![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কয়েকটি লাইনে আমার সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না তাই সে চেষ্টাও করলাম না।
মেডিকেল কলেজ এর প্রথম দিন। Orientation class... রাতুল যথাসময়ে হাজির হল কলেজ এ। ঢুকেই সবার আগে আশপাশে ভালমত দেখে নিল সে। নাহ...পরিচিত কাউকেই খুঁজে পেল না সে। তার মন আবার খারাপ হয়ে গেল। এখানে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা রাতুলের একেবারেই ছিল না। তার বাবা একরকম জোর করেই মেডিকেল এ ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন। রাতুল চেয়েছিল ঢাকায় গিয়ে পড়াশুনা করতে। সে এমনিতে মাঝারি মানের ছাত্র। ভর্তি পরীক্ষায় কোথাও chance না পাওয়ায় বলতে গেলে নিরুপায় হয়েই এখানে বাবার ইচ্ছায় এখানে ভর্তি হল। তার সব বন্ধু ঢাকায় ভর্তি হয়ে গেছে। বন্ধুপ্রিয় রাতুল এসব চিন্তা করতে করতে লেকচার গ্যালারির এক কোনে গিয়ে বসল।
হটাত রাতুলের চোখ মেয়েদের সারিতে বসে থাকা একটা মেয়ের উপর আটকে গেল। মেয়েটি তার পাশের মেয়েটিকে কি যেন বলছিল আর হেসেই যাচ্ছিল। তার হাসির মাঝে কি যেন একটা ছিল। রাতুল চোখ ফেরাতে পারছিল না কিছুতেই। মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল সে। প্রথম প্রথম তার অনেক অস্বস্তি হচ্ছিল, নিজেকে অনেক বুঝাল কিন্তু পারল না চোখ কে আটকাতে। দেখতে দেখতে কখন যে অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেল রাতুল যেন বুঝতেই পারল নাহ! এরপর রাতুল অপেক্ষা করতে থাকে পরের দিনের জন্য, যখন সে আবার দেখতে পারবে সেই মেয়েটিকে। সময় যেন কাটতেই চায় না তার।
পরের দিন-আবার দেখা পায় ওই মেয়েটির। সৌভাগ্যক্রমে (!) মেয়েটি তারই গ্রুপে পড়ে। রাতুলও নিয়মিতভাবে আড়চোখে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মেয়েটির দিকে। এভাবেই চলতে থাকে সবকিছু। এরই মধ্যে মেয়েটির নাম জানল সে। তার নাম তন্বী। ক্লাস এ মনোযোগ নেই তার! সব মনোযোগ সেই মেয়েটির দিকে। এদিকে তার performance দিন দিন খারাপ হতে লাগল। Teacher রাও তাকে দুর্বল হিসেবে মার্ক করে ফেলল। ক্লাস এ রাতুল এর বন্ধু বলতে কেউ নেই। তার সবকিছু অসহ্য লাগতে শুরু করল। রাতুল বুঝতে পারল এই একটি মেয়ে তার জন্য সমস্যা তৈরি করছে। কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দিল সে। সারাদিন বাসায় পড়ে থাকে, ঘর থেকে বেরও হয় না। সারাক্ষণ চোখের সামনে ভাসতে থাকে তন্বীর চেহারা।
বেশ কয়েকদিন কলেজ যায়নি রাতুল। সময় কাটানোর জন্য laptop on করে facebook এ login করল। হটাত রাতুল দেখল তার inbox এ একটি message এসে জমা পড়ে আছে। কোন এক অপরিচিত id 'Rodela Dupur' থেকে এসেছে। message টি খুলল সে। তাতে শুধু লেখা 'কেমন আছো রাতুল??? তুমি কি অসুস্থ??? ক্লাস করছ না কেন?? ' message টা পড়ার পর রাতুল অনেকক্ষণ চিন্তা করল, college এ রাতুল এর এমন কোন close মেয়েবন্ধু নেই যে তার কথা ভেবে এতটা উদ্বিগ্ন হবে। সে 'Rodela Dupur' এর profile open করল। নাহ….profile picture ও দেওয়া নাই। ব্যাপারটা নিয়ে রাতুলের অনেক কৌতূহল হল! সে সাথে সাথে reply দিয়ে দিল। পরিচয় জানতে চাইল মেয়েটির। একটুপর রাতুল লক্ষ্য করল, reply দিয়েছে মেয়েটি- 'আমি তোমার সাথে একই কলেজ এ পড়ি। Please এর বেশি জানতে চেয় না।' রাতুলের পুর ব্যাপার টা interesting লাগতে শুরু করল। সে আবার reply দিল ' আচ্ছা, ঠিক আছে! তোমাকে কখনই কিছু জিজ্ঞেস করব নাহ! বন্ধু হবে?? ' মেয়েটিও সানন্দে রাজি হয়ে গেল। এভাবেই চলতে লাগল তাদের digital friendship. ধীরে ধীরে রাতুল তন্বীর কথা ভুলে গেল। কলেজ এও নিয়মিত যেতে লাগল। কলেজ আর facebook messaging..এভাবেই চলছিল রাতুলের জীবন।
ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হল। এর জন্য সেই মেয়েটি ১ মাস facebook এ এল না। রাতুল এই সময়টাতে তাকে খুব মিস করল। মেয়েটি সবসময় রাতুল এর কাছে অনুপ্রেরনার অপর নাম। তার তদারকিতেই রাতুল নিয়মিত পড়াশুনা করতে থাকে। অথচ রাতুল মেয়েটির নাম পর্যন্ত জানে নাহ। মনে মনে রাতুল মেয়েটিকে খুজতেই থাকে-ক্লাস, লাইব্রেরি, canteen, campus সব জায়গায়। এর মধ্যে পরীক্ষা শেষ হয়। আবারও শুরু হয় রাতুল আর সেই অজানা মেয়েটির অবিরাম chatting, messaging. পরীক্ষার result দিয়ে দেয় এরই মধ্যে। Ratul অনেক ভালো করে। একদিন রাতুল লাইব্রেরিতে বসে পড়ছিল। হঠাৎ তন্বী এসে রাতুল এর পাশে বসে পড়ল। Physiology র একটা topic বুঝিয়ে চাইল রাতুলের কাছে। রাতুল প্রথমে ইতস্তত করলেও পরে ঠিকই বুঝিয়ে দিল। ঐদিন রাতুল আর তন্বী অনেক গল্প করল। পড়া শেষে coffee ও খেল দুজন।
বাসায় ফিরেই facebook check করে দেখল inbox এ একটি message.
'আমার সাথে আর যোগাযোগ করার চেষ্টাও করবে না, তুমি থাকো তোমার তন্বীকে নিয়ে'
মেসেজ টা পড়ে রাতুল অবাক হল। সে প্রচণ্ড ভয় পেল,যদি সত্যি সত্যি মেয়েটি যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়!!!??এরপর অনেক message দিল সে, কিন্তু reply পেল না। খুব রাগ উঠলো রাতুলের। কলেজ এ গিয়ে তার চোখ খুঁজে ফিরত সেই অজানা মেয়েটিকে। পড়াশুনায় মন বসেনা তার। রাতুল বুঝতে পারেজ, সে ঐ অপরিচিতার প্রেমে পড়ে গিয়েছে। রাতুল বুঝতে পারে না যে সে কি করবে!!
একদিন college শেষে বাসায় ফিরে laptop টা সামনে নিয়ে বসল সে। কিছুক্ষন কি যেন একটা ভেবে নিল। এরপর একটা message লিখে পাঠাল Rodela Dupur id টিতে-
"Within you I lose myself. Without you I find myself wanting to become lost again...I cant live without u maybe um in love with u”
Message টা লিখেই laptop টা বন্ধ করে ফেলল সে। তার খুব tension হচ্ছে। Rejected হওয়ার chance অনেক বেশি।
পরেরদিন কলেজ গিয়ে আর ক্লাস করল না। সোজা লাইব্রেরিতে গিয়ে বসল। এমন সময় রাতুল আবার তন্বীকে দেখল তার দিকে এগিয়ে আসতে। রাতুলের মনে পড়ল এই তন্বীর জন্যই তার ভালবাসা আজ তার সাথে নেই। তন্বী তার সামনে এসে হাসিহাসি মুখে দাঁড়ালো। রাতুল তাকে দেখেও না দেখার ভান করে উঠে দাঁড়ালো। পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিল এমন সময় তন্বী ডাকল রাতুলকে।
'কি হল? কোথায় যাও?? '
'দেখ তন্বী, তুমি already আমার অনেক ক্ষতি করে ফেলছ! Now please leave me alone'
'আমি কি আবার করলাম?? '
রাতুল উত্তর না দিয়েই চলে যাচ্ছিল, এমন সময় তন্বী রাতুলএর হাতটা খপ করে ধরে ফেলল, 'তোমার message এর উত্তর নিবে না?? '
কথাটা শুনে রাতুল অবাক হয়ে গেল, 'তুমিই তাহলে 'Rodela Dupur'?? '
তন্বী চোখ নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল, 'কি মনে হয়?? '
রাতুলের যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না।
তন্বী হাসতে হাসতে আবার বলল 'এত নাটক না করলে ত জীবনেও propose করতে না …আর এদিকে আমি সেই কবে থেকে তোমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি' কথাটা বলেই তন্বী আবার হাসতে শুরু করে।
রাতুল বলতে গিয়েও থেমে গেল! তন্বী জানেনা যে রাতুল তাকে কলেজ এর প্রথম দিন থেকেই ভালবাসে। এখন আর বলতে ইচ্ছে করছে না তার। এখন সে মুগ্ধ চোখে তন্বীর হাসি দেখছে। মানুষ এত সুন্দর করে হাসে কিভাবে??
©somewhere in net ltd.