![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীহাদ প্রতিটি মুসলমানের পবিত্র কর্তব্য। অনেকে একে ঈমান নামাজ রোজা হজ্জ, যাকাত ,এই ৫টি স্তম্ভের পর ৬ষ্ঠ স্তম্ভ হিসেবে বলে থাকেন।
আরবী শব্দ জীহাদের অর্থ হল to struggle or to strive । পবিত্র কুরানে জীহাদ শব্দটি ৪১ বার বলা আছে । “আল জিহাদ ফি সাবিল আল্লাহ” অর্থাৎ আল্লাহ’র পথে প্রত্যেকের যুদ্ধ। যিনি ইসলামের জন্য যুদ্ধ করেন তিনি হলেন মুজাহিদ।
এখন প্রশ্ন হল কার বা কিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ,যুদ্ধ করতেই হবে বা কেন? এই যুদ্ধের স্বরূপই বা কি?এটা কি হিংসাত্বক পথে যুদ্ধ, না শান্তিপূর্ন পথে যুদ্ধ?
জীহাদের ব্যাখ্যা আছে বিভিন্ন রকমের।
১) নিজের মনের যুদ্ধঃ- আল্লাহ’র পথে বা ইসলামের পথে থাকার জন্য মনের বা আধ্মাত্যিক যুদ্ধ।
২) ভাল ইসলামিক সমাজ গঠনের জন্য যুদ্ধ।
৩) ইসলামকে রক্ষা করার জন্য বল প্রয়োগে সামরিক যুদ্ধ বা পবিত্র যুদ্ধ(Holy War )
অনেকে জীহাদকে বড়(Greater) জীহাদ বা ছোট( Lesser ) জীহাদে ভাগ করে থাকেন। বড় জীহাদ বলতে নিজের মনের যুদ্ধকে বোঝান তারা।
নিজের সাথে যুদ্ধ বা আধ্মাত্যিক যুদ্ধঃ আল্লাহ’র নির্দেশিত পথে থাকার জন্য যুদ্ধই হল প্রকৃত জীহাদ। আল্লাহ’র প্রতি বিশ্বাস রেখে , আল্লাহ’র অনুগত থেকে, অন্যের সেবা করাই হল বড় জীহাদ। অধিকাংশ মানূষের জন্য সৎপথে থাকা, আল্লাহ’র পথে চলা একটা যুদ্ধ। প্রত্যেক বিশ্বাসীকে নিজের স্বার্থকে জয় করতে হবে, নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করতে হবে । আপনি যতই আল্লাহকে ভালবাসুন না কেন আপনার নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করে যেতে হবে সবসময়। আল্লাহ’র সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের সাথে অন্য যে গুলো করা প্রয়োজন তা হলঃ
কুরান পড়া, অন্তর দিয়ে কুরান এবং অনান্য ধর্মীয় পুস্তকাদিকে বিশ্বাস করা।
লোভ, ক্রোধ, ভয়, হিংসা, ঘৃনা,অহঙ্কার ইত্যাদি পরিহার করা।
মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করা,
মুসলিম সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়া।
সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
ক্ষমা করা।
জীহাদ বা পবিত্র যুদ্ধ ( Holy War ) যখন মুসলমানদের উপর, তাদের ধর্ম বিশ্বাসের উপর আঘাত আসবে তখন সামরিক যুদ্ধে অংশ নেওয়া প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য।ইসলামী শরিয়া মতে কোন যুদ্ধকে জীহাদ হতে হলে তার নির্দিস্ট কিছু বৈশিষ্ঠ থাকতে হবে। তা হলঃ-
আত্মরক্ষার্থে
ইসলামের কল্যানে।
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী শত্রুদের বিরুদ্ধে।
অত্যাচার থেকে মুসলমানদের রক্ষার্থে প্রয়োজনে শৈরস্বাসকদের বিরুদ্ধে।
স্বাধীনভাবে ধর্মপালনের জন্য।
বিপথগামীদের সঠিকপথে পরিচালিত করতে।
যখন যুদ্ধকে জীহাদ হিসেবে বিবেচনা করা হবে না তা হলঃ-
জোরপূর্বক ধর্মান্তরিতকরন।
অন্যরাস্ট্র দখল করা।
অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যে।
বিরোধ মীমাংসার উদ্দেশ্যে।
কোন নেতার ইচ্ছাপূরনের জন্য যুদ্ধ।
জীহাদের নিয়ম নীতিঃ-
অপর পক্ষকে শুরু করতে হবে।কোন অবস্থাতেই নিজ থেকে শুরুকরা যাবে না।
দেশ বা স্থান দখলের উদ্দেশ্যে জীহাদ করা যাবে না।
উদ্দেশ্য সৎ হতে হবে- আল্লাহ’র অনুমোদিত কারন সমূহে ।
যুদ্ধের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আগে অনান্য সব উপায় ব্যর্থ হলে।
নিরপরাধ লোকদের হত্যা করা যাবে না।
মহিলাদের ধর্ষন করা যাবে না।
মহিলা, শিশু বা বৃদ্ধদের হত্যা করা বা আঘাত করা যাবে না।
শ্ত্রুসৈন্যদের প্রতি আপন সৈন্যদের সমান ব্যবহার করতে হবে।
শত্রু শান্তির আবেদন জানালে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।
শত্রুর প্রতি সুবিচার করতে হবে।
সহায় সম্পত্তির ক্ষতি করা যাবে না।
পানিতে বিষ প্রয়োগ করা যাবে না।
পবিত্র কুরানে জীহাদ সম্পর্কে যা বলা আছেঃ-
Fight in the way of Allah against those who fight against you, but begin not hostilities. Lo! Allah Loveth not aggressors. Qur’an 2:190.
To those against whom war is made, permission is given to fight, because they are wronged;-and verily, Allah is most powerful for their aid. 22:39
Therefore if they withdraw from you but fight you not, and (instead) send you(Guarantees of) peace then Allah Hath opened no way for you (to war against them). 4:90
But if the enemy incline towards peace, do thou(also) incline towards peace, and trust in Allah: for He is one that heareth and knoweth(all things) 8:61
Those who believe fight in the way of Allah, and those who disbelieve fight in the way of the Shaitan.(4:76)
উপরোক্ত আয়াত সমূহের বিপরীতে উগ্র মৌলবাদীরা এবং গোঁড়ারা দাবী করেন যে উপরোক্ত আয়াত সমূহ সংশোধন করে পরে কুরানের নিম্নোক্ত আয়াত গুলো নাজিল হয়।
And when the sacred months have passed, then kill the polytheists wherever you find them and capture them and besiege them and sit in wait for them at every place of ambush. But if they should repent, establish prayer, and give zakah, let them [go] on their way. Indeed, Allah is Forgiving and Merciful.(9:5)
Fight those who do not believe in Allah or in the Last Day and who do not consider unlawful what Allah and His Messenger have made unlawful and who do not adopt the religion of truth from those who were given the Scripture - [fight] until they give the jizyah willingly while they are humbled (9:29).
পবিত্র কুরানে জীহাদকে ভারসাম্যতার কারন হিসেবে বলা আছে যে একদল লোকের মাধ্যমে আল্লাহ অন্যদলের ভারসাম্য বজিয়ে রাখেন।
"And did not Allah check one set of people by means of another,
the earth would indeed be full of mischief;
but Allah is full of Bounty to all the worlds"
-Qur'an 2:251
যারা জিহাদ করতে পারেন তারা হলেন যাদেরকে “আল্লাহ আমাদের প্রভু” এই বিশ্বাসের কারনে বিতাড়িত করা হয়েছে। আর যদি এই ভারসাম্য রক্ষা করা না হত তাহলে মসজিদ, সিনাগগ, চার্চ ইত্যাদি যেখানে আল্লাহ’র উপাসনা করা তা ধংশপ্রাপ্ত হত।
"They are those who have been expelled from their homes
in defiance of right, for no cause except that they say,
'Our Lord is Allah.'
Did not Allah check one set of people by means of another,
there would surely have been pulled down monasteries, churches,
synagogues, and mosques, in which the name of God is commemorated
in abundant measure..."
-Qur'an 22:40।
জীহাদ এবং সন্ত্রাসবাদঃ- অনেক সন্ত্রাসবাদী সঙ্গঠন, বা স্বৈরাচারী শাসক তাদের কার্যক্রমকে বৈধতা দেওয়ার জন্য নিজেদের যুদ্ধকে জীহাদ হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকে্ন আশ্রয় নেন ধর্মের । ইসলামের যোদ্ধা হিসেবে নিজেদের আখ্যায়িত করে থাকেন নিজেদেরকে। সাদ্দাম তার যুদ্ধকে জীহাদ হিসেবে একাধিকবার উল্লেখ করে মুসলমানদেরকে শামিল হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। ওসামা বিন লাদেন তার যুদ্ধকে জীহাদ হিসেবে বিবেচনা করতেন। ইথিওপিয়া, মিশর, নাইজেরিয়া, লেবানন, ইত্যাদি অনেক দেশেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন রয়েছে। তারা নিজেদের যুদ্ধকে জীহাদ হিসেবে বিবেচনা করেন ।
২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:২১
রাজীব বলেছেন: সংগ্রহে রাখলাম
৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৩৬
ShusthoChinta বলেছেন: জিহাদ মানে শুধু মানুষ মারা যুদ্ধ বুঝেন যারা তাদের জন্য করুণা! জিহাদ করে দুনিয়ার সব অমুসলিমকে যদি মেরেই ফেলা হয় তাহলে নতুন করে মুসলিম হবে কারা? হ্যা অস্ত্রের জিহাদ আছে,কিন্তু এটাই একমাত্র এবং চুড়ান্ত জিহাদ নয়,বরং জিহাদের সর্বশেষ পর্যায়! আক্রমণের শিকার হয়ে বাধ্য হয়ে নবী এবং খুলাফায়ে রাশেদীন যুদ্ধ করেছেন,কিন্তু তারা শুরুতে আক্রমণ করেননি বা সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য যুদ্ধ করেননি,বরং তারা শুরুতে দাওয়াত দিতেন।
৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৪০
ভারসাম্য বলেছেন: !!! অনেক আশ্চর্য হলেও খুবই ভাল লাগল আপনাকে জিহাদের প্রকৃত স্বরূপ অনেকটাই ধরতে পেরেছেন বলে।
আরবী 'জিহাদ' শব্দের সবচেয়ে ভাল বাংলা প্রতিশব্দ হল 'সংগ্রাম'। আরেকটু ভাঙিয়ে বললে ভাল কোন কিছুর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করাই জিহাদ।
সংগ্রাম সবসময়ই একটা ইতিবাচক শব্দ। যেমন, মানুষ বাঁচার জন্য সংগ্রাম করে। বনের বাঘকেও বেঁচে থাকার প্রয়োজনেই মোষের সাথেও সংগ্রাম করতে হয়। বদভ্যাস ত্যাগ করতে নিজের কুপ্রবৃত্তির সাথে সংগ্রাম করতে হয়। একইভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধও একটা সংগ্রাম ছিল। বঙ্গবন্ধুর সেই ঘোষণা "এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম"।
কুর'আনকে এর প্রতিটা শব্দের প্রকৃত শাব্দিক অর্থ দিয়ে যাচাই করতে পারলে কুর'আন নিয়ে অনেক সংশয় এমনিতেই দূর হয়ে যাওয়ার কথা।
রক্তপাত বা সশস্ত্র যুদ্ধ বোঝাতে আরবী 'কিতাল' শব্দ ব্যাবহৃত হয়।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই লেখাটির জন্য।
৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:৫৭
েশখসাদী বলেছেন:
খুবই আশ্চর্য্য হলাম আপনার এই লেখা পড়ে । ভালো লাগলো ব্যাপকভাবে লিখার জন্য । অনেক মুসলমানও মনে হয় এত ব্যাপকভাবে জিহাদ সম্পর্কে জানে না ।
তবে , কুরআনের আয়াতগুলো বাংলায় দিলে ভালো হতো । সহজে বোধগম্য হতো ।
নিম্নে একটি বাংলা কুরআন অনুবাদের লিংক দেয়া হলো।
http://www.qurantoday.com/bangla.htm
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০৭
মুসাফির... বলেছেন: এই পোষ্টটির জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই।
মনে আছে আপনার ভুল শোধরানোর জন্য আমি একটা পোষ্ট দিয়ে ছিলাম।
কোরআনের সমালোচনা- যেভাবে আপনার উপকার করতে পারে..
সে কথা বলে আর আপনাকে কষ্ট দিতে চাইনা। আপনি অন্তত একটা পথে ইসলামের সরূপ ধরতে পেরেছেন। আবারো ধন্যবাদ জানাই। শুভ কামনা আপনার জন্য।
আমার পূর্বের কোন আচরন কথায় কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী। ভাল থাকবেন।