নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাটি বাংলা

চোখে যা দেখি, কানে যা শুনি, তা নিয়ে কথা বলবোই !

ভািটবাংলা

bhatibangla ya karmarota.

ভািটবাংলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোগ প্রতিরোধে আমের ভূমিকা

২৪ শে জুন, ২০১২ রাত ১২:২৭

আম বাংলাদেশের মৌসুমী ফল। সারা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে, মাঠে, ঘাটে বাড়িতে আম গাছ দাঁড়িয়ে ছায়া ও ফল প্রকৃতির মানুষকে উজাড় করে দিয়ে বাঁচিয়ে রাখছে। আম ফল পৃথিবীর অন্যতম সুস্বাদু ফল। সব ফলের সেরা ফল আম। সাধারণত চৈত্র ও বৈশাখ মাসে আম গাছে মুকুল আসে এবং জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে আম পাকতে শুরু করে। পাকা আম স্বাদে, পুষ্টি ও গন্ধে অতুলনীয়। তাই আম কে ফলের রাজা বলা হয়। আমাদের দেশে সব জেলাতেই আম জন্মালে ও দেশের উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও রংপুর জেলাতে আম ভালো জন্মে। এ সব জেলার আমগুলো বেশ বড় বড় হয় এবং স্বাদে ভরপুর। বিভিন্ন জাতের আম রয়েছে যেমন ল্যাংড়া, ফজলি, হিমসাগর, সিন্ধু, লক্ষণ ভোগ, বোম্বাই, সূর্যপুরী ইত্যাদি। আমাদের নিকট বেশী পরিচিত ও জনপ্রিয় হলো ল্যাংড়া, ফজলি ও গোলাপ ভোগ। ল্যাংড়া আম আম্লমধুর, স্বাদ বিশিষ্ট, রসাল, আঁশহীন ও আকর্ষণীয় গন্ধযুক্ত। খোসা পাতলা, বীজ ছোট প্রতি আমের ওজন ২৫০-৩০০ গ্রাম। জৈষ্ঠ্য ও আষাঢ় মাসে পাকে। ফজলি সবচেয়ে বড় আকারের আম আকারে লম্বা ও বেশ বড়। প্রতিটি আমের ওজন ৬০০-১১০০ গ্রাম হয়। ফল খুবই সুস্বাদু, রসাল ও আঁশহীন। এ আম পাকলেও সবুজ থাকে। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে পাকে গোপাল ভোগ এটি ও সুমিষ্ট, আকর্ষণীয় গন্ধযুক্ত, আঁশহীন ও রসাল। পাকা আম সবুজ থাকে। প্রতি আমের ওজন ২৫০ গ্রাম। জৈষ্ঠ্য মাসের মাঝামাঝি থেকে আষাঢ় মাসের মাঝামাঝি সময় পাকে।

কাঁচা পাকা সব অবস্থায় আম খাওয়া যায়। কাঁচা আম হতে পিকল, চাটনী, আমসত্ত্ব, আমচুর, ছটি ইত্যাদি মুখরোচক খাদ্য-সামগ্রী তৈরী করা যায়। পাকা আম হতে স্কোয়াশ, নেকটার, জ্যাম, জালি তৈরী করা যায়। আমের ইংরেজী নাম ম্যাংগো (Mango) । এটি অ্যানাকা-র্ডিসেসি Anacardiaceae পরিবারের অন্তর্গত উদ্ভিদ। বৈজ্ঞানিক নাম বা উদ্ভিদ তাত্ত্বিক নাম ম্যাংগিফেরা ইন্ডিকা (Mangifera indica). খাদ্য উপাদানের ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। তাছাড়া অন্যান্য উপাদানও বিদ্যমান। পুষ্টিবিদের মতে প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা আমে ক্যারো টিন ৯০ গ্রাম, আঁশ ২ গ্রাম, প্রোটিন ২০.১ গ্রাম, খাদ্য শক্তি ৪৪ কিলোক্যালরি, ক্যালসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম, আয়রন ৫.১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-১ ১০.০৪ মিলি গ্রাম, বি-২ ০.০১ মিলিগ্রাম, সি ৩ মিলিগ্রাম, খনিজ লবণ ০.৪ গ্রাম। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ভিটামিন এ ৮৩০০ মাইক্রোগ্রাম, খাদ্য শক্তি ৯০ কিলোক্যালরি, আঁশ ০.০৭ গ্রাম প্রোটিন ১.০ গ্রাম, চর্বি ০.৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ২০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৬ মিলি গ্রাম, আয়রন ১.৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-১ ০.১০ মিলিগ্রাম, বি-২০.০৭ মিলিগ্রাম, সি, ৪১ মিলিগ্রাম, শর্করা ২০ গ্রাম, সেহ ০.৭ মিলিগ্রাম। তাছাড়া প্রতি আমের তার ওজনের ৭৯-৮৩ ভাগ পানি থাকে।

গাছের পাতায় আছে, পলিফেন-জ্যান্থোন, ম্যাঙ্গি ফেরিন, আইসোম্যাঙ্গি ফেরিন এবং অন্যান্য ফেনলিকস ও খনিজ পদার্থ। পেন্টা সাইক্লিক টার্পিন, বিটা সিটো স্টে বল, গ্লাই কোসাইডিক পদার্থ, বাকলে থাকে প্রচুর পরিমাণে ট্যানিন। ফুলে উদ্বায়ী তেল, মূলে আছে ম্যাঙ্গি ফেরিন, ফিয়ে ডেলিন ও বিটা সিটোস্টেরল। আমে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়। যা আমাদের রাতকানা ও অন্ধত্ব রোধে বিরাট ভূমি পালন করে। ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে শিশুরা রাতে চোখে কম দেখে বেশী অভাবে রাত কানা রোগ হয়। শরীরের চামড়া শুকিয়ে যায় এবং খসখসে হয়, মুখের উজ্জ্বলতা কমে যায়। ক্যান্সারের প্রবণতা বেড়ে যায়, সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা কমে যায়, শারীরিক বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। আর ভিটামিন সি এর অভাবে সর্দি কাশি ঘন ঘন হয়, দাঁতের মাড়ির নানা রোগ হয়, রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, শরীর দুর্বল হয়, হাঁড়ের নানা সমস্যা হয়, চামড়ার সৌন্দর্য নষ্ট হয়, শরীরের কাটা অংশ তাড়াতাড়ি শুকায় না। বেশী অভাব দেখা দিলে স্কার্ভি নামক রোগ হয়। সুতরাং আম খেয়ে আমরা ভিটামিনের অভাব পূরণ করতে পারি এবং নানা রোগের হাত থেকে বেঁচে থাকতে পারি। ভিটামিন শরীরে জমা থাকে না তাই প্রতিদিন সি জাতীয় খাদ্য খেতে হয়।

তাছাড়া আমের ঔষধি গুণাগুণও রয়েছে : ০ কচি সবুজ পাতার রস কৃমিনাশক ০ কচি পাতা দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের ব্যথা কমে যায়। ০ কাচা ফল পাকস্থলির গোলযোগে উপকার হয়। ০ বীজের শাঁসে প্রচুর গ্যালিক অ্যাসিড থাকে যাদের অর্শ্ব রোগে পায়খানার রাস্তায় রক্ত যায় এবং যে সব মহিলাদের মাসিক বেশী হয় তাদের জন্য খুবই উপকারি। ০ কচি আম পাতার শুকনো গুড়ো নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস রোগে উপকার হয়। ০ দুই চা চামচ আম গাছের ছাল বেটে নিয়ে টক দইয়ের সাথে মিশিয়ে খেলে পেটের অসুখ ও আমাশয় কমে। ০ পুরানো আমাশয়ে বা পেটের অসুখে কচি পাতা, কৎবেলের শাঁস সমান পরিমাণ বেটে সামান্য চাল ধোয়া পানির সাথে খেলে উপকার পাওয়া যায়। ০ গর্ভবতী মায়েরা হুট করে কোনো ঔষধ খেতে পারেন না। তাই পেটের অসুখ দেখা দিলে আম ও জাম গাছের বাকলের ক্বাথ খই গুঁড়োর সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। ০ গলা ভেঙ্গে গেলে বা বসে গেলে আম পাতার ক্বাথের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে কমে যায়। ০ যাদের পা ফেটে যায় তারা গাছের আটা ফাটাতে লাগালে কমে যায়। তাছাড়া কচি আম কেটে আচার, চটি, মোরববা করে রাখুন। মাঝে মধ্যে খান মুখের রুচি বাড়বে পুষ্টি পাবেন। উপকারি গাছটি বেশী করে লাগান যত্ন নিন। এতে পরিবেশের ভারসাম্য যেমন রক্ষা পাবে তেমনি পরিবারের পুষ্টি চাহিদাও মিটবে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুন, ২০১২ রাত ১২:৩৮

মো: আবু জাফর বলেছেন: পোস্টে ++++ রাজশাহীর ১০০ % ফরমালীন মুক্ত আম কিনতে http://www.bdagromarket.com/ এখানে ক্লিকান

২| ২৫ শে জুন, ২০১২ দুপুর ২:৩০

লুল মামা বলেছেন: @ মো: আবু জাফর ঃ হাঊয়ার পো, ঢাকায় আম ৬০-৭০ টাকা। আর তুই আম বেচো ৯০ টাকা। দাঁরা, তরে পুলিশ এ দিমু।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.