নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১. ২০০১ সাল। চট্টগ্রাম। সকালে বাবার মৃত্যু হয়েছে। মোবাইলের ব্যপক প্রচলন তখনো শুরু হয়নি। পরিচিত আত্মীয় স্বজনদের বাসায় গিয়ে মৃত্যুর খবর ও জানাজার সময় জানাতে হচ্ছে। সিএনজি পথে ২ বার নষ্ট হয়েছে(এটা ৯৯% মানুষের বেলায় হয় সম্ভবত!)। আম্মার এক কাজিন মানে আমার খালার বাসায় গেলাম। আমার সাথে ছিল আপন সেজ খালু। ঐ খালার বাসা সর্বশেষ বাসা ছিল জানানোর মত। তাই খালা বললো, এখনই আমাদের বাসায় যাবে। সিএনজি তে সিট আছে। খালুও যাবে। আমি আর সেজ খালু অপেক্ষা করছি। খালা দ্রুত রেডি হয়ে গেল। আর খালু প্যান্ট না পরে(লুঙ্গি পরা ছিল) একটা বেল্ট নিয়ে প্যান্টের এক একটা লুপের ভেতর দিয়ে ঢোকাচ্ছে ধীরে ধীরে। তারপর প্যান্ট পরেছেন (সাধারণত আমরা প্যান্ট পরে বেল্ট লাগাই)। সেজ খালু নীচে গিয়ে আমাকে বলল, "হেতে মরা বাড়িতে যাইব, আবার বেল্টও পরা লাগবো"।
২. বাবার মৃত্যু হয়েছিল ৫ তারিখ। কড়া বাড়িওয়ালার ভাড়া দেয়ার শেষ তারিখ। সম্ভবত পরদিনই অথবা আরও ১ দিন পর ভাড়া দিয়ে দিয়েছিলাম আমরা। কারণ, টাকা আগেই গোছানো ছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর বাড়িওয়ালা বাসায় আসলেন। এসে বললেন, "তোমাদের একটা নোট ছেঁড়া ছিল, বদলে দাও"। একটুও ভাবলো না আমাদের মনের অবস্থা...
৩. বাবার মৃত্যুর পর শহরে অবস্থান রত মহিলা আত্মীয়রা অনেক সঙ্গ দিয়েছে আম্মাকে। এরকমই আম্মার আরেক কাজিন মানে আমার আরেক খালা বেশ কয়েকবার এসেছেন বাসা কাছে হওয়াতে। যে কারণে, বাবার ব্যবসায়ীক লেনদেন, ব্যাংক, ইন্সুরেন্স সম্বন্ধে জানতেন আম্মার কাছ থেকে। বাবার এক বন্ধু জীবন বীমাতে থাকাতে খুব সহজেই ও অল্প সময়ে আমরা বীমার টাকা(প্রায় ২ লাখ) পেয়ে যাই। তার কয়েকদিন পর সেই খালার আমাদের বাসায় আগমন। আম্মাকে অনুরোধ করলেন, বীমার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা ধার দিতে। আমরা তো আর এই টাকা দিয়ে এখনই কিছু করব না। তারা একটা জমি কিনেতে চাচ্ছে। তাই টাকা দরকার! কোন ঘনিষ্ট আত্মীয়কে 'না' বলাটা আমাদের দ্বারা হয় না। তাই আমরাও এই বেআক্কেলি অনুরোধ রাখতে বাধ্য হলাম। আর ৯৯% মানুষের মত সময় মত ফেরত পাইনি...
২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:২০
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমাদের বয়স অনুযায়ী অন্য আত্মীয়দের মধ্যে এই ভয়টা ছিল বৈকি! কারণ, আমরা দুই ভাই তখনো কর্মজীবনে প্রবেশ করিনি। তবে তাদের বিব্রত করার আগেই আমরা নিজেদের ব্যবস্থা করে ফেলেছিলাম...
২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার বাবার জন্য শ্রদ্ধা।
২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:২০
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ...
৩| ২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:২১
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: বর্তমানে মানুষের আক্কেল আরও কমে গেছে!
২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৩৮
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: হ্যাঁ। দিন দিন বেড়েই চলেছে...
৪| ২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:২৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
কষ্টের সময়, আত্মীয়স্বজন ও সমাজকে চেনা যায় সহজেই।
২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৩৮
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন...
৫| ২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৩৬
ঢাবিয়ান বলেছেন: এর নামই বোধহয় বাস্তবতা।
২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৩৮
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: কঠিন বাস্তবতা...
৬| ২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৪৩
রাকু হাসান বলেছেন: আংকেলের জন্য দোয়া রইলো , ভাল থাকুক তিনি । সত্যিই এ মুহূর্তগুলো বর্ণনা করার মত না । নিজের বাবার মৃত্যুর খবর নিজে দেওয়া ! ভাবতেই খারাপ লাগছে । এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা ।
২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:১৫
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আরো অবাক হবেন বাবার মৃত্যুর খবর শোনার পরও আমার ছোট ভাইকে দোকানে যেতে হয়েছিল কারণ দোকানের জন্য মালামাল নিয়ে ট্রাক অপেক্ষায় ছিল...
৭| ২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:০৬
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
বাবার মৃত্যু পরবর্তী ঘটনা।
লেখাটা পড়ে হঠাৎ মনটা খারাপ হয়ে গেল।
২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:১৬
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সবই জীবনের অংশ...
৮| ২৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:০৭
সুমন কর বলেছেন: লেখাটি পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল।
২৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:১৭
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ...
৯| ২৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৫৪
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
তিনটি ঘটনাই বেদনাদায়ক; এগুলো আমাদের ক্ষয়ে যাওয়া মনুষ্যত্বের লক্ষণ; আপনার বাবার জন্য আশীর্বাদ রইলো।
২৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৫৯
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: দিন দিন সিভিক সেন্স কমে যাচ্ছে মানুষের...
১০| ২৯ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:০২
আরাফআহনাফ বলেছেন: আপনার বর্নিত প্রতিটি ঘটনাই অন্য সবার সাথে ঘটে - ৯৯%। একইভাবে হয়তো ঘটে না রূপ বদল করে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে - কেননা আমরা ধীরে ধীরে অমানুষে পরিণত হয়ে যাচ্ছি।
এটাকে দু:সময় বলে - দু:সময় কাটতেও সময় লাগে। এ দু:সময়েই বুঝা যায় - আপন কিংবা পর।
আপনার বাবার জন্য দোয়া রইলো।
২৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৭
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আসলেই মনুষ্যত্ব হারাচ্ছি আমরা দিন দিন...
১১| ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:৫৮
লিংকন১১৫ বলেছেন: ভাই চোখে পানি চলে আসছে পোস্ট টা পরে ।
জীবনে বিশ্বাস করতে পারি নাই আমাদের এমন সময় আসবে ।
যে আত্মীয় স্বজন দিনের পর দিন ঢাকার বাসায় এসে থেকে গেছে তারাই কিনা সামান্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় নি।
আমার গল্প টি ঠিক অন্য রকম, জদিও আব্বু বেচে আছেন , কিন্তু না থাকার মতো ।
বাড়িওয়ালা এসে অনেক অনেক কথা শুনিয়েছিল ভাড়া দিতে পারিনি বলে,আমরা ঐ বাসায় প্রায় ২৫ বছর কিন্তু তাতে কি মাসের ভাড়া মাসে দিতে হবে।
তখন আমরা দুই ভাই ভালো কিছুই করি না । আব্বুর বন্ধু রা কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন ।
হায় মানুষের জীবন , যে মানুষ টা আত্মীয় স্বজন দের জন্য এতো কিছু করলো , আর সেই কিনা নিজের প্রয়োজনে কিছুই পেলো না। সব শ্যালারা স্বার্থপর ! মানুষ চেনা যায় বিপদে , সবাইরে চিনছি। স্বার্থ হলে সবাই আছে ..................
৩০ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫২
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আসলে আত্মীয় স্বজনকে চেনা যায় কষ্টের সময়...
১২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: বিপদে বন্ধুর পরিচয়।
আপনার বাবার রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ সুবহানুওয়াতা'লা তাঁকে ক্ষমা করে দিন এবং জান্নাত নসীব করুন!
এরকম বিপদের সময় কাছের লোকেরা যেমন দূরে চলে যায়, তেমনি অনেক দূরের লোকেরাও অপ্রত্যাশিতভাবে কাছে চলে আসে, এমন ঘটনাও দেখেছি। তবে প্রথমটার তুলনায় পরেরটা অনেক কম ঘটে থাকে।
১৭ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০১
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আসলেই বিপদে বন্ধুর পরিচয়। বিশেষ করে কোন অভিভাবকের মৃত্যুর পর যদি ঐ পরিবার অসহায় অবস্থায় থাকে তখন অনেকের আসল চেহারা প্রকাশ পায়। অনেক ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য...
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:০৬
করুণাধারা বলেছেন: হৃদয়হীনতা আর নির্মমতার গল্প- এটা খুবই সাধারণ ব্যাপার। জানিনা কেন, পরিবারের উপার্জনক্ষম কেউ মারা গেলে অনেকেই একটু দূরে দূরে থাকে, পাছে তাদের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়!! আপনাদের বেলায় অবশ্য সেটা হয়নি।
মন খারাপ করা গল্প, তবু পড়ে ভালো লাগলো।