![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ক্লাশ থৃ তে পড়ি । প্রয়াত মিনু স্যার একদিন ক্লাশে বল্ল, তোরা আজকের শিশু তোরা একদিন বড় হবি । বড় হয়ে এই দেশ চালাবি । আজকে এরশাদ সাহেব দেশের প্রেসিডেন্ট একদিন তোরা হবি প্রেসিডেন্ট। তোদের মধ্যে কেউ একজন হবে । আমি খুব আশায় বুক বাধলাম । কিন্তু স্যারের শেষ কথাটাতে আমার একটু খটকা লাগল ।
তোদের মধ্যে কেউ একজন হবে । তখন আমার ক্লাশ ফ্রেন্ড লেলিন, তইদুল, নুর আলম, বিপ্লব কুমার মহন্ত, কালিদাস, শামীম, লিখন, মটু রাজিব বাকীদের নাম মনে নাই । স্যার যেহেতু বল্ল কেউ একজন হবে তার মানে লেলিন, তইদুল, কালিদাস, বিপ্লব, শামীম, লিখন এদের ও চান্স আছে । বা ক্লাশের যাদের সাথে আমার জানাশুনা নাই তারাও হতে পারে ভেবে মনটা খারাপ হল ।
এরমধ্যে আবার সে সময় লেনিনের বাপের গাড়ী ছিল । হুদা পরিবহন মনে হয় নাম ছিল । সব মিলে মনটা বেশ খারাপ হল ।
আমি অপেখ্খায় থাকলাম । আমি বা আমার ক্লাশের কেউ একজন প্রেসিডেন্ট হব । এদিকে স্কুলের মনখারাপের মাঝে নিয়ন ভাইয়ের গল্প যেন আরও এককাঠী সরেস । নিয়ন ভাইয়ের মামার রকেট আছে । সেটা তিনবিঘা জমির উপর নামে মানে ল্যান্ডিং করে । । নিয়ন ভাই ও আমার ফ্রেন্ড চয়ন - নিয়ন ভাইয়ের ছোটভাই তারা দুজনি সেই রকেটে চড়েছে । কেমনটা লাগে ।
আমার মামার ট্রাক ছিল, ট্রাকটর ছিল, বাইক ছিল । নানীর বাড়ী গেলে সেগুলোতে চড়ার বেশ সৌভাগ্য হয়েছে । কিন্তু ট্রাকে, ট্রাকটরে, বাইকে চড়া আর রকেটে চড়া তো এক না । মনের দু:খে একদিন আম্মা কে বল্লাম বড় মামার রকেট নাই কেন ?
আম্মা ঝাড়ি মেরে বল্ল পড়াশুনার খবর নাই ওনি রকেট ওয়ালা হইছে ।
চয়ন কে বল্লাম রকেট টা কি তোমার মামা এদিকে আনবে বা আনলে আমাকে চড়তে নিবা ?
চয়ন বল্ল আনলে তো অবশ্যই নেব । কিন্তু চয়নের ফ্রেন্ড এবং আমার ফ্রেন্ড লিমন, তাজুল, ওরাও যদি চড়তে চায় । একসাথে সবার জায়গা কি হবে ? আচ্ছা অপেখ্খায় থাকি ।
এমন ভাবনা চিন্তার মাঝে মিনু স্যারের প্রেসিডেন্ট বিষয়ক ব্যাপারটা কারও সামনে বলা গেলনা । আবার কে কি বলে । অপেখ্খায় থাকি । বড় হয়ে তো একদিন প্রেসিডেন্ট হবই ।
ওদিকে হলিকপ্টার এলাকার আকাশে এলে সেটার পেছনে দৌড়ানো আমাদের জন্য মহান বীরত্বের বিষয় । এমন বীরত্বের মাঝে পল্লব আমাদের সাথে হেলিকপ্টারের পেছনে দৌড়ে সে হঠাত করে রাস্তার কোথাও একটা বিড়ির মোতা বা টিপস হাতে নিয়ে বলত আল্লাহর কসম এইটা মোতাটা হেলিকপ্টার থেকে পড়ছে । আমরা বিশ্বাস করতাম । আর আপসোস করতাম ইস কেন আমি পাইনা । সব সময় পল্লব ই পায় ।
নাইট রাইডার দেখে বা প্রেসিডেন্ট এরশাদের ভোটের সময় টারজান দেখে পরের দিন বাংলা তরজমা পল্লব করত । যদি আমরা যদি বলতাম- না, তখন নায়ক তো এইটা বলছিল । পল্লব বলত আমি মেজভাইয়ার সংগে বসে দেখছি । মেজভাইয়া বলছে । ভয়ে আর কথা বলা যাইতো না । মেজভাইয়ার সাথে দেখছে সেইটারে তো আর ফেলে দেয়া যায়না । মেজভাইয়া নিশ্চই ইংরেজী অনেক ভাল জানে ।
তারপর শুক্রবারের নামাজ । মকবুল হুযুর বলত কাল কিয়ামতের দিন পাহাড় উড়বে । গাছপালা উড়বে । ঘরবাড়ী উড়বে । আবার টেনশন । রাতে ঘুমের আগে নানাবিধ টেনশন । যদি আমি ঘুমের মধ্যে থাকতে কিয়ামত হয় তাহলে । আমি সহ উড়ব নাকি ? উড়ে কোথায় যাব ? কে কে থাকবে সেখানে । কাউকে বল্লে না আবার কষায় থাপ্পর মারে । ভয়ে বলিনা । তারচেয়ে বরং অপেখ্খায় থাকি কিন্তু মনের ভয় যায়না ।
এই অপেখ্খায় থাকতে থাকতে প্রেসিডেন্ট আমার ক্লাশের কেউ হওয়া তো দুরের কথা আমার সময়ের কেউ হলনা । এরশাদের পর রহমান বিশ্বাস, সাহাবউদি্দন, বদরুদ্দিন, ইয়াজউদ্দিন, হামিদউদ্দিন সাহেবরা প্রেসিডেন্ট হল । আমরা বা আমাদের সময়ের কেউ এখনো হলনা । রকেটে চড়া হলনা । কালকের কিয়ামত হলনা । সিগারেটের টিপস কুড়িয়ে পাওয়া হলনা । যা হল সেটা ভয় পাওয়া ।
রাতের ভয় আর দিনের ভয় । পুরো রাস্ট্র ব্যবস্থা এমন ভয় দিয়ে সাজানো ।
২| ২৪ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: লেখার বিষয় বস্ত ভালো।
৩| ২৪ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:০২
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: দারুণ লাগলো
৪| ২৪ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:৫২
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ভয়ংকর ঘটনা।
৫| ২৪ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:৪০
আহা রুবন বলেছেন: শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম। বেশ!
৬| ২৪ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:৫৮
ল বলেছেন: হা হা --- এত ভয় আর ভয়!!
৭| ২৬ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:২২
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: এই সময়টায় যেমন ভয় পাই আবার এমন সময় স্বপ্নগুলোই একদিন আকাশে উড়ায়, প্রেসিডেন্ট বানায়। শুধুই সময় করে যায় এইসব। হয়তো বা একদিন আপনি এই ব্লগ থেকে লিখবেন, আমি প্রেসিডেন্ট লিখছি।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে জুন, ২০১৯ রাত ১০:৪২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: পড়তে খুব ভালোই লাগলো।