নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবি - bd24live.com
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আমাদের মাঝে এসেছে মাহে রমজান এবং দেখতে দেখতে রমজান চলে এসেছে তার শেষ দশকে বা মাগফেরাতের দিন সমুহে। যারা মর্যাদার মাস রমজান পেলো অথচ নিজেদের গুনাহ মাফ করাতে পারলো না তাদের চেয়ে দুর্ভাগা আর কেউ নেই,নবী করীম (সাঃ) সেসব ব্যক্তি ও রোজাদারদের জন্য অভিশাপ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে হাদিসে বলা হয়েছে, " হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ওই ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, যার জীবনে রামজান মাস এলো, অথচ নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারলো না"। (তিরমিজি শরীফ)। পবিত্র এই মাস ইবাদতের মাস , ক্ষমার মাস । নবী (সাঃ) বলেছেন,"তোমরা রমজানের শেষ দশকের বে-জোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো" (বুখারি শরীফ)। এই মাসের শেষ দশ দিনের বিজোড় রাতে এমন একটি রাত আছে যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। যদিও অনেক মনে করেন ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে শবে কদর তবে তা স্থির কোন বিষয় নয় বরং শেষ দশকের যে কোন বিজোড় রাতেই তা হতে পারে । আর তাই আমাদেরকে সবগুলি বিজোড় রাতেই ইবাদতের মাধ্যমে লাইলাতুল কদর তালাশ করতে হবে।
শবে কদর রমজানের মধ্যেই এবং শেষ দশদিনের বিজোড় রাতে এতে কোন সন্দেহ নেই। রাসুলে করিম (সাঃ) বলেছেন,"তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে শবে কদরকে সন্ধান করো। এ রাতগুলো হলো ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯। মনে রাখতে হবে, আরবিতে দিনের আগে রাত গণনা করা হয়। আল্লাহপাক এ রাতকে গোপন রেখেছেন আমাদের উপর রহম করে। তিনি দেখতে চান এর বরকত ও ফজিলত লাভের জন্য কে কত প্রচেষ্টা চালাতে পারে। লাইলাতুল কদরে আমাদের কর্তব্য হলো বেশি বেশি নিজের জন্য আত্মীয় স্বজনদের জন্য দোয়া করা। হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, "রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে কদরের রাত জেগে ইবাদত করবে, তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে"। (বুখারি শরিফ, হাদিস নং - ৩৪)।
মুহাক্কিকগণ বলেন, আরবিতে "লাইলাতুল কদর" শব্দদ্বয়ে নয়টি হরফ বা আরবি বর্ণ রয়েছে। আর সুরা কদরে "লাইলাতুল কদর" শব্দদ্বয় তিনবার রয়েছে। নয়কে তিন দিয়ে গুণ করলে সাতাশ হয়, তাই তাদের মতে ২৭ (সাতাশে) রমজানের রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। (তাফসিরে মাযহারি)।
মহান আল্লাহপাক আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মতদের ইবাদতের জন্য বিশেষ কিছু সুবিধা প্রদান করেছেন। এর মধ্যে পাঁচটি রাত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । যে সব রাতের ইবাদতে অশেষ সওয়াব লাভ করা যায়। ইবাদতের এই বিশেষ পাঁচটি রাত হলো ১। জুমার রাত ২। ঈদুল ফিতরের রাত ৩। ঈদুল আযহার রাত ৪। শবে বরাত বা মুক্তির রাত তথা নিসফ শাবান বা শাবান মাসের মধ্য রাত ৫। শবে কদর বা কদরের রাত অর্থাৎ মর্যাদাপূর্ণ রজনী।
" শবে কদর " ফারসি শব্দ। "শব" মানে রাত বা রজনী আর "কদর" মানে সম্মান, মর্যাদা, গুণাগুণ, সম্ভাবনা, ভাগ্য ইত্যাদি। শবে কদর অর্থ হলো মর্যাদার রাত বা ভাগ্যরজনী। শবে কদরের আরবি হলো লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত। যে রাতে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে, সে রাতই লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন, "নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি মর্যাদাপূর্ণ কদর রজনীতে। আপনি কি জানেন, মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম সমভিব্যাহারে অবতরণ করেন। তাঁদের প্রভু মহান আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সব বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তির ধারা চলতে থাকে উষা পর্যন্ত"। ( সুরা আল কদর , আয়াত - ১ - ৫)। ভারতীয় উপমহাদেশ, পারস্যসহ পৃথিবীর অনেক দেশের ফারসি, উর্দু, বাংলা, হিন্দি নানা ভাষাভাষী মানুষের কাছে এটি "শবে কদর" নামেই সমধিক পরিচিত।
ছবি - bd.newmuslim.net
রমজান মাস পবিত্র কোরআন নাজিলের মাস। শবে কদর কোরআন নাজিলের রাত। এ রাতেই প্রথম পবিত্র মক্কার হেরা পর্বতের গুহায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে ফেরেশতাদের সরদার হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রতি মহাগ্রন্থ আল কোরআন অবতীর্ণ হয়। এ প্রসংগে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন," রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা'আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর"। (সুরা আল বাকারা, আয়াত - ১৮৫)।
কোরআন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব। আসমানি একশ সহিফা, চারখানা কিতাবসহ মোট একশ চারটি কিতাবের মধ্যে কোরআনই সেরা। কারণ, এই কিতাব নাজিল হয়েছে আখেরি নবী, সর্বশ্রেষ্ঠ নবী, নবীগণের ইমাম, রাসুলদের সরদার, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রতি। এই কোরআনের স্পর্শ বড়ই সৌভাগ্যের। হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম এই কোরআন বহন করেই ফেরেশতাদের সরদার হওয়ার গৌরব লাভ করেছেন। মরুর দেশ ‘জজিরাতুল আরব’ এই কোরআনের স্পর্শেই পবিত্র আরব ভূমির সম্মান লাভ করেছে। অলক্ষুনে ও দুর্ভোগময় খ্যাত ‘ইয়াসরিব’ এই কোরআনের বরকতেই পুণ্য ভূমি ‘মদিনা মুনাওয়ারা’র সম্মানে ধন্য হয়েছে। তাগুতের আখড়া পাপের আকর শিরক ও কুফরের শীর্ষ তীর্থস্থান ‘বাক্কা’ এই কোরআনের তাজাল্লিতে পবিত্র মক্কা নগরীতে রূপান্তরিত হয়েছে।সর্বোপরি কোরআনের সংস্পর্শে একটি সাধারণ রাত "লাইলাতুল কদর" বা "শবে কদর" রজনীর সম্মানে বিভূষিত হয়েছে। কোরআনের সঙ্গে যার যতটুকু সম্পর্ক ও সংস্পর্শ থাকবে, তিনি ততটুকু সম্মানিত ও মর্যাদার অধিকারী হবেন।
ছবি - jugantor.com
লাইলাতুল কদর উপলক্ষে আমাদের করণীয় -
১। এ রাতে ইবাদাতের পূর্বে গোসল করে নেয়া উত্তম। কদরের ফজিলত পাওয়ার উদ্দেশ্যে কিছু নফল ইবাদত করা, নফল নামাজ আদায় করা। কোরআন তেলাওয়াত করা, তাছবীহ তাহলীল পাঠ করা কর্তব্য। দুই দুই রাকআত করে নফলের নিয়ত করে যেকোনো সূরাই সূরা ফাতেহার সঙ্গে মিলিয়ে নামাজ পড়া যাবে। তাতে কোনো অসুবিধা নেই। উত্তম হলো নফল নামাজ ধীরে সুস্থে লম্বা লম্বা ক্বেরাত দিয়ে পড়া এবং ধীরস্থিরে রুকু-সিজদা আদায় করা।
২। লাইলাতুল কদর হলো বছরের শ্রেষ্ঠ রাত। এ রাতের শ্রেষ্ঠ দোয়া হলো ক্ষমা চাওয়ার দোয়া। এ রাতে মহানবী (সাঃ) ক্ষমা চাওয়ার দোয়া শিক্ষা দিলেন যে, তুমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাও, ক্ষমা পাওয়ার জন্য দোয়া করো।হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, "হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ),আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে আমি ওই রাতে আল্লাহর কাছে কী দোয়া করব? রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, তুমি বলবে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।’ (ইবনে মাজাহ)।
কেউ যদি জীবনে অনেক কিছু পায় কিন্তু আল্লাহর ক্ষমা না পায়, তাহলে তার জীবন ব্যর্থ। তাই এ রাতে অন্তরকে নরম করে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়ার পূর্বে খাঁটি দিলে তওবা ইস্তেগফার করতে হয়।
খাঁটি তওবার চারটি শর্ত
১। পূর্বের গুনাহ থেকে ফিরে আসা বা গুনাহ ছেড়ে দিতে হবে।
২। গুনাহর জন্য মনে মনে অনুতপ্ত হতে হবে যে, আমি বড়ই অন্যায় করেছি ।
৩। ভবিষ্যতে ওই গুনাহ আর করবো না বলে মনে মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করতে হবে ।
৪। বান্দাহর কোনো হক নষ্ট করে থাকলে যথাসাধ্য সে হক আদায় করে দিতে হবে।
শবে কদরের রাতের আমল -
বেশি বেশি নফল নামাজ, তাহাজ্জুদ, সালাতুস তাসবিহ, উমরী কাজা নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দান-সদকা, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, তওবা-ইসতেগফার, দুয়া-দুরূদসহ ইত্যাদি নফল আমলের প্রতি মনযোগী হওয়া একান্ত জরুরি।
শবে কদরের নামাজ -
প্রকৃত অর্থে শবে কদরের আলাদা নামাজ বলে কিছু নেই, যেহেতু এই রাতটি ইবাদত বন্দেগি করে কাটাতে হবে তাই হাদিসেই এই সমাধান দেয়া হয়েছে। আর বিশ্ব মুসলিম এই রাতে বিশেষ কিছু ইবাদত পালন করে থাকেন।
শবে কদরের নফল নামাজের নিয়ম -
১। এ রাতে প্রথমেই পড়া যায় দুই রাকাত তাহিয়াতুল অযুর নামায - দুই রাকাত তাহিয়াতুল অযুর নামাজের নিয়ম - প্রতি রাকাতে আলহামদুলিল্লাহ ( সূরা ফাতিহা) পড়ার পর , ১ বার আয়াতুল কুরসী এবং তিন বার ক্বুলহু আল্লাহ শরীফ ( সূরা এখলাছ) মিলিয়ে পড়া যায়।
২। দুই রাকাত,দুই রাকাত করে নফল নামায শবে কদরের নামাজ দু‘রাকাত করে যত বেশী পড়া যায় তত বেশী ছওয়াব। নামাজের প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর সূরা ইখলাছ, সূরা ক্বদর, আয়াতুল কুরছী বা সূরা তাকাছুর ইত্যাদি মিলিয়ে পড়া অধিক ছওয়াবের কাজ। এই ভাবে কমপক্ষে ১২ রাকাত নামাজ আদায় করা উত্তম। এর বেশি যত রাকাত আদায় করা যায় ততই উত্তম।প্রতি ৪ রাকাত পর পর কিছু তাসবিহ-তাহলীল আদায় করে মহান আল্লাহর নিকট দোয়া কামনা করা অতি উত্তম। এই ভাবে সারা রাত নামাজ আদায় করা যেতে পারে।
এছাড়া এভাবে ও করা যায়, প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর, ১ বার আয়াতুল কুরসী এবং ১৫ বার করে সূরা এখলাছ শরীফ, অতঃপর সালাম ফিরানোর পর ১২ বার দুরূদ শরীফ। ফযীলত - রুজিতে রবকত, দুঃখ-কষ্ট হতে মুক্তি লাভ করবে, গুনাহ হতে মাগফিরাতের বখশিস পাওয়া যাবে।
ছবি - pixelstalk.net
তাছাড়া এ রাতের নিয়মিত নফল ইবাদতের মধ্যে রয়েছে - বাদ মাগরিব ছয় থেকে বিশ রাকাত আউওয়াবিন নামাজ।
৩।আওয়াবীন নামাজ - মাগরিব ও এশার নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে আদায়কৃত ছয় রাকাত নামাজ ‘আউয়াবিন’ নামে পরিচিত। আল্লামা মাওয়ার্দি এই মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। (মুগনির মুহতাজ - ১/৩৪৩)। তবে কেউ কেউ ‘দুহা’ নামাজকেই আউয়াবিনের নামাজ বলেছেন। নাম নিয়ে মতভিন্নতা থাকলেও এই সময় নামাজ আদায়ের গুরুত্ব হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, "যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ আদায় করবে এবং এগুলোর মধ্যে কোনো মন্দ কথা না বলে, তার আমলনামায় বারো বছর ইবাদতের সওয়াব লেখা হবে"। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস - ১১৬৭) ।
হজরত আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, "যে ব্যক্তি মাগরিবের পর বিশ রাকাত নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন"। (তিরমিজি, মিশকাত, ফয়জুল কালাম, হাদিস - ৪৪৯-৪৫০)।
তাছাড়া, এ রাতের শ্রেষ্ঠতম ইবাদত হলো তাহাজ্জুদ নামাজ। এ প্রসংগে মহান আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন, "এবং ভোর রাত্রির কিছু অংশ কুরআন তিলাওয়াত আর নামায কায়েম করার মধ্য দিয়ে জাগ্রত থাকো। এটা তোমার জন্যে অতিরিক্ত দায়িত্ব। অচিরেই তোমার রব তোমাকে ‘প্রশংসিত স্থানে’ প্রতিষ্ঠিত করবেন"।( সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত - ৭৯)।
ছবি-tazakhobor24.com
৪। তাহাজ্জুদ নামাজ - ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ নামাজ হলো তাহাজ্জুদ। পবিত্র কোরআনে তাহাজ্জুদ আদায়ের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।সালাতুল লাইল বা তাহাজ্জুদ এশার নামাজ আদায়ের পর থেকে সুবেহ সাদিকের আগ পর্যন্ত পড়া যায়। তবে অর্ধ রাতের পর থেকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ভালো। শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা সর্বোত্তম।শেষ রাতের এ নামাজ অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। যাকে তাহাজ্জুদের নামাজ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এ নামাজ সুন্নত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়তেন।প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই দুই রাকাত করে এ নামাজ আদায় করতেন। যেকোনো সূরা দিয়েই এ নামাজ পড়া যায়। তবে তিনি লম্বা কেরাতে নামাজ আদায় করতেন। তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা উত্তম।তাই প্রতি বার ২ রাকাত ২ রাকাত করে ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়াই ভালো।সম্ভব হলে ১২ রাকাআত তাহাজ্জুদ নামাজও আদায় করা যায়। তবে ৮ রাকাআত আদায় করা উত্তম।
এ ছাড়া এ রাতে সালাতুস তাসবিহ এবং অন্যান্য নফল নামাজ ও আদায় করা যায়।
৫।সালাতুত তাজবীহ - সালাতুত তাসবীহ "তাসবীহের নামাজ" নামেও পরিচিত। নবী মোহাম্মদ (সাঃ) তার অনুসারীদেরকে এ নামাজ পালনে উৎসাহিত করছেন। জীবনে একবার হলেও মুসলমানরা যেনো এ নামাজ পড়ে সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।সালাতুত তাসবীহ চার রাকাত। প্রতি রাকাতে "সুবাহানাল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার" তাসবীহগুলো ৭৫ বার পড়তে হয়। চার রাকাতে মোট ৩০০ বার পড়তে হয়।
ছবি- pinterest.com
শবে কদরের নামাজের নিয়ত - আরবীতে
"নাওয়াইতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’য়ালা রাকআতাই সালাতিল লাইলাতিল কাদ্রি নফ্লে মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি- আল্লাহু আকবর"।
বাংলায় নিয়ত "আমি কাবামুখী হয়ে আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য শবে কদরের দুই রাকআত নফল নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম - আল্লাহু আকবর"।
নামাজ শেষে নিচের দোয়াটি কমপক্ষে একশত বার পড়া উত্তম - “ সুব্হানাল্লাহি ওয়াল হাম্দু লিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর, লা হা’ওলা কুয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহিল্ আলীয়্যিল আযীম ”।
কোরআন পড়া,জিকির ও দোয়া - এ রাতে কুরআন নাজিল হয়েছে । কাজেই এ রাতে অর্থ বুঝে কুরআন পড়তে হবে এবং কুরআনের আলোকে জীবন গড়ার ও চলার শপথ করতে হবে।এ রাতে (১)কোরআন শরিফের সুরা কদর, সুরা দুখান, সুরা মুয্যাম্মিল, সুরা মুদ্দাচ্ছির, সুরা ইয়া-সিন, সুরা ত-হা, সুরা আর রহমান ও অন্যান্য ফজিলতের সুরাসমূহ তিলাওয়াত করা, (২) বেশী বেশী দুরুদ শরিফ পড়া, (৩) তাওবা-ইস্তিগফার অধিক পরিমাণে করা, (৪) দোয়া-কালাম, তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজকার ইত্যাদি করা,(৫) কবর জিয়ারত করা (৬) নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সব মোমিন মুসলমানের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনায় দোয়া করা। হাদিসে যে দোয়া ও জিকিরের অধিক ফজিলতের কথা বলা হয়েছে সেগুলো থেকে কয়েকটি নির্বাচিত করে অর্থ বুঝে বার বার পড়া যেতে পারে। ইস্তেগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) ও দরুদ আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়। কমপক্ষে ১০০ বার ইস্তেগফার ও ১০০ বার দরুদ পড়া যেতে পারে ।
ছবি - daily-sun.com
মুনাজাত - মুনাজাতের মাধ্যমে বান্দার বন্দেগি ও আল্লাহর রবুবিয়াতের প্রকাশ ঘটে,বান্দাহ তার প্রভূর কাছে চায়। প্রভূ এতে ভীষণ খুশি হন। মহান আল্লাহ তার বান্দার প্রতি এতটাই অনুগ্রহশীল যে, তিনি তার কাছে না চাইলে অসস্তুষ্ট হন।হাদীসে বলা আছে, " যে আল্লাহর নিকট কিছু চায় না আল্লাহ তার উপর রাগ করেন "- (তিরমিযি) এবং " দোয়া ইবাদতের মূল”- (আল হাদিস)।" যার জন্য দোয়ার দরজা খোলা তার জন্য রহমতের দরজাই খোলা রয়েছে " (তিরমিযি)। কাজেই আমরা কায়মনোবাক্যে আল্লাহর দরবারে মুনাজাত করব, ক্ষমা চাইব, রহমত চাইব, জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইব। আল্লাহ আমাদের সকলকে এ রাতে তার রহমত-বরকত-মাগফেরাত নসীব করুন এবং বেশী বেশী আমল করার তওফিক দান করুন।
তথ্যসূত্র - আল কোরআন,হাদীস ।
==================================================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -
ঈমান ও আমল - ১৬ Click This Link
" শান্তির ধর্ম ইসলাম " - আসুন এক নজরে দেখি ইসলাম কি এবং কেন ?
ঈমান ও আমল - ১৫ Click This Link
" পবিত্র মাস মাহে রমজান " - রহমত-বরকত-মাগফেরাতের এই মাসে কিছু আমলের অভ্যাস আমাদের সকলেরই করা উচিত।
ঈমান ও আমল - ১৪ Click This Link
" পবিত্র মাহে রমজান " - মাহে রমজানের ঐতিহাসিক পটভূমি , গুরুত্ব ও মর্যাদা ।
ঈমান ও আমল - ১৩ Click This Link
" পবিত্র মাস রজব " - রজব মাসের ফজিলত এবং আমল (করণীয়) ও বর্জনীয় ।
ঈমান ও আমল - ১২ Click This Link
" দোয়া " কি এবং কেন ? কাদের জন্য দোয়া শুধু ধোঁয়া বা কাদের দোয়া কবুল হয়না ?
ঈমান ও আমল - ১১ Click This Link
" পবিত্র ও সম্মানিত মাস মহরম " - হিজরি সনের প্রথম মাস এবং পবিত্র আশুরা ।ইসলামে আশুরার ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং আশুরার দিনে করণীয় ও বর্জনীয় ।
ঈমান ও আমল -১০ Click This Link
("পবিত্র মাস জিলহাজ্জ"-জিলহাজ্জের প্রথম দশ দিন মুসলমানদের নিকট বছরের সেরা দশদিন-ঈমান ও আমলের জন্য)।
ঈমান ও আমল - ৯ Click This Link
(" শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা " - যা সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব হাসিলে সাহায্য করে। পবিত্র রমজানের পর যা সকল মুসলমানেরই রাখা উচিত)।
ঈমান ও আমল - ৮ Click This Link
(আজ পবিত্র " লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত "। মহিমান্বিত এ রজনীতে মুসলমানদের করণীয় ।)
ঈমান ও আমল - ৭ Click This Link
("যাকাত " ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ । যা আল্লাহর অনুগত বান্দাদের জন্য অশেষ ছওয়াব, রহমত ও মাগফিরাতের পাশাপাশি আত্মশুদ্ধির ও প্রতিশ্রুতি দেয়)।
ঈমান ও আমল - ৬ Click This Link
("রোযা" ইসলামের তৃতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ । যার বিনিময় বা প্রতিদান আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন নিজেই দিবেন)।
ঈমান ও আমল - ৫ Click This Link
(" নামাজ " ইসলামের দ্বিতীয় ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ । যা মুসলিম-অমুসলিমের মাঝে পার্থক্যকারী সূচক হিসাবে বিবেচিত এবং মুসলমান মাত্রই দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে)।
ঈমান ও আমল - ৪ Click This Link
("ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ"- যার শুরুটা কালেমা বা ঈমানে। যা শুধু মুখে বলা নয়,অন্তরে বিশ্বাস ও কর্মে পরিণত করার বিষয়)।
ঈমান ও আমল - ৩ Click This Link
(তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব )।
ঈমান ও আমল - ২ Click This Link
("শুক্রবার - পবিত্র জুমা"- মুসলমানদের জন্য এক মর্যাদা ও ফজিলত পূর্ণ দিন এবং জুমার দিনের কতিপয় আমল )।
ঈমান ও আমল - ১ Click This Link
(যেসব আমলে মানুষের অভাব দূর হয় ও জীবন সুখের)
২৪ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:৫৮
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ আশিকি ৪ ভাই , ব্লগে আপনাকে স্বাগতম এবং আমার ব্লগে আপনার প্রথম মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা।
প্রথম মন্তব্য বা প্রথম সব কিছুই বরাবর বিশেষ কিছু হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। সে হিসাবে আপনার প্রথম মন্তব্য যদি বিষয়ের সাথে প্রাসংগিক হতো তাহলে আরো ভাল লাগত।
আর আপনি যে কয়জন ভাইয়ের নাম বলতে চেয়েছেন তারা অনেক ভালো ব্লগার এবং দীর্ঘদিন ধরে ব্লগে আছেন। কাজেই উনারা যা করবেন বা করছেন তা ব্লগের ভালর জন্য , এতে কোন সন্দেহ নেই।
ভালো থাকবেন এবং মন্তব্য করে লেখকদের উৎসাহিত করবেন , এই আশা করি।
২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০১
সোনাগাজী বলেছেন:
পুরোটা, নাকি আংশিক কপি-পেষ্ট?
২৬ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:১৮
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজীর রূপান্তরীত সোনাগাজী ভাই , আপনাকে স্বাগতম এবং আপনার মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা।
পুরোটা, নাকি আংশিক কপি-পেষ্ট?
- আপনি যখন চাঁদগাজী ছিলেন তখনও পোষ্ট না পড়েই এবং লিখিত বিষয়ের প্রাসংগিকতা বর্জিত মন্তব্য করতেন । এখন চাঁদগাজী সোনাগাজীতে রূপান্তরীত বা পুনর্জন্ম হওয়ার পরও আপনার কোন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি । মানুষ বলে পুনর্জন্ম হলে মানুষ আগের ভূলগুলি আর করেনা, তবে আপনি আগের কিছুই এখনো ছাড়েন নি। আর তাইতো আপনি লেখা না পড়েই মন্তব্য করেছেন । এর ফলে আপনি বুঝতে পারেনি লেখা আসলে পুরোটা, নাকি আংশিক কপি-পেষ্ট।
আপনি যদি কষ্টকরে ও মেহেরবাণী করে পুরো পোষ্ট একবার মনযোগ দিয়ে পড়ে নেন তাহলে আপনিই রায় দিতে পারবেন কতটুকু কপি-পেষ্ট।
ধন্যবাদ ভাই এবং অনুরোধ আবারো লেখা পড়ে এবং বিষয়ের প্রাসংগিকতার মন্তব্যের জন্য।
৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:২৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আল্লাহতায়ালাও মানুষের জন্য ধাঁধা তৈরি করে রেখেছেন মনে হয়। ৫ টা বেজোড় রাতের মধ্যে কোন রাতটা শবে কদর হবে এটা খুঁজে বের করতে হবে আমাদের।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:৩৬
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য সাথে কৃতজ্ঞতা এবং দুঃখিত দেরিতে জবাবের জন্য।
আল্লাহতায়ালাও মানুষের জন্য ধাঁধা তৈরি করে রেখেছেন মনে হয়। ৫ টা বেজোড় রাতের মধ্যে কোন রাতটা শবে কদর হবে এটা খুঁজে বের করতে হবে আমাদের।
- আসলে ভাই ,জন্মের পর থেকে এবং আমাদের দেশে এই দেখে এসেছি এবং খুব জাকজমকের সাথে রমজানের ২৬ তারিখ দিবাগত রাত যেভাবে আমাদের দেশে পালন করা হয়ে থাকে তাতে এ ধারনা ছিল যে ২৬ তারিখ ই শবে কদর। তবে এ বিষয়ে বিশদ পড়াশোনা ও দেশের বাহিরে আসার পর দেখছি যে শবে কদর আসলে স্থির কোন বিষয় নয় । এখানে আমাদের দেশের মত একদিনে এবং এতটা জাকজমকের সাথে তারা পালন করেনা তা ঠিক তবে ২০ শে রমজানের পর থেকে জোড়-বিজোড় প্রতি রাতেই তারা কিভাবে শবে কদর তালাশ করে ।
সন্ধ্যা রাতে তারাবিহ পড়ে সবাই ঘরে চলে যায় তার পর রাত ১২ টার আগে সবাই পিল পিল করে নিরবে মসজিদের চলে আসে এবং ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ জামাতের সাথে আদায় করে বিতরের শেষ রাকাতে দীর্ঘ মুনাজাতের মাধ্যমে নামাজ শেষ করে রাত ১ টা থেকে ১:৩০ এর মাঝে সবাই মসজিদ ত্যাগ করে চলে যায় নিরবে। এ শুধুই ইবাদত না দেখা দয়াময়ের উদ্দেশ্যে । এটাতে না থাকে কোন বাহুল্য না থাকে কোন উৎসবের ভাব । এ এক অন্যরকম নীরব ভাললাগার , ভাল কিছু করার অনুভূতি।যারা তা করেনি তারা তা অনুভব করতে পারবেনা।
রমজান মাস ইবাদাতের মাস , রমজান মাস ক্ষমার মাস, মাগফেরাতের মাস । ইবাদত আমার মতে একদিন নয় প্রতিদিনই করা উচিত এবং সরবে নয় এরকম নীরবেই আমাদের সকলকে মহান আল্লাহর নিকট নিজেদেরকে সর্মপণ করা উচিত। তবে আফসোস লাগে একটাই , যে আমরা আসলে সব কিছুই করতে চাই মন দিয়ে তবে আল্লাহর ইবাদতের ক্ষেত্রেই যত আপত্তি।
মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে মাহে রমজানের সর্বোচ্চ সুবিধা অর্জনের তওফিক দিন এবং আমাদের সকলকে তার রহমত-বরকত,ক্ষমা ও মাগফেরাত নসিব করুন।
৪| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৯:১২
সোনালি কাবিন বলেছেন: সোনাগাজী বলেছেন:
পুরোটা, নাকি আংশিক কপি-পেষ্ট?
# ha ha
২৬ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:৪৬
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সোনালি কাবিন ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য সাথে কৃতজ্ঞতা এবং দুঃখিত দেরিতে জবাবের জন্য।
সোনাগাজী বলেছেন: পুরোটা, নাকি আংশিক কপি-পেষ্ট? # ha ha
- অনুকরণীয় ও অনুসরনের যোগ্যকে (আল্লাহর রাসুল-সাহাবী-আল কোরআন-হাদীস) অনুসরনে দোষের নয় তবে সবজায়গায় এবং সবাইকে অন্ধ অনুসকরণ ও অনুসরনে হিতে বিপরীত হবার সম্ভাবনা থাকে।
মহান আল্লাহপাক আমাদেরকে বিবেক-বুদ্ধি দিয়েছেন। দিয়েছেন ভাল-খারাপ যাচাইয়ের ক্ষমতা। কাজেই যে কোন ব্যাপারে নিজের বিবেক-বুদ্ধির উপর ভরসা রাখা এবং যাচাই সাপেক্ষে ভালকে গ্রহণ করা এবং খারাপকে ত্যাগ করা উচিত, কারো অনুকরন করে নয়। আর সংখ্যাধিক্য কিংবা সংখ্যাগরিষ্ঠদের মতামতও যে সব সময় সঠিক হবে এমন কোন কথা নেই।
আপনার উদ্দেশ্যে এতটুকুই বলবো, আপনি যদি কষ্টকরে ও মেহেরবাণী করে পুরো পোষ্ট একবার মনযোগ দিয়ে পড়ে নেন তাহলে আপনিই রায় দিতে পারবেন কতটুকু কপি-পেষ্ট। আর এ এমন এক বিষয় যা আপনি একটু সময় নিয়ে পড়লে আপনার সময় যে বিফলে যাবেনা এবং কিছুটা হলেও জানতে পারবেন এটা নিশ্চিত।
ধন্যবাদ ভাই এবং অনুরোধ আবারো লেখা পড়ে এবং বিষয়ের প্রাসংগিকতার মন্তব্যের জন্য।
৫| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১১:১৬
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন:
লাইলাতুল কদর শুধুমাত্র রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত
সূরাঃ ৯৭ কদর এর অনুবাদ-
১। নিশ্চয়ই আমরা কোরআন নাযিল করেছি কদরের রাত্রিতে।
২। তুমি কি জান কদরের রাত্রি কি?
৩। কদরের রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।
৪। সে রাতে ফিরিশতাগণ ও রুহ নাযিল হয় প্রত্যেক কাজে তাদের রবের অনুমতিক্রমে।
৫। শান্তিই শান্তি সে রাত প্রভাত উদয় হওয়া পর্যন্ত।
সহিহ মুসলিম, ১৬৫৭ নং হাদিসের (সাতাশ তারিখের রাত কদরের রাত হওয়ার প্রমাণ)অনুবাদ-
১৬৫৭। হযরত (ইবনে হুবাইশ) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উবাই ইবনে কাবকে বলতে শুনেছি। তাঁকে বলা হলো যে, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ বলেন, যে ব্যক্তি সারা বছর রাত জেগে নামাজ পড়বে সে কদরের রাত পাবে। এ কথা শুনে উবাই ইবনে কাব বললেন, যিনি ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই সেই মহান আল্লাহর শপথ! নিশ্চিতভাবে লাইলাতুল কদর রমজান মাসে। একথা বলে তিনি কসম করেন কিন্তু ইনশাআল্লাহ বললেন না। এরপর তিনি আবার বললেন, আল্লাহর কসম! কোন রাতটি কদরের রাত তাও আমি জানি। সেটি হলো এ রাত যে রাতে রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে নামাজ পড়তে আদেশ করেছেন। সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাতটিই সে রাত। আর ঐ রাতের লক্ষণ হলো, সে রাত শেষে সকালে যে সূর্য উদিত হবে তা’ উজ্জল হবে কিন্তু সে সময় তার কোন আলোক রস্মি থাকবে না।
* হযরত উবাই ইবনে কাব (রা.) আল্লাহর কসম করে বললেন রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত লাইলাতুল কদর।
সহিহ মুসলিম, ১৭৩৬ নং হাদিসের (ফাজায়েলে কোরআন) অনুবাদ-
১৭৩৬। হযরত আনাস ইবনে মালেক কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) উবাই ইবনে কাবকে (রা.) লক্ষ্য করে বললেন, মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমাকে তোমার সামনে কোরআন শরীফ সুস্পষ্ট করতে আদেশ করেছেন। উবাই ইবনে কাব (রা.) বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করেন, আল্লাহ তা’য়ালা কি আপনার নিকট আমার নাম উল্লেখ করেছেন? রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহ তা’আলা আমার নিক তোমার নাম উল্লেখ করেছেন।বর্ণনাকারী আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন একথা শুনে উবাই ইবনে কাব (রা.) ক্রন্দন আরম্ভ করলেন।
* আল্লাহর আদেশে মহানবি (সা.) হযরত উবাই ইবনে কাবের নিকট কোরআন শরীফ স্পষ্ট করেছেন। সুতরাং তিনিই ভালো জানেন কোরআনে বর্ণিত লাইলাতুল কদরের রাতটি ঠিক কবে। যেহেতু তিনি আল্লাহর কসম করে বলেছেন, রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত লাইলাতুল কদর সেহেতু রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত ছাড়া অন্য কোন রাতকে লাইলাতুল কদর সাব্যস্ত করা যায় না। এখন প্রশ্ন অন্য রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা হাদিসের তবে কি হবে? সহজ হিসাব হলো হযরত ইবাই ইবনে কাবের (রা.) হাদিসের কারণে সে সকল হাদিস মানসুখ সাব্যস্ত হবে।
সহিহ তিরমিযী, ৩৭৪৮ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭৪৮। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা চার ব্যক্তির নিকট থেকে কোরআন শিক্ষা কর, ইবনে মাসউদ, উবাই ইবনে কাব, মুয়াজ ইবনে জাবাল ও হোযাইফার স্বাধীন দাস সালেম থেকে।
* রাসূল (সা.) নিযুক্ত কোরআনের শিক্ষক হযরত উবাই ইবনে কাব (রা.) যখন আল্লাহর নামে কসম করে বলেছেন, রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত লাইলাতুল কদর, তখন এ বিষয়ে কারো কোন সন্দেহ থাকতে পারে না।
সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের মধ্যে আমির।কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে বিরোধ দেখাদিলে উহা উপস্থাপিত কর আল্লাহ ও রাসুলের নিকট। ওটা উত্তম এবং পরিনামে ভাল।
মেশকাত ২২৪ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-
হযরত আওফ ইবনে মালেক আশজায়ী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বয়ং আমির অথবা আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি অথবা কোন অহংকারী ব্যতীত অপর কেউ ওয়াজ করতে পারে না।
* মুসলিমদের সবচেয়ে বেশী অনুসরনীয় হলেন ১। আল্লাহ ২। রাসূল (সা.) ৩। আমির ৪।আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি
সহিহ বোখারী ১৮৭০ নং হাদিসের (কিতাবু সালাতিত তারাবীহ) অনুবাদ-
১৮৭০। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযানের রাতে ঈমানের সাথে এবং ছাওয়াবের আশায় (নামাযে) দাঁড়ায় তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। ইবনে শেহাব বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) ইন্তেকাল করলেন এবং হকুমও এ অবস্থায়ই রয়ে গেল। তারপর আবু বকর (রা.) এর সম্পূর্ণ খেলাফত আমল এবং ওমরের (রা.) খেলাফত আমলের প্রথম ভাগ এ অবস্থায়ই কেটে গেল। (এ সময়) সকলেই একা একা তারাবীহ পড়ত।ইবনে শিহাব ওরওয়াহ ইবনে জোবায়ের থেকে বর্ণনা করেছেন,আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুল কারী বলেছেন, আমি রমযানের এক রাতে ওমর ইবনে খাত্তাবের সাথে মসজিদের দিকে বের হলাম। ;দেখলাম,বিভিন্ন অবস্থায় বহুলোক একা একা নামায পড়ছে।তখন হজরত ওমর (রা.) বললেন,আমার মনেহয় এদের সকলকে একজন কারীর সাথে জামাতভুক্ত করে দিলে সর্বাপেক্ষা ভাল হবে।অতঃপর তিনি তাই করার মনস্থ করলেন এবং তাদেরকে উবাই ইবনে কা’ব (রা.) এর পিছনে জামাতভুক্ত করে দিলেন। এরপর আমি দ্বিতীয় রাতে আবার তাঁর সাথে নামাজে বের হলাম। দেখলাম, লোকেরা তাদের ইমামের সাথে নামাজ পড়ছে। ওমর (রা.) বললেন এটি একটি উত্তম বিদয়াত। রাতের যে অংশে লোকেরা নিদ্রা যায়, তা যে অংশে তারা ইবাদত করে তদপেক্ষা উত্তম।অর্থাৎ রাতের প্রথমভাগ অপেক্ষা শেষ ভাগের নামায অধিক উত্তম। এটিই তিনি বুঝাতে চেয়েছেন।
* আমিরুল মুমিনিন হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাবের (রা.)পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি হলেন হযরত উবাই ইবনে কাব (রা.)। তিনি আল্লাহর কসম করে, রাসূলের (সা.) আদেশের কথা বলে রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত লাইলাতুল কদর হওয়া বিষয়ে নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন। সুতরাং রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত ছাড়া অন্য রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা সংক্রান্ত হাদিস সমূহ মানসুখ সাব্যস্ত হবে।
সূরাঃ ৬ আনআম, আয়াত নং ১৫৩ এর অনুবাদ-
১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা সাবধান হও।
* কোরআন বিভিন্ন পথ অনুসরন করতে নিষেধ করেছেন। সুতরাং বিভিন্ন রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা সংক্রান্ত হাদিস সমূহ আয়াত অনুযায়ী মানসুখ সাব্যস্ত করা মুসলিমদের জন্য বাধ্যতামূলক।সুতরাং অভিন্ন পথ দেখানো রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত লাইলাতুল কদর সাব্যস্ত হওয়া সংক্রান্ত হাদিস খানা কার্যকরি সাব্যস্ত হয়ে এবিষয়ে বিভিন্ন পথ দেখানো হাদিস সমূহ মানসুখ সাব্যস্ত হবে।
সহিহ মুসলিম, ৬৬৯ নং হাদিসের (কিতাবুল হায়েয) অনুবাদ-
৬৬৯। হযরত আবুল আলা ইবনে শিখখীর (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কোন কোন হাদিস একটি আরেকটিকে মানসুখ বা রহিত করে, যেমন কোরআনের কোন কোন আয়াত কোন কোন আয়াতকে মানসুখ বা রহিত করে।
* একটি হাদিস আরেকটি হাদিসকে মানসুখ করে সূত্রে রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত লাইলাতুল কদর সাব্যস্ত হওয়া সংক্রান্ত হাদিস পরিপন্থি সকল হাদিসকে এ হাদিস মানসুখ করবে। কারণ এ হাদিসের রাবী আমিরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি।
সহিহ মুসলিম, ১৬৫৮ নং হাদিসের (সাতাশ তারিখের রাত কদরের রাত হওয়ার প্রমাণ) অনুবাদ-
১৬৫৮। হযরত যির ইবনে হুবাইশ উবাই ইবনে কা’ব থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি উবাই ইবনে কা’ব (রা.) ‘লাইলাতুল কদর’ রাত সম্পর্কে বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি রাতটি সম্পর্কে জানি এবং এ ব্যপারে আমি সর্বাপেক্ষা বেশী জানি। যে রাতে রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে নামাজ পড়তে আদেশ করেছেন সেটিই অর্থাৎ সাতাশ তারিখের রাতই কদরের রাত।
সহিহ বোখারী ১৮৮১ নং হাদিসের (কিতাবু সালাতিত তারাবীহ) অনুবাদ-
১৮৮১। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। তোমরা ২৪ তম রাতে (লাইলাতুল কদর) তালাশ কর।
সহিহ বোখারী ১৮৮০ নং হাদিসের (কিতাবু সালাতিত তারাবীহ) অনুবাদ-
১৮৮০। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.)থেকে বর্ণিত। নবি করিম (সা.) বলেছেন,তোমরা লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশ দিনে তালাশ কর। লাইলাতুল কদর এসব রাতে আছে। যখন নয়, সাত কিংবা পাঁচ রাত বাকী থেকে যায়।
সহিহ বোখারী ১৮৭৬ নং হাদিসের (কিতাবু সালাতিত তারাবীহ) অনুবাদ-
১৮৭৬। নবি করিম (সা.) বলেছেন, তোমরা লাইলাতুর কদর রমজানের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতে তালাশ কর।
সহিহ বোখারী ১৮৮৩ নং হাদিসের (কিতাবু সালাতিত তারাবীহ) অনুবাদ-
১৮৮৩। হযরত উবাদা ইবনে সামেত (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবি (সা.) আমাদেরকে শবে কদর সম্বন্ধে জানাতে বেরিয়ে আসলেন। এমন সময় দু’জন মুসলিম কলহে লিপ্ত হলো। তখন তিনি বললেন,আমি বের হয়েছিলাম তোমাদেরকে শবে কদর সমন্ধে খবর দেওয়ার জন্য; কিন্তু অমুক অমুক ব্যক্তি ঝগড়ায় লিপ্ত হলো। সম্ভবতঃ এর মধ্যে তোমাদের কল্যাণ নিহিত ছিল। অতএব তোমরা শবে ক্বদর নবম, সপ্তম ও পঞ্চম রাতে তালাশ কর।
সহিহ বোখারী ১৮৭৪ নং হাদিসের (কিতাবু সালাতিত তারাবীহ) অনুবাদ-
১৮৭৪। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। নবি করিমের (সা.) কতিপয় সাহাবীকে স্বপ্নযোগে শেষ সাত রাতে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়েছিল। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমি দেখতে পাচ্ছি তোমাদের স্বপ্ন শেষ সাত রাতে সমাঞ্জস্যশীল হয়ে গেছে। তাই যে ব্যক্তি তা’ খোঁজ করতে চায় সে যেন শেষ সাত রাতেই তা’ তালাশ করে।
সহিহ বোখারী ১৮৭৯ নং হাদিসের (কিতাবু সালাতিত তারাবীহ) অনুবাদ-
১৮৭৯। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশ দিনে ইতিকাফে বসতেন এবং বলতেন, তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশ দিনে তালাশ খোঁজ কর।
* যাঁদের থেকে শবে কদর সংক্রান্ত হাদিস বর্ণিত তাঁরা হলেন ১। হযরত ওবায়দুল্লাহ ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.) ২। হযরত উবাই ইবনে কা’ব (রা.) ৩। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) ৪। হযরত উবাদা ইবনে সামেত (রা.) ৫। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) ৬। হযরত আয়েশা (রা.)।
# উপরোক্ত ছয় জন রাবীর মধ্যে হযরত উবাই ইবনে কাব-
১। রাসূল (সা.) নিযুক্তস কোরআনের শিক্ষক ২। আল্লাহর আদেশে আল্লাহ তাঁর নিকট কোরআন স্পষ্ট করেছেন ৩। তিনি আমিরুল মুমিনিন হযরত ওমর (রা.) এর পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি ৪। তাঁর বর্ণিত হাদিস কোরআনের সাথে গরমিল নয়। আর যেহেতু আল্লাহ এক রাতের কথা বলেছেন সেহেতু এক রাত সাব্যস্ত করণে হযরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বর্ণিত হাদিস গৃহিত হয়ে এর পরিপন্থি অপর সকল হাদিস মানসুখ সাব্যস্ত হবে। সুতরাং লাইলাতুল কদর শুধুমাত্র রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত সাব্যস্ত হবে। হাদিস সমূহের বক্তব্য অনুযায়ীও এটা স্পষ্ট যে রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত সংক্রান্ত হাদিস এ সংক্রান্ত সর্বশেষ হাদিস। আর মানসুখের নিয়মও হলো পরের হাদিস আগের হাদিসকে মানসুখ করে। সুতরাং মানসুখ হাদিস দিয়ে রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাতের গুরুত্ব কমানো অর্থহীন। যারা সব কিছুতে বিদয়াত দেখতে পায় তারা শুধুমাত্র রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত কে লাইলাতুল কদর নির্ধারণ করাকে বিদয়াত বলে, অথচ এটাই সুন্নাহ, বরং এ রাত ছাড়া অন্য রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা বিদয়াত।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:৫৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ মহাজাগতিক চিন্তা ভাই , আপনার চমতকার তথ্যবহুল মন্তব্যের জন্য সাথে কৃতজ্ঞতা এবং দুঃখিত দেরিতে জবাবের জন্য।
লাইলাতুল কদর শুধুমাত্র রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত
- আসলে ভাই ,জন্মের পর থেকে এবং আমাদের দেশে এই দেখে এসেছি এবং খুব জাকজমকের সাথে রমজানের ২৬ তারিখ দিবাগত রাত যেভাবে আমাদের দেশে পালন করা হয়ে থাকে তাতে এ ধারনা ছিল যে ২৬ তারিখ ই শবে কদর। তবে এ বিষয়ে বিশদ পড়াশোনা ও দেশের বাহিরে আসার পর দেখছি যে শবে কদর আসলে স্থির কোন বিষয় নয় । এখানে আমাদের দেশের মত একদিনে এবং এতটা জাকজমকের সাথে তারা পালন করেনা তা ঠিক তবে ২০ শে রমজানের পর থেকে জোড়-বিজোড় প্রতি রাতেই তারা কিভাবে শবে কদর তালাশ করে ।
সন্ধ্যা রাতে তারাবিহ পড়ে সবাই ঘরে চলে যায় তার পর রাত ১২ টার আগে সবাই পিল পিল করে নিরবে মসজিদের চলে আসে এবং ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ জামাতের সাথে আদায় করে বিতরের শেষ রাকাতে দীর্ঘ মুনাজাতের মাধ্যমে নামাজ শেষ করে রাত ১ টা থেকে ১:৩০ এর মাঝে সবাই মসজিদ ত্যাগ করে চলে যায় নিরবে। এ শুধুই ইবাদত না দেখা দয়াময়ের উদ্দেশ্যে । এটাতে না থাকে কোন বাহুল্য না থাকে কোন উৎসবের ভাব । এ এক অন্যরকম নীরব ভাললাগার , ভাল কিছু করার অনুভূতি।যারা তা করেনি তারা তা অনুভব করতে পারবেনা।
সুতরাং লাইলাতুল কদর শুধুমাত্র রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত সাব্যস্ত হবে। হাদিস সমূহের বক্তব্য অনুযায়ীও এটা স্পষ্ট যে রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত সংক্রান্ত হাদিস এ সংক্রান্ত সর্বশেষ হাদিস। আর মানসুখের নিয়মও হলো পরের হাদিস আগের হাদিসকে মানসুখ করে। সুতরাং মানসুখ হাদিস দিয়ে রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাতের গুরুত্ব কমানো অর্থহীন। যারা সব কিছুতে বিদয়াত দেখতে পায় তারা শুধুমাত্র রমজানের সাতাশ তারিখ সকালের পূর্বের রাত কে লাইলাতুল কদর নির্ধারণ করাকে বিদয়াত বলে, অথচ এটাই সুন্নাহ, বরং এ রাত ছাড়া অন্য রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা বিদয়াত।
- এটা আপনি অনেকটাই ঠি বলেছেন। অধিকাংশ ফকিহ ও মোহাদ্দিছগণের মতে ২৬ তারিখ দিবাগত রাতই শবে কদর । তবে
রমজান মাস যেহেতু ইবাদাতের মাস , রমজান মাস ক্ষমার মাস, মাগফেরাতের মাস ।আর তাই ইবাদত আমার মতে একদিন নয় প্রতিদিনই করা উচিত এবং সরবে নয় এরকম নীরবেই আমাদের সকলকে মহান আল্লাহর নিকট নিজেদেরকে সর্মপণ করা উচিত। তবে আফসোস লাগে একটাই , যে আমরা আসলে সব কিছুই করতে চাই মন দিয়ে তবে আল্লাহর ইবাদতের ক্ষেত্রেই যত আপত্তি।
তবে এখানে একটা কথা ঠিক যে , শবে কদর নফল ইবাদত । এ যেই কেউ করতে পারে বা নাও করতে পারে , এ ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই। নেই কোন ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা যেমনটা বাধ্যবাধকতা রয়েছে ফরজ নামাজের জন্য।কাজেই যে বা যারা পারবে তারা পুরো রমজান মাসই বেশী বেশী ইবাদত করবে শেষ ১০ দিনে ইতেকাফ করবে , এতে দোষের কিছু নয়।
মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে মাহে রমজানের সর্বোচ্চ সুবিধা অর্জনের তওফিক দিন এবং আমাদের সকলকে তার রহমত-বরকত,ক্ষমা ও মাগফেরাত নসিব করুন।
৬| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১০:৫৫
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. বলেছেন: আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি মাগরিবের সলাতের পর ছয় রাকআত নফল সালাত পড়লো এবং তার মাঝখানে কোন মন্দ কথা বলেনি, তাকে বারো বছরের ইবাদাতের সম-পরিমাণ নেকী দান করা হলো। [১১৬৭]
তাহকীক আলবানী : দঈফ জিদ্দান।
ফুটনোটঃ
[১১৬৭] তিরমিযী ৪৩৫, ইবনু মাজাহ ১৩৭৪। তাহক্বীক্ব আলবানী: যঈফ জিদ্দান। তাখরীজ আলবানী: জামি সগীর ৫৬৬১ যঈফ জিদ্দান, ইবনু মাজাহ ১৩৭৪ যঈফ জিদ্দান, তিরমিযী ৪৩৫ যঈফ জিদ্দান, মিশকাত লাম তাতিম্মা ১১৭৩, যঈফ তারগীব ৩৩১ যঈফ, যঈফা হ৪৬৯ যঈফ জিদ্দান। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আবুল হুসায়ন আল উকলী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। উসমান বিন আবু শায়বাহ তাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন সালিহ আল মিসরী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ২. উমার বিন আবু খাসআম আল ইয়ামামী সম্পর্কে ইমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না।
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১১৬৭
হাদিসের মান: খুবই দুর্বল
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির মাগরিবের পর ছয় রাক’আত নামায আদায় করলে এবং তার মাঝখানে কোন অশালীন কথা না বললে তাঁকে এর বিনিময়ে বার বছরের ইবাদাতের সমান সাওয়াব দেয়া হবে।
অত্যন্ত দুর্বল, ইবনু মাজাহ (১১৬৭)।
ফুটনোটঃ
আবূ ঈসা বলেনঃ আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মাগরিবের পর বিশ রাক’আত নামায আদায় করে আল্লাহ্ তা’আলা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করেন।
আবূ ঈসা বলেনঃ আবূ হুরাইরার হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র যাইদ ইবনু হুবাব হতে উমার ইবনু আবূ খাসআমের সূত্রেই এ হাদীসটি জানতে পেরেছি। আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈলকে বলতে শুনেছি, উমার ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু আবূ খাসআম একজন প্রত্যাখ্যাত রাবী। হাদিসশাস্ত্রে তিনি খুবই দুর্বল।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৪৩৫
হাদিসের মান: খুবই দুর্বল
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD
আউওয়াবিন নামে যে সালাত প্রচলিত আছে তা খুবই দুর্বল!
তাছাড়া লাইলাতুল কদরের নামে কি কোনো সালাত আছে? যার নিয়ত আরবিতে করতে হয়? দয়াকরে আরবি নিয়ত যে করতে হয় তার রেফারেন্সটা দিবেন।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:২৩
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী ভাই , আপনার চমতকার তথ্যবহুল মন্তব্যের জন্য সাথে কৃতজ্ঞতা এবং দুঃখিত দেরিতে জবাবের জন্য।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি মাগরিবের সলাতের পর ছয় রাকআত নফল সালাত পড়লো এবং তার মাঝখানে কোন মন্দ কথা বলেনি, তাকে বারো বছরের ইবাদাতের সম-পরিমাণ নেকী দান করা হলো। [১১৬৭]
উক্ত হাদিসের রাবী ১. আবুল হুসায়ন আল উকলী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। উসমান বিন আবু শায়বাহ তাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন সালিহ আল মিসরী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ২. উমার বিন আবু খাসআম আল ইয়ামামী সম্পর্কে ইমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। হাদিসের মান: খুবই দুর্বল
- ভাই শবে কদর নফল ইবাদত । সারা বছর নফল ইবাদত করেও এক রাকাত ফরজ ইবাদতে সমকক্ষ হওয়া যাবেনা। এখন হাদীস বিশারদরা যে হাদীস বর্ণনা করেছেন তার মান মূল্যায়ন করা আমাদের মত সাধারন মানুষের কাজ নয় । এতে করে বহুবিদ জটিলতা তৈরীর আশংকা থাকে । কারন, ধর্মীয় ব্যাপারে মাসলা-মাসায়েল দেয়া-নেয়ার জন্য ফকীহ-আলেমগণ আছেন এবং এগুলি তাদের কাজ।
এখন আপনি হাদীসের মান দূর্বল বলে কিংবা আপনার নিজস্ব সিদ্ধান্তে আপনি নফল ইবাদত করতে পারেন বা নাও পারেন । এ ব্যাপারে ধর্ম আপনাকে কোন কিছুই বলবেনা এবং এ নফল ইবাদত না করার জন্য আল্লাহ কাউকে কোন শাস্তিও দিবেন না। কাজেই এ নিয়ে আর কিছু বলারও থাকেনা। মন চাইলে কেউ রাত জেগে ইবাদত করবে না চাইলে করবে না। তবে হাদীসের মান কিংবা মুহাদ্দিসগনের মানের বিচারের চেষ্টা করা কোন মতেই শিষ্ঠাচারের মাঝে পড়েনা এবং একটা ব্যাপারে আমি নিশ্চিত যে তারা আমাদের থেকে লাখোগুণ ভাল মানুষ ছিলেন।
আউওয়াবিন নামে যে সালাত প্রচলিত আছে তা খুবই দুর্বল!
- , কি বলব? বলার কিছু নাই।
আমরা এখন অধিকাংশ মানুষ দৈনিক ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজই ঠিকমত আদায় করিনা আর নফল ?
তাছাড়া লাইলাতুল কদরের নামে কি কোনো সালাত আছে? যার নিয়ত আরবিতে করতে হয়? দয়াকরে আরবি নিয়ত যে করতে হয় তার রেফারেন্সটা দিবেন।
- না ভাই এরকম কোন নামাজ আছে বলে মনে হয়না । আর যেই নামাজই নেই তার আবার নিয়ত!!!!!!!!!!!!
তারপরও , যদি নামায আমরা পড়ি তাহলে আরবী-ফারসী-বাংলা - হিন্দি- স্পেনীস-ইংলিশ-ল্যাটিন- হিব্রু -চাইনিজ-নেপালী-মালয়লাম যে ভাষাতেই আপনি নিয়ত করেন না কেন আল্লাহ-খোদা-ভগবান-গড-যিশু-ঈশ্বর-বিশ্ববিধাতা-সৃষ্টিকর্তা-স্রষ্টা আপনার আমার প্রার্থনা শুনবেন-বুঝবেন। কাজেই এ নিয়ে মতবিরোধের অবকাশ আছে বলে মনে হয়না।
আর রেফারেন্স?
- না ভাই , কোন রেফারেন্স আমার কাছে নেই তবে আপনি চাইলেই খুজে পেতে পারেন । তবে সব জিনিষের রেফারেন্স খুঁজা বুদ্ধিমানের কাজ বলে বিবেচিত নাও হতে পারে।
সবশেষে ভাই, রমজান মাস যেহেতু ইবাদাতের মাস , রমজান মাস ক্ষমার মাস, মাগফেরাতের মাস । আর তাই ইবাদত আমার মতে একদিন নয় প্রতিদিনই করা উচিত এবং সরবে নয় নীরবেই আমাদের সকলকে মহান আল্লাহর নিকট নিজেদেরকে সর্মপণ করা উচিত। তবে আফসোস লাগে একটাই , যে আমরা আসলে সব কিছুই করতে চাই মন দিয়ে তবে আল্লাহর ইবাদতের ক্ষেত্রেই যত আপত্তি আর খালি রেফারেন্স খুজি।
তবে এখানে একটা কথা ঠিক যে , শবে কদর নফল ইবাদত । এ যেই কেউ করতে পারে বা নাও করতে পারে , এ ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই। নেই কোন ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা যেমনটা বাধ্যবাধকতা রয়েছে ফরজ নামাজের জন্য।কাজেই যে বা যারা পারবে তারা পুরো রমজান মাসই বেশী বেশী ইবাদত করবে শেষ ১০ দিনে ইতেকাফ করবে , এতে দোষের কিছু নয়।
মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে মাহে রমজানের সর্বোচ্চ সুবিধা অর্জনের তওফিক দিন এবং আমাদের সকলকে তার রহমত-বরকত,ক্ষমা ও মাগফেরাত নসিব করুন।
৭| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:০৬
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
হ্যা শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে খুজতে হবে তবে ২৬ তারিখ দিবাগত রাত্রে সম্ভাবনা বেশি। ধন্যবাদ।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:৩৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ মোঃ মাইদুল সরকার ভাই , আপনার মন্তব্যের জন্য সাথে কৃতজ্ঞতা এবং দুঃখিত দেরিতে জবাবের জন্য।
হ্যা শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে খুজতে হবে তবে ২৬ তারিখ দিবাগত রাত্রে সম্ভাবনা বেশি। ধন্যবাদ।
- আসলে ভাই ,জন্মের পর থেকে এবং আমাদের দেশে এই দেখে এসেছি এবং খুব জাকজমকের সাথে রমজানের ২৬ তারিখ দিবাগত রাত যেভাবে আমাদের দেশে পালন করা হয়ে থাকে তাতে এ ধারনা ছিল যে ২৬ তারিখ ই শবে কদর। তবে এ বিষয়ে বিশদ পড়াশোনা ও দেশের বাহিরে আসার পর দেখছি যে শবে কদর আসলে স্থির কোন বিষয় নয় । এখানে আমাদের দেশের মত একদিনে এবং এতটা জাকজমকের সাথে তারা পালন করেনা তা ঠিক তবে ২০ শে রমজানের পর থেকে জোড়-বিজোড় প্রতি রাতেই তারা কিভাবে শবে কদর তালাশ করে ।
সন্ধ্যা রাতে তারাবিহ পড়ে সবাই ঘরে চলে যায় তার পর রাত ১২ টার আগে সবাই পিল পিল করে নিরবে মসজিদের চলে আসে এবং ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ জামাতের সাথে আদায় করে বিতরের শেষ রাকাতে দীর্ঘ মুনাজাতের মাধ্যমে নামাজ শেষ করে রাত ১ টা থেকে ১:৩০ এর মাঝে সবাই মসজিদ ত্যাগ করে চলে যায় নিরবে। এ শুধুই ইবাদত না দেখা দয়াময়ের উদ্দেশ্যে । এটাতে না থাকে কোন বাহুল্য না থাকে কোন উৎসবের ভাব । এ এক অন্যরকম নীরব ভাললাগার , ভাল কিছু করার অনুভূতি।যারা তা করেনি তারা তা অনুভব করতে পারবেনা।
রমজান মাস যেহেতু ইবাদাতের মাস , রমজান মাস ক্ষমার মাস, মাগফেরাতের মাস ।আর তাই ইবাদত আমার মতে একদিন নয় প্রতিদিনই করা উচিত এবং সরবে নয় এরকম নীরবেই আমাদের সকলকে মহান আল্লাহর নিকট নিজেদেরকে সর্মপণ করা উচিত। তবে আফসোস লাগে একটাই , যে আমরা আসলে সব কিছুই করতে চাই মন দিয়ে তবে আল্লাহর ইবাদতের ক্ষেত্রেই যত আপত্তি।
তবে এখানে একটা কথা ঠিক যে , শবে কদর নফল ইবাদত । এ যেই কেউ করতে পারে বা নাও করতে পারে , এ ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই। নেই কোন ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা যেমনটা বাধ্যবাধকতা রয়েছে ফরজ নামাজের জন্য।কাজেই যে বা যারা পারবে তারা পুরো রমজান মাসই বেশী বেশী ইবাদত করবে শেষ ১০ দিনে ইতেকাফ করবে , এতে দোষের কিছু নয়।
মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে মাহে রমজানের সর্বোচ্চ সুবিধা অর্জনের তওফিক দিন এবং আমাদের সকলকে তার রহমত-বরকত,ক্ষমা ও মাগফেরাত নসিব করুন।
৮| ১৮ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:১৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: সম্পূর্ণ পোস্ট পড়িনি, তবে শিরোনামের সাথে আমি একমত পোষণ করি। অবশ্যই এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত।
আমাদের দেশে যেহেতু চাঁদ দেখা নিয়ে প্রতিবছরই গোলমাল হয় এবং মুসল্লীদের মাঝে মতানৈক্য বিরাজ করে, সেহেতু আমি মনে করি রমজান মাসের শেষ দশদিনের প্রতিটি রাতেই লাইলাতুল ক্বদর তালাশ করা উচিত, কেননা চাঁদ ওঠার সময় নিয়ে একদিনের তারতম্য হলেই জোড় বেজোড় হয়ে যাবে এবং বেজোড় জোড়।
আরও ভালো হয়, যদি রমজান মাসের প্রতিটি রাতকেই লাইলাতুল ক্বদর মনে করে ইবাদত বন্দেগী করা হয়। এতে লাভ ছাড়া কোন ক্ষতি নেই। অবশ্যই, আবারো বলছি, এসবগুলোই আমার ব্যক্তিগত মতামত ও বিশ্বাস থেকে বলছি। কারও অনুসরণের কোন বাধ্যবাধকতা নেই; কাউকেও এ ব্যাপারে প্রভাবিতও করতে চাই না, শুধু জানাতে চাই।
আপনার প্রথম দুটো প্রতিমন্তব্য ভালো লেগেছে। পরেরগুলোর কয়েকটাতে আগের প্রতিমন্তব্যের অংশবিশেষ কপি-পেস্ট করা হয়েছে বিধায়, পুনরাবৃত্তির জন্য ভালো লাগেনি।
১৮ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৪
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ খায়রুল আহসান স্যার , আপনার মন্তব্য ও পোস্ট পড়ার চেষ্টার জন্য কৃতজ্ঞতা ।
সম্পূর্ণ পোস্ট পড়িনি, তবে শিরোনামের সাথে আমি একমত পোষণ করি। অবশ্যই এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত।আমাদের দেশে যেহেতু চাঁদ ------------
- নফল ইবাদত কেউ চাইলেই করতে পারে বা ছেড়ে দিতে পারে , এ ব্যাপারে কোন বাঁধা ধরা নেই এবং আমিও ব্যক্তিগতভাবে তাই বিশ্বাস করি।
আর রমজান মাসে যেহেতু ইবাদতে বেশী বেশী প্রতিফল দেওয়ার ব্যাপারে আল্লাহ ওয়াদা করেছেন , কাজেই সুযোগ পেলে সে ব্যাপারে সবারই কিছু করা উচিত বলে আমি মনে করি।
আপনার প্রথম দুটো প্রতিমন্তব্য ভালো লেগেছে। পরেরগুলোর কয়েকটাতে আগের প্রতিমন্তব্যের অংশবিশেষ কপি-পেস্ট করা হয়েছে বিধায়, পুনরাবৃত্তির জন্য ভালো লাগেনি।
- ,ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে গেলে অনেক কিছুই চলে আসে যা আগেও বলা হয়েছে । কি করা স্যার। চেষ্টা করব ভবিষ্যতে যাতে পূনরাবৃত্তি না ঘটে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:৩৪
আশিকি ৪ বলেছেন: তত্য সুত্র দিয়ে ভাল করসেন। কপি পেস্ট পতিবাধি সমাজের জিকূ, অপ তানভির,আর ইউ, ভুয়া মফিজ, জটিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালুন কচ্ছে কফি পেষ্ট বন্দ করার জন্য।