নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা শুনি- যা দেখি - যা ভাবি - তা লিখতে ইচ্ছে করে ।

কিবরিয়া জাহিদ মামুন

শহুরে ফোকলোর

কিবরিয়া জাহিদ মামুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কর্নেল হ্যাকশন

২৩ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৪৩

আমরিকান আর্মীর একটি দলের কিছু পদস্থ অফিসার, কিছু সৈনিক ইরাকের নীলনদের পাশের জংগলে সাদ্দাম হোসেনের রাসায়নিক অস্ত্রের খোজে রেকি করছিল । হঠাত দেখতে পেল বড় একটি গাছের নীচে সামান্য গর্ত সেখানে গায়ে চাউলের বস্তা দিয়ে দুজন সন্নাসী টাইপের লোক বলছে
"কুনতো কাদিরান আলা" এবং
তাকাল্লু ছাফি মানাকাল যাবহো

সন্নাসী দুজন একসাাথে সুর করে একটু থেমে থেমে লাইন দুটি বলছে ।
কর্নেল সাহেব দোভাষীকে বললেন ওরা কি বলে ?
"কুনতু কাদিরান আলা" আর "তাকাল্লু ছাফি মানাকাল যাবহো" ?
এর মাানে কি ?
দোভাষী বল্ল "কুনতু কাদিরান আলার" মানে হল তুই পাবি ।
কর্নেল সাহেবের মনটা ভিষন ভাল হল । যদি রাসায়নিক অস্ত্র সে পায় তাহলে সারা পৃথিবীতে কর্নেল সাহেব হিট হয়ে যাবেন । বিবিসি, সিএন এন, ফক্চ, আল জাজিরা সবাই ইন্টারভিউ করবে । পুরা সেলিব্রিটি হবার মত বিষয় । ইভেন চাকুরী শেষে এই অভিগ্যতার উপরে একটা বইও লেখা যেতে পারে । কর্নেল সাহেব সাথে সাথে পকেট থেকে ১০০ ডলারের একটা নোট বের করে দিলেন । সন্নাসীরা ডলারটা নিয়ে বস্তায় লুকিয়ে রাখল ।

কর্নেল সাহেব দোভাষীকে বললেন পরের যে শব্দটা বল্ল "তাকাল্লু ছাফি মানাকাল যাবহো" সেটার মানে কি ?
দোভাষী বল্ল এটার মানে স্যার সামনে মানকা চিপা ।
কর্নেল সাহেবের মনটা খারাপ হয়ে গেল । সালার ১০০ ডলারের নোটটা বোধহয় জলে গেল । দেয়া নোট তো আর ফেরত নেয়া যায়না । কি আর করা কর্নেল সাহেব সামনে এগিয়ে যেতে লাগলেন ।

হঠাত শব্দে পেছনে তাকিয়ে দেখেন ট্রপসের একজন মেজর গর্তে পড়ে গেছে । কর্নেল সাহেব তাড়াতাড়ি রশি আনতে বললেন মেজর সাহেব কে গর্ত থেকে ওঠাবার জন্য । নিজে রশির মাথা ধরে পেছনে সবাইসহ টেনে মেজর সাহেব কে উঠাতে লাগলেন । মেজর সাহেব যখনি কাছাকাছি আসে উপরে তাকিয়ে দেখে কর্নেল সাহেব রশি ধরে টানছে তখন মেজর সাহেব রশি ছেড়ে স্যালুট দিতে গিয়ে আবার গর্তের নীচে পড়ে যায় । এমন দু একবার কশরত চলবার পর কর্নেল সাহেব সৈনিকদের বললেন রশি টানতে ।

এবার সৈনিকরা রশি টানা শুরু করল । কিন্তু মেজর সাহেব কাছে আসা মাত্র সৈনিকরা রশি ছেড়ে দিয়ে স্যালুট দেয় । মেজর সাহেব আবার গর্তে পড়ে যান । এমন দু একবার কশরত করবার পর কর্নেল সাহেবের মাথায় আসে দুই সন্নাসীর কথা । দোভাষী ওদের ডেকে আনে ।

এবার রশির সামনে সন্নাসীদের দিয়ে মেজর সাহেব কে উপরে উঠানো হয় । উপরে উঠে মেজর সাহেব বখশিস হিসেবে আবার ১০০ ডলার দুজন কে দেন ।
সন্নাসীরা টাকা পেয়ে আবার
"কুনতো কাদিরান আলা" এবং
তাকাল্লু ছাফি মানাকাল যাবহো - সুর করে বলতে বলতে তাদের জংগলের গর্তের দিকে এগিয়ে যায় ।

কর্নেল সাহেব দোভাষীকে বলেন ওদের জিগ্গেস কর বাড়ী কোথায় ?
দোভাষী : এয়নাহু মুনজিলোকো ? তোমাদের বাড়ী কোথায় ?
সন্নাসী : লাদাইনা মনজিলোফি বাংলাদেশ । আমাদের বাড়ী বাংলাদেশে ।

কর্নেল সাহেব চোখ উপরে তুললেন । দোভাষী জিগ্গেস করল এখানে তোমরা কি কর ? সন্নাসী দুুজন উওর দিল প্রতিমাসে তোমাগো আম্রিকান আর্মীর পাচটা করে টিম আসে রাসায়নিক অস্ত্র খুজতে তাগো এই দুই শব্দ কই সবাই প্রথমে ১০০ ডলার দেয় পরে গর্তে পরে গেলে ১০০ ডলার দেয় মাসে কামাই হয় প্রায় এক হাজার ডলার ।

কর্নেল হ্যাকসন ইরাক থেকে আমেরিকাতে ফিরে নিউজার্সীর উড এভিনিউ এর বাসাতে অবসর জীবন যাপন করছিলেন । এরমাঝে সিআইএর হেড অফিস ল্যাংলী, ভার্জিনিয়া থেকে একটা মেইল আসে । ঢাকার ইউএস এমবেসীতে টেম্পরারী সিকিউরিটি এনালিষ্ট এর পোস্টে কাজ করতে চাও কিনা ? কর্নেল হ্যাকসন ফিরতি মেইল এ জানিয়ে দিলেন তিনি রাজী ।

কর্নেল হ্যাকশন ঢাকাতে এসে ইউএস এমবেসীতে ওরিয়েন্টেশন শেষে কফি খেতে খেতে ইংরেজী দৈনিকে চোখ বুলাচ্ছিলেন । হঠাত একটা খবরে চোখ আটকে গেল "ব্লাইন্ড ম্যান' স ডেথ ইন ম্যানহোল" । খবরটা পড়বার পড় কর্নেল হ্যাকশন এমবেসীর সামনের সবুজ মাঠটার দিকে তাকিয়ে ছিলেন । সবুজ মাঠটার পাশ দিয়ে রিকশা, জং ধরা গাড়ী সহ হরেক রকম গাড়ী চলতে দেখছিলেন । হঠাত মনে পড়ল ইরাকের সেই পুরাতন স্মৃতি । নেইল রিভারের পাশের জংগলে রাসায়নিক অস্ত্র খুজবার কথা আর মনে পড়ল সেই দুই সন্নাসীর কথা । হ্যা - ওদের বাড়ীও ছিল বাংলাদেশে । আর সেই সুর করে বলা লাইন দুটো কি যেন ছিল ? হ্যা মনে পড়েছে,

"কুনতো কাদিরান আলা" এবং
"তাকাল্লু ছাফি মানাকাল যাবহো"

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৪২

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: কামাই করার ভাল ফন্দি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.