নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিলনদ

মাহমুদুল হাসান কায়রো

যাযাবর, অান্তর্জাতিক যাযাবর।

মাহমুদুল হাসান কায়রো › বিস্তারিত পোস্টঃ

আকাশে গে\'র খপ্পরে একদিন....

২৮ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৪:১০

ভুমিকা: গত কয়েকদিন যাবৎ যাযাবরের মত ঘুরছি আর ছোট ছোট করে সফরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। আজ কায়রোতে পৌছে ফেসবুকে দেখছি 'গে' নিয়ে বাংলাদেশে তুলকালাম চলছে। সাথে সাথে মনে পড়ে গেল আমার জীবনের ভয়ংকরতম এক অভিজ্ঞতার কথা। চিন্তা করলাম ঘটনাটা সবার সাথে শেয়ার করি। এতে করে অনেকে 'গে পিপল'দের সামন্ধে একটা ধারনাও পেয়ে যাবেন।

ঘটনা: দীর্ঘদিন মিশরে থাকার পর প্রথম দেশে যাচ্ছিলাম। দেশে ফেরার আনন্দে ওত্তেজিত হয়ে দিক বেদিক হারিয়ে ফেলার অবস্থা। তারউপর এয়ারপোর্টে চেকইন করতে লেইট। সব মিলিয়ে কোনরকমে দৌড়িয়ে ইত্তেহাদ এয়ারের আবু জাবির ফ্লাইটটা ধরতে পারলাম। আমিই সর্বশেষ যাত্রী। ধাই ধাই করে প্লেনে ঢুকে সিট নম্বর তালাশ করে সিটের পাশে আসতেই পাশের সিটে বসা ভদ্রলোকটি উঠে আমার হ্যান্ড লাগেজ, লেপটপ ব্যাগ সব উপরের বক্সে তুলে রাখলেন। আমি থ্যান্কিউ থ্যান্কিউ বলতে বলতে সিটবেল্ট বাধতে লাগলাম। লোকটিও নিজের সিটে বসে পড়লো। লোকটির বয়স ৪৫/৪৬ হবে। নাম ইব্রাহিম। জাতীয়তায় মিশরী, আবুধাবিতে স্যাটেল্ড। পেশায় ইন্জিনিয়ার। বেশ হেন্ডসাম দেখতে। মাথায় চুল নাই। আমার নাম পরিচয় বলতেই সে ডিনাই করে বসলো। সে বলে, না তুমি বাংলাদেশি না। তুমি কিছুতেই বাংলাদেশি না।
আমি: কেন?
সে: কারণ, আমার কম্পানিতে অনেক বাংলাদেশি কাজ করে। দীর্ঘদিন ধরে আমি বাংলাদেশীদের সাথে উঠা বসা করি। কিন্তু তোমার মত কিউট কাউকে কোন দিন দেখি নাই.....
আমার মাথা ঘুরায়ে গেল। কি বলে এগুলা? পরে চিন্তা করলাম হয়ত আমাকে সম্মান জানানোর উদ্দেশ্য কোন প্রসংসাসুচক শব্দ বলতে গিয়ে কিউট বলে ফেলছে। এটা হতেই পারে.....
যাইহোক বিমান ছেড়ে দিল।
মি. ইব্রাহিম কথা বলেই যাচ্ছে বলেই যাচ্ছে,,,,,
আমাকে রিলাক্সে একটু বসতেও দিচ্ছে না, বুক ভড়ে স্বাস পর্যন্ত নিতে পারছি না...
ইব্রাহিম: আচ্ছা তুমি দেশ থেকে ফিরবে কবে? ফেরার পথে তুমি আবুধাবিতে আমার বাসায় বেড়িয়ে যেও। আমার অনেক বাড়ীটা অনেক বড়, বাড়িতে বিশেষ কোন লোকজন থাকে না, ৩ টা গাড়ী আছে। ড্রাইভারকে দিয়ে তুমাকে সারা শহড় ঘুরায়ে দেখাবো...... ব্লা ব্লা ব্লা......
বেটার পেচাল শুনতে শুনতে মাথা ধরা অবস্থা
এমন সময় খাবার চলে আসলো.......
ইব্রাহীম আমাকে বলে তুমি কি খাবা? তুমি যা খাবা আমিও তাই খাবো।
আমি চিকেন ক্যাপসা নিলাম, সে ও তাই নিল।
খাবারের সময় সে অযথাই আমাকে হেল্প করার চেষ্টা করতে লাগলো। বাংলাদেশে স্ত্রীগন যেমন তাদের স্বামীদের যত্ন করে খাবার বেড়ে বেড়ে খাওয়ায় ঐরকম আমার সাথেও করতে লাগলো। আমি বিরক্ত হতে লাগলাম। বললাম, তোমার খাবার তুমি খাও আমার খাবার আমি ঠিকই খেতে পারবো। কিন্তু বেচারা বেলেহাজ নাছোর বান্দা.........
খাবার শেষে সে টিস্যু এগিয়ে দিল হাত মুছার জন্য। পরে যেটা করলো আরো ভয়ংকর। নিজ হাতে টিস্যু নিয়ে আমার মুখ মুছায় দিতে গেল...
হওয়াট ইজ দিজ? বলে এক ধমক দিয়ে তাকে সরায়ে দিলাম। বেলাহাজ চুপ হয়ে গেল।
একটু পর বিমান বালা চা/কফি নিয়ে আসলো।
এই সুযোগে সে আবার শুরু করলো। চা'য়ে চিনি কতটুকু খাবা? চিনির প্যাকেট ছিরে দিতে লাগলো, কখনো চা নাড়া দিয়ে দিতে চাইলো। এবার মোটামোটি শালিনতা বজায় রাখতে চাইলো। চা খাওয়া শেষ করে বললাম:
মি. ইব্রাহিম, আমি অনেক টায়ার্ড আমি ঘুমাবো। আমাকে ডিস্টারব করো না প্লিজ.....
ইব্রাহিম: মাহমুদ, আমিও ঘুমাবো কিন্তু ঘুম আসছে না। আমি কি তোমার হাতটা ধরে ঘুমাতে পারি?
আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম। এতক্ষনে আমি ঠাওর করতে পারলাম কুত্তায় তো একটা গে। এতক্ষন ভাবছি সে মেন্টাল লুজার টাইপ কিছু একটা হবে। কিন্তু এখন তো তার পাশে বসতেই ঘেন্না লাগতে লাগলো। মনে মনে ছিহ ছিহ করতে লাগলাম। একজন গে এর পাশে বসে চার ঘন্টার জার্নি করছি আর সে আমার দিকে কু নজড় দিচ্ছে। ছিহ ছিহ, ওয়াক ওয়াক.....
কি করবো কি করবো চিন্তা করতে করতেই মাথায় চমৎকার বুদ্ধি ঢুকে গেলো। বিমান বালাকে জুড়ে এ্যক্সকিউজ মি বলে ডাকলাম। ইব্রাহিম ভয়ে জানালার সাথে লেগে গেলো। আমি বিমান বালাকে বললাম: আশে পাশে কোন খালি সিট আছে কি না? থাকলে আমি সিট টা চেন্জ করতে চাই। সে জবাব দিল: সরি স্যার। আমাদের ফ্লাইট 'ফুল ফ্লাইট''......
ইব্রাহিম বুঝতে পেরে ছরি বলে সাইডে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। কিন্তু আমার তো মেজাজ যা হবার তা হয়েই গেছে। তার পাশে ঘুমানো তো দুরের কথা বসতেই গা ছম ছম করছে। সে ঘুমায়ে পড়লে আমি ওয়াশরুমে গেলাম, এবং ওদিকে একটু হাটাহাটি করে মিনিট বিশেক কাটিয়ে আবার সিটে বসলাম। সে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। কিন্তু ঘুমের তালে বার বার আমার গায়ের উপর ঠেস দেয়ার চেষ্টা করছে। আমি একেবারে ডাইনে চেপে মাঝখানে পিলো দিয়ে কোন রকমে বসে রইলাম। একটু পর সে ঘুম থেকে উঠে গেলো। আধঘন্টা পর বিমান ল্যান্ড করবে। সে সব কিছুর জন্য ক্ষমা চেয়ে ভদ্র ভাবে বললো:
তুমি কি ইমেইল ব্যবহার করো?
আমি বললাম হ্যা করি।
সে বললো তোমার ইমেইল এ্যড্রেসটা দাও
আমি বললাম: মনে নেই, লেপটপে সেভ করা আছে
সে কাগজ কলম বের করে নিজের ইমেইল লিখে কাগজটি কয়েকটি ভাজ করে আমার হাতে দিল
আমি থ্যান্কস বলে পকেটে ভড়ে রাখলাম
সে আবার পেচাল শুরু করলো
আমি বললান, একটু পরেই বিমান ল্যন্ড করবে। তার আগে আমি ওয়াশরুম থেকে আসি.....
ওয়াশরুমে গিয়ে কাগজের টুকরো টা খুলালম।
কাগজে ইমেইল লেখা: সফটগে৯৮৭৮৯@ইয়াহু ডট কম.......
কাগজ টা কমোটে ফেলে দিয়ে ফ্লাশ করে ভিতরে কিছুক্ষন বসে রইলাম....
কিছুক্ষন টাইম পাস করে সিটে চলে আসলাম
একটু পরেই বিমান ল্যান্ড করলো।
আমি এক লাফে উঠে নিজের লাগেজ ব্যাগ নিয়ে সামনে এগিয়ে দাড়িয়ে রইলাম। আর চিন্তা করতে লাগলাম এই টাইপের মানুষদের পশু বললে সত্যিকার অর্থেই পশুদের ছোট করা হবে।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৪:৪৯

গোধুলী রঙ বলেছেন: গে দের অধিকারকে যে মানবাধিকার ঠাওরানো হচ্ছে আপনি তো তাতে ছাই ঢেলে দিলেন

২৮ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:১১

মাহমুদুল হাসান কায়রো বলেছেন: তবে আমার মনে হয় না সব গে মানুষ এই রকম.....

২| ২৮ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৮:৫৬

নির্বাসিত শব্দযোদ্ধা বলেছেন: হে হে :3

৩| ২৮ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১০:১৯

ভারসাম্য বলেছেন: সমকামী বা তা সমর্থনকারীদের সবচেয়ে বড় যুক্তিটিই ( প্রকৃতিতে সমকামের অস্তিত্ব থাকা ) আসলে সমকামের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় যুক্তি। কারন প্রকৃতিতে মানুষ বাদে অন্যকোন প্রজাতির মধ্যে সমকামের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। খুবই নগন্য পর্যায়ের যে দুয়েকটি উদাহরণ পাওয়া যায়, তাও হয়তো বিশেষ পরিস্থিতি সাপেক্ষে হয় এবং তা প্রকৃতির ধারা অর্থাৎ বংশগতি রক্ষা করতে সক্ষম হয় না।

এবার আসা যাক, জন্মগতভাবে কিছু মানুষের সমকামপ্রবণ থাকার ব্যাপারে। এটাও অতিরঞ্জিত। জন্মগতভাবে অনেক মানুষই বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধীত্ব নিয়ে যেমন জন্মায়, তেমনি জন্মপরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অসুখ বা দুর্ঘটনায়ও অনেক ধরনের প্রতিবন্ধীত্ব প্রাপ্ত হয়। জন্মগত অনেক প্রতিবন্ধীত্বও সুচিকিৎসায় যেমন দূরীভূত হতে পারে, তেমনি খুবই নগণ্য সংখ্যক কিছু মানুষের জন্মগত সমকাম প্রবণতাও অসুস্থতা হিসেবে ধরে চিকিৎসা ও পুনর্বাসন এর আওতায় পড়তে পারে কেবল। সেটাকে জন্মগত স্বাভাবিক অবস্থা বলা যেতে পারে না কখনো। তাছাড়া অধিকাংশ সমকামীই জন্মগত নয়, পরিবেশগত কারনে হয়ে ওঠে। এটা তাদের দোষ নয়, কিন্তু সমকামী না হওয়া সত্বেও যারা তাদের আন্দোলনকে সমর্থন দেয়, তারাই আসলে সমকামী হয়ে ওঠার পরিবেশগত নিয়ামকগুলো লালন করছে। সমকামীদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী মানবিক হয়ে ওঠা যেমন দরকার, তেমনি সমকামপ্রবণতা বিকাশে যারা কাজ করছে বা সমর্থন দিচ্ছে তাদেরও ঘঋণা এবং প্রতিরোধ করা উচিৎ যথাসম্ভব। কাজ এই লেখায় বলা সমকামী চরিত্রটির মত সমকামীদের সরাসরি ঘৃণা না করে, তাদের আন্দোলনকে এবং যারা তা সমর্থন করছে তাদের ঘৃণা ও প্রতিরোধ করা উচিৎ।

লেখায় ভাল লাগা অনেক অনেক।

২৮ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:১৬

মাহমুদুল হাসান কায়রো বলেছেন: সুন্দর বলেছেন।
তাদের কাউন্সেলিং করা দরকার.......

৪| ২৮ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১১:১৯

ইমরান আশফাক বলেছেন: খুবই অবাক করা মানে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তো! অবশ্য আরবের লোকেরা তো মনে হয় গনহারে গে। ব্যাটাকে আরেকটু টাইট দিতে পারলে মন্দ হতো না।

২৮ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:২৬

মাহমুদুল হাসান কায়রো বলেছেন: মিশরে পথে ঘাটে কিন্তু কখনো লক্ষ করি নাই....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.