নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

" পবিত্র ও সম্মানিত মাস মহরম " - হিজরি সনের প্রথম মাস এবং পবিত্র আশুরা ।ইসলামে আশুরার ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং আশুরার দিনে করণীয় ও বর্জনীয় । (ঈমান ও আমল -১১ )।

১৭ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:৫০


ছবি -indiatimes.com

হিজরি সনের প্রথম মাস মহররম। মহররম আল্লাহ তাআলার কাছে অত্যন্ত সম্মানিত ও মর্যাদাবান মাস।আর এই মাসে আশুরা'র দিন হলো হলো ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দিবস। আগামী ২০ আগস্ট বাংলাদেশে পবিত্র আশুরা পালিত হবে।

মহররম শব্দের অর্থ সম্মানিত বা নিষিদ্ধ। এটি আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের মাস। প্রিয় নবী ও রাসুল হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) মহররমকে শাহরুল্লাহ বা আল্লাহর মাস বলেছেন। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, "নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গননায় মাস বারটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। আর মুশরিকদের সাথে তোমরা যুদ্ধ কর সমবেতভাবে, যেমন তারাও তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সমবেতভাবে। আর মনে রেখো, আল্লাহ মুত্তাকীনদের সাথে রয়েছেন"। (সুরা তাওবা, আয়াত - ৩৬)।

আবুজার (রাঃ) বলেন, আমি রাসুল (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, রাতের কোন অংশ উত্তম এবং কোন মাস উত্তম? রাসুল (সাঃ) বলেন, " রাতের মধ্যে উত্তম হলো গভীর রাত, আর মাসগুলোর মধ্যে উত্তম হলো আল্লাহর মাস, যাকে তোমরা মহররম বলে থাকো"। (সুনানে নাসাঈ, হাদিস নং - ৪৬১২)।হাসান বসরি (রহঃ) বলেন, এই মাসগুলোর মধ্যে উত্তম হলো মহররম। তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তাআলা সম্মানিত মাস দিয়ে বছর শুরু করেছেন এবং সম্মানিত মাস দিয়ে শেষও করেছেন। রমজানের পর উত্তম মাস হলো মহররম। (লাতায়েফুল মাআরিফ : পৃষ্ঠা ৭৭-৭৮)।

[sbআল কোরআনে হিজরি বর্ষ -

হিজরি বর্ষ মূলত চান্দ্র বর্ষ, যা পবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে। এটি পৃথিবীতে বর্ষ গণনায় চাঁদ নির্ভর একমাত্র বর্ষপঞ্জি এবং চাঁদ রাতে উদিত হয় বলে রাত দিয়ে তা শুরু হয়।এ প্রসংগে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন, " তোমার নিকট তারা জিজ্ঞেস করে নতুন চাঁদের বিষয়ে। বলে দাও যে এটি মানুষের জন্য সময় নির্ধারণ এবং হজ্বের সময় ঠিক করার মাধ্যম। আর পেছনের দিক দিয়ে ঘরে প্রবেশ করার মধ্যে কোন নেকী বা কল্যাণ নেই। অবশ্য নেকী হল আল্লাহকে ভয় করার মধ্যে। আর তোমরা ঘরে প্রবেশ কর দরজা দিয়ে এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা নিজেদের বাসনায় কৃতকার্য হতে পার"। (সুরা বাকারা, আয়াত - ১৮৯)।আল কোরআনে আরো ইরশাদ হয়েছে, "তিনিই সে মহান সত্তা, যিনি বানিয়েছেন সুর্যকে উজ্জল আলোকময়, আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ আলো বিতরণকারীরূপে এবং অতঃপর নির্ধারিত করেছেন এর জন্য মনযিল সমূহ, যাতে করে তোমরা চিনতে পার বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব। আল্লাহ এই সমস্ত কিছু এমনিতেই সৃষ্টি করেননি, কিন্তু যথার্থতার সাথে। তিনি প্রকাশ করেন লক্ষণসমূহ সে সমস্ত লোকের জন্য যাদের জ্ঞান আছে"।(সুরা ইউনুস, আয়াত - ৫)।

হিজরি সন প্রবর্তনের প্রেক্ষিত -

দ্বিতীয় খলিফা ওমর (রাঃ) এর সময়কালে বসরার গভর্নর আবু মুসা আশআরি (রাঃ) খলিফার কাছে এক পত্রে লেখেন, ‘হে আমিরুল মুমিনিন, আমাদের কাছে বহু পত্র আসে, যাতে তারিখ লেখা থাকে শাবান। কিন্তু তা কি বর্তমান বছরের, নাকি অতীতের - আমরা তা বুঝতে পারি না। তারপর ওমর (রাঃ) এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। (ইবনুল আসির, আল-কামিল ফিত-তারিখ : ১/৮)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, যখন ওমর (রাঃ) সন প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন, তখন তিনি পরামর্শ সভার আহ্বান করেন। সভায় সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাঃ) নবীজি (সাঃ) এর ইন্তেকালের বছর, তালহা (রাঃ) নবুয়তের বছর, আলী (রাঃ) হিজরতের বছর থেকে বর্ষ গণনার প্রস্তাব দেন। তারপর তাঁরা সবাই আলী (রাঃ) এর প্রস্তাবে ঐকমত্য পোষণ করেন।’ (আল-আইনি, উমদাতুল কারি : ১৭/৬৬)

হিজরত থেকে কেন হিজরি সন

সন গণনা শুরুর জন্য নবীজি (সাঃ) এর জন্ম, মৃত্যু, নবুয়ত ও হিজরত চারটি প্রস্তাব এসেছিল। বস্তুত জন্ম ও নবুয়তের সন নিয়ে বিভিন্ন মতামত আছে। আর মৃত্যু শোকের স্মারক। তাই অগত্যা হিজরতের মাধ্যমেই সাল গণনা শুরু করা হয়। (ইবনে হাজার আসকালানি, ফাতহুল বারি : ৭/২৬৮)। নবীজি (সাঃ) এর হিজরত ২৭ সফর থেকে শুরু করে ১২ রবিউল আউয়াল অবধি সম্পন্ন হয়েছিল। বর্ষ গণনার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় হিজরতের ১৬ বছর পর ১৭তম বছরের ১০ জুমাদাল উলা মাসে। মাস হিসেবে রবিউল আউয়াল কিংবা জুমাদাল উলা কোনোটি থেকে বর্ষ গণনা শুরু হয়নি। সমকালীন আরবে মহররম ছিল প্রথম মাস। পরিস্থিতি বিবেচনায় শৃঙ্খলা রক্ষার্থে তা অপরিবর্তিত রাখা হয়।’ (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া, ৪/৫১৭)

নববর্ষ আগমনী আনন্দ

নববর্ষের চাঁদ দেখে মুসলিমরা আনন্দিত হবে এবং নতুন চাঁদ দেখার দোয়া পড়বে - এটাই স্বাভাবিক। তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সাঃ) যখন নতুন চাঁদ দেখতেন তখন এই দোয়া পড়তেন, " আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমানি ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলাম, রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ"। (সুনান আদ-দারিমি, হাদিস - ১৭২৫)।অর্থাৎ " হে আল্লাহ, তুমি ওই চাঁদকে আমাদের ওপর উদিত করো নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে। (হে চাঁদ) আমার ও তোমার প্রতিপালক আল্লাহ"।

পবিত্র আশুরা বা ১০ শে মহরম

ইসলামিক পঞ্জিকা অনুযায়ী মুহররম এর দশম দিনকে আশুরা বলা হয়। এটি ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। সুন্নি মতানুযায়ী, ইহুদীরা মুসার বিজয়ের স্মরণে আশুরার সাওম বা রোজা পালন করত। তবে শিয়া মত আশুরার পূর্ব ইতিহাসকে প্রত্যাখ্যান করে এবং তারা আশুরাকে কারবালার বিষাদময় ঘটনার স্মরণে পালন করে। এই দিনটি শিয়া মুসলমানদের দ্বারা বেশ আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা হয়ে থাকে। এ উপলক্ষে তারা বিভিন্ন ধরনের মিছিল, মাতম ও শোকানুষ্ঠান আয়োজন করে। তবে একটি ক্ষুদ্র অংশ ততবীর পালন করে থাকে। শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোতে এসব অনুষ্ঠান চোখে পড়ার মত। যেমন- পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক, লেবানন ও বাহরাইন।

আশুরার দিবসের ঐতিহাসিক গুরুত্ব -


ছবি - indiatimes.com

জনপ্রিয় ধারণায়, আশুরা মূলত একটি শোকাবহ দিন কেননা এদিন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (রাঃ) কারবালার ময়দানে নির্মমভাবে শহীদ হয়েছিলেন।তবে এ ঘটনা ছাড়াও কিন্তু ইসলামের ইতিহাসে এই দিনটি বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ।
আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেন, মহররম মাসে এমন একটি দিন আছে যেদিন আল্লাহ তাআলা এক সম্প্রদায়ের তাওবা কবুল করেছিলেন এবং আগামীতেও তিনি আরেক সম্প্রদায়ের তাওবা এই দিনে কবুল করবেন। সেই দিনটি হলা মহররমের দশ তারিখ। এ দশ তারিখ ইসলাম ধর্মে খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন। পৃথিবীর ধারাবাহিক ইতিহাসে এ তারিখটি অনেক তাৎপর্য বহন করে। ঘটনাবহুল এ দিবসটি সম্মানের এবং আমলের মাধ্যমে উদযাপনের দিন। এ দিনে ইতিহাসের পাতায় অনেক ঘটনা পাওয়া যায়। এ সুন্দর সুফলা, সবুজ-শ্যামল পৃথিবী মহান আল্লাহ তাআলা এদিনেই সৃষ্টি করেছেন।


পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদম (আঃ) এ দিনেই পৃথিবীতে অবতরণ করেন। কথিত আছে দীর্ঘ তিনশত বছর অবিরাম কান্নার পর এ দশ তারিখেই তাঁর দোয়া মহান সৃষ্টিকর্তা কবুল করে নেন। পৃথিবীর বুকে হযরত হাওয়া (আঃ) কেও আল্লাহতাআলা পাঠালেন। তবে হযরত আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ) মিলিত হলেন আরাফার ময়দানে এ মহররম মাসের দশ তারিখেই। হযরত নূহ (আঃ) এর কিসতী জমিনে অবতরণ করেন এ দশ তারিখে। হযরত ইবরাহীম (আঃ) দীর্ঘ চল্লিশ দিন নমরুদের অগ্নি কুন্ডলিতে থেকে এ দশ তারিখেই মুক্তি পান। হযরত আইয়ুব (আঃ) রোগ থেকে সুস্থ হন। হযরত ইয়াকুব (আঃ) নিজের হারানো চক্ষু ফিরে পান। হযরত ইউসুফ (আঃ) কে ফিরে পান দীর্ঘ চল্লিশ বছর পর। হযরত ইউনুস (আঃ) মাছের পেট থেকে এ দশ তারিখে মুক্তি পান। হযরত মুসা (আঃ) ফেরাউনের কবল থেকে নদী পার হয়ে মুক্তি পান। আর ফেরাউন এ দিনে নদীতে নিমজ্জিত হয়ে মারা যায়। হযরত ঈসা (আঃ) কে আসমানে এ দিনেই উঠিয়ে নেয়া হয়। সহীহ হাদীসে হযরত মুসা (আঃ) এর ঘটনা উঠে এসেছে। ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, " রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হিজরত করে মদীনায় আসলেন। তিনি আশুরার দিন ইয়াহুদি সম্প্রদায়ের লোকদের রোযা রাখতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কেন আজকের এ দিনটিতে রোযা রেখে থাক? তারা বললো, আজকের এই মহান দিনে আল্লাহ তাআলা মুসা (আঃ) ও তাঁর সম্প্রদায়কে মুক্তি দিয়েছেন এবং ফেরউন ও তার সম্প্রদায়কে ডুবিয়ে মেরেছেন। তাই মুসা (আঃ) কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এ দিন রোযা রেখেছিলেন। এ জন্য আমরাও এদিন রোযা রাখি। তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, আমরাই তোমাদের চেয়ে মুসার (আঃ) অধিক আপনজন ও হকদার। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এ দিন রোযা রাখলেন এবং আমাদেরকে রোযা রাখার নির্দেশ দিলেন"। (বুখারী শরীফ,হাদীস নং - ১৮৭৮, মুসলিম শরীফ,হাদীস নং - ২৫২৪) ।আবার, প্রচলিত আছে যে এই তারিখেই কেয়ামত সংঘটিত হবে,যদিও এই বিষয়ে মতভিন্নতা রয়েছে।ভিন্ন মতে ঘটনাগুলোর অনেকগুলোই যে এই দিনে ঘটেছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়নি। ‌

ইমাম হুসাইন (রাঃ) এর শাহাদাৎ


ছবি - indiatimes.com

হিজরী ৬০ সনে এজিদ বিন মুয়াবিয়া, পিতা মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর নিজেকে মুসলিম বিশ্বের খলিফা হিসাবে ঘোষণা করে।ইয়াজিদ মদিনার গর্ভনরকে, তাৎক্ষণিকভাবে হুসাইন ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আনুগত্য (বায়াত) আদয়ের জন্য নিদের্শ দেয়। কিন্তু হুসাইন ইবনে আলী তা প্রত্যাখ্যান করে। কারণ, তিনি মনে করতেন যে, ইয়াজিদ ইসলামের মূল শিক্ষা থেকে দূরে সরে গেছে এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সুন্নাহকে পরিবর্তন করছে। অতঃপর হুসাইন ইবনে আলী তার পরিবারের সদস্য, সন্তান, ভাই এবং হাসানের পুত্রদের নিয়ে মদিনা থেকে মক্কায় চলে যান। এজিদ সম্পর্কে বলা হয় যে সে মদ্যপানকে বৈধ ঘোষণা করেছিল। অধিকন্তু সে একই সঙ্গে দুই সহোদরাকে বিয়ে করাকেও বৈধ ঘোষণা করেছিল। শাসক হিসাবে সে ছিল স্বৈরাচারী ও অত্যাচারী। ইমাম হুসাইন এজিদের আনুগত্য করতে অস্বীকৃত হন এবং ইসলামের সংস্কারের লক্ষ্যে মদীনা ছেড়ে মক্কা চলে আসেন। মক্কা থেকে তিনি কুফার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি কারবালার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এ সময় উমর ইবনে সাদ আবি ওক্কাসের নেতৃত্বে চার হাজার সৈন্য কারবালায় প্রবেশ করে এবং পরে সিমার ইবনে জিলজুশান মুরাদির নেতৃত্বে আরো বহু নতুন সৈন্য এসে তার সাথে যোগ দেয়৷ কারবালায় দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয় এবং যুদ্ধ শুরু হয়। এই অসম যুদ্ধে ইমাম হুসাইন এবং তার ৭২ জন সঙ্গী শাহাদৎ বরণ করেন।সিমার ইবনে জিলজুশান মুরাদি নিজে কণ্ঠদেশে ছুরি চালিয়ে ইমাম হুসাইনকে হত্যা করে। সেদিন ছিল হিজরী ৬১ সনের ১০ মুহররম।

এটি ছিল এক অসম যুদ্ধ । যেখানে হুসাইন ও তার পরিবার বিশাল এক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবর্তীন হন। বিখ্যাত ইতিহাসবিদ আবু রায়হান আল বিন্নী এর মতে, "তাবুগুলোতে আঙুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং মৃতদেহগুলোকে ঘোড়ার খুড় দ্বারা ক্ষতবিক্ষত ও পদদলিত করা হয়; মানব ইতিহাসে কেউ এমন নৃশংসতা দেখেনি।উমাইয়া সৈন্যরা হুসাইন ও তার পুরুষ সঙ্গীদের হত্যা করার পর সম্পদ লুট করে, মহিলাদে গয়না কেড়ে নেয়। শিমার জয়নাল আবেদীনকে হত্যা করতে চাইলে জয়নাব বিনতে আলী এর প্রচেষ্টায় কমান্ডার উমার ইবনে সাদ তাকে জীবিত রাখেন। তাকেও (জয়নাল আবেদীন) বন্দী নারীদের সাথে দামেস্কে ইয়াজিদের দরবারে নিয়ে যাওয়া হয়"।

নানা ঘটনার ধারবাহিকাতয় হিজরী ৬১ সালের দশে মহররম, রাসূল (সাঃ) এর দৌহিত্র সাইয়েদুনা হযরত হোসাইন (রাঃ) কারবালার প্রান্তরে শহিদ হন। যার ক্ষত মুসলিম বিশ্ব এখনো শুকাতে পারেনি। সত্যের পক্ষে আর অন্যায়ের বিপক্ষে ছিল সে দিনের ঘটনা। এটি আমাদের শিক্ষা দেয়, "জীবন দিবো তবু সত্যের পক্ষে থাকবো। চাই আমাদের মৃত্যু আসুক। হযরত হোসাইন (রাঃ) এ শিক্ষাই মুসলিম জাতিকে দিয়ে গেছেন। আমাদের এ ঘটনার ধারাবাহিকতা থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবন পরিচালনা করার কর্ম পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারি"।

সকল ঘটনায় স্পষ্ট হয় যে, এদিনটি ইসলামের বিজয়ের দিন। আল্লাহর দ্বীনের বিজয়ের দিন। অনেক সম্প্রদায়ের মুক্তির দিন। সকল কল্যাণময় ঘটনা এ দিনেই সংঘটিত হয়েছিল। এ দিনেই সত্যের জয় আর মিথ্যার পরাজয় দুনিয়ার সকল মানুষের সামনে স্পষ্ট উজ্জ্বল হয়েছিল। এটি ছিল মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি অনুগ্রহ ও বিশাল দান। তাই বান্দার পক্ষ থেকে তার শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা উচিত। যুগে যুগে এ দিনে বান্দারা কৃতজ্ঞতা স্বরূপ মহান আল্লাহকে রাজি ও খুশি করার লক্ষ্যে সিয়াম পালন করে আসছে। এ সিয়ামের ধারাবাহিকতা মহা নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)ও পালন করেছেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, "আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেন, জাহেলী যুগে কুরাইশগণ আশুরার রোযা রাখত। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এ রোযা রাখার নির্দেশ দেন। পরবর্তী রমযানে রোযা ফরজ হলে রাসূল (সাঃ) বলেন, যারা ইচ্ছা আশুরার রোযা রাখবে এবং যারা ইচ্ছা রাখবে না"। (বুখারী শরীফ,হাদীস নং - ১৭৭২ মুসলিম শরীফ,হাদীস নং - ২৫০৩)।

আশুরা উদযাপনের রীতি

ইহুদিরা আশুরা উপলক্ষে মুহররম মাসের ১০ তারিখে রোজা রাখে। শিয়া সম্প্রদায় মর্সিয়া ও মাতমের মাধ্যমে এই দিনটি উদ্‌যাপন করে। আশুরা উপলক্ষে ৯ এবং ১০ মুহররম তারিখে অথবা ১০ এবং ১১ রোজা মুহররম তারিখে রাখা মুলমানদের জন্য সুন্নত। এছাড়া মুসলমানরা এদিন উত্তম আহারের জন্য চেষ্টা করে থাকে। আশুরা উপল্যক্ষে সুন্নি মুসলিমরা সাধারণত ২-৩ টি নফল রোজা রাখেন।

আশুরার দিনে যা করণীয় ও বর্জনীয় -আশুরার দিন কারবালা প্রান্তরে মানব ইতিহাসের যে নির্মম কাহিনী রচিত হয়েছিল তা থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শক্তি হল তাদের মজবুত ঈমান। তাই আমাদের ঈমানী চেতনায় বলীয়ান হয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জীবন পরিচালনা করতে হবে।

আশুরার দিবসে করণীয় -


ছবি - tvshia.com

প্রতিটি ইবাদত আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার অন্যতম দুটি শর্ত রয়েছে।
১। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইবাদত করা।
২। ইবাদত রাসূল (সাঃ)-এর আনীত শরিয়ত এবং বর্ণিত পথ ও পন্থা অনুসারে হওয়া।


আশুরার দিবসে রোজা রাখা ছাড়া অন্য কোনো রীতিনীতি, সংস্কৃতি ও ইবাদত ইসলাম অনুমোদন করে না। তাই কেবল রোজা রাখার মাধ্যমেই দিনটিকে পালন করতে হবে। আশুরা হল সত্য প্রতিষ্ঠার লড়াই। বাতিলের সঙ্গে সত্য-মিথ্যার লড়াই।আশুরার দশ তারিখের সঙ্গে ৯ তারিখ বা ১১ তারিখ যোগ করে রোজা রাখতে পারলে আরও বেশি ভালো হয়। কেননা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,আমি আগামী বছর জীবিত থাকলে দশ তারিখের রোজার সঙ্গে একদিন বাড়িয়ে রোজা রাখব।

হজরত মুসা (আঃ) ও ইবরাহিমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়া -

আশুরার দিন হজরত মুসা (আঃ) এর বিজয়ের ইতিহাস স্মরণ করতে হবে। তিনি যেভাবে আল্লাহর পথে অবিচল থেকে ফেরাউনের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন, ঠিক তেমনিভাবে আমাদেরও বাতিলের পথকে রুদ্ধ করে ইসলামের আলোয় আলোকিত সমাজ গঠনের প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহর নবী হজরত ইবরাহিম (আঃ)-এর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে শয়তানি শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার মানসিকতা গড়তে হবে।

কারবালার শিক্ষা বুকে ধারণ করা

কারবালার প্রান্তরে হজরত হুসাইন (রাঃ) সপরিবারে আত্মত্যাগ করে সমগ্র বিশ্ববাসীকে শিক্ষা দিয়ে গেছেন, যে মস্তক আল্লাহর কাছে নত হয়েছে সে মস্তক কখনও বাতিল শক্তির কাছে নত হতে পারে না। আল্লাহর পথে অটল থাকতে মুমিনরা তাদের জীবনকে উত্সর্গ করতে দ্বিধা করে না। তাই আজকের মুসলমানরা সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর শপথ নিতে পারলেই কেবল আশুরার তাত্পর্য প্রতিফলিত হবে।

আশুরার দিবসে বর্জনীয় বিষয় -


ছবি - anandabazar.com

আশুরার সুমহান মর্যাদা ও তাৎপর্যকে কেন্দ্র করে মুসলিম সমাজে কিছু নিষিদ্ধ কর্মকাণ্ড ও কুসংস্কারের প্রচলন হয়ে গেছে। সে সব থেকে বেঁচে থাকা মুসলমানদের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য। আশুরার দিন ক্রন্দন-বিলাপ করা, বুকে চাপড়ানো, পিঠে চাবুক দিয়ে আঘাত করা, নিজেকে রক্তাক্ত করা ও শোক মিছিল করা কোনোটিই শরিয়তসম্মত কাজ নয়। কোরআন-হাদিসে এর কোনো ভিত্তি নেই।

অতএব আশুরার দিন শোক-মাতম না করে এখান থেকে কী শিক্ষা নেয়া যায় সে চেষ্টাই করা উচিত। তাছাড়া আশুরা মানে কেবল কারবালার ঘটনা নয়, এদিন ঐতিহাসিক অনেক ঘটনা ঘটেছে। মুসলমানদের ইতিহাসে এদিনে শোকের পাশাপাশি সুখ ও বিজয় আছে। আর কারবালার ঘটনা ওই ঘটনাগুলোর মধ্যে ঐতিহাসিক ঘটনা, যার মধ্যে মুসলমানের অনেক শিক্ষার বিষয় আছে।

আশুরার এই ঐতিহাসিক ঘটনার মূল চেতনা হচ্ছে ক্ষমতার লোভ, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য চক্রান্ত ও নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার লড়াই। বর্তমান বিশ্বে আশুরার এই শিক্ষা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। অন্যায় ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থান ও ত্যাগের যে শিক্ষা কারবালার ঘটনা মানবজাতিকে দিয়েছে, তা আজকের দুনিয়ার অন্যায় ও অবিচার দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক পথে চলার তাওফিক দিন।

================================================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -

ঈমান ও আমল -১০ Click This Link
(" পবিত্র মাস জিলহাজ্জ ", জিলহাজ্জের প্রথম দশ দিন মুসলমানদের নিকট বছরের সেরা দশদিন - ঈমান ও আমলের জন্য)।
ঈমান ও আমল - ৯ Click This Link
(" শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা " - যা সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব হাসিলে সাহায্য করে। পবিত্র রমজানের পর যা সকল মুসলমানেরই রাখা উচিত)।
ঈমান ও আমল - ৮ Click This Link
(আজ পবিত্র " লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত "। মহিমান্বিত এ রজনীতে মুসলমানদের করণীয় ।)
ঈমান ও আমল - ৭ Click This Link
("যাকাত " ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ । যা আল্লাহর অনুগত বান্দাদের জন্য অশেষ ছওয়াব, রহমত ও মাগফিরাতের পাশাপাশি আত্মশুদ্ধির ও প্রতিশ্রুতি দেয়)।
ঈমান ও আমল - ৬ Click This Link
("রোযা" ইসলামের তৃতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ । যার বিনিময় বা প্রতিদান আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন নিজেই দিবেন)।
ঈমান ও আমল - ৫ Click This Link
(" নামাজ " ইসলামের দ্বিতীয় ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ । যা মুসলিম-অমুসলিমের মাঝে পার্থক্যকারী সূচক হিসাবে বিবেচিত এবং মুসলমান মাত্রই দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে)।
ঈমান ও আমল - ৪ Click This Link
("ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ" - যার শুরুটা কালেমা বা ঈমানে। যা শুধু মুখে বলা নয়, অন্তরে বিশ্বাস ও কর্মে পরিণত করার বিষয়)।
ঈমান ও আমল - ৩ Click This Link
(তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব )।
ঈমান ও আমল - ২ Click This Link
("শুক্রবার - পবিত্র জুমা"- মুসলমানদের জন্য এক মর্যাদা ও ফজিলত পূর্ণ দিন এবং জুমার দিনের কতিপয় আমল )।
ঈমান ও আমল - ১ Click This Link
(যেসব আমলে মানুষের অভাব দূর হয় ও জীবন সুখের )।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



সন্মানিত মাস হচ্ছে ডিসেম্বর, সন্মানিত তারিখ হচ্ছে, ১৬ই ডিসেম্বর।

১৭ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

১৬ই ডিসেম্বর অবশ্যই বাংগালী জাতি এবং জাতীয়তাবাদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিন কারন এ দিন আমরা বিজয় অর্জন করেছি।এ দিন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মাথা উচু করার দিন। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রাম করে বহু প্রাণ আর এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এদিনে বীর বাঙালি ছিনিয়ে আনে বিজয়ের লাল সূর্য।

তাই এ দিন বাংগালী জাতির গৌরবের দিন,মর্যাদার দিন। এর সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই। এ আনন্দ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সকল বাংগালীর।

২| ১৭ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


মহরম হচ্ছে বেদুইন জল্লাদদের মাস।

১৭ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

যদি আপনি মহরমকে বেদুইনদের মাস বলেন ,এক হিসাবে তা ঠিক ।কারণ, বেদুইনদের সাথে (আরব এবং আরবী) অংগাঅংগী ভাবে জড়িত।আর এটা একটি বৃহৎ মতবাদ এবং ধর্মীয় (ইসলাম) বিশ্বাসীদের কাছে পবিত্র ও আরবী (হিযরী) বর্ষ অনুসারে প্রথম মাস। এর সাথে কোটি কোটি অনুসারী মানুষের আবেগ-ভালবাসা জড়িত। যেমন - আমরা বাংগালীদের প্রাণের মাস বৈশাখ।কাজেই এভাবে বললে ইসলামের তথা তার অনুসারীদের মনে ব্যাথা লাগতে পারে। কারন, এর মতানুসারীদের মতে এ মাস শোকের মাস,সম্মানের মাস।

আর ইসলাম বলে, " কারো মনে দিওনা আঘাত,সে আঘাত লাগে কাবার গায়"।

৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: মহরম মাসের মতই অন্য সব মাস। মহরম মাসে তো ''মহরম'' উপলক্ষ্যে বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমে যায় না।

১৮ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৪১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

সাধারন মানুষের চোখে দেখলে বছরের সব দিন-রাত একই রকম।আবার জ্যোতির্বিজ্ঞানের চোখে দেখলে প্রতিটা দিন-রাতের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ঠ্য রয়েছে যা সাধারন মানুষের চোখে ধরা পড়েনা। ঠিক তদ্রুপ সাধারন ভাবে দেখলে একই মতের অনুসারীদের কাছে কোন পার্থক্য নেই দিন-রাতের তবে সৃষ্টিকর্তা কিছু কিছু দিন-মাসকে অন্য মাস ,দিন ও রাত থেকে কিছুটা শ্রেষ্ঠত্ম প্রদানের ঘোষনা দিয়েছেন। যেমন - ঈদের রাত,শবে বরাতের রাত,জুমার রাত,রমজানের মাস ইত্যাদি।

বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমা-বাড়ার সাথে ধর্মের নয় দ্রব্যের চাহিদা-যোগান এবং মানুষের মানষিকতার সম্পর্ক জড়িত।

৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:১৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: খুব ভালো লিখেছেন। অনেক তথ্যবহুল লেখা নিঃসন্দেহে।

'আল্লাহ তাআলা এদিনেই সৃষ্টি করেছেন। পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদম (আঃ) এ দিনেই পৃথিবীতে অবতরণ করেন। কথিত আছে দীর্ঘ তিনশত বছর অবিরাম কান্নার পর এ দশ তারিখেই তাঁর দোয়া মহান সৃষ্টিকর্তা কবুল করে নেন। পৃথিবীর বুকে হযরত হাওয়া (আঃ) কেও আল্লাহতাআলা পাঠালেন। তবে হযরত আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ) মিলিত হলেন আরাফার ময়দানে এ মহররম মাসের দশ তারিখেই। হযরত নূহ (আঃ) এর কিসতী জমিনে অবতরণ করেন এ দশ তারিখে। হযরত ইবরাহীম (আঃ) দীর্ঘ চল্লিশ দিন নমরুদের অগ্নি কুন্ডলিতে থেকে এ দশ তারিখেই মুক্তি পান। হযরত আইয়ুব (আঃ) রোগ থেকে সুস্থ হন। হযরত ইয়াকুব (আঃ) নিজের হারানো চক্ষু ফিরে পান। হযরত ইউসুফ (আঃ) কে ফিরে পান দীর্ঘ চল্লিশ বছর পর। হযরত ইউনুস (আঃ) মাছের পেট থেকে এ দশ তারিখে মুক্তি পান। হযরত মুসা (আঃ) ফেরাউনের কবল থেকে নদী পার হয়ে মুক্তি পান। আর ফেরাউন এ দিনে নদীতে নিমজ্জিত হয়ে মারা যায়। হযরত ঈসা (আঃ) কে আসমানে এ দিনেই উঠিয়ে নেয়া হয়।'

উপরের ঘটনাগুলি সমাজে প্রচলিত থাকলেও এগুলির কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নাই। আপনি অবশ্য তা উল্লেখ করেছেন। মুল কারণ মুসার (আ) ও বনি ইসরাইলের ফেরাউনের কাছ থেকে মুক্তি। যেটা আপনিও উপরের লেখায় উল্লেখ করেছেন। ধন্যবাদ।

১৮ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:৩৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য।

আপনাকে পোস্টে মন্তব্য করতে দেখলে খুব ভাল লাগে আর সাথে সাথে আপনাকে আবারো ধন্যবাদ পড়া ও মন্তব্য করার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.