নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১ম পর্বের লিংক - Click This Link
১ম পর্বের পর -
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ দলটি সবচেয়ে বেশী যে দাবী করে তা হলো, " দেশের তারাই একমাত্র দল যারা গণতন্ত্রের জন্য নিবেদিত প্রাণ"। অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন কথা বলে। আওয়ামীলীগ নিজেদেরকে যে গণতন্ত্রের জন্য নিবেদিত প্রাণ বলে দাবি করে সেই গণতন্ত্র তাদের দু পর্বের (শেখ মুজিব - শেখ হাসিনা) শাসনামলের কোনো পর্বেই স্বস্তিতে ছিল না। স্বাধীনতার পর ক্ষমতা পেয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বা আওয়ামীলীগ সরকার তথাকথিত দ্বিতীয় বিপ্লবের নামে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেন বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে। শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়ে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম না করলেও বর্তমানে শেখ হাসিনা তথা আওয়ামীলীগ দেশে কেমন শাসনব্যবস্থা কায়েম/অনুসরণ করছেন তা দেশের প্রতিটি মানুষ হাড়ে হাড়ে তা টের পাচ্ছেন তবে নানা কারনে কিছু বলার মত অবস্থান মানুষের নেই। বর্তমানে আওয়ামীলীগ তাদের অবৈধ চাওয়া ও সীমাহীন মেয়াদের ক্ষমতাকে জায়েজ করতে সংবিধান ও আদালতের আদেশের দোহাই দিয়ে তা বৈধ করতে চাচছে এবং দেশের জনগনকে আদালতের মুখো-মুখি দাড় করিয়ে দিচছে। অথচ আদালতের আদেশে যে আরো দুবার নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছিল তা তারা মানতে চাচছেনা।
এবার আসুন দেখি , যে আদালতের আদেশের দোহাই দিয়ে নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা বাতিলের কথা বলা হচছে সেখানে - ১। আদালতের আদেশ কি ছিল?
দেশের সংবিধানে কী আছে বা কি নেই তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জন-আকাঙ্ক্ষা বা জনগনের চাওয়া কী এবং কী করলে দেশে শান্তি স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং দেশ সমৃদ্ধি ও উন্নতির পথে অগ্রসর হবে তা। পৃথিবীর প্রতিটি দেশ-সমাজ পরিবর্তনশীল। আর এই পরিবর্তন তথা গতিশীলতার কারণেই সময় ও যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে জন-আকাঙ্ক্ষা ও জনচাওয়া পূরণে আইনের পরিবর্তনের আবশ্যকতা দেখা দেয়। আইনের এ পরিবর্তন তিনটি পদ্ধতিতে করা যায়। এর একটি হলো সন্নিবেশন এবং অপর দু’টি বিয়োজন ও প্রতিস্থাপন।
বাংলাদেশের সংবিধানে - সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সন্নিবেশন পরবর্তী ১৯৯৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এর বাতিল চেয়ে রিট দায়ের করা হলে তা একটি দ্বৈত বেঞ্চ থেকে সংক্ষিপ্ত আদেশে প্রত্যাখ্যাত হয়। পরে ১৯৯৯ সালে হাইকোর্ট বিভাগে পুনঃরিট দায়ের করা হলে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শেষে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহালের সপক্ষে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়।
২। বাংলাদেশের ভবিষ্যতের নির্বাচনের ব্যপারেই বা আদালতের কি দিকনির্দেশনা ছিল বা কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে তা বলা হয়েছিল? কখন কিভাবে কখন নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা বাতিল করতে বলা হয়েছিল ?
হাইকোর্ট বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সিদ্ধান্ত দেয়ার সাত বছর পর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করে শুনানির ব্যবস্থা করা হলে আদালতের সংক্ষিপ্ত আদেশে,"পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের সাতজন বিচারকের সবাই অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার বিষয়টি জাতীয় সংসদের মাধ্যমে অবলুপ্ত করে পরবর্তী দু’টি নির্বাচন বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এবং জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠানের সপক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন"। বাংলাদেশে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সর্ম্পকিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণার সাথে সাথে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ এ কথাও বলেছিল,"তত্ত্ব্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আরও দুটি সংসদ নির্বাচন হতে পারে"। এছাড়াও আদালত উল্লেখ করেছে,"বিদায়ী প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের বিচারপতিদের বাদ রেখে সংসদ এ সরকার পদ্ধতি সংস্কার করতে পারে"।
এটি সুস্পষ্ট যে প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকদের প্রদত্ত সংক্ষিপ্ত আদেশটি নিয়ে সরকার–বিশিষ্টজন ও গবেষকদের অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। সরকার ও বিশিষ্টজনদের মতে, আপিল বিভাগের সংক্ষিপ্ত আদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল-সম্পর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী একতরফাভাবে পাস করা হয়। এর বিপরীতে, গবেষকদের মতে, আদালতের সংক্ষিপ্ত আদেশ অমান্য করেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়।
এ দুটি বিপরীতমুখী অবস্থানের কোনটি সঠিক? এই সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য সংক্ষিপ্ত আদেশটির দিকে নজর দেওয়া যাক। আপিল বিভাগের ২০১১ সালের ১০ মে প্রদত্ত আদেশে বলা হয়েছে,"সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী প্রসপেক্টেভলি (বা ভবিষ্যতের জন্য) বাতিল ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হলো। যা সাধারণত আইনসিদ্ধ নয়, প্রয়োজন তাকে আইনসিদ্ধ করে, জনগণের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন এ সকল সনাতন তত্ত্বের ভিত্তিতে দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন পূর্বে উল্লেখিত ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে সংসদ ইচ্ছা করলে এরই মধ্যে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের বিচারকদের বাদ দিয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে পারে"।
উপরিউক্ত আদেশ থেকে এটি সুস্পষ্ট যে, "আদালত দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সংসদের সম্মতির শর্ত দেননি বরং আদালত তার সংক্ষিপ্ত আদেশে ক্রান্তিকালীন ব্যবস্থা এবং জনগণ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার খাতিরে পরবর্তী দুই নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের সম্মতি দিয়েছেন। অর্থাৎ আপিল বিভাগের সংক্ষিপ্ত আদেশ অমান্য করেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়''।
ছবি -thedailystar.net
আপিল বিভাগের উপরোক্ত সিদ্ধান্ত দেয়ার ১৬ মাস পর অবসরে থাকাবস্থায় সংক্ষিপ্ত আদেশদানকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক সংক্ষিপ্ত আদেশ থেকে বিচ্যুত হয়ে ৪ঃ৩ বিভাজিত রায়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল ঘোষণা করেন। বিভাজিত রায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ যে চারজন বিচারক নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের সপক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেন তাদের একজন এসকে সিনহা ইতঃপূর্বে প্রদত্ত সংক্ষিপ্ত আদেশের সাথে একাত্ম হয়ে পরবর্তী দু’টি নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠানের সপক্ষে অনড় থাকেন। সংক্ষিপ্ত ও পূর্ণাঙ্গ আদেশ পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় চারজন বিচারকের সংক্ষিপ্ত আদেশ থেকে বিচ্যুতি আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়।
বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও বিধিমালায় যে নির্দেশনা রয়েছে তাতে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে যে,"বিচারকের রায় অবশ্যই প্রকাশ্য আদালতে ঘোষিত ও স্বাক্ষরিত হতে হবে। উচ্চ আদালতের বিচারকরা শপথের অধীন এবং তারা যেমন শপথ গ্রহণ ব্যতিরেকে বিচারক পদে আসীন হন না অনুরূপ অবসর গ্রহণের সাথে সাথে তারা শপথ থেকে অবমুক্ত হন। অবসরগ্রহণ পরবর্তী যেকোনো আদালতের বিচারক রায় প্রদানপূর্বক স্বাক্ষর দিলে তা বেআইনি ও অকার্যকর এবং আইন দ্বারা অনুমোদিত নয়"।
সংক্ষিপ্ত আদেশ ও পূর্ণাঙ্গ রায় এবং অবসর পরবর্তী স্বাক্ষরিত রায় পর্যালোচনায় দেখা যায়, "পূর্ণাঙ্গ রায়ে চারজন বিচারক পরবর্তী দু’টি নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠানের সপক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেন। সে নিরিখে বিভাজিত রায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারক পরবর্তী দু’টি নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠানের সপক্ষে। অবসর-পরবর্তী প্রদত্ত রায় বেআইনি ও অকার্যকর বিধায় এটি ৩ঃ৩ সমভাবে বিভক্ত রায়।
এরূপ সমভাবে বিভক্ত রায়ের ক্ষেত্রে বিধান হলো, " এটি তৃতীয় বিচারকের কাছে শুনানির জন্য উপস্থাপিত হবে এবং শুনানি অন্তে তিনি যে সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন তার সিদ্ধান্তটি ৩ঃ৩ অনুপাতে বিভক্ত সিদ্ধান্তের সাথে যুক্ত হয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ সিদ্ধান্ত হিসেবে কার্যকর হবে"। আলোচ্য ক্ষেত্রে এটি করা হয় নাই বিধায় অদ্যাবধি এটি সমভাবে বিভক্ত রায়।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে সংবিধান সংশোধনের জন্য গঠিত ১৫ সদস্যবিশিষ্ট বিশেষ সংসদীয় কমিটি দেশের ১০৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সাথে আলোচনার পর প্রদত্ত সুপারিশে তিন মাস মেয়াদে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল রেখে সংবিধান সংশোধনের সর্বসম্মত মতামত দেন। মতামত প্রকাশের পরবর্তী দিন কমিটির সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করলে তাদের সুপারিশে প্রদত্ত মতামতে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয় এবং তদস্থলে সংসদ বহাল রেখে ক্ষমতাসীন দলীয় সরকারের অধীন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান সন্নিবেশনপূর্বক সংবিধান সংশোধনের সুপারিশ করা হয়। এ ধরনের সুপারিশে দেশের বিশিষ্টজনের সাথে মতবিনিময়ের সামগ্রিক প্রক্রিয়া প্রহসনে পর্যবসিত হয়ে জন-আকাঙ্ক্ষা ও জনচাওয়া অবদমিত হয়।
এ ছাড়া সাবেক আওয়ামীলীগের আইনমন্ত্রী (মরহুম) আবদুল মতিন খসরু সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে গঠিত বিশেষ সংসদীয় কমিটির ২৪তম বৈঠকে সুস্পষ্টভাবে স্বীকার করেন যে," পরবর্তী দুই নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠান হলো আদালতের আদেশ এবং বিচারপতিদের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে বাদ দেওয়া হলো পর্যবেক্ষণ"। একই বৈঠকে কমিটির সদস্যসচিব এ কে মোহাম্মদ হোসেন বলেন,"পরবর্তী দুই নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে জীবন্ত রাখা না হলে আদালত বিচারপতিদের বাদ দিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী সংশোধনের পর্যবেক্ষণ দিতেন না"। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছিলেন, "তাহলে তো আমাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন করতে হবে"।
উপরিউক্ত পর্যালোচনা থেকে একথা সুস্পষ্ট যে," আপিল বিভাগের সংক্ষিপ্ত আদেশ অমান্য করেই আওয়ামীলীগ পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করেছে ,অর্থাৎ এটি হলো অসাংবিধানিক সংবিধান সংশোধন"। এটি অসাংবিধানিক সংবিধান সংশোধনী হওয়ার আরও কয়েকটি কারণ রয়েছে। যেমন সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর সুবাদে গণভোট অনুষ্ঠান বাধ্যতামূলক হলেও পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের সময়ে তা করা হয়নি। এ ছাড়া পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭খ অনুচ্ছেদ যুক্ত করে সংবিধানের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অনুচ্ছেদ অসংশোধনযোগ্য করা হয়। সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদ অনুসরণ করে সংবিধান সংশোধন করা সংসদ সদস্যদের সাংবিধানিক অধিকার, যা খর্ব করা যায় না, অর্থাৎ এক সংসদ ভবিষ্যৎ সব সংসদের হাত-পা বেঁধে দিতে পারে না তাদের নিজেদের স্বার্থে।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল বিষয়ক আপিল শুনানিকালে সুপ্রিম কোর্টের আটজন বিশিষ্ট আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করতে বলা হলে একজন ব্যতীত অপর সাতজন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল রেখে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সপক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের নেতৃত্বাধীন ১০ সদস্যবিশিষ্ট বিশেষজ্ঞের মতামতও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহালের সপক্ষে ছিল।(নির্বাচনে নিরপেক্ষ সরকার কেন দরকার - https://mybangla24.com/newspapers/naya-diganta )
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী প্রবর্তন পূর্ববর্তী গণভোটের বিধান বহাল ছিল। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে গণভোটের বিধান সন্নিবেশিত হয় এবং দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এটিকে সীমিত করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করলেও দ্বাদশ সংশোধনী এখনো বহাল রয়েছে। এ বাস্তবতায় গণভোট আয়োজন ব্যতিরেকে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের সাংবিধানিক সিদ্ধতা বিতর্কের আবর্তে পতিত হয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগ-পরবর্তী শপথগ্র হণ করাকালীন ব্যক্ত করতে হয় যে,"তারা বাংলাদেশের সংবিধান ও আইনের রক্ষণ, সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করবেন"। শপথে উচ্চারিত বাক্যের মাধ্যমে শপথগ্রহণ করাকালীন সংবিধান ও আইনের যে অবস্থান ছিল তা হতে বিচ্যুত হলে শপথ ভঙ্গের দায় এসে যায়।
৩। ক্ষমতাশীন দল আওয়ামীলীগ তথা সরকার সেই আদালতের আদেশের কতটুকু ও কিভাবে বাস্তবায়ন করেছে?
বর্তমান সরকার প্রধান সহ ক্ষমতাসীনদের শীর্ষ পর্যায়ের অনেককে প্রায়ই বলতে শুনা যায় সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সুযোগ নেই। স্বভাবতই প্রশ্ন দেখা দেয় সংবিধানের বাইরে ইতঃপূর্বে এ দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল কি-না? কর্মরত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন অস্থায়ী সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অসাংবিধানিক সরকারের অধীন রাজনৈতিক দলসমূহের পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং পরবর্তীতে সংবিধানের একাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এটিকে বৈধতা দেয়া হয়। কাজেই সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সুযোগ নেই একথা মোটেও সঠিক নয়।
নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান ও আইনের ব্যত্যয়ে অনুষ্ঠিত হলেও অদ্যাবধি এ তিনটি নির্বাচনের কোনোটিরই প্রতিবিধান করা হয়নি।
নবম সংসদ নির্বাচন পূর্ববর্তী সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনবিষয়ক সব বিকল্প নিঃশেষিত না করে গঠন করায় এটি সংবিধানসম্মত ছিল না। সে সরকারকে আজ অবধি সাংবিধানিক বৈধতা দেয়া হয়নি। পঞ্চদশ সংশোধনীর রায়ে এ সরকারের কার্যকলাপকে যে বৈধতা দেয়ার প্রয়াস নেয়া হয়েছিল তা যে বিচারবর্হিভূত বিষয়কে অপ্রাসঙ্গিক ও অযাচিত আলোচনার অবতারণায় করা হয়েছিল এ প্রশ্নের সুরাহা অনাগত দিনে অবশ্যম্ভাবীভাবে হওয়া সমীচীন।
দশম জাতীয় সংসদটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫(২) এর অবজ্ঞা ও উপেক্ষায় গঠিত হওয়ায় এর সাংবিধানিক সিদ্ধতা যে ভবিষ্যতের জন্য অশনিসঙ্কেতের জন্ম দেবে তা ভেবে এর অবসান দেশ ও জাতির স্বার্থে জরুরি।
অনুরূপ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনের ভোট নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে ভোটবাক্স ভর্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করায় এটি বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন উদাহরণ হয়ে রয়েছে। এর বিহিত করা না হলে ভবিষ্যতে কোন একদিন উত্তর-পশ্চিম আকাশের কালো মেঘের ঝড়ে অন্যায় অনিয়মের বেড়াজাল ছিন্ন হতে পারে এবং বেড়িয়ে আসতে পারে নানা অজানা কাহিনী ।
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে জনগনের আকাঙ্ক্ষা ও জন চাওয়ায় অন্তর্বর্তী অথবা নির্দলীয় সরকার ব্যতীত নির্বাচন অনুষ্ঠানের অপর কোনো বিকল্প আপাতত দেশের সামনে নেই। সংবিধান ও আইনের যেকোনো আঙ্গিকে বিচার করা হলে নবম, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন যেমন অস্বচ্ছতায় আবদ্ধ অনুরূপ জন-আকাঙ্ক্ষা ও জনচাওয়ার অবজ্ঞা ও উপেক্ষায় নেহায়েত নিরেট সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধতা নানাবিধ প্রশ্নবাণে জর্জরিত। জাতির ক্রান্তিলগ্নে এহেন কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে অন্তর্বর্তী অথবা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রবর্তনই একমাত্র সহায়ক।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ যারা গত ১৫ বছর যাবত দেশের শাসন ক্ষমতায় আসীন। যারা দলগত - প্রশাসনিক ভাবে ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী ও এর প্রধান শেখ হাসিনার সাথে বর্তমানে দেশে কারোর কোন তুলনা করার কোন সুযোগ নেই। তিনি নিজেকে ওয়ান ম্যান আর্মি শো এর মত ইতিমধ্যেই এমন এক অনন্য উচচতায় নিয়ে গেছেন যেখানে তার ধারে-কাছে কেউ নেই,না রাজনীতির ময়দানে ও না ক্ষমতার মঞ্চে এবং তিনিই এখন দেশে পারিবারিক রাজনীতির একমাত্র সুফলভোগী হিসাবে বর্তমান।
এর কারন -
১। জাতীয় পার্টি - দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টির কারিশমাটিক নেতা এরশাদ মৃত। জাতীয় পার্টি এখন দেবর-ভাবীর দ্বন্দ্বে জেরবার এবং এর বাকী নেতারা নিজেদের ভিতরই লড়ছে দেবর-ভাবীর পক্ষে-বিপক্ষে। যদিও তাহার বউ-ভাই-ছেলে সংসদ সদস্য তবে তাদের দ্বারা একক ভাবে বর্তমানে-ভবিষ্যতে কখনো বাংলাদেশের ক্ষমতায় যাওয়া অসম্ভব বলেই মনে হয়। তারা নিজেরা এখন নিজের দল থেকে আওয়ামীলীগের বি টিম হিসাবেই বেশী পরিচিত এবং জনগনের ভোটে নির্বাচিত হওয়া থেকে দর কশাকসির মাধ্যমে আওয়ামীলীগ কে সমর্থনের বিনিময়ে তাদের থেকে প্রাপ্ত সুবিধার দিকেই নজর বেশী। এরশাদ পরিবার সম্মান-মর্যাদা ভূলে কিংবা সময়ের প্রয়োজনে কিংবা পরিস্থিতির চাপে পড়ে সেই অবস্থা হারিয়েছে যেখান থেকে পারিবারিক সুফলভোগ করে ক্ষমতার শীর্ষ মঞ্চে আবার আরোহন করতে পারেন। কাজেই জাতীয় পার্টি তথা এরশাদ পরিবার পারিবারিক সুবিধার আওতায় দেশের রাজনীতিতে আলোচনায় থাকলেও ক্ষমতার শীর্ষ মঞ্চে তাদের আর না দেখার সম্ভবনাই বেশী।
২। জামায়াত - একসময়ের প্রবল প্রতাপশালী ও সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক দল এবং দেশ-বিদেশে পরিচিত জামায়াতের বেশীরভাগ নেতাই ফাসিতে ঝুলেছে এবং বর্তমানে আইনের মারপ্যাচে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ না হলেও তারা জামায়াত নামে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারবেনা এবং সেই রকম মতিউর রহমান নিজামী-দেলোয়ার হোসেন সাইদী,গোলাম আযমদের মত ব্যাপক জনপরিচিতির কেউই আর জীবিত নেই। কাজেই ,এদিক থেকেও আওয়ামীলীগের কোন ভয় নেই।
৩। বাকী সব রাজনৈতিক দলের ( ৩০ - ৫০ কিংবা ১০০-১৫০ সংখ্যায় যাই হোক না কেন) দুই-একজন নেতা বাদে দেশব্যাপী তাদের কোন সেভাবে পরিচিতি নেই এবং তারা আছে নামে মাত্র যাদের আবেদন জনগনের নিকট সীমিত বা সেই সব দলের কার্যক্রম কাগজে-কলমে এবং ভোটের মাঠে প্রভাব নেই বললেই চলে এবং তারাও কেউ এখন দেয়না বা হয়না নির্বাচনে প্রার্থী (কারন - সবার মতে নির্বাচন এখন শুধু লোক দেখানো। একটি দলের প্রার্থী জয়ী হবে। এটাই এখন এ দেশের নিয়তি )। এবং
৪। বিএনপি - দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসংখ্য মামলার আসামী ও সাজাপ্রাপ্ত হয়ে রাজনীতির বাইরে,বয়সের ভারে ন্যুজ এবং প্রতিনিয়ত লড়াই করছেন বিভিন্ন রোগের সাথে। তার জীবিত একমাত্র ছেলে তারেক জিয়া অসংখ্য মামলার আসামী,সাজাপ্রাপ্ত ও নির্বাসিত এবং জিয়া পরিবার থেকে তার পুত্র বধু কিংবা নাতনিদেরও রাজনীতিতে আসার দৃশতঃ কোন সম্ভবনা বা পথও নেই। মির্জা ফখরুল,মির্জা আববাস খন্দকার মোশারফ,রিজভী,গয়েশ্বর রায়রা হামলা-মামলা ও বয়সের ভারে অনেকটা কাবু হওয়ার পরেও ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মত গত ১৫ বছর বিএনপিকে টিকিয়ে রেখেছে এবং সেখানে শেখ হাসিনার সাথে তাদের কারোর কোন তুলনা করার সুযোগ নেই এবং তাদের দলে নেই কোন দৃশ্যমান নেতা যিনি নির্বাচনে যদি বিএনপি জিতে (এখনত তারা সকল প্রকার নির্বাচন বর্জন করেছে ) তাহলে কে হবে তাদের সংসদীয় দলের নেতা তথা সরকার প্রধান। কাজেই আপাতদৃষ্টিতে বাংলাদেশের ক্ষমতার রাজনীতি থেকে জিয়া পরিবারও বাদ পড়ে গেছে।
অপরদিকে,শেখ হাসিনার সমান কিংবা বিকল্প না তার দলে আছে না বাকীদের নিকট আছে না দেশে আছে। আর তার সাথে সাথে আছে তাহার বিশ্বস্ত সেনাপতিরা (শামীম ওসমান, কাদের,হানিফ,ইনু) যাহারা বিএনপির আলু-ফালু-মালু থেকে বহুগুন শক্তিশালী এবং যাদের প্রিয় কথা ও কাজই হল - "সংবিধান থেকে একচুলও নড়া হবে না" এবং "খেলা হপ্পে খেলা"।
এখানে দেশের সাধারন ও নিরপেক্ষ মানুষ হিসাবে যে প্রশ্ন আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়, তা হলো - "দেশের বেশীরভাগ জনগনের চাওয়াকে মূল্য না দিয়ে এখন ১ চুলও না নড়ানো সংবিধানকে তাহলে অতীতে কেন ও কি উদ্দেশ্যে ১৭ চুল (সংশোধনী) নাড়ানো হলো"? এবং
তারা যে কথায় কথায় খেলার কথা বলে ,"সেই খেলা তারা কার বিরুদ্ধে খেলবে এবং কোন নিয়মে"? তারা খেলতে চাচছে তাদের তৈরী নিয়মে এবং তাদের সুবিধার দিকে লক্ষ্য রেখে,তাই কি?
কারন - যে কোন খেলার জন্য কিছু নিয়ম-নীতি থাকে এবং পক্ষ-বিপক্ষ সবাই একই রকম সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে। সেখানে ক্ষমতাশীন আওয়ামীলীগ দল বিপক্ষ দলকে কোন সুযোগ-সুবিধা না দিয়ে এবং হামলা-মামলা সহ প্রশাসনিক ও নানা নিয়ম-নীতির বেড়াজালে তাদের হাত-পা বেঁধে রেখে তাদের ধারাবাহিক ক্ষমতার স্বার্থে এ কোন মরণখেলা তারা খেলতে চায় দেশ ও জনগনের সাথে?
এত বড় দল, বিশাল সুবিধাভোগী, ব্যাপক উন্নয়ন,সুসংগঠিত কর্মী ও বহু বিশ্বস্ত সেনাপতিরা থাকার পরও আওয়ামীলীগের কেন অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনে এবং জনগনকে ভোটাধিকার প্রয়োগে এত ভয়? আওয়ামীলীগ সরকার যেহেতু গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে এবং তাদের দাবী অনুসারে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন তাদের হাত ধরে হয়েছে তাহলে আশা করা যায় নিরপেক্ষ ও ভয়-ডর বিহীন ভোটাধিকার পেলে জনগন আবার তাদের পূণরায় ক্ষমতায় আরোহনের জন্য রায় দিবে। কাজেই সরকারী দলের হাসি মুখেই নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং জনগনকে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দেয়া উচিত নয় কি?
রাষ্ট্রের শাসকদের জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল থেকে নিরপেক্ষভাবে (পক্ষ + বিপক্ষ সবার) জনগনের অধিকার আদায়ে কাজ করা এবং জনগণের জান-মালের হেফাজত করা শাসকের মৌলিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। কেয়ামতের দিন এ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে। এ প্রসঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে রাসুল (সাঃ) বলেন, "তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। আর (কেয়ামত দিবসে) তোমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সুতরাং জনগনের শাসকও একজন দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আর পুরুষ তার পরিবারের একজন দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। স্ত্রী তার স্বামীর ঘর-সংসার ও সন্তানের দায়িত্বশীল, তাকে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। গোলাম তার মনিবের মালসম্পদের ওপর একজন দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই একেকজন দায়িত্বশীল। আর তোমাদের প্রত্যেককেই (কেয়ামত দিবসে) তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে"।(বুখারি শরীফ, হাদীস নং - ২৫৫৪)।
আর তাইতো ইসলাম ধর্মে মানুষের প্রতিটি কাজের প্রতিফলের কথা বলা আছে। মানুষের বলা-করা কোনো কথা-কাজই বৃথা যাবে না বা আল্লাহপাক সকলকে তার বলা ও করণীয় কাজের প্রতিদান দিবেন। আল্লাহপাকের নিকট ভালো কাজের জন্য যেমন পুরস্কারের ঘোষনা করা আছে, ঠিক তেমনি মন্দ কাজের জন্য অনিবার্য শাস্তির হুশিয়ারীও দেয়া আছে।
ন্যায়পরায়ণ শাসকের পুরস্কার - যারা ন্যায় ও সততার সঙ্গে ক্ষমতা ও পদের ব্যবহার করেন, আখেরাতে তাদের মহা পুরস্কারে ভূষিত করা হবে। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন,"ন্যায়-নীতিবান বিচারক কেয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে তার ডান পাশে দ্যুতিময় মিম্বারের ওপর অবস্থান করবে। অবশ্য আল্লাহ তায়ালার উভয় পাশই ডান। তারা হলো সেসব বিচারক বা শাসক, যারা নিজেদের বিচার-বিধানে, নিজেদের পরিবার-পরিজনে এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় ইনসাফ ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করে"। (মুসলিম শরীফ, হাদীস নং - ১৮২৭ )। অন্য এক হাদিসে রাসুল (সাঃ) বলেছে,"কেয়ামতের দিন লোকদের মাঝে ন্যায়নিষ্ঠ শাসকই আল্লাহ তায়ালার সবচেয়ে প্রিয় ও নিকটে উপবেশনকারী হবে"। (তিরমিজি শরীফ, হাদীস নং - ১৩২৯)।
স্বৈরাচার শাসকের শাস্তি - শাসন-ক্ষমতা গ্রহণের পর যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করবে এবং স্বৈরাচারিতা করবে তাদের জন্য পরকালে কঠিন শাস্তি রয়েছে। ইহকালেও নেমে আসতে পারে যে কোন বিপদ। রাসুল (সাঃ) বলেন,"কোনো বান্দাকে যদি আল্লাহ জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন, আর সে যদি কল্যাণ কামনার সঙ্গে তাদের তত্ত্বাবধান না করে, তাহলে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না"। (বুখারি শরীফ,হাদীস নং - ৭১৫০)। অন্য এক হাদিসে রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন, "কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি মুসলিম জনসাধারণের দায়িত্ব লাভ করল আর তার মৃত্যু হলো এই অবস্থায় যে, সে ছিল খেয়ানতকারী, তাহলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন"।(বুখারি শরীফ, হাদীস নং - ৭১৫১)।শাসকদের তাদের অধীনস্থের দুঃখ-কষ্টে সহানুভূতি প্রকাশ করা ও তাদের প্রতি ন্যায় ও ইনসাফ করা আবশ্যক। কারণ শাসক যখন জুলুম অত্যাচার আরম্ভ করে তখন তার ওপর থেকে আল্লাহর সাহায্যের হাত উঠে যায়। রাসুল (সাঃ) বলেন,"যে পর্যন্ত বিচারক কোনো প্রকার জুলুম না করে সে পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা তার সহায়ক হন। সে যে মুহূর্তে কোনো প্রকার জুলুম করে ফেলে তখন তিনি তাকে পরিত্যাগ করেন এবং শয়তান তাকে জড়িয়ে ধরে"। (তিরমিজি শরীফ, হাদীস নং - ১৩৩০)।
পরিশেষে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শীতা অনন্য এবং উনার ধ্যান-জ্ঞান তথা লক্ষ্যই হলো এ অভাগা দেশ-জাতির উন্নয়ন ও জনগনের সকল সমস্যা ও পেরেশানী দূরীকরন। নির্বাচন পদ্ধতি ও নির্বাচন কালীন সরকার নিয়ে দেশের সরকার-বিরোধী দল,আমজনতার সাথে সাথে সারা দুনিয়াতে যে উদ্ধেগ ও উৎকণ্ঠা তা চাইলে উনি একমুহুর্তেই সমাধান করে দিতে পারেন।গরীব দেশ ও এই অভাগা জাতিকে রক্ষা করতে পারেন এই দম বন্ধ করা অসহনীয় পরিবেশ থেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হারানোর এখন আর কিছু নেই। অন্তর্বর্তী অথবা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনের নির্বাচনেও তার সরকার আসার সম্ভাবনা যে একেবারেই নেই এমনটাও নয়।আর যদি নির্বাচনে তিনি নাও জেতেন তাহলেও তার অবদান নানা কারনেই এ দেশ থেকে কখনো কারো পক্ষে মুছে ফেলা সম্ভাব হবেনা। সে এই দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদের শাসক এবং দেশের সবচেয়ে বেশী উন্নয়ন তার হাত ধরে হয়েছে - এ কথা তার
শত্রুরাও স্বীকার করতে বাধ্য যদিও কিছু কিছু জায়গায় আরো ভাল করার সুযোগ তার ছিল। বিশেষ করে দূর্নীতি ও সুশাসনের ক্ষেত্রে।
তারপরও সৃষ্টির নিয়মেই যার শুরু আছে তার শেষও আছে। যদি এ নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিপক্ষে জনগন ভোটাধিকার প্রয়োগও করে তাহলে উনার সাফল্যের ইতিহাসে উনিশ-বিশ কিছুই হবেনা। আর সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সুখ-সাফল্য দিয়ে যেমন পরীক্ষা করেন ঠিক তেমনি হতাশা-ব্যর্থতা দিয়েও পরীক্ষা করেন। তাইতো আল কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, " আর আমরা তোমাদেরকে অবশ্যই পরিক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা। আর আপনি সুসংবাদ দিন ধৈর্যশীলদেরকে"। (সুরা বাকারা, আয়াত - ১৫৫)। কাজেই অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনে যদি শেখ হাসিনা পরাজয় বরণ করে তাহলেও তা হবে আল্লাহর হুকুমেই এবং তাতে হতাশা বা অধৈর্য হওয়া উনার কোন ভাবেই উচিত নয়। বর্তমানে নির্বাচন তথা রাজনৈতিক দলের মতবিরোধে দেশের মানুষ অনেক পেরেশানীতে আছে।
মানুষের সেবা ও তাদের পেরেশানী দূর করা একজন মুমিনের জীবনে সবচেয়ে বড় ইবাদত।একজন মুসলমান তার পার্থিব জীবনে যে মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে খুব দ্রুত আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভ করতে পারে, সৃষ্টির সেবা ও সুন্দর আচরণ তার মধ্যে অন্যতম। সৃষ্টির সেবা ও সুন্দর আচরণ একজন ইমানদারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এ ইবাদত তাকে কেবল আল্লাহর নৈকট্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্তই করে না, বরং তাকে দুনিয়াবাসীর কাছে অত্যন্ত মর্যাদাবান ও অপরিহার্য করে তোলে। বিপদে-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো, মানুষের সমস্যা দূর করার জন্য আল কোরআনের অসংখ্য জায়গায় তাঁর বান্দাদের সৃষ্টির সেবার প্রতি উৎসাহিত করেছেন এবং এ মহৎ কাজে নিবেদিতদের জন্য মহান সব পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। আর তাই একজন মুসলমানের জীবনে সৃষ্টিসেবা ও উত্তম আচরণের গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহর নৈকট্য লাভ, ইহকালীন সফলতা ও পরকালীন মুক্তির জন্য সৃষ্টির সেবায় আত্মনিয়োগ ও মানুষের সঙ্গে উত্তম আচরণের বিকল্প নেই। এ কাজে কিছুটা কষ্ট-ত্যাগ করতে হলেও আল্লাহপাক তার পরে সুখের কথাও বলেছেন। আল কোরআনে বলা হয়েছে "নিশ্চয় কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে"।( সূরা আল-ইনশিরাহ, আয়াত - ৬)।
সৃষ্টিকর্তার মতে মানুষের সেবাই তার সেবা এবং যে বা যারা মানুষের অসুবিধা-পেরেশানী দূর করবে সৃষ্টিকর্তা তাহার সমস্যা দূর করে দেবেন। আবার আল্লাহর নিকট সেই লোক সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত, যে ঝগড়াটে এবং সমাজে অন্যায়-অশান্তি তৈরী করে। এ ব্যপারে আল কোরআনে বলা হয়েছে , "আর মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় ও আপস-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে আছে। নিশ্চয় তিনি যালিমদেরকে পছন্দ করেন না "। (সুরা শুরা, আয়াত - ৪০) ।
আল্লাহপাকের ওয়াদার ব্যতিক্রম হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
শেষ ।
জবাব দিহীতা -
=========
১। বিগত ১ যুগের অধিক সময় ধরে দেশে যে কথা সবচেয়ে বেশী উচচারিত হচছে তা হলো," যা হবে সংবিধান অনুযায়ী হবে এবং সংবিধান থেকে একচুলও না নড়া"। যে সংবিধান এবং সংবিধান থেকে একচুলও না নড়া নিয়ে তথা দেশের নির্বাচন ও নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে সরকার ও বিরোধীদলের যে চাপান-উতোর/সমস্যা (সংঘাত-দ্বন্দ্ব) চলছে ১৫ বছর ধরে , সেই সমস্যার প্রকৃত কারন-গতি প্রকৃতি ও খোজার চেষ্টাই ছিল মূখ্য এবং এ সমস্যা থেকে সমাধানের উপায়ই বা কিছু আছে কিংবা নেই সেই ব্যাপারেও আলোকপাত করার আশায়ই এ লেখা। আলোচ্য বিষয়ের ব্যাপকতা ও তথ্যের বিশালতার মাঝেও চেষ্টা করেছি এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ভাবে ও নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সঠিক ইতিহাস-তথ্য তুলে ধরতে। তারপরেও লেখার মাঝে যদি তথ্যের কোন ভূল-ত্রুটি পরিলক্ষিত হয় তাহলে দল-মত নির্বিশেষে বললে অবশ্যই পরিবর্তন করে দিব। তবে সেই তথ্য অবশ্যই সঠিক ও নিরপেক্ষ বাঞ্চনীয়।
২। সরকারীদলের দাবী অনুসারে সংবিধানকে একচুল নাড়ানোর কোন সুযোগ নেই। সংবিধানকে কেন একচুল নাড়ানো সম্ভব নয় ? এ প্রশ্ন প্রতিনিয়ত মনে ঘুরপাক খাচছে, (সংবিধান কি ঐশীবাণী তথা আসমানী কিতাব , যে এ আর কখনো পরিবর্তনযোগ্য নয় ? ) কিংবা আদৌ কি এর পরিবর্তন অতীতে কখনো করা হয়নি? অতীতে যদি পরিবর্তন হয়ে থাকে তাহলে কারা কি জন্য সেসব পরিবর্তন করেছে এবং এখন কেন আর পরিবর্তন করা যাবেনা। এসব প্রশ্নের জবাব খোজার চেষ্টাতেই এ লেখা।
৩। দেশ-বিদেশের রথী-মহারথী(সুশীল সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল)'রা এ নিয়ে নানা রকম দৌড়-ঝাপ, আলাপ-আলোচনা চালাচছে এবং আমাদের দেশের সরকার ও বিরোধীদল তাদের নিজ নিজ দৃষ্টিভংগী ও স্বার্থ থেকে সেই সব ঘটনার ব্যাখ্যা করে চলছে ।আর সবার সাথে সাথে আমজনতাও দেশের রাজনৈতিক এ অস্থিরতায় আতংকে আছে এবং সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সব এলাকাতেই এর প্রভাব সহ ঘটনার পক্ষে-বিপক্ষে যেসব আলোচনা - সমালোচনা হচছে তার প্রেক্ষাপটেই এই লেখা। এখানে সরকারের নীতির সমালোচনা করা বা সরকারের বিরোধীতাকারীদেরকে ভাল বলার বিষয় নয়।আমার পুরো লেখাতেই চেষ্টা ছিল সমস্যার কারন ও সমাধানের পথ খোজার। আর তাই, পাঠককে এর সাথে রাজনীতির দূরতম কোন সম্পর্কও না খোঁজার বিনীত অনুরোধ রইলো
৪। নীচে উল্লিখিত তথ্যসূত্র ছাড়াও আরও অনেক জায়গা থেকেই তথ্য+সহায়তা নেয়া হয়েছে।তবে বিশালতার কারনে সব কিছু উল্লেখ করা হয়নি।এর বাইরে যদি কারো লেখার সাথে মিল খুজে পান তাহলে তা উল্লেখ না করার ব্যাপারে ক্ষমার দৃষ্টি কামনা করছি।
================================
তথ্যসূত্র
১। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান - http://bdlaws.minlaw.gov.bd/act-957.html
২।। সংবিধান থেকে একচুলও নড়া হবে না - প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দৈনিক প্রথম আলো - ১৯ আগস্ট ২০১৩, লিংক -
https://www.prothomalo.com/bangladesh/
৩। তত্ত্বাবধায়ক সরকার - https://bn.banglapedia.org/index.php/
৪। তত্ত্বাবধায়ক সরকার কি এবং বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পটভূমি - Click This Link
৫। বাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহ বা স্বাধীনতার ৫২ বছর বিভিন্ন কারণে দেশের সংবিধান ১৭ বার সংশোধন করা হয়েছে - https://www.bbc.com/bengali/news-56008776
৬। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল অস্বচ্ছতায় আবদ্ধ - Click This Link
৭। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল ঘোষণা - Click This Link
৮। তত্ত্বাবধায়ক সরকার–সম্পর্কিত রায় নিয়ে ‘বিভ্রান্তি’ - Click This Link
৯। বিচারপতি খায়রুল হকের বক্তব্যে কার লাভ, কার ক্ষতি? - https://bangla.thedailystar.net/
১০। রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের পর্যবেক্ষণ - https://mybangla24.com/newspapers/naya-diganta
১১। উন্নয়নের নামে গণতন্ত্র বিতাড়িত - https://mybangla24.com/newspapers/naya-diganta
সম্পাদকীয়
** ১। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রাণের চুম্বন দিতে পারে ওয়াশিংটন, ৪ আগস্ট ২০২৩, - Click This Link
** ২। Bangladesh on razor’s edge: Why India must wake up to the looming economic crisis and political instability to its east -The Indian Express,Sunday, Dec 11, 2022, - লিংক - Click This Link
** ৩। রেজরের প্রান্তসীমায় বাংলাদেশ - মানব জমিন,১০ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার, লিংক - Click This Link )
**৪। ইইউ প্রতিনিধির স্বর এবং বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রকল্প দৈনিক ইত্তেফাক,১৩ জুলাই ২০২৩,- https://www.ittefaq.com.bd/651625/
** ৫। India’s One Basket Diplomacy - India risks putting all its eggs in one basket with its close ties with Bangladesh Premier Sheikh Hasina,The Diplomat - May 27, 2011- লিংক -
Click This Link
** ৬। [sb India is putting all its eggs in the Sheikh Hasina basket. Why it’s a win-win situation - The Print -Jyoti Malhotra, 01August 2023 , লিংক - Click This Link
৭। নির্বাচননামা: একটি ‘মৃত্যুকালীন জবানবন্দি’(মনজুরুল ইসলাম প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক) - Click This Link
৮। সব দলই যদি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, জনগণ ভোট দিতে পারে না কেন? - (সোহরাব হাসান প্রথম আলোর যুগ্ম–সম্পাদক ও কবি ) Click This Link
৯। দ্য ডিপ্লোম্যাটের রিপোর্ট - নির্বাচনের সময় বাংলাদেশে যে তিনটি দৃশ্যপট তৈরি হতে পারে -
Click This Link
পূর্ববর্তী পোস্ট -
===============
৯।"হিরো আলম কার প্রতিদ্বন্দ্বী " - Click This Link
৮। সেন্টমার্টিন দ্বীপ লিজ কিংবা বিক্রি - সত্যিটা কি ? - Click This Link
৭।আমেরিকার ভিসা নীতি বনাম বাংলাদেশের ভিসা নীতি-এর পর কি হবে?-
Click This Link
৬। আমার সোনার বাংলা কি কোটিপতি ও খেলাপি ঋণ তৈরীর কারখানা ? - Click This Link
৫। " রংপুর সিটি কর্পোরশন নির্বাচন - লাঙলের জয় ও নৌকা চতুর্থ " - কি বার্তা দেয় আমাদের? - Click This Link
৪। " বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন " - তুমি কার ? -
Click This Link
৩। সামাজিক রীতি-নীতি-শিষ্ঠাচার এখন যাদুঘরে - আপনি কি একমত ? -
Click This Link
২। বর্তমান সময়ে আমরা কি একটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও দৃষ্টিশক্তি হীন জাতি বা প্রজন্মে পরিণত হচছি বা হতে যাচছি? -
Click This Link
১। আমাদের সমাজের সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা কি ভেঙে পড়ছে ? -
Click This Link
২৪ শে আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৪:২৫
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সৈয়দ মশিউর রহমান ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
সময় করে পড়তে হবে । জানার অছে অনেক কিছু।
- অনেক বড় লেখা সাথে সাথে বর্তমানের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। সময় নিয়ে পড়ার পর এ বিষয়ে ফিরতি মন্তব্যের আশা করতেই পারি।
২| ২৪ শে আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৪:৪৭
কামাল১৮ বলেছেন: সংবিধানের অনেক কিছুই পরিবর্তন করা যায়।কিন্তু সেটার নিয়ম আছে।নিয়ম ছাড়া এক চুলও পরিবর্তন করা যায় না।
দুটি নির্বাচনের কথা বলা হয়েছিলো,যদি সংসদ প্রয়োজন মনে করে।সংসদ মনে করেনাই তাই হয় নাই।দুটি নির্বাচন করতেই হবে এমন বলা ছিলো না।
এসব পুরনো কাসুন্দি ঘেটে এখন আর লাভ নাই।সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।একটা সুন্দর নির্বাচন কি ভাবে করা যায় সবাই কে সেই চেষ্টা করতে।
গত দুই বার নির্বাচন বানচাল করতে ব্যার্থ হয়েছে।এবারও ব্যার্থ করতে চেষ্টা করলে তারাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।বিশ্ব চায় একটা গ্রহনযোগ্য নির্বাচন।তারা কেয়ারটেকার সরকার চায় না।নির্বাচিত লোকদের দিয়ে নির্বাচন কালীন সরকার হতে পারে।সেখানে ১০% অনির্বাচিত লোক থাকতে পারে।
২৪ শে আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৫:৫১
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ কামাল১৮ ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
সংবিধানের অনেক কিছুই পরিবর্তন করা যায়।কিন্তু সেটার নিয়ম আছে।নিয়ম ছাড়া এক চুলও পরিবর্তন করা যায় না।
- তা ঠিক , সব কিছু নিয়মের মাঝেই করতে হয়।
সেই নিয়মের মাঝ থেকে এখন কি সংবিধানের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা যায় না ভাইজান?
দুটি নির্বাচনের কথা বলা হয়েছিলো,যদি সংসদ প্রয়োজন মনে করে।সংসদ মনে করেনাই তাই হয় নাই।দুটি নির্বাচন করতেই হবে এমন বলা ছিলো না।
- কি আর বলব ভাই, বলার কিছু নাই। যা হবার তাই হয়েছে, হচছে এবং হবে।
আমরা শুধু দেখব চেয়ে চেয়ে।
এসব পুরনো কাসুন্দি ঘেটে এখন আর লাভ নাই।সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।একটা সুন্দর নির্বাচন কি ভাবে করা যায় সবাই কে সেই চেষ্টা করতে।
- এটা আপনি ঠিক বলেছেন, যা হয়ে গেছে তা আর পরিবর্তন করা যাবে না কখনো তবে ভবিষ্যতে যাতে ভাল কিছু হয় তার জন্যই আমাদের সকলের ভাবা ও চেষ্টা করা উচিত।
গত দুই বার নির্বাচন বানচাল করতে ব্যার্থ হয়েছে। এবারও ব্যার্থ করতে চেষ্টা করলে তারাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।বিশ্ব চায় একটা গ্রহনযোগ্য নির্বাচন।তারা কেয়ারটেকার সরকার চায় না।নির্বাচিত লোকদের দিয়ে নির্বাচন কালীন সরকার হতে পারে।সেখানে ১০% অনির্বাচিত লোক থাকতে পারে।
-ভাই, ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করেনা।
এক সময় যে বা যার দল বলেছিল, " পাগল ও শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়" তারাই এখন অন্যের কাছ থেকে নিরপেক্ষতা আশা করে কিভাবে?
আবার, "গায়ের জোড়ে কিংবা ক্ষমতা কারো সারাজীবন থাকেনা" - এটাও বর্তমানের উনারা মানতে -বুঝতে চাচছেনা।
"বুঝেনা সে (কেউ) বুঝেনা , সময় থাকতে কেউ বুঝতে চায়না "- সমস্যা এটাই।
৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: শেখ হাসিনা কচ্ছপের মতোণ। কচ্ছপ একবার যা কামড়ে ধরে সেটা আর ছাড়ে না। ঠিক সেভাবেই শেখ হাসিনা ক্ষমতা আকড়ে ধরেছেন। মৃত্যু ছাড়া উনি ক্ষমতান ছাড়বেন না। সোজা হিসাব।
আপনি অনেক বড় পোস্ট দেন।
অনুরোধ করছি, চেষ্টা করে দেখুন অল্প কথায় অনেকখানি বলা যায় কিনা।
২৪ শে আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৩
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
শেখ হাসিনা কচ্ছপের মতোণ। কচ্ছপ একবার যা কামড়ে ধরে সেটা আর ছাড়ে না। ঠিক সেভাবেই শেখ হাসিনা ক্ষমতা আকড়ে ধরেছেন। মৃত্যু ছাড়া উনি ক্ষমতান ছাড়বেন না। সোজা হিসাব।
- জী রাজীব ভাই, এটা আপনি একদম সঠিক বলেছেন।
শেখ হাসিনা আসলেই কচ্ছপের মত তথা ধৈর্য্যশীল একজন মানুষ । যিনি খুব ঠান্ডা মাথায় ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহন থেকে এর বাস্তবায়ন পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়ায় তিনি নিজের মত করেই সারেন । সেখানে না তিনি কাউকে শোনেনে, না কারো হুমকি কিংবা সমালোচনার পরোয়া করেন । এই এক জায়গায় তিনি অনন্য।
আপনি অনেক বড় পোস্ট দেন। অনুরোধ করছি, চেষ্টা করে দেখুন অল্প কথায় অনেকখানি বলা যায় কিনা।
- এই একটা লিখায় কত দরকারী তথ্য যে ছাড়তে হয়েছে লেখা শুধু বড় হয়ে যাচছে বিধায়।
আর এসব লেখায় ঘটনার ধারাবাহিকতা রক্ষা ও সঠিক তথ্য তুলে ধরার দায়িত্ব থেকে যায় লেখকের এবং যে কোন ভুল তথ্য পাঠকের নিকট খারাপ মেসেজ দিতে পারে এবং লেখকেরও সর্বনাশের ষোল কলা পূর্ণ হতে পারে কর্তৃপক্ষের নেক নজরে পড়ে।কাজেই
আর তাইতো না চাইতেও লেখা বড় হয়ে যায় ---
তারপরও ভবিষ্যতে আপনার অনুরোধ মাথায় রাখব।
৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য।
২৬ শে আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ২:২৫
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য।
৫| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১২:২১
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: চমৎকার লেখা, তবে কি হবে সময় ছাড়া আর কাও জানা নেই।
০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১২:১২
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সাহাদাত উদরাজী ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য এবং দুঃখিত দেরিতে জবাবের জন্য।
চমৎকার লেখা, তবে কি হবে সময় ছাড়া আর কাও জানা নেই।
- শুকরিয়া ভাই, তবে -----------
আসলেই কি হবে , আমরা কেউ তা জানিনা।
সময়ই হয়ত বলে দিবে কি হবে, তবে যা হবে তার জন্য যে কঠিন মূল্য চোকাতে হবে আমজনতাকে তা নিশ্চিত।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ২:৫২
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: সময় করে পড়তে হবে । জানার অছে অনেক কিছু।