নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

CAUTIOUSLY OPTIMISTIC

বিপ্লব06

এই ব্লগের সকল লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।

বিপ্লব06 › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি শিক্ষামুলক পোস্টঃ এক সন্তানের তিনজন জেনেটিক বাবা-মা!!!

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:২৮

চলতি মাসের গোড়ার দিকে ইউ. কে. তে একটা ইন্টারেস্টিং আইন পাশ হয়েছে! এই আইন মোতাবেক দুইজন মা আর একজন বাবা থেকে একটি সন্তান জন্ম দেওয়া পুরোপুরি বৈধ! ব্যাপারটা ক্যামন উদ্ভট না? ইউ. কে.র মত দেশের বাঘা রাজনিতিকরা কেন এমনটি করলেন? ব্যাপারটা আসলে একটু জটিল। দেখা যাক কেন তারা এই আইনটি পাশ করলেন।



নরমালি, একটা বেবির জেনেটিক মেকআপের অর্ধেক আসে বাবা আর অর্ধেক আসে মায়ের কাছ থেকে। আর এই জেনেটিক ইনফরমেশনটা থাকে কোষের ভেতরে নিউক্লিয়াস নামের একটা প্রকোষ্ঠে (অরগানেল)। বেবির দেহের প্রত্যেকটা কোষে একই জেনেটিক মেটেরিয়াল থাকে। আর একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হইল যে কোষগুলোর ভেতরে, আরও অনেকগুলো প্রকোষ্ঠ থাকে, তাদের একটা একটার নাম মাইটোকন্ড্রিয়া, যেটার মধ্যে, খুব সামান্য পরিমাণে ডিএনএ থাকে। এই ডিএনএর পরিমাণ নিউক্লিয়াসের ডিএনএর তুলনায় নগণ্য। এই মাইটোকন্ড্রিয়া কে কোষের পাওউয়ার হাউস বলা হয়ে থাকে কারন এই জিনিসটা মুলত কোষের জন্য পাওয়ার প্রডাকশন নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। এই পাওয়ার হাউসের ভিতরে যেই ডিএনএ টি থাকে সেটা খুবই দরকারি জিনিস। এই ডিএনএ যদি ড্যামেজড হয় তাহলে ড্যামেজের প্রকৃতি ভেদে কোষের পাওয়ার সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আর যদি তা হয় তাহলে বেবির/মানুষের অনেক সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম হল, পেশীতে দুর্বলতা, হার্ট ফেইলিউর এমনকি মৃত্যুসহ আরও সিরিয়াস কিছু রোগ। আরও জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।



এখন ব্যাপারটা হল, মাইটোকন্ড্রিয়া জিনিসটা আসে মায়ের দিক থেকে, বাবার এখানে কোন অবদান নেই। মায়ের মাইটোকন্ড্রিয়াতে যদি সমস্যা থেকে তাহলে বেবিরও সমস্যা থাকবে। আর একবার সমস্যাটা হইলে এইটার কোন চিকিৎসা নাই। কারণ, দেহের সবগুলো কোষে সেইম মাইটোকন্ড্রিয়া আর সবগুলোই খারাপ। শুধুমাত্র ইউ কে তেই বছরে প্রায় ১৫০ জন এই সমস্যায় মারা যায়। এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে কি কোন রাস্তা খোলা নেই? উত্তর হলও আছে। আর উত্তরটা হল, থ্রি-প্যাঁরেন্ট (তিন বাবা-মা ওয়ালা) বেবি।



জিনিসটা সহজ করে বলতে গেলে এমন, মানে বেবি হবার আগেই এটার ব্যাবস্থা করতে হবে। এজন্য যেই মায়ের মাইটোকন্ড্রিয়া ডিফেক্টিভ, তার ডিম্বাণু থেকে ডিএনএ বের করে নেয়া হয়। এরপর আরেকজন সুস্থ মহিলার (ডোনার) ডিম্বাণু থেকেও ডিএনএ বের করে নেয়া হয়। এরপর, প্রথম মহিলার ডিএনএ, দ্বিতীয় মহিলার ডিম্বাণুতে প্রবেশ করানো হয়। ফলাফল হল, নতুন ডিম্বাণুটির জেনেটিক মেটেরিয়াল প্রথম মহিলার (মায়ের) আর মাইটোকন্ড্রিয়াটি ডোনারের। এরপর এই ডিম্বাণুকে শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত করা হয়। তারপর সেই নিষিক্ত জাইগোট কে মায়ের ইউটেরাসে স্থাপন করা হয়। তারপরের ঘটনা গতানুগতিক, যেটা আমরা সবাই জানি। নয়/দশ মাস পরে নতুন বেবি!!! (সিমিলার আরেকটা মেথড আছে)





মেথড ১ঃ এটা নিয়ে উপরে সামান্য আলোচনা করেছি।





মেথড ২ঃ এটা সিমিলার একটা মেথড।





এই প্রক্রিয়াতে যেই বেবি হয় সেটার মইটকন্ড্রিয়া পারফেক্টলি নরমাল এবং বাচ্চাও নরমাল হবার কথা। কিন্তু এটার সমস্যাটা হল। এই যে চেঞ্জটা করা হয় সেটা রিভারসেবল না। বেবি যদি মেয়ে হয় তাহলে সে মাইটোকন্ড্রিয়ার সাথে এই ডিএনএ তার বাঁচাকে দিবে। তার বাচ্চা তার বাচ্চাকে দিবে। এই ব্যাপারটাকে অনেকে মেনে নিতে পারছেন না। তাদের আর্গুমেন্ট হল, এভাবে যদি ইচ্ছামত বাচ্চা বানানো যায় তাহলে কিছুদিন পরে বাজারে কম্পিউটার কেনার মত করে বাচ্চার অর্ডার দেওয়া যাবে। মানে আপনি যদি চান যা আপনার বাচ্চাকে ফরসা হতে হবে আপনি তাহলে সেরকম বাচ্চার অর্ডার দিতে পারবেন। আর একটা ব্যাপার হল, এই মেথডটার সাইড এফেক্ট কি হতে পারে এটা সম্পর্কে কারো কোন ধারনা নেই। যদি খারাপ কিছু হয়?



কিন্তু ব্যাপারটা অতটা সিম্পল না। এখনো সেই লেভেলের টেকনোলজি আমাদের হাতে নেই যে আমরা ইচ্ছামত বাচ্চা মানাতে পারবো। আর আমরা মানবদেহ সম্পর্কে আসলেই খুব অল্প কিছুই জানি। যারা



যারা এই ব্যাপারটার পক্ষে তাদের যুক্তি হল এটা এনহেন্সমেন্ট না, এটা জাস্ট একটা ট্রিটমেন্ট। আর এনহেন্সমেন্ট না হলে এথিকালি ব্যাপারটা এক্সেপ্টেবল। আর তাদের কথা হল, যদি এই পদ্ধতি ফলো করে আপনি কিছু বাচ্চার মৃত্যু রোধ করতে পারেন তাহলে ব্যাপারটা কি খারাপ? অনেকে বলেন, যে এভাবে যদি কোন কাপল বাচ্চা নিতে চায়, যারা নরমালি নিতে পারে না (ডিফেক্টিভ মাইটোকন্ড্রিয়ার কারনে) তাহলে তাদেরকে কি বাচ্চা নিতে বাধা দেওয়া এথিকালি এক্সেপ্টেবল?



*** এই টেকনোলজিটা মানুষের উপর এখনো আপ্লাই করা হয়নি। আইনটা পাস হওয়াতে বিজ্ঞানীরা ব্যাপারটা নিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন মাত্র। জিনিসটা সফল হবে কি না তা কেবল ভবিষ্যতই বলতে পারবে।





সূত্রঃ বিবিসি , গার্ডিয়ান এবং এনসিবিআই-পাবমেড



মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:০৮

মোঃ মামুনুর রশীদ বলেছেন: চমৎকার তথ্যবহুল পোস্ট। আমি সামান্য কিছ্উ এড করতে চাই। এথিক্যাল ইস্যু বাদেও আরো কিছু সায়েন্টিফিক ব্যাপার থেকে যায় আসলে অনেক গবেষণার দরকার যা আপনি আগেই বলেছেন। একটা ব্যাপার হল, যখন দুইটা ভিন্ন ডোনর থেকে মাইটোকন্ড্রিয়া আর নিউক্লিয়াস মিশানো হবে তারা এক সাথে খাপ খায় কিনা এটা একটা কন্সার্ন। তাছাড়া, ইদুর ও মাছির উপরে এরকম গবেষণায় দেখা গেছে তাদের বাচ্চার স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা যায়, যেমন খুব তারাতারি বুড়ো হয়ে যায় (অনেকটা ক্লোনিং এ যে সমস্যা হয়েছিল), অকাল মৃত্যু, হেলদি না হওয়া ইত্যাদি। অনেকে এটাও বলেন, ডোনরের ডিম্বানুর সাইটোপ্লাজম (যেখানে মাইটোকন্ড্রিয়া থাকে), তা গ্রহিতার জিন কে এপিজেনেটিক্যালি কনট্রোল করতে পারে, ফলে কিছু জিনের উপরে বিরুপ প্রভাব পরতে পারে।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৪

বিপ্লব06 বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই মূল্যবান ইনফরমেশনগুলা এড করার জন্য। এই টপিকটা অনেকটা নতুন (আমাদের জন্য), পসিবল সমস্যাগুলা ক্লিয়ার হবে সময়ের সাথে সাথে। ডোনারের এগ এর সাইটোপ্লাজমের এপিজেনেটিকালি জিন কনট্রোলের বিষয়টা বেশ ইন্টারেস্টিং! বাকি সমস্যাগুলা ইন-ভিট্রো ফারটিলাইজেশনের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে।

আর রিস্ক তো থাকবেই!

২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:২৮

না পারভীন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৮

বিপ্লব06 বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!

৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: তথ্যবহুল পোস্ট| এই প্রযুক্তি আবিষ্কার হলে ভালোই হয়

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪৯

বিপ্লব06 বলেছেন: প্রযুক্তি আছে, খালি টেস্ট করা বাকি। আর যেই টেস্টে মানুষ জড়িত ওই টেস্টের অনুমুতি পাওয়া দুষ্কর।

আর অপ্রত্যাশিত কমপ্লিকেশন তো আছেই!

থ্যাঙ্ক ইউ!

৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৫২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: তা তো থাকবেই| প্রতীক্রিয়াশীলরা সবসময় বাঁধা দেবেই

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৫৯

বিপ্লব06 বলেছেন: আপনি ঠিক বলছেন! ওরা বাধা দিয়ে কিছু করতে পারে না! জাস্ট একটু দেরী করায় দেয় আরকি! :)

৫| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৩২

কলাবাগান১ বলেছেন: আমার পোস্ট টাও দেখতে পারেন
link

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৩৮

বিপ্লব06 বলেছেন: ইন্টারেস্টিং! আপনি এক বছর আগে এই সেইম পোস্ট দিছিলেন!!!

দারুণ তো!!!

৬| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:০৬

কলাবাগান১ বলেছেন: এটা আমার ক্লাশে আমি পড়াই গত বছর থেকেই

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৭

বিপ্লব06 বলেছেন: তাই নাকি! জেনে খুশি হলাম! কিছু এড করার থাকলে এড করে দিতে পারেন!

৭| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:১৩

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:

চমৎকার তথ্যবহুল পোস্ট।+++

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৭

বিপ্লব06 বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় :)

৮| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:২০

চার্লি বলেছেন: জানাটা জরুরি ছিল। ++++++

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৯

বিপ্লব06 বলেছেন: হুমম জানানোটাও জরুরি ছিল!

এই টপিকটা নিয়ে সারা দুনিয়ার মেজর নিউজ আউটলেটগুলা ব্যাস্ত ছিল কয়েকদিন। আমাদের দেশের গুলায় মনে হয় তেমন গুরুত্ব পায়নি ব্যাপারটা।

৯| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৫০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কৌতুহল জাগানিয়া পোস্ট ।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২০

বিপ্লব06 বলেছেন: ব্যাপারটা বেশ মজার। ব্যায়বহুল ও বটেক!!!

থ্যাঙ্ক ইউ!

১০| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৯

সুমন কর বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২০

বিপ্লব06 বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ সুমন কর!!!

১১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:২৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: প্রযুক্তি
দেখা যাক সফলতা।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:৫০

বিপ্লব06 বলেছেন: থিওরিটিক্যালি খুব সম্ভব। দেখা যাক বিজ্ঞানী ভাইয়েরা কি করতে পারেন!

১২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৪১

মায়াবী রূপকথা বলেছেন: কে কি পোস্ট দিল!!?

আইনটা দারুন। কত আগে চিন্তা করে রাখছে।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:৫৩

বিপ্লব06 বলেছেন: আপনার প্লেসে আমি হইলে কইতাম "একই অঙ্গে এত রূপ???"

নতুন জিনিস তাড়াতাড়ি এডপ্ট করার ব্যাপারে নরমালি আম্রিকা আগায় থাকে, এইবার ওরা নিয়া গেল আরকি!

থ্যাঙ্ক ইউ!!! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.