্যের সুপারিশ পান ইয়েশ আতিদ দলের প্রধান ইয়ায়ির লাপিদ।২ জুন,২০২১ সরকার গঠনে নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার সামান্য আগে ইয়ায়ির লাপিদ সরকার গঠনের ঘোষণা দেন। নাফতালি বেনেতের ইয়ামিনা দল ও অন্য আরো ছয়টি দলের সাথে দীর্ঘ আলোচনা শেষে সমঝোতার পর তিনি সরকার গঠনের এই ঘোষণা দেন।এর ফলে নেতানিয়াহুর শাসনের অবসান হয় এবং তার স্থলাভিষিক্ত হলেন ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী জামিনা পার্টির নাফতালি বেনেট। তিনি দেশটির ১৩তম প্রধানমন্ত্রী হলেন।

জোট গঠনের শর্ত হিসেবে বেনেট ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর পরবর্তী দুই বছরের জন্য তিনি মধ্যপন্থী ইয়েস আতিদ পার্টির জাইর লাপিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।দেশটির সংসদে মাত্র ১ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন নাফতালি বেনেট। তার পক্ষে ৬০ এবং বিপক্ষে ৫৯ ভোট পড়ে।আর এই ১ টি ভোটই নেতানিয়াহুকে প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তে বিরোধী বেঞ্চে দাঁড় করিয়ে দেয়।তবে এটাও ঠিক,আপাতত তিনি কোথাও যাচ্ছেন না ।নেসেটেই আছেন, তিনি সেই বিরোধী চেয়ারে থাকবেন এবং সবসময় পূনরায় ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করবেন ।

এটা সত্যি, নতুন সরকার ইসরায়েলে প্রায় সবদলের দ্বারা গঠিত সরকার - তবে রাজনৈতিকদের সামান্য অসতর্কতায় এই সরকার ইসরাইলের পরিস্থিতিকে সবচেয়ে বেশী অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। নাফতালি বেনেতকে সরকারের পাশাপাশি সকল দলকে কাজগুলি কেবল দলগুলিকে একসাথে কাটাতে হবে।

ইসরাইলে কেন এমন সরকার গঠিত হয়েছে -


ছবি - bbc.com

নেতানিয়াহু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ১২ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথমে ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯, তারপরে ২০০৯ থেকে ২০২১ অবধি।সব মিলিয়ে ইসরায়েলের ৭৩ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী ৭১ বছর বয়সী নেতানিয়াহু।গত দুই বছরে ইসরায়েলে চারটি সাধারণ নির্বাচন হয়েছে। কোনোবারই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো দল। জোট সরকার গঠনেও কোনো দল সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি বলে প্রতিবার নতুন সাধারণ নির্বাচনের দিকে ধাবিত হয়েছে দেশটি।সর্বশেষ লিকুদ পার্টি বৃহত্তম দল হিসাবে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ পায় কিন্তু নেতানিয়াহু আবারও সরকার গঠনে অক্ষম হওয়ার পরে এই কাজটি ল্যাপিডের হাতে চলে যায়, যার দল নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিল।আর এদকে নেতানিয়াহুর ক্ষমতায় থাকার বিরোধিতা বেড়েছে কেবল বাম এবং কেন্দ্রের মধ্যেই নয়, ডানপন্থী দলগুলির মধ্যেও যারা সাধারনত যিমিনা সহ লিকুডের সাথে আদর্শিকভাবে সংযুক্ত।

যদিও ইয়ামিনা পার্টি মাত্র সাতটি আসন নিয়ে নির্বাচনে যৌথ পঞ্চম স্থানে এসেছিল, তবে এর সমর্থন সমালোচনা করেছিল। কয়েক সপ্তাহের আলোচনার পরে ল্যাপিড দলগুলিতে নক্ষত্রের অংশ হিসাবে ইয়ামিনাকে বোর্ডে নিয়ে আসেন যার একমাত্র সাধারণ লক্ষ্য ছিল নেতানিয়াহুকে অফিস থেকে সরিয়ে দেওয়া।সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ৬১ টি আসনের সাথে আটটি দলকে জড়িত চুক্তিটি ২ জুন,২০২১ স্বাক্ষরিত হয়েছিল, সময়সীমা নির্ধারিত হওয়ার ঠিক আধ ঘন্টা আগে তারা কার্যকরভাবে নেতানিয়াহুর ভাগ্য সিলগালা করে দেয়।

নাফতালির অধীনে ইসরাইল কি আবার যুদ্ধে জড়াবে -

ইসরাইলে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ১২ বছর শাসনের অবসান ঘটেছে ,সরকার গঠিত হয়েছে নেতানিয়াহুর এক সাবেক সহযোগী ইয়ামিনা পার্টির প্রধান নাফতালি বেনেতের নেতৃত্বে। সরকার গঠন করা দলের মধ্যে অতি ডান, বাম, মধ্যপন্থী আর আরব-ইসরাইলি দলও রয়েছে। ভঙ্গুর সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোটটি ক্ষমতায় এলেও এর পেছনে বাইডেন প্রশাসনের সমর্থন রয়েছে বলে মনে হয়। নাফতালি বেনেতের নীতি কৌশল কতটা নেতানিয়াহু থেকে আলাদা হবে এ মুহূর্তে সেটি কল্পনা করা কঠিন।নাফতালির ভুমিকা ইসরাইলের বৃহত্তর
স্বার্থের অংশ হলেও কৌশলের বাস্তবায়নগত ভিন্নতা দেখা যেতে পারে নেতানিয়াহুর সাথে। তবে যুদ্ধবাজ হিসাবে নাফতালির পরিচিতি রয়েছে।

ইসরাইলের রাজনৈতিক ঐতিহ্য হলো, যে কোন সঙ্কটে ফিলিস্তিনিদের ওপর নানা অজুহাতে হামলা চালানো। গাজার সাম্প্রতিক সামরিক হামলার বিষয়ে যুদ্ধবিরতি স্থায়ী রূপ পাওয়ার আগেই নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে। শেখ জাররাহতে নতুন করে শুরু করা হয়েছে আরব উচ্ছেদ অভিযান। বায়তুল মুকাদ্দাসে মুসল্লিদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি বেলুন উড়ানোর অজুহাত দেখিয়ে গাজায় নতুন করে বিমান হামলাও চালানো হয়েছে। পশ্চিম তীরে দু’জন ফিলিস্তিনি গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। এসবের পেছনে যে গাজায় আরেক দফা হামলা চালানো, সেটি সম্ভবত এখন আর অস্পষ্ট নেই। নাফতালি মনে করছেন, নেতানিয়াহুর যুদ্ধ ব্যর্থতার পর গাজায় পুনর্গঠন শুরু হওয়ার আগেই আবার হামলা চালিয়ে তার সরকারের শক্তিমত্তার জানান দিলে জাতীয়তাবাদী চেতনা তার পক্ষে থাকবে।

কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি ইসরাইলের ইচছা অনুসারে এগোবে বলে মনে হয় না। এই যুদ্ধে ইসরাইল সুস্পষ্ট পরাজয়ের সম্মুখীন হওয়ার অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। আগের যুদ্ধে হামাস তার পুরো শক্তি প্রদর্শন করেনি। এবার ইসরাইল যেমন যুদ্ধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে পারে ঠিক সেভাবে হামাসের পেছনে পাল্টা শক্তির মদদ বাড়তে পারে। আরেক দফা গাজা আক্রমণ হলে হিজবুল্লাহ, সিরিয়া এবং ইরান যেভাবেই হোক তার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়তে পারে। মিসরের সিসি সরকার কাতার, তুরস্ক ও হামাসের সাথে বৈরিতা কমানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইরানের সাথেও যোগসূত্র তৈরির চেষ্টা করছে। মিসরে ব্রাদারহুডের ১২ জন নেতার সর্বোচ্চ আদালতে ফাঁসির আদেশ বহাল রাখায় স্পষ্ট যে, দলটির সাথে এখনো সম্পর্ক নতুন করে যাত্রা শুরুর অবস্থায় যায়নি। তবে ফিলিস্তিনের সাথে নতুন সংঘর্ষে ইসরাইল তার গতানুগতিক মুসলিম মিত্রদেরও পাশে না পাওয়ার সম্ভাবনাই রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারে কেবল সংযুক্ত আরব আমিরাত।

মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সূত্রের পূর্বাভাস অনুসারে, ইসরাইল চেষ্টা করছে আরেক দফা গাজায় অভিযান চালানোর অজুহাত সৃষ্টি করার। এ ধরনের কিছু সত্যি সত্যি নাফতালি বেনেত শুরু করলে আন্তর্জাতিক সমর্থন ইসরাইলের আরো কমে যেতে পারে। আর এই যুদ্ধে চীন-রাশিয়ার মতো শক্তিও যুক্ত হয়ে যেতে পারে।

নতুন সরকার কেমন হবে বা ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংকট সমাধানে নতুন এই সরকারের অবস্থান কী হতে পারে -

ইসরায়েলের ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর এখন দুটো প্রশ্ন সামনে চলে আসছে -
১। নানা মত ও পথের সমন্বয়ে এই কোয়ালিশন আদৌ কতদিন টিকবে?
২। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংকট নিয়ে নতুন এই সরকারের অবস্থান কী হবে?



ছবি - thenationalnews.com

নাফটালি বেনেটের রাজনৈতিক আদর্শ, তার বিশ্বাস, ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে তার অতীতের বক্তব্য-বিবৃতি বিবেচনা করলে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আশাবাদী হওয়ার কোনো কারণ আপাতদৃষ্টিতে নেই।৪৯ বছরের নাফটালি বেনেট একসময় নেতানিয়াহুর খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ২০০৬ সাল থেকে দুবছর তিনি নেতানিয়াহুর চিফ অব স্টাফ হিসাবে কাজ করেছেন। ২০০৮ সালে অবশ্য তার সাথে নেতানিয়াহুর মনোমালিন্য তৈরি হয় এবং লিকুদ পার্টি থেকে বেরিয়ে তিনি কট্টর ইহুদি দল জিউয়িশ হোম পার্টিতে যোগ দেন এবং ২০১৩ সালে প্রথম এমপি হিসাবে নির্বাচিত হন।

তার কট্টর ডানপন্থী আদর্শ নিয়ে তার কোনো রাখঢাক নেই। বিভিন্ন সময় বড়াই করে তিনি বলেছেন , নেতানিয়াহুর চেয়েও তিনি বেশি ডানপন্থী। অতি ধার্মিক ইহুদিদের মত অধিকাংশ সময়ে মাথায় কিপা (এক ধরণের টুপি) পরে থাকেন। উদারপন্থী ইহুদিদের সুযোগ পেলেই উপহাস করেন।বলতে গেলে নাফতালি বেনেট ইহুদি জাতীয়তাবাদ এবং জাত্যভিমানের এক প্রতীক।

অধিকৃত পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম এবং সিরিয়ার কাছ থেকে দখল করা গোলান মালভূমির ওপর ইসরায়েলের স্থায়ী কর্তৃত্ব এবং সার্বভৌমত্ব কায়েমের পক্ষে তিনি। কট্টর ইহুদিদের মত তিনি বিশ্বাস করেন, ঐতিহাসিকভাবে এসব এলাকা ইসরায়েলের এবং সে কারণে পশ্চিম তীরকে তিনি সবসময় হিব্রু বাইবেলে বর্ণিত ‘জুদেয়া-সামারিয়া‘ নামে অভিহিত করেন।


ছবি - bbc.com

পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের কট্টর সমর্থক তিনি। একসময় তিনি ইহুদি বসতি-স্থাপনকারীদের সংগঠন ইয়েশা কাউন্সিলের প্রধান ছিলেন। তাকে মানুষ চেনে বসতি-স্থাপনকারীদের নেতা হিসাবে।স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ঘোর বিরোধী তিনি। বিভিন্ন সময় তিনি ফিলিস্তিন সমস্যাকে তিনি ইসরায়েলের গোদের উপর বিষফোঁড়া বলে বর্ণনা করেছেন।গত ফেব্রুয়ারি মাসে টিভিতে এক সাক্ষাৎকারে নাফটালি বেনেট বলেছিলেন, " যতক্ষণ আমার হাতে কোনো ক্ষমতা এবং নিয়ন্ত্রণ থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ইসরায়েলের এক সেন্টিমিটার জমি আমি ছাড়বো না"।

এখন প্রশ্ন, ক্ষমতায় গিয়ে কি নাফতালি বেনেত তার এতদিনের আদর্শের সাথে আপোষ করবেন বা ভিন্ন পথে হাঁটবেন -

জেরুজালেমে সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক হারিন্দার মিশ্র মনে করেন, ক্ষমতায় গিয়ে শরিকদের সাথে আপোষ করা ছাড়া হয়তো বেনেটের কোন উপায় থাকবে না। পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি হোক বা ইসরায়েলে সমকামীদের অধিকারের প্রশ্ন হোক - যে কোনো ইস্যুতেই কোয়ালিশন শরীকদের মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হবে। কিন্তু সরকার টিকিয়ে রাখতে যে আপোষ করতে হবে, সেটা তারা সবাই অনুধাবন করেন।হারিন্দার মিশ্র বলেন দুটো ভীতির কারণে এই কোয়ালিশন হয়ত টিকে থাকতে পারে এবং বেনেটকে অনেক বিষয়ে নমনীয় হতে দেখা যেতে পারে।

প্রথমতঃ - নাফতালি বেনেত এবং শরীকরা জানেন তাদের ভেতর মত-পার্থক্য চরমে গেলে আবার নেতানিয়াহু ক্ষমতায় ফিরে আসবেন।
দ্বিতীয়তঃ - এই শরীকে যোগ দিয়ে নাফতালি বেনেট নিজেও বিরাট ঝুঁকি নিয়েছেন। তার সমর্থকরা তার উপর ক্ষুব্ধ। সুতরাং এই সরকার যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে ইসরায়েলের রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারেন বেনেট। ফলে সেই ভয়েই তিনি আপোষ করবেন বলে ধারণা করা হচছে। আর পরিস্থিতির চাপে আপোষ তাকে করতেই হবে।

তবে, পশ্চিম তীরের ইহুদি বসতি এবং ফিলিস্তিনিদের সাথে আলোচনা শুরুর মত স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নতুন সরকার এখনি বা এই মুহূর্তে এড়িয়ে চলবে বলেই মনে হয়।বেনেতের সরকার ইসরায়েলের ৭৩ বছরের ইতিহাসে যেমনটি ঘটেছে তার বিপরীতে হবে।এই জোটে এমন দল রয়েছে যেগুলির মধ্যে রয়েছে বিশাল আদর্শিক পার্থক্য এবং সম্ভবত সবচেয়ে সম্ভাব্য ক্ষমতাসীন জোটের অংশ হওয়া প্রথম স্বতন্ত্র আরব দলটিও এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আরও আছে রেকর্ড সংখ্যক মহিলা মন্ত্রীর সংখ্যা ।


ছবি - timesofisrael.com

রাম এবং বামপন্থী অ-আরব ইসরায়েলি দলগুলির অন্তর্ভুক্তির অর্থ ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলি নীতিমালা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিতে পারে।ইয়ামিনা এবং অন্য একটি ডানপন্থী দল নিউ হোপ ইসরায়েলি-অধিষ্ঠিত পশ্চিমে ইহুদি বন্দোবস্তের কট্টর সমর্থক।সামাজিক নীতিগুলি নিয়েও অসুবিধা হতে পারে - কিছু পক্ষ সমকামী বিবাহকে স্বীকৃতি দেওয়ার মতো সমকামী অধিকারগুলি এগিয়ে নিতে চায়, রাম নামে একটি ইসলামপন্থী দল এর বিরোধী।তদুপরি, কিছু পক্ষ ইয়ামিনার চেয়ে একটি জাতীয়-ধর্মীয় দল - এর চেয়ে আরও ব্যাপকভাবে ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞাগুলি শিথিল করতে চায়।

এদিকে, বেনেত ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তাঁর সরকার অর্থনৈতিক সমস্যা বা করোনা ভাইরাস মহামারীর মতো চুক্তি যেগুলি খুব জরুরী এমন ক্ষেত্রগুলিতে মনোনিবেশ করবে এবং বেশি বিতর্কিত বিষয়গুলি এড়িয়ে চলবে।কোয়ালিশনের মধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পর নাফতালি বেনেত বলেন, " তার সরকার ইসরায়েলের সব নাগরিকের জন্য সমানভাবে কাজ করবে - ধার্মিক, ধর্ম-নিরপেক্ষ, অতি-ধার্মিক, আরব -ইহুদি সবার জন্য সমানভাবে সরকার কাজ করবে কাজ করবে। আমার বিশ্বাস আমরা সফল হবো"।তিনি আরো বলেছেন, "কাউকেই তাদের আদর্শ ত্যাগ করতে হবে না, তবে সবাইকে তাদের কিছু স্বপ্নের বাস্তবায়ন স্থগিত করতে হবে ... আমরা যা অর্জন করতে পারি তার দিকে মনোনিবেশ করব, যা সম্ভব নয় তা নিয়ে তর্ক করার পরিবর্তে"।

এসব মন্তব্য থেকে নাফতালি বেনেত যে আপোষে প্রস্তুত তার কিছুটা ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই পাওয়া গেছে। বেশীরভাগ ফিলিস্তিনিই মনে করেন ইসরায়েলে ক্ষমতার রদবদলে তাদের ভাগ্যের তেমন কোনো বদল হবেনা।তবে, আরব-মুসলিম একটি দলের (মনসুর আব্বাসের ইউনাইটেড আরব লিস্ট) সমর্থন পেতে ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি আরব নাগরিকের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কিছু সমঝোতা হয়েছে। আরব শহরগুলোতে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং সেই সাথে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের অনুমোদন-হীন বাড়ি ভাঙ্গা বন্ধ রাখার চুক্তি হয়েছে।এ থেকে আশা করা যায়, নতুন সরকার অন্তত মন্দের ভালো হতে পারে। তাদের জীবনমানের কিছু উন্নতি হয়তো হবে। তবে সময়ই সব কিছু বলে দিবে নতুন সরকার কতটা ভাল বা মন্দ হবে।

তথ্যসূত্র - বিবিসি,আল জাজিরা,টাইমস অফ ইসরায়েল,আরব নিউজ,নয়া-দিগন্ত (১৫/০৬/২০২১)

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০২১ দুপুর ২:৪০

রানার ব্লগ বলেছেন: নেতানিয়াহু আর নাফতালি বেনেট মুদ্রার এই পিঠ আর ওই পিঠ !!!

২৮ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৫:৩৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ রানার ব্লগ ভাই ,আপনার মন্তব্যের জন্য ।

একদম সঠিক ।নেতানিয়াহু - নাফতালি একই জিনিষ।শুধু লেবেল আর বোতল ভিন্ন।

২| ২৮ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৩:০৫

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: অত্যন্ত চমৎকার বিশ্লেষণ।

২৮ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৫:৩৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ দেশ প্রেমিক বাঙালী ভাই ,আপনার মন্তব্যের জন্য ।

আবারো ধন্যবাদ কষ্ট করেএত দীর্ঘ পোস্ট পড়া এবং মন্তব্য করার জন্য।

৩| ২৮ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৪:২৫

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ইজরায়েলে মানুষ বদলায়, চেয়ার আর প্যালেস্টাইনের ব্যাপারে নীতি একই থাকে। কাজেই প্যালেস্টাইন নিয়ে নতুন কিছু ঘটবে না। সেই কুমীরের খাজকাটা....খাজকাটা.......খাজকাটা!!! :(

নাফতালি বেশী নাপতালি করলে বেশীদিন টিকতে পারবে না। কট্টরপন্থীদের কোপানলে পড়তে হবে তাকে.......কারন, ইজরায়েল রাষ্ট্রটাই একটা কট্টরপন্থী রাষ্ট্র। নেতানিয়াহু'র নেতা হয়ে ওঠার বয়ান জানলাম। তবে লেখাটা বিশাল। পর্ব আকারে দিলে পারতেন।

২৮ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৫:৪৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ ভুয়া মফিজ ভাই ,আপনার চমতকার মন্তব্যের জন্য ।

আসলে এটাই জাতীয়তাবাদের চরিত্র। নেতা পরিবর্তন হয় বা হবে তবে নীতির পরিবর্তন হবেনা।আর ইসরাইলের ব্যাপারে একথা শতভাগ প্রযোজ্য। যে নামেই বা যে কেউই ক্ষমতায় আসুক না কেন ,সে দেশের অনুসৃত প্রধান নীতি (দখল-আক্রমণ) থেকে কেউ বাইরে আসবেনা বা আসার চেষ্টাও করেনা। কারন,তাদের সামনে উদাহরন আছে (এরিয়েল শ্যারণ) যে , আপোষের চেষ্টা করলে কি ঘটে সেই রাজনৈতিক নেতার ভাগ্যে।

আর তাইতো কেউ আপোষের পথে পা না বাড়িয়ে কঠোর-কঠিন পথেই চলতে চায়।

নাফতালি বেনেত কে অনেক দিক ভেবে এবং চিন্তা করেই কাজ করতে হবে । তবে যাই করুক,এটা সত্যি যে - ইসরাইলি রাষ্ট্রের মৌলিক নীতিতে হাত দিবেনা এবং ইতিমধ্যেই তা দেখা যাচছে।আর বাকীরাও তাদের নিজেদের প্রয়োজনেই জোট রক্ষা করতে চেষ্টা করবে কারন প্রার্থক্য শুধু একের (৬০-৫৯)। জোটের যে কারো একটু ভূল সিদ্ধান্তই নেতানিয়াহুর ক্ষমতায় আসার পথ তৈরী করে দিবে।

আসলেই লেখাটা অনেক বড় হয়ে গেছে। ২ পর্বে দিলে ভাল হত।

৪| ২৮ শে জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৭

কামাল১৮ বলেছেন: হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।যতদিন মুসলমানরা ইসরাইল কে নিশ্চিহ্ন করতে চাইবে,ততদিন ঐ এলাকায় শান্তি আসবে না।যেটা হামাস চায়।

২৮ শে জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কামাল১৮ ভাই ,আপনার চমতকার মন্তব্যের জন্য ।

- হামাস কি সন্ত্রাসী সংগঠন ? এটা কোটি টাকার প্রশ্ন ?

হামাস তাদের দেশে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য চেষ্টা করছে।এটাই ।

তবে এখন ইসরাইল যেমন সত্য তেমনি হামাস ও সত্য ।এদের দুয়ের কাউকেই আর বাদ দেয়া যাবেনা বা কেউ কাউকে বাদ দিয়ে কিছু করতে পারবেনা। উভয়েই উভয়কে মেনে নিয়ে ,পারস্পরিক অধিকারকে শ্রদ্ধা ও সম্মানের মাঝেই উভয়ের কল্যাণ এবং রাষ্ট্রীয় শান্তি নিহিত। এখন ইসরাইল না হামাসকে শেষ করতে পারবে না হামাস ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসাবে বাদ দিতে পারবে।

৫| ২৮ শে জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনে যেহেতু ইজরায়েল নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন, একটা প্রশ্ন, যেটার উত্তর আমিসহ অনেকেই খুজছে; সম্ভবতঃ আপনি তার উত্তর দিতে পারবেন।
প্রশ্নটা হলো, হামাস ক্যান রকেট মারে? :(

২৯ শে জুন, ২০২১ দুপুর ১:৪৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ ভুয়া মফিজ ভাই ,আপনার চমতকার ফিরতি মন্তব্যের জন্য ।

ভাই, সংবেদনশীল যে কোন জিনিষ নিয়ে সতর্কতার সাথে নাড়া-চাড়া করতে হয় যদিও আমরা যে কোন কিছু-যে কোন বিষয় নিয়েই নাড়াচাড়া করতে চাই তা সে ব্যাপারে কোন কিছু জানি বা না জানি।আর ইসরাইল এমন একটা বিষয় তা নিয়ে কথা বলার আগে দশবার ভাবতে হয় এবং অনেক কিছুই মাথায় আসে ,তবে হিসাব মিলেনা।

আপনার-বাকী সকলের মত আমার মাথায় এই প্রশ্ন ঘুরে - " হামাস ক্যান রকেট মারে"? আর এটা ত কোটি টাকার প্রশ্ন ।

তবে এটার সাথে বা এটার আগে যে প্রশ্নটা আসে বা যেটা সবচেয়ে বেশী আমার মাথায় ঘুরে,তা হলো - " ইহুদিরা কেন হামাক জায়গা (হামাসের দেশ ) দখল করে নিল এবং নিজ দেশে তাদেরকে দেশবিহীন-পরবাসী-রিফিউজি করল ? তাদের (হামাসের) নিজ দেশেই কেন কোন অধিকার নেই এবং ইসরাইলিরা কেন তাদের(প্যালেস্টাইনিদের) পাখির মত গুলি করে মেরে তাদের টার্গেট অনুশীলন করে "?

৬| ২৯ শে জুন, ২০২১ সকাল ১০:৩০

রানার ব্লগ বলেছেন: তবে যাই বলেন ওদের কে আমরা গালাগাল করি কিন্তু ওদের রাস্ট্র নীতির প্রশংসা করা উচিত এবং তা অবশ্য অনুকরণীয়। ওদের নেতা বদল হয় রাস্ট্র নীতি বদল হয় না এর ফলে জনগণের ভোগান্তি ও কম।

২৯ শে জুন, ২০২১ দুপুর ১:৫৬

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রানার ব্লগ ভাই ,আপনার ফিরতি মন্তব্যের জন্য ।

এটা সত্যি যে, কিছু ব্যাপারে ইহুদি-খ্রিস্টানরা মুসলমানদের থেকে অনেক অনেক আলাদা। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় বিধি,রাষ্ট্র পরিচালনা এবং জনকল্যাণমূলক কাজ - এসব জায়গায় তারা আমাদের থেকে অনেক অনেক বেশী এগিয়ে।আর ওদের কাছে নীতি এবং নীতির ধারাবাহিকতা লংঘিত হয়না বরং যেকোন মূল্যে তারা নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চেষ্টা করে ,তা সে নিজ মতের বা বিরুদ্ধ মতের যেই হোক না কেন।

আর এর ফলে রাষ্ট্র ধারাবাহিক ভাবে সামনে এগিয়ে যায় এবং জনগণের মৌলিক অধিকার লংঘিত না হয়ে রক্ষা পায়।আর জনগন কিংবা নেতা সবাই এসব মেনে চলতে চেষ্টা করে ।এ দিক থেকে মুসলমানরা অনেক পিছিয়ে।আর তাইতো ,মুসলমানদের এত দূর্গতি ।

৭| ২৯ শে জুন, ২০২১ সকাল ১১:৫৭

নীল আকাশ বলেছেন: যেই আসুক তাতে কোন কিছুই চেঞ্জ হবে না। এদের নীতির কোন পরিবর্তন হবে না।
নেতানিয়াহু কিংবা নেফাতিলি আসলে একই গাছে পাতা।
তবে পোস্ট পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। খুব সুন্দর পোস্ট।

২৯ শে জুন, ২০২১ দুপুর ২:৩৬

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নীল আকাশ ভাই ,আপনার মন্তব্যের জন্য ।

এটা ঠিক যে , ওদের কাছে নীতি এবং নীতির ধারাবাহিকতা লংঘিত হয়না বরং যেকোন মূল্যে তারা নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চেষ্টা করে। আর, নেতানিয়াহু - নাফতালি একই জিনিষ।শুধু লেবেল আর বোতল ভিন্ন।

আপনার মন্তব্যে ও কষ্ট করে এত দীর্ঘ পড়ার জন্য এবং আপনার ভাল লেগেছে জেনে প্রীত হইলাম।


৮| ২৯ শে জুন, ২০২১ সকাল ১১:৫৮

মোঃ মঈনুদ্দিন বলেছেন: ইজরায়েলিরা এত ক্ষমতাধর কারণ আমরা মুসলমানরা ঐক্যহীন। এই নেতানিয়াহু আর খেতানিয়াহু যাই বলুন সবাই মুসলমানদের ঘেরার মধ্যে থেকেই এত কিছু করে গেছে বা ভবিষ্যতেও করবে। কিন্তু, মুসলিমদের অনৈক্যের কারণে তাদের সাম্রাজ্য হয়তোবা কোন সময় আরব পুরোটাই গ্রাস করে নিবে।

২৯ শে জুন, ২০২১ দুপুর ২:৪৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ মোঃ মঈনুদ্দিন ভাই ,আপনার মন্তব্যের জন্য ।

একের জন্য যা দূর্বল পয়েন্ট অন্যের জন্য যা শক্তির উৎস হতে পারে । আর এটা মুসলমানদের ক্ষেত্রে নির্মম ভাবে প্রযোজ্য ।

কারন, ভোগ-বিলাসে মত্ত মুসলিম শাসকরা তথা মুসলিম দেশের নেতারা নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে দেশ ও জাতির যে অপূরণীয় ক্ষতি করছে তা তারা ভেবে দেখতেও রাজী নয়।আর এসব জায়গায় এবং ব্যাপারে ইহুদি-খ্রিস্টানরা মুসলমানদের থেকে অনেক অনেক আলাদা। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় বিধি,রাষ্ট্র পরিচালনা এবং জনকল্যাণমূলক কাজ - এসব জায়গায় তারা আমাদের থেকে অনেক অনেক বেশী এগিয়ে।আর ওদের কাছে নীতি এবং নীতির ধারাবাহিকতা লংঘিত হয়না বরং যেকোন মূল্যে তারা নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চেষ্টা করে ,তা সে নিজ মতের বা বিরুদ্ধ মতের যেই হোক না কেন।

আর তাইতো জীবনের সব জায়গায় তারা মুসলিমদের থেকে এগিয়ে । শুধু একজায়গায় মুসলমানরা তাদের থেকে এগিয়ে,সেটা হল ভোগ-বিলাস।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.