নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জাগো মানুষ আজ জাগো, ভেবনা তুমি বাঙালী কি বাংলাদেশী....কেটে যাবে রোদ ভাঙ্গবে আঁধার, আমি দেখব মাগো তোমার মুখের হাসি

বিদেশী বাঙালী

সাতটি মহাদেশ, আরো পাঁচটি মহাসাগরের ভিড়ে, পদ্মা আর মেঘনা, সুরমা-যমুনার তীরে, বঙ্গোপসাগরের ফেনিল প্রান্তরে, আমার জন্মভূমি.........

বিদেশী বাঙালী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানব মস্তিস্কে ছিট, সিট আর shit-এর কথকতা

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৫

এই শোনো, তোমার মাথায় না shit আছে। একটু ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম। ইংলিশ উচ্চারণে বলাতেই কিনা জানি না, ঠিক বুঝতে পারলাম না উনি আমাকে শিট বললেন না ছিট বুঝালেন!



শিট বলার তো কোন কারণ-ই নেই। ডাক্তারী অভিধানগুলোর কোন বইগুলো'র কোন পেজে মানুষের মাথায় পায়খানা থাকার কথা বলা হয়েছে জিজ্ঞাসা করতে গিয়েও করতে পারলাম না।



ভদ্রলোক মুরুব্বী মানুষ। তার উপর সম্পর্কে আবার আমার অতি নিকটাত্মীয়। ছোটবেলা থেকে খুব কাছের লোক বলেই জানি। বেজায় নামকরা ডাক্তার। একদম রয়াল মেডিক্যাল কলেজের মেন্টাল হেল্থ স্পেশিয়ালিস্ট। হতে পারে উনাদের কোন এক বইতে মানুষের মাথায় ঐ '...' জিনিসটা থাকার কথা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমি ডাক্তারীবিদ্যা'র কি জানি?



কিন্তু, তারপরও মন মানে না। মাথায় ঐ বিশেষ পদার্থটা নিয়ে চলা-ফেরা করছি মনে হতেই গা গুলিয়ে উঠলো। মুখ অমাবস্যার রাতের চেয়েও বেশি কালো হয়ে গেলো। ধ্যাৎ! জীবনটা একদম কেরোসিন হবার জোগাড়।



আবার মনে হলো, উনি তো আমার কাজিনের ফুফুর চাচাতো বোনের জামাই-এর জ্যেটালি'র চাচা। এতো কাছের মানুষ কিভাবে এই কথা বলতে পারেন আমাকে!



তাহলে হয়তো, সিট বলেছেন। চিন্তায় পড়ে গেলাম এইবার। মাথায় হাত দিয়ে বুঝার চেষ্টা করলাম মাথায় কেউ ঘুমের মধ্যে সিট বসিয়ে দিলো না তো!



হবে হয়তো। লন্ডন শহরে কত কিই-না ঘটে! রাত-দুপুরে মানুষ হাপিশ হয়ে যায়, গ্যাস ছড়িয়ে মানুষ মেরে ফেলে যেখানে, ঘুমের মাঝে সিট বসিয়ে দেওয়া তো দুই আঙুলের ব্যাপার।



তাহলে তো এ মহা মুশকিলের ব্যাপার! উনারা আমার মাথায় সওয়ার কথা চিন্তা করলে তো সত্যিই চিন্তার কথা।



আচ্ছা, সিট যদি থেকেই থাকে, তাহলে কয় সিট- দুই-চার না ছয়?



সিট কম থাকলে তো আবার সমস্যা। আত্মীয়দের মানা করবো কিভাবে!



এবারে গাণিতিক ভাবে সমস্যাটা সমাধানের দিকে এগুতে চেষ্টা করলাম। কি ধরণের সিটের কথা উনারা বলছেন- রিক্সা, গাড়ি, প্লেইন নাকি জাহাজ? লন্ডন শহরের কিনারায় পড়া ছিমছাম একটি এলাকার রাজপ্রাসাদের মতো ঐ বাড়ি'র কিচেনে বসে ভাবতে ভাবতেই মাথাটা ঘুরপাক দিয়ে উঠলো। পুরো বাড়িতে পায়চারী দিয়ে ঘুরে আসার কথাও চিন্তা করে ফেললাম একবার।



জিনিসটা নিয়ে ভাবতে হবে। বিস্তর ভাবনা-চিন্তার প্রয়োজন আছে। রিক্সায় আছে ২-টি সিট। যদিও প্রায়শ্ঃ-ই মেয়ে-ছেলে, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা নির্বিশেষে একে চারটি বানিয়ে নিজেদের চাপিয়ে-চুপিয়ে সওয়ার হয়ে পড়েন বেচারা রিক্সাওয়ালার কাঁধে। বেজায় চোখ-রাঙানী, ধমক কিংবা রমনীয় কোমল গলার আদুরী অনুরোধে রিক্সা মালিকদের পেটে লাথি দিয়ে হলেও বেশি টাকা পাওয়ার ঢেঁকি গিলে ফেলেন রিক্সাওয়ালা ভাইজানরা।



মাঝে শুনেছিলাম বাংলাদেশে কেয়ারটকার সরকারের সময় আর্মি-রা রাস্তায় এমন কয়েকজন রিক্সা-সওয়ারীদের পেয়ে কানে-ধরে উঠ-বস করিয়েছিলেন। সেকথা মনে করে ফিক করে হেসে ফেললাম। সিট যদি থেকেই থাকে, তাহলে ঐ কথা মনে করিয়ে দিলেই উনারা আর সহ্যের সীমানার বাইরে সওয়ার হতে দুইবার ভাববেন।



সেই কথা ভেবেই মাথায় হাত চালালাম সিটের খোঁজে। আতি-পাতি করে খুঁজেও সিটের নাম-গন্ধ পেলাম না। বোকার মত ফেলেফেল করে উনাদের দিকে চেয়ে থাকলাম। তাহলে কি বললেন আমাকে?!



তবে কি ছিট-ই বুঝালেন। এটা হলে কিন্তু বেশ সমস্যার কথা হবে। কারণ এতে বিস্তর টাকা-পয়সার ঝামেলা। এমনিতেই বাসাতে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা, তার উপর আবার মাথায় সমস্যার ঔষুধ কিনতে গেলে তো গরীবের মাথায় লাথি দেওয়ার বন্দোবস্তই বলা চলে। এই কথা তো আমার আত্মীয়দের অজানা থাকার কথা থাকা না!



নেহাত নিরুপায় হয়ে উনাকেই তাই প্রশ্নটা করে ফেললাম- ''জ্বী, ঠিক বুঝি নাই। একটু ব্যাখ্যা করে বলবেন কি?''



বাবা ছিলেন সরকারী চাকুরে। সৎ বলে সারা জীবনই খুব কষ্টে জীবন কাটাতে হয়েছে। মা অনেক বড় ঘর থেকে এলেও বাবা'র জীবনটাই মেনে চলেছিলেন সব-সময়ই। আমিও কয়েকদিন আগে বিদেশ ফেরত। ঐখানে বিয়ে করলেও ব্রিটিশ সরকারের নতুন আইনের কারণে বিদেশ থেকে ফেরত আসতে হয়েছে বৌ-বাচ্চা ফেলে রেখে।



দেশে এসেও শুনি আমার উনারা পিছু ছাড়েননি। ভাই-এর প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী উদরপিন্ডি বুধোর কাধে চড়ানোর মতো উনাদের কার সাইকেল বুঝি আমাকে দিয়ে শেষ করানোর জন্যেই এই আয়োজন।



কিন্তু, সাইকেলের আমি কি বুঝি!!! কোনটা শুক্লপক্ষ আর কোন কৃষ্ণ....সেটা নিয়েই তালগোল পাকিয়ে যায়, আর আরেকজনের সাইকেল চালানো!



কোন তিথিতে কি করতে হবে। কোন দিনে উল্টো করে মুরগী খেতে হবে আর কোন দিন সামনে দিয়ে....তা-ই বুঝি না, কোন সময় ভেজিটেবল আর কোনদিন শুটকি সাবার করার ব্যবস্থা করতে হবে সেইটা বোঝা তো দূরে থাক। এরজন্যে বৌ-এর কাছে কি ধরাটাই না খেয়েছি কয়েকদিন!



উফ! মনে হলে এখনও গায়ে শিহরণ জেগে উঠে। কি যে করি!



আর সাইকেল চালানোর খরচটা কে দিবে শুনি? লন্ডন ফেরত এই আমি'র পকেট চলবে কি করে এইটা কি কেউ ভেবে দেখেছে! আর বাবা-মাকে যারা সারা জীবন কষ্টের মাঝে ফেলে নিজেদের সাইকেলে বেঁধে রেখে যারা সারা-জীবন আমোদ-ফুর্তি করে বেরিয়েছেন, সেই উনারাই আবার আমার বাবা-মা'র বুড়ো বয়সে বোঝা চাপানো'র ব্যবস্থা করে নতুন এক গেইম-এর সন্ধান করছেন!



হায় আল্লাহ! তুমি কি আছো?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩০

এহসান সাবির বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২৪

বিদেশী বাঙালী বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.