নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন ও বাস্তবতাকে পাশাপাশি নিয়ে চলা নিতান্তই সাধারন একজন মানুষ।

ফাহাদ জুয়েল

ফাহাদ জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

উইংস অব ফায়ারঃ এক স্বপ্নবাজ সংগ্রামী মানুষের গল্প

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৫


তার অল্প শিক্ষিত পিতা ছিলেন নৌকার মালিক।বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে বড় হয়ে কালেক্টর হবে, আর ছেলের স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার।কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই ছেলেটিই হয়েছিল মুসলিম হিসেবে ছিলেন তৃতীয় এবং বিজ্ঞানী হিসেবে ভারতের প্রথম প্রেসিডেন্ট।

তিনিই হলেন এ. পি. জে. আবদুল কালাম।পুরো নাম আবুল পাকির জয়নুলাবদিন আবদুল কালাম। জন্ম গ্রহণ করেন ১৯৩১ সালে, ভারতের তামিল নাড়ু রাজ্যের রামেশ্বরমে।

ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত, আর খুব সহজ সরল অনাড়ম্বর জীবনযাপনে অভ্যস্ত এই মহান মানুষটি পৃথিবীর বহু তরুণের জন্য অনুপ্রেরণার নাম হিসেবে বেঁচে আছেন,এবং বেঁচে থাকবেন।

অতি দরিদ্র ঘরের সন্তান হয়েও ভারতের মতো বৃহদাকার একটি রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়া, দেশটির পরমাণু কর্মসূচিতে অবদান রেখে ‘মিসাইলম্যান অব ইন্ডিয়া’ খেতাব অর্জন করা এই ব্যক্তিটি তাঁর জীবনের সব অর্জনের পেছনের সংগ্রামী জীবনের গল্প লিপিবদ্ধ করে গেছেন আগামী প্রজন্মের জন্য ‘তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ উইংস অব ফায়ার’-এ। সহলেখক ছিলেন এ পি জে আব্দুল কালামের বন্ধু বিজ্ঞানী অরুণ তিওয়ারি। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯৯ সালে, ইংরেজিতে। এরপর ভারতের প্রধান প্রধান ভাষাসহ বিশ্বের ১৩টি ভাষায় অনূদিত হয়। বিক্রি হয় ১২ লাখের বেশি কপি।

ছোটবেলায় খুব শখ ছিল এয়ার ফোর্স অফিসার হওয়ার। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত উতরাতে পারেননি মৌখিক পরীক্ষার চৌকাঠ। ব্যথিত হন খুব,আর তখনই দেখা পায় স্বামী শিবানন্দের। তার প্রতি উচ্চারিত শিবানন্দের প্রতিটি বাক্য ওই সময়ে গড়ে দিয়েছিল সেই বালকটির সফলতার ভিত।

‘তুমি যেই কারণে জন্মগ্রহণ করেছ সেই গন্তব্যস্থলকে গ্রহণ করো আর তা নিয়েই ভবিষ্যতের পথে যাত্রা করো। হতে পারে তুমি এ পথের পথিক নও, হয়তোবা তুমি এয়ার ফোর্স অফিসার হওয়ার জন্য জন্মাওনি। তোমার গন্তব্য হয়তোবা আরও মহান কোনো পথে, সেই পথ তুমি এখনো খুঁজে না পেতে পারো কিন্তু তা অবশ্যই পূর্বলিখিত। নিজের অস্তিত্বের সন্ধান করো আর অস্তিত্বের কারণ খুঁজে বের করো।’

ব্যর্থতার গ্লানি এক নিমেষেই মুছে গিয়েছিল। তার জীবনীতে এভাবেই ব্যক্ত করেন প্রথম জীবনের অনুপ্রেরণার কথা।

বইটিতে নিজের শৈশব থেকে বেড়ে ওঠার অনেক অজানা তথ্য প্রকাশ করেছেন তিনি, সেই সঙ্গে তার পারিবারিক ও পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলো। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত অসাম্প্রদায়িক মনোভাবসম্পন্ন মানুষ। নিজের বইয়ে এমনই একটি ঘটনার কথা বর্ণনা করেন তিনি।

‘আমি যখন রামেশ্বরম এলিমেন্টারি স্কুলে ক্লাস ফাইভে পড়ি তখনকার কথা। স্কুলে একজন নতুন শিক্ষক জয়েন করলেন। আমি সাধারণত সবসময় টুপি পরতাম যেটা দেখলে খুব সহজেই বোঝা যেত যে আমি একজন মুসলিম। আর ক্লাসে আমি সবসময় বসতাম আমার বন্ধু রামেন্দ্র শাস্ত্রীর সাথে যে কিনা পৈতে পরত। একজন হিন্দু ব্রাহ্মণের ছেলের সাথে একজন মুসলমানের এই একসাথে বসাটা কোনো এক অজ্ঞাত কারণে আমার নতুন শিক্ষক হজম করতে পারলেন না। তিনি সাথে সাথে আমাকে উঠিয়ে পেছনের বেঞ্চে পাঠিয়ে দিলেন। সেদিন যে নিজেকে কতটা ছোট মনে হচ্ছিল তা বর্ণনার বাইরে। আমরা দুজনই আমাদের বাসায় এই ঘটনা জানাই এবং লক্ষণ শাস্ত্রী, রামেন্দ্রর বাবা সেই শিক্ষককে ডেকে বললেন তিনি যাতে সামাজিক বর্ণবৈষম্যের এই কালো বীজ তার ছাত্রদের মাঝে ছড়িয়ে না দেন।’

জীবনীকার আবদুল কালাম ক্ষেপণাস্ত্র-বিষয়ক আলোচনায় অনেকখানি ঝুঁকে পড়েছেন। উঠে এসেছে তার তৈরি অগি্ন, পৃথ্বী, আকাশ, ত্রিশুল ও নাগ ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর নেপথ্য-কাহিনী।ফলে বইয়ের বেশকিছু অংশ হয়তো বিরক্তিও লাগতে পারে, বিশেষ করে আমার মত সাধারন পাঠকের! তবে ক্ষেপণাস্ত্র শক্তির দিক থেকে এগুলোই ভারতকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করে।

বইটি অনেক সরল ও কমিউনিকেটিভ স্টাইলে লিখা। ফলে পড়তে গিয়ে মনে হবে যেন লেখকের সাথেই কথা বলছেন।

তবে আত্মজীবনী মূলক হওয়ার পরও আবেগ-অনুভূতির অনেক বিষয়ই তিনি চেপে গেছেন। তিনি কেন চিরকুমার রয়ে গেলেন,তার উত্তরও তেমন ভাবে পাওয়া যায়নি বইটিতে।

দেশটির সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘ভারতরত্ন’ ছাড়াও ‘পদ্মভূষণ’ ও ‘পদ্মবিভূষণ’ খেতাবে ভূষিত হওয়া এই মানুষটি স্বপ্নবাজ, সংগ্রামী মানুষদের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন বহুদিন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১১

তাজবীর আহােমদ খান বলেছেন: বইটি কি বাংলায় অনুবাদিত?

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৭

ফাহাদ জুয়েল বলেছেন: হ্যা,বাংলায় অনুবাদিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.