![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্যারিসজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা
জঙ্গি হামলায় নিহত ১২
ফ্রান্সের প্যারিসে শার্লি হেবদো নামের একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার কার্যালয়ে গতকাল বুধবার কালাশনিকভ রাইফেল ও রকেট লঞ্চার নিয়ে হামলা চালিয়েছে তিন ব্যক্তি। এতে পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক ও তিন ব্যঙ্গচিত্রশিল্পী এবং পুলিশ সদস্যসহ ১২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। তাঁদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর।
ফ্রান্সে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে একে। হামলাকারীরা পাকড়াও না হওয়ায় আরও হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। খবর এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসির।
ব্যঙ্গধর্মী পত্রিকা শার্লি হেবদো ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে। ওই সময় তারা মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর একটি ব্যঙ্গচিত্র পুনর্মুদ্রণ করলে মুসলিম বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ব্যঙ্গচিত্রটি প্রথম ছাপা হয়েছিল ডেনমার্কের দৈনিক জিল্যান্ডস-পোস্টেন পত্রিকায়। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরেও শার্লি হেবদো মহানবী (সা.)-এর একটি অবমাননাকর ছবি ছাপে। এ ছাড়া পত্রিকাটির সর্বশেষ একটি টুইটে ইরাক ও সিরিয়ায় সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির ব্যঙ্গচিত্র প্রচার করা হয়।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘটনা তদন্তের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, তিন ব্যক্তি গতকালের হামলায় অংশ নেয়। কালো মুখোশে ঢাকা ছিল তাদের মুখ। স্থানীয় সময় গতকাল সকালে প্যারিসের বুলেভা রিশা-লোনোয়া সড়কের কাছে অবস্থিত পত্রিকা কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে তারা। তাদের মধ্যে একজনের হাতে ছিল কালাশনিকভ রাইফেল। একজন বহন করছিল রকেট লঞ্চার।
বোনোয়া ব্রিনে নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘অস্ত্র হাতে কালো মুখোশধারী কয়েকজন ব্যক্তি ভবনটিতে ঢুকে পড়ে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমরা একের পর এক গুলির শব্দ শুনি। এরপর ভবনটি থেকে তারা বের হয়ে যায়।’
নিহত কার্টুনিস্ট জর্জ ওলিনস্কি,নিহত কার্টুনিস্ট জঁ কবু,নিহত প্রধান সম্পাদক স্তিফান শার্বোনিয়েএকই ভবনে কর্মরত আরেক ব্যক্তি গিল বুলঁজে বলেন, ‘ভবনে সশস্ত্র ব্যক্তিদের প্রবেশের বিষয়ে প্রতিবেশী একজন ফোন করে আমাকে সতর্ক করেন। এরপর আমরা সব দরজা বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান নিই। কয়েক মিনিট পর বিভিন্ন দিক থেকে স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের একের পর এক গুলির শব্দ শোনা যায়। তখন জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে পাই, বুলেভা রিশা-লোনোয়া সড়কের ওপর পুলিশের সঙ্গে বন্দুকধারীদের গোলাগুলি চলছে। দেখে মনে হচ্ছিল, কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে আছি।’
পুলিশ জানায়, হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক স্তিফান শার্বোনিয়ে (৪৭)। তিনি শার্ব নামে পরিচিত ছিলেন। আল-কায়েদা ২০১৩ সালে যে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকা প্রকাশ করে, তাতে তাঁর নাম ছিল। অতীতে বেশ কয়েকবার মৃত্যুর হুমকি পাওয়া শার্বোনিয়ে পুলিশি নিরাপত্তায় ছিলেন। নিহত অন্য তিন ব্যঙ্গচিত্রশিল্পী জঁ কবু, তিনু এবং জর্জ ওলিনস্কি নামে পরিচিত ছিলেন। আর যে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন, তাঁরা ভবনটির নিচে গোলাগুলির সময় প্রাণ হারিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, হত্যাযজ্ঞ শেষে হামলাকারীরা একটি কালো রঙের গাড়ি ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা ‘আমরা মহানবী (সা.)-কে অবমাননা করার প্রতিশোধ নিয়েছি’ বলে চিৎকার করছিল। হামলাকারীদের ধরতে প্যারিসজুড়ে বড় ধরনের অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।
হামলার ঘটনার পর ঘটনাস্থলে যান ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। তিনি বলেন, ‘এটা যে সন্ত্রাসী হামলা, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’ এ ঘটনাকে ‘ব্যতিক্রমধর্মী বর্বর কাজ’ আখ্যায়িত করে এর বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেন তিনি।
ইরাক ও সিরিয়ায় সক্রিয় আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ফ্রান্সের যোগদানের ঘোষণা দেওয়ার পর জঙ্গিরা গত বছরের শেষের দিকে ফরাসি নাগরিকদের ওপর হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছিল। এরপর দেশটিতে ছোটখাটো বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত ডিসেম্বরে দিজন শহরে পথচারীদের ওপর গাড়ি চালিয়ে দেন এক ব্যক্তি। এতে ১৩ জন আহত হয়। একই মাসে মধ্যাঞ্চলীয় জু-লে-তুর এলাকায় এক ব্যক্তি ছুরি নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে তিন পুলিশ আহত হওয়ার পর পুলিশের গুলিতে ওই ব্যক্তি নিহত হয়। ঘটনাগুলোর পর থেকে দেশটিতে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি রয়েছে। এরই মধ্যে গতকালের হামলা ঘটল।
বিশ্বজুড়ে নিন্দা: হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, তুরস্ক, কাতার, আরব লিগ, মিসরের আল-আজহার কর্তৃপক্ষ, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন।
এই হামলাকে ভয়ানক, অযৌক্তিক ও ঠান্ডা মাথার খুন আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেন, গণতন্ত্রের ভিত্তিপ্রস্তর, গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর এ এক সরাসরি আঘাত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ হামলাকে ভয়ংকর উল্লেখ করে সন্ত্রাসীদের ধরতে প্রয়োজনীয় যেকোনো সহায়তার প্রস্তাব দেন।
হামলার নিন্দা করে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ফ্রান্সের জনগণের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।
২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৫:৩৭
রামন বলেছেন:
এই হামলাকে ধরে নেয়া হবে ইউরোপের টু ইন ওয়ান হামলা। এবার ইউরোপে বসবাসকারী "গো -বেচারা " মুসলিমদের খবর আছে !
৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:১১
আমি বন্য বলেছেন: ধর্মের উপর আঘাত কেউ সহজে নিতে পারে।। এভাবে উস্কানী দিয়ে এসব কর্মকান্ড কখনো কাম্য নয়।।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৫:০৫
নীল আতঙ্ক বলেছেন: