নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

CAUTIOUSLY OPTIMISTIC

বিপ্লব06

এই ব্লগের সকল লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।

বিপ্লব06 › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিরোইজম/সেলফ-লেস অ্যাক্ট কি আসলেই সেলফ-লেস???

২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৪২


ছবিঃ ইন্টারনেট

হিরো/নায়ক ব্যাপারটার সাথে রিয়াল লাইফে আমরা সবাই পরিচিত। নায়ক শব্দটার সাথে আমার পরিচয় বাংলা ছবির নায়ক জসীম (আংকেল?) এর দ্বারা। নিষ্ঠুর নামের ছবিটা দিয়াই এই অধমের হিরোগিরির সাথে পরিচয়। হিরো বলতে আমাদের মধ্যে যেই আন্ডারস্ট্যান্ডিঙটা আছে সেইটা হইল, একজন আম পাবলিক তার লিমিটেড ক্যাপাবিলিটি লইয়া মহাপরাক্রমশালী ভিলেইন/সমাজ/জাদুকর এর সাথে জীবন বাজি রাইখা যুদ্ধ কইরা তারে হারাইয়া নায়িকারে উদ্ধার করবে অথবা সমাজে জাস্টিস প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু একচ্যুয়ালি হিরো ব্যাপারটা বেশ ব্রড। সবাই এক একজন হিরো হইয়া উঠতে পারে ডিপেন্ডিং অন্য দ্যা সারকামস্টেন্স।

ব্যাপারটারে এক্সপ্লেইন করতে দুইটা উদাহরণ দেই।

একঃ ধরা যাক আমাদের মধ্যে দুইজন রাফি আছে, একজনের নাম রাফি ওয়ান, আরেকজন রাফি টু। গল্পের খাতিরে ধরেই নিই এই দুইজনের একজনও সাঁতার জানে না। এখন মনে করা যাক, এরা দুইজনে মিলে একদিন রাতে মণ্টউক বেড়াইতে গেছে। যাইয়া পানির পাশে বইসা দুইজনে তুমুল আড্ডা দিচ্ছে। এক পর্যায়ে রাফি ওয়ানের মনে হইল সে পানিতে একটু পা ভেজাবে। ফাইজলামি করতে করতে একটু পরে রাফি ওয়ান একটু বেশি পানিতে চইলা গ্যাছে। আর সাথে সাথে একটা বড় ঢেউ আইসা তারে মারছে টান। এতক্ষণে রাফি টু দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া মজা দেক্তেছিল।

এইবার রাফি ওয়ান লবণাক্ত পানি খাইতেছে আর চিল্লাইতেছে মামা আমারে উঠা, ডুইবা যাইতেছি তো!!! রাফি টু এই দৃশ্য চান্দের আলোয় দেইখা কি করবে ভাইবা পাইতেছে না। সে তো নিজেও সাঁতার জানে না। এই রাইতে, সাগরের পানিতে নাইমা রাফি ওয়ানেরে উদ্ধার করতে যাওয়া মানে নির্ঘাত মৃত্যু। আর বেশি ভাবাভাবি না কইরা রাফি টু একসময় দৌড়াইয়া বেশি পানিতে নাইমাই গেল।

দুইঃ ধরা যাক জলিল (পড়তে হবে জলিল্ল্যা) রাইতে হেডফোন দিয়া গান শুনতে শুনতে বাড়ি যাইতেছে। একটা ঝোপঝাড় ওয়ালা জায়গার পাশ দিয়া যাওয়ার সময় ওর চোখের কোণে নড়াচড়া ধরা পড়ল। জ্বলিলের আবার হাল্কা ভুতের ভয় আছে। সে মনে মনে দৌড় দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়া চোরা চোখে ঝোপের দিকে তাকাইল। সে ওইখানে দুইজন লোকেরে নড়চরা করতে দেইখা ভয়ে একটু জোড়েই চিল্লানি দিল, তার চিল্লানি শুইনা একজন উইঠা প্যান্ট টানতে টানতে আর আছাড় খাইতে খাইতে দৌড়াইয়া চইলা গেল। জলিল তাঁর হেডফোন খুইলা হাতে নিছে, এরই মধ্যে কানে হাল্কা ফোঁপানির আওয়াজ আসতেছে। সে উপরআলার নাম লইয়া, ঝোপের ভিত্রে যাইয়া দেখে একটা মাইয়া। ব্যাপারটা যে জোরপূর্বক শ্লীলতাহানির এইটা বুঝতে জ্বলিলের কয়েকটা মূল্যবান সেকেন্ড লাইগা গেল। এরপর সে মাইয়াটারে কইল তুমি চিন্তা কইরো না, আমি পুলিশ কল দিতাছি। মাইয়া কইল প্লিজ, না……আ। কাউরে কইলে মান সম্মান বলতে গেলে কিচ্ছু থাকবে না। জলিলের মনে মাইয়াটার জন্য সহানুভূতির ঢেউ জাইগা উঠল। আহারে বেচারা!!! সে কইল ঠিক আছে তাইলে তুমি আমাদের সাথে বাসায় থাকবা। কালকে আমি নিজে তোমারে বাসায় পৌঁছাইয়া দিমু। এরপরে জলিল মাইয়ারে নিজের বাড়িতে নিয়া রাতটা গেস্টরুমে তাকতে দিল।

এরপরের দিন সকালে জলিল মেয়েটার জন্য নাস্তা বানাইল। মেয়েটা যখন ঘুম থেইকা উইঠা নাস্তার টেবিলে আইলো তখন জলিলের মুখ হাঁ হইয়া গেল। তারে একবার ভালো কইরা দেইখাই জলিল তব্দা খাইয়া গেল। লোক ক্যামনে এত সুন্দরি হয়? নাস্তা খাইতে খাইতে জলিল মেয়েটার সম্পর্কে অনেক কিছু জানলো। তারপরে তার মনে হইল মেয়েটা তার জন্য পারফেক্ট ফিট। সো তারে পিরিতের অফারটা দেওয়াই যায়! কিন্তু জলিল জানে যে মেয়েটা মাত্র একটা ট্রমা থেইকা বাঁচছে, এরে এইরকম অফার দিলে মেয়েটা কৃতজ্ঞতা বোধ থেকে না করতেই পারবে না। সে মূলত হ্যাঁ বলতে বাধ্য। জলিল নিজেও কোনোদিক থেকে খারাপ না। জলিল আবার চিন্তা করতেছে, কিন্তু যদি মেয়েটা ব্যাপারটারে অন্যভাবে ইন্টারপ্রিট করে যে, “সব পোলারাই খারাপ। এ আমারে আরেকজনের হাত থেইকা বাচাইছে নিজের জন্য, আমার সাথেই এইগুলা হয় ক্যারে?” এইরকম যদি হয়, তাইলে মাইয়াটা একটা ট্রমা না কাটতেই যে এমন আরেকটা ট্রমার শিকার হবে সেইটা থেইকা কোনদিন উঠতে পারবে না। আর বেশি চিন্তাভাবনা না কইরা জলিল মেয়েটারে সান্ত্বনা দিয়া বাড়িতে দিয়া আসলো। এর পরে মেয়েটা জলিলের বেস্ট ফ্রেন্ড হইয়া গেল। আর এইদিক জলিল্ল্যা যতবার মাইয়ার কথা চিন্তা করে ততবার জইল্লা-পুইড়া ছারখার হইয়া যায়! জলিল আর তারে বলে না!!!

উপ্রের দুইটা হইল ক্লাসিক হিরোইজম এর উদাহরণ। আম-পাব্লিকেরা যখন নিজের স্বার্থরে ছোট কইরা দেইখা আরেকজনের স্বার্থ রক্ষা করে ওইটাই মূলতঃ হিরোইজম। এক নম্বর উদাহরণে রাফি টু নিজের লাইফেরে হাঁতে নিয়া রাফি ওয়ানেরে উদ্ধার করতে গেছে নিজের মৃত্যু নিশ্চিত যাইনাও! আর দুই নম্বর উদাহরণে, জলিল্ল্যা একটা অপরিচিত (পরে তার ভালো লাগার) মাইয়ারে এক ট্রমা আর পসিবলি আরেক ট্রমা থেইকা বাঁচাইতে যাইয়া নিজে ইমোশনাল বিটিং লইতেছে। কিন্তু কেন? ইভলিউশনারি পারস্পেক্টিভে থেকে চিন্তা করলে ব্যাপারটা বেশ কাউন্টার-ইন্ট্যূইটিভ। মানুষের সারভাইভাল ইন্সটিঙ্কট হইল “নিজে বাচলে বাপের নাম”। এনিম্যালদের সাকসেস ডিফাইন করা হয়, সে কতজন বাচ্চা পয়দা কইরা দুনিয়ায় রাইখা যাইতে পারতেছে তাঁর উপ্রে। কিন্তু রাফি টু লজিকের উল্টা দিকে দৌড় মারল কেন? আর জলিল্ল্যা নিজে নিজে ছ্যাকা খাইয়া ব্যাকা হইতেছে কেন? এই ব্যাপারগুলা আমারে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই খুচাইতেছিল। কুনু এক্সপ্লানেশনই খুইজা পাইতেছিলাম না।

সপ্তাহখানেক আগে “দ্যা আনথিঙ্কেবলঃ হু সারভাইভস হোয়েন ডিজাস্টার স্ট্রাইক্স এন্ড হোয়াই” বইটা পড়তে যাইয়া একটা ইন্টারেস্টিং থিওরি পাইলাম। বইটার একটা পার্টে রাইটার ভদ্রমহিলা আরগু করছেন যে, হিরোইজম/সেলফ-লেস এক্টগুলা আসলে মোটেই সেলফ-লেস এক্ট না। এই এক্টগুলার পেছনে সাব-কন্সাস লেভেলের সেলফ-প্রমোটিং রিয়েজন আছে।

আমাদের সবার মনেই একটা সেলফ ইমেজ আছে, যে আমি এই এক্স ধরনের মানুষ। আমাদের অধিকাংশ কাজকর্মই থাকে ওই ইমেজটাকে রক্ষা করতে। আমরা সবাই নিজেকে ভালো মানুষ মনে করি, আমাদের ফ্লগুলারে আমরা সবসময় জাস্টিফাই করে রাখি। এই সেলফ-লেস এক্ট গুলার একটা বড় কারন হইল সেলফ-লেস এক্ট ছাড়া সেকেন্ড অপশন যেইটা থাকে সেইটা দিয়া নিজেরে জাস্টিফাই করাটা টাফ হইয়া যায়।

রাফি টু’র অপশন গুলা বিবেচনা কইরা দেখা যাক। এইখানে রাফির অপশন ছিল দুইটা। এক, পানিতে যাইয়া রাফি ওয়ানরে উদ্ধারের চেষ্টা করা যেইটাকে আমরা হিরোইক এক্ট বইলা থাকি। দুই, দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া রাফি ওয়ানরে ডুবতে দেখা। ইন ফ্যাক্ট দুই নম্বর অপশনটা হইল বেস্ট/লজিকাল অপশন যেইটা আম-পাব্লিকেরা করে। ইদানীং আম পাবলিকরা ওই সময়ের ছেল্পি তুইলা ফেইসবুকে/ইন্সটাগ্রামে হ্যাস্ট্যাগ দিয়া দিতে পারে!!! কিন্তু দুই নম্বর অপশনটার ফলাফলটা কি হইতে পারে, রাফি ওয়ান ডেড আর রাফি টু পরে নিজের ফ্রেন্ডরে নিজের চোখের সামনে মরতে দেইখা ট্রমাটাইজড হওয়া। কিছু লোকের ব্রেইন ইমিডিয়েট মৃত্যুর চেয়ে ট্রমাটাইজ হওয়াটারে বেশি ওজন দেয়। ফলাফল রাফি টু এর ইন্সটিঙ্কটিভলি পানিতে জাম্প দিয়া ডুইবা যাওয়া (রাফি ওয়ান তো আগেই ডুইবা গ্যাছে!)। যদিও রাফি টু এর ব্যাপারটারে জাস্টিফাই করার যথেষ্ট গ্রাউন্ড আছে।

আর জলিল্ল্যা মাইয়াটারে আরেকটা ট্রমা দেওয়ার ভয়ে নিজে ট্রমা খাইতেছে। কারন জলিল্ল্যার ব্রেইন তারে বলতেছে মাইয়াটারে পিরিতের কথা বইলা ট্রমা দিলে নিজের বিবেকের যে স্টিং হবে তার চাইতে এই ট্রমা হ্যান্ডেল করা অনেক সহজ। এই জন্য জলিল্ল্যা মুটামুটি সাব কন্সাসলি ছ্যাকা খাইতেছে।

আরেকটা কারন হইল ছেলে হিরোরা চাইলেই নরমালের চাইতে বেশি মেট (সুন্দরি) পাবে (কেন পাবে এইটা বুঝতে জাস্টিন বিবারের ফলোয়ার সংখ্যা দেখলেই বুঝা যায়) এতে কইরা তাদের জিনগুলা বেশী স্প্রেড হবে। আর জিন স্প্রেড করাটাই যেহেতু ইভোলিউশনারি সাকসেস, সো তারা সাকসেসফুল। আর যদি ওরা মইরাও যায়, তাইলে তাদের ক্লোজ ফ্যামিলি হিরোর ফ্যামিলি হিসেবে যে এটেনশন টা পাবে সেইটাতেও হিরোর লাব। কারন ওরাও পারসিয়ালি হিরোর জিন বেয়ার করে। হিরোর হিরোইজম তাদেরও জিন স্প্রেড করার পসিবিলিটিও বাড়াইয়া দেয়।

আর মেয়ে হিরোদের বেনিফিটটা হইল, তারা হাইয়ার কুয়ালিটি (নট কুয়ান্টিটি) মেট ইজিলি পাবে (কেন পাবে এইটা বুঝতে সেলেনা গোমেজের ফলোয়ার সংখ্যা দেখলেই ব্যাপারটা ক্লিয়ার হইয়া যাবে)। হিরোর এক্সট্রা এটেনশনটা তাদের এই বেনিফিট দিবে। অনেকে আরগু করতে পারে কুয়ান্টিটি না কেন? নরমালি ফিমেলদের জন্য পলিগ্যামি ব্যাপারটা বেশি রিস্কি। মাঝে মাঝে লাইফ থ্রেটেনিংও বটে। আর ছেলেদেরকে জেনারালি পলিগ্যাম্যাস হিসেবে ধরা হয় (কথাগুলা অধিকাংশ ম্যামালদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য)।

এমনও হইতে পারে এই হিরোগিরি ব্যাপারটারে আসলে আমরা স্পিসিস হিসাবে ডেভেলপ করছি যাতে ক্রাইসিস এর টাইমে পুরা স্পিসিস্রে বাঁচাইতে একজন সিঙ্গেল মানুষ নিজেরে কোরবান করতে পারে।

মুলতঃ হিরো হইবার ব্যাপারটা যে পুরাপুরি সম্প্রদান কারকে দান করিয়া দেওয়া না ব্যাপারটার উপড়ে লাইটপাত করাটাই এই আলুচনার উদ্দেশ্য! ফকিরদের/হোমলেসদেরকেও মানুষ ফ্রিতে কিচ্ছু দেয় না। হয় তাদের দেইখা খারাপ লাগে, এইটা থেইকা বাচার জন্য অথবা পরকালে বেহেস্তে প্লেস বুকিং দেওয়ার জন্য তাদেরকে টাকা/ফুড দেয়। মজার ব্যাপার হইল, হিরোদেরকে সবাই লাইক করে, এইটা থেকেও এক্টিভ্লি হিরোগিরি দেখানোর একটা টেন্ডেন্সি আসতে পারে। কিন্তু সাব কন্সাস লেভেলে হিরো হইবার ব্যাপারটা একটা ফ্যাসিনেটিং ব্যাপার!!!

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লজিকগুলা একটা থিওরির অংশ মাত্র। থিওরির সত্য হইতেই হবে এমুন কোন কথা নাই।


মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:০৫

নিনজা টার্টল বলেছেন: থিওরি সত্য হবার সম্ভাবনা বেশি!

২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:৫৫

বিপ্লব06 বলেছেন: আমারও তাই মনে হয়।

ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন!

২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৫৬

মনিরা সুলতানা বলেছেন: হইতারে...

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:২৯

বিপ্লব06 বলেছেন: হইতারে ক্যারে? বলেন অবশ্যই!!!

ভালো থাকবেন!

৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৪২

মনিরা সুলতানা বলেছেন: অবশ্যই কেমনে কই ,অনেকেই আছে নিজেদের বাহাদুরি প্রচার করে না ।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:৪৬

বিপ্লব06 বলেছেন: আমি চেষ্টা করছি হিরোইজমের আইডিয়াটা ব্যাখ্যা করার, কেউ জানা না জানার সাথে এইটার কোন রিলেশন নাই! যে হিরোইক কাজ করে সে হিরো, কেউ জানুক আর নাইবা জানুক।

না চাইলে আর অবশ্যই বলা লাগত না। আপনার মতামত বইলা একটা কথা আছে না!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.