নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা শুনি- যা দেখি - যা ভাবি - তা লিখতে ইচ্ছে করে ।

কিবরিয়া জাহিদ মামুন

শহুরে ফোকলোর

কিবরিয়া জাহিদ মামুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

শহুরে ফোকলোর - করোনা কাল

০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:১৫


সার্ক তৈরি করেছিল বাংলাদেশের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান । সার্কের হেড অফিস কাঠমুন্ডু, নেপাল । সার্ক বিশ্ববিদ্যালয় নয়া দিল্লী, ইনডিয়া । সার্ক তৈরি করে বাংলাদেশ ভাগে পেয়েছে শুধু সার্ক ফোয়ারা কাওরান বাজারের গোল চক্করে । সার্ক তৈরি হবার পর বাংলাদেশের একমাত্র লাভবান হয়েছিল প্রয়াত নিতুন কুন্ডু সাহেব অটবির ফাউন্ডার । তিনি ছিলেন সার্ক ফোয়ারার ডিজাইনার । বাকীতে ডিজাইন করে না থাকলে কিছু টাকা কড়ি পেয়েছিলেন বোধকরি । যেমনটা বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনের ডিজাইনার লুই আই কান নাকি তার পুরো পেমেন্ট পান নি । তেমন খবর চাউর হয়েছিল বাংলাদেশের এক পত্রিকায় ।

তো, করনা কালের এমন দুর্দিনে চাউর হওয়া আর একটা খবর দেখলাম, সেটা উইমবলডন টেনিস । তারা প্রতি বছর ২ মিলিয়ন ডলার করে প্যানডেমিক ইনসুরেন্স দিয়েছে ১৭ বছর । আর এখন বিনিময়ে পেয়েছে ১৪১ মিলিয়ন ডলার । তো প্রতি মাসে দিতে কষ্ট হলেও পাবার পর সবসময়ই মনটা ভাল হয় ।

এমন করে প্রতিদিন মন ভাল হত মদন আর সাধনের । মদন আর সাধনের গরু ছিল । সেই গরুর দুধ, সাদা ভাত আর মালভোগ কলা দিয়ে মেখে যখন খেত তখন মদন- সাধন কে বলত -
সাধন গরু আর একটা কিনতে হবে রে ....
কিন্তু রোদের মধ্যে যখন গরু চড়াতে হত । গরুর ঘাস কাটতে হত, গোয়াল ঘর পরিস্কার করতে হত, তখন মদন সাধন কে বলত নারে সাধন গরু বেচতে হবে ।

এমন বেচার কথা বলতে বলতে সাধন একদিন গরু বেচে দিল । সেই গরু ট্রাকে করে এল গাবতলী । সেখানে রাতের বারটার সময় বাকী ট্রাকের গরু মহিষের পালের সাথে মদন সাধনের গাই গরুটাকে নামানো হল । আগের জমানো আর এখনকার আসা গরু মহিষের পাল নিয়ে এইবার যাত্রা কাপ্তান বাজার অভিমুখে । কোমরের প্যাচে বিড়ির প্যাকেট ম্যাচ রেখে গামছা ঘাড়ে নিয়ে ঠোটে একটা বিড়ি জ্বালিয়ে গরুর পাল নিয়ে কাপ্তান বাজারের অভিমুখে রওনা দিল মতলুব আর হারাধন । ঠোটের বিড়ি কখন শেষ হয়েছিল মনে নাই । অনেকখন বিড়ি খাওয়া হয়না ।

হঠাত মনে হল পকেটে বানানো গান্জার পুড়িয়াটা আছে । গতকাল রাতে নুরজাহান রোডের বাশবাড়ির জসিমের কাছে কেনা গান্জার পুড়িয়া । পকেট থেকে বের করে আগুন জ্বালিয়ে টানা শুরু । বাংলা মটর সিগনালটা পার হচ্ছিল । মোড়ের সিগন্যালের পুলিশ বকসে ঘুমন্ত পুলিশের কনস্টেবল মতিয়ারের নাকে গাজার গন্ধ যাওয়া মাত্র ঘুম ভেংগে গেল । ধুরমুড় করে উঠে বল্ল কোন সালা ....

বলেই বাইরে এল । নবাবের মত গাজা টানতে থাকা মতলুব কে এই থাম । গাজা খাচ্ছিস কেন ....। চল তোকে থানায় নেব । মতলুব - স্যার আমারে থানায় নেবেন গরু রাখবেন কোতায় ...
কনস্টেবল মতিয়ার দেখল কথায় যুক্তি আছে । শেষে বল্ল আর গাজা আছে তোর কাছে ...
মতলুব বল্ল না স্যার । বিড়ি আছে ।
কনস্টেবল আতিয়ার থাপরায়া দাত ফেলায় দেবো বেটা । এক প্যাকেট বেনসনের টাকা দিয়ে যা ।
মতলুব সে টেহা পামু কই ....
আতিয়ার কি আছে তাইলে ...
মতলুব গরুর দড়ি আছে স্যার ।
আতিয়ার তাহলে একটু বড় দেখে দড়ি দিয়ে যা ।

মতলুব - মদন সাধনের গাই গরুর গলার লম্বা দড়িটা খুলে কনস্টেবল আতিয়ার কে দিয়ে বল্ল ফির যেদিন যামু স্যার আপনারে পুড়িয়া দিয়া যামু আপনি যদি ডিউটিত তাহেন । জসিমের পুড়িয়া ভাল স্যার । সালাম দিয়ে মতলুব কাপ্তান বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিল ।

দড়িটা নিয়ে কনস্টেবল আতিয়ার পুলিশ বকসে আসা মাত্র এ এস আই মতিয়ার বল্ল কিছু পাইলি ...আতিয়ার বল্ল না বস । দড়িটা নিলাম । পরসু দিন আপনার আমার দিনের ডিউটি এইখানে না দেখেন দড়ি দিয়া কি করি ...
তারপর থেকে মদন সাধনের গরুর দড়ি দিয়ে কনষ্টেবল আতিয়ার বাংলা মটরে ট্রাফিক সামলাতো । বাইক রিকশা গাড়ী সবার সামনে এই দড়ি ঝুলত । তারপর পুরো ঢাকা শহরে আধুনীক দড়ি সিসটেম ট্রাফিক চালু হল । কিন্ত মদন সাধন মতলুব হারাধন কেউ জানল না ।

এই দড়ির লাগানো ট্রাফিক সিসটেমে দড়ির উপর দিয়ে পার হতে গিয়ে এক চাইনিজ না বুঝে পা প্যাচায়া পড়ে গেলে । পড়ে পা ভেংগে গেল পরের দিন তার যাবার কথা ছিল উহানে । চায়না ইস্টার্ন এয়ারে টিকিট কাটা ছিল । পায়ে প্লাস্টারের কারনে একুশ দিন যেতে পারল না । ওদিকে উহানে করোনা মহামারি হল এই চাইনিজ বেচে গেল । দড়ি ট্রাফিক সিসটেমের কারনে । মদন সাধনের গরুর দড়ির কারনে ।

কিন্তু করোনাকালে পুরো ঢাকা শহর ফাকা দড়ির ব্যবহার আপাতত বন্ধ । মতলুব একদিন জসিমের পুড়িয়া দিয়েছে । তারপর আবার আসবার কথা ছিল কিন্তু করোনায় ভেগেছে । এদিকে আতিয়ার মতিয়ার একা । দুজন একি বাউয়াল প্যাচাল পাড়ে । কনষ্টেবল আতিয়ার বলে ওস্তাদ এই গল্প হুনছি আগে তিনবার ।

এ এসআই মতিয়ার এইবার বলে তাইলে হামার বগড়ার গপ্প শুনবু ...।
আতিয়ার কন ওস্তাদ ।
একবার হামি যাতিছি বগুড়া জেলা স্কুলের মাঠত। পুলিশোত লোক নিবি । যাবার সমে ঘাটা দিয়া এক বেটিছলক দ্যাকা কছিলাম এট্টু মোটা আচিল বুচ্ছু । তুই কোন গোডাউনের চাল খাস মুটকি সুন্দরী
হামাক কয় তোক ক্যা কওয়া লাগবি । জুতার তলা দেকচু । ভয়ে হামি অন্য রাস্তা দিয়া দৌড়া যায়া পরে পুলিশত খাড়া হলাম ।

কনষ্টেবল আতিয়ার - কি প্রশ্ন করছিল আপনারে ওস্তাদ যখন চাকরীর ইন্টারভিউ দিলেন
এএসআই মতিয়ার - সার্ক কে তৈরি করিচিল ...আর সার্ক ফোয়ারা কোথায় অবস্থিত ।

কনষ্টেবল আতিয়ার - ওস্তাদ আপনি কনস্টেবল থেকে এ এস আই হলেন তখন কি প্রশ্ন করছিল - এ এসআই মতিয়ার হামাক কলো পাচটা ইংলিশ শব্দ বলো -
হামি কলাম - রাইফেল, ইউনিফর্ম, ল, তারপর মনে নাই । পরে কলাম সার্ক, টেনিস ।
কনষ্টেবল আতিয়ার - সার্ক, টেনিস কইলেন ক্যা
সকালে টিভি অন করেই দেখি কালো বেটিছল দুটা খেলাতিছে তাই কচি । আর তার আগের রাতে সার্কফোয়ারার ওটি ডিউটি পড়িছিল । তাই সার্ক কচি ।





মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৩২

শিকারি মুসাফির বলেছেন: ভালকরেই গুজে দিলেন দেখিচ্ছি । চাকরীর কারণে তিনবার গিয়েছি বগুড়া । ভাষা শুনতে মজাই লাগে ।
যাইহোক , বুঝতে গিয়ে মাথায় প্যচ লেগে যাচ্ছিল ।

২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৩৫

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: ভালো রম্য।

৩| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:২৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: কিবরিয়া জাহিদ মামুন,




এই নিদেন কালে চমৎকার... অতি চমৎকার একটি রসযোগ লেখা।
মতলুবের লম্বা দড়িখানা দিয়ে সব মতলববাজী বাস্তবতাকে একত্রে গিট্টু দিয়ে দিলেন।
সার্ক ফোয়রার মতো উচ্ছল হাসি আর হাসি.............

৪| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো।

৫| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৫১

ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: B-) :D মজাক পাইচি B-))

৬| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:২৮

বিভ্রান্ত পাঠক বলেছেন: ভালো বিনোদন পেলাম অনেকক্ষণ বাদে,,,

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.