নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই সাধারন একজন মানুষ । পড়া যার নেশা । পড়ার এবং জানার আশায় ----

মোহামমদ কামরুজজামান

মোহামমদ কামরুজজামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

" আমেরিকার আফগানিস্তান থেকে বিদায় " - এর ফলে বিশ্ব ব্যবস্থা ও পরিস্থিতিতে পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনা আছে কি বা বিশ্বে পশ্চিমা আধিপত্যের প্রভাবের পরিবর্তনের সম্ভাবনা কতটুকু? (তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৪)।

৩১ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৮


ছবি - মাকিন প্রতিরক্ষা বিভাগ/টুইটার

২০ বছর দখলে রাখার পর আমেরিকা আফগানিস্তান থেকে বিদায় নিয়েছে। গতকাল ৩০/০৮/২০২১ সোমবার রাতে সর্বশেষ মার্কিন সৈন্য আফগানিস্তানের মাটি ত্যাগ করে।যদিও ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের কথা ছিল তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেয়া হলো।মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের টুইটার একাউন্টে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে মার্কিন বিমানে আরোহন করা সর্বশেষ সৈন্যের একটি ছবি প্রকাশ করেছে।নাইট ভিশনযুক্ত ক্যামেরায় ধারণ করা এই ছবিতে দেখা যায়, মার্কিন সেনাবাহিনীর ৮২তম এয়ারবোর্ন ডিভিশনের অধিনায়ক মেজর জেনারেল ক্রিস ডোনাহো যুদ্ধসজ্জ্বায় সর্বশেষ মার্কিনি হিসেবে বিমানে আরোহনের জন্য এগিয়ে আসছেন।এর সাথে সাথেই আফগানিস্তান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিদায় নিশ্চিত হল এবং সোমবার রাতে তারা প্রায় ২০ বছর আফগানিস্তানে দখলদার অবস্থানের অবসান ঘটিয়ে নেয়।

এ এমন এক যুদ্ধ ছিল যেখানে এবং যার সাথে আমেরিকার চার চারজন প্রেসিডেন্ট জড়িত ছিলেন এবং সোমবার (৩০/০৮/২০২১) শেষ সৈন্য প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে আমেরিকার দীর্ঘতম যুদ্ধের অবসান হলো।আসুন দেখি এ যুদ্ধে চারজন প্রেসিডেন্টের কার্যক্রম গুলি কি ছিল -

১। জর্জ ডব্লিউ বুশ ৯/১১-এর হামলার জের ধরে ২০০১ সাল আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠিয়েছিলেন।
২। বারাক ওবামা তার দুই মেয়াদের পুরোটাই এই যুদ্ধে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি দেশটিতে আমেরিকান সৈন্য ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছিলেন।
৩। ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকান সৈন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তালেবানের সাথে চুক্তিও করেছেন।
৪। সৈন্য প্রত্যাহারের কাজটি তদারকি করেছেন জো বাইডেন। তিনি গত দুই সপ্তাহের মাঝে মার্কিনিদের দেশে ফিরিয়ে নিয়েছেন।


আফগানিস্তানের বিদ্যমান পরিস্থিতির আলোকে এই চার প্রেসিডেন্ট সঙ্ঘাত সামাল দিয়েছেন। তবে আমেরিকান মূল্যবোধ ও স্বার্থ নিয়ে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির আলোকেই আফগানিস্তানে তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।ইতিহাস তাদের কিভাবে মূল্যায়ন করবে তা সময়েই বলে দেবে তবে সৈন্য প্রত্যাহারের পর আমেরিকাকে কিভাবে স্মরণ করা হবে বা বিশ্বে আমেরিকান অবস্থান কি হবে এবং তাদের কিভাবে মূল্যায়ন করা হবে তা নিয়ে সারা দুনিয়ায় নানা রকম মত রয়েছে।

ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানে আমরিকার কার্যক্রম নিয়ে আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প বলেছেন," আফগানিস্তানে আমেরিকার যাওয়া ছিল নিকৃষ্টতম সিদ্ধান্ত "।ফক্স নিউজের শেন হ্যানিটির কাছে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।তিনি আরো বলেছেন, "আমরা পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছি...এটার পেছনে আমাদের হাজার হাজার কোটি ডলার খরচ হয়েছে, লাখ লাখ জীবন চলে গেছে, কিন্তু আগের তুলনায় সেখানে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এটা সবচেয়ে বেশি খারাপ, কারণ সেখানে আপনাকে সব কিছু পুনঃর্নির্মাণ করতে হবে, এটা আসলে টুকরো টুকরো করে ফেলার মতো"।ট্রাম্প আরো বলেন,"সেখানে থাকা মানে চোরাবালিতে আটকে যাওয়ার মতো একটা ব্যাপার"।


ছবি - সংগৃহীত

যদিও ইতিমধ্যেই আমেরিকা আফগানিস্তানের চোরাবালি থেকে বেরিয়ে এসেছে তবে তালেবানের হাতে আমরিকার পতন এবং আফগানিস্তানে কাবুল সরকারের নিয়ন্ত্রণ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ার পর অনেকের মধ্যে শঙ্কা জাগছে, এটি কি পশ্চিমা সভ্যতার ক্ষয় হওয়ার সূচনা ঘটাবে? পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে গেলেও এখনো পর্যন্ত তারা সরকার গঠন করতে পারেনি। আমেরিকান সেনা প্রত্যাহারের পরেই তালেবানদের সরকার গঠনের কাজ সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে। তবে তাদের প্রাথমিক কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে তালেবানরা আফগানিস্তানে " সত্যিকারের কিছু পরিবর্তন " নিয়ে আসবে। এখন পাশ্চাত্যের অনেক মিডিয়াও বলছে, ২০০১ সালের তালেবান আর ২০২১ সালের তালেবান এক নয়। তাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন-পরিপক্বতা ও মানিয়ে নেয়ার সক্ষমতা তৈরি হয়েছে।

এখানে একটি বড় প্রশ্ন হলো বিশাল সামরিক বিজয়ের পথ ধরে কি তালেবানরা পারবে দেশকে অর্থনৈতিক স্থিতি বা সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে যেখানে এর মধ্যে আফগানিস্তানের সাড়ে ৯ বিলিয়ন ডলার বিদেশী রিজার্ভ আটকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার সাথে আমেরিকার আরো এক অদৃশ্য অস্ত্রের (অবরোধ) হুমকি এবং সম্ভাবনা ? তার পথ ধরে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক গ্রুপও দেশটির জন্য অর্থ ছাড় স্থগিত করেছে। অন্য পশ্চিমা দেশগুলোও যে আমরিকার পথ ধরে হাটবে তাতে সংশয়ের কোনো কারণ নেই। কিন্তু যারা তালেবানের নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তানের চলার গতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে বলে মনে হয়, তাদের হাত থেকে নিয়ন্ত্রণের টুলসগুলো সম্ভবত এক এক করে হাত ফসকে চলে যাচ্ছে। আফগানিস্তানের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু ইতোমধ্যে আমরিকার ব্যবহৃত এই অস্ত্রের বহুল প্রয়োগে এর বিরুদ্ধে সারা দুনিয়ায় শক্তিমান জোট তৈরি হয়েছে (রাশিয়া-চীন-ইরান-তুরস্ক), যার কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ পশ্চিমা দেশগুলো অনেকখানি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।


ছবি - সংগৃহীত

তালেবানদের সরকার গঠনের আগেই পাশ্চাত্যের মূল্যায়ন করা শুরু হয়েছে ২০ বছর ধরে সেখানে ২.২৩ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা কী অর্জন করতে পেরেছে আফগানিস্তান থেকে ? রাজনৈতিকভাবে দুই দলে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রে কোনো এক দলের সময় সামরিক ও রাজনৈতিক ব্যর্থতার এই চিত্র অঙ্কিত হলে তা নিয়ে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ বিরোধ সমালোচনা যতটা চাঙ্গা হওয়ার কথা, ততটা এখন হচ্ছে না। রিপাবলিকানরা যতই আফগানিস্তানে আমেরিকান স্বার্থ বিপন্ন করে যুক্তরাষ্ট্র চলে এসেছে বলে বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা করুন না কেন, মার্কিন সেনা ফিরিয়ে নেয়ার এই চুক্তি তালেবানের সাথে করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। আর বাইডেন ক্ষমতায় এসে সেটিকে মে থেকে পিছিয়ে সেপ্টেম্বরে নিয়ে গেছেন।জর্জ জুনিয়র বুশের মতো যেসব আমেরিকান নেতা আফগনিস্তান থেকে এভাবে সেনা প্রত্যাহারের সমালোচনা করছেন তাদের বাইডেন পাল্টা প্রশ্ন করছেন, " আরো পাঁচ বা ১০ বছর থাকলে কি যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে জয়ী হতে পারত"? এই প্রশ্নের আসলে সন্তুষ্ট হওয়ার মতো কোনো জবাব নেই। বরং আরো তিক্ত বিষয়টা সামনে চলে এসেছে যে, "আমেরিকানদের ভবিষ্যতে আর কোনো দেশে এভাবে সামরিক হস্তক্ষেপ করতে যাওয়া ঠিক হবে কি না"। একই সাথে স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্নও চলে আসে, "আমেরিকানরা তাদের প্রত্যক্ষ সামরিক ছায়ায় ক্ষমতায় থাকা সরকারগুলোকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হবে কিনা। আর সেটি যদি না হয় তাহলে পাশ্চাত্য আধিপত্য বৈশ্বিকভাবে কতদিন টেকানো সম্ভব হবে"?

এ কথা বহুল প্রচলিত যে, "আফগানিস্তান হলো সাম্রাজ্যলিপ্সুদের জন্য কবরস্থান"। আফগানিস্তান দখল করতে গিয়ে একসময় বিপর্যয়ে পড়েছিলেন ব্রিটিশ সামাজ্যের অধিপতিরা (একসময় সারা দুনিয়ায় একটা কথা প্রচলিত ছিল - ব্রিটিশ সামাজ্যে সূর্য কখনো অস্ত যায়না , সেই ব্রিটিশ সামাজ্য আজ শুধু একটি দেশ তাও কয়েক খণ্ড বিভক্ত )।আবার ১৯৯১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি ঘটে ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে ১৫টি রাষ্ট্র গঠিত হয় যার পেছনে আফগানিস্তানে হস্তক্ষেপের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। বলা হয়, সে সময় সামনে আফগান মুজাহিদ গ্রুপগুলো থাকলেও পেছনে ভূমিকা রেখেছে আমেরিকা। একই যুক্তি বর্তমান আমেরিকান পরাজয়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য (যদিও আমেরিকার সেই ভাবে দখলকৃত সাম্রাজ্য নেই তবে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসাবে সারা দুনিয়ায় তার স্বার্থ এবং তার আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে কিছু সরকার বর্তমান রয়েছে)। চীন রাশিয়ার মতো পরাশক্তির সমর্থন না পেলে আমেরিকানদের এতটা দ্রুত আফগানিস্তান থেকে বিদায় নিতে হতো, তা মনে করার কোনো কারণ নেই।এখন প্রশ্ন হলো, আফগানিস্তানে পরাজয়ের পর সোভিয়েত ইউনিয়ন তো ভৌগোলিকভাবে খণ্ড বিখণ্ড হয়ে গেছে, তবে আমেরিকার পতন হবে কিভাবে?

আমেরিকার পতন ভৌগোলিক বিভাজনের মাধ্যমে হবার সম্ভাবনা নেই তবে যুক্তরাষ্ট্র তার একক পরাশক্তি হিসেবে বিশ্বব্যাপী নিজ দাপট রক্ষা করতে পারবে না এটা নিশ্চিত। আমেরিকার নিরাপত্তা ছায়ার দেশগুলো নিরাপত্তার জন্য এখন থেকে নিজস্ব জাতিগত সমীকরণ নিয়ে সামনে অগ্রসর হতে হবে এবং চাইবে। আর এর অনিবার্য ফল হবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর আমেরিকার নিয়ন্ত্রণ শিথিল হতে থাকা। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণে "ব্রেটন উড" ব্যবস্থা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্যের প্রভাব বিস্তারের অন্যতম প্রধান অবলম্বন। আমেরিকার প্রতিপক্ষ চীন, রাশিয়া এই ব্যবস্থায় তাদের যৌক্তিক অংশীদারিত্বের জন্য দাবি জানিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। সংস্কার বাস্তবে রূপ লাভের পরিবর্তে রাশিয়াসহ প্রতিপক্ষ দেশগুলোতে একের পর এক অর্থনৈতিক অবরোধ চাপানো হয়েছে। এমনকি এই অবরোধের হাত থেকে ন্যাটো মিত্র তুরস্কও বাদ পড়েনি।

এর ফলে যেটি দাঁড়িয়েছে তা হলো, বিকল্প বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরির প্রক্রিয়া দ্রুত পরিণতির দিকে এগিয়ে যাওয়া। গত মার্চে রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ ঘোষণা করেছেন যে, তারা বিকল্প মুদ্রাব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে চলেছেন। একসময় বৈশ্বিক পুঁজি নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ছিল একতরফা আধিপত্য। এখন সেই অবস্থা আর নেই। বৈশ্বিক পর্যায়ে বিনিয়োগযোগ্য সবচেয়ে বড় অঙ্কের তহবিল রয়েছে চীনের হাতে। বিশ্বের বৃহৎ ১০ ব্যাংকের অর্ধেকের কাছাকাছি মালিকানা রয়েছে হংকংসহ চীনা কোম্পানির হাতে। বিকল্প বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রক্রিয়া যে অনেক দূর এগিয়েছে তা এখন অনেকটাই অনুমান করা যায়। বিভিন্ন রাষ্ট্র আমেরিকান ডলার পরিহার করে দ্বিপক্ষীয় মুদ্রায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মডেল তৈরি করে তা বাস্তবায়ন শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক লেনদেনে ভার্চুয়াল মুদ্রা চালু করা সময়ের ব্যাপার বলে মনে করা হচ্ছে। সবশেষে, চীন ও রাশিয়ার নেতাদের কথায় অনুমান করা যায়, " যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রিজার্ভ সংরক্ষণের যে ব্যবস্থা তা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খোঁজা হচ্ছে, যাতে কথায় কথায় অবরোধ আরোপ এবং সম্পদ আটকে দেয়ার আমেরিকান অস্ত্রের প্রয়োগ আর করা সম্ভব না হয়"।

বলা হচ্ছে, আফগানিস্তানে পরাজয়ে তিনটি বড় বার্তা আমেরিকানদের সামনে গেছে, যা পাশ্চাত্যে তার প্রভাব ক্ষয় হবার সিগন্যালকে হলুদ পর্যন্ত নিয়ে গেছে। আরো কিছু ব্যর্থতা এর সাথে যুক্ত হলে তখন পাশ্চাত্যের নিয়ন্ত্রক প্রভাবের সামনে লালবাতি জ্বলে উঠবে। এর মধ্যে -

১।প্রথম বার্তাটি হলো - আমেরিকানরা সোয়া দুই ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যয় করে আফগানিস্তানকে দারিদ্র্য থেকে উত্তরণ এবং কথিত মানবাধিকারের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করার পরিবর্তে দেশটিকে তলাহীন ঝুড়ি আর দুর্নীতি ও লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। এর পাশাপাশি, অব্যাহত রক্তক্ষয়ের এক জনপদে পরিণত হয়েছে আফগানিস্তান। ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেনের পাশাপাশি যখন আফগানিস্তানের তরতাজা উদাহরণ সামনে রাখা হয় তখন গণতন্ত্র, মানবাধিকার আর একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমেরিকান আওয়াজ সেভাবে হালে পানি পায় না। অর্থাৎ আদর্শগত দেউলিয়াত্বের ঘণ্টা ধ্বনি বেজে উঠেছে পশ্চিমা সভ্যতার।

২। দ্বিতীয় বার্তাটি হলো - পাশ্চাত্যের সামরিক ও প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব এখন আর নির্ণায়ক কোনো বিষয় নয়। আমেরিকান বোমারু বিমানগুলো অব্যাহতভাবে বোমা ফেলার মধ্যেই দু’সপ্তাহে পুরো আফগানিস্তান তালেবানরা দখল করেছে অনেকটা বিনা যুদ্ধেই। বরং আমেরিকান বাহিনীর নিরাপত্তার জন্য কাতার ও পাকিস্তানের সহায়তা চাওয়ার প্রয়োজন হয়েছে, যাতে তালেবানরা তাদের ব্যাপারে আগ্রাসী ও আক্রমণাত্মক না হয়।

৩। তৃতীয় বার্তাটি হলো - আফগানিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদের লোভ আর আল-কায়েদা দমনের অজুহাতে অভিযান চালিয়ে বিপুল অর্থ খরচ করার পরও যুক্তরাষ্ট্র সেখানে বিপর্যয়কর এক অর্থনৈতিক উত্তরাধিকার রেখে গেছে। এরপর আমেরিকা ও তার মিত্রদের অসহযোগিতার পরও যদি ভবিষ্যতে তালেবানরা চ্যালেঞ্জ উত্তরণ করতে পারে তাহলে দেশ, জাতি ও মানবতা উদ্ধারে ভূমিকা নেয়ার শেষ যুক্তিটিও আমেরিকানদের হারিয়ে যাবে।


ছবি - বিবিসি

যদিও তালেবানরা ইতিমধ্যেই ঘোষনা করেছে"আমরা শান্তি, সমৃদ্ধি এবং সত্যিকারের ইসলামিক শাসন চাই ,চাই পুরো বিশ্ব এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক । আমরা দুনিয়ার সবার সঙ্গে সুন্দর কূটনৈতিক সম্পর্ককে স্বাগত জানাই" তারপরেও তাদের সামনে রয়েছে সীমাহীন সমস্যা এবং জটিল বিশ্ব পরিস্থিতি ও রাজনীতি।তারা আফগান দখল করেছে এটা সত্যি তবে তালেবানরা আফগান দখল করলেও এবং বর্তমান অবস্থায় তালেবান তথা ইসলামী আমিরাতের সামনেও তিনটি বিশাল ও বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেগুলো হল -

১।প্রথম চ্যালেঞ্জ - তালেবানরা আফগানিস্তানের সব জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে যে সরকারব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে তা সাফল্যের সাথে শেষ করা। এই লক্ষ্য অর্জনে তারা ২০ বছর যাদের সাথে লড়াই করেছে তাদেরও ক্ষমতার সাথে সংশ্লিষ্ট করতে উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের ক্ষমার এলাকা যে কত বড় তা তিনটি নামের মাঝেই স্পষ্ট হয়ে যায়। হামিদ কারজাই এবং আবদুল্লাহ আবদুল্লাহকে তারা ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় মুখ্য ভূমিকা দিয়েছে, তাদের একজন হলেন তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর গঠিত প্রথম সরকারের প্রেসিডেন্ট আর দ্বিতীয়জন হলেন ক্ষমতাচ্যুত আশরাফ গনি সরকারের দুই নাম্বার ব্যক্তিত্ব। তারা হেরাতের সাবেক গভর্নর ইসমাইল খানকে ক্ষমা করে দিয়ে তালেবানে যোগ দিতে অনুমোদনই করেনি তাকে ভবিষ্যৎ আফগান সরকারের অংশ করতে যাচ্ছে। অথচ এই খান শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তালেবানের বিরুদ্ধে হেরাতে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি আর ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহকেও ক্ষমা করে দিয়ে তাদের প্রতি দেশে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। আশরাফ গনির ভাই তো তালেবানে যোগ দিয়েছে। আগামী এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে তালেবানের নেতৃত্বে সরকার গঠন করা হলে এটি আরো স্পষ্ট হবে।

২। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ - তালেবানের সামনে দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জটি হলো, গৃহবিবাদের অবসান ঘটানো। ২০০১ পূর্ববর্তী তালেবান আন্দোলন ছিল দেশটির জনসংখ্যার ৪২ শতাংশ পশতুন প্রধান একটি আন্দোলন। এখনকার তালেবান হলো পুরো আফগানিস্তানের সব জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বশীল তালেবান আন্দোলন। তাজিক-উজবেক-হাজারা-তুর্কমেন তথা সব আফগান জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃস্থানীয়রা তালেবান আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন এবং হচ্ছেন। গত ২০ বছরের আমেরিকার সমর্থনপুষ্ট সরকারের সময় নারী শিক্ষা থেকে শুরু করে সমাজ উন্নয়নমূলক যেসব কর্মসূচি নেয়া হয়েছিল তার কোনোটাই এখনো তালেবানরা বন্ধ করেনি। আফগানিস্তানের হাজার হাজার মানুষ আমেরিকা যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে ভিড় করছে। তালেবানদের বক্তব্য হলো, যে অর্থনৈতিক দুর্গতি ও দারিদ্র্য বিগত দশকগুলোতে তৈরি হয়েছে তা থেকে বেরিয়ে উন্নত দেশে অভিবাসনের জন্য লোকজন এভাবে ভিড় করছে। এর সাথে তালেবানের সরকার গঠনের সম্পর্ক নেই ততটা। এর মধ্য দিয়ে এটাই বলা হচ্ছে যে, আমেরিকানরাই দেশ ছেড়ে যাওয়ার দুর্দশাগ্রস্ত পরিস্থিতি তৈরি করেছে আফগানিস্তানে। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থা আফগানিস্তানের কেন্দ্র ও প্রাদেশিক পর্যায়ে চালু করতে পারলে ইসলামী আমিরাত দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জটিও জয় করতে পারবে।

৩। তৃতীয় চ্যালেঞ্জ - তালেবানের সামনে তৃতীয় ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জটি হলো, আফগানিস্তানের অর্থনীতিকে সামাল দেয়া এবং সামনে এগিয়ে নেয়ার জন্য একটি গতি তৈরি করা। সব দিক বিবেচনায় এ চ্যালেঞ্জটি হলো তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড়। আর এই চ্যালেঞ্জ জয় করে দেশটিতে স্থিতি এনে দিতে পারলে পশ্চিমা সভ্যতার দাপুটে অবস্থানে এটি শেষ পেরেকের মতো হবে।আফগানিস্তানের অর্থনীতির আকার এখন ২২ বিলিয়ন ডলারের। প্রশ্ন হলো, দেশটিতে আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গতিশীল কার্যক্রম চালু করতে কতটা সক্ষম হবে নতুন সরকার? তারা কি পারবে উন্নয়ন সহায়তাকারীদের আস্থা অর্জন করতে এবং রাষ্ট্রের খনিজ সম্পদে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে সেটিকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে কাজে লাগাতে?

দুই দশক আগে আফগানিস্তানে যখন তালেবানরা শাসন করত তখন অর্থনীতির আকার ছিল এখনকার এক-তৃতীয়াংশের মতো। সরকার চালানোর জন্য আশরাফ গনি প্রশাসনের যত টাকা প্রয়োজন হতো তার চেয়ে অনেক কম অর্থে তালেবানরা রাষ্ট্র চালাতে পারবে দু’টি কারণে।

প্রথমত বিদায় হওয়া আশরাফ গনি তথা কাবুল সরকারের যে বিপুল অর্থ অপচয় ও দুর্নীতির মাধ্যমে নেই হয়ে যেত, সে অবস্থা হবে না তালেবান প্রশাসনে এটা আশা করা যায় এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে সেটিই দেখা গেছে। অভ্যন্তরীণ সঙ্ঘাত ও রক্তক্ষরণ বন্ধ করা গেলে প্রতিরক্ষা খাতের ব্যয় অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। আফগান সেনাদের যে বেতন দেয়া হতো তার অর্ধেক পায় তালেবান মিলিশিয়ারা। ফলে ধারণা করা হয়, তিন বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় করা গেলে অর্থনৈতিকভাবে তালেবান সরকার টিকে যাবে। তালেবানরা রাষ্ট্রের পূর্ণ দখল নেয়ার আগেই তাদের হাতে এক বিলিয়ন ডলারের রাজস্ব আয় হতো। এখন যদি শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে তাদের পক্ষে তিন থেকে চার বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় করা কঠিন হবে না।

দ্বিতীয়ত তালেবানদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার আগে ঘাটে ঘাটে চাঁদা দিতে হতো। এখন এটি বন্ধ হওয়ার কারণে ব্যবসার খরচ অনেক কমে গেছে এবং আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্য ও ভোগ্যপণ্যের দাম কমে গেছে। এ অবস্থায় আফগানিস্তানের ভেতরে "রোড অ্যান্ড বেল্ট" প্রকল্পের অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ যদি শুরু করা যায় এবং সেই সাথে বিপুল খনিজসম্পদের উন্নয়ন ও আহরণ যদি আরম্ভ করা যায়, তাহলে অর্থনৈতিক সঙ্কট তারা কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে মনে হয়। তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের শেষ সময়ের পরামর্শ ছিল, আফগানিস্তান থেকে নিষিদ্ধ আফিম চাষের বিলুপ্তি ঘটানো। তালেবান নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে আফিম চাষ আগেই কমে গিয়েছিল। এটি তালেবান পুরোপুরি বন্ধ করতে পারলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো একটি বড় উৎকণ্ঠা থেকে বেঁচে যাবে। ফলে তারা অর্থনৈতিক অবরোধ চাপিয়ে রাখার মতো চূড়ান্ত ব্যবস্থা থেকে তাদের স্বার্থেই বিরত হতে পারে।


ছবি - বিবিসি।

এর পরও আমরিকা কর্তৃক আফগানিস্তানের সাড়ে ৯ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ আটকে রাখার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হলে বিকল্প বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা তৈরির যে উদ্যোগ চীন, রাশিয়া নিচ্ছে তা পরিণতির দিকে এগিয়ে যেতে পারে বলে অনেকেই মনে করেন । আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা এখন দেশটির সব প্রতিবেশীর কাম্য। আর চীন-রাশিয়া-পাকিস্তান-ইরান এবং মধ্য এশীয় দেশগুলো তাদের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থেই আফগানিস্তানে শান্তি চাচ্ছে। ফলে এই পথে না এসে ভারত বা যুক্তরাষ্ট্রের মতো তালেবান বৈরী শক্তিগুলোর খুব বেশি কিছু করার সুযোগ থাকবে বলে মনে হয় না। আর এর মধ্যে চীন আফগানিস্তানে বিনিয়োগ করার জন্য মুখিয়ে আছে এবং বেইজিং এই অঞ্চলে বাণিজ্য উন্নয়নের জন্য "রুট অ্যান্ড বেল্ট" উদ্যোগের মাধ্যমে এক অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চাইছে তার জন্য আফগানিস্তান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে মনে হয়, আফগানিস্তানে রক্তক্ষয় অধ্যায়ের হয়তোবা পরিসমাপ্তি ঘটতে চলেছে বা ঘটবে।

আর তালেবানরা মোল্লা ওমরের একটি ভবিষ্যৎবাণী তথা কথার প্রতি দৃঢ়ভাবে আস্থা রাখে, সেটি হলো - " দখলদারিত্বের ২০ বছর পূর্তির আগেই দখলদাররা বিদায় নিতে শুরু করবে আফগানিস্তান থেকে। এরপর শত বছরব্যাপী আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ আফগানদের হাতে থাকবে"। যদিও ইতিমধ্যেই মোল্লা ওমরের ভবিষ্যৎবাণীর প্রথম অংশ বাস্তব হয়েছে বলে বিশ্ববাসী দেখছে তবে দ্বিতীয় অংশের বাস্তবায়ন হয় কি হয়না বা হলে কিভাবে হবে তা দেখার জন্য বিশ্ববাসীকে অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছুদিন।

===============================================================
পূববতী পোস্ট -

তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ৩ Click This Link
"তালেবানদের আফগান শাসনের রোডম্যাপ (ইশতেহার) প্রকাশ । কোন পথে এবং কতদূর নিয়ে যেতে চাচ্ছে তালেবানরা আফগানিস্তানকে"?

তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ২ Click This Link
" তালেবানদের আফগানিস্তান দখল " - কেন এবং কি কারণে আফগান সেনাদের এত দ্রুত পরাজয়?

তালেবানদের কাবুল দখল পরবর্তী ফলোআপ পোস্ট - ১ Click This Link
" আফগানিস্তানে আমেরিকার ২০ বছর " - আমেরিকা কি নিয়ে এবং আফগানিস্তানকে কোথায় রেখে যাচছে ? এ ব্যাপারে বিশ্ব নেতৃবৃন্দদের প্রতিক্রিয়া কি ?

তথ্যসূত্র ও সহযোগীতায় - বিবিসি,আল জাজিরা,পার্স টুডে এবং নয়া-দিগন্ত (সম্পাদকীয় - ২৪/০৮/২০২১)

মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৪

কচু+আলু+আদা বলেছেন: আফগানিস্তানে তালেবানরা ফাঁকা মাঠে গোল দিয়েছে। আমেরিকা আফগানিস্তানে যতদিন ছিল এই তালেবানরা চোরাগোপ্তা আত্মঘাতী হামলা ছাড়া কাবুলের ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেনি। তবে আফগানিস্তানে আমেরিকা মিশন শতভাগ ব্যর্থ হয়েছে একমাত্র লাদেনকে হত্যা করা ছাড়া। তবে তালেবানের আফগানিস্তানে আগামী দিনগুলোতে কী ঘটে সেটাই দেখার বিষয়।

৩১ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কচু+আলু+আদা ;) (জটিল বাংগালী মসল্লা ) ভাই, আমার বাড়ীতে ( ব্লগে ) আপনার পদধূলি দেবার এবং প্রথম মন্তব্যের জন্য।

ভাইজান, ৯০ মিনিটের খেলার ফলাফল নির্ধারিত হয় গোলের মাধ্যমে ।আর গোল হয়ত চোখের পলকেই (সেকেন্ডের মধ্যে) হয়ে যায় । যে দল গোল করে সেই বিজয়ী দল হিসাবে গন্য হয় এবং বিজিত (হারা) দলে যদি নেইমার-মেসি-রোনাল্ডো ও থাকে তাতে ফলাফলের কোন হেরফের হয়না।যে গোল দিয়েছে সেই বিজয়ী এটাই শেষ কথা।

ঠিক তধ্রুপ ,আমেরিকা ২০ বছরের আফগান খেলায় হেরেছে,এটাই এবং এভাবেই ইতিহাস মূল্যায়ন করবে।এখন কেউ এভাবে দেখবেনা তালবানরা যুদ্ধ করে জিতেছে না চতুরতা (চুক্তি ও আপোষ) করে জিতেছে।

আর সবার মত আপনার এ মতও একদম সঠিক,আফগানিস্তানে আমেরিকা মিশন শতভাগ ব্যর্থ হয়েছে এবং আফগানরা (তালেবানরা ) আমেরিকাকে যে শিক্ষা দিয়েছে সারা দুনিয়ায় গত ১০০ বছর যাবত আর কেউ দিতে পারেনি ।না পেরেছে ইরাক-ইরান-সিরিয়া-লিবিয়া (যদিও ভিয়েতনামীরা ওদের আগুনে বোমা ওদেরই পিছন দিক দিয়েছে)।

এখন আসলেই এটা দেখার বিষয়,তালেবানরা কিভাবে ভবিষ্যতের আফগানিস্তান কে কোথায় নিয়ে যায় এবং তারা তাদের নীতি ও আদর্শ অনুসারে কিভাবে তারা আফগান শাসন পরিচালনা করে ।

২| ৩১ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৩

জুন বলেছেন: পাক আফগান তোরখাম সীমান্ত দিয়ে ২১৯২ আমেরিকান সৈন্য পাকিস্তানে পৌছেছে আর ১৬২৭ জন সামরিক বিমানে ইসলামাবাদে এসেছে । পাকিস্তানের কট্টরপন্থী বিরোধী দল এর বিরুদ্ধে । তবে পাক স্বরাস্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ বলেছেন এই ব্যাবস্থা সাময়িক, তাদের ২১ থেকে ৩০ দিনের ভিসা দেয়া হয়েছে তারপর পাকিস্তান ত্যাগ করতে হবে । কিন্ত জামাতের ধারনা পারভেজ মুশাররফের আমলের ন্যাটো বাহিনীর মতই ঘাটি গেড়ে বসবে ।
ট্রাম্প তথা রিপাবলিকানরা তো গলা ফাটিয়ে মরছে বিশ্বব্যাপী আমেরিকান সৈন্যবাহীনির এই রকম অমার্যাদায় । এইটা অবশ্য সত্যিই কামরুজ্জামান ।আমেরিকান সৈনিকদের এইরকম ক্লান্ত, বিদ্ধস্ত, পর্যদুস্ত চেহারা ইতিপুর্বে দেখার সৌভাগ্য হয়নি ।

৩১ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ মেরা বহিন (লেডি বতুতা) আপনার মন্তব্যের জন্য ।

আমরা যে যেভাবেই দেখিনা কেন,আসলে আমেরিকা যেভাবে আফগানিস্তান থেকে বেরিয়ে গেছে তা আসলে পরাশক্তি আমেরিকার মার্যাদা ও সম্মানের সাথে কোন ভাবেই মানায় না। তবে এটা ঠিক বোন, কোন মিথ্যার ই শেষ ফলাফল ভাল হয় না । যার প্রমাণ ভিয়েতনাম-ইরাক-সিরিয়া-লিবিয়াতে (আমেরিকা প্রতিটা জায়গায় মিথ্যা ও ভূয়া অজুহাতে একেকটা দেশ আক্রমণ করেছে এবং প্রতিটা দেশকে ধ্বংস করে ছেড়েছে যার প্রমাণ সারা দুনিয়া দেখেছে এবং আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি পাগলা ট্রাম্প ও কয়েকদিন আগে স্বীকার করছেন)।

আর বর্তমানে তাদের গ্রহনযোগ্যতার পাশাপাশি তাদের মুখস্থ বুলি, "নারী স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র " এ বুলিতেও আর দুনিয়ার কেউ বিশ্বাস বা আস্থা রাখতে পারছেনা । আর তাইতো এখন সারা দুনিয়ার সব জায়গায় তাদের এ দূরাবস্থা যা তারা চীন এবং ইরান বিরোধীতার মাধ্যমে প্রতিনয়ত পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে ।

৩| ৩১ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি যে গরুর রচনা লেখেন, কোনদিন সামনাসামনি গরু দেখেছেন?

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৫০

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই (মুরুব্বি) , যথারীতি আপনার সেই বিখ্যাত গাধার ছবির সাথে গরুকে মিলিয়ে মন্তব্য করার জন্য।

আপনি জানতে চেয়েছেন, " আমি সামনা সামনি গরু দেখেছি কিনা" - তবে ভাই আপনার প্রশ্নটা পুরো সঠিক হয়নি।আপনি এটা বলেন নি যে, গরু অরিজিনাল দেশী না বিদেশী ( আমেরিকান)?

যেহেতু বাংলাদেশ গরুবহুল দেশ তাই ভাই দেশী গরু হয়ত কিছু দেখেছিনু,তবে বিদেশী (আমেরিকান) গরু দেখিনি।আপনার কাছে কি স্যাম্পল আছে দু'য়েকটা গরুর। যদি থাকে তাহলে পাঠিয়ে দেন,পরিচিত হই আমেরিকান গরুর (জার্সি গরু আবার বাংলাদেশে ব্যান (নিষিদ্ধ),ইডা পাঠাইলে কট খাইবেন। কাজেই এ ছাড়া বাকি প্রজাতির পাঠাইবেন) দয়া করে আর তার সাথে গরুর বিশদ বিবরণ।

৪| ৩১ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫১

ঢাবিয়ান বলেছেন: বিশ্বে কি পরিবর্তন হচ্ছে জানি না, তবে আমেরিকান সৈনিকদের এইরকম ক্লান্ত, বিদ্ধস্ত, পর্যদুস্ত চেহারা ( জুন আপুর কমেন্ট থেকে ধার করা :) ) দেখে এই ব্লগে আম্রিকায় থাকা ব্লগারদের বিপি যে হাই হচ্ছে তা চোখ বন্ধ করে বলা যায়

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:০৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ ঢাবিয়ান ভাই , আপনার ছোট কিন্তু সাচচা ;) মন্তব্যের জন্য ।

এটা ঠিক ভাই, বর্তমানে সারা দুনিয়ার যে কোন প্রান্তে যে কোন সমস্যার পিছনের কারন যদি অনুসন্ধান করা হয় তাহলে প্রত্যক্ষ কিংবা বা পরোক্ষ যে ভাবেই হোক না কেন ঘটনার পিছনে আমেরিকার হাত/প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। আর তাইতো দুনিয়ার যে প্রান্তেই তারা মার খাউক না কেন মোটামুটি সবাই খুশী হয়।তবে আবার এটাও ঠিক,অনেক সময় হার থেকেও দারুন কিছু শেখা হয়। আর এটাও ঠিক সকল খেলায়ই হার-জিত আছে।

কাজেই, একটা খেলায় হারা মানেই আমেরিকা শেষ হয়ে গেছে এমন নয়। কাজেই তার সমর্থকদের হার মেনে তাদেরই প্রণীত গণতান্ত্রিক অধিকারের (জয়-পরাজয় মেনে নেওয়ার মানষিকতা) প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিপি হাই না করাই ভাল।আজ হেরেছে কাল জিতবে - কাজেই নো টেনশন।

৫| ৩১ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:৩৫

কামাল১৮ বলেছেন: আসলে আমরা জানি না,আমেরিকা কি জন্য এসেছিল আর কি জন্য বা চলে গেলো।আমরা আমাদের ধারনার কথা বলছি।টুই ইন টাওয়ার ধ্বংসের প্রতিষোধ নিতে এসেছিল এ কথা স্পষ্ট।একথা বুঝে গেছে যে কুত্তার লেজ টানলে সোজা হয় না,তাই বৃথা চেষ্টা না করে প্রস্তান করাই শ্রেয় মনে করে চলে গেছে।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:১৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কামাল১৮ ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য ।

আমেরিকার আফগানিস্তানে আসার অর্ন্তনিহীত কারন আমরা জানিনা এটা ঠিক তবে দৃশ্যত তারা যে কারন বলেছে তা হল টুইন টাওয়ার হামলার প্রতিশোধ।আবার এটাও সঠিক যে,এর পিছনে আমেরিকার আরো অনেকগুলো না বলা কারনও বিদ্যমান ছিল।

আমেরিকা আসলে এটা কোনভাবেই ধারনা করতে পারেনি যে, অশিক্ষিত-গরীব-পাহাড়ে ঘেরা-জাতিভেদে জর্জরিত আফগানে তারা এভাবে জড়িয়ে পড়বে সীমাহীন সমস্যায়।আর তাইতো তথাকথিত গণতন্ত্র-নারী স্বাধীনতা সবকিছুর আশা পরিত্যাগ করে ছেড়ে দে মা কেদে বাঁচি বলে আফগান থেকে বের হয়ে বলে " বড় বাঁচা বেঁচে গেছি "।

৬| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: লিখতে থাকুন।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:১৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য ।

শুকরিয়া ভাই। আর আপনিও মন্তব্য করে লেখার প্রেরণা (উৎসাহ ) প্রদান করুন ভাইজান।

৭| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভোর ৫:৫৩

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: আফগানিস্তান সামাজিকভাবে ভিন্ন গোত্র ও ডেরাতে বিভক্ত একটি অঞ্চল বলা যেতে পারে। একটি সম্পূর্ণ বা প্রকৃত রাষ্ট্রের মতো অবস্থা এই দেশটির জনগণ কখনই প্রত্যক্ষ করতে সমর্থ হয় নি। পশতুন, হাজরা, তাজিকরা যে যার মতো নিজেদের এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেছে। রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তারা অনেকটা একতাবদ্ধ হয়েছিল বটে, কিন্তু পরবর্তীতে আবারো যে যার মতো স্বাধীনভাবে চলার পথ অবলম্বন করেছে। অনেকটা আমেরিকাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েই।

পশতুন নেতৃত্বাধীন তালেবানদের অন্য গোষ্ঠীর লোকজন অনুসরণ করবে না বলেই মনে হয়। একমাত্র সমাধান জাতীয় সরকার ধরণের কিছু একটা গঠন করতে পারলে - তবে সেটিও সহজ কাজ নয়। এছাড়াও সেখানে শকুনের মতো হাজির হয়েছে রুশ, চীন ও তুর্কির মতো চতুর খেলোয়াড়রা। এই দেশটিতে শান্তি বা স্থিতিশীলতা আসার সম্ভাবনা সহজ হবে বলে মনে হয় না।

তারপরও তালেবানদের অতীতের চরম বর্বরতার পুনরাবৃত্তি হবে না এই কামনা করি। আফগানিস্তানের জনগণ গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করুক এবং তাদের পছন্দ মতো নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ পাক, সেখানে শান্তি ফিরে আসুক এই কামনা করি।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ স্বামী বিশুদ্ধানন্দজী , আফগান নিয়ে একদম সঠিক মন্তব্যের জন্য ।

সামাজিকভাবে বিভিন্ন জাতি-গোত্রে বিভক্ত আফগানিস্তান আসলেই একটি রাষ্ট্রের ভিতর একাধিক রাষ্ট্রের মতই যেখানে দেশের থেকে যার জাতি-গোত্রের প্রতি অধিক প্রেমী।আর এটাকেই পুজি করে অনেকেই আফগানিস্তানে নিজেদের উপস্থিতি বজায় রাখতে পেরেছে।

তবে এবারের অবস্থা ও পরিস্থিতি দেখে মনে হচছে তালেবানরা এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।তবে তাদের চেষ্টাই শুধু সাফল্যের নিয়ামক হিসাবে থাকবেনা । তাদের চেষ্টার সাথে সাথে সব জাতি-গোষ্ঠীর মিলের পাশাপাশী রাশিয়া-চীন-ইরান-তুর্কির পজেটিভ ভূমিকা তাদের সাফল্যের জন্য দরকার হবে। তা না হলে আবার সেই আগের জায়গাই ফিরে যাবে আফগান।

আর বাকী সবার মত আমরাও আশাবাদী তালেবানদের সাফল্যের যাতে করে হতভাগা আফগানিস্তানের জনগণ ফিরে পেতে পারে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও তাদের পছন্দ মতো নেতৃত্ব নির্বাচনের এবং সেখানে শান্তি ফিরে আসে।

৮| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:২৫

কলাবাগান১ বলেছেন: আমেরিকার বদ্যানতাতে আমেরিকার যাওয়ার জন্য এক পা আগিয়ে দিয়ে ও ব্লগারদের দ্বিচারিতার মুখ দেখে আমি মুগ্ধ।

আপনারা দেখেন তালেবানের বিজয় ....চুক্তি করে বিজয় হয় না...। বিজয় হয় যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করে। কাতারে ট্রাম্পের সময়ই এই চুক্তি হয়েছিল, যার সমাপন বাইডেন এর হাত ধরে।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:১৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কলাবাগান১ ভাই , আমাদের (মানুষের) স্বভাব নিয়ে একদম সঠিক মন্তব্যের জন্য ।

আমরা মানুষ মাগনা (বিনা পয়সায়) পেলে আলকাতরাও লুংগিতে করে নিতে চাই আর আমেরিকা!!!! ইডার সুযোগ পাইলে আমরা কি করুম তার নমুনা কিছুদিন পর পর দেখা যায় ভূমধ্যসাগরের লিবিয়া উপকূলে কিভাবে দলে দলে সাতার কেটে বংগবাসীরা ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেন।আর দ্বিচারিতা ? ;) ,ভাই এটা অনেক সময় জায়েজ (যখন এবং যদি এতে নিজের সুবিধা বিরাজমান থাকে)।

যেভাবেই আমরা বলি,চুক্তি কিংবা অসম যুদ্ধ - ফলাফল আমেরিকা আফগানিস্তান ত্যাগ করেছে, এটাই শেষ এবং সত্যি কথা।এখন দেখার বিষয় তালেবানরা কিভাবে এবং কি করে হতভাগা-নিপিড়িত আফগান জাতির জন্য।

৯| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৩৩

কলাবাগান১ বলেছেন: ব্লগারদের দ্বিচারিতা দেখার মত: নিজে হাফ প্যান্ট পড়ে কক্সবাজার এর বিচে এর পানিতে জলকেলি করছে... আর এদিকে মন্তব্য করছে যে শেখ হাসিনার পর্দা হয় না...

যুদ্ধে জয়ী হলে, ৫ হাজার আমেরিকান সৈন্যদের গায়ে ফুলের টোকা ও না দিয়ে তালেবান রা চলে যেতে দিত না। এরা তো যুদ্ধবন্দি হত....

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৫২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আপনাকে আবারো ধন্যবাদ কলাবাগান১ ভাই ।

আমাদের এটাই সমস্যা দ্বিচারিতা।নিজে নিয়ম-কানুন মানি কিংবা না মানি অন্যের নিকট থেকে শতভাগ নিয়ম-কানুন মানা আশা করি।আবার এটাও ভূলে যাই অন্যের দোষ-গুণ বিচার করা আমাদের কাজ নয় এবং যার যার কাজের জন্য (ভাল কিংবা খারাপ) সেই দায়ী,অন্যকেউ নয়।কাজেই কে পর্দা করল আর কে করলনা তা দেখার দায় আমার নয় - এটাই ভূলে যাই আমরা।

যে কোন জিনিষের ফলাফলের জন্য ২ বছর যথেষ্ট সময়,যেটা আমেরিকা আফগানিস্তান করেছে। এত দীর্ঘ সময়েও কাংখিত ফলাফল না পেয়ে তারা বেরিয়ে যেতে চেয়েছে এটা ঠিক।আবার তারা যাদেরকে সহায়তা করেছে (আফগান সরকার) তারাও নানা কারনে নিজেদের যোগ্য হিসাবে তুলে ধরতে পারেনি।আর তার ফলেই আমেরিকানরা তালেবানদের সাথে শান্তি চুক্তি করছে এবং উভয়ে উভয়ের প্রতি সহনশীল (উভয়ে উভয়কে মেনে নেয়া) আচরন করে যার যার জায়গায় চলে গিয়েছে- ফিরে এসেছে।

১০| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:১২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বিশ্ব ব্যবস্থা ও পরিস্থিতির পরিবর্তন নির্ভর করে বিশ্বের সামরিক শক্তিতে বলীয়ান দেশগুলির নিয়তের উপরে। মধ্যপ্রাচ্চ ও এশিয়ার দেশগুলিতে যে যুদ্ধ হানাহানি এগুলি রেস্লিং খেলার মত। সব আগে থাকতে ঠিক করা থাকে। নিজেদের আধিপত্য বৃদ্ধি, অস্ত্র ব্যবসা, প্রাকৃতিক সম্পদে ভাগ বসানো ইত্যাদি উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিকল্পনা করে। সেই অনুযায়ীই সব কিছু চলে। ওনাদের নিয়তে পরিবর্তন না আসলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৫৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই , বিশ্ব ব্যবস্থা ও পরিস্থিতির নিয়ে একদম সঠিক মন্তব্যের জন্য ।


পশ্চিমা (আমেরিকা-ই্উরোপ) দেশগুলো গরীব এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিকে নিয়ে আসলেই টম-জেরী খেলা খেলে। আর এ খেলা চলে তাদের স্বার্থে তথা নিজেদের আধিপত্য বৃদ্ধি, অস্ত্র ব্যবসা, প্রাকৃতিক সম্পদে ভাগ বসানোর জন্য। আর তাদের সাথে এবং তাদের দোশর হিসাবে মিলে যায় স্থানীয় কিছু উছিষ্ঠ্যভোগী।

আর তাইতো সারা বিশ্বে আজ এত হানাহানি।

১১| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:২৬

নতুন বলেছেন: এখন সম্ভবত আফগানস্তান চীনের সাহাজ্য নিয়ে চাইনিজ মানি ট্রাপে পড়তে যাচ্ছে।

তাদের শরিয়া আইনের সরকার চালানো থেকে সরে না আসলে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই তাদের সাথে থাকবে না।

এখন নতুন সরকারের প্রতি জনগনের কতটুকু সমর্থন আছে সেটা দেখার বিষয়। আমেরিকা গেছে অবশ্যই ভালো হয়েছে কিন্তু আফগানের সাধারন মানুষ কি শরিয়া আইনের শাসন চায়?

এখন দেখার বিষয় কাদের কাছ থেকে তারা অর্থনৈতিক সাহাজ্য পায়। সেটার উপরে অনেক কিছুই নির্ভর করবে।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ নতুন ভাই ,আপনার মন্তব্যের জন্য ।

তালেবানদের সফলতা অর্জন করতে হলে রাশিয়া-চীন-ইরান-তুর্কি-পাকিস্তানর পজেটিভ ভূমিকা দরকার হবে ।এদের যে কোন একটি দেশের অসহযোগীতাই তালেবানদের জন্য ব্যর্থতার কারন হয়ে দাড়াতে পারে।

আর এখন পর্যন্ত তাদের কার্যক্রমে যা মনে হচছে তারা যুগের সাথে তাল মিলিয়েই কিছু করার চেষ্টা করছে তা সে শরীয়া আইন কিংবা নেতা নির্বাচন বা দেশ পরিচালনা।এখন এটাই লক্ষ্যণীয় জাত-গোত্রে শতধা বিভক্ত আফগানকে তারা কতটা সফল হয় এক ছাতার নিচে নিয়ে আশার ক্ষেত্রে। আর সবাইকে এক ছাতার নীচে নিয়ে আশার পাশাপাশী দূর্বল অর্থনীতিকে কিভাবে সফল করে বা আদৌ করতে পারে কিনা তার উপরই তাদের সাফল্য নির্ভর করবে। আর সফল না হলে হারিয়ে যাবে ইতিহাসের স্বাভাবিক নিয়মে।

১২| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:০৪

রানার ব্লগ বলেছেন: আমি তো শুনলাম ভারতের সাথে তালেবানদের দহরম মহরম শুরু হয়ে গেছে। দেখা যাক বলিউডের নেশা কাজ করে কি না।

তালেবানরা তাদের কট্টরপন্থী সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ না করলে কোন দেশই তাদের কোনরুপ সমর্থন দেবে বলে মনে হয় না, পাকিস্থান বাদে কারন তালেবানি তলওয়ার তাদের ঘারের উপর।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২০

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রানার ব্লগ ভাই ,আপনার মন্তব্যের জন্য ।

খবরে যতটুকু প্রকাশ,দোহায় তালেবানদের প্রতিনিধির সাথে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের আলোচনা হয়েছে,যাতে উভয়ের উভয়ের স্বার্থ রক্ষায় চেষ্টা করবে। যেমন - তালেবানরা তাদের ভূমি ভারতের বিরুদ্ধে কাউকে ব্যবহার করতে দিবেনা আবার ভারত তালেবানদের স্বীকৃতি এবং তাদের সথে স্বাভাবিক সম্পর্ক রক্ষার পাশপাশী তাদের দেশগঠনে অংশগ্রহণ করবে । এ অনেকটা "দেয়া-নেয়ার" মত ব্যাপার যা উভয়ের নিজেদের নিজ নিজ স্বার্থে পরিচালিত হবে

আর তাদের গত কিছুদিনের কার্যক্রম থেকে এটা ধারনা করা ভূল হবেনা যে , তবে এবারের অবস্থা ও পরিস্থিতি আগের থেকে ভিন্ন হবে এবং তালেবানরা সকল সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।

১৩| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩১

নতুন বলেছেন: আর এখন পর্যন্ত তাদের কার্যক্রমে যা মনে হচছে তারা যুগের সাথে তাল মিলিয়েই কিছু করার চেষ্টা করছে তা সে শরীয়া আইন কিংবা নেতা নির্বাচন বা দেশ পরিচালনা।এখন এটাই লক্ষ্যণীয় জাত-গোত্রে শতধা বিভক্ত আফগানকে তারা কতটা সফল হয় এক ছাতার নিচে নিয়ে আশার ক্ষেত্রে।

সমস্যা আসবে এখানেই। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শরীয়া আইনে দেশ শাসন করা যায় না।

যতদিন ছাত্রভাইদের ইন্টারনেট আর আধুনিক প্রযুক্তি থেকে দুরে রাখতে পারবে তাদের বড় হুজুর রা ততদিন ছাত্ররা শরীয়া আইনের পক্ষে জজবা দেখাবে। কিন্তু আধুনিক যুগের প্রযুক্তি নাকি শরীয়া আইন কোনটা তাদের আর্কষন করবে বলে আপনার মনে হয়?

আমি চাই জনগনের সরকার ক্ষমতায় আসুক, জনগন গনতান্ত্রিক উপায়ে দেশ পরিচালনা করুক। তাদের ধর্মীয় বোধ সাথে নিয়ে বিশ্বের বুকে তারা ভালো থাকুক।

আফগানীরা বেশ সহজ সরল। অতিথিপরায়ন মানুষ। বোকা টাইপের মানুষ এদের ধর্মীয় আফিমে বুদ করে পরিচালনা করছে কিছু মানুষ।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ নতুন ভাই ,আপনার প্রতিমন্তব্যের জন্য ।

যে কোন সরকারকেই অনেক সমস্যা মোকাবেলা করেই তার শাসনকার্য পরিচালনা তথা সরকার টিকিয়ে রাখতে হয়।আর সেই দেশ যদি গরীব এবং যুদ্ধে ধ্বংসের দেশ হয়ে থাকে তাহলে দেশ পূর্ণগঠন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অনেক বেশী সংগ্রাম করতে হয় সেই দেশের শাসকগণকে।

তবে এ সব সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রাথমিকভাবে শক্ত হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বিকল্প নেই।এখন আফগান জনগনের আশা আকাংখা যদি সীমাহীন হয় এবং তারা যদি তালেবানকে সহযোগীতা না করে তবে ন জনগনের ভাগ্য পরিবর্তন হবে আর না তালেবানরা ক্ষমতায় টিকতে পারবে।এখানে দু দলেরই দুজনকে সহযোগীতা করতে হবে।সেখানে শরীয়া আইন কিংবা গনতন্ত্র এগুলি খুব বেশী বিবেচ্য বিষয় হবে বলে মনে হয়না।

১৪| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৮:২৭

নতুন বলেছেন: খন আফগান জনগনের আশা আকাংখা যদি সীমাহীন হয় এবং তারা যদি তালেবানকে সহযোগীতা না করে তবে ন জনগনের ভাগ্য পরিবর্তন হবে আর না তালেবানরা ক্ষমতায় টিকতে পারবে।এখানে দু দলেরই দুজনকে সহযোগীতা করতে হবে।

এরা জনগনের ভোটে না বরং দেশ দখল করেছে। তাই জনগন এদের আশা করেনাই।

যাই হোক দেখা যাক কি হয়।

তবে এরা ভালো করতে পারবেনা বলেই আমার মনে হয়। কারন শরিয়া আইনের পেছনে দৌড়ে বর্তমান বিশ্বের মানুষের সমর্থন পাওয়া যাবেনা ।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: প্রথমেই, দেরী করে উত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখিত নতুন ভাই এবং ধন্যবাদ আপনার প্রতিমন্তব্যের জন্য ।

তালেবানদের ক্ষমতা দখল প্রায় ২ সপ্তাহ হয়ে গেছে এখনো তারা নানা কারনে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার গঠন করতে পারেনি তবে সবাই আশা করছে হয়তো ভাল কিছু তথা পুরো দেশ ও সব জাতি গোষ্ঠি নিয়ে তাদের সরকার গঠনের যে প্রচেষ্ঠা তা হয়ত দেশে দীর্ঘমেয়াদে শান্তি-সফলতা বয়ে আনতে সাহায্য করবে ।

আর ভাল কিছু যদি তারা করতে পারে তাহলে মনে হয়না মানুষ আইন নিয়ে মাথা ঘামাবে।কারন,ভাল থাকাই শেষ কথা ।আর এ দুনিয়ার নিয়মই হল কিছু পাবার জন্য কিছু হারাতে বা ছাড়তে হয়।

১৫| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০৫

জাহিদ হাসান বলেছেন: বর্তমান আফগানিস্তানের একজন সাধারণ নারী ও পুরুষের সাক্ষাৎকার -

নারীঃ আমাদেরকে এখন আর চাকরি কিংবা লেখাপড়া করতে হয় না। এগুলো করতে পারবো তাও ভাবি না। আমাদেরকে বাড়ির বাইরেও যেতে হয় না। যেতে পারবো, সেই কল্পনাও করি না!

পুরুষঃ আপনাদের দেশে পুরুষদের হয়তো অনেক লক্ষ্য থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশের পুরুষদের একটাই লক্ষ্য। বউ-বাচ্চা নিয়ে বিমানের চাক্কা ধরে হলেও এই সন্ত্রাসের জনপদ থেকে বের হয়ে যাওয়া! :D

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:০৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ জাহিদ হাসান ভাই ,আপনার মন্তব্যের জন্য ।

হয়ত আপনার মন্তব্যই হয়ত সঠিক।তবে এটাও সঠিক যে, দেশ ছেড়ে যাবার সুযোগ থাকলে অন্যসবার কথা বা আফগানদের কথা বাদ আমি-আপনিই সবার আগে দেশ ছেড়ে যাব (কারন,যদি পালিয়ে গিয়ে ভাল কিছু পাওয়া যায় তাহলে কেই না পালাবে বলেন?)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.