নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বীর মুজাহিদ

আমি বাংলাদেশী,আমি বাংলাকে ভালোবাসি।আমার ধর্মধর্ম

বীর মুজাহিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হারাম গণতন্ত্র, হরতাল, অবরোধ ইত্যাদি কাফিরদের দ্বারা উদ্ভাবিত কুফরী মতবাদ। একজন মুসলমান কখনোই কুফরী প্রথা গ্রহণ করতে পারে না। মুসলমানগণ উনাদেরকে সমস্ত হারাম-কুফরী প্রথা বর্জন করে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আদেশ অনুযায়ী চলতে হবে

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৫


বর্তমানে বাংলাদেশে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। হারাম গণতন্ত্রের কুফল জনগণ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে জনগণ গণতন্ত্রের আড়ালে একনায়কতন্ত্রের যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে। টানা অবরোধ আর হরতালে মানুষ দিশেহারা। প্রতিদিন মারা যাচ্ছে মানুষ। আগুনে দগ্ধ হচ্ছে শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ সকলে। হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পোড়া রোগীদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না। পোড়া রোগীদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত। এ সকলই হচ্ছে হারাম গণতন্ত্রের কথিত প্রতিবাদী পদ্ধতি হরতাল-অবরোধের কারণে। হারাম গণতন্ত্র, হরতাল আর অবরোধের ইতিহাস যদি আমরা জানি তাহলে দেখতে পাই- এর প্রতিটি পন্থার প্রচলন করেছে কাফিরেরা। পাঠকদের জন্য সংক্ষিপ্তভাবে গণতন্ত্র, হরতাল আর অরোধের ইতিহাস তুলে ধরা হল-
১) গণতন্ত্র: গণতন্ত্র হলো মনগড়া মতবাদ; যা মালউন ইবলিস শয়তানই সর্বপ্রথম নফছকে অনুসরণ করে পেশ করেছিলো। সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার একটি নির্দেশ মুবারক ছিলো সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি; আর তা হলো সবাই যাতে প্রথম নবী-রসূল আবুল বাশার হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সিজদা করে। সবাই সাথে সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক মেনে হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সিজদা করলো; কিন্তু একমাত্র ইবলিস অস্বীকার করলো, অবাধ্য হলো এবং সে নিজের নফছকে অনুসরণ করে মনগড়া মত পেশ করলো। নাঊযুবিল্লাহ! বর্তমানে হারাম গণতন্ত্রে মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক অমান্য করে ইবলিসের মতই নফছের অনুসরণ করে আমল করা হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
প্রচলিত গণতন্ত্রের ধারণা অ্যারিস্টটল প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে তৈরি করেছে। এরপর তারই পথ ধরে যুগে যুগে গণতন্ত্রের অনেক প্রবক্তা এসেছে এবং গণতন্ত্রের মূল সূত্র ঠিক রেখে তাকে নানাভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। আধুনিক গণতন্ত্রের প্রবর্তক হলো অর্ধেক ইহুদী, অর্ধেক নাছারা অবৈধ সন্তান আব্রাহাম লিংকন। আব্রাহাম লিঙ্কন ১৮৬৩ সালের ১৯ নভেম্বরে দুই মিনিট স্থায়ী তার প্রদত্ত গেটিসবার্গ বক্তৃতায় বলে যে:- Government of the people, by the People, for the People. “গণতন্ত্র হলো- জনগণের সরকার, জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত সরকার, এবং জনগণের জন্য গঠিত সরকার।”
এ হারাম গণতন্ত্রের সাথে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নাই। অথচ আজ মুসলমানরা হারাম গণতন্ত্রকে এমনভাবে আঁকড়িয়ে ধরেছে যে, গণতন্ত্রই এখন তার ধ্যান-জ্ঞান। নাউযুবিল্লাহ! আজ ধর্মব্যবসায়ীরাও পবিত্র দ্বীন ইসলামে গণতন্ত্র আছে বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। নাউযুবিল্লাহ!
২) হরতাল: হরতাল গুজরাটি শব্দ। ‘হর’ অর্থ প্রত্যেক। ‘তাল’ অর্থ তালা। অর্থাৎ প্রতি দরজায় তালা। ভারত উপমহাদেশে কাট্টা ইসলামবিদ্বেষী, বদচরিত্রের অধিকারী পাপাত্মা গান্ধী ব্রিটিশদের রাউলাট আইন বাতিল করার জন্য প্রতিবাদস্বরূপ যে পদ্ধতি অবলম্বন করে তার নাম দেয়া হয় হরতাল। এই হরতাল পালিত হওয়ার কথা ছিল ১৯১৮ সালের ৩০শে মার্চ। পরে এই তারিখ পিছিয়ে ৬ই এপ্রিল করা হয়। ফলে কোনো স্থানে ৩০শে মার্চ আবার কোনো স্থানে ৬ই এপ্রিল সর্ব প্রথম হরতাল পালিত হয়।
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হরতাল নাজায়িয, হারাম। ইসলামী দল বা অনৈসলামী দল অর্থাৎ যেকোনো দলই হোক না কেন, তারা যদি গণতন্ত্রের নামেই হোক আর পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নামেই হোক, হরতাল আহ্বান করে, তা সম্মানিত শরীয়তসম্মত হবে না; বরং কবীরা ও কুফরী গুনাহ হবে। হরতাল গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিক্ষোভ প্রকাশের একটি মনগড়া প্রক্রিয়া বিশেষ।
৩) অবরোধ: অবরোধ হলো- দেশের একটি অংশ বা সম্পূর্ণ দেশ জোর করে খাদ্য সরবরাহ, যুদ্ধ উপাদান বা যোগাযোগ ছিন্ন করার একটি প্রচেষ্টা। একটি অবরোধ সাধারণত একটি সম্পূর্ণ দেশ বা অঞ্চলের জন্য পরিচালিত হয়। প্রথম পেলোপনেশিয়ান যুদ্ধের সময় এথেন্সবাসী Saronic উপসাগরের অবমরহধ দ্বীপ অবরোধ করে খ্রিস্টপূর্ব ৪৫৭-৪৫৮ সালে। ১৭৫৪-১৭৬৩ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশরা এই অবরোধের আধুনিক রূপ দেয়। আবু জাহিল ও পবিত্র মক্কা শরীফের কাফিরেরা এই অবরোধের মাধ্যমেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের শি’বে আবু তালিবে অবর্ণীয় কষ্ট দিয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!
উপরোক্ত ইতিহাসে আমরা সহজেই বুঝতে পারলাম যে- গণতন্ত্র, হরতাল, অবরোধ এগুলো কাফিরদের প্রবর্তিত তর্য-তরীক্বা; যার সাথে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার কোনো সম্পর্ক নেই।
এবার আমরা জানবো এই হারাম গণতন্ত্র, হরতাল আর অবরোধে জনজীবনে কি প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
(১) বিজাতীয়দের উদ্ভাবিত পন্থা: গণতন্ত্র-হরতাল-অবরোধ হচ্ছে সম্মানিত ইসলামী রীতি-নীতি বহির্ভূত বিজাতীয় ধ্যান-ধারণা ও অপকৌশল। যাতে শান্তি তো নেই; বরং অশান্তির পথকে প্রশস্ত করে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম একটি পরিপূর্ণ দ্বীন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছে পবিত্র ইসলাম।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি পবিত্র দ্বীন ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন (নিয়ম-নীতি, অন্য ধর্ম) তালাশ করে, তা কখনোই তার থেকে গ্রহণ করা হবে না এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফঃ পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫)
গণতন্ত্র-হরতাল-অবরোধ যেহেতু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার খিলাফ কাফিরদের তর্য-তরীক্বা সেহেতু মুসলমানগণ উনাদের জন্য তা পালন করা সম্পূর্ণ হারাম।
(২) জন-জীবনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি: গণতন্ত্র-হরতাল-অবরোধ মানুষের স্বাভাবিক কাজ-কর্ম ব্যাহত করে, জনজীবনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা যমীনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করো না।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “ফিতনা-ফাসাদ কতলের চেয়েও খারাপ।”
হরতাল-অবরোধ এর ফলে যারা দিন-মজুর, রোজ কামাই করে রোজ খায়, তাদের কষ্ট হয়। বরং কষ্টে দিনাতিপাত করে, রোগীদের জন্য কষ্টদায়ক হয়ে যায়, চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে। অথচ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “কোনো মুসলমানকে কষ্ট দেয়া কুফরী।”
হরতাল-অবরোধ এক ধরনের যুলুম, যা শুধু ব্যক্তি পর্যায়েই নয়; বরং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও হয়। মূলত, গণতন্ত্র-হরতাল-অবরোধ আর যুলুম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কাজেই যেখানে হরতাল-অবরোধ হবে, সেখানেই যুলুম হবে। যুলুম ব্যতীত কোনো হরতাল-অবরোধ সংঘটিত হতে পারে না। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে যুলুম করতে সম্পূর্ণরূপে নিষেধ করেছেন।
(৩) জান-মালের ক্ষতি: হরতাল-অবরোধের ফলে জান-মালের ক্ষতি হয়, মানুষের সম্পদের ক্ষতি হয়, গাড়ি ভাংচুর করা হয়, যানবাহনে আগুন ধরানো হয়, গরিব সাধারণের আয়ের সম্বল রিকশা ভেঙে দিয়ে আয়ের পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। হরতাল-অবরোধের ফলে হতাহতও সংঘটিত হয়ে থাকে। যাদের হরতাল-অবরোধ ডাকার কারণে এ সমস্ত নিহত-আহত হবে, তারাই হত্যাকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে ও দায়ী হবে। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যে ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৯৩)
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে, “কোনো মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসিকী আর কতল করা কুফরী।” (বুখারী শরীফ)
হরতাল-অবরোধকারীরা স্বাভাবিক কাজ-কর্মে বাঁধা দেয়ার জন্য স্থানে স্থানে একত্র হয়ে যে পদক্ষেপ নেয়, (যেমন- ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, ককটেল ফাটানো, পেট্রোলবোমা মারা, ভাঙচুর ইত্যাদি) তাকে পিকেটিং বলা হয়ে থাকে। ১৮৫৯ সালে গ্রেট ব্রিটেনে পিকেটিং প্রথার প্রবর্তন হয়। এটা খ্রিস্টানদের প্রথা, তাই পিকেটিং করাও যুলুম করার শামিল, যা সম্পূর্ণ হারাম। জান ও মালের ক্ষতি তো হয়ই; বরং রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটে। বর্তমানে চলমান হরতাল-অবরোধে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ লক্ষ হাজার কোটি টাকা।
(৪) একজনের অন্যায়ের শাস্তি অন্যকে দেয়া: মূলত, হরতাল-অবরোধ যে কারণে করা হয় অর্থাৎ অপরাধীকে শাস্তি দেয়া তা মোটেই হয় না। অপরাধী অর্থনৈতিক ও মানবিক সব দিক থেকেই বহাল তবিয়তে অবস্থান করে থাকে। কিন্তু শাস্তি ভোগ করে জনসাধারণ, যারা অপরাধী নয়। অথচ হরতালের ফলে একজনের অপরাধের শাস্তি অন্যজনকে চাপিয়ে দেয়া হয়, এটা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিধান নয়। বরং মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম হলো- “একজনের গুনাহের বোঝা অন্যজন বহন করবে না।” (পবিত্র সূরা আনআম শরীফঃ পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬৪)
অর্থাৎ একজনের অপরাধের শাস্তি আরেকজনকে দেয়া যাবে না, যা মূলত হারাম। হারাম গণতন্ত্রে নেতা-নেত্রীরা ক্ষমতার লোভে যে হরতাল-অবরোধ পালন করে তাতে কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয় না। ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় সাধারণ জনগণকে।
(৫) হারাম পন্থায় সম্মানিত ইসলাম কায়িমের চেষ্টা: হারাম উপায়ে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচারের কথা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ ও ফিক্বহের কিতাবের কোথাও নেই। পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচার করতে হলে মহান আল্লাহ পাক উনার ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের বিধান অনুযায়ী করতে হবে। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “তারা আপনার নিকট কোনো মোকদ্দমা নিয়ে আসলে, তার ফয়সালা সম্মানিত শরীয়ত অনুযায়ী করুন। আর তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না।”
এ পবিত্র আয়াত শরীফ হতে বুঝা যায় যে, সর্ববিধ ক্ষেত্রেই মহান আল্লাহ পাক উনার বিধান অনুযায়ী ফয়সালা করতে হবে। আর যারা মহান আল্লাহ পাক উনার বিধান অনুযায়ী চলবে না, তাদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি যা নাযিল করেছেন- তদনুযায়ী যারা ফয়ছালা করে না, তারাই কাফির।”
সম্মানিত শরীয়ত উনার উসূল হলো, “যা হারামের দিকে নিয়ে যায়, তাও হারাম।” কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যা নাপাক, তা থেকে খারাপ ব্যতীত কিছুই বের হয় না।” (পবিত্র সূরা আরাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৮)
অর্থাৎ হারাম গণতন্ত্রের কুফল ব্যতীত সুফল কিছুই নেই। যেহেতু গণতন্ত্র-হরতাল-অবরোধ হারাম সেহেতু হারাম পালনে রহমত নাযিল না হয়ে যহমত নাজিল হয়। যার ফল ভোগ করছে জনগণ। যা আমরা বাস্তবে দেখতে পাই। হরতাল-অবরোধে যে লোক অগ্নিদগ্ধ হচ্ছে কিংবা নিহত হচ্ছে তার জান-মালের খবর কি সরকার, কি হরতাল অবরোধকারীরা রাখে? অথচ এরা নাকি জনগণের অধিকারের জন্য লড়াই করে! জনগণের সেবা করার জন্যই নাকি আন্দোলন করে! যে ব্যক্তি দগ্ধ হয়ে চিরকালের জন্য পঙ্গু হলো কিংবা নিহত হলো উক্ত ব্যক্তি কারো বাবা, ভাই, স্বামী কিংবা পরিবারের একমাত্র অবলম্বন। এখন একমাত্র উপার্জনক্ষম যে ব্যক্তি পঙ্গু হলো কিংবা নিহত হলো তার পরিবারের ভরণ-পোষণের দায়ভার কে নিবে? যে নিহত হলো তার পরিবার তো নিঃস্ব হয়ে অনিশ্চিত জীবনে পতিত হল। আর যে পঙ্গু হলো সে তো পরিবার ও সমাজের জন্য বোঝা হিসেবে থাকবে।
তাহলে এ সকল নিহত কিংবা পঙ্গু ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সরকারের কি করণীয়? করণীয় হলো- যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে তাদের পূর্ণাঙ্গ খরচ বহন করে সুস্থ করে তোলা এবং পরবর্তীতে তার রুটি-রুজির ব্যবস্থা করা। আর যারা নিহত হয়েছে তাদের পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা করা। যদি কর্মক্ষম কেউ না থাকে তাহলে মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। যদি সরকারের পক্ষে সম্ভব না হয় তাহলে হরতাল-অবরোধকারীদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ অবশ্যই আদায় করতে হবে।
এখন ভাববার বিষয় হলো- এই যে এতো জান-মালের ক্ষতি হচ্ছে তা জনগণেরই হচ্ছে; অথচ গণতন্ত্রের সংজ্ঞায় জনগণের জন্যই সব কিছু। কিন্তু হয় তার বিপরীত। জনগণ হয় নিষ্পেষিত আর নেতা-নেত্রীরা থাকে বহাল তবিয়তে। কিন্তু এরপরেও জনগণ কি বুঝে? বুঝেনি। মানুষের মনে কি গণতন্ত্রের প্রতি ঘৃণা উদ্রেক হয়েছে? হয়নি। যে জনগণ গণতন্ত্রের যাঁতাকলে আজ পিষ্ট হচ্ছে, কাল যদি নির্বাচন দেয় তাহলে দেখা যাবে এই জনগণই নির্বাচনে তাদেরকেই ভোট দিতে উন্মাদ হয়ে যাবে। নাউযুবিল্লাহ!
তাহলে এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? পরিত্রাণের উপায় হলো- সকলকে আল্লাহওয়ালা-আল্লাহওয়ালী হয়ে কাফির-মুশরিকদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জানতে হবে, কাফির-মুশরিকদের শত্রু হিসেবে গণ্য করতে হবে। আর এজন্য সকলকে একজন ছদিকীন অর্থাৎ হাক্বীক্বী আল্লাহওয়ালা উনার ছোহবত ইখতিয়ার করতে হবে। তাহলেই কেবল হারাম গণতন্ত্র- হরতাল-অবরোধের ছোবল থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.