![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
An average person, always lack of perfection
তুমি নেই আজ কে হাকিবে সিন্দাবাদের দল,
আয়েশি তখতে ঘুমন্তদের কে বলিবে পথ চল?
ফররুখ আহমদ একটি সৌন্দর্য চেতনার নাম । আমাদের ঐতিহ্যভিত্তিক সাহিত্য ভান্ডারে কবি ফররুখ আহমদ এক নবদিগন্তের সুচনা করেছিলেন । এজন্য ফররুখ আহমদ কে বলা হয় ইসলামি রেনেসাঁর কবি । আবার মানবিক দিক থেকে বিচার-বিশ্লেষণ করে অনেকেই মত দিয়েছেন ফররুখ আহমদ নিপীড়িত, অবহেলিত, অসহায় মানুষের কবি । তিনি মানবিকতার কবি । ফররুখ আহমদের এই দুটি কবিসত্তাকে দুটি পরস্পর বিরোধী এবং বিচ্ছিন্ন কবিসত্তা বলেও কেউ কেউ চিহ্নিত করেছেন ।
কবি ফররুখ আহমদের এই দুটি কাব্যধারাকে একীভূত করেই আমরা তার কাব্যপ্রতিভার বৈচিত্র্য মূল্যায়ন করতে পারি । একই উৎস থেকে সৃষ্ট একই নদীর দুটি ভিন্ন শাখা বলেও এটিকে আমরা সুনির্দিষ্ট করতে পারি । ফররুখ আহমদ ‘সাত সাগরের মাঝি’, ‘সিরাজাম মুনিরা’ র কবি । তিনি হাতেম তায়ীও লিখেছেন । তার কবিতার চিত্রপটে অতীতের পরশ আছে, তার কবিতার ছন্দে, ভাব ভঙ্গিমায় ইসলামের আবেদন সোচ্চার । তিনি লিখেছেন,
“এখানে এখন রাত্রি এসেছে নেমে,
তবু দেখা যায় দূরে বহুদূরে হেরার রাজতোরণ,
এখানে এখন প্রবল ক্ষুধায় মানুষ উঠেছে কেঁপে
এখানে এখন অজস্র ধারা উঠেছে দুচোখ ছেপে
তবু দেখা যায় দূরে বহুদূরে হেরার রাজতোরণ । ”
আবার একই কবিতায় তিনি লিখেছেন,
“শাহী দরজার সকল কপাট অনেক আগেই খোলা
অনেক আগেই সেখানে দ্বাদশী জোছনা দিয়েছে দোলা ।”
ফররুখ আহমদ লিখেছেন,
খোশ আমদেদ, গুলিস্তানের দলবাধা বুলবুলি,
হেজাজ মরুর বালুকণা হতে গোলাপ এনেছ তুলি,
এনেছ রঙ্গিন সিরাজী-সারাব ঘুম নিঙ্গড়ানো চুম,
এনেছ জিহাদী তলোয়ার ছোঁওয়া খুন খারাবের ধুম ।
এসব কবিতার অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা কবির ঐতিহ্য দিশারী মনের পরিচয় পাওয়া যায় । এর ভেতর কেউ কেউ তার অতীতমুখী ও প্রতিক্রিয়াধর্মী মনকে আবিষ্কার করে অপ্রসন্ন দৃষ্টিতে তার কবিতাকে গ্রহন করেছেন এবং তার প্রতি কটাক্ষও করেছেন । অপরপক্ষে, তার “লাশ”, “পটভূমি”, “পাথরের দিন”, “প্রেসম্যান”, “কাচড়াপাড়ায় রাত্রি”, “বিরাণ সড়কের গান”, প্রভৃতি কবিতাকে যুগনির্ভর, আধুনিক এবং মানবিক সুরে বাধা বলে অনেক সমালোচক তাকে অভিনন্দিত করেছেন ।
কবি শামসুর রাহমান ফররুখ আহমদের কাব্যপ্রতিভার ওপর আলোকপাত করতে গিয়ে প্রায় তিরিশ বছর আগেই লিখেছিলেন –
“ফররুখ আহমদ সেইসব বিরল কবিদেরই অন্যতম যারা খুব অল্প দিনেই অনুকারকের দল সৃষ্টি করেন ।”
শুধু পঞ্চাশের দশকেই নয়, পরবর্তিকালেও ফররুখ আহমদ ইসলামী মুল্যবোধ, চেতনায় উজ্জীবিত কবিদের উপর ভাষা, আঙ্গিক ও রুপ-রীতির প্রকাশভঙ্গী থেকে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছেন ।
প্রতীক ও রূপকের ব্যাবহার আধুনিক কাব্যবোধ এবং জীবনচেতনার অগ্রসর কবিমনের পরিচায়ক । ফররুখ আহমদের কবিতায় মুক্ত জীবনের প্রতীক হিসেবে, আদর্শের প্রতীক হিসেবে পাখির কথা বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য ।
পরিশেষে বলতে চাই, কাব্য বিচারে কবির ব্যাক্তিগত মতাদর্শ বড় কথা নয়, কবির মত, ভাবাদর্শ, ধর্ম ও চিন্তাভাবনার সাথে কাব্য রসিক ও সমালোচককে সম্পূর্ন একাত্মতা ঘোষণা করে শুধু দেখতে হবে রসের রাজ্যে তার রচনার উত্তরণ সম্ভব হয়েছে কী না ।
আজ কবি ফররুখ আহমদের ৪০ তম মৃত্যুবার্ষিকী । গভীর স্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি বাংলা সাহিত্যে তার অমুল্য অবদানের কথা, তার পাশাপাশি তার প্রশান্ত আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি । মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন । আমীন ।
২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:২৪
কালো গুপ্তচর বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ব্লগের লেখার উৎসাহে চরম ভাটা পরেছে এই লেখাটা কেউ না পড়ায়।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:৪৬
এহসান সাবির বলেছেন: সুন্দর পোস্ট। কেউ পড়েনি কেন......