নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিলনদ

মাহমুদুল হাসান কায়রো

যাযাবর, অান্তর্জাতিক যাযাবর।

মাহমুদুল হাসান কায়রো › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুনিয়া....

১৪ ই মার্চ, ২০১৫ ভোর ৬:৩১

নাম: দুনিয়া
বয়স: ১০।
জাতীয়তা: মিশরী।
ভাষা: আরবী।
ধর্ম: ইসলাম।
পেশা: ........??!!
আসলে মেয়েটির পেশা সমন্ধে মন্তব্য করা কঠিন।

তবে এক প্রকারের শিল্পিই বলা যায়। আমাকে এসে বলল: ঐ কয়টা বাজে? আমি মুবাইলে ফেসবুকিং করতেছিলাম। মেয়েটির দিকে না তাকিয়েই বললাম রাত ১২ টা ১০। মেয়েটা আমার কথা প্রথমবারে বুঝতে না পেরে মুখে মুচকি হাসি নিয়ে মাথা একটাু ঝাড়া দিয়ে বললো কয়টা বাজে??? আমি মেটেির দিকে তাকাতেই কিছুটা হতভম্ব হয়ে গেলাম। চোখের সামনে এত কিউটি একটি মেয়ে। পোাশাকে আসাকেও বেশ রুচিসম্মত। রাত ১২ টায় একা একা রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। যদিও মিশরে রাত ১২ টায় এটা তেমন ফেক্টর না। তবুও একটু অবাক হয়ে মেয়েটির সাথে মজা করার জন্য বললাম: তোর কয়টা দরকার? ছোট মেয়েটি বুঝতে না পেরে বললো: আমার কয়টা দরকার মানে আবার কি? আমি বললাম তুই ঘরে যাবি না? ১২ টা ১০ বাজে। মেয়েটি বললো: না এখন যাব না দেরি আছে, বলেই বললো, দে একটা টাকা দে। ইদানিং কায়রোর বিভিন্ন রাস্তা ঘাটে বিশেষ করে ক্যাফেটারিয়াগুলোতে এই ধরনের ছোট ছোট ছেলে মেয়ে দের ভিক্ষা করতে দেখা যায়। আসলে শিশু গুলো এত কিউট যে এদের সাথে ভিক্ষা শব্দটি যায় না। সে যাই হোক, আমি এই ধরনের শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তিতে নিরুৎসাহিত করতে অধিকাংশ সময়ই নিজের হৃদয় মুদ্রার নিষ্ঠুর পিঠই দেখায়ে দেই। যথারিতি দুনিয়াকেও না করে দিলাম। দুনিয়া উল্টা জিজ্ঞেস করে বসলো, কেন দিবি না? আমি বললাম তুই বাসায় যা পড়া লেখা কর। চটপটে মেয়েটি জবাবে বললো স্কুল বন্ধ। আমি বললাম তাহলে বাসায় গিয়ে ঘুমা। মেয়েটি বললো বাসা অনেক দুরে পরে যাবো। মেয়েটি বলে এত কথা বলে লাভ নাই টাকা দিলে দে না দিলে না দে..... আমি গেলাম। আমি না করে দিলাম। মেয়েটি পাশেই দুকানে কি যেন কিনতে গেল। মেয়েটির জন্য আমার স্নেহ হতে লাগলো। আবার এই সমাজের উপর রাগও হতে থাকলো। এই সমাজ আসলেই অনেক নিষ্ঠুর। কাউকে জন্মগত রাজা রাণী বানিয়েছে কাউকে বানিয়েছে ভিখারী। তবে নিস্পাপ এই শিশুটির কতটুকুই বা দোষ? একি দুনিয়ার কোন কিছু বুঝে? নিজের অধিকার চেয়ে নেয়ার ক্ষমতা কি তারর হয়েছে? হয় নি। মনে মনে চিন্তা হতে লাগলো হতে পারে এই শিশুগুলো স্বাভাবের ভিখারি কিংবা অভাবের কিন্তু এটা তো সত্য যে তারা অনেক কষ্ট করে। খাওয়া দাওয়ায় কষ্ট করে, রোদে পুড়ে জলে ভিজে কষ্ট করে। মানুষের কালো মুখ দেখে কখনো বা ঝাড়ি শুনতে হয়..... আমি এগুলো চিন্তা করতে করতে যার জন্যে অপেক্ষা করতে ছিলাম সে এসে গেল। তাকে দেখে মেয়েটিও আবার আমার সামনে আসলো। এবার তাকে আর রাগ না দেখিয়ে পকেট থেকে এক পাউন্ড বের করে দিলাম। এবং স্নেহ ভড়া মন নিয়ে বললাম তোর নাম কি? মেয়েটি বললো মুহাম্মদ। আমি বললাম দুষ্টামি করিসনা তোর আসল নাম বল। সে বলে সত্যিই আমার নাম মুহাম্মদ। আমি বললাম আমার নাম মাহমুদ, আমার বাড়ি বাংলাদেশে এবার তোর নাম বল। সে বললো আমার নাম দুনিয়া। বয়স কতো? ১০। থাকোস কোথায়? ঐ গিজার দিকে...... পড়া লেখা করিস না? হ্যা স্কুলে যাই কিন্তু এখন বন্ধ। আমি বললাম, তোর জামা কাপর দেখ আমার চেয়ে কত সুন্দর আর কত দামী অথচ তুই .... (ভিক্ষা করিস, কিন্ত ক্যান? বলতে গিয়েও বললাম না, লজ্জা পাবে তাই) মেয়েটি প্রশংসা পেয়ে কিছুটা লজ্জাই পেয়ে গেল। আমি বললাম আয় তোর একটা ছবি তুলি। সে বললো 'মাইনফাশ' মানে অসম্ভব। আমি বললাম ক্যান অসম্ভব? চাল্লু মেয়েটা বললো দেখ আমাদের দেশের কালচার হলো কোন মেয়ের ছবি তুলতে হয় না। আমি বললাম তুই তো মেয়ে না তুই পিচ্চি বাবু। তাছাড়া তুই ভাল পোশাকে আছিস পয় পরিস্কার আছিস ছবি তুললে দোষ নাই। সে বলে, না তার পরও মেয়েদের ছবি তুলা ঠিক না। আমি বললাম ভয়ের কিছুই নাই তুই মুসলমান আমিও মুসলমান। কোন খারাপ উদ্দেশ্যে না, তোকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগতেছে তাই ছবি তুলতে চাইছি। তাছাড়া তুই আমার ছোট বোনের মতই... মেয়েটি একটু আদর পেয়ে আনন্দই পাচ্ছিল মনে হলো। এবার ফিট ফাট হয়ে দাড়িয়ে বলে, নে ভাল করে ছবি তুল। খারাপ হলে মাইর দিমু কিন্তু...... ফ্লাশ অনকরে একটা ছবি তুললাম। এবার বলে দেখি দেখি ছবি দেখা....... ছবি দেখাইলাম... বলে কি ছবি তুলছোস? পচা হৈছে... আমি বললাম ফ্লাশ দেয়ার কারণে পচা হইছে। আসলেও ফ্লাশের কারণে ছবিটি পচা হইছে মেয়েটি আরো বেশি সুন্দর আরো বেশি কিউট। যে কেহই মেয়েটিকে দেখলে আপন মনে করবে.......

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:২২

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
হুম!! আসলেই কিউট।

১৪ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:০১

মাহমুদুল হাসান কায়রো বলেছেন: হুমমম অনেক সুইট মেয়েটা....

২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৫১

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব দুঃখজনক :( মায়া লাগছে।

১৪ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:০২

মাহমুদুল হাসান কায়রো বলেছেন: ভাউ, মায়া থাকলে এই পৃথিবীটা অনেক সুন্দর আবার পৃথিবীতে চলাও কঠিন......

৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:২০

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার লেখাগুলো মৌলিক এবং বেশ ইন্টারেসটিং .........।
শুভকামনা রইলো....

১৫ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৭:০৯

মাহমুদুল হাসান কায়রো বলেছেন: ধন্যবাদ শ্রাবণধারা.... :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.