নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিলনদ

মাহমুদুল হাসান কায়রো

যাযাবর, অান্তর্জাতিক যাযাবর।

মাহমুদুল হাসান কায়রো › বিস্তারিত পোস্টঃ

'রাজাকার' ও 'মুক্তিযোদ্ধা' শব্দদয়ের অপব্যবহার বন্ধ করো।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:২৬

ইহুদি একটি মতবাদ আছে, 'তোমরা যদি কোন মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাও তাহলে সেই কথাটিকে বার বার বলতে থাকো'। মতবাদটি বাস্তবেও সত্য। একটি মিথ্যাকে বার বার বললে সেটা সত্যের মতই শুনা্য আর একটি সত্যকে বার বার বলা হলে সেটি মিথ্যার মত শুনায়।
আওয়ামীলীগ দীর্ঘদিন যাবৎ শিবিরের সমস্ত কর্মীদের রাজাকার রাজাকার বলে গালি দিয়ে আসছে। পাশাপাশি তাদের অধিনস্ত মিডিয়া দিয়েও কাজটা করিয়ে নিচ্ছে। এতে বেশ ভাল কাজও হয়েছে। সাধারণ মানুষদের মনে শিবিরের কর্মীদের উপর রাজাকারের একটি ছা্যা ফেলতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু এতে সমাজের অনেক বড় ক্ষতিও হয়েছে। আর সেটা হলো, রাজাকার বলতে আমরা ভয়াবহ নিষ্ঠুর যেই প্রাণীটিকে বুঝতাম সেটা থেকে অনেক সরে এসেছি। আগে রাজাকার বলতে বুঝাতাম কুখ্যাত সেই মীরজাফরের মত ব্যক্তিকে। রাজাকার বলতে বুঝতাম ঐ মানুষদের যারা সর্বদা দেশ এবং দেশের স্বাধীণতার বিরুদ্ধে কাজ করে যায়। রাজাকার বলতে বুঝতাম ঐ সব হায়নাদের যারা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেই কেবল ক্ষান্ত হয় নি সাথে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের পাক বাহিনীর হাতে ধরিয়ে দিত। মুক্তিবাহীনির স্ত্রী, মা, বোন কন্যাদের পাকি সেনাদের হাতে তুলে দিত। তাদের বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দিত, সম্পদ লুট করত। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিগত দিন গুলিতে আওয়ামীলীগ সেই নিষ্ঠুর ঘৃণিত শব্দটিকে এত বেশি নিজেদের স্বার্থে ব্যাবহার করেছে যে, এখন রাজাকার বললে বুঝায় কেবল এ্যন্টি আওয়ামীলীগ। আওয়ামীলীগের কোন নেতার মুখে যদি বলতে শুনাযায়, অমুক ব্যাক্তি রাজাকার এর অর্থ এই দাড়ায় যে অমুক ব্যাক্তিটি আওয়ামী বিরোধী, এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।

তেমনি ভাবে আওয়ামীলীগ ও তার নেতা কর্মীরা মুক্তিযোদ্ধা শব্দটিকেও এত বেশি অপাত্রে ব্যাবহার করেছে যে এতে করে মুক্তিযোদ্ধা শব্দের যে একটি ওজন আছে সেটিই নষ্ট হয়ে গেছে। উল্লেখ্য যে, 'মুক্তিযুদ্ধ' একটি ব্যাপক অর্থবহ শব্দ। এখানে দুটি পুর্ন অর্থপুর্ণ শব্দ রয়েছে। 'মুক্তি' ও 'যুদ্ধ'। মুক্তি মানে মুক্ত হওয়া আর যুদ্ধ মানে শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে কারো বিরুদ্ধে কোন কিছু অর্জনের জন্য লড়াই করা। এখানে যুদ্ধের সাথে অবশ্য শারিরীক পরিশ্রমের পাশাপাশী নিজের জীবনের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকতে হবে। তা না হলে একে যুদ্ধ বা যোদ্ধা বলা যাবে না। অথচ আওয়ামীলীগ নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় বিশেষ গুষ্ঠিকে কথিত এ যুগের মুক্তিযোদ্ধা উপাধী দিয়ে মহান মুক্তিযোদ্ধাদের কেবল অপমানিতই করেনি বরং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথেও বেয়াদবি করেছে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে যাকে তাকে মুক্তিযুদ্ধের ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে কিংবা কখনো মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট বিক্রি করে মুক্তিযুদ্ধকে একটি পণ্যে রুপান্তরিত করেছে। সর্বশেষ আজ বিএনপি চলমান আন্দোলনকারীদের এ যুগের মুক্তিযোদ্ধা বলে ঘোষণা দিয়ে প্রমান করলো যে ক্ষমতায় গেলে তারাও মুক্তিযুদ্ধের ব্যাবসা খুলে বসবে। এভাবে আর কিছুদিন চলতে থাকলে বর্তমান প্রজন্মের নিকট মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেটকে কেবল সাধারণ একটি সার্টিফিকেটই মনে হবে। এই মুক্তিযুদ্ধ কিংবা মুক্তিযোদ্ধা শব্দ দুটির যে মাহাত্ম এর সাথে জড়ানো যে মায়া ভালবাসা সম্মান ও স্মৃতি রয়েছে সেটা তারা কখনোই উপলব্ধি করতে পারবে না।


কাজেই যাকে তাকে মুক্তিযোদ্ধা বলে আমাদের মহান মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান কমানো যাবে না তেমনিভাবে যাকে তাকে রাজাকার বলে অাসল রাজাকারদের প্রতি আমাদের ঘৃণা কমনা যাবে না। মোট কথা কারো দলীর স্বার্থে শব্দগুলো ব্যবহার করা যাবে না।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:৫১

কলাবাগান১ বলেছেন: শিবিরকে রাজাকার বলা হয় কেননা তারা বুকের মাঝে বড় রাজাকার সাঈদীর নাম লিখে তান্ডব চালায় যখন রায় ঘোষনা হয়......ওদের মিটিংগুলিতে রাজাকার দের মুক্তির পোস্টার ছাড়া আর কোন পোস্টার কি দেখেছেন

২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:২৯

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: আওয়ামী থিউরি অনুযায়ী, যারা জীবনভর আওয়ামী লীগের নির্লজ্জ দালালি করে যেতে পারবেন, তারাই মুক্তিযোদ্ধা। যেমন, শেখ হাসিনার বেয়াই নুরু রাজাকার, আমলা ম খা আলমগীর রাজাকার, হাবিবুল্লাহ কাচপুরী রাজাকার - এরা সবাই এখন প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধা।

কিন্তু আওয়ামী মহলে একটা কথা আছে, একাত্তরে যারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন, এরকম অনেকেও পরে রাজাকারে পরিণত হতে পারেন। যেমনঃ মেজর জিয়া, কাদের সিদ্দিকী, এ কে খোন্দকার, শাজাহান ওমর, হাফিজুদ্দিন আহমদ - এরা এখন সবাই ঘৃণ্য রাজাকার।

৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০৯

রাফা বলেছেন: সঠিকভাবেই পয়েন্ট আউট করেছেন।কিন্তু ভেবে দেখুনতো নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া জানা কোন ছেলেমেয়ে যদি এখন শিবির করে তাকে রাজাকার না বলে উপায় কি !
ইতিহাসের সব কিছু জানার পরও যদি কেউ জামাত/শিবিরের অপরাজনীতিতে বিশ্বাস করে তাকে রাজাকার কেনো আরো বেশি ঘৃণা করা উচিত।কিন্ত আমাদের অভিধানে রাজাকারের চাইতে ঘৃণ্য কোন শব্দ নাই ।তাই বাধ্য হয়ে অনেকেই রাজাকারে আওলাদদেরকে রাজাকার বলতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করে।

৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫০

ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: রাজাকার দের দোশর বললে মনে হয় সেটা বেটার হবে ।

৫| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:১৯

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ভল বলেছেন কায়রো ভাই । তরে রাজারকার হলো সুবিধাবাদি শ্রেনী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.