![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কোথায় শেষ ? আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ছি । মোটেই শারীরিকভাবে নয়। মানসিকভাবে। একজন আইনজীবী হিসাবে ১৯৯২ সাল থেকে এই পেশায় কাজ করতে করতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। নারী নির্যাতন বন্দ করার জন্য সরকার কী করে নি ? কী করছে না ? বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা গুলি কতভাবে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই কাজ করেই যাচ্ছে । তারপর কেন বন্দ হচ্ছে না ? সমস্যা কোথায় ? সমস্যা গোড়ায় তাই শেষ হচ্ছে না। পরিবর্তন হয় নি আমাদেও মন মানসিকতার। শুধরায় নি আমাদেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। আমাদেও আদালত পদ্ধতি । বিচার ব্যবস্থা । কিছুই করতে পারছে না কেউ ই। পরিবার পারছে না তার পরিবারের কন্যা শিশুকে মানুষ হিসাবে ভাবতে । সমাজ পারছে না মেয়েটিকে স্বাবলম্বী হিসাবে দেখতে। ফলে আমার মেয়ের যা কিছু আমার কাছে সহনীয় ঠিক বিপরীত মানসিকতা ঘটছে আমার পুত্রবধুর ক্ষেত্রে । যা আমি মেনে নিচ্ছি আমার বোনের ক্ষেত্রে সেটি আমি মানতে পারছি না আমার ভাই বৌ এর ক্ষেত্রে । সুতরাং শুরুতেই থেকে যাচ্ছে গলদ। একটি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা কাজ করছে আমাদেও সকলের ভিতরে। যেই চক্র থেকে আমরা কেউই বের হতে পারছি না। পারছি না বলেই সেই মানসিকতার সম্পূর্ণ অপব্যবহার করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। ফলে আদালত বাধ্য হচ্ছে অপরাধীকে বেকসুর খালাশ দিতে । অথচ সরকার পক্ষ থেকে ”নারী নির্যাতনে জিরো টলারেন্স” ঘোষণা দেয়ার পর প্রতিদিনের সংবাদ পত্র – টেলিভিশন চ্যানেল- অনলাইন নিউজ পোর্টাল – রেডিও – আমাদের জানিয়ে দিচ্ছে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতনের মাত্রা কী পরিমান হররোজ ঘটছে। নির্যাতিত নারী থানায় গিয়ে সঠিক ভাবে তার অভিযোগ জানাতে পারছেন না। তার অভিযোগ খুব উপর মহল থেকে তদ্বির না এলে গ্রহণই করা হয় না। তারপর সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে আর্থিকভাবে যথেষ্ট খুশী করতে না পারার দরুন তদন্তর গতি মন্থর। আসামী গ্রেপ্তার হচ্ছে না। বহু চেষ্টা -তদ্বিরে যদিও বা মামলা গ্রহণ করছে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিলে অনীহা। আর ইতোমধ্যে আসামী যথারীতি আদালত থেকে আইনের ফাঁক ফোঁকর দিয়ে জামিন নিয়ে যথারীতি বাদীর প্রতি যত ধরনের ক্ষমতার ব্যবহার করা যায় করছে। সাক্ষীরা ভয় পাচ্ছে সাক্ষ্য দিতে। আইনজীবীদেও ফিস ঠিকমত পরিশোধে ব্যর্থ নারী কেবল আদালতের বারান্দায় ঘুরছে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী সরকারী উকিলকেই ( পিপি, এপিপি) বাদীর পক্ষে একনিষ্ট কাজ কওে যাবার কথা । কিন্তু আসলে ঘটছে কী ? শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নারী নির্যাতনের শিকার নারীকে কেবল পরীক্ষাই দিতে হচ্ছে যে, তিনি নির্যাতিত হয়েছেন। তবু পাশ করতে পারছেন না শেষ পর্যন্ত আইন – আদালতের চক্কও ও চত্বও থেকে। সরকার বিষয়টিকে আরো গুরুত্বেও সাথে গ্রহণ কওে একটু সহজ পদ্ধতিতে বিষয় টি ভাববেন কী ? অথবা সমাজ ? আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জন বান্ধব বন্ধুরা ? দায়িত্ব কেবল সংবাদিকদেও প্রতিবেদনেই শেষ নয় । শেষ করতে হবে রীতিমত সামাজিক চাপ সৃষ্টি করে। আমরা এর শেষ দেখতে চাই। নারী নির্যাতনের শেষ না হলে সোনার বাংলাদেশ আর কোনদিনই তার স্বরুপ ফিওে পাবে না। আইন মন্ত্রনালয় – স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও নারী শিশু মন্ত্রনালয় এবং সমাজ কল্যান মন্ত্রনালয়কে একযোগে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ও সংবাদ মাধ্যমের সাথে কাজ করতেই হবে। এটি কারো একার কাজ নয়। আগুন যেমন ছড়িয়ে পড়লে আমরা সেটি নেভানোর জন্য একযোগে কাজ করি- তেমনিভাবে।
©somewhere in net ltd.