![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকাল সকাল শফিককে আমার রুমে দেখে আমি তেমন গা করলাম না কারন সে তো আর অফিসে আসছে না যে সময় দেখে আসতে হবে। তার মুখ চোখ উজ্জল দেখে বুঝলাম কোন কিছু নিয়ে সে বেশ উত্তেজিত।
চেয়ারে বসতে বসতে সে বলল ‘দোস্ত হেব্বি খবর আছে!’
আমি কিছুটা আগ্রহ নিয়ে বললাম ‘হেব্বি খবর কার? আমার না তোর?’
শফিক বলল ‘আমার!’
আমি বললাম ‘বয়ান কর!’
শফিক বলতে শুরু করল ‘দোস্ত মুনারা সপরিবারে পাশের (নাম বলছি না) উপজেলায় এসেছে। ওর বাবা ওখানকার সোনালী ব্যাংকে বদলি হয়ে এসেছে রে!’
মুনা শফিকের চাচাতো বোন। শফিক তাকে পছন্দ করে। পছন্দ করে মানে ভালবাসে। কিন্তু বেচারা বিষয়টা মুনাকে আজও জানাতে পারে নাই। জানাবার মাধ্যম চিঠি, সেটা দেবার সুযোগ তার কোনদিন হয় নাই। অথবা বলা যেতে পারে সাহস করে সেই সুযোগ সে করতে পারে নাই। আশির দশকের প্রেম আর কি। তখন প্রায় সবই প্লেটনিক লাভ ছিল। তাদের সারাজীবনে সাক্ষাৎই হয়েছে হয়ত দুই তিনবার।
শফিক বলেই চলেছে ‘গতকাল রাতে খাবার টেবিলে আব্বা খবরটা বলল। দোস্ত তখন থেকে অপেক্ষা করছিলাম তোর কাছে খবরটা দেবার জন্য। তাই সকাল সকাল চলে আসছি।‘
আমি বললাম ‘শুনে প্রীত হইলাম। নাস্তা না করলে নাস্তা কর।‘
শফিক বলল ‘না নাস্তা করি নাই। বাসায় গিয়ে নাস্তা করব। আমি তোর কাছে এসেছি কারন তোকে নিয়ে আমি নাস্তা করে বের হব।‘
আমি বললাম ‘কোথায় যাবি।‘
শফিক বলল ‘ পাশের উপজেলায়। মুনাকে দেখতে যাব। জাস্ট ওকে এক পলক দেখে চলে আসব। কিন্তু কিভাবে কি করব সেটা বুঝে উঠতে পারছি না তাই তোর কাছে আসছি। বুদ্ধি বের করতে হবে।‘
আমি বললাম ‘বুদ্ধি বের করা তো পরের কথা আমি যাব কিনা সেটাই বিষয়। সেখানে যেতে আসতে দুপুর পার হয়ে যাবে। বাসায় কি বলব তখন।‘
শফিক বলল ‘আরে নাহ। ধর আমাদের যেতে ৪৫ মিনিট আসতে ৪৫ মিনিট। মোট দেড় ঘণ্টা। আর ওখানে ধর এক ঘণ্টা। মোট আড়াই ঘণ্টার মামলা। আমরা যদি সাড়ে দশটায় বের হই তাহলে দুপুর একটার মধ্যে ফিরে আসতে পারব।‘
আমি বললাম ‘তুই হুমায়ূনকে নিয়ে যা। আমি যাব না।‘
শফিক বলল ‘দোস্ত তোর দেশের বাসা ঐ উপজেলায়। কোন ঝামেলা হলে তুই ট্যাকল দিতে পারবি। তুই গেলে সাহস পাব রে দোস্ত।‘
আমি বললাম ‘কি বলিস আমার উপজেলা। আমার উপজেলা ঐ উপজেলার পিছনে। আমি ওখানে কাউকে চিনি না। আর ঝামেলার কথা বলছিস কেন। তুই কি কিডন্যাপ করতে যাচ্ছিস। তোর কথায় ঝামেলা আছে। আমি নাই।‘
এরপর শফিকের বন্ধুত্বের মর্যাদা এবং দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ ভাষণ শোনার পরে নিজেকে না যাবার অপরাধে অপরাধী মনে হতে লাগল। বললাম ‘চল যাব তুই ভাষণ বন্ধ কর।‘
হাতের যৎসামান্য টাকা নিয়ে দুজন বাসে উঠলাম। পরিকল্পনা হল মুনাদের বাসায় চলে যাব। কারন শফিকের যেহেতু চাচার বাসা কাজেই বাসায় যেতে তো কোন সমস্যা নাই। শফিক বলবে আমার সাথে এদিকে একটা কাজে এসেছিল। ফেরার পথে দেখা করে গেল। খুবই সিম্পল বিষয়। সেদিন ওয়ার্কিং ডে থাকায় চাচা বাসায় থাকবেন না। থাকবেন চাচি এবং মুনা ও তার ছোট ভাই। কাজেই বেশি জেরার মাঝেও পরতে হবে না।
বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বাসে চেপে বসলাম দু’জন। বাস নির্ধারিত সময়ে আমাদের গন্তব্যে নামিয়ে দিয়ে হুস করে চলে গেল। বাস থেকে নেমে রিক্সা নেব।
শফিককে জিজ্ঞাসা করলাম ‘বাসা কোথায় রে’।
শফিকক বলল ‘সেটা তো জানি না।‘
আমি বললাম ‘আশ্চর্য তুই বাসার ঠিকানা নিয়ে আসিস নাই কেন। এখন কি আমরা সব বাসায় নক করে বলব এটা কি মুনার বাসা?’
শফিক বলল ‘আমি কি করে বাসার ঠিকানা জানব।‘
আমি বললাম ‘না সেটা তো ঠিক। বাসার ঠিকানা আমারই জানা উচিত ছিল। আমারই দোষ।‘
শফিক বলল ‘দোস্ত রাগ করিস না। কি করা যায় সেটা ভাবি। আয় চায়ের দোকানে চা খাই আর ভেবে বুদ্ধি বের করি।‘
বসলাম আমরা চায়ের দোকানে। চায়ের অর্ডার দেয়া হল। পরক্ষনেই আমার মনে হল ‘আরে উনি তো সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার। কাজেই এই ছোট্ট উপজেলায় এই পরিচয় দিয়েই তো বাসা বের করে ফেলা সম্ভব। আর আমরা বসেছি চায়ের দোকানে। এখানেই তো তথ্যের ভান্ডার।‘
চা’ওয়ালাকে বললাম। উনি আমাদের বাম পাশে বসে থাকা একজনকে বললেন। তিনি আমাদের ঠিকানার পরিবর্তে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলেন। আমরা ওনার কে হই জিজ্ঞাসা করলেন। ম্যানেজারের ভাতিজা শুনে আবার বললেন তাহলে আমরা ঠিকানা জানি না কেন। কি মুশকিল এত দেখি পুলিশের জেরায় পড়লাম। শফিক বলল ‘চাচা নতুন বদলি হয়ে এসেছেন আর এখানে আমাদের প্রথম আসা বলে ঠিকানা জানি না।‘ উনি মনে হয় সন্তস্ট হলেন। ঠিকানা বলে দিলেন। শুধু বলে দিলেন না একটা রিক্সা ডেকে আমাদের তুলেও দিলেন।
চাচায় বাসায় গিয়ে দরজা নক করার আগে শফিকের নার্ভাস চেহারা দেখে বললাম টেনশন করিস না একটা দোয়া পড়ে বুকে ফুঁ দে।
দরজা নক করতে একজন মহিলা দরজা খুলে দিলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন কে এবং কার কাছে এসেছি। শফিক পরিচয় দিতে উনি দাঁড়ান বলে ভিতরে চলে গেলেন। কিছু পরে একজন ভদ্রমহিলা আসলেন এবং শফিককে বললেন “আরে তুমি, আস ভিতরে আস।“ উনি শফিকের চাচী।
বিশাল উত্তেজনা নিয়ে আমরা বাসায় ঢুকলাম। উনি বারান্দায় তরকারি কাটছিলেন। আমরা সেখানেই মোড়া টেনে বসে পড়লাম। আমার পরিচয় শফিক তার চাচীকে দিলো। পরিচয়সহ অন্যান্য কথা চলছে কিন্তু নায়িকার দেখা নাই। শফিক আমাকে দেখিয়ে দিয়ে বলল “ওর একটা কাজে এখানে এসেছি তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে দেখা করে যাই”। বাসা বেশ চুপচাপ। আমরা উস্খুস করছি। মুনা আসছে না কেন। বিস্কুট আসল। চা আসল। মুনা আসল না। বিস্কুট চা প্রায় শেষের দিকে। তবুও মুনার দেখা নাই। শফিক না পেরে বলেই ফেলল “মুনাকে দেখছি না যে চাচী?” চাচী বললেন “মুনা তো স্কুলে গেছে। দুপুরের দিকে ফিরবে।“ আমরা পরস্পরের দিকে তাকালাম। অহেতুক প্রায় আধাঘন্টা খরচ হল। এখন কি করা যায়। আমি চাচীকে বললাম আমার কাজ সেরে চলে যেতে হবে কাজেই আমাদের উঠতে হচ্ছে। উনি দুপুরে খেয়ে যেতে বললেন। কিন্তু আমরা তো বাসায় বলে আসিনি কাজেই অতক্ষণ অপেক্ষা করা যাবে না। আমরা উঠে পড়লাম।
বাহিরে বের হয়ে শফিকের মন খুব খারাপ। বেচারির মুখ দেখে আমারই খারাপ লাগছে। বললাম মন খারাপ করিস না দোস্ত, চল আমরা স্কুলের কাছে যাই। স্কুল ঘণ্টাখানেক মধ্যে ছুটি হবে নিশ্চয়। কারন টিফিন টাইম তখন সকল সরকারি স্কুলে ১টায় হত। শফিক খানিকটা আশা পেল। দু’জন একটা রিক্সা নিলাম। গন্তব্য গার্লস স্কুল।
অচেনা এলাকায় গার্লস স্কুলের সামনে দাঁড়ানো একটা বিব্রত এবং খানিকটা ভয়ের ব্যাপার। আমরা রিক্সা থেকে স্কুলের সামনে নেমে আশেপাশে রেকি করলাম যে কোথায় দাঁড়ানো যায়। কিছু দূরে একটা মিষ্টির দোকান দেখা গেল। আমরা মিষ্টির দোকানে গিয়ে বসলাম। উদ্দেশ্য মিষ্টি অর্ডার করে আস্তে আস্তে খেয়ে সময় পার করব। হাতে আছে প্রায় ত্রিশ মিনিট। শফিক বলল “দোকানে চাও আছে রে। চা খেলে আরও কিছু সময় পার হবে।“ হাতে তো বেশি টাকা নেই। তাই অনেক মিষ্টি অর্ডার দিয়ে খাব সেটারও উপাই নেই। যাই হোক দু’জন মিষ্টির অর্ডার করলাম। মিষ্টি চলে আসল। আমি আবার মিষ্টির পোকা। দুটো মিষ্টি একটা পিরিচে। আমি আস্তে খাওয়ার হিসাব ভুলে ফটাফট দুটো মিষ্টি খেয়ে ফেললাম। শেষ করে শফিকের দিকে তাকিয়ে দেখি সে একটা মিষ্টি চামচ দিয়ে অর্ধেক করে মুখে দিয়ে চাবাচ্ছে। আমি ভুল বুঝতে পেরে সরি-চোখে তাকালাম। আমার জন্য আরও দুটো মিষ্টি চলে আসল। এবার আস্তে আস্তে খাওয়া শেষ হল। চা খাওয়াও শেষ হল। কিন্তু সময় যেন যেতে চায় না। এত কিছু খাবার পরেও দেখি দশ মিনিট বাকী আছে। দোকানে আরও পাঁচ মিনিট থেকে বের হয়ে দোকানের পাশেই দাঁড়ালাম। রাস্তার ওপাড়ে সামান্য দূরে বায়ে স্কুলের গেট।
শুরু হল এই পাঁচ মিনিট কাটানো। এই পাঁচ মিনিট মনে হচ্ছে পাঁচ ঘন্টা। আমাদের বেশ অস্বস্তি হচ্ছে। এভাবে অচেনা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। তাও গার্লস স্কুলের পাশে। রাস্তা দিয়ে যেই যাচ্ছে তাকে দেখেই মনে হচ্ছে শিওর আমাদের দেখে সাতপাঁচ ভাবছে। কিছু ছেলে সামনে দিয়ে যাচ্ছে তাদের দেখে বেশ ভয় ভয় লাগছে। আমাদের ডেকে জিজ্ঞেস করে কিনা সেটার ভয় লাগছে।
স্কুলের ঘণ্টা বাজল। আমাদের চোখ স্কুলের গেটে। মেয়েরা বেরিয়ে আসছে। দলে দলে। আমি তো মুনাকে চিনি না তাই শফিকের সিগন্যালের অপেক্ষায় আছি।
আমি “শফিক, দেখতে পেয়েছিস।“
শফিক “নারে।“
আমি “ভাল করে খেয়াল কর ব্যাটা।“
শফিক “আরে আমি এক পলক দেখলেই চিনতে পারব। মিস হবে না।“
একে একে সব ছাত্রীরা বেরিয়ে গেল। কিন্তু মুনাকে দেখা গেল না। শেষ দানও মিস হল। শফিক ঠোঁট কামড়ে কষ্ট চেপে আছে। আমারও খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু কিছু করার নাই।
আমি বললাম চল আবার বাসায় যাই। গিয়ে বলি আমার কাজ শেষ হতে বিকেল হবে। তোর চাচার বাসায় দুপুরে খাব। বাসায় গেলে তো পাওয়া যাবেই।
শফিকের কানে কিছুই ঢুকছে না। ওর মন ভেঙ্গে গেছে। নিরবতা ভেঙ্গে শফিক বলল “চল বাসায় চলে যাই। এখন রওনা দিলে তাও দেড়টা বা দুইটায় বাসায় ঢুকতে পারব। লাক আজ ফেবারে নেই।“
আমি বললাম চল।
দু’জন পা বাড়াতেই কিছু ছেলে আমাদের ঘিরে ফেললো। আমরা কারা, কোথায় থেকে আসছি, এখানে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে কি করছি চলছে প্রশ্নের ঝড়। ছেলেগুল বেশ গুন্ডা টাইপের। আমরা যে ঝড়ের ভিতর দিয়ে গেছি তার কাছে এসব কিছুই মনে হচ্ছে না। মন ও মেজাজ কোনটাই আমাদের ভাল নাই। আমি বললাম আমার চাচা এই পথে যাবেন। আমরা ওনার সাথে যাব বলে এখানে দাঁড়িয়ে আছি। আমি আমার পাশের উপজেলার পরিচয় দিলাম। তাতে তারা সন্তস্ট হল না। একজন বলল এদের নিয়ে কলেজের সংসদ রুমে চল। শফিকের এসব কিছু গায়ে লাগছে। তার পাওয়া কষ্টের কাছে এসব কোন ঘটনা বলে তার মনে হচ্ছে না। আমি বললাম চলেন।
আমাদের কলেজের সংসদ রুমে নিয়ে আসা হল। একজন নেতা গোছের হয়ত কলেজর ভিপি বা জিএস হবেন, ওনার সামনে দাড় করানো হল এবং বলা হল আমরা অনেক্ষন ধরে গার্লস স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে মেয়েদের টিজ করছিলাম।
নেতা “এই তোমাদের বাসা কোথায়? তোমাদের তো এই এলাকার কেউ বলে মনে হচ্ছে না।”
আমি ভাবলাম শফিকের চাচার কথা বললে সহজে ছাড়া পাওয়া যাবে কিন্তু যদি প্রমানের জন্য ওনার বাসায় নিয়ে যায় তাহলে তো কেলিংকারির এক শেষ। আমি বললাম “এখানে আমার চাচা আমাদের নিয়ে যাবে বলে দাঁড়িয়ে ছিলাম আর ভাই ওরা মিথ্যা বলছে আমরা মেয়েদের কোন টিজ করি নাই।“
নেতা “অন্য এলাকা থেকে আসে আমাদের এলাকায় টাংকি মারা; এত সাহস!”
শফিক কোন কথা বলছে না।
আমি বললাম “না ভাই আমরা এমন কিছুই করি নাই।“
আচমকা আমার মাথায় আমার এক ভাইয়ের নাম মনে এলো যে অত্র জেলার বেশ বড় নেতা।
আমি বললাম “ভাই শোনেন, ****** ভাই আমার ভাই হয়। আপনার যদি ওনার সাথে যোগাযোগ থাকে তাহলে আমার নাম বলবেন। আমি এই ধরনের ছেলে না ভাই। আমি যা বলছি সত্যি বলছি।“
নামে কাজ হল। উপজেলার পাতি নেতা জেলার হোমরাচোমড়া নেতার নামে কাবু হয়ে গেল। বলল “আরে তুমি আগে বলবে না ভাই। ঠিক আছে তোমরা যাও। চা খাবে?” আমরা না বলে বের হয়ে বাসস্ট্যান্ডের দিকে ছুটলাম। সর্বচ্চো আড়াইটার মধ্যে বাসায় পৌঁছুতে হবে।
***************************************************************************************
এই ঘটনার প্রায় এক যুগ পরে মুনার সাথে আমার ও শফিকের দেখা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমরা তখন শেষবর্ষের ছাত্র। মুনা তার প্রেমিকের সাথে কাম্পাসে ঘুরছে। শফিক আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল। আমি আচমকা মুনাকে বললাম “তোমাকে নামে আমি চিনি। আমি আর শফিক স্কুলে থাকতে তোমাদের বাসায় গিয়েছিলাম; তোমার স্কুলের সামনেও তোমাকে দেখতে দাঁড়িয়ে ছিলাম।“ মুনা হাসতে হাসতে বলল “আমি জানি ভাই। আমি স্কুল থেকে বের হয়ে শফিক ভাইকে দেখে ছাতা দিয়ে ঢেকে আপনাদের সামনে দিয়েই চলে এসেছি।“ আমি ও সফিকুল পরস্পরের দিকে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে তাকালাম।সকাল সকাল শফিককে আমার রুমে দেখে আমি তেমন গা করলাম না কারন সে তো আর অফিসে আসছে না যে সময় দেখে আসতে হবে। তার মুখ চোখ উজ্জল দেখে বুঝলাম কোন কিছু নিয়ে সে বেশ উত্তেজিত।
চেয়ারে বসতে বসতে সে বলল ‘দোস্ত হেব্বি খবর আছে!’
আমি কিছুটা আগ্রহ নিয়ে বললাম ‘হেব্বি খবর কার? আমার না তোর?’
সফিকুল বলল ‘আমার!’
আমি বললাম ‘বয়ান কর!’
শফিক বলতে শুরু করল ‘দোস্ত মুনারা সপরিবারে পাশের (নাম বলছি না) উপজেলায় এসেছে। ওর বাবা ওখানকার সোনালী ব্যাংকে বদলি হয়ে এসেছে রে!’
মুনা শফিকের চাচাতো বোন। শফিক তাকে পছন্দ করে। পছন্দ করে মানে ভালবাসে। কিন্তু বেচারা বিষয়টা মুনাকে আজও জানাতে পারে নাই। জানাবার মাধ্যম চিঠি, সেটা দেবার সুযোগ তার কোনদিন হয় নাই। অথবা বলা যেতে পারে সাহস করে সেই সুযোগ সে করতে পারে নাই। আশির দশকের প্রেম আর কি। তখন প্রায় সবই প্লেটনিক লাভ ছিল। তাদের সারাজীবনে সাক্ষাৎই হয়েছে হয়ত দুই তিনবার।
শফিক বলেই চলেছে ‘গতকাল রাতে খাবার টেবিলে আব্বা খবরটা বলল। দোস্ত তখন থেকে অপেক্ষা করছিলাম তোর কাছে খবরটা দেবার জন্য। তাই সকাল সকাল চলে আসছি।‘
আমি বললাম ‘শুনে প্রীত হইলাম। নাস্তা না করলে নাস্তা কর।‘
শফিক বলল ‘না নাস্তা করি নাই। বাসায় গিয়ে নাস্তা করব। আমি তোর কাছে এসেছি কারন তোকে নিয়ে আমি নাস্তা করে বের হব।‘
আমি বললাম ‘কোথায় যাবি।‘
শফিক বলল ‘ পাশের উপজেলায়। মুনাকে দেখতে যাব। জাস্ট ওকে এক পলক দেখে চলে আসব। কিন্তু কিভাবে কি করব সেটা বুঝে উঠতে পারছি না তাই তোর কাছে আসছি। বুদ্ধি বের করতে হবে।‘
আমি বললাম ‘বুদ্ধি বের করা তো পরের কথা আমি যাব কিনা সেটাই বিষয়। সেখানে যেতে আসতে দুপুর পার হয়ে যাবে। বাসায় কি বলব তখন।‘
শফিক বলল ‘আরে নাহ। ধর আমাদের যেতে ৪৫ মিনিট আসতে ৪৫ মিনিট। মোট দেড় ঘণ্টা। আর ওখানে ধর এক ঘণ্টা। মোট আড়াই ঘণ্টার মামলা। আমরা যদি সাড়ে দশটায় বের হই তাহলে দুপুর একটার মধ্যে ফিরে আসতে পারব।‘
আমি বললাম ‘তুই হুমায়ূনকে নিয়ে যা। আমি যাব না।‘
শফিক বলল ‘দোস্ত তোর দেশের বাসা ঐ উপজেলায়। কোন ঝামেলা হলে তুই ট্যাকল দিতে পারবি। তুই গেলে সাহস পাব রে দোস্ত।‘
আমি বললাম ‘কি বলিস আমার উপজেলা। আমার উপজেলা ঐ উপজেলার পিছনে। আমি ওখানে কাউকে চিনি না। আর ঝামেলার কথা বলছিস কেন। তুই কি কিডন্যাপ করতে যাচ্ছিস। তোর কথায় ঝামেলা আছে। আমি নাই।‘
এরপর শফিকের বন্ধুত্বের মর্যাদা এবং দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ ভাষণ শোনার পরে নিজেকে না যাবার অপরাধে অপরাধী মনে হতে লাগল। বললাম ‘চল যাব তুই ভাষণ বন্ধ কর।‘
হাতের যৎসামান্য টাকা নিয়ে দুজন বাসে উঠলাম। পরিকল্পনা হল মুনাদের বাসায় চলে যাব। কারন শফিকের যেহেতু চাচার বাসা কাজেই বাসায় যেতে তো কোন সমস্যা নাই। শফিক বলবে আমার সাথে এদিকে একটা কাজে এসেছিল। ফেরার পথে দেখা করে গেল। খুবই সিম্পল বিষয়। সেদিন ওয়ার্কিং ডে থাকায় চাচা বাসায় থাকবেন না। থাকবেন চাচি এবং মুনা ও তার ছোট ভাই। কাজেই বেশি জেরার মাঝেও পরতে হবে না।
বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বাসে চেপে বসলাম দু’জন। বাস নির্ধারিত সময়ে আমাদের গন্তব্যে নামিয়ে দিয়ে হুস করে চলে গেল। বাস থেকে নেমে রিক্সা নেব।
শফিককে জিজ্ঞাসা করলাম ‘বাসা কোথায় রে’।
শফিকক বলল ‘সেটা তো জানি না।‘
আমি বললাম ‘আশ্চর্য তুই বাসার ঠিকানা নিয়ে আসিস নাই কেন। এখন কি আমরা সব বাসায় নক করে বলব এটা কি মুনার বাসা?’
শফিক বলল ‘আমি কি করে বাসার ঠিকানা জানব।‘
আমি বললাম ‘না সেটা তো ঠিক। বাসার ঠিকানা আমারই জানা উচিত ছিল। আমারই দোষ।‘
শফিক বলল ‘দোস্ত রাগ করিস না। কি করা যায় সেটা ভাবি। আয় চায়ের দোকানে চা খাই আর ভেবে বুদ্ধি বের করি।‘
বসলাম আমরা চায়ের দোকানে। চায়ের অর্ডার দেয়া হল। পরক্ষনেই আমার মনে হল ‘আরে উনি তো সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার। কাজেই এই ছোট্ট উপজেলায় এই পরিচয় দিয়েই তো বাসা বের করে ফেলা সম্ভব। আর আমরা বসেছি চায়ের দোকানে। এখানেই তো তথ্যের ভান্ডার।‘
চা’ওয়ালাকে বললাম। উনি আমাদের বাম পাশে বসে থাকা একজনকে বললেন। তিনি আমাদের ঠিকানার পরিবর্তে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলেন। আমরা ওনার কে হই জিজ্ঞাসা করলেন। ম্যানেজারের ভাতিজা শুনে আবার বললেন তাহলে আমরা ঠিকানা জানি না কেন। কি মুশকিল এত দেখি পুলিশের জেরায় পড়লাম। শফিক বলল ‘চাচা নতুন বদলি হয়ে এসেছেন আর এখানে আমাদের প্রথম আসা বলে ঠিকানা জানি না।‘ উনি মনে হয় সন্তস্ট হলেন। ঠিকানা বলে দিলেন। শুধু বলে দিলেন না একটা রিক্সা ডেকে আমাদের তুলেও দিলেন।
চাচায় বাসায় গিয়ে দরজা নক করার আগে শফিকের নার্ভাস চেহারা দেখে বললাম টেনশন করিস না একটা দোয়া পড়ে বুকে ফুঁ দে।
দরজা নক করতে একজন মহিলা দরজা খুলে দিলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন কে এবং কার কাছে এসেছি। শফিক পরিচয় দিতে উনি দাঁড়ান বলে ভিতরে চলে গেলেন। কিছু পরে একজন ভদ্রমহিলা আসলেন এবং শফিককে বললেন “আরে তুমি, আস ভিতরে আস।“ উনি শফিকের চাচী।
বিশাল উত্তেজনা নিয়ে আমরা বাসায় ঢুকলাম। উনি বারান্দায় তরকারি কাটছিলেন। আমরা সেখানেই মোড়া টেনে বসে পড়লাম। আমার পরিচয় শফিক তার চাচীকে দিলো। পরিচয়সহ অন্যান্য কথা চলছে কিন্তু নায়িকার দেখা নাই। শফিক আমাকে দেখিয়ে দিয়ে বলল “ওর একটা কাজে এখানে এসেছি তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে দেখা করে যাই”। বাসা বেশ চুপচাপ। আমরা উস্খুস করছি। মুনা আসছে না কেন। বিস্কুট আসল। চা আসল। মুনা আসল না। বিস্কুট চা প্রায় শেষের দিকে। তবুও মুনার দেখা নাই। শফিক না পেরে বলেই ফেলল “মুনাকে দেখছি না যে চাচী?” চাচী বললেন “মুনা তো স্কুলে গেছে। দুপুরের দিকে ফিরবে।“ আমরা পরস্পরের দিকে তাকালাম। অহেতুক প্রায় আধাঘন্টা খরচ হল। এখন কি করা যায়। আমি চাচীকে বললাম আমার কাজ সেরে চলে যেতে হবে কাজেই আমাদের উঠতে হচ্ছে। উনি দুপুরে খেয়ে যেতে বললেন। কিন্তু আমরা তো বাসায় বলে আসিনি কাজেই অতক্ষণ অপেক্ষা করা যাবে না। আমরা উঠে পড়লাম।
বাহিরে বের হয়ে শফিকের মন খুব খারাপ। বেচারির মুখ দেখে আমারই খারাপ লাগছে। বললাম মন খারাপ করিস না দোস্ত, চল আমরা স্কুলের কাছে যাই। স্কুল ঘণ্টাখানেক মধ্যে ছুটি হবে নিশ্চয়। কারন টিফিন টাইম তখন সকল সরকারি স্কুলে ১টায় হত। শফিক খানিকটা আশা পেল। দু’জন একটা রিক্সা নিলাম। গন্তব্য গার্লস স্কুল।
অচেনা এলাকায় গার্লস স্কুলের সামনে দাঁড়ানো একটা বিব্রত এবং খানিকটা ভয়ের ব্যাপার। আমরা রিক্সা থেকে স্কুলের সামনে নেমে আশেপাশে রেকি করলাম যে কোথায় দাঁড়ানো যায়। কিছু দূরে একটা মিষ্টির দোকান দেখা গেল। আমরা মিষ্টির দোকানে গিয়ে বসলাম। উদ্দেশ্য মিষ্টি অর্ডার করে আস্তে আস্তে খেয়ে সময় পার করব। হাতে আছে প্রায় ত্রিশ মিনিট। শফিক বলল “দোকানে চাও আছে রে। চা খেলে আরও কিছু সময় পার হবে।“ হাতে তো বেশি টাকা নেই। তাই অনেক মিষ্টি অর্ডার দিয়ে খাব সেটারও উপাই নেই। যাই হোক দু’জন মিষ্টির অর্ডার করলাম। মিষ্টি চলে আসল। আমি আবার মিষ্টির পোকা। দুটো মিষ্টি একটা পিরিচে। আমি আস্তে খাওয়ার হিসাব ভুলে ফটাফট দুটো মিষ্টি খেয়ে ফেললাম। শেষ করে শফিকের দিকে তাকিয়ে দেখি সে একটা মিষ্টি চামচ দিয়ে অর্ধেক করে মুখে দিয়ে চাবাচ্ছে। আমি ভুল বুঝতে পেরে সরি-চোখে তাকালাম। আমার জন্য আরও দুটো মিষ্টি চলে আসল। এবার আস্তে আস্তে খাওয়া শেষ হল। চা খাওয়াও শেষ হল। কিন্তু সময় যেন যেতে চায় না। এত কিছু খাবার পরেও দেখি দশ মিনিট বাকী আছে। দোকানে আরও পাঁচ মিনিট থেকে বের হয়ে দোকানের পাশেই দাঁড়ালাম। রাস্তার ওপাড়ে সামান্য দূরে বায়ে স্কুলের গেট।
শুরু হল এই পাঁচ মিনিট কাটানো। এই পাঁচ মিনিট মনে হচ্ছে পাঁচ ঘন্টা। আমাদের বেশ অস্বস্তি হচ্ছে। এভাবে অচেনা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। তাও গার্লস স্কুলের পাশে। রাস্তা দিয়ে যেই যাচ্ছে তাকে দেখেই মনে হচ্ছে শিওর আমাদের দেখে সাতপাঁচ ভাবছে। কিছু ছেলে সামনে দিয়ে যাচ্ছে তাদের দেখে বেশ ভয় ভয় লাগছে। আমাদের ডেকে জিজ্ঞেস করে কিনা সেটার ভয় লাগছে।
স্কুলের ঘণ্টা বাজল। আমাদের চোখ স্কুলের গেটে। মেয়েরা বেরিয়ে আসছে। দলে দলে। আমি তো মুনাকে চিনি না তাই শফিকের সিগন্যালের অপেক্ষায় আছি।
আমি “শফিক, দেখতে পেয়েছিস।“
শফিক “নারে।“
আমি “ভাল করে খেয়াল কর ব্যাটা।“
শফিক “আরে আমি এক পলক দেখলেই চিনতে পারব। মিস হবে না।“
একে একে সব ছাত্রীরা বেরিয়ে গেল। কিন্তু মুনাকে দেখা গেল না। শেষ দানও মিস হল। শফিক ঠোঁট কামড়ে কষ্ট চেপে আছে। আমারও খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু কিছু করার নাই।
আমি বললাম চল আবার বাসায় যাই। গিয়ে বলি আমার কাজ শেষ হতে বিকেল হবে। তোর চাচার বাসায় দুপুরে খাব। বাসায় গেলে তো পাওয়া যাবেই।
শফিকের কানে কিছুই ঢুকছে না। ওর মন ভেঙ্গে গেছে। নিরবতা ভেঙ্গে শফিক বলল “চল বাসায় চলে যাই। এখন রওনা দিলে তাও দেড়টা বা দুইটায় বাসায় ঢুকতে পারব। লাক আজ ফেবারে নেই।“
আমি বললাম চল।
দু’জন পা বাড়াতেই কিছু ছেলে আমাদের ঘিরে ফেললো। আমরা কারা, কোথায় থেকে আসছি, এখানে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে কি করছি চলছে প্রশ্নের ঝড়। ছেলেগুল বেশ গুন্ডা টাইপের। আমরা যে ঝড়ের ভিতর দিয়ে গেছি তার কাছে এসব কিছুই মনে হচ্ছে না। মন ও মেজাজ কোনটাই আমাদের ভাল নাই। আমি বললাম আমার চাচা এই পথে যাবেন। আমরা ওনার সাথে যাব বলে এখানে দাঁড়িয়ে আছি। আমি আমার পাশের উপজেলার পরিচয় দিলাম। তাতে তারা সন্তস্ট হল না। একজন বলল এদের নিয়ে কলেজের সংসদ রুমে চল। শফিকের এসব কিছু গায়ে লাগছে। তার পাওয়া কষ্টের কাছে এসব কোন ঘটনা বলে তার মনে হচ্ছে না। আমি বললাম চলেন।
আমাদের কলেজের সংসদ রুমে নিয়ে আসা হল। একজন নেতা গোছের হয়ত কলেজর ভিপি বা জিএস হবেন, ওনার সামনে দাড় করানো হল এবং বলা হল আমরা অনেক্ষন ধরে গার্লস স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে মেয়েদের টিজ করছিলাম।
নেতা “এই তোমাদের বাসা কোথায়? তোমাদের তো এই এলাকার কেউ বলে মনে হচ্ছে না।”
আমি ভাবলাম শফিকের চাচার কথা বললে সহজে ছাড়া পাওয়া যাবে কিন্তু যদি প্রমানের জন্য ওনার বাসায় নিয়ে যায় তাহলে তো কেলিংকারির এক শেষ। আমি বললাম “এখানে আমার চাচা আমাদের নিয়ে যাবে বলে দাঁড়িয়ে ছিলাম আর ভাই ওরা মিথ্যা বলছে আমরা মেয়েদের কোন টিজ করি নাই।“
নেতা “অন্য এলাকা থেকে আসে আমাদের এলাকায় টাংকি মারা; এত সাহস!”
শফিক কোন কথা বলছে না।
আমি বললাম “না ভাই আমরা এমন কিছুই করি নাই।“
আচমকা আমার মাথায় আমার এক ভাইয়ের নাম মনে এলো যে অত্র জেলার বেশ বড় নেতা।
আমি বললাম “ভাই শোনেন, ****** ভাই আমার ভাই হয়। আপনার যদি ওনার সাথে যোগাযোগ থাকে তাহলে আমার নাম বলবেন। আমি এই ধরনের ছেলে না ভাই। আমি যা বলছি সত্যি বলছি।“
নামে কাজ হল। উপজেলার পাতি নেতা জেলার হোমরাচোমড়া নেতার নামে কাবু হয়ে গেল। বলল “আরে তুমি আগে বলবে না ভাই। ঠিক আছে তোমরা যাও। চা খাবে?” আমরা না বলে বের হয়ে বাসস্ট্যান্ডের দিকে ছুটলাম। সর্বচ্চো আড়াইটার মধ্যে বাসায় পৌঁছুতে হবে।
***************************************************************************************
এই ঘটনার প্রায় এক যুগ পরে মুনার সাথে আমার ও শফিকের দেখা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমরা তখন শেষবর্ষের ছাত্র। মুনা তার প্রেমিকের সাথে কাম্পাসে ঘুরছে। শফিক আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল। আমি আচমকা মুনাকে বললাম “তোমাকে নামে আমি চিনি। আমি আর শফিক স্কুলে থাকতে তোমাদের বাসায় গিয়েছিলাম; তোমার স্কুলের সামনেও তোমাকে দেখতে দাঁড়িয়ে ছিলাম।“ মুনা হাসতে হাসতে বলল “আমি জানি ভাই। আমি স্কুল থেকে বের হয়ে শফিক ভাইকে দেখে ছাতা দিয়ে ঢেকে আপনাদের সামনে দিয়েই চলে এসেছি।“ আমি ও শফিক পরস্পরের দিকে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে তাকালাম।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০০
পয়েন্ট-ব্লাংক বলেছেন: শুকরিয়া ফখরুল ভাই।
ঘটনাটা কিন্তু সত্য ছিল।
২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: আশ্বিনেও গরম!
কী আর বলব?
প্রকৃতির নেই শরম।
৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:১০
পয়েন্ট-ব্লাংক বলেছেন: সরি রাজীব ভাই গরমে কমেন্ট করেছিলেন আমি শীতে রিপ্লাই দিলাম
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৯
মোঃ ফখরুল ইসলাম ফখরুল বলেছেন: ওয়াও