নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিলনদ

মাহমুদুল হাসান কায়রো

যাযাবর, অান্তর্জাতিক যাযাবর।

মাহমুদুল হাসান কায়রো › বিস্তারিত পোস্টঃ

১১ সেপ্টেম্বর নিয়ে করুণ কাহিনী.

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১৬

আজ এক সাধারন আমেরিকান নাগরিকের কথা শেয়ার করি. নাম তার এন্ড্রু. বয়স ৫২ বাসস্থান নিউজার্সি. নিউইয়র্ক আর নিউজার্সি পাশাপাশি স্টেট. আমরা যেখানে দাড়িয়ে আছি সেটা নিউজার্সি মাঝে হাডসন রিভার উপার নিউইয়র্ক শহর. এন্ড্রু শহরের বাসিন্দা হলেও ততটা আধুনিক মনা নয়. সে প্লেনে চড়তে ভয় পায়. জীবনে একবার প্লেনে চরেছিল ওয়াশিংটন যাওয়ার জন্যে. কিন্তু ভয়ে ফেরার সময় বাসে ফিরেছে. আমেরিকার বাহিরে কখনো সে যায় নাই.

আমার পরিচয় দিয়ে বললাম আমি বাংলাদেশী, তুমি কি বাংলাদেশ চিনো? হেসে হেসে বললো হ্যা চিনি, তোমাদের দেশে অনেক বন্যা হয়. আমি বললাম বন্যা তেমন হয় না তবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, আর আমরা বৃষ্টি ভালবাসি. তাছাড়া বৃষ্টি না হলে আমাদের চাষাবাদেও ক্ষতি হয়.

আমরা যে স্থানটায় আছি এই স্থানটাকে বলে নিউজার্সি ওয়াটার ফ্রন্ট. এখান থেকে নিউইয়র্ক শহরটাকে খুব সুন্দর ভাবে দেখা যায়. (৩নং ছবিতে দেখতে পাবেন). মিস্টার এন্ড্রু আমাকে নিউইইয়র্ক শহরের বড় বড় বিল্ডিংগুলি একটা একটা দেখাচ্ছিলো, (১নং ছবি), ঐটা রেডিও সেন্টার, ঐটা ফ্রিডম টাওয়ার, ঐটা ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, ঐটা ইউএন টাওয়ার, ঐটা চার্স্লেয়ার টাওয়ার ইত্যাদি. আমি হটাতকরে জিজ্ঞাস করলাম টুইন টাওয়ার কোথায় ছিলো? এন্ড্রুর জবান ভারী হয়ে গেলো. ঐযে ওই ফ্রিডম টাওয়ারের ঐখানেই ছিলো আমাদের গর্বের টাওয়ার.
ভদ্রলোকের ভাষ্য অনুযায়ী: আমি এই শহরেই বড় হয়েছি. ছোটবেলা থেকে আমরা বিকেলে কিংবা অন্য যে কোন সময় ক্লান্তি দূর করতে এই ওয়াটারফ্রন্টে এসে দাড়াই. আমাদের সামনের এই চমত্কার ভিউ দেখে আমাদের প্রাণ ঠান্ডা হয়, ক্লান্তি ভুলে যাই. কিন্তু হটাত একদিন দুস্বপ্নের মত কে যেন এই শহরে আক্রমন করলো. খবর পেয়ে এলাকার সব মানুষ দৌড়িয়ে এই স্থানে চলে আসলো. একজন আরেকজনের গলা জড়ায়ে কান্না করতে থাকলো. আমার পরিবার বাচ্চারা সবাই আমাকে জড়িয়ে কান্না শুরু করলো. আমিও অনেক কাঁদছি. কথা গুলো বলতে বলতে এন্দ্রর চোখ জলে ভিজে গেলো. সে আমাকে বলে, জানো? ঐদিনের পরে চারদিন আমার ঘরে কোন রান্না বাড়া হয় নি, এক রকম না খেয়েই সপ্তাহ পার করছি আমরা.
আফসোস করে আমাকে বললো: তুমি খেয়াল করে দেখো আমরা বিদেশীদের কত ভালবাসি. এই নিউইয়র্ক শহরে অর্ধেকের বেশি বিদেশী, বিদেশীদের জন্য আমাদের রাস্তায় চলতে কষ্ট হয়. মেট্রোতে সিট পাই না, বাসে সিরিয়াল দিতে হয়, তারপরও আমরা কখনো মুখ কালা করে কোন বিদেশীদের দিকে তাকাই না. কে কোন দেশের, কোন ধর্মের সেটা আমরা চিন্তাও করতে যাই না. অথচ কে বা কারা আমাদের এত বড় ক্ষতি করলো. আমাদের এত বড় কষ্ট দিলো.
এন্ড্রু মায়াবী কন্ঠ নিয়ে আমাকে বললো: দেখো তুমরা বাংলাদেশী, কতদূর থেকে এখানে এসে ব্যবসা করো, তোমাদের অনেকে অনেক দামী দামী গাড়ি চালায়, অথচ অনেক আমেরিকানদের দুই বেলা খাবার যুগাইতেও কষ্ট হয়, কিন্তু এতেও আমাদের কোনদিন কোন আফসোস থাকে না, আপত্তি থাকে না. তোমাদের দেশের মানুষ দারুন ব্যবসা করে, বলতে গেলে শহরের গ্রোসারী মার্কেট প্রায় সব তোমাদের দখলে, তোমাদের জন্য আমাদের অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে, কিন্তু এতে আমরা কোনদিন কাউকে কোন অভিযোগ করি নাই. তোমাদের সাক্সেসে আমরা একটুও বেজার নই.
আমরা মনে করি এই নিউইয়র্ক শহর আমাদের তোমাদের সবার. এই শহর পৃথিবীর সবার, এই শহরে সবাই আসবে আনন্দ করবে. এইশহরকে আপন মনে করবে, ভালবাসবে. এই শহরের মানুষকে ভালবাসবে. এই শহরের মানুষেরা ঠিকই তার অতিথিদের ভালবাসে কিন্তু এর অতিথিরা যদি এই শহরকে এই শহরের মানুষকে ভাল না বাসে তাহলে সেটা খুবই দুঃখজনক.

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩১

চাঁদগাজী বলেছেন:


মাসীর বাড়ীর গল্প

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.