নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেইল : [email protected]

বিপ্লব০০৭

...

বিপ্লব০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

"ফেরাউন" যেভাবে বাংলার মানুষের বন্ধুতে পরিণত হতে পারে...

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৫০



ব্লগার চাঁদগাজীর প্রশ্ন যে, ফেরাউন বাংলার মানুষের শত্রু কিভাবে হয়ে গেলো...- পোস্টটা পড়ে মনে হলো ঘটনাটা উল্টো দিকে ঘোরা সম্ভব। আমি আশাবাদী। কেন তাই এইবার খোলাসা করি। তার আগে বলে নেই, দুষ্ট ফেরাউনের হাত থেকে ইহুদিদের বা আল্লাহর অনুসারীদের সাগর দু'ভাগ করে উদ্ধারের কাহিনীতে বিশ্বাসী ঈমানদার বান্দাদের সাথে খোদার অস্তিত্ব সম্পর্কিত তর্কে লিপ্ত হওয়ার ইচ্ছে আমার নেই।

মুসার একেশ্বরবাদী ধর্মের সাথে "ফেরাউন" আখেনাতেনের সংস্কারধর্মী ধর্মের প্রচুর সাদৃশ্য আছে। আখেনাতেন মিশরীয়দের প্রচলিত সকল দেব-দেবতার বাতিল করে, এক ঈশ্বরের উপাসনা চালু করেছিলো। এক্ষেত্রে, বলা চলে- আখেনাতেন ইজিপ্টে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছিলো। ওদিকে খৎনা করার প্রথা আখেনাতেন-প্রবর্তিত নয়, এইটা মিশরীয়দের নিজস্ব রীতি। এইটাও ইহুদিরা গ্রহণ করেছিলো। সুতরাং সব মিলিয়ে বলা যায়, ইহুদি ধর্মের শেকড় মিশর থেকে আসা বিচিত্র নয়

নবী মুসা মানেই আমাদের ঘেঁটে দেখতে হবে তোরাহ (মুসলিমদের ভাইদের কাছে যেটা তাওরাত নামে পরিচিত), খ্রীস্টীয় ধর্মতত্ত্ব থেকে যেটা ওল্ড টেস্টামেন্টের প্রথম পাঁচটা পবিত্র বই। তোরাহ্ -এর প্রথম বই জেনেসিস এর পরের বই এক্সোডাস থেকে আমরা মুসার গল্প শুনি। এক্সোডাসের বর্ণনা যদিও আবিষ্কৃত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সাথে খাপ খায় না। এজন্য প্রত্নতাত্ত্বিক, ইজিপ্টোলজিস্ট প্রফেসর রেডফোর্ড মোজেসকে উড়িয়ে দিয়েছেন; উনার মতে, ইজিপ্ট থেকে হিক্সসদের বিতাড়নের ঘটনাই এক্সোডাসে উঠে এসেছে। তারপরও ওল্ড টেস্টামেন্ট ইহুদি জাতির বিকাশের ইতিহাস; সেই ইতিহাসের ওপর ভরসা রেখে ইহুদি ধর্মের উৎপত্তি, ক্রমবিকাশ, পরিণতি- এসব নিয়ে আলোচনা সামনে এগিয়ে নেওয়া যায়। ফ্রয়েড তাই টেক্সট-বেইজড্ ইতিহাসের ওপর ভরসা রেখে এক দু:সাহসী বক্তব্য রেখেছেন। তাঁর মতে, আখেনাতেনের নিযুক্ত কোন এক উচ্চপদস্ত সেনাপতি হওয়া বিচিত্র নয় মুসার পক্ষে...আখেনাতেন তার সংস্কারধর্মী লড়াইয়ে মিশরীয় প্রাচীন পুরোহিতদের কাছে হেরে গিয়েছেন, কিন্তু মোজেস আখেনাতেনের লড়াইকে এগিয়ে নিয়েছেন দেশত্যাগ করে নিজের কিছু অনুসারী যোগাড় করে। সাম্প্রতিক কালের ইজিপটোলজিস্ট আহমেদ ওসমান সমস্ত ধাঁধাঁর সমাধান করেছে আরো দু:সাহসী মন্তব্য করে- আখেনাতেন আর মুসা একই ব্যক্তি। নিজ দেশে টিকতে না পেরে আখেনাতেন নিজের কিছু অনুসারী নিয়ে কানানে চলে যান, পরে মোজেস/মুসা নাম ধারণ করেন।

কী আশ্চর্য! ইতিহাস খুঁড়ে দেখতে পাচ্ছি, ফেরাউন আমাদের শত্রু-- এই ধারণা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।

মেইনস্ট্রিম ইজিপটোলজি কিংবা ইতিহাসে ফ্রয়েড এবং ওসমান- কেউই পুরোপুরি গ্রহণযোগ্যতা পাননি; তবে চিন্তার ইতিহাসে নতুন খোরাক যুগিয়েছেন তাঁরা।

দেখা যাক- সামনে কি হয়।

আমরা জানি যে, আখেনাতেনের আমলে বহির্বিশ্বে (মিশরসহ) একেশ্বরবাদের প্রবর্তন ছিল না, ফলে আখেনাতেনের উদ্যোগ অবশ্যই উগ্র ছিল। এটা ঠিক, মায়ের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আখেনাতেনকে অনেক সহনশীল দেখা গেলেও তিয়ের মৃত্যুর পর পরই বেপরোয়া হয়ে উঠেন ফারাও। এমনও হতে পারে থেবিয়ান পুরোহিতরা হয়তো বিদ্রোহ করেছিল এ সময় বা ভিন্ন কোন উপায়ে রাজাকে বাধ্য করেছিলো সরাসরি ময়দানে নামার ।

কেন আখেনাতেন "সহসা আতেনের প্রতি গভীর আবেগ" অনুভব করে একেশ্বরবাদী এক ধর্মের প্রবর্তন করতে গেলেন, সেইটা বের করতে হলে আগে বুঝা দরকার আখেনাতেন-পূর্ব আমলের মিশরের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক আধিপত্যের হিসাব-নিকাশ। তিয়ে ইসরায়েলী হিসেবে সিংহাসনের বৈধ উত্তরাধিকারিণী ছিলেন না। তাই তিনি রাষ্ট্রদেবতা আমনের সহধর্মীণিরূপে গৃহীত হতে পারেন না। তিয়ের সন্তান সিংহাসনের বসার অর্থই হল মিশরে অ-আমেনীয় শাসনের প্রতিষ্ঠা যা থেবিয়ান পুরোহিতের শত্রুভাবাপন্ন মনোভাবে পর্যবসিত হয়। আবার মিশরের দুই হাজার বছরের ইতিহাসে অজস্র দেব-দেবীভিত্তিক ধর্মতত্ত্বের শেকল ভেঙ্গে বেরোনোর জন্য আখেনাতেন কালের চাহিদারূপে মানুষের চিন্তার বিকাশের পথে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছিলেন- এভাবেও চিন্তা করা যায়। মানুষের আদিম স্তরে বহু দেব-দেবীকেন্দ্রিক ধর্মতত্ত্ব থেকে এক সুপ্রীম ঈশ্বরের দিকে রওনা হবার পথে এই ফেরাউন আমাদের ত্রাতারূপে হাজির ইতিহাসে।

বাংলার মানুষ সেই বুদ্ধিবৃত্তিক স্তরে একদিন পৌঁছাবে যেখানে "ফেরাউন" তাদের বন্ধুও হয়ে যেতে পারে।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:১৬

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া তোমার পি এইচ ডি এর সাবজেক্ট কি ছিলো!

ফেরাউন বন্ধু বা ত্রাতা হতে পারে ভেবেই ভয় ভয় লাগছে ! কেনো জানিনা .....

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:২০

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: আমি তোমার থেকে অনেক ছোট হবো। পড়াশোনার সাবজেক্ট পরে একদিন বলবো! ;) তুমি কেমন আছো?

২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৩৫

শায়মা বলেছেন: আমি তো মহানন্দে আছি!!!!!!!!

আর তুমি যে ছোট সে আর বলতে!!!!!!!!

সে কি আর আমি জানিনা নাকি!!!!!!!!

হা হা তুমিই জানোনা ..... :P

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৫২

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: এমন একটা মেয়েকে খুঁজেছিলাম যার মাঝে সূর্যের প্রখরতা
আর চাঁদের স্নিগ্ধতা দু'ই আছে।

কিন্তু শুধু মাত্র ভোরের সূর্যের প্রথম আলোর কোমলতা নয়,
অথবা সায়াহ্নের অস্তগামী সূর্যের বিষণ্নতা নয়,

তার মাঝে দুপুরের সূর্যের তপ্ততাও আমি চাই।

শুধু মধ্যরাত্রির নিঝুম বৃষ্টির মত নয়,
কিংবা হেমন্তের শান্ত বাতাসের মত নয়,
মাঝে মাঝে সম্পূর্ণ পাল্টে বসন্তশেষে সে বয়ে আনে ঝড়ো তান্ডব।


আমি চাই এক দূর্বোধ্য রহস্যময়ী কোন এক মেয়েকে...
কৃষ্ণবিবরের আঁধার যার চুলের অরণ্যে
টানে অপ্রতিরোধ্য দুর্বার আকর্ষণে,

আমি হারিয়ে যাবো মিশরের প্রাচীন নগরীর
শত শত অন্ধ গলির ভিড়ে।

চোখের গভীরে যার এরিডানাসের মৌন তীর,
পূর্ণতার খোঁজে হেঁটে হেঁটে রাত্রিশেষে ক্লান্ত আমি
নিশ্চুপ বসে থাকবো একবুক শূণ্যতা নিয়ে।

শাহীন কলেজ

৩০.০৭.০৭

[আমার পোস্টে তোমার কমেন্ট পেয়ে এই কবিতা তোমাকে উৎসর্গ করা হল]

৩| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:০৯

আখেনাটেন বলেছেন: জগত বড়ই রহস্যময়!!!!

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:১৪

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: আরে আপনাকে নিয়েইতো কথা হচ্ছে। তা খুলে বলেন ঘটনাটা কি! আপনিতো ভালো মানুষ। তবে বাংলার মানুষের শত্রু হয়ে গেলেন কিভাবে!

৪| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৫৭

আখেনাটেন বলেছেন: সে অনেক লম্বা কাহিনি! খুলিয়া বলিব একসময়... আপাতত আমার নিজ হাতে তোলা পূর্বপুরুষের (তুতমিস থ্রি) ছবিটা দেখে ন্যান।



০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:১৭

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: আপনার "খুলিয়া বলার" অপেক্ষায় রইলাম। আপনার নিজের হাতে তোলা এরকম আরো ছবিসহ একটা ব্লগের আশায় আছি।

৫| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:১৭

শায়মা বলেছেন: ২০০৭ এ শাহিন কলেজ! আর এমন কবিতা !!!!

বাপরে!

গেছি!!!!!!!!


থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ উৎসর্গের জন্য।

আর

এমন একটা মেয়েকে খুঁজেছিলাম যার মাঝে সূর্যের প্রখরতা
আর চাঁদের স্নিগ্ধতা দু'ই আছে।

কিন্তু শুধু মাত্র ভোরের সূর্যের প্রথম আলোর কোমলতা নয়,
অথবা সায়াহ্নের অস্তগামী সূর্যের বিষণ্নতা নয়,
তার মাঝে দুপুরের সূর্যের তপ্ততাও আমি চাই।

শুধু মধ্যরাত্রির নিঝুম বৃষ্টির মত নয়,
কিংবা হেমন্তের শান্ত বাতাসের মত নয়,
মাঝে মাঝে সম্পূর্ণ পাল্টে বসন্তশেষে সে বয়ে আনে ঝড়ো তান্ডব।

ঠিক ঠিক কবিতার মেয়েটাকেও তো আমি আমি মনে হচ্ছে!!!!!

বিশেষ করে রেগে গেলে ঝড়ো তান্ডবটাতো এক্কেবারেই আমি!

থ্যাংক ইউ ওয়ান্স এগেইন আমি আমি কবিতা দেবার জন্য !:)

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:০৫

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: আরে যাহ! কবি কবিতায় অনেক বাগাড়ম্বর করে, অনেক হামবড়া ভাব নেয়...ভারি শব্দ ব্যবহার করে, বাস্তবে তার সিকিও দেখা যায় না। কবিতায় অনেক কথা বলে ফেলছি, বাট এখন তোমার মন্তব্য পেয়ে ভয়ে আছি কখন না জানি আবার ঝড়-টড় আসে। আমি কিন্তু খুবই নিরীহ মানুষ, একটু বাতাসেই ডাল-পালাসুদ্ধ কাৎ হয়ে পড়ি। :D আমার উপর ঝড়ো তান্ডব চালিও না আবার!! :D

৬| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: এই পোষ্টে চাঁদ গাজী কি মন্তব্য করেন সেটার দেখার অপেক্ষায় আছি।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:২৪

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: আপনি যেভাবে মন্তব্য দিলেন, সুরটা একটু চাঁদগাজীর প্রতি চ্যালেঞ্জের মতন শোনাচ্ছে। আমি বলি কি, চাঁদগাজীর মর্জি হলে তিনি মন্তব্য দেবেন, না হলে দেবেন না- এইতো ঘটনা!

৭| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:০১

শায়মা বলেছেন: একদম সাবধান হুশিয়ার!

ফেরাউনকে নিয়ে লিখলে নাকি ঘাড়ে অভিশম্পাত পড়ে ...... :P

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:০৭

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: ওরে বাপরে! মাফ চাই। তোমার ৫ নাম্বার মন্তব্যের রিপ্লাই দেখ... :D

৮| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:২৩

শায়মা বলেছেন: হা হা হা না না তোমার উপরে ঝড়ো তান্ডব চালাতে পারি!!!

এত সুন্দর কবিতা দিলে!!!!!!

নো ঝড়ো হাওয়া!!!!!!!!!

তার থেকে মৃদুমন্দ বাতাসে উড়িয়েছি শাড়ির আঁচল...... :) :)

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৩৩

বিপ্লব০০৭ বলেছেন: ওয়াও! একটা কবিতা দিয়েই এত পাওনা!! ভাবছি পড়াশোনাটা ছেড়ে কবিতার দিকে একটু সময় বেশি দিতে হবে। কান্ডখানা দেখোতো, এক কবিতাতেই মৃদুমন্দ বাতাস চলে এলো, তাতে আবার শাড়ির আঁচল উড়ছে...উফফ, আমি তোমার বাতাসে শাড়ির আঁচল উড়ার দৃশ্যটা এখনি ছবি তুলে ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে দিলাম। B-)

৯| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমি ফেরাউন সম্পর্কে লিখেছি, আমাদের জাতির বড় বড় ভুল ধারণাগুলোর মাঝে একটা বড় ভুল ধারণাকে সামনে আনার জন্য

১০| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:৪৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


ধন্যবাদ বিপ্লব, আমি আমার কম্প্যউটারের সমস্যা আপনাকে জানাবো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.