নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবি - ichef.bbci.co.uk
১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্টের হত্যাকাণ্ড
দেশে প্রচলিত মতানুসারে, কিছু বিপদগামী সৈনিক শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। সেদিন শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সঙ্গে তাহার স্ত্রী বেগম ফজিলতুন্নেছা মুজিব এবং তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলকেও হত্যা করা হয় ৷দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান মুজিবের দু'কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ৷সেদিনের সেই হত্যাযজ্ঞে তাঁর দুই পুত্রবধূ, ছোটভাই, বোনের ছেলেমেয়ে ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন এবং তাঁর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ নিহত হন মোট ২৬ জন ৷
১৫ই অগাস্টে দেশের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি
১৫ ই অগাস্ট শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের খবরটি সারা দেশের মানুষের কাছে এসেছিল অনেকটা বজ্রপাতের মতো। প্রথমে অনেকের কাছেই সেটা অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল,যদিও সেসময় দেশের মানুষ নানা কারনে কিছু একটা পরিবর্তনের আশায় (যদিও তখন আমার জন্মও হয়নি তবে ইতিহাস থেকে যতটুকু জেনেছি সেই অনুসারে) ছিল,তবে এমন পরিবর্তন হয়তো অনেকেরই ধারনার বাইরে ছিল। পরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় এবং সারা দেশে অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ ও বাকশালের অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শেখ মুজিবের মৃত্যু এবং বাকশালের পতনের খবর জানার পর সারা দেশের শহর বন্দর গ্রামের লাখ লাখ মানুষ আনন্দ মিছিল বের করেছিলো। যে সমস্ত রাজনৈতিক নেতা বা দলগুলো আন্ডারগ্রাউন্ড ছিল তারাও জনসমর্থন নিয়ে সেসময় রাস্তায় চলে আসে। এভাবেই জনস্বীকৃতি পেয়েছিল ১৫ আগস্টের বৈপ্লবিক সামরিক অভ্যুত্থান।
সেদিন বিকালেই আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন খন্দকার মোশতাক আহমদ। এরপর ওইদিনই উপ-রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেন মাহমুদুল্লাহ। মন্ত্রিসভাও গঠিত হয় এবং সেনা পরিষদের নিরঙ্কুশ ক্ষমতার ফলে মেজর ফারুক, রশিদ সর্বময় কর্তা হয়ে ওঠে। মেজর ডালিম, নূর, শাহরিয়ার, পাশা, রাশেদ প্রমুখ জুনিয়র অফিসাররা বঙ্গভবনে অবস্থান নিয়ে দেশ শাসন করতে থাকে।
- Click This Link
ছবি- ইত্তেফাক
এতসব ঢামাঢোলের মাঝে দেশের সাধারন মানুষের সাথে সাথে দেশ-বিদেশেও অনেকের মনে মনে ঘুরতে থাকে নানা প্রশ্ন। কেন এবং কি কারনে সপরিবারে শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ড? এর পক্ষে-বিপক্ষে চলতে থাকে নানা ধরনের মতামত-আলোচনা,যা হত্যাকাণ্ডের ৫০ বছর পরও খুজে চলছে সাধারন মানুষ। আওয়ামী সরকারের পতনের পর এবং দেশের ভিন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও মেজর ডালিমের এক সাক্ষাৎকারের কারনে বর্তমানে এ হত্যাকাণ্ড আবার আলোচনায় এসেছে নতুন করে।
যদিও আওয়ামীলীগ তথা শেখা হাসিনার শাসনামলে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে এবং এর সাথে জড়িত অনেককেই ফাঁসি দেয়া হয়েছে,তারপরও সাধারন মানুষ মনে করেন এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত প্রকৃত সত্য এখনও অজানা। এর সাথে জড়িত অনেকেই এখনো অধরা এবং অনেক প্রশ্নের জবাব মিলেনি আজও। যে সব প্রশ্নগুলো ঘুরে ফিরে আসে তা হলো -
প্রশ্ন-১। শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার পিছনে কি তখনকার সামরিক বা বেসামরিক প্রশাসনের কোনো লক্ষ্য ছিল? নাকি কোন কারন ছাড়াই এমনিতেই এরকম একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল?
কারন - নিরপেক্ষ ভাবে এ হত্যার কারন বিশ্লেষণ করলে এর পিছনে নানা কারনের সাথে সাথে সামরিক-বেসামরিক উভয় অংশের সম্পর্ক রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলছেন, '' ১৫ই অগাস্টের হত্যাকাণ্ডের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী অবস্থা বিবেচনা করলে এর সাথে বেসামরিক একটি অংশের সম্পর্ক রয়েছে বলে বোঝা যায়''। তিনি আরো বলেন, ''ঐদিনই এ ঘটনাটি ঘটবে এবং শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করা হবে এইভাবে হয়তো অনেকে চিন্তা করেন নাই। কিন্তু পরিবর্তন একটা হবে সেটা অনেকেই মনে মনে ভাবছিলেন। আপনি যদি পরের দিনের পত্রিকার সম্পাদকীয় দেখেন, দেখবেন সবাই সেটাকে স্বাগত জানিয়েছিল। সুতরাং এটা হুট করে কয়েকজন মেজর এবং কিছু সোলজার মিলে এটা করেছে সেটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়"।
মহিউদ্দিন আহমদের মতে,''পরবর্তীতে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে রাজনীতিকদের যোগশাযশের বিষয়ে যথেষ্ট গবেষণা বা তদন্ত হয়নি। হত্যা মামলার রায়ে ষড়যন্ত্রের কথা বলা হলেও এর পেছনে ঠিক কি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল এবং রাজনীতিকরা ঠিক কিভাবে এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত ছিল সেবিষয়টি মামলায় উঠে আসেনি''।
প্রশ্ন-২। সেদিন কি ঘটেছিল কিংবা কেন এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল কিংবা কেমন ছিল ওই সময়ের দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা (অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক) কি ছিল ?
কারন - শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, সে স্বৈরাচারী ছিল এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং ১৯৭৫ সালে একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে তিনি দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিলেন। তিনি দেশের সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধের জন্য মুষ্টিমেয় ক’টি ছাড়া বাকি সব সংবাদপত্র বন্ধ করেছিলেন।
> তাহার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ ছিল, শেখ মুজিব ২৫ বছর মেয়াদি ভারত-বাংলাদেশ গোলামি চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ভারতের কাছে তথা হিন্দুদের কাছে বিকিয়ে দিয়েছিল।
> তখনকার সময়ের শেখ মুজিবের পজিশন বিবেচনা করলে, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছাড়া গুটিকয়েক বিপথগামী সামরিক সদস্য কিংবা তার দলের কয়েকজন বেঈমান এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে প্রতীয়মান হয় না।
প্রশ্ন - ৩। এটা কি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ছিল নাকি মেজর ডালিমের ব্যক্তিগত আক্রোশে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে?
কারন - মহিউদ্দিন আহমেদ মনে করেন, '' আওয়ামীলীগ এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করলেও এর সাথে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের দিকটি তারা অনেকটা এড়িয়ে গেছেন''।
> ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়, যেখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত কিছু কর্মকর্তা ও জওয়ান এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেন ৷এটাই দেশে প্রচার-প্রচলিত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে যে,ডালিম পত্নী নিম্মি অপহরণের কাণ্ডেই ক্ষোভে সেনাসদস্যরা সপরিবারে হত্যা করেছিল শেখ মুজিবকে।
প্রশ্ন - ৪। জাসদ কি দলীয়ভাবে এ ঘটনায় জড়িত ছিল কিংবা এ হত্যাকাণ্ডে কর্নেল তাহেরের ভূমিকা কি ছিল?
কারন - ১৯৭৫ সালে আওয়ামীলীগের বাইরে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাশালী বড় কোন দল না থাকলেও, দীর্ঘদিন যাবত শেখ মুজিব সরকারের পতনের জন্য আন্দোলন করে আসছিল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল বা জাসদ। যদিও দলীয়ভাবে জাসদ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে চেয়েছিল এমনটা মনে করেন না গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ। তবে তিনি মনে করেন, হত্যাকাণ্ডের পরপরই কর্নেল তাহেরের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
প্রশ্ন - ৫। হত্যাকাণ্ডের পর খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে যে সরকার গঠিত হয়, সেখানে শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রীসভার এবং বাকশালের অনেকেও যোগ দিয়েছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন মাহবুবে আলম চাষী এবং তাহের উদ্দিন ঠাকুরসহ আরো অনেকে। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে-আগে-পিছে তাদের প্রত্যেকের ভূমিকা কি ছিল?
লিংক Click This Link
কারন - শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর তাহার মন্ত্রীসভার এবং বাকশালের অনেকেও মোশতাকের নেতৃত্বে যে সরকার গঠিত হয়েছিল তাতে যোগ দিয়েছিলেন। যদিও আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতা তোফায়েল আহমেদ বলছেন,''অনেকেই হয়তো চাপের মুখে সেখানে যোগ দিয়েছিলেন। তবে সামরিক এবং বেসামরিক যারা এর সাথে জড়িত তাদের যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল তা শেষপর্যন্ত সফল হয়নি''।
> রাজনৈতিক গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ মনে করেন,যারা খন্দকার মোশতাকের সরকারে যোগ দিয়ে আড়াই মাস ছিলেন, তাদের অনেকে পরে বিদেশে গিয়েছিলেন এবং দেশেও ফিরে এসেছেন। এতে মনে হয় যে,তাদের সবাইকে যে জোর করে নেয়া হয়েছিলো সেটা সঠিক না। জোর করে নিয়ে থাকলে বিদেশ যাওয়ার প্রথম সুযোগেই তারা পালিয়ে যেতে পারতেন। মহিউদ্দিন আহমদ আরো বলেন,''আওয়ামীলীগের অধিকাংশ নেতা তার সরকারে যোগদান করাতে খন্দকার মোশতাকও একটি রাজনৈতিক বৈধতা পেয়ে গিয়েছিলেন''।
প্রশ্ন - ৬। এ হত্যাকাণ্ড কি শেখ মুজিব শাসনামলের প্রশাসনের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ এবং শেখ মুজিবের দ্বিতীয় বিপ্লব ও বাকশাল ঘটনের প্রতিক্রিয়া?
কারন - দ্বিতীয় বিপ্লবের নামে দেশে প্রচলিত তখনকার সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে বাকশাল নামে একদলীয় শাসনব্যবস্থার প্রতিবাদে মানুষ ক্ষুব্ধ হলে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয় এবং মানুষ শেখ মুজিবের বিপক্ষে চলে যায়। অন্যদিকে সে সময় খাদ্য সংকটে দেশে দুর্ভিক্ষও সংঘটিত হয়েছে এবং তিনি সেটা সামাল দিতে পারেননি। শেখ মুজিব দেশ চালাতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং ব্যর্থতার পরিণতিই এ হত্যাকাণ্ড । লিংক - Click This Link
প্রশ্ন - ৭। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড কি সমগ্র সেনাবাহিনীর সামরিক অভ্যুত্থান ছিল, নাকি কয়েকজন অফিসারদের দ্বারা এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল? https://bn.wikipedia.org/w/index.php?
কারন - তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, শেখ মুজিব সেনাবাহিনীকে বিলুপ্তির প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে রক্ষীবাহিনী গঠন করেছিলেন এবং রক্ষীবাহিনীতে ভারতীয়দের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। এ কারনে সেনাবাহিনী এবং ডালিম সহ কয়েকজন সৈনিক ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে শেখ মুজিবকে হত্যা করেছে।
শেখ মুজিবকে হত্যার পর বহু বছর অতিক্রান্ত হয়েছে,তারপরও এসব প্রশ্ন সহ অনেক প্রশ্নেরই সঠিক জবাব মিলেনি।
লিংক - Click This Link
ছবি- ইত্তেফাক
সুদীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর পর দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অবশেষে ৫ ই জানু্যারী, রোববার ২০২৫ সালে, ৫০ বছর পর ৭৫ এর শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণগুলো তুলে ধরেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবঃ) শরিফুল হক ডালিম (বীর বিক্রম) ।
৫ ই জানু্যারী রোববার ২০২৫, প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের লাইভ টকশোতে এসে কথা বলেছেন দীর্ঘদিন আড়ালে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবঃ) শরিফুল হক ডালিম (বীর বিক্রম),যিনি মেজর ডালিম হিসেবে পরিচিত। মেজর ডালিম শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত এবং বিচারিক রায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত। সেদিন লাইভে এসে তিনি ৫০ বছরের অজানা অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। টকশোতে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ৭৫ এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ইতিহাস তুলে ধরেন বিদেশে নির্বাসিত এই সাবেক সামরিক কর্মকর্তা। লিংক - https://www.ittefaq.com.bd/713453/
শেখ মুজিবকে হত্যার কারন সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে মেজর ডালিম বলেন,''খুবই স্পর্শকাতর প্রশ্ন, নিজের বাদ্য নিজে বাজানো যায় না''।
প্রথম কথা, ''১৫ই আগস্টের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। এটার সূত্রপাত হয় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন অবস্থায়। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধটা কাদের ইন্টারেস্টে হচ্ছে? এটা কি আমাদের ইন্টারেস্টের জন্য হচ্ছে যে, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করবো,নাকি অন্য কোনো উদ্দেশ্য কাজ করবো''।
এই বীর বিক্রম বলেন, '' যে সাত দফাতে চুক্তি করার ফলে নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিনকে পারমিশন দেওয়া হলো একটা প্রভিশনাল গর্ভমেন্ট গঠন করার। সেই সাতটা ক্লজ পড়ে সাইন করার পর নজরুল ইসলাম ফিট হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন এটা ভেবে যে, আমরা ক্রমান্বয়ে ভারতের একটা করদরাজ্য-অঙ্গরাজ্যে পরিণত হব''।
তিনি আরো বলেন,'' দেশে তখন শেখ মুজিব ও তার জুলুমের মাত্রা এতোটাই তীব্র স্বৈরাচারী আচরণের মতো করেছিল যে, তখন দেশের মানুষ রবের কাছে মুক্তি চাচ্ছিল তার জুলুমের অবসানের জন্য''।
মেজর ডালিম আরো বলেন,''মুজিব তো মারা যায়নি, মুজিব একটি সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হয়েছেন। সেনা অভ্যুত্থান তো আর খালি হাতে মার্বেল খেলা না। ওখানে দুই পক্ষ থেকেই গোলাগুলি হয় এবং হতাহত হয় দুইপক্ষেই। যেমন মুজিবের পক্ষের কিছু লোক মারা গেল সেভাবে সেনাঅভ্যুত্থানকারী বিপ্লবীদের পক্ষ থেকেও কিছু লোক প্রাণ হারায়। এটাই বাস্তবতা। কিন্তু বিপ্লবীরা বিজয়ী হয়ে গেল, তারা ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়ে নিলো''।
যুগ যুগ ধরে এটাই দেশে প্রচার-প্রচলিত হয়ে আসছে যে,ডালিম পত্নী নিম্মি অপহরণের কাণ্ডেই সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল শেখ মুজিবকে। এ প্রশ্নের জবাবে পত্নী নিম্মিকে নিয়ে ডালিম নিজেই মুখ খুলেছেন এবং জবাব দিয়েছেন আলোচিত-বিতর্কিত এ প্রশ্নেরও।
শেখ মুজিব হত্যার ঐতিহাসিক তথ্য নিয়ে অনেক বিতর্ক থাকলেও ৬ জানুয়ারি ২০২৫ মেজর ডালিমের সাক্ষাৎকার অনুসারে - ৭১ এর ঘটনার প্রেক্ষিতেই শেখ মুজিব হত্যাকান্ড হয়েছিল। নিম্মিকান্ডে এতদিন শেখ মুজিবকে হত্যার বিষয়ে যে বিতর্ক ছিল, মেজর ডালিম তাঁর অনেকটাই খোলাসা করায় এটা বলা যা - শেখ মুজিব হত্যাকান্ডের সাথে ডালিম পত্নীর ঘটনার কোন সম্পৃক্ততা নেই।উল্লেখ্য সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের, আমাদের সবার প্রিয় নিম্নী ভাবি কেমন আছে? প্রশ্নের জবাবে মেজর ডালিম বলেন,''উনি বেঁচে নেই, উনাকে আল্লাহ নিয়ে গেছে এবং উনি মারা গেছেন ২০০৫ সালে''। লিংক - Click This Link
বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম ও তার স্ত্রী নিম্মি এবং গাজী গোলাম মোস্তফা।
ছবি- ইত্তেফাক
মেজর ডালিমের স্ত্রী নিম্মির অপহরণ কাণ্ড
বহু বছর ধরে দেশে জনশ্রুতি চলছে যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবঃ) শরিফুল হক ডালিমের (বীর বিক্রম) স্ত্রীকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পেছনে নানা কারণের মধ্যে এই অপহরণের ঘটনাও সেনাবাহিনীর একটি পুঞ্জীভূত ক্ষোভ বলে মনে করেন অনেকে। ১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি মেজর ডালিমের আত্মীয় তাহমিনার সঙ্গে বিয়ে হচ্ছিল কর্নেল রেজার ঢাকা লেডিজ ক্লাবে। গাজী গোলাম মোস্তফা,মেজর শরিফুল হক ডালিম ও তার স্ত্রীকে সেখান থেকে অপহরণ করেন।
এ তর্কের বিষয়ে অন্তত ২টি সংস্করণ চালু আছে উইকিপিডিয়ায়। একটিতে বলা হয়, মোস্তফার ভাই ডালিমের স্ত্রী নিম্মির প্রতি অশালীন মন্তব্য করায় বচসার সূত্রপাত হয়। এতে মোস্তফার দুই ছেলেও জড়িয়ে পড়েন। আর আরেকটি সংস্করণ শোনা যায় সরাসরি মেজর ডালিমের মুখে।
ছবি - eboighar.com
প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের লাইভে মেজর ডালিমের স্ত্রীকে অপহরণের ঘটনা জানতে চাওয়ার জবাবে মেজর ডালিম বলেন, ''এটা একটা মজার ঘটনা। আমি আমার বইতে (আমি মেজর ডালিম বলছি) এটির কথা উল্লেখ করেছি। আমার এক খালাতো বোন তাহমিনার বিয়ে ঠিক হয় কর্নেল রেজার সঙ্গে। এই বিয়ের পুরো আয়োজন এবং মধ্যস্থতা আমি,নিম্মি এবং কর্নেল অলিউল্লাহ করেছিলেন, যিনি আমাদের চেয়ে জুনিয়র ছিলেন। বিয়ের অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা লেডিস ক্লাবে, যা সে সময় ধনী ও প্রভাবশালীদের একটি আভিজাত্যপূর্ণ ক্লাব হিসেবে পরিচিত ছিল। দুপক্ষই আমাদের পরিচিত ছিলো এবং সব আয়োজন আমাদের ওপরই ছিল। এই আয়োজনের মধ্যে ২-৩ হাজার লোককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বিয়ের আসর চলছিল, তখন আমার একমাত্র শালা বাপ্পি, যিনি ম্যাগগিল ইউনিভার্সিটিতে পড়তেন, ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। সে অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিল এবং আমি ও নিম্মি দুই পক্ষের হোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলাম।
তিনি আরও বলেন, "বাপ্পি ছেলেদের বসার জায়গায় বসেছিল, তখন কিছু ছেলে তার চুল টানতে থাকে। প্রথমবারে বাপ্পি কিছু বলেনি, কিন্তু পরের বার টানার পর সে পেছনে তাকিয়ে দেখে একজন ছেলে। তারপর সে বলেছিল,'' তুমি চুল টানছো''? তখন ওই ছেলে বলেছিল, ''হ্যাঁ,আমরা দেখছিলাম, তোমার চুল এত সুন্দর, এটি কি পরচুলা না আসল''? বাপ্পি বলেছিল,''বেয়াদব ছেলে, তুমি আর এখানে বসবে না''। এরপর ছেলেগুলো চলে যায়। যে দুই ছেলের সাথে বাপ্পির কথা কাটাকাটি হয় তারা ছিল তৎকালীন রেডক্রসের চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফার ছেলে এবং এই দুই ছেলেই ছিল আবার শেখ কামালের বন্ধু।
ডালিম-মোস্তফা সংঘর্ষ - https://bn.wikipedia.org/wiki/
তারপর সেই বিয়ের অনুষ্ঠানে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। কথা কাটাকাটির কিছুক্ষণ পর দুটি মাইক্রোবাস এবং একটি কার লেডিস ক্লাবে প্রবেশ করে। কার থেকে নামেন গাজী গোলাম মোস্তফা। মাইক্রোবাস থেকে প্রায় ১০-১২ জন অস্ত্রধারী বেসামরিক ব্যক্তিও বেরিয়ে আসেন। তারা প্রথমে মুক্তিযোদ্ধা আলম এবং চুল্লুকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নেন। চুল্লুকে অস্ত্রের বাঁট দিয়ে আঘাত করা হয়, যার ফলে তার মুখ থেকে রক্তক্ষরণ হয়। এরপর তারা মেজর ডালিমকেও জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নেন। মেজর ডালিম আরো বলেন, তাঁর স্ত্রী নিম্মী তাঁকে একা যেতে দিতে রাজি হননি, তাই তিনিও মাইক্রোবাসে ওঠেন। তাদের সঙ্গে মেজর ডালিমের খালামনিও ছিলেন।অপহরণের পর তাদের সবাইকে বঙ্গবন্ধু ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।
উইকিপিডিয়া অনুসারে জানা যায়, মোস্তফার দুই ছেলে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলে শেখ কামালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা আরও কয়েকজন সহ মেজর ডালিম ও তার স্ত্রী নিম্মি, কর্নেল রেজার মা এবং ডালিমের আরও ২ জন বন্ধুকে উঠিয়ে রেড ক্রিসেন্টের একটি মাইক্রবাসে করে অপহরণ করেন। গাজী মোস্তফা এবং তার ছেলেরা প্রথমে তাদেরকে রক্ষীবাহিনী সদর দপ্তরে নিয়ে যান। পরে সবাইকে শেখ মুজিবুর রহমানের বাসায় নিয়ে যান।
এই ঘটনার পর মেজর ডালিমের ছোট ভাই স্বপন (বীর বিক্রম) ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে চলে যান এবং তিনি সেনাবাহিনীকে জানান, যে বিয়ের অনুষ্ঠানে মেজর ডালিমকে অপহরণ করা হয়েছে। এরপর বিষয়টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং পুলিশ গাজী গোলাম মোস্তফার বাড়িতে অভিযান চালায়। ইতোমধ্যে ডালিমকে অপহরণের খবরে বেঙ্গল ল্যান্সার্স মোস্তফার বাড়িটি আক্রমণ করে এবং বাড়ীর সবাইকে জিম্মি করে। সারা শহরে সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট বসানো হয় প্রতিটা গাড়িতে ডালিমদেরকে খোঁজে উদ্ধারের জন্য। শেষ পর্যন্ত সেনাপ্রধানকে ডাকিয়ে, তার সামনে শেখ মুজিবুর রহমান তাদের মধ্যে একটি সমঝোতা মধ্যস্থতা করেন এবং মোস্তফাকে নিম্মির কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন।
কে ছিল এই গাজী গোলাম মোস্তফা
মেজর ডালিম বলেন,''তখন ঢাকা শহরে গাজী গোলাম মোস্তফা ছিল মুজিবের সবচেয়ে বড় লাঠিয়াল সরদার। বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোস্তফা রেডক্রস বাংলাদেশের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন। তাকে রেডক্রসের চেয়ারম্যান বানানো হয়েছিল, যাতে লুটপাট করা যায়''।
উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ গাজী গোলাম মোস্তফা পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন। মোস্তফা ঢাকা শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বার্ষিক অনুদানের মাধ্যমে তিনি জনকণ্ঠ পত্রিকাকে সমর্থন করেছিলেন। মোস্তফা ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সিটি ইউনিটের সভাপতিও ছিলেন।
গাজী গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
> ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে - তিনি বৈদেশিক সাহায্যের মাধ্যমে পাঠানো লাখ লাখ কম্বল ও শিশু খাদ্য সহ টিন আত্মসাৎ করেছিলেন। এই ত্রাণ সামগ্রী, যা দেশের দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের জন্য পাঠানো হয়েছিল, সেগুলোর একটি বড় অংশ ভারতে পাচার করেন এবং কিছু স্থানীয় জনগণের কাছেই বিক্রি করে দেন তিনি। অভিযোগ অনুযায়ী, সাতটি শিশু খাদ্যের টিনের মধ্যে মাত্র একটি এবং ১৩টি কম্বলের মধ্যে মাত্র একটি প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে পৌঁছেছিল। এমনকি দুর্ভিক্ষের সময় শেখ মুজিবের জন্য পাঠানো কম্বলও আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।
> এছাড়াও তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মেজর ডালিম এবং তার স্ত্রীকে অপহরণের মতো ঘটনার সঙ্গেও সরাসরি যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
পরবর্তীতে গাজী গোলাম মোস্তফার ভাগ্যে কী ঘটেছিল?
> উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, ৭৫ এর ১৫ ই আগষ্টে শেখ মুজিবের প্রশাসনের পতনের পর মোস্তফা বিপুল অর্থসহ স্থল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করার সময় পথচারীদের হাতে ধরা পড়ে। তখন তাকে জেলে পাঠানো হয়।
> জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসনামলে গোলাম মোস্তফা কারাগারে বন্দী ছিলেন। সামরিক আইন আদালত তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছিলেন এবং ১৯৮০ সালের ২৮ মার্চ তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
> কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে গাজী গোলাম মোস্তফা আজমিরে মুইন আল-দীন চিশতির মাজার পরিদর্শনের পরিকল্পনা করেছিলেন এবং তার পরিবার নিয়ে ভারত গিয়েছিলেন ও কিছু দিন দিল্লিতে ছিলেন। ১৯৮১ সালের ১৯ জানুয়ারি গাড়িতে করে আজমীর যাওয়ার পথে একটি ট্রাকের সঙ্গে তাদের গাড়ির সংঘর্ষ হলে মোস্তফা এবং তার পুরো পরিবার মারা যায়। লিংক - https://www.ittefaq.com.bd/713876/
বাংলাদেশ-ভারত গোপন ৭ দফা চুক্তি
মেজর ডালিমের মতে, শেখ মুজিবের হত্যার পিছনে একটি বড় কারন হলো বাংলাদেশকে ভারতের গোলাম করে রাখার ৭ দফার গোপন চুক্তি। ১৯৭১ সালের অক্টোবর ভারতের একজন কর্মকর্তা ও বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ৭ দফা এক গোপনীয় চুক্তি সই করেন। যদিও জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি এ চুক্তি এবং মুজিবনগর সরকারের অনেকেই জানতেন না এ চুক্তির বিষয়। লিংক - Click This Link
মেজর ডালিম বলেন, '' যখন সাত দফাতে চুক্তি করে তখন নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিনকে পারমিশন দেওয়া হলো একটা প্রভিশনাল গর্ভমেন্ট গঠন করার। সাতটা ক্লজ পড়ে সাইন করার পর নজরুল ইসলাম ফিট হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন যে, আমরা ক্রমান্বয়ে ভারতের একটা করদরাজ্য-অঙ্গরাজ্যে পরিণত হব''।
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশকে ভারতের গোলাম করে রাখার সেই চুক্তিতে ৭ দফাগুলি কি ছিল?
> ধারা - ১। মুক্তিযুদ্ধ করেনি এমন কর্মকর্তাদেরকে চাকুরী থেকে অবসর দেয়া হবে। অভিজ্ঞ কর্মচারীর শূন্যতা পূরণ করবে ভারতীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। লক্ষ করে দেখবেন, স্বাধীনতার পর বেশ কিছু সিভিল সার্ভিস অফিসার ঢাকায় ও বিভিন্ন জেলায় ডিসি হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন।
> ধারা - ২। বাংলাদেশের নিজস্ব কোন সেনাবাহিনী থাকবে না।
> ধারা - ৩। দেশের অভ্যন্তরীণ আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য একটি প্যারা মিলিশিয়া বাহিনী থাকবে, যা পরে রক্ষী বাহিনী হিসেবে গঠিত হয়েছিল। প্রশিক্ষণে ছিলেন ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাগণ।
> ধারা - ৪। ভারতের সেনাবাহিনী থাকবে বাংলাদেশে। প্রতিবছর নভেম্বর মাসে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ হবে। ৭২ সনের নভেম্বর থেকে এর কাজ শুরু হবে।
> ধারা - ৫। বাণিজ্যিক সমঝোতা ছিল খোলা বাজার প্রতিষ্ঠা করা। সীমান্তের তিন মাইল জুড়ে চালু হবে খোলা বাজার। কোন নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। শুধু বছর শেষে হিসাব নিকাশ হবে। প্রাপ্য মেটানো হবে পাউন্ড, ষ্টার্লিং এর মাধ্যমে।
> ধারা - ৬। বিদেশ বিষয়ে ভারত যা বলবে, তাই মেনে চলতে হবে। অর্থাৎ, সাউথ ব্লকের এনেক্স হবে সেগুন বাগিচা। এক কথায় বলা চলে উল্লেখিত চুক্তি বলে ভারত বাংলাদেশের সামরিক ও পররাষ্ট্র বিষয়ের কর্তৃত্ব পেয়ে যায়।
ছবি - 9gag.com
> ধারা - ৭। পাকিস্তানের সাথে চুড়ান্ত লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিবেন ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান। মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক সহপ্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পাবেন না। এ কারণেই জেনারেল ওসমানী আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের দর্শকের ভূমিকা পালন করতে রাজী হননি।
শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের বিচার
১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্টে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত সরকার হত্যাকারীদের দেশে বিচার না করার বিধান রেখে জারি করে দায়মুক্তি অধ্যাদেশ।
লিংক - Click This Link
তার প্রায় দুই দশকেরও পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয় এবং বিচারের চূড়ান্ত রায়ে ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই ১২ জনের সবাই ছিলেন তৎকালীন মধ্যম সারির সেনা কর্মকর্তা যারা সরাসরি হত্যাকাণ্ড এবং পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছিল। হাইকোর্টের সেই চূড়ান্ত রায়ে -
১। বরখাস্তকৃত লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান,
২। অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান,
৩। অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল খন্দকার আবদুর রশিদ,
৪। অবসরপ্রাপ্ত মেজর বজলুল হুদা,
৫। অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিম,
৬। অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল এ এম রাশেদ চৌধুরী,
৭। অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ (ল্যান্সার),
৮। অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল এস এইচ বি এম নূর চৌধুরী,
৯। অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল মো. আজিজ পাশা,
১০। অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি),
১১। রিসালদার মোসলেমউদ্দিন,
১২। অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজেদকে নিম্ন আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয় এবং
১। ক্যাপ্টেন মো. কিসমত হাসেম,
২। অবসরপ্রাপ্ত মেজর আহমেদ শরিফুল হোসেন ,
৩। অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন নাজমুল হোসেন আনসারের ফাঁসির আদেশ বাতিল করে হাইকোর্ট।
সমালোচকদের মতে, এই হত্যাকাণ্ডের বিচারে যে দুটো ডাইমেনশন - একটা অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং আরেকটি আন্তর্জাতিক , এর কোনটাই কিন্তু এই বিচারে উঠে আসেনি। দেশের প্রচলিত আইনে আর দশটা হত্যাকাণ্ডের বিচার যেভাবে হয়ে থাকে সেভাবেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে ।
আর তাই এই হত্যাকাণ্ডের যে একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল এবং এর সাথে তৎকালীন রাজনীতিকদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বিচারকাজ শেষ হওয়ার পরও অনেকটা অস্পষ্ট রয়ে গেছে। প্রায় ৩৫ বছর পর এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি জড়িত সাবেক সেনা সদস্যদের দণ্ড দেয়া হলেও বেসামরিক কোন ব্যক্তির বিচার হতে দেখা যায়নি। - https://www.prothomalo.com/bangladesh/
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা একমত যে,''এটি নিছক হত্যাকাণ্ড নয়, বরং এর পেছনে একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। হত্যা মামলার রায়েও যেই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কথা সংক্ষিপ্ত আকারে উল্লেখ রয়েছে''। অবশ্য ১৯৯৬ সালে ১৫ই অগাস্টের হত্যাকাণ্ডের যে মামলা দায়ের করা হয়, সেখানে সেনা সদস্যদের বাইরে যে কয়জন বেসামরিক / রাজনীতিকদেরকে আসামি করা হয়েছিল তাদের মধ্যে মূল একজন খন্দকার মোশতাক আহমেদসহ তিনজন আগেই মারা গিয়েছিল,যে কারণে তাদের নাম আগেই মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়।
শেখ মুজিবের হত্যার বিচার শুরুর সময় মামলাটির প্রধান কৌশুলি ছিলেন সিরাজুল হক। তবে মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত শুনানি চলার সময় মামলাটি পরিচালনা করেন সিরাজুল হকের ছেলে আওয়ামীলীগের আমলে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ১৯৯৮ সালে ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে নিম্ন আদালত থেকে রায় দেয়া হলেও পরবর্তীতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকার এবং সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দীর্ঘ সময় উচ্চ আদালতে আপিলের কার্যক্রম ঝুলে থাকে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে উচ্চ আদালত চূড়ান্ত রায় দেয়। ২০১০ সালের ২৮ শে জানুয়ারি ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। https://www.dw.com/bn/
মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ৬ জন এখনো যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন এবং একজন মারা গেছেন। শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা মামলার রায় ঘোষণার ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বিদেশে পলাতক পাঁচ খুনিকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। লিংক - https://www.bbc.com/bengali/news-53789545
যদিও আওয়ামীলীগ আমলেই শেখ মুজিবের হত্যার বিচার হয়েছে তারপরও আওয়ামীলীগের নেতারাও মনে করেন যে হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কিছু বিষয় পূর্ণাঙ্গভাবে উঠে আসেনি। তবে এক্ষেত্রে তারা জোর দিচ্ছেন আন্তর্জাতিক যোগসাযশের দিকে।বিশ্লেষকরা মনে করেন, নির্মোহ একটি গবেষণা হলে তবেই হয়তো ১৫ই অগাস্টের হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনেক অস্পষ্টতাই দুর হয়ে যাবে।
=======================
জবাবদিহীতা - সপরিবারে শেখ মুজিবকে হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেশ-বিদেশে এখনো সবার কৌতুহল (সঠিক কারন জানা) সীমাহীন। এ বিষয়ে মোটামুূটি বুঝতে শিখার পর থেকেই আগ্রহ ছিল এবং এখনো আছে। আর তাই এ বিষয়ে যখন যা পেয়েছি পড়েছি এবং জানতে চেয়েছি এর অর্ন্তনিহিত কারনগুলি। প্রতি বছরে আগস্ট মাসে দেশে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে যত রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ ঘটত এর আলোকে কিছু লিখতে বরাবরই চাইতাম তবে এর পরে কি হবে বা ঘটবে তাই ভেবে-ভয়ে কখনো লিখা হয়নি আওয়ামী আমলে বা হাসিনার শাসনামলে। সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে এবং প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের লাইভ টকশোতে দীর্ঘদিন আড়ালে থাকা মেজর ডালিমের (বীর বিক্রম) সাক্ষাৎকারের কারনে শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ড বর্তমানে দেশের আলোচিত ঘটনা এবং জানা যাচছে এ ঘটনার পিছনের না জানা অনেক কারন। এ হত্যাকাণ্ডের অর্ন্তনিহিত সকল কারনের সাথে সাথে এর সাথে জড়িত প্রাসঙ্গিক সকল ঘটনাবলী এবং বিচার প্রক্রিয়া সহ পুরো বিষয়টা নির্মোহ ভাবে তুলে ধরার প্রচেষ্টাতেই এ লেখা। এর সাথে রাজনীতির দূরতম সম্পর্ক না খোজার জন্য বিনীত অনুরোধ রইলো।
পাঠক যদি কোন তথ্যে কোন অসংগতি খুজে পান তাহলে যথাযথ রেফারেন্স সহ তথ্য উপস্থাপন করলে অবশ্যই আপডেট করে দিব।
তথ্যসূত্র ও সহযোগীতায় - উইকিপিডিয়া,গণমাধ্যম,বই,প্রবন্ধ ।
===============
পূর্ববর্তী পোস্ট -
===============
২১। ভোগ নয় ত্যাগ ত্যাগেই প্রকৃত সুখ । আসুন পরিচিত হই অভাগা দেশের এক মহান ত্যাগী পরিবারের সাথে।
Click This Link
২০। দল-মতের উপরে উঠে তারেক রহমান কি হতে পারবেন বাংলাদেশের সার্বজনীন নেতা?
Click This Link
১৯। রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফার রূপরেখা ও আমার ভাবনা। -
Click This Link
১৮। শেখ হাসিনা বিহীন ১ মাসের বাংলাদেশ - কেমন কাটলো ডঃ ইউনুসের অধীনে।-
Click This Link
১৭।'' বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা আইন '' নাকি " বাংলাদেশে ও তাহার জনগনের জন্য গজব আইন''?
Click This Link
১৬।"শেখ হাসিনার একটানা ১৫ বছরের শাসন বনাম তথাকথিত আওয়ামী উন্নয়ন " -
Click This Link
১৫।" আসন ভাগা-ভাগি (সিলেকশনে) কিংবা ভোটের আগেই বিজয়ী আওয়ামীলীগ "- এভাবে আর কত দিন?
Click This Link
১৪।"জাতীয় নির্বাচন ২০২৪" - সমস্যা ও সমাধান, কোন পথে - কত দূর?।
Click This Link
১৩।" দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করবে আওয়ামীলীগ " এটা কিসের ইংগিত দেয়? - Click This Link
১২। "আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী" - আসুন একনজরে দেখি আমাদের স্বপ্নপুরীর সর্বশেষ অবস্থা।
Click This Link
১১।"স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠকের আলোচ্যসূচী" - সত্যিটা কি ? Click This Link
১০। " সংবিধান থেকে একচুলও নড়া হবে না" - নির্বাচনকালীন সরকার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাস্তবতা ।
১ম পর্ব - Click This Link
শেষ পর্ব - Click This Link
৯।"হিরো আলম কার প্রতিদ্বন্দ্বী " - Click This Link
৮। সেন্টমার্টিন দ্বীপ লিজ কিংবা বিক্রি - সত্যিটা কি ? - Click This Link
৭।আমেরিকার ভিসা নীতি বনাম বাংলাদেশের ভিসা নীতি-এর পর কি হবে?-
Click This Link
৬। আমার সোনার বাংলা কি কোটিপতি ও খেলাপি ঋণ তৈরীর কারখানা ? - Click This Link
৫। " রংপুর সিটি কর্পোরশন নির্বাচন - লাঙলের জয় ও নৌকা চতুর্থ " - কি বার্তা দেয় আমাদের? - Click This Link
৪। " বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন " - তুমি কার ? -
Click This Link
৩। সামাজিক রীতি-নীতি-শিষ্ঠাচার এখন যাদুঘরে - আপনি কি একমত ? -
Click This Link
২। বর্তমান সময়ে আমরা কি একটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও দৃষ্টিশক্তি হীন জাতি বা প্রজন্মে পরিণত হচছি বা হতে যাচছি? -
Click This Link
১। আমাদের সমাজের সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা কি ভেঙে পড়ছে ? -
Click This Link
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ধন্যবাদ সৈয়দ কুতুব ভাই, আপনার অনুসন্ধানমূলক মমন্তব্যের জন্য।
শেখ মুজিবুর রহমানের বাকশাল গঠনের কারণে মাত্র তিন বছরের মাথায় তাকে ক্ষমতাচ্যুত ও পরিবার সহ হত্যার ঘটনা ঘটেছে ২০১৪ সালের পর থেকে শেখ হাসিনা বাকশাল ২.০ চালু করেছিল কিন্তু তিনি কিভাবে ১০ বছর ক্ষমতায় থাকলেন? কোন ক্যু হলো না, রাজনৈতিক দল গুলো পারলো না। কেন এমন হয়েছে?
- সৈয়দ কুতুব ভাই ,
আমি যতটুকু বুঝেছি আপানার মূল প্রশ্ন এই যে - একই রকম ঘটনায় বাবার ক্ষমতাচ্যুতির সাথে সাথে পরিবার সহ হত্যার শিকার হলেও মেয়ে কিভাবে এতটা সময় প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটিয়ে ক্ষমতায় থাকলেন? মেয়ের শাসনামলে কেন কোন ক্যু হলো না এবং রাজনৈতিক দল গুলো পারলো না?
দু পর্বের আওয়ামী শাসন (বাবা-মেয়ে) একই দোষে দোষী । রাজনৈতিক মত প্রকাশের সুযোগ সীমিত করনে এবং বিরোধীমতকে দমনে বাবা মেয়ে উভয়েই প্রশাসনিক নানা রকম কারিগরী ফলানোর সাথে সাথে হামলা-মামলা-গুম ও নৃশংসতার আশ্রয় নিয়েছেন । উভয়েই সমসাময়িক রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকে নানা কায়দায় ব্যস্ত কিংবা নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিল , সাথে সাথে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে যাতে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম চালাতে না পারে।
আর তাইতো উভয়ের শাসনামলেই রাজনৈতিক দল গুলো তাদের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারেনি রাজনৈতিক শূন্যতার কারনে। আর তাইতো বাবাকে হটিয়েছে সেনাবাহিনী এবং মেয়েকে হটিয়েছে ছাত্র-জনতা।
আর এসবই হয়েছে তাদের স্বৈরশাসনের পরিণতিতে এবং স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকার দরুন।
এ আমার অভিমত।
হয়ত অনেকেই কিংবা আপনিও আমার সাথে একমত নাও হতে পারেন।
২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:৩২
নতুন বলেছেন: মেজর ডালিম এতো বছর পরে কেন সবার সামনে আসলো সেটার জবাব আছে ভিডিওর ২ ঘন্টা ১৩ সেকেন্ড পরেই।
৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৬
জটিল ভাই বলেছেন:
আগামী ৫০ বছর পরের প্রজন্মও হাসিনার এভাবে দেশত্যাগের কারণ খুঁজে ফিরবে। কারণ, সঠিক ইতিহাসকে কেউ বেঁচে থাকতে দেয় না!!!
৪| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৫
এম ডি মুসা বলেছেন: হত্যা কাণ্ড নিকৃষ্ট কাজ। এটা অপরাধ। যদি আপনাদের মতে ক্ষমতা লোভী হলে, একদিন না একদিন অভ্যুত্থানের পতন হতো। সেটা বাঙালি করতে, তাকে স পরিবারে হত্যা করে। দেশের স্বাধীনতা এবং অস্থিরতার তৈরি এটা জাতির জন্য খারাপ। মানুষ হত্যা মহাপাপ।
৫| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৯
অপু তানভীর বলেছেন: আপনি কি মেজর ডামিলের লেখা বইদুটো পড়েছেন? বই পড়লেই আপনি অনেক আগেই টের পেতেন যে তার বইয়ের ভেতরে অনেক কথাই অসঙ্গতি রয়েছে। তার লাইভের বেশ কিছু অংশ আমি দেখেছি । বেশি আগ্রহ জন্মায় নি। কারণ আমি জানি সে কী বলবে। সে তার বইয়ের বাইরে আসলে তেমন কিছুই বলে নি।
আর সব থেকে বড় কথা যযে সে একজন খুনী । এর থেকে বড় পরিচয় তার নেই। দুনিয়ার যত বড় মহান মানুষই হোক না কেন যত বড় কারণই থাকুক না কেন একটা ১০ বছরের শিশু আর নিরস্ত্র নারীদের খুন করা কোন ভাবে জাস্টিফাই করা যায় না । আপনার এই লেখায় আমি ডামিলকে বড় বেশি প্রাধান্য দিতে দেখলাম। ব্যাপারটা পছন্দ হল না।
ভাল থাকুন ।
৬| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৯
আব্দুল হাদী আল নাফী খান বলেছেন: আপনি অনেক কষ্ট করে অনেক বড় একটা লিখা লিখেছেন। কিন্তু আমার ইম্প্রেশন শুরুতেই খারাপ হয়েছে, বানানের অসংগতি আর সাধু চলিতের মিশ্রণের কারণে। এরকম ক্ষেত্রে লেখকের বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হতে পারে। অনেকগুলো বিষয়ের ওভারভিউ ছিল, কিন্তু এগুলো অনেক গবেষণার দাবি রাখে, যেটা ইতোমধ্যে করা হয়েছে, কিন্তু আপনার লিখায় কিছুটা বায়াসড আর অতি সরলীকৃত হিসেবে উপস্থাপিত। উইকিপিডিয়া রেফারেন্স হিসেবে খুবই অনির্ভরযোগ্য।
৭| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:০১
কামাল১৮ বলেছেন: এটা ইসলামী বিপ্লব।নবীর পরিবারের এই দশা করে ছিলে ইয়াজিদ।কারবালার প্রান্তরে।
৮| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:৫৪
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
মুজিব নিয়ে বই লিখেছেন?
৯| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:০১
এইচ এন নার্গিস বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম ।
১০| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১:৪২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী সংসদ ভেঙ্গে দেবার ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন করার বিধান রয়েছে। ৬ মাস হতে চলল। নির্বাচনের কোন খবর নেই। কারণ কী?বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী সংসদ ভেঙ্গে দেবার ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন করার বিধান রয়েছে। ৬ মাস হতে চলল। নির্বাচনের কোন খবর নেই। কারণ কী?
আলীগ নির্বাচনে অংশ নিবে এবং সম্মানজনক আসনও লাভ করবে। তবে কারচুপি হতে পারে। বিশেষ করে মিডিয়া ক্যু হবার সম্ভাবনা আছে ১০০%।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:২৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শেখ মুজিবুর রহমানের বাকশাল গঠনের কারণে মাত্র তিন বছরের মাথায় তাকে ক্ষমতাচ্যুত ও পরিবার সহ হত্যার ঘটনা ঘটেছে
২০১৪ সালের পর থেকে শেখ হাসিনা বাকশাল ২.০ চালু করেছিল কিন্তু তিনি কিভাবে ১০ বছর ক্ষমতায় থাকলেন? কোন ক্যু হলো না, রাজনৈতিক দল গুলো পারলো না। কেন এমন হয়েছে?