![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
An average person, always lack of perfection
পৃথিবীকে জানার নাকি খুব ইচ্ছা তোমার!!!
দেশ-মহাদেশ, সাগর-মহাসাগর, গ্রহ-উপগ্রহ, গ্যালাক্সি-সৌরজগত আরো কতো কি!!!
তুমি মারিয়ানা ট্রেঞ্চের গভীরে ডুব দিতে চাও, হিমালয়ে চূড়ায় এঁকে দিতে চাও পদচিহ্ন।
আমি তোমার কাছে জানতে চাই, নিজেকে জানার কতটুকু ইচ্ছে আছে তোমার?? তোমার মধ্যে যে বিশাল একটি জগৎ আছে, সেখানে যে প্রতিদিন কতো হাজার-লক্ষ ক্রিয়াকলাপ সংঘটিত হচ্ছে তার কি কোনো খবর রাখো তুমি? তোমার হাত-পা, চোখ, নাক, কান এগুলো কি কাজে লিপ্ত, তুমি জানো?? কখনো জানতে চেয়েছো? হয়তো ভাবছো এখানে আবার কি জানার আছে?? অনেক কিছুই আছে যা তোনার জ্ঞানের পরিধির বাইরে। তোমার মস্তিস্ক, হৃদপিন্ড, যকৃত, ফুসফুস, বৃক্ক দিনের পর দিন কিভাবে তোমাকে বেঁচে থাকার শক্তি দিয়ে চলেছে তুমি কি তার খবর রাখো??
তোমার চারপার্শ্বের বায়ূমন্ডলে কতো কোটি-কোটি জীবাণু প্রতিনিয়ত ভেসে বেড়াচ্ছে। অণুবীক্ষণ যন্ত্রেও দেখা কষ্টকর এসব জীবাণুর একটিই তোমার দেহ-ব্যাবস্থাপনাকে গুড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তোমার কি একবারও জানতে ইচ্ছে করে, কোন সে জিনিস যা তোমাকে প্রতিনিয়ত এসব জীবাণুর আক্রমন থেকে রক্ষা করে চলেছে?? এসব জীবাণুর আক্রমণ থেকে বাচিয়ে রাখার জন্য কতো সুন্দর, জটিল একটি ব্যাবস্থা তোমার দেহে গড়ে দেওয়া হয়েছে অথচ তুমি তা জানোই না। না জানতেই পারো। চলো, আজকে আমরা তোমার দেহের প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা একটু দেখে আসি।
আমরা এমন একটি পরিবেশে বাস করি যা অগণিত জীবাণুতে পরিপূর্ণ। আমাদের অজান্তেই কত জীবাণু আমাদের দেহে প্রবেশ করে, আবার আমাদের অজান্তেই তাদের অধিকাংশ ধ্বংস হয়ে যায়। তোমার দেহের ভেতরে ও বাইরে একটি একটি জটিল ব্যাবস্থা রয়েছে যা এই জীবাণুগুলো ধ্বংস করে। আমরা এই ব্যাবস্থাকে ইমিউনতন্ত্র বলি। তোমার দেহে জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ৩ স্তর বিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা রয়েছে। এগুলোকে আমরা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রতিরক্ষা স্তর হিসেবে জানবো। চলো আজকে তোমাকে তোমার দেহের প্রথম প্রতিরক্ষা স্তরের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।
প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর হচ্ছে একটি প্রতিবন্ধক যা ভৌত এবং রাসায়নিকভাবে কাজ করে। এর অধিনে থাকে তোমার ত্বক, লোম, অশ্রু ও লালা, সিরুমেন, পৌষ্টিকনালি ও জননতন্ত্রের এসিড।
তোমার ত্বক হচ্ছে ওয়াটারপ্রুফ, বায়ূরোধী এবং অভেদ্য একটি স্তর। তোমার ঘামগ্রন্থি থেকে যে ঘাম বের হয় তা ত্বকে এমন একটি পরিবেশ গড়ে তোলে, যেখানে জীবানূ বাচতে বা বংশবৃদ্ধি করতে পারেনা। ঘামে ডার্মিসাইডিন নামে জীবাণুনাশক একটি পদার্থ আছে যা জীবাণুকে ধ্বংস করে দেয়।
তোমার নাকে যে লোম আছে এগুলো কিন্তু অযথা না। তুমি নাক দিয়ে যে বাতাস টেনে নাও, এই বাতাস থেকে ধূলা-ময়লা, জীবাণু এই লোমগুলো ছাঁকনির মতো আটকে দেয়।
তোমার কানে যে হলুদ-বাদামী রঙ্গের মোমের মতো একধরণের পদার্থ আছে এগুলোকে বলে সিরুমেন। কান দিয়ে যেসব জীবাণু প্রবেশ করে সেগুলো এই সিরুমেনে আটকা পড়ে এবং শক্ত দলায় পরিণত হয় যাকে তুমি কানের খইল নামে চিনো। কান পরিষ্কার করার সময় তো তুমি এগুলো ফেলেই দাও তাহলে আর জীবাণু থাকবে কিভাবে??
চোখ, যা দিয়ে তুমি সব অবলোকন করো, এই চোখ দিয়েও কিন্তু জীবাণু প্রবেশ করতেই পারে। কিন্তু তোমার চোখের পানিতে থাকা লাইসোজাইম নামক এনজাইম কি তা সহ্য করবে??? এই ব্যাকটেরিয়ানাশক কিন্তু সাথে সাথেই তাকে মেরে ফেলবে।
তোমার লালারসেও কিন্তু এই লাইসোজাইম আছে। মুখের মধ্যে যদি কোনো জীবাণু প্রবেশ করে, তাহলে লাইসোজাইমের ক্রিয়ায় তা বিনষ্ট হয়ে যায়।
এবার ধরো কোনো জীবাণু তোমার এই কঠোর প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে খাদ্য কিংবা পানির মাধ্যমে তোমার পাকস্থলীতে চলে এলো। এবার তার উপর ক্রিয়া করবে পাকস্থলীর শক্তিশালী হাইড্রোক্লোরিক এসিড। এই এসিডের ক্রিয়ায় সাথে সাথেই জীবাণুটি মারা যাবে। পাক্কস্থলীর পর তোমার অন্ত্র, যকৃত, পিত্ত এবং জননতন্ত্রের অন্যান্য প্রত্যেকটি অঙ্গেই এরকম জীবাণুনাশক পদার্থ থাকে যারা সর্বদা তোমার প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত।
দেখলে তো, তোমার দেহের মধ্যে কি কি ঘটে চলেছে? তোমার ত্বক, কান, নাক, চোখ কিভাবে তোমাকে জীবাণুর আক্রমন থেকে রক্ষা করে চলেছে? তো তাহলে, তুমি তোমার দেহের প্রথম প্রতিরক্ষা স্তরের সাথে পরিচিত হয়েই গেলে। আজকে এতোটুকুই থাক, অন্য একদিন তোমার দেহের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থার সাথেও পরিচয় করিয়ে দিবো। কেমন? তোমার মতামত জানিয়ো কিন্তু!!
(এটা মূলত টিনএজারদের উদ্যেশ্য করে লিখেছি, তাদেরকে প্রাথমিক একটা জ্ঞান থাকার দেওয়ার জন্য। তবে আমি অগ্রজদেরও মতামত চাচ্ছি। এধরনের লেখার এই প্রথম চেষ্টা। আপনাদের মন্তব্য আমাকে অনুপ্রেরণা যোগাবে। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.