![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন/ জোছনা রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন। [email protected]
১৯৯৩। এপ্রিল মাস। জাফলং এসেছি। রৌদ্রকরোজ্জল একটি দিন। আর একটা পাহাড়ি নদী। নদীতে ভাসমান নৌকার ভিড়। নৌকায় ও নদীতে অজস্র পাথর-শ্রমিক গিজগিজ করছে। ওপারে ইন্ডিয়া। তার নীল-সবুজ পাহাড়। পাহাড়ে ঘরবাড়ি। রুপালি রঙের ঝকঝকে করগেটের টিনের ছাদ। ডিস অ্যান্টেনা। দূরে একটি সেতু লক্ষ করা যায়।
প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে আমরা বেশ মুগ্ধ ।
রুকসার সিগারেট টানছিল। ওকে গম্ভীর দেখায়। আমার ভিতরেও কাঁপা কাঁপা তিরতিরে অনুভূতি। শহর ছাড়িয়ে আসার অনুভূতি। গায়ে তাত লাগছে। বেশ লাগছে। সিগারেট টানছিলাম আমিও। ঘামছিলাম। মৃদু উদ্বেগ বোধ করছি। চোখ, নৌকার ওপর, পাথরশ্রমিকদের কর্মকান্ডের ওপর। জীবনের দুটি রুপ দেখছি যেন। একদিকে অবারিত উজ্জ্বল রৌদ্রময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অন্যদিকে পাথর তুলে প্রকৃতিকে বিপর্যস্ত করার কদর্য রুপ-যে কারণে পাথর তোলার দৃশ্যটি যেন একেবারেই মানায় না। ভাবলাম: উপায় কি- শ্রমিকেরা খাবেই কি? জীবিকার টানে বাংলাদেশের নানাপ্রান্ত থেকে এসেছে। আমি অত্যন্ত বিষন্ন বোধ করতে থাকি। তখনও আমি জানতাম না যে গানের মাধ্যমে অনুভূতিটি অনেকের কাছে ছড়িয়ে যাবে। বিষন্নতার অনুভূতি নিয়ে কবিতা লিখেছিলাম: নিভৃতে বুনি দুঃখের গান। আর সে কবিতা সুর করেছিল জন। অবশ্য অনেক বছর পর। ২০০০ সালে।
রুকসার নৌকা ভাড়া করছে ; পানিতে নামবে, সে প্রস্তুতি আমরা নিয়েই এসেছি। ডাউকির জল অত্যন্ত স্বচ্ছ ও অগভীর। পানির নিচে অজস্র পাথর দেখা যায়। আমি নৌকার পাটাতনে দাঁড়িয়ে শার্ট খুলছি, পানিতে নামব, তার আগে লুঙ্গি পরব। গায়ে তাত লাগছে। বেশ লাগছে। ঘাম হচ্ছে। ওপরে তাকিয়ে দেখি-ওজোন লেয়ারের ওপাশে ... আকাশে পূর্বাহ্ণের সূর্য। আমার মনে হচ্ছিল ... (সূর্যটা) তাকিয়ে আছে মৃত্যুর এপারে ...এসব ভেবেই পরে লিখেছিলাম-
তাকিয়ে আছে মৃত্যুর এপারে (ওজোন লেয়ার যেন জীবন-মৃত্যুর সীমারেখা)
জীবনের সুতীব্র উল্লাস দেখি আমি
সাদা রৌদ্রে ভাসছে সবি।
এপ্রিল মাস। তারপরও নদীর পানি কি শীতল! এতটা শীতলতা আশা করিনি। মুহুর্তেই উবে গেল শরীর ও মনের দাহ। পাথের নিচে পিছল পাথল। শ্যাওলার গন্ধ। ডুব দিলাম। তবে জলে নেমেও উদ্বেগ কাটল না। বারবার মনে হচ্ছিল আমার: নদী থেকে অবিরাম পাথর তোলা তো পরিবেশের ক্ষয়-নদীর ধর্ষন। সভ্যতার অন্তিম পরিণতিটি যেন দেখতে পাচ্ছি।
নদীর ধর্ষন লক্ষ করে মাথার ভিতরে অনেক কথা গুনগুন করছিল। পরে সিলেট ফিরে সে রাতেই লিখে রাখলাম-
ছায়ারা সরে যাবে, জানি সূর্য উঠবে।
মৃতসব গাছের নিচে আগুন জ্বলবে।
বুকের ভিতরে নদী; কুয়াশা কুয়াশা ...
পাথরের ওপর বসে দেখছি এসবি।
তাকিয়ে আছে মৃত্যুর এপারে
জীবনের সুতীব্র উল্লাস দেখি আমি
সাদা রৌদ্রে ভাসছে সবি।
পায়ে পায়ে ফিরে আসি আবার
নিভৃতে বুনি দুঃখের গান।
অনন্ত আগুনে পোড়ে অনিদ্র চোখ।
আমার বিবেক পোড়ে সূর্যের নিচে।
অনেক অনেক বছর পর জন আমার কাছে গানের কথা চাইল। ‘আমার পৃথিবী’ নামে ওই কবিতাই দিলাম। বললাম পরিবেশ সংক্রান্ত গান। চলবে তো?
জন মাথা নাড়ল। গিটারে ডি মেজর কর্ড ধরল। তারপর গুনগুন করে গাইতে লাগল-ছায়ারা ... আমি ...যাকে বলে মুগ্ধ। যে মুগ্ধতার ঘোর এত বছরেও কাটেনি।
জন
জন বলল: কম্পোজিশনটা কিছুটা রাগা টাইপ।
আমি টের পেলাম- ও যাকে রাগা টাইপ বলল আমি পেলাম রাগ ইমন এর ছোঁওয়া।
তখন তাহাসান ব্যান্ডের ভোকাল। জন বলল: গানটা ডুয়েট হবে।
ছায়ারা সরে যাবে, (তাহাসান) জানি সূর্য উঠবে (জন)।
মৃতসব গাছের নিচে (তাহাসান )আগুন জ্বলবে (জন)।
বুকের ভিতরে নদী; (তাহাসান) কুয়াশা কুয়াশা (জন)...
পাথরের ওপর বসে (তাহাসান) দেখছি এসবি (জন)।
গানটির কম্পোজিশনে জাহানের সেতারের কথা না বললেই না। জাহান তখন সেতার শিখছিল। ‘আমার পৃথিবীতে’ অসাধারন বাজাল।
জাহান; ডান দিকে
আমার পৃথিবীই ওদের প্রথম টিভি পারফর্মেন্স।
২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৩০
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ কবি।
২| ২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:২৯
মাঠশালা বলেছেন: আহা।
২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৩০
ইমন জুবায়ের বলেছেন: আহা?
৩| ২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৩০
তেলাপোকা বলেছেন:
গানটা আমার প্রিয় গান ছিল। এ গানের জন্যই এলবামটা বাজিমাত করেছে। তবে, প্রথম এলবামের সবগানই কিন্তু ভালো ছিল।
অনেক কিছু জানতাম না।
ধন্যবাদ আপনাকে। স্বরলিপির জন্য।
২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৩২
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ... প্রথম এলবামের সবগানই কিন্তু ভালো ছিল।
কথাটা অনেকেই বলে।
অনেক ধন্যবাদ।
৪| ২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৫
অন্ধ দাঁড়কাক বলেছেন: ব্ল্যাকের প্রথম অ্যালবামটা অসাধারণ ছিলো, এর পরে আরে ভালো লাগেনি।
আপনি কি এখনো গান লিখেন?
২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:০৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: হ্যাঁ। অবশ্য শুধু ব্ল্যাক এর জন্য।
৫| ২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৩৭
ধূসর মানচিত্র বলেছেন: ব্ল্যাকের এই গানটি আমার বেশ ভাল লাগে। আপনার লেখা পড়ে আবার শুনতে বসলাম এবং বরাবরের মত আপনাকে +++
২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪২
ইমন জুবায়ের বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৬| ২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ৮:১৪
শ্রাবনসন্ধ্যা বলেছেন: আপনি কত ভাগ্যবান কিছু মনে হলেই আপনি সেটা কবিতা বানিয়ে ফেলেন। অনেকটা ছবি তুলে রাখার মত...........অনেক বছর পর পুরোনো ছবি দেখে আমরা যেমন স্মৃতিচারণ করি আপনি তেমনি কবিতা নিয়ে করেন।
২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ৯:৩৩
ইমন জুবায়ের বলেছেন: খুব ... খুউব সুন্দর করে বললেন তো!
৭| ২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৩১
দীপান্বিতা বলেছেন: '১৯৯৩। এপ্রিল মাস। জাফলং এসেছি। রৌদ্রকরোজ্জল একটি দিন। আর একটা পাহাড়ি নদী। নদীতে ভাসমান নৌকার ভিড় ..'...............ভাল লাগলো......অনেকটা ডাইরী লেখার মত......
বরাবরের মত আপনার লেখা কবিতা ভাল লাগলো......গানও
২৪ শে নভেম্বর, ২০০৯ ভোর ৬:৪১
ইমন জুবায়ের বলেছেন: কবিতা আর গান ভালো লাগায় ধন্যবাদ।
৮| ২৪ শে নভেম্বর, ২০০৯ ভোর ৪:১৫
আকাশ_পাগলা বলেছেন: আমার পৃথিবী শোনার পর থেকেই মূলত আমি ব্ল্যাক নিয়মিত শুনতাম।
আগে একবার মনযোগ কেড়েছিল ব্লুজ এন্ড রোদ দিয়ে। এরপরেও ঠিক নিয়মিত শোনা হত না। কিন্তু আমার খেয়াল আছে, আমার পৃথিবো শোনার পরে আমি বুঝলাম যে, আরও একটা অওসাম ম্যান্ডের সন্ধান পাওয়া গেল।
এই গানটা ব্ল্যাকের গান গুলোর মাঝে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয়। তাহসান আর জনের ডুয়েট কম্পোজিশন অনেক অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে।
আমি দেখলাম গান টা একটু লো ভল্যুমে শুনলে একরকম আর হাই ভল্যুমে শুনলে একেবারে অন্য একটা আমেজ আসে। হাই তে শুনলে মনে হয় যেন একা একা নিজের সাথে নিজের কথা বলার মত আর লো তে শুনতে মনে হয় চারদিক থেকে কেউ আস্তে আস্তে গুণগুণ করে আমাক কিছু বলছে।
সব মিলিয়ে এই গানটা আসলেই দারুণ।
২৪ শে নভেম্বর, ২০০৯ ভোর ৬:৪০
ইমন জুবায়ের বলেছেন: এই গানটাই ওদের পরিচিতি ও স্থায়ীত্ব দিয়েছে।
৯| ২৪ শে নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:০১
অন্ধ আগন্তুক বলেছেন: ব্ল্যাক এর গান ভালোলাগা শুরু এই গানটা থেকেই। অসাধারণ কথা আর কম্পোজিশন এর এক গান।
ধন্যবাদ আপনার স্মৃতিটা শেয়ার করার জন্য।
২৫ শে নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:২৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১০| ২৪ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৪৫
নুভান বলেছেন: চমৎকার
২৫ শে নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:২৩
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৫৮
'লেনিন' বলেছেন: অসাধারণ
২৫ শে নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:২২
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:১০
লীনা দিলরূবা বলেছেন: 'কবিতা থেকে গান' ভাল লাগল।
২৫ শে নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:২২
ইমন জুবায়ের বলেছেন: কবিতা আর গান ভালো লাগায় ধন্যবাদ।
১৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:০৯
অপ্সরা বলেছেন: অনেক অনেক ভালো কবিতাগান!!!
২৬ শে নভেম্বর, ২০০৯ ভোর ৬:৪৪
ইমন জুবায়ের বলেছেন: তাই?
১৪| ২৫ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৫৮
আন্দালীব বলেছেন: গানটা তো দারুণ।
তবে লিরিক যে আপনার লেখা জানা ছিলো না।
২৬ শে নভেম্বর, ২০০৯ ভোর ৬:৪৩
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ব্ল্যাক এর গানগুলি লিখি আমিই।
ধন্যবাদ।
১৫| ২৬ শে নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ৭:০৫
জটিল বলেছেন: ইমন ভাই
গানগুলোর পেছনের গল্পগুলো আসলেও অসাধারণ ।
২৬ শে নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ৭:৪২
ইমন জুবায়ের বলেছেন: অনেক দিন পর। কি খবর?
১৬| ২৯ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৫৩
মে ঘ দূ ত বলেছেন: পছন্দের একটা গান।
কথাগুলো এই প্রথম পড়লাম।
৩০ শে নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ৭:০৩
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৭| ২৬ শে আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:৩৩
মাহী ফ্লোরা বলেছেন: গান শুনতেসি.....
২৬ শে আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৪:২৬
ইমন জুবায়ের বলেছেন:
১৮| ২৬ শে আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:৪৩
মাহী ফ্লোরা বলেছেন: খালি আটকায় যায়।তাহসান রে লইয়া পুরোনো স্মৃতি,আহা মনে পড়ে গেল গো..
২৬ শে আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৪:২৮
ইমন জুবায়ের বলেছেন:
১৯| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৩:১৩
শ্রাবনসন্ধ্যা বলেছেন: অনেকদিন পর গানটা শুনলাম, কাজ করতে করতে..........শুরু হল সেতারের সুর, অন্যরকম একটা অনুভূতি, সেতারের সুরটা যেন মগজে ঢুকে গেল...........
তাই কৃতজ্ঞতাটুকু জানাতে এলাম, ইমন ভাই।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:২৯
মুক্তি মণ্ডল বলেছেন: গানের বাণী চমৎকার।